Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - azad.ns

Pages: [1] 2 3
1
Islam / Quran and Hadith
« on: January 04, 2024, 09:37:27 AM »
ভেঙ্গে পড়ো না, নিরাশ হয়ো না, জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে। 💖
[সূরা-বাকারা: ২১৪]

2
Education / Preparation of standard 0.1N Sodium Carbonate solution.
« on: November 12, 2023, 03:18:09 PM »
Principle:
 Standard solutions are those solutions which contains known weight of reagent in a definite volume of solution. Most of the standard solutions are prepared by dissolving weight amount of solid and adding sufficient water to make the desired volume. We must determine how much solid to weight out to prepare a given volume of solution of a given strength.

Apparatus and Chemical:  1.Digital balance, wash bottle, Distilled water, Sodium Carbonate (Na2CO3), Volumetric flask etc.
Preparation of Sodium Carbonate (Na2CO3): I wanted to prepare 100ml of 0.1N Solution. So, we Calculate the concentration like this way.
Molecular weight of Na2CO3  = 23*2+12+16*3 =106
Equivalent weight of  Na2CO3  = 106/2 = 53
So In 1000ml of 1N Na2CO3 present = 53g
          1                 1N                               =53/1000g
          100             0.1N                           =(53*100*0.1)/1000g = 0.53 g


Concentration of Na2CO3 = wt.  taken /wt. to be taken X desired conc.
                                               =   0.53 / 0.53 X  0.1 N
                                               = 0.1 N
Procedure:
1. At first taken weight out 1.325g of  Na2CO3 with the help of a digital balance.
2. The Volumetric flask cleaned with distilled water.
3. placed the funnel on the top of the Volumetric flask and then into weighted amount of Na2CO3.
4. slowly run the  Distilled water over the funnel and shake the flak until mixed properly.
5.Finally  the  Distilled water was poured in to the flask up to the mark to make a 250ml solution

Result: The exact concentration of preparation of the Na2CO3 solution is 0.1N.



3

সেই গ্রহ, যা উবে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
যেন একটা কেটলিতে জল ফুটছে আর সেই কেটলির মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে গরম ধোঁয়া! আর সেই জল কেটলিতে ফুটতে ফুটতে পুরোটাই উবে যাচ্ছে! ধীরে ধীরে। কিছু ক্ষণ পর দেখা যাবে সেই কেটলিতে আর একটুও জল পড়ে নেই। পুরোটাই উবে গিয়েছে।
ঠিক একই রকম অবস্থা হয়েছে মহাকাশে। আমাদের সূর্যের চেয়ে অনেক অনেক বেশি দাউদাউ করে জ্বলা একটা তারা বা নক্ষত্র নিজেরই একটা ‘সন্তান’, আস্ত একটা গ্রহকে যেন গিলে খাচ্ছে। ওই তারার গা পুড়িয়ে দেওয়া তাপে তাকে পাক মেরে চলা আস্ত একটা গ্রহ ধীরে ধীরে উবে যাচ্ছে! এমন একটা দিন আসবে যখন ওই ভিন গ্রহটির আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না।
একেবারে হালে সেই রাক্ষুসে তারা আর তাকে পাক মেরে চলা ও ধীরে ধীরে উবে যাওয়া গ্রহ ‘কেল্ট-৯বি’ ধরা পড়েছে ২৭ বছর ধরে মহাকাশে থাকা হাব্‌ল স্পেস টেলিস্কোপের চোখে। অন্য নক্ষত্রমণ্ডলের সেই ভিন গ্রহটি চেহারায়, আকারে-আকৃতিতে দেখতে অনেকটা আমাদের বৃহস্পতির মতো। পুরোটাই গ্যাসে ভরা। আর অসম্ভব গরম সেই গ্রহটি।
ওই আবিষ্কারের গবেষণাপত্রটি হালে প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার’-এ। গত সপ্তাহের মাঝামাঝি টেক্সাসের অস্টিনে আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির গ্রীষ্মকালীন বৈঠকে সেই গবেষণাপত্রটি নিয়ে সবিস্তার আলোচনার পর তা নিয়ে শোরগোলও শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্ব জুড়ে।

জ্বলে পুড়ে খাক হতে হতে উবে যাচ্ছে এই সেই গ্রহ
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এত গরম ভিন গ্রহের হদিশ এর আগে মেলেনি। ‘কেল্ট-৯বি’ ভিন গ্রহটিই এই ব্রহ্মাণ্ডে আপাতত সবচেয়ে উষ্ণ কোনও গ্রহ। শুধু তাই নয়, সূর্যের মতো যত তারা বা নক্ষত্রের হদিশ মিলেছে এখনও পর্যন্ত, তাদের বেশির ভাগের চেয়েই অনেক অনেক বেশি গরম, গা অনেক বেশি তেতেপুড়ে যাচ্ছে এই সদ্য অবিষ্কৃত ভিন গ্রহ- ‘কেল্ট-৯বি’র।

নক্ষত্র ‘কেল্ট-৯’ (বাঁ দিকে) আর উবে যাচ্ছে যে গ্রহ, সেই ‘কেল্ট-৯বি’

নক্ষত্র ‘কেল্ট-৯’ (ডান দিকে) আর উবে যাচ্ছে যে গ্রহ, সেই ‘কেল্ট-৯বি’
চাঁদ যেমন তার একটা পিঠ সব সময় রাখে পৃথিবীর দিকে, এই ‘কেল্ট-৯বি’ ভিন গ্রহটিও তেমনই তার একটা পিঠ সব সময় রাখে তার নক্ষত্র ‘কেল্ট-৯’-এর দিকে। আর তার অন্য পিঠটি সব সময়েই থেকে যায় অন্ধকারে।
ওই ভিন গ্রহের যে পিঠটি সব সময় তার নক্ষত্রের দিকে থাকে, তার নাম- ‘ডেসাইড সারফেস’। অন্য পিঠটির নাম- ‘নাইটসাইড সারফেস’। বছরভর, সারা ক্ষণ সেই গ্রহটির ‘ডেসাইড সারফেস’-এর তাপমাত্রা থাকে ৭ হাজার ৮০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা, ৪ হাজার ৩১৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৪ হাজার ৬০০ কেলভিন)।
মূল গবেষক কলাম্বাসের ওহায়ো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক স্কট গাউরির সঙ্গে আনন্দবাজারের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল, টেলিফোনে। গাউরির দাবি, ‘‘এত গরম, গ্যাসে ভরা ভিন গ্রহের হদিশ এর আগে মেলেনি। আমাদের বৃহস্পতির মতো গ্যাসে ভরা গ্রহ হলেও ‘কেল্ট-৯বি’ ভিন গ্রহটি ‘গুরুগ্রহ’-এর চেয়ে প্রায় তিন (সঠিক হিসেবে, ২.৮ গুণ) গুণ ভারী। যদিও তার ঘনত্ব আমাদের বৃহস্পতির প্রায় অর্ধেক।’’
এটা কি সত্যি-সত্যিই কোনও গ্রহ? নাকি অন্য ধরনের কোনও মহাজাগতিক বস্তু?

সেই উবে যাওয়া ভিন গ্রহ (লাল রং), যা পাক মারছে তার নীলচে নক্ষত্রের চার পাশে, কক্ষপথে
আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির গত সপ্তাহের বৈঠকে ওই গবেষণাপত্রটি নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে ‘নানা মুনির নানা মত’। কেউ বলছেন, সত্যি-সত্যিই কি কোনও গ্রহ অতটা গরম হতে পারে? অনেক তারা বা নক্ষত্রের চেয়েও যে বেশি গরম ‘কেল্ট-৯বি’ ভিন গ্রহটি। তাঁদের সংশয়, অন্য কোনও ধরনের মহাজাগতিক বস্তু নয় তো ‘কেল্ট-৯বি’?
আরও পড়ুন- ফের পাশ করলেন আইনস্টাইন, সংশয় কাটাল অ্যাস্ট্রোস্যাট
সহযোগী গবেষকদের অন্যতম, জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বসন্ত রেড্ডি আনন্দবাজারের পাঠানো প্রশ্নের জবাবে ই-মেলে লিখেছেন, ‘‘ভরের নিরিখে ‘কেল্ট-৯বি’কে গ্রহ বলে মনে হলেও, তার যে বায়ুমণ্ডল রয়েছে বলে এখনও পর্যন্ত আমাদের অনুমান, তা কোনও গ্রহের হতে পারে বলে আমাদের জানা নেই। ওই গ্যাসে ভরা ভিন গ্রহটির যে পিঠটি সব সময় তার নক্ষত্র ‘কেল্ট-৯’-এর দিকে থাকে, তার যা তাপমাত্রা জানা গিয়েছে, তা কোনও গ্রহের হলে আর সর্ব ক্ষণ সেই গ্রহটিকে সেই তাপমাত্রায় পুড়ে যেতে হলে, সেই গ্রহের বেশি দিন টিঁকে থাকা সম্ভব নয়। আর সেই গ্রহটির যদি বায়ুমণ্ডল থেকেও থাকে, তার অত গরম নক্ষত্রের সুতীব্র বিকিরণে সেই বায়ুমণ্ডলের উবে যেতে খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়।’’
কতটা তীব্র সেই বিকিরণ? কেন বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, উবে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ওই ভিন গ্রহটির?
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভিজিটিং প্রফেসর অর্ণবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘যে নক্ষত্রটিকে পাক মারছে ওই ভিন গ্রহটি, সেই ‘কেল্ট-৯’ খুব বেশি দিন আগেকার তারা নয়। তার জন্ম হয়েছিল বড়জোর ৩০ কোটি বছর আগে। যেখানে আমাদের সূর্যের জন্ম হয়েছিল প্রায় ৫০০/৫৫০ কোটি বছর আগে। কিন্তু সেটি আমাদের সূর্যের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বড়। আর সূর্যের চেয়ে তা প্রায় দ্বিগুণ গরমও। যে ভাবে সর্ব ক্ষণ ওই গ্রহ ‘কেল্ট-৯বি’-র একটা পিঠে আছড়ে পড়ছে তার নক্ষত্র থেকে বেরিয়ে আসা আলট্রা-ভায়োলেট রে’ বা অতিবেগুনি রশ্মি, তাতে তার বায়ুমণ্ডলের একটা বড় অংশই উবে যেতে বাধ্য। আর সেটা মহাকাশে বেরিয়ে আসবে অনেকটা ধূমকেতুর পুচ্ছ বা ‘টেল’-এর মতো। ওই অতিবেগুনি রশ্মির তাপেই ধীরে ধীরে উবে যাচ্ছে ভিন গ্রহ ‘কেল্ট-৯বি’-র বায়ুমণ্ডল।’’
তবে বিজ্ঞানীদের এটাও অনুমান, যে ভাবে অসম্ভব তাপ ঠিকরে বেরচ্ছে ওই নক্ষত্র ‘কেল্ট-৯’-র পিঠ থেকে, তাতে সেই তারাটিও আর খুব বেশি দিন ওই অবস্থায় থাকবে না। হয়ে যাবে ‘লাল দানব নক্ষত্র’ বা ‘রেড জায়ান্ট স্টার’।

4
কলকাতায় নাকি ডাইনোসর আছে!
আছেই তো, কিন্তু কোথায় সেটি বোধহয় জানা নেই অনেকরই। কেউ কেউ হয়তো বলবেন, কেন, ভারতীয় জাদুঘরে। আসলে তা নয়, জাদুঘরে ডাইনোসর নেই, সেটি আছে বরাহনগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে। এবং আশ্চর্যের বিষয়, সেটি রবীন্দ্রনাথের নামেই নামাঙ্কিত! অবাক লাগছে তো! একটু গোড়া থেকেই বলি। ১৮৯৩ সালের ২৯ জুন নীরোদবাসিনী দেবী এবং প্রবোধচন্দ্র মহলানবিশের প্রথম সন্তান প্রশান্তচন্দ্রের জন্ম হয়। সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গুরুচরণ মহলানবিশ প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুলে প্রশান্তচন্দ্রের শিক্ষারম্ভ হয়। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯১২-য় পদার্থবিদ্যায় সাম্মানিক বিএসসি পাশ করেন। পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে তিনি ‘ট্রাইপস’ পাশ করেন এবং প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই সম্মান অর্জন করেছিলেন। দেশে ফিরে ১৯১৫-য় তিনি প্রেসিডেন্সিতেই পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত হন। রাশিবিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহ ছিল বলে এখানেই কয়েক জনকে নিয়ে তিনি একটি স্ট্যাটিস্টিক্যাল ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেন, সেটি ১৯২০-র কথা। সার্বিক ভাবে দেশের আবহাওয়া, বন্যা অথবা নৃতত্ব বিষয়ে রাশিবিজ্ঞানের প্রয়োগ নিয়ে এখানে উল্লেখযোগ্য কাজ শুরু হয়। কিন্তু তাঁর মনের একান্ত ইচ্ছে ছিল রাশিবিজ্ঞানের প্রয়োগ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।১৯৩৩-সালে তৈরি হয়েছিল ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট
১৯৩৩-এ ওঁর সেই স্বপ্নপূরণ সম্ভব হয়, তৈরি হয় ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট। ১৯৪০-এ প্রশান্তচন্দ্র বরাহনগরে একটি পুরনো বাগান বাড়ি কিনেছিলেন। সবুজ গাছপালা পুকুর সম্বলিত এই বাড়িটি সংস্কার করে এখানেই তিনি থাকতে শুরু করেন। শিক্ষক জীবনের সঙ্গেই ওঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠতে থাকে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে। ক্রমে সেই পরিচয় গাঢ় হয়। নিজের জীবন ও মননে রবীন্দ্র আদর্শকে গ্রহণ করেন প্রশান্তচন্দ্র। ওঁর তৈরি ইনস্টিটিউটটি পরে এখানেই স্থানান্তরিত হয়। প্রশান্তচন্দ্র রাশিবিজ্ঞানে অনেকগুলি সূত্র এবং পদ্ধতির আবিষ্কার করেন। নমুনা সমীক্ষায় একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণাপত্রের জন্য ১৯৪৫ সালে তিনি রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। প্রশান্তচন্দ্রের আন্তরিক উদ্যোগে এই প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে রাশিবিজ্ঞানের প্রয়োগ ঘটতে থাকে। ওঁর ভাবনায় ছিল এই বৃহৎ দেশের নানাবিধ বিষয়। একসময়, গণ্ডোয়ানা-ল্যান্ড যখন ছিল সেই সময় এ দেশেও চড়ে বেড়াত বৃহদাকার ডাইনোসরের দল। পরে ভূতাত্ত্বিক প্লেট সরে যাওয়ার সময় সেই ডাইনোর দল চলে যায় অন্যত্র। কিন্তু এখানে রয়ে যায় তাদেরই একটির কঙ্কাল। বিজ্ঞানের এই বিষয়গুলি নিয়েও ভাবিত ছিলেন প্রশান্তচন্দ্র। এ বিষয়ে এক দিন নতুন কোনও আশার আলো দেখা যাবে এই বিশ্বাস ছিল তার মনে।
১৯৫৭-য় গবেষক-অধ্যাপক পামেলা লামপ্লাউ রবিনসনকে আমন্ত্রণ করেন প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ। লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে উনি এসে হাজির হন এখানে। বরাহনগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে তিনি একটি ভূতাত্ত্বিক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। উদ্দেশ্য ছিল, এ দেশের ভূতাত্ত্বিক বিষয়গুলি নিয়ে নতুন ক্ষেত্রের গবেষণা করা। রবিনসনের নেতৃত্বে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের কোল ঘেঁষে গোদাবরী উপত্যকায় অনুসন্ধান শুরু হয়। এই অনুসন্ধানের ফলে কিছু ফসিল মাছ পেয়ে যান তাঁরা। পরে ১৯৬১-তে অনুসন্ধান করতে গিয়ে তাঁরা একটি ডাইনোসরের হাড়গোড় আবিষ্কার করেন গোদাবরী উপত্যকায়। ভারতে প্রথম এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের পর কয়েক টন হাড় কলকাতায় এনে জড়ো করা হয়। অতঃপর, আবিষ্কারস্থলের ছবি মিলিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয় এই ডাইনোসরটিকে। পাওয়া যায় অতিকায় প্রাণীটির পূর্ণাঙ্গ চেহারা। এর নাম দেওয়া হয় ‘বরাপাসউরাস টেগোরেই’। বরাপাসউরাস শব্দের অর্থ বড় পা যুক্ত গিরগিটি এবং টেগোরেই শব্দটি যুক্ত হয়েছিল রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানিয়ে। ঘটনাক্রমে সেই বছর ছিল রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষ। সে কারণেই এই উদ্যোগ। এ ভাবেই এই উপমহাদেশের এক এবং অদ্বিতীয় ডাইনোসরের সঙ্গে জুড়ে গেছে কবিগুরুর নাম!

রানি ও প্রশান্তচন্দ্র মহালানবিশকে দেওয়া রবীন্দ্রনাথের উপহার
যদিও সেই প্রাণীটির মাথা পাওয়া যায়নি সে সময়। পরে এই সংস্থার অনুরোধে বিদেশ থেকে একটি মাথা উপহার হিসেবে আসে এই প্রাণীটির ধড়ে! বরাহনগরের এই ক্যাম্পাসে কয়েক বার এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রশান্ত এবং রানি মহলানবিশের এই বাড়িটির নাম আম্রপালি, সেটিও রবীন্দ্রনাথের দেওয়া। এই বাড়িটিতেই একটি সংগ্রহশালা এবং লেখ্যাগার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। অতঃপর, প্রশান্তচন্দ্রের জন্মশতবর্ষে, ১৯৯৩-এর ২৯ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিংহ রাও নবরূপে সজ্জিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড আর্কাইভ-টির উদ্বোধন করেন। প্রশান্তচন্দ্র এবং রানি মহালানবিশের বিবাহের সময় গুরুদেব আশীর্বাদী লিখে দিয়েছিলেন, ‘প্রশান্ত, রাণী। তোমাদের এই মিলন-বসন্তে/দিলেন কবি বসন্ত-গান আনি।/সুন্দর প্রেম সাজুক আনন্দে/ পরুক গলায় সুরের মালাখানি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৫ ফাল্গুন ১৩২৯।’ এখানকার সংগ্রহশালায় এলে দেখা যাবে রবীন্দ্রনাথের এই লেখা। আর জুরাসিক পার্কের সেই ডাইনোসরটি দেখা যাবে এখানকার ভূতাত্ত্বিক বিভাগের সংগ্রহশালায়, সঙ্গে রয়েছে সে দিনের অনুসন্ধান থেকে আবিষ্কৃত সেই সব মাছ বা অন্যান্য ফসিলের সম্ভারও।

5
Cricket / পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
« on: June 11, 2017, 09:19:00 AM »
‘বাংলাদেশের একজন নায়ক দরকার ছিল। তারা দুজন পেয়ে গেল!’
ধারাভাষ্য দিতে থাকা সাবেক নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম যখন কথাটা বলছিলেন, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ প্রায় শূন্য থেকে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্নটাকে আবার বাঁচিয়ে তুলেছেন। কার্ডিফে স্টেডিয়ামে আসা ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশ’ স্লোগানে উচ্ছ্বসিত কয়েক হাজার সমর্থক আবার জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। স্বপ্নে রঙিন হাজার পাঁচেক মাইল দূরে থাকা প্রায় সতেরো কোটি চোখও—কার্ডিফে ২০০৫ রূপকথার মতো আরেকটি রূপকথা লেখা হবে!
স্বপ্নটা সত্যি হলো। দুই মহানায়কের মহাকাব্যিক দুই ইনিংসে জিতে গেল বাংলাদেশ। স্টেডিয়ামে আসা দর্শক নাচলেন, গাইলেন। আনন্দাশ্রু ঝরল ওই সতেরো কোটি চোখে। বাকি বিশ্ব তাকিয়ে রইল অবাক চোখে। বাংলাদেশ সত্যিই মহাকাব্য লিখেছে! বছর তিনেক ধরে যে উন্নতির সুর শোনাচ্ছিল লাল-সবুজ জার্সির দলটি, সেটি পরশু কার্ডিফে আরেকবার তুলল ঝংকার।
সে সুরে সবচেয়ে বিমোহিত যাঁরা হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সম্ভবত ওপরের দিকেই থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বেসুরো দিনগুলোরও সাক্ষী হার্শা ভোগলের নাম। বাংলাদেশ জিতে যাওয়ার পরই এই ধারাভাষ্যকারের টুইট, ‘একটা সময় ছিল যখন দলগুলো বাংলাদেশে গিয়ে চাইত, যেন স্বাগতিক দলটি আগে ব্যাটিং করে। তাতে ম্যাচ তাড়াতাড়ি শেষ হবে। (বাংলাদেশের) পালাবদলের কী দুর্দান্ত গল্প!’
পেশাগত প্রয়োজনেই হোক আর আগ্রহের কারণে, ম্যাচজুড়েই বাংলাদেশের খেলার খুঁটিনাটি, সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জুটির প্রশংসা করে টুইট করেছেন ভোগলে। ২৬৬ রানের লক্ষ্যে নেমে ৩৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ যখন মাহমুদউল্লাহ-সাকিবে চড়ে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন লিখেছেন, ‘স্বীকার করতেই হবে, ভেবেছিলাম বাংলাদেশ ভজকট পাকিয়ে ফেলবে। কিন্তু এখন ওদের এই মনোভাবটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে দল হিসেবে ওরা কতটা এগিয়েছে।’ আলাদা করে প্রশংসা করেছেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহরও। ২০১৫ বিশ্বকাপে টানা দুই সেঞ্চুরি করা মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্দান্ত দুই জয়েই (অন্যটি গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে) তাহলে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিটা কমন ব্যাপার হয়ে গেল। দুর্দান্ত খেলোয়াড়।’ আর সাকিবকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন এভাবে, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিগুলোর একটি এল দেশটির সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়ের হাতে।’
আসলে কে মুগ্ধ হননি পরশু বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে, মাহমুদউল্লাহ-সাকিবে? সম্ভাবনার প্রায় শূন্য থালাটা বাংলাদেশের ওভাবে পূর্ণ করা নাড়িয়ে দিয়েছে কুমার সাঙ্গাকারাকেও। শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তির টুইট, ‘দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ। সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ, দুর্দান্ত ব্যাটিং!’ সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি লিখেছেন, ‘দারুণভাবে রান তাড়া করেছে বাংলাদেশ। অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন, মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের দুর্দান্ত জুটি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জীবন্ত হয়ে উঠেছে।’
পেছনে ফিরে ভাবলে হয়তো এখনো শিহরণ জাগায় মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের ওই জুটি। কী চাপে শুরু করেছিলেন, কিন্তু ব্যাটিংটা দুজনে করলেন কী দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণে! ২২৪ রানের জুটিটা বাংলাদেশের যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ। ২০৯ বলের জুটিতে ওভারপ্রতি রান নিয়েছেন ছয়ের বেশি করে (৬.৪৩)। চার-ছক্কা যেমন মেরেছেন, তেমনি ১১৯ রানও নিয়েছেন সিঙ্গেল-ডাবলসে। ধ্রুপদি জুটিটা একটু ধন্দেই ফেলে দিয়েছে মাইকেল ভনকে। হ্যাশট্যাগে ‘বেস্ট এভার’ লিখে সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়কের টুইট, ‘ওয়ানডেতে এর চেয়ে ভালো জুটি আর দেখেছি কি না মনে করতে পারছি না। জিততেই হবে এমন ম্যাচ, ৩৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল, বল সুইং করছিল...!’ আর ভারতের কিংবদন্তি অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর চোখে জুটিটি বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য শিক্ষা, ‘চাপের মধ্যে কীভাবে জুটি গড়তে হয়, সাকিব-মাহমুদউল্লাহ তা দারুণভাবেই দেখিয়েছে।’ টুইটার।

6
টুর্নামেন্ট শুরু হতে তখনো এক মাসেরও বেশি বাকি। প্রশ্নটা শুনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা একটু হেসে বলেছিলেন, ‘মনে বড় একটা চিন্তাই আছে। কারণ চিন্তা বড় করলে না বড় কিছু পাবেন।’ তারপর দার্শনিকের ভঙ্গিতে এমন একটা কথা বলেছিলেন, যেটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে প্রথম আলোর বিশেষ ম্যাগাজিনে মাশরাফির সাক্ষাৎকারের শিরোনাম হয়েছিল। ‘কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।’

কোনো কিছুই যেহেতু অসম্ভব নয়, ‘গ্রুপ অব ডেথ’ থেকে সেমিফাইনালে ওঠাই বা তা হবে কেন? ‘গ্রুপ অব ডেথ’-ই তো! গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। তিনটিই বাংলাদেশের চেয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ে ওপরে। মাশরাফির মনে যত ‘বড় চিন্তা’ই থাক, এই গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে যাবে, এটা একটু আকাশকুসুম কল্পনাই ছিল। অথচ সেটিই এখন ঘোরতর বাস্তব এবং ‘কোনো কিছুই অসম্ভব নয়’ মনে করা মাশরাফিও যাতে একটু হকচকিয়ে গেছেন!

এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের কাছে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়ে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর মাশরাফির প্রতিক্রিয়ায় প্রথমে তাই একটি মাত্র শব্দই থাকল—‘অবিশ্বাস্য!’ বিকেলের দিকে একটা কাজে হোটেলের বাইরে গিয়েছিলেন। একটু পরপরই চোখ চলে যাচ্ছিল মোবাইলের পর্দায়। ক্রিকইনফোতে খবর রাখছিলেন খেলার। অস্ট্রেলিয়ার হেরে যাওয়ার খবরটা সেখান থেকেই পেলেন। যা তাঁকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল আনন্দের বন্যায়। উচ্ছ্বাস ফুটে বেরোল কথাতেও, ‘এই গ্রুপ থেকে আমরা সেমিফাইনাল খেলছি, এটা ভাবতে কী যে ভালো লাগছে!’

যেটির বৃহত্তর একটা তাৎপর্যও দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘এই ধরনের টুর্নামেন্টগুলো নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য খুব আদর্শ। এখন অন্তত ১৫ তারিখ পর্যন্ত সবাই আমাদের সম্মানের চোখে দেখবে।’

কাল যেখানে অস্ট্রেলিয়ার আশার সমাধি হলো, আগামী ১৫ জুন বার্মিংহামের সেই এজবাস্টন মাঠেই বাংলাদেশের সেমিফাইনাল। প্রতিপক্ষ এখনো অজানা। ‘এ’ গ্রুপের খেলা শেষ। ইংল্যান্ড আর বাংলাদেশ উঠে গেছে সেমিফাইনালে। ‘বি’ গ্রুপ থেকে কোন দুই দল, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজ ও আগামীকালের ম্যাচে।

আইসিসির স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে গেছে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। গ্রুপ পর্বের শেষ চারটি ম্যাচই পরিণত হয়েছে নকআউটে। ‘বি’ গ্রুপে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা তো আক্ষরিক অর্থেই ‘কোয়ার্টার ফাইনাল’। এমনই মজার টুর্নামেন্ট যে সেমিফাইনাল নিয়ে ইংল্যান্ড বা বাংলাদেশের হোমওয়ার্ক করার কোনো উপায় নেই। চার দলের যেকোনোটির বিপক্ষেই যে খেলতে হতে পারে!

ইংল্যান্ড তিন ম্যাচেই জিতে সেমিফাইনালে উঠেছে। বাংলাদেশের মাত্র একটিই জয়। তবে সেই জয় বিশ্ব ক্রিকেটে এমনই এক আলোড়ন যে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে উঠে যাওয়াটাকে শুধুই ভাগ্যের বদান্যতা বলার আগে সবাই দুবার ভাবছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জীবন-মরণ ম্যাচে বাংলাদেশ যে খেলাটা খেলেছে, কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া তা খেলতে পারলে তো গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় না।

হ্যাঁ, ভাগ্যের ছোঁয়া তো একটু পেয়েছেই বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টির কল্যাণে পাওয়া ১ পয়েন্টেই তো খুলে গেছে সেমিফাইনালের দুয়ার। যা মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৯৯২ বিশ্বকাপের পাকিস্তানের কথা। এখন পর্যন্ত যেটির সঙ্গে এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশের আশ্চর্য মিল। সেই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৪ রানে অলআউট হয়ে গিয়েও বৃষ্টির বদান্যতায় ১ পয়েন্ট পেয়েছিল পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত সেটিই তাদের নিয়ে যায় সেমিফাইনালে। মিলটা এখানেই শেষ নয়। এখানে বাংলাদেশের মতো সেবার পাকিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠাও নিজেদের হাতে ছিল না। চেয়ে থাকতে হয়েছিল অন্য দুই দলের খেলার দিকে। অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ, যাতে জিতলে পাকিস্তানের বদলে সেমিফাইনালে চলে যেত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্ট্রেলিয়া আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়ায় পাকিস্তানের একটু ভয়ও ছিল, বোর্ডারের দল না একটু গা ছাড়া দেয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য অস্ট্রেলিয়াই জেতে।

ওই ম্যাচটা হয়েছিল মেলবোর্নে। পাকিস্তান দল সেদিন ক্রাইস্টচার্চে অপেক্ষায়। দেশে ফেরত যেতে হবে, না সেমিফাইনাল খেলতে অকল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চের হোটেলে ইমরান খান দলের সব খেলোয়াড়কে নিয়ে একসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ দেখেছিলেন টিভিতে। কার্ডিফে এমন কোনো গল্প নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সারা দিন যে যার মতো ঘুরে বেড়ালেন। নিজের হোটেল রুমেই বন্দী থাকলেন অনেকে। যে চ্যানেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দেখা যাচ্ছে, হোটেলে তা নেই। বাংলাদেশ দলের মিটিং রুমের টিভিতে বিশেষ ব্যবস্থায় ওই চ্যানেলটা আনা হয়েছিল, তবে সেখানে বসে নিরবচ্ছিন্ন কেউই খেলা দেখেননি।

এজবাস্টনের খবর অবশ্য সবাই রাখছিলেন। লাগেজ-টাগেজ গোছানোর কাজও চলছিল। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠুক না উঠুক, পরদিন বার্মিংহাম যাওয়া নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। পার্থক্য বলতে সেমিফাইনালে উঠলে বার্মিংহামে গিয়ে থাকবে দল। না উঠলে দেশে ফেরার বিমানে চড়বে। বাংলাদেশের ফিরতি ফ্লাইট যে বার্মিংহাম থেকেই।

এই দেখুন, ১৯৯২ বিশ্বকাপের পাকিস্তানের সঙ্গে আরেকটি মিল। সেমিফাইনালে উঠুক না উঠুক, পরদিন পাকিস্তান দলকেও অকল্যান্ডে যেতেই হতো। হয় সেমিফাইনাল খেলতে, নয়তো দেশে ফিরতি ফ্লাইট ধরতে।

এত যখন মিল, মাশরাফির বাংলাদেশ কি শেষটাও মিলিয়ে দেবে ইমরানের পাকিস্তানের সঙ্গে! সেই বিশ্বকাপে কী হয়েছিল, আপনি জানেন নিশ্চয়ই।

 

7

সূর্যকে ছুঁতে যাচ্ছে নাসার সেই মহাকাশযান ‘সোলার প্রোব প্লাস’।- নাসা
মঙ্গল, বৃহস্পতি বা শনি নয়। নয় এই সৌরমণ্ডলের বাইরে ভিন গ্রহের কোনও ভিন মুলুকও। এ বার সরাসরি সূর্যকে ছুঁতে যাচ্ছে মানবসভ্যতা!
এই প্রথম সরাসরি সূর্যের বায়ুমণ্ডল বা ‘করোনা’য় ঢুকে যাবে কোনও মহাকাশযান। গনগনে তাপে ঝলসে যাওয়া সূর্যকে ছোঁয়ার যে দুঃসাহস এর আগে আর কোনও মহাকাশযানই দেখাতে পারেনি।
সূর্যের পিঠ থেকে মাত্র ৪০ লক্ষ মাইল দূরে ‘করোনা’য় একটি কক্ষপথে পৌঁছে যাবে নাসার রোবটিক মহাকাশযান ‘সোলার প্রোব প্লাস’(এসপিপি)। এর আগে সূর্যের কাছাকাছি পৌঁছনোর দুঃসাহস দেখাতে পেরেছিল আর যে সব মহাকাশযান, তাদের চেয়ে ৭ গুণ বেশি কাছাকাছি পৌঁছে যাবে এই সোলার প্রো‌ব প্লাস। ফলে, অসম্ভব রকমের তাপে তাকে ঝলসে যেতে হবে প্রতি মুহূর্তে।
বুধবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় নাসার তরফে ওই দুঃসাহসিক অভিযানের কথা ঘোষণা করা হল শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম এখহার্ডট রিসার্চ সেন্টার অডিটোরিয়ামে। সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন ওয়াশিংটনের নাসা সায়েন্স মিশন ডায়রেক্টটরেটের অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর টমাস ঝুরবুশেন, জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিশন প্রজেক্ট  সায়েন্টিস্ট নিকোলে ফক্স, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ইউজিন পার্কার ও অধ্যাপক এরিক আইজ্যাক্স এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিকাল সায়েন্স ডিভিশনের ডিন রকি কোল্ব। নাসা এই অভিযানটির নাম দিয়েছে বিশিষ্ট সৌর পদার্থবিদ ইউজিন পার্কারের নামেই। পার্কার সোলার প্রোব। এই প্রথম কোনও জীবিত বিজ্ঞানীর নামে কোনও মহাকাশযানের নামকরণ করল নাসা।

এই সেই সোলার প্রোব প্লাস
নাসার তরফে খবর, ২০১৮-র ৩১ জুলাই থেকে ১৯ অগস্টের মধ্যে সূর্যকে ছুঁতে পৃথিবী থেকে রওনা হয়ে যাবে সোলার প্রোব প্লাস। কেপ কানাভেরাল থেকে ডেল্টা ফোর রকেটের পিঠে চাপিয়ে সোলার প্রোব প্লাসকে পাঠানো হবে সূর্যের মুলুকে। বুধকে পাশ কাটিয়ে তা সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়বে আজ থেকে ঠিক সাত বছর পর, ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর। তার আগে পৃথিবী থেকে রওনা হয়ে সোলার প্রোব প্লাস বুধের কাছাকাছি প্রথম পৌঁছবে ২০১৮-র ২৭ সেপ্টেম্বর। আর সোলার প্রোব প্লাস সূর্যের মুলুকে ঢুকে পড়ার আগে বুধকে শেষ বারের জন্য টা টা জানাবে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর।
কেন পাঠানো হচ্ছে সোলার প্রোব প্লাস? দেখুন ভিডিও

কতটা বড় ওই মহাকাশযান? কেমন তার চেহারা?
সোলার প্রোব প্লাস প্রকল্পে জড়িত মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সোলার ফিজিক্স বিভাগের অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘উৎক্ষেপণের সময় ওই মহাকাশযানটির ওজন থাকবে ৬১০ কেজি। একটা বড় গাড়ির মতো চেহারা ওই সোলার প্রোব প্লাসের। করোনায় সূর্যের কক্ষপথে পৌঁছে মহাকাশযানটি দৌড়বে সেকেন্ডে ২০০ কিলোমিটার বা ১২০ মাইল গতিবেগে। সূর্যের তাপ আর সৌর বিকিরণের হাত থেকে বাঁচাতে থাকবে সোলার প্রোব প্লাসের ‘হিট শিল্ড’। যাকে সহ্য করতে হবে প্রায় ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।’’
যে রুট ধরে পৃথিবী থেকে সূর্যের মুলুকে পৌঁছবে সোলার প্রোব প্লাস

সোলার প্রোব প্লাসকে কেন পাঠানো হচ্ছে সূর্যের মুলুকে?
মিশন প্রোজেক্ট সায়েন্টিস্ট, জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলা ফক্স আনন্দবাজারের পাঠানো প্রশ্নের ই-মেল জবাবে লিখেছেন, ‘‘সৌরবায়ু (সোলার উইন্ড), সৌরঝড় (সোলার স্টর্ম) ও করোনাল মাস ইজেকশনের (সিএমই) মতো কিছু ঘটনা রয়েছে যা মানবসভ্যতার পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাদের উৎস বা মতিগতি সম্পর্কে আমাদের এখনও ততটা ধারণা নেই। যা থাকলে আমরা সভ্যতাকে বাঁচানোর প্রস্তুতি নিতে পারি, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারি। এই অভিযান বিজ্ঞানীদের সামনে সেই সুযোগটা এনে দেবে।’’
আরও পড়ুন- পৃথিবীর কোথা থেকে বেরচ্ছে ওই হিরে ঠিকরোনো আলো?
এ ছাড়াও সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্রগুলিকে বোঝা, সৌরবায়ুর সময় সেই চৌম্বক ক্ষেত্রের আচার-আচরণ কেমন হয়, তা জানার দরজাটাও খুলে দেবে এই সোলার প্রোব প্লাস। জানা যাবে কেন সূর্যের বায়ুমণ্ডল বা করোনা অতটা গরম, সৌরবায়ুর গতি বাড়িয়ে দেয় কে, তা-ও।
ছবি সৌজন্যে: নাসা


8
 ‘অটিজম’ শব্দটির সাথে সবাই পরিচিত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় তা সামান্যই । মস্তিস্কের স্নায়ুবিক সমস্যা যা মস্তিস্কের সাধারণ কর্মক্ষমতাকে ব্যাহত করে,তার নামই অটিজম । যার আরেক নাম অটিজম স্পেকট্রাম সিনড্রোম (ASD)। ২০০৭ সাল থেকে জাতিসংঘে সিধান্ত গ্রহনের পর ২০০৮ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী অটিজম সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে আসছে । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় অটিজম কি? এপোলো হাসপাতাল বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ স্পেশালিস্ট ডা.তোশিবা রহমান এর সাথে কথা বলেছিলাম এবারের নবম অটিজম সচেতনতা দিবসে । উনি আমাদের বললেন,সাধারণ অর্থে শিশুদের মধ্যে যদি বিশেষ কিছু আচরন দেখা যায় তাকেই অটিজম বলে ।

শিশুর নাম ধরে ডাকলেও সাড়া না দেয়া,চোখে চোখ রাখে না বা রাখতে না পারা কিংবা দুই বছরেরও পরে কথা বলা শুরু করা অটিজমের লক্ষণ বলে ধরে নেয়া হয় ।

৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে অটিজমের সঠিক কারন অনুসন্ধান করা যায় না । কিন্তু কখন বুঝবেন আপনার শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত কিংবা এর ঝুঁকিতে রয়েছে? চাইল্ড ফিজিওলজিস্ট তারানা আনিস বললেন,মাত্রা অনুযায়ী শিশুর চিকিৎসা ক্ষেত্র নির্ধারিত হয় । শিশুটি কি স্পেশাল স্কুলে যাবে নাকি সাধারণ স্কুলে যাবে তা নির্ধারণ করা হয় তার মাত্রা পরিমাপের পর ।

যুক্তরাষ্ট্রের অটিজম সোসাইটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ মানুষ অটিজম আক্রান্ত আর বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখের মত অটিজম আক্রান্ত মানুষ রয়েছেন এবং প্রতি বছর তার সাথে যোগ হচ্ছে প্রায় পনেরশ শিশু। বাংলাদেশে অটিজম নিয়ে কাজের করছে হাতে গোনা কয়েকটি সংস্থা । তাদের মধ্যে রয়েছে অটিজম রিসোর্স সেন্টার,‘সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অটিজম ইন চিলড্রেন' এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু বিকাশ কেন্দ্র। ডা.আনিসা জাহান,সহযোগী অধ্যাপক,আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালে কর্মরত। তিনি বললেন,কিছুটা প্রতিরোধ করা যায় অটিজম অভিভাবকের সচেতনতায়।

শিশুকে বেশী বেশী সময় দেয়া,তার সাথে খেলা করা এবং নতুন নতুন জিনিসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া,এতে করে শিশুর বুদ্ধি এবং মানসিক বিকাশ স্বাভাবিক হয় ।

বাবা-মা কি করবেন,যখন তারা বুঝবেন শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত? লক্ষন দেখা মাত্র অবশ্যই একজঅন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।

কেন অটিজম আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বাংলাদেশে? তার মূল কারন সামাজিক ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়া এবং একক পরিবারের সংখ্যা বেড়ে শিশু একা হয়ে যাচ্ছে । সারাদিন টিভি কিংবা যেকোন একটা কিছু নিয়ে একা ব্যস্ত থাকা অনেকটা প্রভাব ফেলে শিশুর উপর ।

যেখানে প্রতি ১০জন অটিস্টিক শিশুর মধ্যে ২জনের বিশেষ পারদর্শীতা দেখা যায়,সেখানে আমাদের সবার স্বাভাবিক আচরণ শিশুটিকে আমাদেরই একজন ভাবতে সাহায্য করবে। তাদের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদেরই দায়িত্ব

9
ওয়াশিংটন, ২৬ মার্চ (পিটিআই): হৃদরোগের চিকিৎসায় ডাক্তারেরা উন্নতি ঘটালেও, হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে চিকিৎসক সম্প্রদায়কে আরও ভালো কিছু করতে হবে। কারণ, যে সমস্ত রোগী হার্টের জটিল অসুখে ভুগছেন তাঁদের বেশিরভাগই কমবয়সি এবং চেহারায় স্থূল। আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের প্রায় চার হাজার রোগীদের উপর পরীক্ষা চালিয়ে এমনই দাবি করেছে একদল গবেষক। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। একইসঙ্গে গবেষক দলটি জানিয়েছে, ধূমপায়ী, সুগার ও উচ্চরক্তচাপযুক্ত রোগীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কুড়ি বছরে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকে ৩,৯০০-এর বেশি চিকিৎসাধীন রোগীর উপর গবেষণা চালিয়েছে গবেষক দলটি। চিকিৎসাধীন সকলেই ‘এসটি এলিভেশন মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন’ বা ‘এসটি সেগমেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (স্টেমি)’-এর রোগী। প্রসঙ্গত, সবথেকে জটিল ও কঠিন হার্টের অসুখ হল এই স্টেমি। গত ২০ বছরে এই বিপুল সংখ্যক হৃদরোগীদের আশঙ্কা (রিস্ক ফ্যাক্টর) নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে গবেষক দলটি।
গবেষক দলের প্রধান তথা ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের সমীর কাপাডিয়া জানিয়েছেন, মানুষ যখন আমাদের কাছে রুটিন পরীক্ষার জন্য আসে, তখন ওজন কমানো, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া এবং শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকার মাধ্যমে রিস্ক ফ্যাক্টর কমানোর উপর গুরুত্ব আরোপের প্রস্তাব নিয়ে সমস্যার দেখা দেয়। একাধিক বিষয় মানুষের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাদের মধ্যে কিছু আবার ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যেমন, বয়স, পারিবারিক ইতিহাস ইত্যাদি। যদিও, জীবনযাত্রার বদল, শরীরচর্চা, ধূমপান ত্যাগ এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমিয়ে ফেলা যায়। তবে, কাপাডিয়া জানিয়েছেন, হৃদরোগ চিকিৎসায় প্রভূত উন্নতি হলেও হার্টের অসুখ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসক মহলের আরও অনেক কিছু করার রয়েছে।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ২০ বছরের ‘স্টেমি’ রোগীদের পাঁচ বছর করে চারটি বিভাগে ভাগ করেছে গবেষকদলটি। প্রতিটি বিভাগের রোগীদের রিস্ক ফ্যাক্টর, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে গবেষকরা জানিয়েছেন, স্টেমি আক্রান্ত রোগীদের বয়স কমছে। প্রথম পাঁচ বছরের স্টেমি আক্রান্ত রোগীর গড় বয়স ৬৪ থেকে শেষ পাঁচ বছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬০-এ। একইভাবে স্থূলতার পরিসংখ্যান ৩১ থেকে হয়েছে ৪০ শতাংশ। সুগারের রোগীদের সংখ্যা ২৪ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশ। অন্যদিকে, উচ্চ রক্তচাপ রোগীর সংখ্যা ৫৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৭ শতাংশ। ফুসফুসের রোগীর সংখ্যা ৫ থেকে বেড়েছে ১২ শতাংশ। গবেষকরা সমস্ত পরিবর্তনকেই উদ্বেগজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন।
রিপোর্ট মতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, ধূমপানের চালচিত্র। ধূমপায়ীদের সংখ্যা ২৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬ শতাংশ। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত রোগীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার একাধিক সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সমস্ত রোগীর সংখ্যা ৬৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৫ শতাংশ। প্রসঙ্গত, হার্টের স্টেমি হল এমন একটি রোগ, যেখানে হৃৎপিণ্ডের মূল ধমনী পুরোপুরি অবরুদ্ধ (ব্লক) হয়ে যায়। ফলে, বন্ধ হয়ে যায় রক্ত চলাচল

10
জন্মের শুরু থেকে ছ’মাস পর্যন্ত বাচ্চা কেবলমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিদানও তাই। স্তন্যপানই শিশুর সর্বোত্তম খাদ্য বা পানীয়, ছ’মাস পর্যন্ত। মায়ের দুধই যাবতীয় ভিটামিনস (কেবল ভিটামিন ডি আলাদা দিতে হবে), মিনারেলস ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাবে। মায়ের দুধের বিকল্প ছ’মাস বয়স পর্যন্ত, সারা পৃথিবীতেই আর কিছু নেই। কিন্তু ছ’মাসের পরে শুধু বুকের দুধে বাচ্চার সামগ্রিক পুষ্টি মোটেই সম্ভব নয়।

ছয় মাসের পরে মায়ের বুকে দুধ যথেষ্ট নয়, কেন?
উঃ কারণ, হু-র বিভিন্ন পরীক্ষা ও রাসায়নিক বিশ্লেষণে ৫৫০ মিলি বুকের দুধে ক্যালরি (ঘাটতি ৬০%), আয়রন (ঘাটতি ৯৫%), প্রোটিন (ঘাটতি ৪৫%), জিঙ্ক ও ভিটামিন এ-র (ঘাটতি ৯০%) লক্ষণীয় ঘাটতি প্রমাণিত। বিশেষ করে ছয় থেকে আট মাস বয়সে আয়রন আর জিঙ্কের ঘাটতিই সবচেয়ে প্রকট। এই বয়সের একটি শিশুর আয়রন প্রয়োজন একজন প্রাপ্তবয়স্কের তুলনায় নয় গুণ বেশি আর জিঙ্ক চার গুণ বেশি। ২৭০০ ক্যালরির হিসাবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রয়োজন ০.৫ মিলিগ্রাম আয়রন ও ০.২৬ মিলিগ্রাম জিঙ্ক। সেখানে নয় গুণ ও চার গুণ বেশি আয়রন ও জিঙ্কের সমাহাহরে খাবার তৈরি করে শিশুর প্রয়োজন মেটানো মুখের কথা নয়। বিভিন্ন গবেষণা জানাচ্ছে আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা শিশুদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের থেকেও অনেক বেশি ব্যাপক।

মায়ের দুধে ৬ মাস পরের আয়রন, জিঙ্ক, প্রোটিন ও ক্যালরির (মানে শক্তি বা এনার্জি) এই বিশাল ফারাক/ ঘাটতি ঘোচাতে তাহলে কী খাওয়ানো হবে?

ছয় মাস একদিন থেকেই মায়ের দুধের সঙ্গে কঠিন/স্বল্প কঠিন/নরম বা কমপ্লিমেন্টারি ফুড খাওয়ানো শুরু করতে হবে। যাতে নিক্তি মেপে নির্দিষ্ট পরিমাণে সরকারি নিদান অনুযায়ী আয়রন, জিঙ্ক, প্রোটিন ও ক্যালোরিও থাকবে। ফলে মায়ের দুধের বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানের বিশাল ঘাটতি শিশুর বৃদ্ধিতে থাবা বসাতে পারবে না।

কমপ্লিমেন্টারি ফুড অপরিহার্য কেন?

কমপ্লিমেন্টারি ফুড অর্থাৎ মায়ের দুধ ব্যতিরেকে অন্যান্য কঠিন খাদ্য শিশুর সঠিক বৃদ্ধির দিশা দেখায়। মাইলস্টোন ডেভেলপমেন্ট ঠিক থাকলে শিশু স্বাভাবিকভাবেই কঠিন খাবার গ্রহণ করবে, যেমন কোনও কিছুর সাহায্যে অথবা একা একা শিশু বসতে পারবে, মাথা শক্ত ও সোজা রাখতে পারবে, খাবার মুখের কাছে আনলে মুখ হাঁ করবে, জিভটাকে নিচু ও অনুভূমিক রাখবে যাতে সহজে চামচ মুখে প্রবিষ্ট হয়, ঠোঁট দিয়ে চামচটাকে চেপে ধরবে, যাতে খুব সামান্য খাবারই মুখ থেকে গড়িয়ে পড়ে আর খাবারটাকে গিলবে, ঠেলে উগরে দেবে না যাতে চিবুক দিয়ে গড়িয়ে নামে। বাচ্চা সুস্থ স্বাভাবিক হলে তবেই তার পক্ষে কঠিন/ নরম খাবার গেলা সম্ভব। মাথা সোজা না থাকলে শিশুকে খাওয়ানো সম্ভব নয়, তেমনই খাবার দেখে শিশু যদি মুখ না খুলতে পারে, তাহলে তাকে জোর করে খাওয়ানো অসম্ভব।

বয়স অনুযায়ী শিশুর ঠিক কতটা আয়রন ও জিঙ্ক প্রয়োজন?

০-৬ মাসে শিশুর (ছেলে বা মেয়ে) জিঙ্কের আরডিএ (রেকমেন্ডেড ডায়াটারি অ্যালাউন্সেস) ২ মিলিগ্রাম, ৭-১২ মাসে ৩ মিলিগ্রাম, ১-৩ বছরে ৩ মিলিগ্রাম ও ৪-৮ বছরে ৫ মিলিগ্রাম। আয়রন প্রয়োজন ৭-১২ মাসে ১১ মিগ্রা, ১-৩ বছরে ৭ মিগ্রা আর ৪-৮ বছরে ১০ মিগ্রা।

বাড়িতে তৈরি খাবারে জিঙ্ক, আয়রন বা অন্যান্য খাবারের সঠিক জোগান বজায় রাখা কি সম্ভব?

বাড়িতে তৈরি খাবারে শিশুর বয়স অনুযায়ী নিক্তি মেপে উপরিউক্ত হিসেব অনুযায়ী আয়রন, জিঙ্ক, আয়োডিন, ভিটামিনস বা অন্যান্য মিনারেলস যুক্ত খাবার তৈরি একটু অসুবিধাজনক কিন্তু অসম্ভব নয়। দানাশস্য এবং ডালে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, রাইবোফ্ল্যাভিন, নিয়াসিন, থায়ামিন, ফোলেট, ভিটামিন এ-সি-ই, ভিটামিন বি সিক্স, টুয়েলভ ও সেলেনিয়ামের ‘বায়ো অ্যাভেলেবিলিটি’ বা জৈব লভ্যতা থাকে যৎসামান্য, ফলে বাড়ির তৈরি খাবারে সর্বদাই পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা।
ঝামেলার সূত্রপাত কৃষি-বিপ্লবের হাত ধরে। প্রাক কৃষি যুগে আদিম মানুষ শিকার করে মাছ-মাংস ঝলসে খেতে অভ্যস্ত ছিল। মায়ের দুধের সঙ্গে প্রাণিজ প্রোটিন বা মেটে (লিভার) আয়রন ও জিঙ্কের অভাবকে পুষিয়ে দিত। বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া ও ভিয়েতনামের ওপর করা একটি সমীক্ষা দেখাচ্ছে, বাড়ি বা স্থানীয় খাবার পুষ্টির বিচারে তখনই স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে যখন সেই খাবারে জোড়া হচ্ছে (ফর্টিফায়েড) আয়রন সমৃদ্ধ প্রাণীর মেটে বা লিভার।

অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা কি কেবল আয়রনের অভাবজনিত কারণেই?

বাচ্চাদের মধ্যে গোলকৃমির প্রকোপও আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন বলছে, ৬-৫৯ মাস বয়সি ১০টি শিশুর মধ্যে সাতটি শিশুই অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতায় আক্রান্ত। ৬-৫৯ মাস বয়সি শিশুর অর্ধেক কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় মাত্রায় (১৫ ppm) আয়োডিন পায় খাবার নুন থেকে। অর্থাৎ ৬-৫৯ মাস বয়সি শিশুর অর্ধেকের পাতে আয়োডিনযুক্ত নুনটুকুও জোটে না। ২৫ শতাংশ মাত্র ১২-৩৫ মাস বয়সি শিশু ভিটামিন-এ’র পরিপূরক কোনও খাবার খায় বা পায়। ভারত সরকারের নিদান, নয় মাস বয়স থেকে তিন বছর পর্যন্ত প্রতিটা শিশুকে ছয় মাস অন্তর নির্দিষ্ট মাত্রার ভিটামিন-এ খাওয়াতে হবে ভিটামিন-এ ডেফিসিয়েন্সিকে রুখতে।

শিশুর খাওয়াদাওয়া সংক্রান্ত আসল ব্যাধিটা তাহলে কোথায়?

আমাদের বর্তমান সময়ের কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে প্রাণিজ প্রোটিন ৬-৮ মাসের বাচ্চার কাছে অচ্ছুৎ। আট মাসের একটি শিশুকে সঠিক পুষ্টিমূল্য বজায় রাখতে দিনে ছয় থেকে আটবার শক্ত/নরম ফর্টিফায়েড খাবার খাওয়ানো প্রয়োজন। একটি প্রামাণ্য গবেষণা জানাচ্ছে, ভারতে মাত্র ৪২% ভাগ্যবান শিশুকে দৈনিক ৬-৮ বার খাওয়ানো হয়। ২ বছর বয়স পর্যন্ত পুষ্টিপ্রাচুর্যে ভরপুর খাবার শিশুর একান্ত প্রয়োজন; শিশুর বৃদ্ধি বিকাশ যেমন এই সময়টাতে সর্বাধিক ত্বরান্বিত হয় তেমনি শিশুর ভবিষ্যত খাদ্যগ্রহণের সুচারু অভ্যেসটিও তৈরি হয় এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’বছর সময়কালে। শুধু পুষ্টি নয়, মায়ের দুধের বিকল্প হিসাবে ধীরে ধীরে শক্ত বা নরম কমপ্লিমেন্টারি ফিডিং শিশুকে খাদ্যের স্বাদ ও গন্ধের ব্যাপারেও সচেতন করে তোলে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে যার ভূমিকা অপরিসীম।

কখন কীভাবে শিশু খাবারের স্বাদ/গন্ধ বুঝতে শেখে?

গর্ভাবস্থায় বা স্তন্যপানের সময় খাদ্যের গন্ধের সঙ্গে শিশুর সম্যক পরিচয় ঘটে। কমপ্লিমেন্টারি ফুডের সঙ্গে মা যদি শিশুকে পুষ্টিকর ফল ও সবজি খাওয়ানোর অভ্যাস করতে পারেন, পরবর্তীকালে দেখা গেছে সেই শিশু কোনও খাবার থেকেই মুখ সরিয়ে নিচ্ছে না।

লুকনো খিদে বা ‘হিডেন হাঙ্গার’টা কী?

শিশু খাচ্ছে কিন্তু তার কানাকড়ি পুষ্টিও হচ্ছে না অর্থাৎ খিদেটা আক্ষরিক অর্থে লুকনোই থাকছে। পুষ্টি—খিদের সমার্থক ও সম্পূরক। বিজ্ঞানসম্মত পন্থায় খাবার না খাওয়াতে পারলে শিশুর লুকনো খিদেকে (Hidden Hunger) বাগ মানানো কখনওই সম্ভব নয়। ফলে শিশু অল্পেতেই হয়ে পড়বে ক্লান্ত; দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যাঘাত ঘটবে পড়াশোনায়, উৎপাদনশীলতায়। তার ফলে সামগ্রিক ক্ষতি দেশ ও দশের।

লুকনো খিদের ক্ষতির বহর কতটা?

এই লুকনো খিদে বা প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি ডেকে আনতে পারে মস্তিষ্কের অপরিমেয় ক্ষতি, অন্ধ্যত্ব। বহুগুণ বাড়াতে পারে শৈশবে ডায়েরিয়া, হাম ও ম্যালেরিয়ার আশঙ্কা। একথা বলছে ছ’বছর আগেকার ইউনিসেফের প্রতিবেদন (The Micronutrient Initiative and UNICEF. Vitamin & Mineral Deficiency a Global Progress Report, 2010)। বয়সভিত্তিক উচ্চতা ও ওজনের স্কোর পরিষ্কার দেখিয়ে দেয়, দু’বছর পর্যন্ত পুষ্টির ঘাটতিকে, প্রকারান্তরে লুকনো খিদের স্বরূপকে।

শিশুর খাবার কত ধরনের হওয়া উচিত?

খাবারে বৈচিত্র্য আনতে সাতটি আলাদা আলাদা শ্রেণির খাবারের সুপারিশ করা হয়েছে। সাতটি দূর অস্ত, ৬-২৩ মাস বয়সি শিশুর মাত্র নয় শতাংশ চার ধরনের আলাদা আলাদা খাবার খেতে পায়। ফলে ২০ শতাংশ পাঁচ বছরের নিচের বাচ্চার সুষম বৃদ্ধিই হচ্ছে নাো। আর ৪৮% বাচ্চা হয়ে পড়ছে খর্বকায় (Stunted)।

মায়ের দুধের পরিবর্তে ধীরে ধীরে শিশুকে শক্ত, আধাশক্ত বা নরম খাবারে অভ্যস্ত করা আবশ্যিক, আপনার কথায় তা পরিষ্কার। কিন্তু শিশু বিশেষজ্ঞরা অনেকেই এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাতে ধ্যান দেন না, কী কারণে?

ভারতের পুব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণের ১৫১ জন শিশু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করা এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা জানাচ্ছে— সাধারণ অসুস্থতা আর টিকাকরণ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন অধিকাংশ শিশু বিশেষজ্ঞ। তাঁরা মোটেই উৎসাহী নন শিশুদের খাবার সম্পর্কে। ফলত অদ্ভুত আঁধার এক এ ভারতে এসেছে আজ।

আপনিই বলুন কী খাবার, কতটা কখন শিশুকে খাওয়ানো হবে?
১. ৬-৮ মাস বয়সি শিশুর ব্রেকফাস্টে গম, ডালিয়া, সুজি, বাজরা সেদ্ধ করে তার সঙ্গে তেল, ঘি, মাখন যোগ করা। কলাচটকে মাখা দেওয়া যেতে পারে। দুপুরে বা রাতের খাবারে এর সঙ্গে মিশবে সিদ্ধ সবজি বা চটকানো/ সিদ্ধ ফল, গরম দুধে মেশানো খই। সন্ধের স্বল্পাহারে থাকবে সিদ্ধ কুমড়ো, পেঁপে/আলু ও সিদ্ধ চটকানো আপেল/ নাসপাতি। পরিমাপ— ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ প্রতিবারে।
২. ৯-১১ মাসে ব্রেকফাস্টে বিভিন্ন পুষ্টিগুণযুক্ত দানাশস্য বা সিরিয়াল, গলা ভাত, গাজর সিদ্ধ ও সিদ্ধ ডিমের কুসুম। দুপুর ও রাতের খাবার—নানারকম সবজি, কড়াইশুটি সিদ্ধ, দুধে নরম করা চাপাটি, দই ভাত, চিকেন ভেজিটেবল স্টু। সন্ধ্যার খাবার— চটকানো থকথকে মরশুমি ফল, ফল দিয়ে তৈরি মিল্কশেক, গাজর বা আলু সেদ্ধ। পরিমাণ—আধকাপ প্রতিবারে।
৩. ১২-২৩ মাসে ব্রেকফাস্টে— নিরামিষ খিচুড়ি, ইডলি, উপমা। পুষ্টিগুণান্বিত বিভিন্ন দানাশস্য। চটকানো ফল ও ডিমের কুসুম। দ্বিপ্রাহরিক ও রাতের মূল খাবার— ভাত, ডালের জল, নানারকম সেদ্ধ সবজি, মাছ ও মুরগি সেদ্ধ ও মসৃণভাবে চটকানো। সন্ধ্যার হালকা খাবার— পাকা আম, পেঁপে, নাসপাতি ও কলার টুকরো। পরিমাপ—৩/৪-১ কাপ প্রতিবারে।

আর কী করণীয়?

১. খাবারকে সুস্বাদু করতে হবে, আমাদের মা-দিদিমারা জানেন বাচ্চার খাবারকে কীভাবে স্বাদু করতে হয়। খাবারকে যতটা সম্ভব থকথকে করতে হবে, যাতে কম গড়ায় বা চিবুক বেয়ে নামে। সর্বোত্তম পরিচ্ছন্নতা সবসময় বজায় রাখতে হবে। একবার দু’বার শিশু খাবার না খেলেই তা বাতিল করা যাবে না। পরপর আটবার যদি শিশু একই খাবার না খায়, তবেই বাতিল করবেন। শিশুকে খাইয়ে বমি করানো অত্যন্ত বদভ্যাস। যে কথাগুলো বলা হল তার সবই গত এক যুগের হু, ইউনিসেফ ও আইএপি’র বহু প্রামাণ্য গবেষণার সারাংশ।
২. সব খাবারই ভালো আবার সব খাবারই মাত্রাতিরিক্ত বা অতিরিক্ত মশলাদার হলে খারাপ। তাই সব রকম খাবারই মিলিয়ে মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে হবে, সেটাই হবে শিশুর সুষম খাদ্য। যা সহায়ক হবে শিশুর সর্বোত্তম বৃদ্ধি বিকাশে।
সাক্ষাৎকার: মৃন্ময় চন্দ

11
শহুরে আধুনিকাদের মধ্যেই কি ধূমপানের প্রবণতা বেশি?
হ্যাঁ, শহরে ধূমপানের প্রবণতা বেশি তো বটেই। তবে শুধু শহুরে আধুনিকাদের মধ্যেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও মেয়েদের মধ্যে ধূমপানের হার কম নয়। শহরের দিকে তাকালে দেখতে পাচ্ছি হাইস্কুল স্টুডেন্ট, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন ধূমপানের চল আছে, তেমন কর্পোরেট সেক্টরের মহিলাদের মধ্যেও ধূমপানের প্রবণতা আছে।
কিন্তু কেন মেয়েরা ধূমপান করেন বলে মনে হয়?
কেন করেন এর পিছনে কারণ অনেক কিছুই হতে পারে। শহরের মেয়েরা আধুনিকতা দেখাতে বা মানসিকভাবে এগিয়ে আছি কিংবা পুরুষের সমতুল্যতা দেখাতে গিয়ে ধূমপান বেশি করেন। আবার শুধুই ভালো লাগে বলেও অনেকে ধূমপান করেন। মেন্টাল, সাইকোলজিক্যাল আবার সোশ্যাল কারণও জড়িয়ে থাকতে পারে এই কেন’র সঙ্গে। তবে আমার মনে হয় কেন করেন, সেটা বড় কথা নয়— মেয়েরা যে ধূমপান করেন সেটাই সত্যি। আর এটাই ভাবনার বিষয়।
গ্রামীণ ক্ষেত্রেও তাহলে ধূমপানের চল রয়েছে?
অবশ্যই। ধূমপান মানে শুধুই নামী ব্র্যান্ডের দামি সিগারেট নয়। তাই সিগারেট না হলেও বিড়ি পান বা তামাকজাত দ্রব্য সেবনও হতে পারে। এহেন নেশার মাত্রা গ্রামাঞ্চলে যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
বর্তমানে কি ধূমপানের হার ক্রমবর্ধমান?
হ্যাঁ। ধূমপান অবশ্যই বেড়েছে। একটা ছোট্ট হিসাব দিই। পশ্চিমবঙ্গে প্রতি বছর ৭০-৮০ হাজার নতুন ক্যানসার রোগী দেখা যায়। নতুন এবং পুরানো মিলিয়ে এই সংখ্যাটা ছাড়িয়ে যায় ৩-৪ লক্ষ। আমাদের দেশে প্রতি বছর ১১ লক্ষ নতুন ক্যানসার রোগী পাওয়া যায় এবং নতুন পুরানো মিলিয়ে এই সংখ্যাটা ৩০-৪০ লক্ষ। এই পরিসংখ্যানটা যতটা সম্ভব দেওয়া গেলেও প্রান্তিক মানুষের মধ্যেও যে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা কত তা সঠিকভাবে অনেক সময়েই জানা যায় না। কারণ পরিসংখ্যান নেওয়ার মতো সুযোগ সুবিধাও সেখানে মেলে না। ফলে বোঝাই যাচ্ছে আসল সংখ্যাটা অনেক বেশি হবে।
ধূমপান নিয়ে শুনেছি অনেকের কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। ধূমপান করলে নাকি বুদ্ধি খোলে...?
একেবারেই সত্যি এটা। আশ্চর্যজনক যে মেয়েদের মধ্যে ধূমপানের বড় কারণ, অনেকে ভাবেন ধূমপান শরীরের জন্য ভালো। এটা ভেবেও অনেক মহিলাকে ধূমপান করতে শুনেছি যে, ধূমপান করলে নাকি শরীর ভালো থাকে, চিন্তাভাবনা ভালো হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। ধূমপান থেকে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হয় না।
ধূমপানের ফলে মেয়েদের শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা কতটা?
অনেকটাই। প্রথমত ধূমপান যে বেড়েছে, তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা পাচ্ছি। এখন অনেক মহিলাই আমাদের কাছে আসেন ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য। আগে স্মোকিং রিলেটেড ক্যানসারের হার কম থাকলেও এখন সেটা ক্রমশ বেড়েছে। আর এর হার এতটাই যে এখন মহিলাদের ওরাল ক্যানসার, ভয়েস বক্স, লাং ক্যানসারে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। আর এত আলোচনা, সচেতনতার পরেও সেটা কমেনি এখনও খুব পর্যন্ত, এটাই দুশ্চিন্তার বিষয়।
আর কী কী ক্ষতি হতে পারে নিয়মিত ধূমপান থেকে?
অর্ধেকের বেশি ক্যানসারের প্রত্যক্ষ সংযোগ রয়েছে ধূমপানের সঙ্গে। ওরাল, লাং ক্যানসার, ভয়েস বক্স ক্যানসার ছাড়াও গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টিনাল ক্যানসার, ব্রেস্ট ক্যানসার এবং সার্ভাইক্যাল ক্যানসারও ধূমপানের সঙ্গে জড়িয়ে। তাই আমরা চিকিৎসকরা বারবার বলব, ধূমপান ত্যাগ করুন।
গর্ভাবস্থায় ধূমপানের প্রত্যক্ষ প্রভাব কতটা?
ক্যানসারের বাইরে এক্ষেত্রেও ধূমপান যথেষ্ট ক্ষতি করে বইকি। এই সময় মা এবং সন্তান উভয়ের জীবন এক সূত্রে জড়িয়ে, ফলে ধূমপান না করাই শ্রেয়। এই সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা দরকার।
প্যাসিভ স্মোকিং কি সমান ক্ষতিকর?
প্যাসিভ স্মোকিং, স্মোকিংয়ের থেকেও মারাত্মক। অনেক ঘরোয়া গৃহবধূ আমার কাছে এসেছেন যাঁদের লাং ক্যানসার হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে তাঁরা জীবনে সিগারেট খাননি। তাহলে তাঁদের কেন এই ক্যানসার হল? প্রথমত, জেনেটিক কারণে হতেই পারে। তার সঙ্গে দূষণ তো আছেই। সব মিলিয়ে তাঁর রোগের উৎস কোথায়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আলোচনা করে দেখলাম তিনি প্যাসিভ স্মোকিংয়ের শিকার।
তাহলে বাঁচার উপায়?
কেউ ধূমপান করলে সেখান থেকে সরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। এখন তো দেখেছি শহুরে জীবনে ছোট্ট আবাসে স্থানাভাব একটা অন্যতম সমস্যা। যেখানে স্মোকার স্বামী ধূমপান করছেন, তখন স্ত্রী যাবেন কোথায়? এইভাবে প্যাসিভ স্মোকিংয়ের শিকার মেয়েদের হতেই হয়। কিছু বলে উঠতে পারছেন না হয়তো। এটা একটা বিরাট ক্ষতি। আমাদের কাছেও খুব কষ্টকর হয়ে যায় মেনে নেওয়া। যখন দেখি একজন সুগৃহিণী জীবনে কখনও ধূমপান করেননি, ভাবতেও পারেন না নেশাজাত কোনও দ্রব্য সেবনের কথা, তাঁকে ক্যানসার আক্রান্ত হতে দেখতে তখন খুব খারাপ লাগে।
মেয়েদের ধূমপান করা কি তাহলে একেবারেই বন্ধ করা উচিত?
এই বিষয়টা খুব সেনসিটিভ। মেয়ে বলে আলাদা আইন বা নিয়ম আমরা আনতে চাই না। ইনডিপেনডেন্টলি একজন মহিলা পুরুষের সমকক্ষ, সমতুল্য হিসেবে সব কাজ করতেই পারেন। সেদিক থেকে তাঁকে শুধু মহিলা বলে. কোনও কাজে বাধা দেওয়ার যুক্তি নেই। কিন্তু বাধাটা অন্য জায়গায়। সেটা আবার শুধু একজন মহিলাকে নয়, একজন পুরুষকেও ধূমপান করতে নিষেধ করা দরকার। তামাক সেবন, স্মোকিং বন্ধ হওয়াই উচিত, এর থেকেই ক্যানসারের আশঙ্কা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
আইন করে ধূমপান বন্ধ করা সম্ভব?
আইন করেই শেষ নয়, আইন মানা হলে সম্ভব। কারণ আইন তো রয়েছেই। কেন্দ্রীয় সরকারের কোটপা (সিগারেট অ্যান্ড আদার টোব্যাকো প্রডাক্ট অ্যাক্ট ২০১৫) অ্যাক্ট অনুযায়ী পাবলিক স্পেসে ধূমপান নিষিদ্ধ, স্কুলের ১০০ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করা যাবে না। জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টে এই নির্দেশিকাও আনছে স্কুল শিক্ষার্থীদের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে ৭ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডও হতে পারে। এটা আমরা সমর্থন জানাচ্ছি। তবে মনে রাখতে হবে আইন মেনে চলতে হবে।
সচেতনতা ছাড়া তো তা সম্ভব নয়?
অবশ্যই। সচেতনতাই পারে একজন সাধারণ নাগরিককে আদর্শ নাগরিক করে তুলতে। আইন তো রয়েছেই পাবলিক স্পেসে স্মোক করা যাবে না। অথচ আমরা দেখি একজন রাস্তায় ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে তাকে পুলিশ জরিমানা দিতে বাধ্য করেন। এটা স্মোকিংয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় না।
আইন অনুসারে স্কুল কলেজেও ধূমপান করা যায় না, অথচ অনেকেই করে। আবার এই একই শিক্ষার্থীকে দেখা যায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধূমপান করা যাবে না বলে করছে না।
সে সেখানে আইনটা মেনে চলছে কারণ সে বাধ্য।
একই ব্যক্তি একই আইনের দু’ক্ষেত্রে দু’ধরনের প্রয়োগ করছে, অথচ ধূমপানের বিরুদ্ধে না হয় নজরদারি, না হয় ফাইন। তাই আমার মতে আইনের যথাযথ প্রয়োগটা জরুরি।
অনেকে নাকি চেষ্টা করেও এ নেশার হাত থেকে মুক্তি পান না?
এই কথাটা আংশিক সত্যি। আংশিক বললাম কারণ চেষ্টা না করলে ছাড়া সম্ভব নয়। টোব্যাকো এমন একটা নেশা যা আসক্তি তৈরি করে।
একবার এই নেশা শুরু করলে ছাড়াটা সত্যি অত সহজ নয়। ছাড়তে গেলে মানসিক জোর লাগে। এমন অনেককে আমি চিনি যাঁরা বহুবার সিগারেট ছেড়েছেন, পুনরায় ধূমপান শুরু করেছেন।
বিভিন্ন দেশে শুধু মেয়েদের জন্য ধূমপান ব্যানড হয়েছে। তেমন কিছু এদেশে তো হয়নি?
না হয়নি। কেউ ভাবতেই পারেন আইনত টোব্যাকো আমাদের দেশে ব্যানড হয়নি, তাহলে কেন ধূমপান করব না! যদিও গুটখা ব্যানড হয়েছে। সেটা সেবন করা মানে আইন ভাঙা, ফলে অনেকে গুটখা সেবন করেন না বা কম করেন। আবার আইনকে তোয়াক্কা না করা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু এমন কিছু এখনও পর্যন্ত ধূমপানের ক্ষেত্রে হয়নি।
আগেই বলেছি ক্ষতিটা শুধু মেয়েদের নয়, ছেলে-মেয়ে সবার। তাই সবাইকেই সচেতন হতে হবে, ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। মেয়েদের খেয়াল রাখতে হবে জেনেশুনে নিজেদের ক্ষতি করলে কেউ বাধা হয়তো দিতে পারে না, কিন্তু জেনেবুঝে অন্যের ক্ষতি করার অধিকার কারওর নেই।
ধূমপান থেকে তো পরিবেশেরও সমান ক্ষতি হচ্ছে?
এমনিতে তো দূষণ বাড়ছে, কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনো অক্সাইড বাড়ছে। তার সঙ্গে এই ধূমপান। রাস্তাঘাটে, পাবলিক স্পেসে, এমনকী কর্পোরেট অফিসেও ধূমপান ক্রমশ বাড়ছে। বছর ১০-১২ আগেও গৃহিণীদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারের রোগী অতটা পেতাম না, যেটা এখন খুব বেড়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কিন্তু বেশ জটিল। রাজ্য সরকারকেও অনুরোধ করছি, আইনের সঠিক প্রয়োগের দিকটা যেন উপেক্ষিত না হয়।
চিকিৎসার দ্বারা ধূমপান ছাড়ানো কি সম্ভব?
এখন নিকোটিন প্যাচ ব্যবহার করে ধূমপান ছাড়ার পদ্ধতি রয়েছে। তবে আমি চিকিৎসক হিসেবে মনে করি, ওইভাবে জোর করে ধূমপান ছাড়ানো সম্ভব নয়। যিনি ধূমপায়ী তাঁকে বুঝতে হবে, এটা শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। তাঁর একার ক্ষতিই শুধু নয়, তাঁর পরিবার-পরিজন, তাঁর কাছাকাছি যাঁরা থাকেন তাঁদেরও ক্ষতি। মানসিক জোর থেকেই আর ধূমপান করব না ভেবে ছেড়ে দিতে হবে।
মনে রাখবেন, তামাকের অন্য নাম ক্যানসার। নানা ভাবে এটা খাওয়া যায়। তামাক চিবিয়ে, প্যাকেটজাত নানা নেশার দ্রব্য কিনে একসঙ্গে অনেকে খান। তামাক থেকে কিন্তু কারও উন্নতি হয়নি একমাত্র সেই উৎপাদক সংস্থা ছাড়া। তাই ধূমপান ছাড়ুন, সুস্থ থাকুন।
সাক্ষাৎকার: শেরী

12

শরীর ও স্বাস্থ্য
হোমিওপ্যাথির রহস্য উন্মোচনে...

প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথির রহস্য
উত্তর: স্যামুয়েল হ্যানিম্যান প্রবর্তিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দু’শতাব্দীরও বেশিদিন ধরে চলে আসছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ওষুধকে অনেক সময় Potentisation-এর নামে এতখানিই ‘লঘু’ করা হয় যে তাতে মূল ওষুধের কোনও অণু -পরমাণুরও থাকা সম্ভব নয়। অর্থাৎ কিনা রাসায়নিক বিচারে এরা জল ছাড়া আর কিছু নয়। অথচ এরা দিব্যি ওষুধের মতো কাজ করে। শুধু তাই নয়, বহু ক্ষেত্রে অত্যাশ্চর্য ফল দেয়। অন্য ওষুধকেও ছাড়িয়ে যায়। এই হল রহস্য। যার সুষ্ঠু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আজও অধরা।
প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথি নিয়ে সন্দেহ
উত্তর: অনেকেই সন্দেহ করেন যে, হোমিওপ্যাথিতে রোগ সারে মনের কারণে, আর হোমিওপ্যাথি কৃতিত্ব নিতে চায়। হোমিওপ্যাথি একটা বুজরুকি। এটাকে আইন করে বন্ধ করা দরকার। কিন্ত দু’শো বছর ধরে কোটি কোটি মানুষের রোগারোগ্যের অস্ত্রকে এভাবে ফুৎকারে নস্যাৎ করা যায় না, বিশেষ করে হোমিওপ্যাথি যখন শিশু, পশু এবং উদ্ভিদেরও উপকারে আসে, যেসব ক্ষেত্রে ‘এটা খেলেই আমি সেরে যাব’ এরকম মননের কোনও ব্যাপার থাকে না। এছাড়া আরও অন্যান্য যুক্তির সাহায্যে মানসিক তত্ত্বকে খারিজ করা যায়। কিন্তু, আসল প্রয়োজন হল দুটি মৌলিক প্রশ্নের বৈজ্ঞানিক উত্তর।
প্রশ্ন: দুটি মৌলিক প্রশ্ন
প্রশ্ন দুটি হল: ১. অতিমাত্রায় লঘুকৃত একটা ওষুধ কীভাবে অন্যটার থেকে আলাদা হয়। ২. এদের ভেষজগুণের চাবিকাঠিটা কোথায়, অর্থাৎ কীভাবে রোগ সারায়।
দুশো বছর ধরে কোটি কোটি রোগীর ক্ষেত্রে নিদানিক সাফল্য সত্ত্বেও এই দুটো মৌলিক প্রশ্নের সদুত্তরের অভাবে হোমিওপ্যাথি আজও বৈজ্ঞানিক তো বটেই এমনকী ইপ্সিত সামাজিক স্বীকৃতিও পায়নি। বর্তমান কালের নিদানিক সাফল্যের পরিসংখ্যান এই মৌলিক প্রশ্নগুলোকে পাশ কাটিয়ে যায়। ফলে, স্বীকৃতিও এদের পাশ কাটিয়ে যায়। তাই এটা পরিষ্কার যে, প্রশ্নগুলোর সদুত্তর ছাড়া এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়।
প্রথম প্রশ্নের উত্তর
উত্তর: এটা লক্ষ্য করার বিষয় যে, অতি লঘুকৃত ওষুধগুলো রাসায়নিক বিচারে জল ছাড়া আর কিছু না হলেও এরা কিন্তু জীবদেহে কাজ করে মূল ভেষজ ও তার পোটেন্সি অনুসারে। যেমন, নেট্রাম মিউর-৩০সি ও নেট্রাম সালফ-৩০সি পৃথক পৃথক ফল দেয়। সাইলিসিয়া-৩সি এবং সাইলিসিয়া-২০০সি পৃথকভাবে কাজ করে। তাই এটা বলা যায় যে, ‘কিছু একটা’ ব্যাপার এদের পৃথক করে। এখন কথা হল কী সেই ‘কিছু একটা’। কোনও উদ্ভট তত্ত্বের আমদানী না করেও যদি দেখা যায় যে জলের এমন কোনও ক্ষমতা আছে যার দ্বারা সে মূল ভেষজ ও তার পোটেন্সি জ্ঞাপক বার্তাকে কোনও আণবিক কাঠামোগত বৈশিষ্ট্যের দ্বারা ধরে রাখতে পারে, তাহলে জলের বিভিন্ন আণবিক অবস্থাকে সেই ‘কিছু একটা’ বলে চিহ্নিত করা যায়। জলের তিনটি অসামান্য গুণ এই কাজটি করতে সক্ষম। গুণ তিনটি হল—(১) স্বাভাবিক তাপমাত্রায় জলের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফখণ্ড বা কেলাস ভাসতে দেখা যায়। (২) যাদের কাঠামো অসংখ্য প্রকারের হতে পারে এবং (৩) আকারপ্রকার বিভিন্ন রকমের বস্তুকণা দ্বারা প্রভাবিত হয়।
এখানে একটা কথা বলা দরকার যে, জলের এই সব গুণের পরিচয় পাওয়া গেছে ১৯৬৪-২০১৫ সাল পর্যন্ত নানা পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে।
এর থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, হোমিওপ্যাথির অতি লঘুকৃত বস্তুগুলো রাসায়নিক বিচারে জল ছাড়া আর কিছু না হলেও আণবিক কাঠামোর দিক থেকে এরা একে অন্যের থেকে পৃথক। এখন দেখতে হবে এদের কোনও ভেষজ গুণ আছে কি না।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর
উত্তর: জলের আণবিক কাঠামো ভেষজ ও তার পোটেন্সিভিত্তিক, আর জৈব অণুর গঠন বিভিন্ন কারণে একটু-আধটু পালটাতে পারে, কিন্তু সেটা বেশি হয়ে গেলে সেটা তার রুগ্ণ অবস্থা সূচিত করে। এছাড়াও জলের আর একটি অসামান্য ধর্মের কথা আমাদের বোধের মধ্যে রাখতে হবে। সেটা হল—সব জৈব অণুই জলের অণুদের ফাঁকে ফাঁকে খাপ খেয়ে যায়, তা জল তরল বা কঠিন যে অবস্থারই হোক না কেন। এটা না হলে ফ্রিজে খাবারদাবার সংরক্ষণ করা যেত না। পক্ষান্তরে, যখন কোনও অণু জলের অণুদের ফাঁকে ফাঁকে খাপ খায় না তখন জল জমে বরফ হওয়ার সময় ওই অণুগুলোকে গুঁড়িয়ে দেয় এবং জলের বাইরে বার করে দেয়। এ জন্যই উত্তর মহাসাগরের বরফ লবণমুক্ত। অতএব, জলীয় অণু উপযুক্ত আকৃতির হলে তারা চাপ দিয়ে একটু-আধটু পালটে জৈব অণুর আকৃতিকে তাদের সুস্থস্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারে, যদি আকৃতির গরমিল তেমন বড় মাপের না হয়। বাস্তবেও দেখা যায় যে, ছোট ছোট বরফের কেলাসের সাহায্যে ক্ষতিগ্রস্ত জৈব অণুদের সারিয়ে তোলা যায়।
কাঠামোর মিল এবং ছাঁচ-নীতি জীবের বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে একথা জীববিজ্ঞানে আজ সুবিদিত। স্বাস্থ্য রক্ষা তথা রোগ আরোগ্যে জলের আণবিক কাঠামোর মাধ্যমে এই নীতির ভূমিকা থাকা খুবই স্বাভাবিক। এও দেখা যায় যে, রুগ্ণ জীবকোষের অন্তর্গত জলের ছাঁচ/ কাঠামোগুলো জৈব অণুদের রুগণ ছাপ গ্রহণ করে ভাঙাচোরা অবস্থা পায়। বিপরীতভাবে, আকৃতির গরমিল তেমন বড় মাপের না হলে জলের উপযুক্ত ছাঁচ বা কাঠামো যে রুগণ ঩জৈব অণুদের চাপ দিয়ে তাদের সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে এর মধ্যেও কোনও অস্বাভাবিকতা নেই।
সিদ্ধান্ত
উত্তর: এ থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, অতি লঘুকৃত ওষুধের ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষভাবে গঠিত জলের আণবিক ছাঁচ/ কাঠামোই ওষুধের আসল রূপ। আর নিম্ন শক্তির ওষুধে তো জল ছাড়াও মূল রাসায়নিক বস্তুর ছাঁচ বা কাঠামো থাকছেই। ফলে, কাঠামোগত মডেলের সংজ্ঞা দাঁড়ায়: রোগ নিরাময়ের ক্ষমতাযুক্ত বস্তুই ওষুধের মান্যতার অধিকারী এবং জলের বা অন্য কোনও রাসায়নিক বস্তুর আণবিক ছাঁচ বা কাঠামোই তার ভেষজগুণের উৎস।
প্রশ্ন: আরও কিছু
উত্তর: উপরের বৈজ্ঞানিক তথ্য ছাড়াও কয়েকটি সাধারণ ব্যাপারও কাঠামোগত মডেলকে সমর্থন করে। যেমন, রাসায়নিক ফর্মুলাই যদি ওষুধ নির্ণয় করত, তাহলে কার্বোএনিমেলিস এবং গ্রাফাইটিস দুটো আলাদা ওষুধ হত না, কারণ রাসায়নিক বিচারে দুটোই কার্বন। এদের পার্থক্যের উৎস হল, এদের আণবিক বিন্যাসের পার্থক্য। এক্স-রে নামক ওষুধটি গোড়া থাকেই রাসায়নিক পরিচয়বিহীন। জলের ওপর আরোপিত আণবিক বিন্যাস ছাড়া অন্য কিছুই এর ভেষজ গুণের উৎস হতে পারে না। প্রখর তাপে বা সূর্যালোকে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ হয়ে যায়। এর গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা এই হতে পারে যে, তাপের প্রভাবে পরিচয় বহনকারী ছাঁচ বা কাঠামোগুলো গলে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটায়। সংরক্ষণকারী বস্তু (যেমন, সুরাসার) ছাড়া কেবলমাত্র জলে গুলে দেওয়া শক্তিকৃত ওষুধের গুণ তিন-চার দিনের বেশি থাকে না। কারণ, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, জলের অন্তর্গত কেলাসগুলো দীর্ঘদিন থাকে না, আপনাআপনি ভেঙে যায় এবং আবার নতুনভাবে গড়ে ওঠে।
সাধারণক্ষেত্রেও কাঠামোগত ধারণা যে বৈধতা পেতে পারে তার যেন একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এটা সুবিদিত যে ব্যাকটেরিয়াকে মারার ব্যাপারে অ্যান্টিবায়োটিক যে নীতিতে কাজ করে, তা কাঠামোকে অবলম্বন করেই। ব্যাকটেরিয়ার বিশেষ অংশে গিয়ে অ্যান্টিবায়োটিকের অণু কাঠামোগতভাবে তালার সঙ্গে চাবির মতো আটকে যায় এবং তার জৈব ক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে। জলের আণবিক কাঠামোরও এই ধরনের ভূমিকা থাকা স্বাভাবিক। সাধারণত রাসায়নিক দৃষ্টিতেই ওষুধের ব্যাখ্যা করা হয়। হোমিওপ্যাথি আমাদের বাধ্য করে কাঠামোগত দৃষ্টিকোণ থেকে ওষুধকে বোঝার জন্য। হয়তো একদিন কাঠামোগত দৃষ্টিকোণ থেকেই সমস্ত ওষুধকে বোঝার দিন আসবে।

13


ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এটা কেন করলেন? আচমকা বাংলাদেশ থেকে আকাশ পথে পণ্য পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা। ঢাকা থেকে লন্ডন যাত্রী ছাড়া আর সব কিছু যাবে জাহাজে, বিমানে নয়। তা কী করে হয়! এত সময় কোথায়। রোজকারের সব্জির সমুদ্রযাত্রা সম্ভব নয়। পচে নষ্ট হবে। বাংলাদেশ থেকে ফি-বছর এক হাজার কোটি টাকার সব্জি যাচ্ছে বিদেশে। তার অর্ধেক যায় যুক্তরাজ্যে। রফতানি হয় বলে কৃষকরা ভাল দামও পান। সেটা বন্ধ হলে তাঁদের তো মাথায় হাত। লোকসান সামলানোর বিকল্প পথ কোথায়? অতিরিক্ত সব্জি রাস্তায় ফেলে হা-হুতাশ করা ছাড়া? ক্যামেরন শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির অভিজ্ঞ নেতা। রাজনীতিতে শ্রমিক-কৃষকের ভূমিকা তাঁর জানা। তাঁর সিদ্ধান্তে শ্রমিকরাও মরবে। পোশাক শিল্প প্রমাদ গুনবে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ভীষণ ভাবে দাঁড়িয়ে রফতানি বাণিজ্যের ওপর।

বাংলাদেশকে ব্যানানা রিপাবলিক বলা যেতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু পণ্য রফতানির উপর অর্থনীতি নির্ভরশীল। সেখানে আঘাত এলে সইবে কী করে? নিষেধাজ্ঞার কারণও একেবারেই স্পষ্ট নয়। বলা হচ্ছে, নিরাপত্তার অভাব। পণ্যে আবার নিরাপত্তা কী? যে দেশ পণ্য নেবে, তারা তো দেখে বুঝে হিসেব করে নেবে। মাঝখানে খোয়া গেলে দায় তাদের নয়। তারা চেপে ধরবে রফতানিকারক দেশকে। বিমানের চেয়ে জাহাজে কি নিরাপত্তা বেশি? ঢেউ ভেঙে দীর্ঘ সফরে পণ্য এদিক সেদিক হওয়ার সুযোগ তো আরও অনেক বেশি। সব ঠিকঠাক থাকাটাই আশ্চর্যের।

সব পণ্যেই বিমা করা থাকে। মাঝখানে হারালে দায় বিমা কোম্পানির। বাংলাদেশের বিমা কোম্পানি সেদিক থেকে যথেষ্ট দায়বদ্ধ। নিরাপত্তা নিয়ে যদি প্রশ্নই ওঠে, বিমান বন্দরে নজরদারি বাড়ালেই হয়। তারও ব্যবস্থা হয়েছে। ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে প্রতি দিন সেখানকার অফিসে যাচ্ছেন অসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। সঙ্গে থাকছেন সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় আমেরিকাও উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে তারা প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে। বাংলাদেশের পণ্য যে সব দেশে যায় তারা সবাই যদি সন্দিহান হয়ে ওঠে তাহলে ক্ষতি আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন

ওরা ভয়ে চুপ

 

এর আগে অস্ট্রেলিয়াও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তাতে রফতানি বাণিজ্যে তেমন প্রভাব পড়েনি। তাদের বাজার খুব ছোট। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় বিপদ অনেক। বাংলাদেশের পোশাক রফতানির ১২ শতাংশ আয় যুক্তরাজ্য থেকে। গত অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ৩০০ কোটি ডলারের পোশাক। চলতি বছরে এর মধ্যেই আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। রফতানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ। নিষেধাজ্ঞার কারণে লন্ডনের রুট বদলে অন্য দেশে পণ্য পাঠাতে হবে সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইল্যান্ড, দুবাই দিয়ে। তাতে খরচ অনেক বাড়বে। লাভের গুড় পিঁপড়ে খাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মনে করছেন, নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। তাঁর আশার ভিত্তি কী তিনি বলেননি। মন্ত্রীর কথায় উদ্বেগ কমেনি। রফতানি এক দিন বন্ধ থাকা মানে ব্যাপক ক্ষতি। রফতানি বাণিজ্যে শুধু বিদেশি মুদ্রা আয়ই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে অসংখ্য মানুষের অন্নসংস্থান। ব্রিটেন কী সে কথা ভাববে না!


14
দু’বেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করার তাগিদে কোনও রকম স্বাস্থ্য সচেতনতা ছাড়াই ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলিতে নিজেদের ডিম্বাণু বেচছেন তেলেঙ্গনার কলেজ ছাত্রীরা। হামেশাই তাঁরা এই সব ক্লিনিকগুলোর দালালদের খপ্পরে পড়ছেন। তাঁরা জানছেনও না দিনের পর দিন কোনও রকম যথাযথ পদ্ধতি এবং প্রোটেকশন ছাড়াই এ ভাবে ডিম্বাণু বেচে দেওয়ার ফলে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে তাঁদের স্বাস্থ্যে!

এই ছাত্রীরা মূলত তেলেঙ্গনার নালগোন্ডা জেলার দেবরকোন্ডা, আদিবাসী অধ্যুসিত অঞ্চল মেহবুব নগর, ওয়ারানঙ্গান এবং করিমনগরের বাসিন্দা। এমনিতেই দারিদ্র এই অঞ্চলের মানুষগুলোর নিত্যদিনের সঙ্গী। তার উপর টানা খরায় আরও বেড়েছে দুর্দশা। ফলে সেখানকার অল্পবয়সী মেয়েদের সহজেই লোভ দেখিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে এই পেশায় নিয়ে আসছে বিভিন্ন ফার্টিলিটি ক্লিনিকের দালালরা।

তবে ডিম্বাণু দাত্রীদের নির্বাচনের ব্যাপারে বেশ ‘নাক উঁচু’ ওই ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলি। গায়ের রং, শারীরিক গঠন, সুস্থতা এবং ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে চলছে ঝাড়াই বাছাই। কম সময়ের মধ্যে বেশি সংখ্যক ডিম্বাণু পাওয়ার লোভে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই ডিম্বাণু দাত্রী দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন হরমোনাল ইঞ্জেকশন। খাওয়ানো হচ্ছে ওষুধ।

কিন্তু, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা এই পেশা বেছে নিচ্ছেন তাঁদের উপার্জন কত? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক কলেজ পড়ুয়া জানিয়েছেন, মাস গেলে তাঁর পকেটে ঢোকে মাত্র ১০ হাজার টাকা।

ম্যাক্সকিউর হাসপাতালের চিকিত্সক অজ্ঞানি মনুজা জানিয়েছেন, অবৈজ্ঞানিক ভাবে লাগাতার এই রকম হরমোন থেরাপির ফলে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে এই ছাত্রীদের শরীরে। ভবিষ্যতে তাঁদের মা হওয়ার সময় প্রাণঘাতী সমস্যাও হতে পারে। কিন্তু, কী ভাবে মিটবে এই সমস্যা? তার কোনও জবাবই এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

15

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ১০ প্রাকৃতিক দুর্যোগ
৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১৫:২০:৪৮
e e e print
Tsunami

একবিংশ শতকে প্রযুক্তিতে, জীবনযাত্রার মানে আমরা এগিয়ে গিয়েছি কয়েকশ ধাপ। কিন্তু প্রকৃতির সামনে এখনও আমরা হেরো। তার খেয়ালের কাছে নিতান্তই অসহায় আমরা। গ্যালারিতে রইল এমনই সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হদিস, যা বারবার প্রমাণ করে তাঁর মর্জির কাছে  আজও কত তুচ্ছ আমরা।
আরও দেখুন: বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ১০ সেতু

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ১০ সেতু

ক্যারিক-এ-রেদে রোপ ব্রিজ, উত্তর আয়ারল্যান্ড

ছবি দেখলেই ভয় শিউরে উঠতে হয়। অথচ এই ব্রিজ পারাপার করেই বছরের পর বছর জীবন যাপন করছেন এই সব এলাকার মানুষ জন। দেখে নিন বিশ্বের এমনই ১০ বিপজ্জনক ব্রিজের ছবি।



Pages: [1] 2 3