Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Nutrition => Public Health => proper dietary habit => Topic started by: Khan Ehsanul Hoque on December 31, 2022, 10:54:40 PM

Title: স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোর উপায়
Post by: Khan Ehsanul Hoque on December 31, 2022, 10:54:40 PM
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোর উপায় 

ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন? স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন এবং খাদ্যাভ্যাসে ওজন ঠিক থাকে। যারা জাঙ্কফুডে অভ্যস্ত তাদের ওজন বেশি হয়ে থাকে। ক্যালরি হচ্ছে ওজন পরিমাপের উপায়। যদি ওজন কমাতে হয় তবে প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্যালরি খরচ হয় তার থেকে কম পরিমাণ ক্যালরি সমপরিমাণ খাবার খেতে হবে অর্থাৎ কম ক্যালরি খেতে হবে বা কম ক্যালরিযুক্ত খাবার পরিমাণমতো খাওয়া যাবে।

সে ক্ষেত্রে কোন কোন খাবারে ক্যালরি কম থাকে তা জানতে হবে ও সে অনুযায়ী কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে হবে। না খেয়ে বা খুব কম খেয়ে ওজন কমাতে গেলে দেখা যায় কিছু দিন বা কয়েকদিন পরই প্রচণ্ড ক্ষুধার কারণে এই পদ্ধতি বাদ দেয় ও আগের অবস্থায় ফিরে আসে, তাই ওজন কমাতে কিছু টেকসই ও কার্যকর পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে যা নিম্নরূপ-

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মেডিনোভা মেডিকেলের অধ্যাপক মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. তৌফিকুর রহমান ফারুক।

প্রোটিন জাতীয় খাবারে ক্যালরি কম

খাবারে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেয়ে ওজন কমানোর পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ, কার্যকরী, মুখরোচক, বৈজ্ঞানিক ও কম কষ্টের। প্রোটিন জাতীয় খাবার খেলে অল্প খাবারে তাড়াতাড়ি তৃপ্তি আসে অর্থাৎ ক্ষুধার অনুভূতি তাড়াতাড়ি কমে এবং আমাদের শরীরের মেটাবলিক রেট বা শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার হার বাড়ে, কারণ প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার হজম করতে ও মেটাবলিজম হতে বা খাবার ভেঙে শক্তি উৎপাদনে বা অন্যান্য কাজে অনেক বেশি শক্তি ব্যয় হয়। প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার হজম বা মেটাবলিজমে বেশি শক্তি অর্থাৎ ৮০-১২০ ক্যালরি শক্তি বেশি ব্যয় হয়। একজন ব্যক্তি যদি খাবারের ৩০ ভাগ প্রোটিন জাতীয় খাবার খায় তবে সে প্রতিদিন ৪৪১ ক্যালরি সমপরিমাণ খাবার কম গ্রহণ করল। তাই খাবারে পরিমিত পরিমাণ প্রোটিন যোগ করে একদিকে যেমন শরীরে ক্যালরি কম প্রবেশ করে তেমনি ক্যালরি খরচও বেশি হয়। প্রোটিন জাতীয় খাবার আমাদের ক্ষুধার তীব্রতা কমিয়ে দেয়।

যারা ডায়েট করেন ও না খেয়ে ওজন কমাতে চান তাদের মাঝেমাঝে তীব্র ক্ষুধার অনুভূতি হয়, ফলে তারা আর না খেয়ে থাকতে পারেন না, ফলে ওজন কমানো কঠিন হয়ে পড়ে ও আবার ওজন আগের মতোই বাড়তে থাকে। প্রোটিন জাতীয় খাবার এ ধরনের হঠাৎ ক্ষুধার তীব্র অনুভূতি কমিয়ে দেয়। এক গবেষণায় দেখা যায়, খাবারে যদি ২৫ ভাগ প্রোটিন বা আমিষ থাকে তবে এই প্রোটিন বা আমিষ মস্তিষ্কে খাবারের চিন্তা ৬০ ভাগ কমিয়ে দেয় ও রাতের গভীরে বা ভোর রাতে ø্যাক্স বা নাস্তা খাবার ইচ্ছা বা প্রবণতা ৫০ ভাগ কমিয়ে দেয়। তাই যদি কেউ ওজন কমোনোর কর্মসূচি কার্যকরী ও টেকসই বা স্থায়ী করতে হয় ও কম কষ্টে ওজন কমাতে চায় তবে খাবারে কমপক্ষে ৩০ ভাগ প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার রাখতে হবে, এটা ওজন কমানোর পাশাপাশি ওজন যাতে আবার না বাড়ে তা নিশ্চিত করবে।

সুগারযুক্ত কোমল পানীয় ও ফলের রস বর্জন করতে হবে

সোডা, ফলের রস, চকোলেট দুধ ও অন্যান্য কোমল পানীয় যেমন কোকাকোলা, ফান্টা, মিরিন্ডা, পেপসি যেখানে অতিরিক্ত চিনি বা সুগার যোগ করা হয় তা ক্ষতিকর ও বর্জনীয়, কারণ সুগার বা চিনির মাধ্যমে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি ঢোকে ও তা আমাদের ওজন বাড়ায়। বাচ্চাদের ওজন বাড়াতে বা মোটা হওয়ার রিস্ক ৬০ ভাগ বেড়ে যায় যদি প্রতিদিন সুগারযুক্ত কোমল পানীয় পান করে। ওজন বাড়ার পাশাপাশি এ সুগারযুক্ত কোমল পানীয় নানাবিধ রোগ তৈরি করে। প্রাকৃতিক জুস বা ফলের রস স্বাস্থ্যকর কিন্তু জুসের সঙ্গে যদি অতিরিক্ত চিনি যোগ করা হয় তবে তা ক্ষতিকর। এসব সুগারযুক্ত পানীয়ের আসলে কোনো লাভজনক দিক তো নেয়ই বরং দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর।

বেশি করে পানি পান করলে ওজন কমে

ওজন কমানোর জন্য অন্যতম ট্রিক হচ্ছে প্রতিদিন বেশি পরিমাণ পানি পান করা। বেশি পরিমাণ পানি পান করলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ হয়। প্রতিদিন ৪ গ্লাস বা ২ লিটার পানি পান করলে ৯৬ ক্যালরি শক্তি অতিরিক্ত খরচ হয় কোনো কায়িক পরিশ্রম ছাড়াই। তাছাড়া খাবার আগে খালি পেটে পানি পান করলে তাতে পেট আংশিক ভর্তি হবে এবং ক্ষুধা কমবে ও কম পরিমাণ খাবারে পেট ভরে যাবে, তাতে অটোমেটিক্যালি কম ক্যালরি শরীরে ঢুকবে। ১২ সপ্তাহব্যাপী এক গবেষণায় দেখা গেছে খাবার ১-২ ঘণ্টা আগে ১-২ লিটার পানি খেলে ৪৪ ভাগ বেশি ওজন কমে, তাই ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর ও কম ক্যালরিযুক্ত খাবারের পাশাপশি বেশি পরিমাণে পানি পান করা কার্যকরী। যেসব পানীয় ক্যাফেইনযুক্ত যেমন গ্রিন টি, কফি স্বাস্থ্যক ও ওজন কমাতে সহায়ক কারণ এ পানীয়গুলো শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ করতে সাহায্যকারী।

নিয়মিত ব্যায়াম করা

আমরা যখন কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই, তখন আমাদের শরীর শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে চায়, শক্তি কম খরচ করে শক্তি জমা রাখতে চায়। তাই দীর্ঘমেয়াদি ওজন কমান কর্মসূচি বা ডায়েটিং করলে বা কম খেলে আমাদের শরীরে মেটাবলিকজনিত বা শারীরবৃত্তীয়জনিত ক্যালরি খরচ কমে যায়। তাছাড়া এতে আমাদের শরীরের মাংসপেশীগুলো শুকিয়ে যায়, তাই ওজন কমানোর জন্য বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার কম খাওয়ার পাশাপাশি মাংসপেশী ঠিকভাবে রাখার জন্য ভারোত্তোলন বা ওজন লিফটিংও করতে হবে, এতে মাংসপেশী শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ হবে ও মেটাবলিক কার্যক্রম ঠিক থাকবে। তাই ওজন কমানোর জন্য আমরা শুধু শরীরের চর্বিই কমাতে চাইব না, আমাদের শারীরিক গঠনও যাতে ঠিক থাকে, আমাদের যাতে দেখতে অসুন্দর না লাগে, শুকনা শুকনা না লাগে, বরং দেখতে ভালো যাতে লাগে। ওয়েট লিফটিংয়ের পাশাপাশি নিয়মিত এরোবিক ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাঁতার কাটা ও জগিং করতে হবে।

রিফাইন্ড সুগার ও কার্বোহাইড্রেট কম খেতে হবে

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবারে প্রচুর ক্যালরি থাকে, তাই খাবারে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি, আলু, চিনি, মিষ্টি, মধু, কোমল পানীয় কম খেতে হবে। গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার অর্থাৎ কম কার্বোহাইড্রেট ও কম চর্বিযুক্ত খাবার ওজন কমাতে ২-৩ গুণ অধিক কার্যকর। তাছাড়া কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার অন্যান্য রোগ যেমন ডায়াবেটিস, মেটাবলিক সিন্ড্রোম রোগ প্রতিরোধ করে, তবে ফাইবারযুক্ত কমপ্লেক্সে বা জটিল কার্বোহাইড্রেট যেমন ঢেঁকিছাঁটা লাল চাল শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং উপকারী।

Source: https://www.jugantor.com/doctor-available/614705/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%A4-%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%93%E0%A6%9C%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%C2%A0