Daffodil International University

Help & Support => Common Forum/Request/Suggestions => Topic started by: ashraful.diss on April 01, 2023, 10:51:28 AM

Title: মুত্তাকী ও দূর্ভাগা
Post by: ashraful.diss on April 01, 2023, 10:51:28 AM
(https://www.jugantor.com/assets/news_photos/2021/12/31/image-503557-1640933774.jpg)

মুত্তাকী ও দুর্ভাগা

প্রকৃত সৌভাগ্যবান ও দুর্ভাগাদের সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ভাষায় আল্লাহ তাআলা বলেন—

فَاَنْذَرْتُكُمْ نَارًا تَلَظّٰی، لَا یَصْلٰىهَاۤ اِلَّا الْاَشْقَی، الَّذِیْ كَذَّبَ وَ تَوَلّٰی، وَ سَیُجَنَّبُهَا الْاَتْقَی، الَّذِیْ یُؤْتِیْ مَالَهٗ یَتَزَكّٰی.

অতএব আমি তোমাদেরকে সতর্ক করে দিলাম লেলিহান অগ্নি সম্পর্কে। তাতে নিপতিত হবে কেবল সেই ব্যক্তি, যে চরম দুর্ভাগা। যে সত্য প্রত্যাখ্যান করেছে এবং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

আর তা থেকে অবশ্যই রক্ষা পাবে সেই ব্যক্তি, যে পরম মুত্তাকী। যে তার ধন-সম্পদ দান করছে আত্মশুদ্ধির জন্য। —সূরা লাইল (৯২) : ১৪-১৮

এখানে দুর্ভাগার বিপরীতে আনা হয়েছে মুত্তাকীর কথা। বলা হয়েছে, মুত্তাকী সেই লেলিহান অগ্নি থেকে রক্ষা পাবে, যাতে নিপতিত হবে কেবল চরম দুর্ভাগা।

এখান থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়— ভাগ্যবান ও সৌভাগ্যবান কারা এবং হতভাগা ও দুর্ভাগা করা।

জাগতিক বিচারে যে অসুখী, অসচ্ছল, গরিব, অতি সাধারণ, মাজলূম ও নিঃস্ব; প্রকৃত বিচারে এবং আখেরাতের হিসাবে সেও হতে পারে চিরসফল, চিরসুখী ও মহাসৌভাগ্যবান। অপরদিকে জাগতিক বিচারে যে বিপুল ধন-সম্পদের মালিক, উচ্চ পদ ও পদবীর অধিকারী, ক্ষমতা ও লোকবলে অতি মাননীয়; প্রকৃত বিচারে এবং আখিরাতের হিসাবে সেও হতে পারে চরম ব্যর্থ, চিরদুঃখী ও নিতান্ত দুর্ভাগা। সেজন্য প্রকৃত সৌভাগ্যবান হওয়ার চেষ্টা করা এবং দৃষ্টিভঙ্গি শোধরানো আমাদের জরুরি কর্তব্য। সবকিছু কেবলই দুনিয়াবী হিসাবে বিবেচনা করার মানসিকতা থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।

আল্লাহ তাআলার সাথে দুর্ভাগাদের কথোপকথন

জাহান্নামীদেরকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমাদের কাছে তো আমার নসীহত এসেছিল, তোমাদেরকে তো আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনানো হয়েছিল। কিন্তু তোমরা তা অস্বীকার করেছিলে।

জাহান্নামীরা বলবে—

رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَیْنَا شِقْوَتُنَا وَ كُنَّا قَوْمًا ضَآلِّیْنَ

হে আমাদের রব! আমাদের উপর আমাদের দুর্ভাগ্য প্রবল হয়ে গিয়েছিল এবং আমরা ছিলাম বিপথগামী স¤প্রদায়। —সূরা মুমিনূন (২৩) ১০৬

তাদের বিপথগামিতা ও দুর্ভাগ্যের কারণ কী ছিল, সেদিকেও ইঙ্গিত রয়েছে পরের আয়াতে। আল্লাহ তাআলা বলেন—

فَاتَّخَذْتُمُوْهُمْ سِخْرِیًّا حَتّٰۤی اَنْسَوْكُمْ ذِكْرِیْ وَ كُنْتُمْ مِّنْهُمْ تَضْحَكُوْنَ

নিশ্চয় আমার বান্দাদের একদল এমন ছিল, যারা বলত, ‘হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, অতএব আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’

কিন্তু তোমরা তাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করেছ, এমনকি তারা (অর্থাৎ তাদের উত্ত্যক্তকরণ) তোমাদেরকে আমার স্মরণ পর্যন্ত ভুলিয়ে দিয়েছে। আর তোমরা তাদেরকে নিয়ে হাসি-তামাশা করে গেছ। —সূরা মুমিনূন (২৩) : ১০৯-১০

সতর্কবার্তা

আল্লাহ তাআলার হুকুম ও নির্দেশনা অমান্য করা যেমন অপরাধ, তেমনি স্বতন্ত্র একটি অপরাধ হল, আল্লাহর হুকুম ও বিধান মান্যকারীদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা। এমনকি সেই ঠাট্টা ও তামাশা যে কত গুরুতর অপরাধ তাও অনুমান করা যায় এখান থেকে যে,  আল্লাহ তাআলা জাহান্নামীদেরকে উদ্দেশ্য করে নিজেই এ বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেবেন। তার আগে কুরআন মাজীদেও বিষয়টি উল্লেখ করে সতর্ক করে দিয়েছেন।

আমাদের উচিত, উপরোক্ত আয়াতগুলো নিয়ে গুরুত্বের সাথে ফিকির করা। নিজেদের জীবন ও কর্মের হিসাব নেওয়া। সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের জরিপ করা এবং দুনিয়া ও আখেরাতের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া।

পাশাপাশি একথাও মনে রাখা যে, আল্লাহ তাআলা জাহান্নামীদের উদ্দেশ্য করে বলবেন—

اَوَ لَمْ نُعَمِّرْكُمْ مَّا یَتَذَكَّرُ فِیْهِ مَنْ تَذَكَّرَ وَ جَآءَكُمُ النَّذِیْرُ فَذُوْقُوْا فَمَا لِلظّٰلِمِیْنَ مِنْ نَّصِیْرٍ

আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যার মধ্যে কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে চাইলে তা করতে পারত? আর তোমাদের নিকট তো সতর্ককারীও এসেছিল। অতএব (শাস্তি) আস্বাদন কর। কেননা এমন জালেমদের কোনো সাহায্যকারী নেই। —সূরা ফাতির (৩৫) : ৩৭

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে দুনিয়া ও আখেরাতের সৌভাগ্যবান হিসেবে কবুল করুন। সব ধরনের দুর্ভাগ্য থেকে হেফাযত করুন— আমীন।