Daffodil International University

Health Tips => Protect your Health/ your Doctor => Topic started by: Sahadat Hossain on March 10, 2021, 10:11:56 AM

Title: ফ্যাট কতটা প্রয়োজন
Post by: Sahadat Hossain on March 10, 2021, 10:11:56 AM
মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম ফ্যাট বা চর্বি। মস্তিষ্কের শতকরা ৬০ শতাংশই ফ্যাট দিয়ে তৈরি। এই ফ্যাট দেহের তাপশক্তি উৎপাদন, মস্তিষ্কের বিকাশ, বিভিন্ন হরমোনের উৎপাদন, চর্বিযুক্ত দ্রবণীয় ভিটামিন শোষণ (এ, ডি, ই, কে) এবং ত্বক ও অন্যান্য অঙ্গের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। মূলত ফ্যাট দেহের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য ইনসুলেটর বা অন্তরক হিসেবে কাজ করে থাকে।

১ গ্রাম ফ্যাট থেকে ৯ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। খাদ্য হিসেবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন প্রায় ৫০ গ্রাম স্নেহ পদার্থের প্রয়োজন। ফ্যাট মানেই খারাপ, অস্বাস্থ্যকর—এমন একটি ভ্রান্ত ধারণা প্রায় সবারই। কিন্তু ভালো ফ্যাটও রয়েছে। মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তা ছাড়া সুষম খাদ্যতালিকায় পুষ্টির সব ধরনের উপাদানই যথাযথ সমন্বয়ে থাকা উচিত। কোনোটিই বাদ দেওয়া ঠিক নয়।

মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলো দেহের কোষের বিকাশ, কোলেস্টেরলের মাত্রা স্থিতিশীল রাখা এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। অ্যাভোকাডো, বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিজ্জ তেল (ক্যানোলা, জলপাই, চিনাবাদাম, তিলের তেল) মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের ভালো উৎস। অন্যদিকে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রধানত উদ্ভিজ্জ তেল (সূর্যমুখী, তিল, সয়াবিন, কর্নওয়েল) ও সামুদ্রিক মাছে পাওয়া যায়। এই ফ্যাট খাওয়ার ফলে এলডিএল (LDL) কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়। এই ফ্যাট আবার ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬—এই দুই ধরনের হয়ে থাকে।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমাতে, বিষণ্নতা, ক্যানসার, ডিমেনশিয়া ও আর্থ্রাইটিস থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো সয়াবিন তেল, ক্যানোলা, আখরোট ও ফ্ল্যাক্স সিডজাতীয় উদ্ভিজ্জ খাদ্যে বেশি পাওয়া যায়। এ ছাড়া তৈলাক্ত মাছ (রুপচাঁদা, ইলিশ, পাঙাশ ইত্যাদি) ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎকৃষ্ট উৎস।

ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা হ্রাস করতে এবং ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলের (HDL) মাত্রা বাড়াতে, ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে, রিউম্যাটয়েড, অ্যালার্জি ও উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ হ্রাসে সহায়তা করে। ওমেগা-৬–সমৃদ্ধ খাবার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় থাকলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ কমে যায়। তাই প্রতিদিন ওমেগা-৬–সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন সয়াবিন ও সূর্যমুখীর তেল, কর্নওয়েল, বাদাম ও দুগ্ধজাতীয় খাবার রাখতে হবে।

তবে খারাপ ফ্যাট বা ট্রান্সফ্যাটজাতীয় খাদ্য শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এই ফ্যাট খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের পরিমাণ বাড়ায় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) কমিয়ে দেয়। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, দিনে যত ক্যালরি ফ্যাট খাওয়া হয়, তার ২ শতাংশ যদি ট্রান্সফ্যাট থেকে আসে তবে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা প্রায় ২৩ শতাংশ বেড়ে যায়। চর্বিযুক্ত মাংস, ক্রিম, বাটার, চিজ, পাম অয়েল, নারকেল তেল, ফ্রাই ও বেকড করা খাদ্যে এই ফ্যাট বেশি পাওয়া যায়।

ফ্যাট শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তাই ফ্যাটজাতীয় খাবারকে একেবারে বাদ না দিয়ে, ভালো ফ্যাট গ্রহণের মাধ্যমে শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ এবং খারাপ ফ্যাট বর্জনের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9F-%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A6%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%A8