Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Public Health => Primary Health Care => Topic started by: Imrul Hasan Tusher on October 08, 2025, 10:54:45 AM

Title: দীর্ঘদিন সুস্থ শরীর পেতে চাইলে হার্ভার্ডের গবেষণা অনুযায়ী এই ৫ অভ্যাস চর্চা করুন
Post by: Imrul Hasan Tusher on October 08, 2025, 10:54:45 AM
দীর্ঘদিন সুস্থ শরীর পেতে চাইলে হার্ভার্ডের গবেষণা অনুযায়ী এই ৫ অভ্যাস চর্চা করুন

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন সুস্থ শরীর পেতে হলে চাই ধৈর্য আর আত্মনিয়ন্ত্রণ। এ ক্ষেত্রে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে পাঁচটি অভ্যাস। জেনে রাখুন সেসব।

(https://media.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2025-10-07%2F7pzga26y%2FKBRH3386.JPG?rect=326%2C0%2C3266%2C2177&w=622&auto=format%2Ccompress&fmt=avif)

কাজের ফাঁকে হাত পা সচল রাখা জরুরিমডেল: সিফাত। ছবি: কবির হোসেন

১. ধ্যান ও মনঃসংযোগ

হার্ভার্ডের গবেষণা বলছে, ধ্যান ও মনঃসংযোগ মানসিক চাপ কমায়, কাজে মনোযোগ বাড়ায়। মানুষকে বর্তমানের সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে সাহায্য করে। অনেকে প্রতিনিয়ত অতীত নিয়ে ভাবতে থাকেন, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হন। আর এই মানসিক চাপ দেহের কর্টিসলসহ বেশ কিছু হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে।

দিনের পর দিন এসব জটিলতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নষ্ট করে মস্তিষ্ক ও ক্ষতি করে হৃৎপিণ্ডের। এ ক্ষেত্রে ধ্যান ও মনঃসংযোগই আপনাকে নির্ভার হতে সাহায্য করতে পারে।

এ অভ্যাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোনো আসন বা ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট অনেক চর্চায় মন উৎফুল্ল রাখা যায়। যেমন মনোযোগ দিয়ে হাঁটা, গাছপালার দিকে তাকানো, পাখি দেখার মতো অভ্যাসই যথেষ্ট।

আবার খাওয়ার সময় ফোন স্ক্রল না করে কী খাচ্ছেন, তা দেখেবুঝে ধীরেসুস্থে খাওয়ার অভ্যাসেও আপনার মনোযোগ বাড়বে। এ ছাড়া হুট করে স্ট্রেস বেড়ে গেলে ‘বক্স ব্রিদিং’ করতে পারেন। বক্স ব্রিদিং হলো ছন্দের সঙ্গে সঙ্গে শ্বাস গ্রহণ আর ছাড়া।

এ পদ্ধতিতে শ্বাস কিছুক্ষণ ধরে রাখা, আবার ছাড়া ও আবার কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হয়। এই বক্স ব্রিদিং নিয়মিত পাঁচ মিনিট করলে শরীরের স্ট্রেস হরমোন কমে এবং চারপাশ পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতাও বাড়ে।

২. ভালো ঘুম

(https://media.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2024-02%2F1803fe64-7bd9-4e03-8b95-1f172a01881c%2F20230806_250A2860.jpg?w=622&auto=format%2Ccompress&fmt=avif)

৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো শরীরের জন্য ক্ষতিকরছবি: প্রথম আলো

ভালো ঘুম মানেই শরীরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, ভালো ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা বাড়ায়, মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। এতে দীর্ঘায়ুর সম্ভাবনাও বাড়ে।

এখন সাধারণ প্রশ্ন হলো, দিনে কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত? হার্ভার্ড গবেষকেরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের রাতে সাধারণত সাত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। তবে কয় ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘুমের গুণগত মান।

রাতভর এপাশ-ওপাশ করা, বারবার ঘুম ভাঙা বা স্লিপিং ডিজঅর্ডার থাকলে তেমন কোনো উপকার হয় না। আবার ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঠিকমতো সাত ঘণ্টার ঘুম আপনাকে রোগ থেকে দূরে রাখবে এবং দীর্ঘায়ু পেতে হবে সহায়ক।

স্লিপিং ডিজঅর্ডার থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সমাধান করতে পারেন। ভালো ঘুম শরীরের কোষগুলোকে পুনর্গঠনে সহায়তা করে এবং হরমোনের ভারসাম্য আনে।

৩. খাবারদাবার

ভালো ঘুমকে যদি আমরা দীর্ঘদিন সুস্থ থাকার কারিগর বলি, খাদ্যাভ্যাস হলো জ্বালানি। হার্ভার্ড এমন খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হওয়ার কথা বলছে, যেখানে প্রাকৃতিক ও গোটা শস্যজাতীয় খাবারকে প্রাধান্য দিতে হবে।

এর মানে হলো ফলমূল, সবজি, ডাল বা বীজ-জাতীয় খাবার খেতে হবে। একই সঙ্গে এড়িয়ে চলতে হবে প্রক্রিয়াজাত খাবার। কারণ, প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকে অনেক লবণ, চিনি, কৃত্রিম ফ্লেভার, কেমিক্যাল ইত্যাদি। এসব খাবার আমাদের হজমশক্তি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল করে এবং শরীরের প্রদাহ বাড়ায়।

মিষ্টিজাতীয় খাবার মাঝেমধ্যে খেলেও নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস কমিয়ে আনতে হবে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে খাবারের প্রতি। মন কী চাইছে, সেটা না দেখে শরীরের পুষ্টির চাহিদায় মনোযোগ দিতে হবে। এতে ধীরে ধীরে হজমশক্তি ভালো হবে, ঘন ঘন ক্ষুধা পাওয়া বা নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি অদম্য টানের ওপর নিয়ন্ত্রণ আসবে।

৪. হাঁটাচলা বাড়ান

ব্যায়ামকে আমরা অনেক সময় কঠিন কাজ হিসেবে দেখি। মনে হয়, এ যেন ৩০ মিনিটের অত্যাচার। তাই হার্ভার্ডের পরামর্শ, ব্যায়ামকে আনন্দের সঙ্গে জীবনযাপনের অংশ করে নিন। শিডিউল করা ব্যায়ামের বাইরেও একটু বাড়তি কাজ করতে পারেন।

এই বাড়তি কাজটুকু আবার খুব কঠিন কিছু নয়। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলা, লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার, অফিসের বিরতিতে স্ট্রেচিং, অবসরে বাগান করা, খেলাধুলা অথবা নাচের অভ্যাস থাকলেই চলে।

এসবের মধ্যে আপনার প্রিয় একটা কাজ বেছে নিয়ে, সেটারই চর্চা করতে পারেন। সারা দিন চলাফেরার মধ্যে বা সক্রিয় থাকাই মূল কথা। আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা রক্তনালি, বিপাকীয় তন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। তাই লম্বা কাজের ফাঁকে হাঁটাচলা করতে হবে।

৫. দূষণ থেকে বাঁচা

এই অভ্যাসের চর্চা করা কঠিন বটে। বিশেষত, বাংলাদেশে দূষণ বাড়ছেই। তবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, বায়ুদূষণ, মাইক্রোপ্লাস্টিক ও কেমিক্যালে ঝুঁকিও আমরা কমাতে পারি কিছু অভ্যাস রপ্ত করলে।

বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর পদার্থের কণা মানবদেহের ফুসফুস, এমনকি রক্তে মিশে যায়। এরপর ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড ও অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করে। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এ ক্ষেত্রে এয়ার পিউরিফায়ার, মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে রক্ষায় ফিল্টার করা খাওয়ার পানি এবং প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়া রান্নায় গ্যাসের চুলা ব্যবহার করলে রান্নাঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা জরুরি। ঘরে ও বাইরে গাছপালা লাগানো যেতে পারে। এসব অভ্যাসে আমরা হয়তো পুরোপুরি দূষণ থেকে মুক্তি পাব না, তবে ক্ষতির মাত্রা কমবে।

Source: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/hh5fi4d0fy