Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Prophets and Messengers in Islam => Topic started by: Khan Ehsanul Hoque on October 16, 2022, 01:37:36 PM

Title: হজরত ওমরের মতো ন্যায়পরায়ণ শাসক আসুক
Post by: Khan Ehsanul Hoque on October 16, 2022, 01:37:36 PM
হজরত ওমরের মতো ন্যায়পরায়ণ শাসক আসুক

বিশ্বনবী (সা.) নিজের আদর্শ দিয়ে যেভাবে ইসলাম ধর্মকে একটি পরিপূর্ণ রূপ দিয়েছেন, তেমনি তৈরি করেছেন একদল সোনার মানুষ। হজরতের পরশ পেয়ে বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষ মুক্তির দিশা পেয়েছিল। যে আলোকিত মানুষের দল তিনি তৈরি করেছিলেন তাদের সবাই আমাদের জন্য আদর্শের বাতিঘর। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) এ সোনালি মানুষদের একজন। আজ তাকে নিয়ে বলতে চাই। ইসলামের প্রাথমিক যুগে যখন কোরআনি আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামলেন বিশ্বনবী (সা.), ঠিক সে সময়ই হজরত ওমর (রা.) ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে হুজুরের হাত শক্তিশালী করেন। ইসলামের ইতিহাসে এটি ছিল একটি যুগান্তরকারী ঘটনা। হজরত ওমরের ইসলাম গ্রহণ করার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি মক্কার কাফের, মুশরিক সমাজ। ওমর (রা.)-এর মতো বীরের ইসলাম গ্রহণ করার কারণে দাওয়াতের কাজে নতুন গতি আসে। প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াতের কাজে বাধা দেয়ার সাহস আর কেউ করতে পারেনি। হজরত ওমর ছিলেন সাহসের বাতিঘর। এতে একদিকে ইসলামপ্রিয় মানুষ যেমন খুশি হন তেমনি অন্যদিকে কাফের, মুশরিকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে। ঐতিহাসিকরা এক বাক্যে স্বীকার করেছেন, হজরত ওমরের ইসলাম গ্রহণের কারণে মুসলমানদের শক্তি-উদ্দীপনায় জোয়ার আসে।

হজরত ওমর রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেই গোটা বিশ্বে কীভাবে ইসলামের শান্তিময় দাওয়াত ছড়িয়ে দেয়া যায় সে পরিকল্পনা করেন। পাশাপাশি তার শাসনাধীন এলাকায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের দুঃখ-দুদর্শা দূর করার পদক্ষেপ নেন। ইসলামের যে স্বর্ণযুগের কথা ইতিহাসের পাতায় আমরা পড়ি, তার বেশিরভাগই হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনকালে ঘটেছে। তার শাসন আমলে পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলেই ইসলামের সুমহান বাণী ছড়িয়ে পড়ে। তার শাসনব্যবস্থাকে বিভিন্ন সময় ইতিহাসবিদরা নানাভাবে মূল্যায়ন করেছেন। তিনি যে শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন পরে আর কোথাও এত সাম্য এত শান্তিময় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে সমালোচকরাও স্বীকার করেছেন।

দুনিয়ার বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে সামাল দেয়ার জন্য ওমরের মতো একজন শাসকের বিকল্প নেই। দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নিজের স্নেহের পুত্রকে পর্যন্ত ছাড় দেননি হজরত ওমর। কোনো ধরনের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি স্পর্শ করতে পারেনি তাকে এবং তার কোনো প্রতিনিধিকে। হজরত ওমর নিজে খাদ্যসামগ্রীর বস্তা কাঁধে চাপিয়ে ক্ষুধার্ত মানুষের ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। গভীর রাতে মানুষের খোঁজ নিতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। তিনি বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নর, দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গকে কঠোর নির্দেশ দিতেন যেন ন্যায়বিচার ও সাহায্য পেতে সাধারণ জনগণ হয়রানির স্বীকার না হয়। অন্য ধর্মের অনুসারীরা যেন কোনোভাবেই ন্যায়বিচার বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে ছিল আরও কঠোর নির্দেশ। ফলে সবখানে বিরাজ করছিল শান্তির বাতাস। মানুষের মাঝে ছিল ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দের প্রশান্তিময় পরিবেশ।

পৃথিবীর শাসকদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, হজরত ওমর (রা.) যে উপায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন তা ছিল এক কথায় অসাধারণ। তার শাসনাঞ্চলে অপরাধ ছিল না বললেই চলে। দরিদ্রতার হার নেমেছিল শূন্যের কোঠায়। মানুষের নৈতিকতা, সততা ছিল অনন্য। সে শাসনের সোনালি দিনের কথা এখনও মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। ওমর (রা.)-এর শাসনকাল পর্যালোচনা করে বিশ্বের তাবৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়েন। মাত্র দশ বছরের শাসনে হজরত ওমর (রা.) কী না করেছেন। হজরত ওমর (রা.)-এর মতো একজন শাসকের বড় প্রয়োজন আজকের পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য। হে আল্লাহ, পৃথিবীতে আরেকজন ওমর পাঠান। যিনি অন্যায়-জুলুম-অবিচারমুক্ত পৃথিবী গড়ে তুলবেন। যার সততা ও ন্যায়ের কারিশমা দেখে বালা-মুসিবত, আজাব-গজব, মহামারী করোনা দূর হয়ে যাবে। পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা-সুস্থতা বিরাজ করবে।

Source: https://www.jugantor.com/todays-paper/features/islam-and-life/319752/%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%93%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A7%8B-%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%A3-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%95-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%95#:~:text=%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%20%E0%A6%A6%E0%A6%B6%20%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%A8%E0%A7%87%20%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A6%A4%20%E0%A6%93%E0%A6%AE%E0%A6%B0%20(%E0%A6%B0%E0%A6%BE.)