Daffodil International University

Faculty of Engineering => EEE => Power System and Renewable Energy => Topic started by: frahmanshetu on December 27, 2022, 01:35:38 AM

Title: মেঘনায় জাহাজডুবির তেল চলে যাচ্ছে সাগরে, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির শঙ্কা
Post by: frahmanshetu on December 27, 2022, 01:35:38 AM
মেঘনায় জাহাজডুবির তেল চলে যাচ্ছে সাগরে, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির শঙ্কা

https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2022-12%2F848401e8-d6f9-485b-b07d-1412ffc97680%2FBhola_DH0592_20221226_20221226_101631.jpg?rect=0%2C0%2C3379%2C1901&auto=format%2Ccompress&fmt=webp&format=webp&w=900&dpr=1.0(http://)

ভোলা সদর উপজেলার মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া তেলবাহী ট্যাংকারের তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ছে। ভাটার টানে তেল সাগরের দিকে চলে গেছে। এ কারণে জলজ প্রাণী ও শ্বাসমূলীয় বনের উদ্ভিদ চরম ক্ষতির মধ্যে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদেরা।

তবে দক্ষিণাঞ্চলীয় কোস্টগার্ড বলছে, আংশিক ভেসে থাকা তেলবাহী ট্যাংকার সাগর নন্দিনী-২ থেকে তেল বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিষ্কাশনযন্ত্র দিয়ে তা তুলে নেওয়া হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে স্থানীয় জেলেরাও তেল তুলেছেন। নইলে তেলে নদী সয়লাব হয়ে যেত।

আজ সকালে মেঘনা নদীতে জাহাজ ডুবে যাওয়ায় ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নদীতে তেল ভাসছে। জ্বালানি তেলের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ভোলা সদর ও দৌলতখানের শত শত জেলে নদীতে কাপড় ভিজিয়ে ভাসমান তেল উদ্ধার করছেন।

সাগর নন্দিনী-২ ট্যাংকারের মাস্টার মাকসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত শনিবার রাতে তেলবাহী এই জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। গতকাল রোববার ভোরে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলিসংলগ্ন মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে তাঁদের ট্যাংকারটি অন্য একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খায়। তখন জাহাজটির তলা ফেটে ডুবতে শুরু করে। জাহাজে ১১ লাখ লিটার ডিজেল ছিল। পরে স্থানীয় জেলে ও বালুবাহী জাহাজের মাধ্যমে ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে তাঁরা ১২ জন জীবিত উদ্ধার হন। মাস্টার আরও বলেন, কোস্টগার্ড কয়েকটি নিষ্কাশনযন্ত্র দিয়ে প্রায় এক হাজার লিটার তেল উদ্ধার করেছে। বাকি ডিজেল ভেসে গেছে। আজ সকাল ১০টার দিকেও জাহাজ থেকে অকটেন বের হচ্ছিল।

আরও পড়ুন
ভোলায় আরেক জাহাজের ধাক্কায় ‘১১ লাখ লিটার তেল’ নিয়ে ডুবল জাহাজ
ভোলার মেঘনা নদীতে তেলবাহী জাহাজ ডুবির ঘটনায় জাহাজটিতে থাকা কর্মীদের উদ্ধার করেন স্থানীয় জেলেরা





দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের কৃষক মোহাম্মদ হাসান কেরানি বলেন, ‘নদীর পানি গ্যাস হইয়া গেছে। চোখ–মুখ জ্বলে। পানিত ত্যাল ভাসতেছে। জাইল্যারা চাদর, কাপুড় চুবাইয়া চুবাইয়া ত্যাল সংগ্রহ করতেছে।’

রাজাপুরের পল্লিচিকিৎসক আমির হোসেন হাওলাদার বলেন, তাঁদের এলাকার জেলেরা মেঘনা নদী থেকে চাদর ভিজিয়ে তেল সংগ্রহ করছেন। গতকাল ভাটার সময় রাজাপুরের জোরখালের পানিতে তেল ভাসতে দেখা গেছে। কিন্তু জোয়ারের সময় তা আবার অনেকটা কমে গেছে। এখনো নদীর পানিতে তেলের গন্ধ আছে।

রোববার ভোরে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলিসংলগ্ন মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে তেলবাহী ট্যাংকারটি অন্য একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খায়। তখন জাহাজটির তলা ফেটে ডুবতে শুরু করে
রোববার ভোরে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলিসংলগ্ন মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে তেলবাহী ট্যাংকারটি অন্য একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খায়। তখন জাহাজটির তলা ফেটে ডুবতে শুরু করেছবি: প্রথম আলো
ডুবে যাওয়া ট্যাংকারের জ্বালানি তেল ভেসে যাওয়ায় মেঘনা নদীর বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ভোলা সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুব আলম। তিনি বলেন, এতে পানি দূষিত হবে। পানির ওপরে একধরনের বিষাক্ত স্তর তৈরি হওয়ার কারণে অক্সিজেন–সংকট দেখা দেবে। এতে জলজ প্রাণী মারা পড়বে। প্রাণীদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হবে। দূষিত পানি পান করলে একদিকে প্রাণীরা মারা পড়বে, অন্যদিকে উদ্ভিদও সংকটে পড়বে।


ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তোতা মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ায় পরিবেশের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। নদীর পানিতে থাকা ক্ষুদ্র জলজ কণাগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এতে খাদ্যশৃঙ্খল নষ্ট হওয়ায় জলজ প্রাণীরা খাদ্যসংকটে পড়বে। মাছের ডিম, পোনা, জলজ প্রাণীর লার্ভা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ থেকে মুক্তির উপায়, যত দ্রুত সম্ভব, তেল তুলে ফেলা। না হলে এটা পরিবেশের সঙ্গে মিশে গিয়ে খারাপ প্রভাব সৃষ্টি করবে।

জাহাজ থেকে তেল বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিষ্কাশনযন্ত্র দিয়ে তা উদ্ধার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কে এম শাফিউল কিঞ্জল। তিনি বলেন, এই উদ্ধারকাজ গতকাল সকাল থেকে আজ পর্যন্ত চলমান আছে। ডুবে যাওয়া জাহাজটি বিআইডব্লিউটিএ উদ্ধার করবে বলে জানান তিনি।

কিন্তু জাহাজটি উদ্ধারে নিজেদের সক্ষমতা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা থেকে আসা বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (উদ্ধার) মো. আবদুস সালাম। তিনি বলেন, তাঁদের উদ্ধারের সক্ষমতা আছে ২৫০ মেট্রিক টন ওজনের জাহাজ। কিন্তু এটির ওজন ৩২০ মেট্রিক টন। তা ছাড়া জাহাজের মধ্যে যে পরিমাণ তেল ও পানি আছে, তা হাজার ছাড়িয়ে যাবে। সে জন্য মালিকপক্ষ বেসরকারিভাবে জাহাজটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

Source : shorturl.at/ghqU9