Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Sports Zone => Football => Topic started by: Mohammed Abu Faysal on July 07, 2012, 12:06:40 PM
-
গত সাত বছর ধরে চলা ফুটবলীয় এক বিতর্কের অবসান হল শেষ পর্যন্ত। অবশেষে দীর্ঘকালের অচলায়তন ভেঙে ফুটবলে প্রযুক্তির প্রবলেম মেনে নিল ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সভা শেষে জুরিখে ফিফার মহাসচিব জেরোম ভালকে জানিয়ে দিলেন, ফুটবলে গোললাইন টেকনোলজি অনুমোদন করছেন তারা। এর ফলে এখন থেকে ক্লাব বা আন্তর্জাতিক ফুটবলে আয়োজকরা চাইলে গোল হয়েছে কি না, নিশ্চিত হওয়ার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে প্রযুক্তির ব্যবহার এখনও বাধ্যতামূলক করেনি ফিফা।
২০০৫ সালে শুরু হওয়া এই বিতর্কের অবসানকল্পে তিন তিনবার ইউরোপে গোললাইন টেকনোলজি নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা হয়েছে। অবশেষে ইংল্যান্ড, জার্মানি, হাঙ্গেরি ও ইতালির লিগে সফলভাবে এই পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর এই অনুমোদন দেয়া হল। অনুমোদন দেয়া হল ফিফার সহযোগী সংস্থা, আন্তর্জাতিক ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ডের (আইএফএবি) বিশেষ সভার পর। ৯টি প্রতিষ্ঠান ভিন্ন ভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে এই পরীক্ষায় অংশ নিলেও সন্তোষজনক হওয়ায় লাইসেন্স পাচ্ছে শুধু হক আই ও গোলরেফ নামে দুটি সংস্থা। কোনো আয়োজককে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হলে এই দুটি সংস্থার কাউকেই ডাকতে হবে।
ফুটবলের আদিকাল থেকেই এই বিতর্ক চলছিল। গর্ডন বাঙ্কসের বিখ্যাত সেভটি আসলে গোললাইন অতিক্রম করেছিল কি না; সে নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে সাম্প্রতিক বিতর্ক শুরু হয় ২০০৫ সালে ম্যানইউ বনাম টটেনহ্যাম ম্যাচে। টটেনহামের পেদ্রো মেন্ডেস ৪৫ গজ দূর থেকে শট করেন। সে শট সেভ করে বল মাঠে পাঠান ম্যানইউ গোলরক্ষক রয় ক্যারল। পরে ভিডিওতে দেখা যায় ক্যারল লাইনের অন্তত হাত খানেক ভেতর থেকে বল ‘সেভ’ করেছেন।
এরপর পরপর কয়েকটা এরকম ঘটনার প্রেক্ষিতে ফিফা সিদ্ধান্ত নেয় কোনো একটা প্রযুক্তি খতিয়ে দেখার। এডিডাস মাইক্রোচিপ সম্বলিত বল নিয়ে সামনে আসে। তাদের প্রস্তাবিত প্রযুক্তিতে আরেকটি চিপ ছিল লাইনের ওপর। ফলে বল লাইন অতিক্রম করলেই সংকেত মেলার কথা। কিন্তু দেখা গেল এডিডাসের এই প্রযুক্তি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাজ করছে না; কখনো কখনো ভুল সংকেত দিচ্ছে।
ফলে ২০১০ সালে ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটার উড়িয়ে দেন ফুটবলে প্রযুক্তির সম্ভাবনা। ঘটনাচক্রে সে বছরই বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের এক শট মহা বিতর্ক তৈরি করে। সে সময় শটটি গোল বলে স্বীকৃতি না পেলেও পরে দেখা যায় গোল ছিল! বল বারে লেগে ভেতরে ড্রপ খেয়ে ফেরে।
এরপর ইংলিশ লিগে আবারও পরপর কয়েকটি ঘটনা ঘটে। যার আরও একটিতে এরকম দুর্ভোগে পড়েন ল্যাম্পার্ড। সদ্য শেষ হওয়া ইউরোতে জন টেরির ফেরানো এক বল নিয়েও এরকম বিতর্ক হল। আবার ফিফা সক্রিয় হয়ে ওঠে। নটি আগ্রহী সংস্থাকে বিভিন্ন দেশে পরীক্ষা নীরিক্ষা করার সুযোগ দেয়া হয়। এর মধ্যে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে হক আই ও গোলরেফ। তারাই অবশেষে অনুমোদন পেল।
স্টেডিয়াম ভিন্নতায় এই প্রযুক্তি বসাতে মাঠে খরচ হবে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজার ইউরো। কোনো স্টেডিয়ামে এই প্রযুক্তি বসালে ফিফা টেকনিক্যাল কমিটির বিশেষজ্ঞরা এসে খতিয়ে দেখে অনুমোদন দেবেন। তবেই খেলা চালানো যাবে। খেলা চলা অবস্থায় রেফারির হাতের ঘড়িতে প্রতিবার গোললাইন অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে সংকেত দেবে এই প্রযুক্তি। এই সংকেত একই সঙ্গে তার দুই সহকারী ও ম্যাচ কমিশনারের কাছেও যাবে। রেফারি চাইলে এই সংকেত অগ্রাহ্য করতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে তাকে ম্যাচ শেষে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে হবে।
-
Great decission of FIFA.