Daffodil International University

Outsourcing => Freelancing => Topic started by: Badshah Mamun on November 05, 2025, 01:18:33 PM

Title: ফ্রিল্যান্সিংয়ে নামার আগে এ পাঁচটি বিষয় ভাবুন
Post by: Badshah Mamun on November 05, 2025, 01:18:33 PM
ফ্রিল্যান্সিংয়ে নামার আগে এ পাঁচটি বিষয় ভাবুন

(https://media.prothomalo.com/prothomalo%2Fimport%2Fmedia%2F2017%2F12%2F17%2Fa88c6a41c90d5bce3cccdbadc04ba761-5a369652857ae.jpg?rect=61%2C0%2C1350%2C900&w=622&auto=format%2Ccompress&fmt=avif)

বাংলাদেশে এখন অনেক তরুণ–তরুণী চাকরির বাইরে বিকল্প কর্মজীবন খুঁজছেন। কেউ অফিসের ধরাবাঁধা নিয়মে ক্লান্ত, কেউবা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ চান। অনলাইনে কাজের সুযোগ বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং হয়ে উঠছে বড় ভরসার জায়গা। তবে ফ্রিল্যান্সিং মানে শুধু ‘বাড়িতে বসে কাজ করা’ নয়, এটা নিজের ব্যবসা শুরু করার মতোই এক চ্যালেঞ্জ। ঠিকভাবে পরিকল্পনা না করলে এই স্বাধীন জীবন দ্রুতই অনিশ্চয়তায় বদলে যেতে পারে। তাই শুরু করার আগে কিছু বিষয় ভেবে নেওয়া জরুরি।

বিশ্বের অন্যতম অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপওয়ার্কের ২০২৫ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন বিশ্বজুড়ে দক্ষ জ্ঞানভিত্তিক কর্মীদের প্রায় ২৮ শতাংশ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছেন। আবার পূর্ণকালীন চাকরিতে থাকা ৩৬ শতাংশ কর্মী ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিংয়ে নামার কথা ভাবছেন। বাংলাদেশেও এ প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা এখন ছয় লাখের বেশি। স্বাধীনভাবে কাজ করা যতটা আকর্ষণীয়, প্রস্তুতি ছাড়া নামলে ততটাই কঠিন। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দিন।


১. লক্ষ্য ঠিক করুন: পার্টটাইম না ফুলটাইম?

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে স্পষ্ট করে ভাবুন, আপনি কি চাকরি ছাড়তে চান, নাকি বাড়তি আয় করতে চান? যদি লক্ষ্য হয় একটু বাড়তি আয়, তাহলে চাকরির পাশাপাশি কাজ শুরু করা ভালো। এতে আর্থিক ঝুঁকি কমবে, অভিজ্ঞতাও বাড়বে। কিন্তু যদি পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিংয়ে যেতে চান, তাহলে আগে থেকে পরিকল্পনা করা জরুরি। কত টাকা আয় করতে হবে, কোন ধরনের ক্লায়েন্ট টার্গেট করবেন, কীভাবে কাজ পাবেন—এসব প্রশ্নের উত্তর তৈরি রাখুন। স্পষ্ট লক্ষ্য না থাকলে ‘স্বাধীনভাবে কাজ’ করার পরও যেন আবার নতুন এক চাকরির চাপে পড়ে যাচ্ছেন।

২. বাজারের চাহিদা বোঝার চেষ্টা করুন

সব দক্ষতার কাজ সব সময় সমানভাবে চাহিদাসম্পন্ন নয়। এখন কোন ক্ষেত্রগুলোয় কাজের চাহিদা বাড়ছে, সেটা জেনে রাখা দরকার। আপওয়ার্ক, ইভার বা লিংকডইনের মতো প্ল্যাটফর্মে ঘুরে দেখুন কোন ধরনের প্রকল্প বেশি পোস্ট হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সাম্প্রতিক সময়ে ভিডিও এডিটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ডেটা অ্যানালিটিকস, ডিজিটাল মার্কেটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) কাজের চাহিদা বাড়ছে। শুধু দক্ষতা থাকলেই হবে না, বাজারে তার চাহিদা কতটা, সেটিও বুঝতে হবে। ক্লায়েন্টের সমস্যার সমাধান দিতে পারলেই আপনি টিকে থাকতে পারবেন।

৩. পছন্দের কাজ বেছে নিন

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনি নিজের কাজ ও সময় বেছে নিতে পারেন। কিন্তু এই স্বাধীনতা তখনই অর্থবহ হবে, যখন আপনি কাজটাকে ভালোবাসেন। শুধু টাকার চিন্তা করে এমন কাজ বেছে নিলে কিছুদিন পরেই একঘেয়েমি চলে আসে। বরং যেটা করতে ভালো লাগে, সেটাতেই নিজের সময় দিন। যেমন লেখালেখি ভালো লাগলে কনটেন্ট রাইটিং বা কপিরাইটিং শিখুন, ডিজাইন ভালো লাগলে গ্রাফিক ডিজাইন বা ইউআই বা ইউএক্স শেখা শুরু করুন। যে কাজ আনন্দ দেয়, সেখানে উন্নতিও দ্রুত হয়।

৪. তাড়াহুড়া নয়, শুরু করুন ধীরে


অনেকে এক দিনেই চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিংয়ে চলে যেতে চান। কিন্তু এটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। শুরুতে ক্লায়েন্ট পাওয়া কঠিন, নিয়মিত আয়ও হয় না। তাই প্রথম কয়েক মাস চাকরির পাশাপাশি পার্টটাইম ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা ভালো। এতে আপনি বুঝতে পারবেন বাজারের বাস্তবতা কেমন, কাজের চাপ কতটা, ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ কতটা কঠিন বা সহজ। একবার নিয়মিত কাজ ও আয় শুরু হলে তখন ভাবতে পারেন ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সিংয়ে যাওয়ার কথা।

৫. ব্যবসার নিয়মকানুন জানুন

ফ্রিল্যান্সিং মানে, আপনি নিজেই নিজের বস। তাই ব্যবসার মৌলিক নিয়মগুলো জানা খুব জরুরি। দাম নির্ধারণ, চুক্তি করা, ইনভয়েস পাঠানো, কর পরিশোধ করা—এসব বিষয় বোঝা দরকার। বাংলাদেশে অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার শুরুতে এসব বিষয়ে অসচেতন থাকেন, পরে সমস্যায় পড়েন। প্রতিটি কাজের শর্ত আগে থেকে লিখিতভাবে (ই–মেইল বা বার্তায়) স্পষ্ট করে রাখুন। সময়মতো কাজ দিন ও ক্লায়েন্টের সঙ্গে পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন। নিজের আয়–ব্যয়ের হিসাব রাখুন। প্রয়োজনে কোনো হিসাবরক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। আপনি যত বেশি সংগঠিত ও পেশাদার হবেন, ক্লায়েন্টদের আস্থা তত বাড়বে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অবস্থানগত সীমাবদ্ধতা এখানে খুব একটা নেই। একজন তরুণ খুলনা, দিনাজপুর বা কক্সবাজারে বসেই লন্ডন বা সান ফ্রান্সিসকোর ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। তবে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। তাই শুধু দক্ষতা নয়, দরকার যোগাযোগক্ষমতা, সময় ব্যবস্থাপনা ও নিয়মিত শেখার মানসিকতা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্র হবে ‘মাইক্রোশিফটিং’ অর্থাৎ মানুষ একসঙ্গে একাধিক ক্ষুদ্র প্রকল্পে কাজ করবে, নিজের দক্ষতা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভাগ করে দেবে। এই পরিবর্তনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং স্বাধীনতা দেয়, তবে সেই স্বাধীনতার সঙ্গে আসে দায়িত্বও। যাঁরা পরিকল্পনা করে, বাজার বোঝে ও কাজের মানে আপস করে না, তাঁদের জন্য এটি হতে পারে টেকসই ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশে এই খাতে এখনো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার ভেবে দেখুন, আপনি কি কেবল বাড়তি আয় চান, নাকি নিজের ভবিষ্যৎ নতুনভাবে গড়তে চান?

Source: https://www.prothomalo.com/chakri/chakri-suggestion/up7a5nip3n