Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Story, Article & Poetry => Topic started by: Dr. Md. Harun-or Rashid on June 06, 2012, 11:34:19 AM

Title: গুচ্ছ কবিতা
Post by: Dr. Md. Harun-or Rashid on June 06, 2012, 11:34:19 AM
হেরেমের বালিকারা
গতকালের গোধুলিবেলায় দলছুট যে বালিকার সাথে
হেঁটেছি গৌড়ের রাজপথে, কালিন্দি-কীর্তিনাশার চরে
আজ তার সাথে দেখা ফার্মগেট ওভার ব্রিজের ওপরে
‘লুকোচুরি দরজা’র খিলানের মত তার ভ্রু নাচিয়ে
দরিদ্র ফেরিওয়ালা, অনাথ ভিখিরিদের থেকে গা বাঁচিয়ে
অনায়াশে এবং অকপটে সে পার হয়ে গেল ভিড় ঠেলে

কালিন্দি পাড়ের শঠিফুল-রঙা তার নেকাব থেকে
কবেকার ফেলে আসা সন্ধ্যার বাতাবী লেবুর ঘ্রাণ
ততক্ষণ আমার মন-প্রাণ
ভিজিয়ে উড়ে চলল মানিক মিয়া এভিনিউ ধরে ধরে
শীতলক্ষ্যার স্যাঁতস্যাঁতে চরে।

কিন্তু আমাদের তো দৌড় কালিন্দির খাড়া পাড় অবধি,
‘সাতাশঘরা প্রাসাদে’, হেরেমের দেয়ালে শিকলঘন্টি
কোনদিন বেজে উঠবেনা জেনেও আমরা নিরবধি
কীর্তিনাশার তীরে তীরে গড়ে গেছি অবুঝ শিলালিপি;
কতকাল হেরেমের তাগড়া খোজাদের পাহারা এড়িয়ে
গেছি বালিকাদের উচ্ছল হাসির দিকে, তাদের খিলানের মত ভ্রু
তাড়িয়ে নিয়ে গেছে গৌড়ের রাজপথ-বাজার-তমাল-তরু;
ছইওলা ঘোড়াগাড়ীর ধুলায় খয়েরী মেঘ ঘুর্ণিপাক খেতে খেতে
নেমে গেছে কীর্তিনাশার ক্ষীণ জলধারার কাছে। হেরেম বালিকার
নেকাবের ঘ্রাণ মেলে আজও মানিকমিয়া দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে।
ঢাকা, ১২/০৩/২০১২

খুঁজে ফিরি আজও তাঁরে

খুঁজে ফিরি আজও তাঁরে
বোশেখের তপ্ত দুপুরে-বিরান মাঠের ধারে
বকের পাখার মতন দুধসাদা মেঘের মিনার
এলোমেলো দোলে -সেইখানে মুখ খুঁজি তাঁর!
পাণ্ডুর হয়ে আছে পাণ্ডুয়া সেই কবেকার;
নিমগ্ন মাঝরাঙার মত একাকী খিয়ার পাথারে!

দেখা মেলে বাড়ালেই দু’পা
কলার শেষ মোচার মত ঝুলে থাকা ভরাট তাঁর খোঁপা
খুলে দেয় বৈশাখী বাতাস, দোলায় কলাপাতার চিরুনী,
আঁচড়ায়ে পরিপাটি করে বরেন্দ্রভূমি, বেঁধে দেয় বেণী;
বুকের ভেতর শুধু বয় ধুলা-রঙ ঝড়-কেটে চলে স্বপ্নের বিনুনী।
তবুও দিনগুলি কেটে যায় আমনের অপেক্ষায়-বুনে চলি রোপা!

এইভাবে বুক বাঁধি ফের
ফিরে যে পাবোনা তাঁরে জানা আছে ঢের!
বুকপকেটে তবু নিয়ে ফিরি সেদিনের জান্নাতাবাদ
তপ্ত দুপুর ভেঙে নামে যদি ঝড়- দূর যদি হয় অপবাদ-
আরো একবার পা ডোবাই বৈশাখী জলে -বড় সাধ;
সাধ্যের বুরুজ থেকে শিলা ভাঙে -পাই তার টের!

খুঁজে ফিরি আজও তাঁরে
বোশেখের তপ্ত দুপুরে-বিরান মাঠের ধারে
বকের পাখার মত দুধসাদা মেঘের মিনার
এলোমেলো দোলে -সেইখানে মুখ খুঁজি তাঁর!
পাণ্ডুর হয়ে আছে পাণ্ডুয়া সেই কবেকার
নিমগ্ন মাঝরাঙার মত একাকী খিয়ার পাথারে!
১০/০৫/২০১২

চোখ জোড়া বুঁজে এলে
চোখ জোড়া বুঁজে এলে তেড়ে আসে তারা
অগোছালো-এলোমেলো-দিক্-দিশাহারা
জৈষ্ঠ্যের রাতের বাতাসে ঝিঁঝিঁর ডাকের মত অবিরাম
ডেকে যায়; বুঝিনা খেই তার -ডান, নাকি বাম?
কোন্ দিকে গেলে পরে বর্হিপথ- কোন্ গুহামুখ
পানে এগোলে -ফিরে পাবো বতুতার দেখা সুখ;

বেসুরেরও সুর আছে-কোলার সান্ধ্য গানেও স্বরলিপি,
গোল বাঁধে বাদকের অনৈক্যে জানি, বলি, ভাগ্যলিপি
লেখা থাকে, ঘোল-রঙ চাঁদের জমীনে কর্মহীন চরকারা যত
চেয়ে থাকে তারা আমাদের বোজা চোখের ওপর, অবিরত
পিছু ধায়-ধেয়ে চলা চাঁদের মত আসে  ছুটে ছুটে
খুঁজে ফেরে জৈষ্ঠ্যের রাতের আধাঁরে ঘুঁটঘুঁটে।
০৮/০৫/২০১২
 

ঝিঁঝিঁ
তপ্ত বাতাসে সাঁতার কেটে কেটে অবসন্ন মেঘগুলি শেষে
পা ছড়িয়ে বসে পড়ে বেসুরো ঝিঁঝিঁদের কোরাসের মাঝে,
সান্ধ্য আসর মাতানো বর্ষার আগমনি গান ভালবেসে
গা এলিয়ে বসে পড়ে কুমারী মেঘেরা ধুলারঙ জৈষ্ঠ্যের সাঁঝে।
 
বেরসিক চৌকিদারের বাঁশি-উদ্বেগ নিয়ে আসে পলাশীর মত
বিষন্নতা আনে ভগিরথীর দুই কূলে-ফারাক্কার ভাটিতে ও চরে
তারপরও নিমগ্ন নিমিষেই; জারি-সারি, ভাটিয়ালি অবিরত
গেয়ে যায় তারা; মেঘের মেয়েরা সুধা ঢালে কড়ির কলসে ভরে।

স্যাঁতস্যাঁতে মাটিও জান্নাত বনে যায় পেলে বাদশাহ হুমায়ুন
কিশোর রাতগুলি হঠাৎ যৌবনে বাঁক নেয় পানিপথ ধরে;
ঘোলামুখ চাঁদ সাঁত্রে চলে আকাশের নদী-সাথে মেঘ সঘন,
দলছুট গায়কেরা ডেকে যায় নিরুদ্বেগ-একমনে -মমতাভরে।
১৬/০৫/২০১২[/size]
Title: Re: গুচ্ছ কবিতা
Post by: ananda on June 06, 2012, 02:23:56 PM
অসাধারণ লাগলো। প্রথম কবিতাটা মনে থাকবে সবসময়। যেন জীবনানন্দকে খুজেঁ পেলাম কবিতায়।
Title: Re: গুচ্ছ কবিতা
Post by: Dr. Md. Harun-or Rashid on June 25, 2012, 10:49:31 AM
Thank you, sir for your valuable comments on my poems.