Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Public Health => Primary Health Care => Topic started by: Afroza Akter on December 02, 2022, 04:53:58 PM

Title: ডেঙ্গু : প্রতিরোধই মুখ্য
Post by: Afroza Akter on December 02, 2022, 04:53:58 PM
ডেঙ্গু : প্রতিরোধই মুখ্য
[/b]
(https://www.dailyinqilab.com/news_original/1669901942_3.jpg)

ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত ভাইরাস ঘটিত রোগ। এবছর বর্ষার অনেক আগেই এটা শুরু হয়ে এখন অব্দি এর দাপট দেখিয়ে চলেছে। এই নভেম্বরেই মৃত্যু ১০০ ছাড়িয়েছে। মৌসুমি জলবায়ু পরিবর্তন ও মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দীর্ঘ বর্ষাকাল, বৃষ্টি, তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে এডিস মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পায়। ফলে সাম্প্রতিক বছর গুলোতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ডেঙ্গু মহামারী আকারে প্রথম ঘটে ফিলাডেলফিয়ায় ১৭৮০ সালে। এরপর পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবছর আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলে হাজার হাজার ডেঙ্গু এবং হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীর রিপোর্ট পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ¦র প্রথম দেখা দেয় ১৯৬৪ সালে। সে সময় রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়নি বলে তখন এটাকে ঢাকা ফিভার বলা হতো। ১৯৯৯ সালে এ দেশে আবার দেখা দেয়। এরপর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে অনেক। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ¦রের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ পর্যায়ে ছিল। এবছরও ডেঙ্গুর প্রকোপ অন্য আর সব বছরকে হার মানিয়েছে। সাধারণত জুন-জুলাই থেকে অক্টোবর-নভেম্বর মাস বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার বেশী থাকলেও বর্তমানে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায় আরো আগে থেকে।

কীভাবে ছড়ায় : এডিস ইজিপ্টি মশার দংশনের ফলে এ রোগের বিস্তার ঘটে থাকে। এ মশা ঘরে, পর্দার ভাঁজে, বেসিনের নীচে, খাটের নীচে লুকিয়ে থাকে। বংশবিস্তার ঘটায় স্বচ্ছ পানিতে, ফুলের টবে জমে থাকা পানিতে, বৃষ্টির দিনে রাস্তার পাশে জমে থাকা পানিতে, নির্মাণ সামগ্রীতে থাকা পানি, নারকেলের খোলার জমা পানি, টায়ারের পানি, পেপসির ক্যান ইত্যাদিতে। এডিস মশা রাতে কামড়ায় না সাধারণত দিনের আলোতে বিশেষ করে ভোরবেলা ও সন্ধার পূর্বে এ মশা বেশী কামড়ায়। সংক্রমিত মশা কামড়ালে কোন মানুষ ৪-৬ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হন।

লক্ষণ : ১. ডেঙ্গুজ¦রের প্রধান লক্ষণ জ¦র। এর সাথে চামড়ার নীচে র‌্যাশ, কারো কারো রক্তক্ষরণও হতে পারে। ২. প্রথম দিন হতেই তীব্র জ¦র (সাধারণত ১০২ক্ক বা তার উপরে)। ৩. জ¦রের সাথে তীব্র শরীর ব্যথা, মাংশপেশিতে ব্যথা, গিঁরায় গিঁরায় ব্যথা, কোমড়ে ব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হবে। ৪. জ¦রের ২-৫ দিনের মধ্যে চামড়ার নীচে দানা বা র‌্যাশ ওঠে যা চুলকাতে থাকে। ৫. চামড়ায়, দাঁতের মাড়ি, নাক দিয়ে রক্তপড়া, চামড়ার নীচে রক্তের দাগ দেখা দেওয়া, রক্ত বমি, রক্ত পায়খানা, মেয়েদের মাসিকের সাথে বেশি রক্তপাত হওয়া।

ডেঙ্গুর ধরণ :
লক্ষণানুযায়ী ডেঙ্গু ২ ধরনের:
ক) ক্যাসিক্যাল ডেঙ্গু জ¦রঃ এটা অন্যান্য ভাইরাস জ¦রের মতো।
খ) হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ¦রঃ ক্যাসিক্যাল ডেঙ্গুর সব লক্ষণ থাকে। রক্ষনালির লিকি হয় বলে সমস্যা দেখা দেয়। যথাযথ চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা না নিলে এটাতে জীবনের জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।
পরীক্ষা : জটিলতা না হলে কোনো জ¦রের রোগীর ৩ দিন আগে পরীক্ষা করার দরকার নেই। ডেঙ্গু জ¦র নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে।

১) টিসি, ডিসি, হিমোগ্লোবিন, ইএসআর, এনএস১ এন্টিজেন, এসজিপিটি, এন্টিবডি পরীক্ষা ইত্যাদি। ২) প্লাটিলেট কাউন্ট ও হিমাটক্রিট, ভাইরাস আইসোলেশন। ৩) হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ¦র হলে ফুসফুস ও পেটে নিশ্চিত করার জন্য বুকের এক্স-রে ও আল্টাসনোগ্রাফী প্রয়োজন হতে পারে।
জটিলতা : সাধারণত ৩-৭ দিনের মধ্যেই জ¦রের তাপমাত্রা কমতে থাকে। তবে জটিল ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত

লক্ষণগুলো দেখা যায়:-
১. তীব্র পেট ব্যথা ও অনর্গল বমি। কখনো কখনো বমির সাথে রক্ত আসে। ২. কালো পায়খানা হবে। ৩. ত্বকে লালচে দাগ, কখনো ফ্যাকাশে, ঠান্ডা ও স্যাঁতস্যাঁতে হবে। ৪. দাঁতের মাড়ি ও নাক দিয়ে রক্ত পড়বে। ৫. তীব্র জ¦রের সাথে শ^াসকষ্ট থাকবে। ৬. হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ¦রে নাক, মুখ, দাঁতের মাড়ি ও পায়ুপথ দিয়ে রক্ত আসতে পারে। এমনকি রোগির রক্তচাপ কমে গিয়ে অস্বস্তিবোধ এবং সংগাহীন হয়ে পড়তে পারে। ৭. একজন মানুষের জীবনে চারবার ডেঙ্গু হতে পারে চার প্রজাতির ডেঙ্গু ভাইরাস দিয়ে। যত বেশিবার ডেঙ্গু হবে, তত বেশি অধিক জটিল আকার ধারণ করবে।

চিকিৎসা : ডেঙ্গু জ¦রের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে জ্বর কমানোর ওষুধ চালিয়ে যেতে হবে, বিশ্রামে থাকতে হবে। আর তরল খাবার বেশী খেতে হবে। এ রোগে আক্রান্ত রোগী বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যায়। তবে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই চলতে হবে। যাতে করে ডেঙ্গু জনিত কোনো জটিল অবস্থা সৃষ্টি না হয়। সাধারণত লক্ষণানুযায়ী চিকিৎস করাতে হবে।

প্রতিরোধ : ১) যেহেতু ডেঙ্গু রোগের বাহক মশা। তাই ডেঙ্গুর আবাস ধ্বংস করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করাই শ্রেয়। ২) এডিস মশা সাধারণত স্বচ্ছ পানিতে ডিম পারে। খেয়াল রাখতে হবে ঘরে এবং এর আশেপাশে যেন পানি না জমে। টব, ভাঙা বাসন, নারকেলের মালা, এসির পানি পরিত্যক্ত টায়ার, ছোট বড় গর্ত, ফুলের টব, টিনের কোটা ব্যাটারির শেল প্রভূতিতে যেন পানি না জমে সেদিকে নজর রাখতে হবে। ৩) কোথাও একটানা তিনদিনের বেশি পানি যেন না জমে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। ৪) দিনে বা রাতে যখনই হোক ঘুমের সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে কিছুক্ষণ পরপর মশার স্প্রে করতে হবে। ৫) প্রয়োজনে ফুল হাতা জামা-প্যান্ট পরা ভালো এবং উন্মুক্ত ত্বকে রিপলেন্ট ক্রীম ব্যবহার করতে হবে।

খাদ্য ও পথ্য : ১. রোগীকে পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। ২. প্রচুর পানি পান, ডাবের পানি পান, খাবার স্যালাইন, ফলের রস, স্যুপ খেতে হবে। ৩. শরীর বারবার স্পঞ্জিং করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। ৪. জ¦রে ক্যালোরির চাহিদা বেড়ে যায়। আবার মুখে রুচিও থাকে না। তাই এমন খাবার দিতে হবে যেন অল্প হলেও চাহিদা মিটতে পারে। যেমন : খিচুড়ি, পায়েস, ফিরনি ও পুডিং দেওয়া যেতে পারে। ৫. জ¦রের সংগে ডায়রিয়া ও বমি হলে শাক সবজি, ডাল, দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার বাদ দিতে হবে। এ অবস্থায় ডাবের পানি, স্যুপ, ভাতের মাড়, আপেলের রস বেশ উপকারী। ৬. শিং, পাবদা, শোল ইত্যাদি মাছ, মুরগীর তরকারী ও দেওয়া যেতে পারে। ৭. ডেঙ্গু হলে ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাবার রক্তে প্রোথ্রম্বিন তৈরী করে রক্ত জমাট বাঁধায় তাই রক্তক্ষরণের ঝুকি কমে। ব্রুকলি, ফুলকপি, পাতাকপি, সবুজ শাকসবজী, ডিমের কুসুমে ভিটামিন কে থাকে। ৮. পেপেঁ পাতার রস খাওয়া যেতে পারে। এতে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান পাওয়া যায় যা শরীর ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। ৯. শুধু তরল নয় এ সময় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমুল খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। ফলে এন্টি অক্সিডেন্টের চাহিদাও পুরণ হবে। লেবু, কমলা, মাল্টা, জাম্বুরা, আমড়া, আনারস, আপেল ইত্যাদিতে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।



Source: shorturl.at/bEOSX

Title: Re: ডেঙ্গু : প্রতিরোধই মুখ্য
Post by: frahmanshetu on December 04, 2022, 08:22:34 AM
Really we have to more conscious.