Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Afsara Tasneem Misha

Pages: [1]
1
মেডিটেশন (meditation) যোগ ব্যায়াম (yoga) মূলতঃ একটি শয়তানী ফাঁদ; যা নিঃসন্দেহে হারাম। কেন হারাম; সংক্ষেপে এর কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হল–

১-
এটি মূলতঃ হাজার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ-সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম। (yoga and breathing by Muhammad ‘Abd al-Fattaah Faheem p. 19)

অথচ রাসূলুল্লাহ  ﷺ বলেছেন, لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী ২৬৯৫)

২- মেডিটেশনের লক্ষ্য হ’ল অন্তর্গুরুকে পাওয়া। তাদের ভাষায়, ‘মেডিটেশনের মাধ্যমেই আপনি সংযোগ সাধন করতে পারেন আপনার  ‘অন্তরের আমি’র  সাথে, আপনার শক্তির মূল উৎসের সাথে।’(http://question.quantummethod.org.bd)

মেডিটেশনের এই দৃষ্টিভঙ্গি ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ। মূলতঃ ‘অন্তরের আমি’ হল নফসে আম্মারা; যার অনুসরণের পরিণতি হল জাহান্নাম। এদেরকে লক্ষ্য করেই আল্লাহ বলেন,

 أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَٰهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا-أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ ۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ ۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا

আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে, যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত। (সূরা ফুরক্বান ৪৩-৪৪)

৩- মেডিটেশনের একটি দাবী হচ্ছে, ‘ভ্রান্ত ধারণা ও সংস্কারের শৃঙ্খল মুক্তির পথ হচ্ছে মেডিটেশন।’ (কোয়ান্টাম টেক্সটবুক)

ইসলামের দৃষ্টিতে এটি একটি মারাত্মক ভুল দাবী। কেননা, আল্লাহ প্রদত্ত ও  রাসূল ﷺ প্রদর্শিত চির কল্যাণময়, শান্তি ও মুক্তির একমাত্র পথ ইসলাম। ইসলামের মাঝেই রয়েছে মানবজাতির যাবতীয় ভ্রান্ত ধারণার উপশম এবং মানুষের তৈরি  শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকরী ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ কত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন,

كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ

এটি সেই কিতাব যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি যেন তুমি মানুষকে বের করে আন অনেক অন্ধকার থেকে এক আলোর দিকে। (সূরা ইবরাহীম ০১)

৪- মেডিটেশনের দৃষ্টিভঙ্গি হল, মন সকল শক্তির উৎস চেতনা অবিনশ্বর, প্রাণ রহস্যের চাবিকাঠি।’ (কোয়ান্টাম টেক্সটবুক)

মেডিটেশনের এ বিশ্বাস ও  দৃষ্টিভঙ্গি পরিস্কারভাবে কুফর ও শিরক। কেননা, ইসলাম কেবল আল্লাহকেই সকল শক্তির মূল উৎস ও সাফল্যের চাবিকাঠি মনে করে। অন্য কোন কিছু সকল শক্তির উৎস, অবিনশ্বর, প্রাণ রহস্যের চাবিকাঠি মনে করা বা বিশ্বাস করা আল্লাহর সাথে সুস্পষ্ট শিরক। আল্লাহ বলেন,

وَمِنَ النَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ اللّهِ أَندَاداً يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللّهِ وَالَّذِينَ آمَنُواْ أَشَدُّ حُبًّا لِّلّهِ وَلَوْ يَرَى الَّذِينَ ظَلَمُواْ إِذْ يَرَوْنَ الْعَذَابَ أَنَّ الْقُوَّةَ لِلّهِ جَمِيعاً وَأَنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعَذَابِ
আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী। আর কতইনা উত্তম হ’ত যদি এ জালেমরা পার্থিব কোন কোন আযাব প্রত্যক্ষ করেই উপলব্ধি করে নিত যে, যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর আযাবই সবচেয়ে কঠিনতর। (সূরা বাকারা ১৬৫)

৫- কোয়ান্টাম টেক্সটবুক-এ আছে, শিথিলায়ন প্রক্রিয়ায় মানুষের মধ্যে এমন এক ক্ষমতা তৈরী হয়, যার দ্বারা সে নিজেই নিজের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে পারে…। ইচ্ছা করেছেন; ঘটনা ঘটেছে। ইচ্ছা করেছেন; মানুষ রোগমুক্ত হয়েছে। আপনিও এ চাবিকাঠিকে কাজে লাগিয়ে অর্জন করতে পারেন অতিচেতনা।’

মুলতঃএ ধরনের বিশ্বাস ও কর্ম-তৎপরতা পরিস্কার কুফর ও শিরক। ‘কুন’ শব্দ ব্যবহারে ইচ্ছার মাধ্যমে যে কোন ঘটানোর মালিক একমাত্র আল্লাহ। কোয়ান্টাম মেডিটেশনে এই ‘কুন’ শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে ইচ্ছা শক্তির প্রতিফলন সুস্পষ্ট শিরক।
আল্লাহ বলেন,
إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ فَسُبْحَانَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
যখন তিনি কোন কিছু করার ইচ্ছা করেন, তখন তাঁকে কেবল বলতে হয় হও-ফলে তা হয়ে যায়। অতএব মহাপবিত্র ও মহাপ্রশংসিত আল্লাহ। তাঁর হাতে আছে সকল বিষয়ের সকল ক্ষমতা। আর তাঁর নিকটেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে।(সূরা ইয়াসীন ৮২-৮৩)

৬- কোয়ান্টাম টেক্সটবুক-এ আছে, ‘শিথিলায়ন প্রক্রিয়ায় মানুষের মধ্যে এমন এক ক্ষমতা তৈরী হয়, যার দ্বারা সে নিজেই নিজের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে পারে। এজন্য একটা গল্প বর্ণনা করা হয়েছে যে, এক ইঞ্জিনিয়ার সপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করার মনছবি দেখতে লাগল। ফলে সে ডিভি ভিসা পেয়ে গেল। তারপর সেখানে ভাল একটা চাকুরীর জন্য মনছবি দেখতে লাগল। ফলে সেখানে যাওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই উন্নতমানের একটা চাকুরী পেয়ে গেল।’অথচ ইসলাম মানুষকে তাকদীরে বিশ্বাস রেখে বৈধভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে বলে। আল্লাহ বলেন,

قُلْ لَنْ يُصِيْبَنَا إِلاَّ مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا

বলে দিন, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের নিকট পৌঁছবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক। (সূরা তওবা ৫১)

৭- উক্ত বইয়ের মধ্যে শিথিলায়ন প্রক্রিয়াকে আস্তিক-নাস্তিক, দরবেশ-ঋষি, মুসলিম-অমুসলিম সবার জন্য আত্মিক উন্নতির পথ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে যার নুন্যতম জ্ঞান রয়েছে তিনিও এই দাবীর অসারতা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। ইসলামের বিধান অনুযায়ী আত্মিক উন্নতির পথ নির্ধারিত। এর সাথে বুদ্ধ, যোগী, সন্যাসী, ঋষিদের অনুসৃত শিথিলায়ন পদ্ধতির কোন সম্পর্ক নাই।
আল্লাহ বলেন,
وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্থ। (সুরা ইমরান ৮৫ )

৮- বইটির সংশ্লিষ্ট অংশে বলা হয়েছে, ‘কথিত আছে অলৌকিক শক্তিবলে ঋষিরা ইসম বা মন্ত্র উচ্চারণ করতেন আর যাদুর মত সব ঘটনা ঘটে যেত। যে কোন ঋষিরা মন্ত্র উচ্চারণের আগে বছরের পর বছর ইসম বা মন্ত্র জপ করতেন বা জিকির করতেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আল্লাহ, ইয়াহু, ইয়া হক, ওম ইত্যাদি। ধর্মবহির্ভূত ধ্যানীরা নিজের পছন্দমত কোন শব্দ লক্ষ লক্ষবার উচ্চারণ করেন। তাদের বিশ্বাস এইভাবে অগণিতবার উচ্চারণের ফলে এই ধ্বনি এমন এক মনোদৈহিক স্পন্দন সৃষ্টিতে সহায়ক হয় যার ফলে সে তার মনোদৈহিক শক্তি পুরোপুরি একাগ্রভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়।’

এর মাধ্যমে মূলতঃ তারা দাওয়াত দিচ্ছে, র্সবশ্বেরবাদের প্রতি; যা একাধারে কুফর ও শিরক। ইসলামে মুনী-ঋষি বা যোগী-সন্যাসীদের ন্যায় এ ধরনের ইসম বা মন্ত্রজপ বা জিকিরের কোন অস্তিত্ব নাই। যার মধ্যে ইসলামের নুন্যতম শিক্ষা রয়েছে, তিনি অবশ্যই বৌদ্ধ, যোগী-ঋষি ও হিন্দু সন্যাসীদের পথ পরিহার করবেন এবং সর্বদা রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর পথ অনুসরণ করবেন। আল্লাহ বলেন,
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا
যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহা সাফল্য অর্জন করবে। (সুরা আহযাব ৭১)

৯- অন্যান্য বিদ‘আতীদের ন্যায় এরাও কোরআন-হাদীসের অপব্যাখ্যা করেছে মুসলমানদের ধোঁকা দিয়ে দলে ভিড়ানোর জন্য।যেমন- তারা সূরা জিন-এর ২৬ ও ২৭ আয়াতের অপব্যাখ্যা করে বলেছেন, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা গায়েবের খবর জানাতে পারেন। অতএব যে যা জানতে চায় আল্লাহ তাকে সেই জ্ঞান দিয়ে দেন’ (প্রশ্নোত্তর ১৭৫৩)।

অথচ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাঁর মনোনীত রাসূল ছাড়া তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারু নিকট প্রকাশ করেন না। এ সময় তিনি সামনে ও পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করেন’। অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর রাসূলের নিকট ‘অহি’ প্রেরণ করেন এবং তাকে শয়তান থেকে নিরাপদ রাখেন। এই ‘অহি’-টাই হ’ল গায়েবের খবর, যা কোরআন-হাদীস আকারে আমাদের কাছে মওজুদ রয়েছে।

১০- সাধারণত মানুষ মেডিটেশন (meditation) করে অন্তরের প্রশান্তির জন্য। অথচ আল্লাহ বলেন, মেডিটেশনে নয়; বরং أَلا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوب জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়। ( সূরা রাদ ২৮)

এখানে মাত্র ১০ টি উল্লেখ করা হল। অন্যথায় এরকম আরো অনেক কারণ রয়েছে; যেগুলো এটা প্রমাণ করে যে, মেডিটেশন (meditation) যোগ ব্যায়াম (yoga)-এর পুরা কনসেপ্টটাই হল, কুফর-শিরক ও বেদআত নির্ভর। সুতরাং এটা যে হারাম-এই সন্দেহ করাটাও ‘হারাম’ হবে।

#Collected

2
লেখক : আদেল বিন আলী আশ-শিদ্দী / আহমদ আল-মাযইয়াদ     
অনুবাদ : সাইফুল্লাহ আহমাদ  | ওয়েব সম্পাদনাঃ মোঃ মাহমুদ -ই- গাফফার

ইসলামী শরীয়ত হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন পদ্ধতি যা সকল দিক থেকে সার্বিকভাবে মুসলমানের ব্যক্তিগত জীবনকে গঠন করার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছে এসব দিকের মধ্যে গুনাবলি শিষ্টাচার ও চরিত্রের দিকটি অন্যতম। ইসলাম এদিকে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছে। তাইতো আকীদা ও আখলাকের মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করে দিয়েছে, যেমন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “মুমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ ঈমানদার হচ্ছে সে ব্যক্তি, যে তাদের মধ্যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।” [আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযি ]

সুতরাং উত্তম চরিত্র হচ্ছে ঈমানের প্রমাণবাহী ও প্রতিফলন। চরিত্র ব্যতীত ঈমান প্রতিফলিত হয় না বরং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে, তাঁকে প্রেরণের অন্যতম মহান উদ্দেশ্য হচ্ছে চরিত্রের উত্তম দিকসমূহ পরিপূর্ণ করে দেয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “আমি তো কেবল চরিত্রের উত্তম দিকসমূহ পরিপূর্ণ করে দিতে প্রেরিত হয়েছি।”  ইমাম আহমাদ ও ইমাম বুখারী আদাবুল মুফরাদে বর্ণনা করেছেন। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা উত্তম ও সুন্দরতম চরিত্রের মাধ্যমে তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, “নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত।” [সূরা আল, কালাম : ৪]

 
কোথায় এ চরিত্র বর্তমান বস্তুবাদী মতবাদ ও মানবতাবাদী মানুষের মনগড়া চিন্তা চেতনায় ?
যেখানে চরিত্রের দিককে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে, তা শুধু সুবিদাবাদী নীতিমালা ও বস্তুবাদী স্বার্থের উপর প্রতিষ্ঠিত। যদিও তা অন্যদের উপর জুলুম বা নির্যাতনের মাধ্যমে হয়। অন্য সব জাতির সম্পদ লুন্ঠন ও মানুষের সম্মান হানীর মাধ্যমে অর্জিত হয়।

একজন মুসলমানের উপর তার আচার-আচরণে আল্লাহর সাথে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে, অন্য মানুষের সাথে, এমনকি নিজের সাথে কি ধরনের আচরণ করা উচিত ইসলাম তার এক অভিনব চকমপ্রদ চিত্র অংকন করে দিয়েছে। যখনই একজন মুসলমান বাস্তবে ও তার লেনদেনে ইসলামী চরিত্রের অনুসরণ করে তখনই সে অভিষ্ট পরিপূর্ণতার অতি নিকটে পৌঁছে যায়, যা তাকে আরো বেশি আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও উচ্চ মর্যাদার সোপানে উন্নীত হতে সহযোগিতা করে। পক্ষান্তরে, যখনই একজন মুসলমান ইসলামের চরিত্র ও শিষ্টাচার হতে দূরে সরে যায় সে বাস্তবে ইসলামের প্রকৃত প্রাণ চাঞ্চল্য, নিয়ম-নীতির ভিত্তি হতে দূরে সরে যায়। সে যান্ত্রিক মানুষের মত হয়ে যায়, যার কোন অনুভূতি এবং আত্মা নেই।

ইসলামে ইবাদতসমূহ চরিত্রের সাথে কঠোরভাবে সংযুক্ত। যে কোন ইবাদত একটি উত্তম চরিত্রের প্রতিফলন ঘটায় না তার কোন মূল্য নেই। আল্লাহর সামনে নামায আদায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় নামায একজন মানুষকে অশ্লীল অপছন্দ কাজসমূহ হতে রক্ষা করে, আত্মশুদ্ধি ও আত্মার উন্নতি সাধনে এর প্রভাব রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, “নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল, অপছন্দনীয় কাজ হতে নিষেধ করে।” [ সূরা আল-আনকাবুত :৪৫ ]

অনুরূপভাবে রোযা তাক্কওয়ার দিকে নিয়ে যায়। আর তাক্বওয়া হচ্ছে মহান চরিত্রের অন্যতম, যেমন- আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যেমনি ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর যাতে তোমরা তাক্বওয়া লাভ করতে পার।” [ সূরা আল বাকারা : ১৮৩ ]

রোযাঃ  অনুরূপভাবে শিষ্টাচার, ধীরস্থিরতা, প্রশান্তি, ক্ষমা, মুর্খদের থেকে বিমুখতা ইত্যাদির প্রতিফলন ঘটায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “তোমাদের কারো রোযার দিন যদি হয়, তাহলে সে যেন অশ্লীল কথাবার্তা না বলে, হৈ চৈ না করে অস্থিরতা না দেখায়। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে লড়াই করে সে যেন বলে দেয় আমি রোযাদার। বুখারী ও মুসলিম

যাকাতঃ  অনুরূপভাবে অন্তরকে পবিত্র করে, আত্মাকে পরিমার্জিত করে এবং তাকে কৃপণতা, লোভ ও অহংকারের ব্যধি হতে মুক্ত করে। আল্লাহ তাআলা বলেন,“তাদের সম্পদ হতে আপনি সাদকাহ গ্রহণ করুন যার মাধ্যমে আপনি তাদেরকে পবিত্র ও পরিমার্জিত করবেন।” [সূরা তাওবাহ ১০৩ আয়াত ]

হজ্জঃআর হজ্জ হচ্ছে একটি বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণশালা আত্মশুদ্ধি এবং হিংসা বিদ্ধেষ ও পঙ্কিলতা থেকে আত্মাকে পরিশুদ্ধি ও পরিমার্জনের জন্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, “যে এ মাস গুলোতে নিজের উপর হজ্জ ফরয করে নিল সে যেন অশ্লীলতা, পাপাচার ও ঝগড়া বিবাদ হজ্জের মধ্যে না করে।” [সূরা আল বাকারাহ : ১৯৭ ]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি অশ্লীল কথা-বার্তা ও পাপ কর্ম না করে হজ্জ পালন করল, সে তার পাপ রাশি হতে তার মা যেদিন জন্ম দিয়েছে সে দিনের মত নিষ্পাপ হয়ে ফিরে এল।” [বুখারী ও মুসলিম]

ইসলামী চরিত্রের মৌলিক বিষয়সমূহ

১ সত্যবাদিতা:
আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের যে সকল ইসলামী চরিত্রের নির্দেশ দিয়েছেন, তার অন্যতম হচ্ছে সত্যবাদিতার চরিত্র। আল্লাহ তাআলা বলেন,“হে ঈমানদারগণ আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা সত্যবাদীদের সাথী হও।” [ সূরা আত-তাওবাহ : ১১৯]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “তোমরা সততা অবলম্বন গ্রহণ কর, কেননা সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায় আর পূণ্য জান্নাতের পথ দেখায়, একজন লোক সর্বদা সত্য বলতে থাকে এবং সত্যবাদিতার প্রতি অনুরাগী হয়, ফলে আল্লাহর নিকট সে সত্যবাদী হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়ে যায়।” [মুসলিম]

২ আমানতদারিতা :
মুসলমানদের সে সব ইসলামী চরিত্র অবলম্বনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার একটি হচ্ছে আমানতসমূহ তার অধিকারীদের নিকট আদায় করে দেয়া। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমানতসমূহ তার হকদারদের নিকট আদায় করে দিতে।” [সূরা আন নিসা : ৫৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সম্প্রদায়ের নিকট আল আমীন উপাধি লাভ করেছিলেন, তারা তাঁর নিকট তাদের সম্পদ আমানত রাখত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার অনুসারীদের মুশরিকরা কঠোর ভাবে নির্যাতন শুরু করার পর যখন আল্লাহ তাকে মক্কা হতে মদীনা হিজরত করার অনুমতি দিলেন তিনি আমানতের মালসমূহ তার অধিকারীদের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা না করে হিজরত করেননি। অথচ যারা আমানত রেখেছিল তারা সকলেই ছিল কাফের। কিন্তু ইসলাম তো আমানত তার অধিকারীদের নিকট ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে যদিও তার অধিকারীরা কাফের হয়।

৩ অঙ্গীকার পূর্ণ করা:
ইসলামী মহান চরিত্রের অন্যতম হচ্ছে অঙ্গীকার পূর্ণ করা। আল্লাহ তাআলা বলেন :“আর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, কেননা অঙ্গীকার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে।” [সূরা ইসরা : ৩৪]

 আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিশ্রতি ভঙ্গকরা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে গণ্য করেছেন।

৪ বিনয় :
ইসলামী চরিত্রের আরেকটি হচ্ছে একজন মুসলমান তার অপর মুসলিম ভাইদের সাথে বিনয়ী আচরণ করবে। সে ধনী হোক বা গরীব। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ“তুমি তোমার পার্শ্বদেশ মুমিনদের জন্য অবনত করে দাও।” [সূরা আল হিজর : ৮৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “আল্লাহ তাআলা আমার নিকট ওহী করেছেন যে, ‘তোমরা বিনয়ী হও যাতে একজন অপরজনের উপর অহংকার না করে। একজন অপর জনের উপর সীমালংঘন না করে।” [-মুসলিম।]

৫ মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার:
মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার উত্তম চরিত্রের অন্যতম। আর এটা তাদের অধিকার মহান হওয়ার কারণে, যে অধিকার স্থান হল আল্লাহর হকের পরে।আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ‘আর আল্লাহর ইবাদত কর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না, এবং মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার কর।” [সূরা আন-নিসা : ৩৫ আয়াত]

আল্লাহ তাআলা তাদের আনুগত্য, তাদের প্রতি দয়া ও বিনয় এবং তাদের জন্য দু’আ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন : “তাদের উভয়ের জন্য দয়ার সাথে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বল, হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া কর যেভাবে শৈশবে আমাকে তারা লালন-পালন করেছেন।” [ সূরা আল ইসরা : ২৪ ]

এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার উত্তম আচরণ পাওয়ার সবচেয়ে বেশী অধিকারী ব্যক্তি কে ? তিনি বললেন, ‘তোমার মা।’ অত:পর জিজ্ঞেস করল তারপর কে? তিনি উত্তর দিলেন, ‘তোমার মা।’ অতঃপর জিজ্ঞেস করল তার পর কে? তিনি উত্তর দিলেন, ‘তোমার মা।’ অতঃপর জিজ্ঞেস করল তার পর কে? উত্তর দিলেন, ‘তোমার পিতা।’ [বুখারী ও মুসলিম]

 মাতা-পিতার প্রতি এ সদ্ব্যবহার ও দয়া অনুগ্রহ অতিরিক্ত বা পূর্ণতা দানকারী বিষয় নয় বরং তা হচ্ছে সকল মানুষের ঐক্যমতের ভিত্তিতে ফরযে আইন।

৬ আত্মীয়তার সর্ম্পক বজায় রাখা :
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামী চরিত্রের অন্যতম। আর তারা হচ্ছে নিকটাত্মীয়গণ যেমন, চাচা, মামা, ফুফা, খালা, ভাই, বোন প্রমূখ।

আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ওয়াজিব, আর তা ছিন্ন করা জান্নাত হতে বঞ্চিত ও অভিশাপের কারণ। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ যদি তোমরা ক্ষমতা পাও, তাহলে কি তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে? তারা তো ঐ সব লোক যাদের প্রতি আল্লাহ অভিশাপ করেছেন। এতে তিনি তাদেরকে বধির করে দিয়েছেন এবং তাদের দৃষ্টি অন্ধ করে দিয়েছেন।” [সূরা মুহাম্মাদ : ২২-২৩]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী বেহেশ্তে প্রবেশ করবে না।” [বুখারী ও মুসলিম]

৭ প্রতিবেশীর প্রতি সুন্দরতম ব্যবহার:
প্রতিবেশীর প্রতি সুন্দরতম ব্যবহার হচ্ছে ইসলামী চরিত্রের অন্যতম। প্রতিবেশী হচ্ছে সে সব লোক যারা আপনার বাড়ীর আশে পাশে বসবাস করে। যে আপনার সবচেয়ে নিকটবর্তী সে সুন্দর ব্যবহার ও অনুগ্রহের সবচেয়ে বেশী হকদার। আল্লাহ তাআলা বলেন, “আর মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার কর, নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকীন নিকটতম প্রতিবেশী ও দূরবর্তী প্রতিবেশীর প্রতিও।” [সূরা আন-নিসা : ৩৬]

এতে আল্লাহ নিকটতম ও দূরবর্তী প্রতিবেশীর প্রতি সদ্ব্যবহার করতে ওসিয়ত করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেনঃ ‘জিবরীল আমাকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে ওসিয়ত করতেছিল এমনকি আমি ধারণা করেনিলাম যে, প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকার বানিয়ে দেয়া হবে।’ [বুখারী ও মুসলিম]

অর্থাৎ আমি মনে করেছিলাম যে ওয়ারিশদের সাথে প্রতিবেশীর জন্য মিরাসের একটি অংশ নির্ধারিত করে দেবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু যর রা. কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে আবু যর! যখন তুমি তরকারী পাক কর তখন পানি বেশি করে দাও, আর তোমার প্রতিবেশীদের অঙ্গীকার পূরণ কর।” [ মুসলিম]
 
প্রতিবেশীর পার্শ্বাবস্থানের হক রয়েছে যদিও সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি অবিশ্বাসী বা কাফের হয়।

৮ মেহমানের আতিথেয়তা:
ইসলামী চরিত্রের আরেকটি হচ্ছে মেহমানের আতিথেয়তা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী, “যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস করে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।” [বুখারী ও মুসলিম]

৯ সাধারণভাবে দান ও বদান্যতা:
ইসলামী চরিত্রের অন্যতম দিক হচ্ছে দান ও বদান্যতা। আল্লাহ তাআলা ইনসাফ, বদান্যতা ও দান কারীদের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ“যারা আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে অতঃপর যা খরচ করেছে তা থেকে কারো প্রতি অনুগ্রহ ও কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্য করে না, তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট প্রতিদান রয়েছে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাও করবে না।”   [সূরা আল বাকারাহ : ২৬২]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘যার নিকট অতিরিক্ত বাহন থাকে সে যেন যার বাহন নেই তাকে তা ব্যবহার করতে দেয়। যার নিকট অতিরিক্ত পাথেয় বা রসদ রয়েছে সে যেন যার রসদ নেই তাকে তা দিয়ে সাহায্য করে।”  [মুসলিম]

১০ ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতা:
ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতা হচ্ছে ইসলামী চরিত্রের অন্যতম বিষয়। অনুরূপভাবে মানুষদের ক্ষমা করা, দুর্ব্যবহারকারীকে ছেড়ে দেয়া ওজর পেশকারীর ওজর গ্রহণ করা বা মেনে নেয়াও অন্যতম। আল্লাহ তাআলা বলেন :“আর যে ধৈর্য্য ধারণ করল এবং ক্ষমা করল, নিশ্চয়ই এটা কাজের দৃঢ়তার অন্তর্ভূক্ত।”   [সূরা আশ শুরা : ৪৩]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তারা যেন ক্ষমা করে দেয় এবং উদারতা দেখায়, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করে দেয়া কি তোমরা পছন্দ কর না?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “দান খয়রাতে সম্পদ কমে যায় না। আল্লাহ পাক ক্ষমার দ্বারা বান্দার মার্যাদাই বৃদ্ধি করে দেন। যে আল্লাহর জন্য বিনয় প্রকাশ করে আল্লাহ তার সম্মানই বৃদ্ধি করে দেন।” [মুসলিম ] তিনি আরো বলেন, “দয়া কর, তোমাদের প্রতি দয়া করা হবে। ক্ষমা করে দাও তোমাদেরও ক্ষমা করে দেয়া হবে।”   [আহমাদ]

১১  মানুষের মাঝে সমঝোতা ও সংশোধন:
ইসলামী চরিত্রের আরেকটি হচ্ছে মানুষের মাঝে সমঝোতা ও সংশোধন করে দেয়া, এটা একটি মহান চরিত্র যা ভালবাসা সৌহার্দ প্রসার ও মানুষের পারষ্পারিক সহযোগিতার প্রাণের দিকে নিয়ে যায়।আল্লাহ তাআলা বলেন: “তাদের অধিকাংশ শলাপরামর্শের মধ্যে কল্যাণ নেই। কেবল মাত্র সে ব্যক্তি ব্যতীত যে সাদকাহ, সৎকর্ম ও মানুষের মাঝে সংশোধনের ব্যাপারে নির্দেশ দেয়। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে এসব করে অচিরেই আমরা তাকে মহা প্রতিদান প্রদান করব।” [সূরা আন নিসা : ১১৪]

১২  লজ্জা:
ইসলামী চরিত্রের অন্যতম আরেকটি চরিত্র হচ্ছে লজ্জা। এটা এমন একটি চরিত্র যা পরিপূর্ণতা ও মর্যাদাপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের দিকে আহবান করে। অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা হতে বারণ করে। লজ্জা আল্লাহর পক্ষ হতে হয়ে থাকে। ফলে মুসলমান লজ্জা করে যে, আল্লাহ তাকে পাপাচারে লিপ্ত দেখবে। অনুরূপভাবে মানুষের থেকে এবং নিজের থেকেও সে লজ্জা করে। লজ্জা অন্তরে ঈমান থাকার প্রমাণ বহন করে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,‘লজ্জা ঈমানের বিশেষ অংশ।’ [বুখারী ও মুসলিম] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, “লজ্জা কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই নিয়ে আসে না।” [বুখারী ও মুসলিম]

১৩  দয়া ও করুণা:
ইসলামী চরিত্রের আরেকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হচ্ছে দয়া বা করুণা। এ চরিত্রটি অনেক মানুষের অন্তর হতে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে তাদের অন্তর পাথরের মত অথবা এর চেয়েও শক্ত হয়ে গেছে। আর প্রকৃত মু’মিন হচ্ছে দয়াময়, পরোপকারী, গভীর অনুভূতি সম্পন্ন উজ্জল অনুগ্রহের অধিকারী। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “অত:পর সে তাদের অন্তর্ভূক্ত হয় যারা ঈমান এনেছে পরস্পর পরস্পরকে ধৈর্য্য ও করুণার উপদেশ দিয়েছে। তারা হচ্ছে দক্ষিণ পন্থার অনুসারী।”  [সূরা আল-বালাদ : ১৭- ১৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “মুমিনদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য, করুণা, অনুকম্পার উপমা হচ্ছে একটি শরীরের মত। যখন তার একটি অঙ্গ অসুস্থ হয় গোটা শরীর নিদ্রাহীনতা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়।”  [মুসলিম]

১৪  ইনসাফ বা ন্যায়পরায়ণতা:
ন্যায় পরায়ণতা ইসলামী চরিত্রের আরেকটি অংশ। এ চরিত্র আত্মার প্রশান্তি সৃষ্টি করে। সমাজে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন প্রকার অপরাধ বিমোচনের দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা ইহসান ও নিকটাত্মীয়দের দান করতে নির্দেশ দেন।”   [সূরা আল নাহাল : ৯০]

আল্লাহ তাআলা বলেন : “ইনসাফ কর, এটা তাক্বওয়ার অতীব নিকটবর্তী।” [সূরা আল মায়িদা : ৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, “ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিরা আল্লাহর নিকট নূরের মিম্বরের উপর বসবে। তারা হল সে সব লোক, যারা বিচার ফয়সালার ক্ষেত্রে, পরিবার-পরিজনের ক্ষেত্রে এবং যে দায়িত্বই পেয়েছে তাতে ইনসাফ করে।”

১৫  চারিত্রিক পবিত্রতা:
ইসলামী চরিত্রের অন্যতম বিষয় হচ্ছে চারিত্রিক পবিত্রতা। এ চরিত্র মানুষের সম্মান সংরক্ষণ এবং বংশে সংমিশ্রন না হওয়ার দিকে পৌঁছে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন :“যাদের বিবাহের সামর্থ নেই, তারা যেন চারিত্রিক পবিত্রতা গ্রহণ করে। যতক্ষণ না আল্লাহ তার অনুগ্রহে তাকে সম্পদশালী করেন।” [ সুরা আন নূর-৩৩ ]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন, “তোমরা আমার জন্য ছয়টি বিষয়ের জিম্মাদার হও। তাহলে আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হব। যখন তোমাদের কেউ কথা বলে সে যেন মিথ্যা না বলে। যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় তখন যেন খেয়ানত না করে। যখন প্রতিশ্র“তি দেয় তা যেন ভঙ্গ না করে। তোমরা তোমাদের দৃষ্টি অবনত কর। তোমাদের হস্তদ্বয় সংযত কর। তোমাদের লজ্জাস্থান হেজাফত কর।” [ হাদীসটি তাবারানী বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন ]

ইসলামের এ সব চরিত্রে এমন কিছু নেই যা ঘৃণা করা যায়। বরং এসব এমন সম্মান যোগ্য মহৎ চারিত্রাবলী যা প্রত্যেক নিষ্কলুষ স্বভাবের অধিকারীর সমর্থন লাভ করে। মুসলমানগণ যদি এ মহৎ চরিত্র ধারণ করত তাহলে সর্বস্থান থেকে তাদের নিকট মানুষ আগমন করত এবং দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে তারা প্রবেশ করত যেভাবে প্রথম যুগের মুসলমানদের লেন-দেন ও চরিত্রের কারণে সে সময়ের মানুষ ইসলামে প্রবেশ করেছিল।

3
ঘটনাটি রাশেদ নামের এক ব্যক্তির। তিনি যেমনটি বলছিলেন…


আমার স্ত্রী যখন প্রথম সন্তানের মা হলো, তখন আমার বয়স তিরিশের বেশি হবে না। আজও আমার সেই রাতটার কথা মনে আছে।
প্রতিদিনের অভ্যাস মতো সেদিনও সারারাত বন্ধুদের সাথে বাড়ির বাইরে ছিলাম। সারাটা রাত কেটেছিল যতসব নিরর্থক আর অসার কথাবার্তা, পরনিন্দা, পরচর্চা এবং লোকজনকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা আর মজা করে। সবাইকে হাসানোর কাজটা মুলত আমিই করছিলাম। আমি অন্যদের নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করছিলাম আর তাই শুনে বন্ধুরা সব হেসেই খোশ হচ্ছিল। মনে আছে, সেই রাতে আমি ওদের অনেক হাসিয়ে ছিলাম। মানুষের কণ্ঠস্বর, অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি খুব ভাল নকল করতে পারি আমি । যাকে নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করি ওর মত কণ্ঠ করে কথা বলতে থাকি। ওর হেনস্তা না হওয়া পর্যন্ত আর ছাড়াছাড়ি নেই। আমার ঠাট্টা মশকরার ছোবল থেকে রেহাই পায় না কেউই, এমনকি আমার বন্ধুরাও না। এর থেকে বাঁচার জন্য কেউ কেউ আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেছিল। আমার মনে আছে, সেদিন রাতে বাজারে ভিক্ষা করতে দেখা এক অন্ধ ফকিরকে নিয়েও মশকরা করেছিলাম আমি। তারচেয়েও খারাপ কাজটি করেছিলাম আমার নিজের পা’টা ওনার সামনে বাড়িয়ে দিয়ে আর তাতে বেচারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। কী করবেন বুঝতে না পেরে অন্ধদৃষ্টি নিয়ে বেচারি চারপাশে শুধু মুখ ফেরাচ্ছিলেন।

আমি যথারীতি দেরি করে বাড়ি ফিরে দেখলাম আমার স্ত্রী আমার বাড়ি ফেরার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে। ওর অবস্থা তখন ভয়ানক।
 
আমাকে কাঁপাকাঁপা গলায় বলল, “রাশেদ… কোথায় ছিলে তুমি?”
 
“চাঁদের দেশে গিয়েছিলাম বুঝি?” ব্যঙ্গোক্তি করে বললাম, “কোথায় থাকব আবার, বন্ধুদের সাথে ছিলাম।”

ওকে খুবই অবসন্ন দেখাচ্ছিল। চোখের দু’ফোটা অশ্রু গোপন করে ও বলল, “রাশেদ, আমি আর পারছিনা। মনে হয় খুব শীঘ্রই আমাদের সন্তান আসছে।” এবার দু’ফোটা অশ্রু ওর গণ্ডদেশ বেয়ে গড়িয়ে পড়ল নিঃশব্দে।

মনে হলো আমি আমার স্ত্রীকে অবহেলা করেছি। আমার উচিৎ ছিল আমার স্ত্রীর সেবা-শশ্রুষা করা। রাতের পর রাত বাইরে কাটিয়ে দেওয়া আমার মোটেই উচিৎ হয়নি, বিশেষ করে যখন ওর গর্ভের নবম মাস চলছিল। আমি তাড়াতাড়ি করে ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম; ও ডেলিভারি রুমে চলে গেল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাথায় আর যন্ত্রণায় কাতর হয়ে থাকল। আমি ডাক্তারের কাছে গেলাম। তিনি মানব জীবনে দুনিয়াবি নানান পরীক্ষা আর পার্থিব দুঃখকষ্ট নিয়ে কথা বলতে লাগলেন। বললেন, আল্লাহ্‌ আমাদের জন্য যা কিছু নির্ধারণ করেছেন তা নিয়েই আমাদের সন্তুষ্ট এবং পরিতৃপ্ত থাকা উচিৎ।

এরপর বললেন, “আপনার ছেলের চোখে গুরুতর রকমের বিকলাঙ্গতা রয়েছে এবং মনে হচ্ছে ওর দৃষ্টিশক্তি নেই।”
 
অনেক চেষ্টায় অশ্রু সংবরণ করতে করতে মস্তকটা আমার অবনত হয়ে পড়ল… মনে পড়ল বাজারের ঐ অন্ধ ফকিরটার কথা যাকে হুমড়ি খেয়ে ফেলে দিয়ে অন্যদের ফুর্তির খোরাক যোগাচ্ছিলাম।
 
সুবহানআল্লাহ্‌ ! আপনি তা-ই পাবেন, যা আপনি অন্যকে দিয়েছেন! কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে ভাবতে থাকলাম… বুঝতে পারছিলাম না কী বলব। মনে পড়ল আমার স্ত্রী আর সন্তানের কথা। ডাক্তারকে তার সহানুভূতির জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ছুটে গেলাম ওদের দেখবার জন্য। আমার স্ত্রী কিন্তু মোটেই দুঃখিত নয়। ও আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নির্ধারিত সিদ্ধান্তে  বিশ্বাসী…  আর তাতেই সন্তুষ্ট। কতবার ও আমাকে বলত মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা না করার জন্য! সে বলতেই থাকত, “পরের নিন্দা করো না…” যাইহোক, আমরা হাসপাতাল থেকে চলে এলাম; সালেম’ও এলো আমাদের সাথে।

বাস্তবে, আমি আমার সন্তানের প্রতি খুব বেশি মনযোগ দিতাম না। এমন ভাব করতাম যেন, ও বাড়িতে নেই। যখন ও জোরে জোরে কাঁদত, তখন আমি ওখান থেকে চলে গিয়ে শোয়ার ঘরে ঘুমাতাম। আমার স্ত্রী ওর অনেক যত্ন করত, ওকে অনেক ভালোবাসতো। আর আমার ব্যাপারে বললে, আমি ওকে অপছন্দ করতাম না, তবে ভালোবাসতেও পারতাম না।
 
সালেম আস্তে আস্তে বড় হতে লাগল। ও হামাগুড়ি দিতে শিখল; তবে ওর হামাগুড়ি দেওয়াটা ছিল অদ্ভুত ধরনের। বয়স যখন প্রায় একবছর, তখন ও হাঁটতে চেষ্টা করতে লাগল; তখনই ওর পঙ্গুত্ব আমাদের কাছে ধরা পড়ল। এবার ওকে আমার কাছে আরো বড় ধরনের বোঝা মনে হতে লাগল।
 
সালেমের পর আমাদের উমার এবং খালেদ নামে আরও দুই সন্তানের জন্ম হয়েছে। কয়েক বছর চলে গেল, সালেম বড় হয়ে উঠল; ওর ভাইয়েরাও বড় হয়ে উঠল। আমার বাড়িতে থাকতে ভালো লাগত না, আমি সবসময় বাড়ির বাইরে বন্ধুদের সাথে থাকতাম… বাস্তবে, আমি ছিলাম তাদের (বন্ধুদের) হাতে একটা খেলনা [দরকার লাগলেই ওরা আমাকে ফুর্তির জন্য ব্যবহার করত]। আমার সংশোধনের ব্যাপারে আমার স্ত্রী কখনই হাল ছেড়ে দেয়নি। ও সবসময়ই আমার হেদায়াতের জন্য দো’আ করত। আমার লাগামহীন বেপরোয়া আচরণে ও কখনোই রাগ করত না। তবে সালেমের প্রতি আমার অবহেলা কিংবা ওর অন্য ভাইদের প্রতি আমার বেখেয়ালী ভাব দেখলে ও খুব মন খারাপ করত। সালেম বড় হয়ে উঠল। সাথে সাথে আমার দুঃশ্চিন্তাও বাড়লো। আমার স্ত্রী ওকে প্রতিবন্ধীদের বিশেষ কোনো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিতে বলল; তবে কথাটি আমার কাছে খুব বেশি গুরুত্ব পেল না।
কীভাবে যে বছরগুলো কেটে গেল টেরই পেলাম না। আমার প্রতিটা দিনই কাটত একই ভাবে। খাওয়া, ঘুমানো, কাজ করা আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া। একদিন শুক্রবারে ঘুম থেকে উঠলাম বেলা ১১ টায়। ওই দিন আগেই ওঠা হলো। একটা দাওয়াত ছিল; তাই কাপড়-চোপড় পড়ে, গায়ে খুশবু লাগিয়ে বের হচ্ছিলাম। কেবল শোবার ঘরটা পেরিয়েছি.. অমনি সালেমের অবস্থা দেখে থমকে দাঁড়ালাম — ও ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে!! শিশু অবস্থার পর এই প্রথম ওকে কাঁদতে দেখলাম। বিশটা বছর পেরিয়ে গেছে, আমি ওর দিকে নজর দিইনি। এবারও পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলাম, পারলাম না…ঘর থেকে শুনতে পাচ্ছিলাম যখন ওর মাকে ও ডাকছিল। ওর দিকে ফিরে আরেকটু কাছে গেলাম।

 “সালেম! কাঁদছ কেন?” আমি জিজ্ঞাস করলাম।
 
আমার কণ্ঠ শুনে ওর কান্না থেমে গেল। আমি ওর খুব কাছাকাছি আছি টের পেয়ে ছোট্ট দু’খানা হাত দিয়ে চারপাশ হাতড়াতে লাগল। কী হয়েছে ওর? বুঝতে পারলাম ও আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে! যেন বলছে, “এতোদিনে তোমার সময় হয়েছে আমাকে খেয়াল করার? বিগত দশ বছর কোথায় ছিলে?” ও সরে যেতে থাকল। ওর পেছন পেছন আমি ওর ঘর পর্যন্ত গেলাম। প্রথমে বলতে চায়নি ও কেন কাঁদছিল। আমি একটু নরম হওয়ার চেষ্টা করলাম… সালেম বলতে লাগল কেন ও কাঁদছিল। আমি শুনছিলাম আর আমার ভেতর কাঁপছিল।
 
আপনারা কি জানেন, ও কেন কাঁদছিল?! ওর ভাই উমার — যে ওকে মসজিদে নিয়ে যায় — তখনও বাড়ি ফেরেনি। আজ জুম’আর দিন; সালেমর ভয়, ও প্রথম কাতারে হয়তো জায়গা পাবে না। ও উমার’কে ডেকেছে… ওর মাকেও ডেকেছে… কারও কোনো সাড়া নেই — এজন্যই সে কাঁদছে। ওর পাথর চোখ থেকে ঝরে পড়া অশ্রুর দিকে তাকিয়ে রইলাম। ওর পরের কথাগুলো আমার আর প্রাণে সইলো না।
 
মুখের উপর হাত রেখে ওকে থামালাম আর জিজ্ঞেস করলাম, “সালেম, তুমি কি এ জন্যই কাঁদছ?”
ও বলল, “হ্যাঁ।”
আমি বন্ধুদের কথা ভুলে গেলাম, পার্টির কথাও আর মনে থাকল না।
আমি ওকে বললাম, “দুঃখ পেয়ো না, সালেম। তুমি কি জানো, আজ তোমাকে কে মসজিদে নিয়ে যাবে?”
“নিশ্চয় উমার”, সে বলল, “…কিন্তু ও তো এখনও আসেনি।”
“না”, আমি বললাম, “আজ আমিই তোমাকে নিয়ে যাব।”
 
সালেম হতভম্ভ হয়ে গেল… ওর বিশ্বাস হচ্ছিল না। ও ভাবল, আমি ওর সাথে ঠাট্টা করছি। চোখে পানি এসে গেল; আবার কাঁদতে লাগল ও। নিজ হাত দিয়ে চোখের পানি ফোঁটা মুছে দিয়ে ওর হাত ধরলাম। চাইলাম গাড়িতে করেই ওকে মসজিদে নিয়ে যাব। কিন্তু ও রাজি হলো না। বলল, “মসজিদ তো কাছেই… আমি হেঁটে যেতে চাই।” হ্যাঁ, আল্লাহ্‌র কসম, ও আমাকে একথাই বলল।

মনে পড়ে না কবে শেষবারের মতো মসজিদে প্রবেশ করেছিলাম। তবে জীবন থেকে অবহেলায় হারিয়ে দেওয়া বিগত বছরগুলোর কথা পড়তেই মনের ভেতর ভয় আর অনুতাপের উদয় হলো। মসজিদ মুসল্লিতে ভরা। তারপরও আমি সালেমর জন্য প্রথম কাতারে একটু জায়গা খুঁজে নিলাম। একসাথেই জুম ‘আর খুৎবা শুনলাম; ও আমার পাশেই সালাত আদায় করল। সত্যি বলতে, আমিই ওর পাশে সালাত আদায় করলাম, ও আমার পাশে নয়।

সালাত সমাপ্ত হলে সালেম আমার কাছে একখানা কোরআন চাইল। আমি তো অবাক! ভাবলাম ও কী করে পড়বে, ও তো দেখতে পায় না। বলতে গেলে ওর কথায় কানই দিলাম না। কিন্তু কষ্ট পেতে পারে এই ভয়ে তাকে একখানা কুর’আন ধরিয়ে দিলাম। ও আমাকে সূরা আল-কাহ্ফ খুলে দিতে বলল। আমি পাতা উল্টাতে লাগলাম। খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত সূচীপত্র দেখতে থাকলাম। ও কুর’আন খানা আমার কাছ থেকে নিয়ে ওর সামনে রেখে চোখ বন্ধ করেই সূরাটি তেলাওয়াত করতে শুরু করল… সুবহানাল্লাহ! গোটা সূরা’টাই ওর মুখস্ত।

নিজের কথা ভেবে খুবই লজ্জিত হলাম। আমিও একখানা কুর’আন তুলে নিলাম…বুঝতে পারলাম সারা শরীর আমার কাঁপছে… পড়া শুরু করলাম… পড়তেই থাকলাম। আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইলাম। তাঁর কাছে প্রার্থনা করলাম, “ইয়া আল্লাহ্‌ ! আমাকে সহজ সরল পথ দেখাও।” আর সইতে পারলাম না… ছোট বাচ্চার মতো কেঁদে ফেললাম। মসজিদে তখনও অনেক লোক সুন্নাত আদায় করছেন। তাদের উপস্থিতি আমাকে একটু বিব্রত করল, আমি অশ্রু সংবরণ করলাম। আমার কান্না তখন চাপা দীর্ঘশ্বাসে রূপ নিয়েছে। শুধু টের পেলাম, একখানা কচি হাত আমার মুখখানা ছুঁতে চাইছে আর আমার ভেজা চোখ দু’টো মুছে দিচ্ছে। হ্যাঁ, ও আমার সালেম! আমি ওকে বুকে টেনে নিলাম… ওর দিকে তাকিয়ে নিজেকে বললাম… অন্ধ তো আমিই, অন্ধ তুমি না। আমি অন্ধ না হলে কি আর ওসব পথভ্রষ্টদের পেছনে ছুটে বেড়াই, যারা আমাকে জাহান্নামের আগুনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে?
সালাত শেষ করে আমরা বাড়ি ফিরলাম। আমার স্ত্রী সালেমের জন্য অত্যন্ত চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওর দুঃশ্চিন্তা অশ্রু (আনন্দের) হয়ে ঝরল যখন দেখল আমিও সালেমের সাথে জুম’আর সালাত আদায় করেছি।
 
সেদিনের পর থেকে আমি আর কখনো মসজিদে জামা’আতের সাথে সালাত বাদ দিইনি। আমি আমার খারাপ বন্ধুদের ত্যাগ করেছি। বন্ধু করেছি মসজিদের ওই সৎনিষ্ঠ লোকগুলোকে। তাদের সাথে আমিও পেয়েছি ঈমানের অমৃত স্বাদ। কী আমাকে আমার জীবন সম্পর্কে ভুলিয়ে রেখেছিল তাও তাদের থেকে জেনেছি, শিখেছি। বিত্‌র সালাতের পরে যে দীনি আলোচনা হতো আমি তাও কখনো আর বাদ দিতাম না। মাসে পুরো কুর’আন কয়েকবার করে পড়ে শেষ করতে থাকলাম। মানুষের কুৎসা রটিয়ে আর ঠাট্টা তামাশা করে নিজের যে জিহ্বা টাকে কলুষিত করেছিলাম, তা এখন সদায় আল্লাহ্‌র স্মরণে সিক্ত রাখলাম যাতে আল্লাহ্‌ আমাকে মাফ করে দেন।

একদিন আমার কিছু দ্বীনি, ধার্মিক বন্ধুরা মিলে দূরে এক জায়গায় দা’ওয়াতের কাজে যাওয়ার মনস্থির করল। তাদের সাথে যাওয়ার ব্যাপারে আমার একটু অনাগ্রহ ছিল। আমি ইস্তেখারাহ সালাত আদায় করলাম, আমার স্ত্রীর সাথেও পরামর্শ করলাম। ভেবেছিলাম ও নিষেধ করবে যেতে… কিন্তু ঘটল তার উল্টোটা! কারন এতোদিন পাপের কারনে অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি, অথচ ভুলেও ওকে একবার জিজ্ঞেস করিনি। আজ যখন ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ও ভীষণ আনন্দিত হলো, এমনকি আমাকে উৎসাহিতও করল। আমি সালেমের কাছে গেলাম, বললাম আমি সফরে যাচ্ছি। শুনে ওর পাথর চোখদুটো ছলছল করে উঠল, আর কচি বাহুতে আমাকে জড়িয়ে নিলো…
 
বাড়ির বাইরে থাকলাম প্রায় সাড়ে তিন মাস। এই সময়টাতে যখনই সুযোগ পেয়েছি আমি আমার স্ত্রী আর সন্তানদের সাথে ফোনে কথা বলেছি। ওদের জন্য আমার খুব খারাপ লাগত… কি খারাপই না লাগত সালেমের জন্য!! ওর কণ্ঠটা শোনার ভীষণ ইচ্ছা জাগত… শুধু ওর সাথেই কথা হয়নি সফরের ঐ সময়টায়। ফোন করলেই শুনতাম হয় স্কুলে নয়তো মসজিদে আছে। যতবারই বলতাম ওর কথা আমার ভীষণ মনে পড়ে, ওর জন্য আমার মন খারাপ করে, ততবারই আমার স্ত্রী খুশিতে হাসত। কিন্তু শেষবার ও হাসেনি। ওর কণ্ঠস্বরটা কেমন যেন আলাদা ছিল শেষবার। ওকে বললাম, “সালেমকে আমার সালাম দিও”, ও শুধু বলল, “ইনশাআল্লাহ্‌,” তারপর চুপ হয়ে গেল।
 
অবশেষে বাড়ি ফিরলাম। দরজায় করাঘাত করে দাঁড়িয়ে আছি সালেম এসে আমার দরজাটা খুলে দেবে এই আশায়। কিন্তু আশ্চর্য হলাম আমার প্রায় চার বছরের ছেলে খালেদকে দেখে। ওকে কোলে তুলে নিতেই ও নালিশের সুরে বলে উঠল, “বাবা! বাবা!”। বাড়িতে ঢুকতেই কেন জানি না, ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল।
 
অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাইলাম…আমার স্ত্রীর কাছে গেলাম… ওর চেহারাটা কেমন যেন লাগছে। যেন কিছুই হয়নি এমন একটা ভান করছে ও। ভালো করে তাকিয়ে বললাম, “কি হয়েছে তোমার?” ও বলল, “কিছু নাহ।” হঠাৎ সালেমের কথা জিজ্ঞেস করলাম। বললাম, “সালেম কোথায়?” ওর মাথাটা নিচু হয়ে গেল; কোন উত্তর দিলনা ও। ও কাঁদছে…

“সালেম! কোথায় আমার সালেম?” আমি চিৎকার করে উঠলাম।

ঠিক তখনই আমার ছোট ছেলে খালেদ ওর শিশু সুলভ ভাষায় বলে উঠল,
“বাবা… থালেম জান্নাতে তলে গেতে… আল্লাহ্‌র কাথে…” (সালেম জান্নাতে চলে গেছে… আল্লাহ্‌র কাছে…)
 
আমার স্ত্রী আর সইতে পারল না। ও কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার আগেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। পরে জানলাম, আমি আসার দুই সপ্তাহ আগে সালেমের জ্বর হয়েছিল। আমার স্ত্রী ওকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। জ্বর আস্তে আস্তে ভয়ানক রূপ ধারন করল…অবশেষে জ্বর ছেড়ে গেল… সাথে আমার সালেমের প্রাণ পাখিটাও…
আর তাই, যদি দুনিয়া সমান বিপদ আসে আপনার উপর, যদি তা বইবার সাধ্য না থাকে, তো আল্লাহ্‌কে ডাকুন, “ইয়া আল্লাহ্‌!” যদি পথ হারিয়ে ফেলেন কিংবা যদি পথ সংকীর্ণ হয়ে যায়, যদি পাল ছিঁড়ে যায়, যদি আশার প্রদীপ নিভে যায়, তো আল্লাহ্‌কে ডাকুন, “ইয়া আল্লাহ্‌!।”
 
আল্লাহ্‌ চেয়েছিলেন সন্তানের মৃত্যুর আগেই পিতাকে সন্তানের মাধ্যমে হেদায়াত দান করতে। আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন কতই না দয়ালু!


“অনেক মহান কর্ম নিয়্যতের কারনে তুচ্ছ হয়ে যায়, আবার অনেক নগণ্য কর্ম নিয়্যত গুণে মহান হয়ে ওঠে…”


মুল : ILoveAllaah.com | অনুবাদ : আবদ্‌ আল-আহাদ  | প্রকাশনায় : কুরআনের আলো ওয়েবসাইট
Link: https://www.quraneralo.com/have-eyes-still-blind/

4
Sadly, heart attacks are one of the most common injuries in the nation.

It has been reported that your body will give warnings signs of a heart attack up to six months before it occurs. Have you experienced any of these symptoms? If so, you may need to schedule an appointment with your health care provider.

In the United States, heart disease is the leading cause of death. It can cause a variety of ailments that affect your heart. Some of these conditions include coronary artery disease, arrhythmia, and congenital heart defects.

You can improve your heart health by improving your diet, exercising, taking iron supplements, and increasing your omega-3 fatty acid intake through food sources or supplements. Meanwhile, watch for the following warning symptoms that your body may be prone to a heart attack.

Signs of a Heart Attack

A heart attack can occur when the flow of blood and oxygen to a section of the heart becomes blocked. The heart muscle begins to die from the lack of oxygen. If the blood flow isn’t quickly restored, that area of the heart can die. If medical intervention does not immediately occur, the entire heart can die, leading, of course, to death.

Here are six warning signs to watch for if you are concerned about the possibility of having a heart attack.

1. Extreme fatigue

One early sign of a heart attack is extreme fatigue. Of course, fatigue is a normal feeling after engaging in physical activities or experiencing a long day. However, if you are constantly feeling fatigued and tired, you may need to schedule a check-up with your doctor to monitor the health of your heart

It is not natural to get enough sleep, eat well, and not exhaust yourself physically, but still feel exhausted.

2. Sleep disturbances

Another warning sign of a heart attack is a disturbance in your sleep habits. Your subconscious mind may be telling you that something is wrong. You may wake frequently, need to use the bathroom frequently during the night, or experience extreme thirst during the night. If you do not have a logical explanation for these sleep disturbances, see your doctor.

3. Shortness of breath

Experiencing shortness of breath can be a key warning sign that you are having heart issues. When your heart does not get enough oxygen, you can feel short of breath.

4. Indigestion

Another early warning sign of a heart attack is indigestion. It is not normal to always have a growling stomach. However, certain spicy and irritating foods can normally cause indigestion.

5. Increased anxiety

See your physician if you experienced increased levels of anxiety that do not have a ready explanation.

6. Weak or heavy arms

When your heart does not receive sufficient oxygen to function, it can send impulses to you spine. When this happens, the nerves that are interconnected between your heart, spine, and arms send impulses that cause pain in your arms. If you experience numbness in your arm, you may be having a heart attack.

Keeping watch for these early warning signs of a heart attack could save your life. Share this information with your loved ones to protect their heart, too!


Source: http://thenativepeople.net/2017/06/19/one-month-heart-attack-body-will-warn-6-signs/

5
চিকুনগুনিয়া রোগটার নাম এত দিনে প্রায় সবার জানা হয়ে গেছে। মশাবাহিত এই রোগে ঢাকাবাসীর ভোগান্তি এবার ছিল চরমে। রোগটির উপসর্গ জ্বর, র‍্যাশ, অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশির প্রচণ্ড ব্যথা, ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যেই এগুলো সেরে যাওয়ার কথা। কিন্তু কেউ কেউ এক থেকে দেড় মাসেও সুস্থ হতে পারেননি।

অনেকে ঘাবড়ে যাচ্ছেন রোগটা চিরকালের মতো পঙ্গু করে দেবে নাকি?

আমাদের দেশে চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব কিছুটা নতুন। তবে এর ধরন নিয়ে এখনো অস্পষ্টতা রয়েছে। আফ্রিকা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ ভারত, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ায় এর আগে চিকুনগুনিয়া মহামারি আকারে দেখা দেয়। এসব দেশের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, উপসর্গগুলো দীর্ঘদিন, এমনকি তিন মাস থেকে এক বছর অবধিও রয়ে যেতে পারে।

রিইউনিয়ন দ্বীপের বাসিন্দাদের নিয়ে এক গবেষণা বলছে, ৫০ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তির কিছু না কিছু উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। সেটা ১৮ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে দেখা গেছে। এখন দেখা যাক, কী ধরনের উপসর্গ পরবর্তী সময়েও রয়ে যেতে পারে। সে জন্য কী করা উচিত।

ব্যথা যখন সারছে না
পোস্ট চিকুনগুনিয়া বা আর্থরাইটিস বলা যায় এই সমস্যাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিন ধরে হাড়ের জোড়ে ব্যথা থাকে। কারও কারও ফোলাও থাকতে পারে। তিন সপ্তাহ পর্যন্ত এই ব্যথা স্বাভাবিক। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল বা ট্রামাডল-জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে জ্বর থাকলে স্টেরয়েড খাওয়া যাবে না।

কারও কারও ক্ষেত্রে এই ব্যথা ১২ সপ্তাহ ধরে চলতে পারে। এরা ক্রনিক রোগী। এদের বেলায় অন্যান্য লুকায়িত বাতরোগ নির্ণয় করার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। মনে রাখা উচিত, চিকুনগুনিয়া কিন্তু অপ্রকাশিত বাতরোগকে প্রকাশ করে দিতে পারে। বিশেষ করে রিউমেটিক আথ্রাইটিসকে।

বয়স্কদের বেলায় ব্যথা জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। ডায়বেটিস রোগীদেরও সমস্যা বেশি হচ্ছে। হালকা ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপি করা যায়। দীর্ঘ সময় একই জায়গায় বসে থাকা ঠিক নয়। ঠান্ডা সেঁক কাজে দেয়। তবে সরাসরি না লাগানোই ভালো।

ত্বকের সমস্যা
চিকুনগুনিয়ার র‍্যাশ লালচে, হামের মতো। পিঠ, বুক, কাঁধ, মুখ সবখানেই হতে পারে। কারও র‍্যাশ জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে হয়। কারও আবার পরে হয়। জ্বর সেরে যাওয়ার পর ত্বকের অন্যান্য সমস্যাও থাকতে পারে। ত্বকের রং কালচে হতে পারে (হাইপার পিগমেন্টেশন)। চুলকানি বা অ্যালার্জি-জাতীয় দানা হতে পারে। এমনকি লালচে বড় দানা হতে পারে। ত্বক সংবেদনশীল হয়ে পড়তে পারে। অনেক সময় পরিস্থিতি এমন হয় যেন ধরলেই ব্যথা লাগে। ত্বকের নিচে পানিও জমতে পারে। এসব ক্ষেত্রে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অ্যান্টিঅ্যালার্জি-জাতীয় ওষুধ খাওয়া যায়। কিন্তু কোনো মলম লাগানোর আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

স্নায়ু জটিলতা?
চিকুনগুনিয়ার পর অনেকের জ্বালাপোড়া, ঝিনঝিন বা কামড়ানোর মতো ব্যথা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বিষণ্নতা
অনেক দেশে চিকুনগুনিয়ার পর রোগীরা বিষণ্নতায় ভোগেন। প্রচণ্ড ব্যথা, কাজে ফিরতে না পারা, দৈনন্দিন কাজগুলোও ঠিকভাবে করতে না পারা এই ঝুঁকি বাড়ায়। তবে মন শান্ত রাখতে হবে। আশা থাকতে হবে যে শিগগিরই এ সমস্যা কেটে যাবে।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় আঘাত
আরও অনেক ভাইরাস সংক্রমণের মতোই চিকুনগুনিয়াতেও দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে নতুন করে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ডায়রিয়া হতে পারে। তরল ও পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ, পরিচ্ছন্নতা বোধ এবং যথেষ্ট বিশ্রাম এই ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে।

সুত্রঃ প্রথম আলো

6
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জান, দেউলিয়া কে? তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের মধ্যে দেউলিয়া হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোন সম্পদও নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে সেই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া যে কিয়ামাত দিবসে নামায, রোযা, যাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সাথে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে, ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল হতে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে, ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেয়ার আগেই তার সৎ আমল নিঃশেষ হয়ে গেলে তাদের গুনাহসমূহ তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে, তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। [তিরমিযী-২৪১৮, রিয়াযুছ ছালেহীন-২২৩]

7
Faculty Sections / 10 Proven Benefits of Green Tea
« on: June 07, 2017, 12:02:12 PM »
Green tea is the healthiest beverage on the planet. It is loaded with antioxidants and nutrients that have powerful effects on the body. This includes improved brain function, fat loss, a lower risk of cancer and many other incredible benefits. Here are 10 health benefits of green tea that have been confirmed in human research studies.

1. Green Tea Contains Bioactive Compounds That Improve Health

Green tea is more than just green liquid.

Many of the bioactive compounds in the tea leaves do make it into the final drink, which contains large amounts of important nutrients.

It is loaded with polyphenols like flavonoids and catechins, which function as powerful antioxidants (1).

These substances can reduce the formation of free radicals in the body, protecting cells and molecules from damage. These free radicals are known to play a role in aging and all sorts of diseases.

One of the more powerful compounds in green tea is the antioxidant Epigallocatechin Gallate (EGCG), which has been studied to treat various diseases and may be one of the main reasons green tea has such powerful medicinal properties.

Green tea also has small amounts of minerals that are important for health.

Try to choose a higher quality brand of green tea, because some of the lower quality brands can contain excessive levels of fluoride (2).

That being said, even if you choose a lower quality brand, the benefits still far outweigh any risk.

2. Compounds in Green Tea Can Improve Brain Function and Make You Smarter

Green tea does more than just keep you awake, it can also make you smarter. The key active ingredient is caffeine, which is a known stimulant.

It doesn’t contain as much as coffee, but enough to produce a response without causing the “jittery” effects associated with too much caffeine.

What caffeine does in the brain is to block an inhibitory neurotransmitter called Adenosine. This way, it actually increases the firing of neurons and the concentration of neurotransmitters like dopamine and norepinephrine (3, 4).

Caffeine has been intensively studied before and consistently leads to improvements in various aspects of brain function, including improved mood, vigilance, reaction time and memory (5).

However… green tea contains more than just caffeine. It also has the amino acid L-theanine, which is able to cross the blood-brain barrier (6).

L-theanine increases the activity of the inhibitory neurotransmitter GABA, which has anti-anxiety effects. It also increases dopamine and the production of alpha waves in the brain (7, 8, 9).

Studies show that caffeine and L-theanine can have synergistic effects. The combination of the two is particularly potent at improving brain function (10).

Because of the L-theanine and the smaller dose of caffeine, green tea can give you a much milder and different kind of “buzz” than coffee.

Many people report having more stable energy and being much more productive when they drink green tea, compared to coffee.

Bottom Line: Green tea contains less caffeine than coffee, but enough to produce an effect. It also contains the amino acid L-theanine, which can work synergistically with caffeine to improve brain function.

3. Green Tea Increases Fat Burning and Improves Physical Performance

If you look at the ingredients list for any fat burning supplement, chances are that green tea will be on there.

This is because green tea has been shown to increase fat burning and boost the metabolic rate, in human controlled trials (11, 12).

In one study in 10 healthy men, green tea increased energy expenditure by 4% (13).

Another study showed that fat oxidation was increased by 17%, indicating that green tea may selectively increase the burning of fat (14).

However, I’d like to point out that some studies on green tea don’t show any increase in metabolism, so the effects may depend on the individual (15).

Caffeine itself has also been shown to improve physical performance by mobilizing fatty acids from the fat tissues and making them available for use as energy (16, 17).

In two separate review studies, caffeine has been shown to increase physical performance by 11-12%, on average (18, 19).

Bottom Line: Green tea has been shown to boost the metabolic rate and increase fat burning in the short term, although not all studies agree.

4. Antioxidants in Green Tea May Lower Your Risk of Various Types of Cancer

Cancer is caused by uncontrolled growth of cells. It is one of the world’s leading causes of death.

It is well known that oxidative damage contributes to the development of cancer and that antioxidants can have a protective effect (20).

Green tea is an excellent source of powerful antioxidants, so it makes perfect sense that it could reduce your risk of cancer, which it appears to do:

Breast cancer: A meta-analysis of observational studies found that whomen who drank the most green tea had a 22% lower risk of developing breast cancer, the most common cancer in women (21).
Prostate cancer: One study found that men drinking green tea had a 48% lower risk of developing prostate cancer, which is the most common cancer in men (22).
Colorectal cancer: A study of 69,710 Chinese women found that green tea drinkers had a 57% lower risk of colorectal cancer (23).
Multiple other observational studies show that green tea drinkers are significantly less likely to get various types of cancer (24, 25, 26).

It is important to keep in mind that it may be a bad idea to put milk in your tea, because it can reduce the antioxidant value (27).

5. Green Tea May Protect Your Brain in Old Age, Lowering Your Risk of Alzheimer’s and Parkinson’s

Not only can green tea improve brain function in the short term, it may also protect your brain in old age.

Alzheimer’s disease is the most common neurodegenerative disease in humans and a leading cause of dementia.

Parkinson’s disease is the second most common neurodegenerative disease and involves the death of dopamine producing neurons in the brain.

Multiple studies show that the catechin compounds in green tea can have various protective effects on neurons in test tubes and animal models, potentally lowering the risk of Alzheimer’s and Parkinson’s (28, 29, 30).

Bottom Line: The bioactive compounds in green tea can have various protective effects on neurons and may reduce the risk of both Alzheimer’s and Parkinson’s, the two most common neurodegenerative disorders.

6. Green Tea Can Kill Bacteria, Which Improves Dental Health and Lowers Your Risk of Infection

The catechins in green tea have other biological effects as well.

Some studies show that they can kill bacteria and inhibit viruses like the influenza virus, potentially lowering your risk of infections (31, 32, 33, 34).

Streptococcus mutans is the primary harmful bacteria in the mouth. It causes plaque formation and is a leading contributor to cavities and tooth decay.

Studies show that the catechins in green tea can inhibit the growth of streptococcus mutans. Green tea consumption is associated with improved dental health and a lower risk of caries (35, 36, 37, 38, 39).

Another awesome benefit of green tea… multiple studies show that it can reduce bad breath (40, 41).

Bottom Line: The catechins in green tea may inhibit the growth of bacteria and some viruses. This can lower the risk of infections and lead to improvements in dental health, a lower risk of caries and reduced bad breath.

7. Green Tea May Lower Your Risk of Type II Diabetes

Type II diabetes is a disease that has reached epidemic proportions in the past few decades and now afflicts about 300 million people worldwide.

This disease involves having elevated blood sugar levels in the context of insulin resistance or an inability to produce insulin.

Studies show that green tea can improve insulin sensitivity and reduce blood sugar levels (42).

One study in Japanese individuals found that those who drank the most green tea had a 42% lower risk of developing type II diabetes (43).

According to a review of 7 studies with a total of 286,701 individuals, green tea drinkers had an 18% lower risk of becoming diabetic (44).

Bottom Line: Some controlled trials show that green tea can cause mild reductions in blood sugar levels. It may also lower the risk of developing type II diabetes in the long term.

8. Green Tea May Reduce Your Risk of Cardiovascular Disease

Cardiovascular diseases, including heart disease and stroke, are the biggest causes of death in the world (45).

Studies show that green tea can improve some of the main risk factors for these diseases.

This includes total cholesterol, LDL cholesterol and triglycerides (46).

Green tea also dramatically increases the antioxidant capability of the blood, which protects the LDL cholesterol particles from oxidation, which is one part of the pathway towards heart disease (47, 48, 49).

Given the beneficial effects on risk factors, it is not surprising to see that green tea drinkers have up to a 31% lower risk of cardiovascular disease (50, 51, 52).

Bottom Line: Green tea has been shown to lower total and LDL cholesterol, as well as protect the LDL particles from oxidation. Observational studies show that green tea drinkers have a lower risk of cardiovascular disease.

9. Green Tea Can Help You Lose Weight and Lower Your Risk of Becoming Obese

Given that green tea can boost the metabolic rate in the short term, it makes sense that it could help you lose weight.

Several studies show that green tea leads to decreases in body fat, especially in the abdominal area (53, 54).

One of these studies was a randomized controlled trial in 240 men and women that went on for 12 weeks. In this study, the green tea group had significant decreases in body fat percentage, body weight, waist circumference and abdominal fat (55).

However, some studies don’t show a statistically significant increases in weight loss with green tea, so this needs to be taken with a grain of salt (56).

Bottom Line: Some studies show that green tea leads to increased weight loss. It is particularly effective at reducing the dangerous abdominal fat.

10. Green Tea May Decrease Your Risk of Dying and Help You Live Longer

Of course, we all have to die eventually. That is inevitable.

However, given that green tea drinkers are at a lower risk of cardiovascular disease and cancer, it makes sense that it could help you live longer.

In a study of 40,530 Japanese adults, those who drank the most green tea (5 or more cups per day) were significantly less likely to die during an 11 year period (57):

Death of all causes: 23% lower in women, 12% lower in men.
Death from heart disease: 31% lower in women, 22% lower in men.
Death from stroke: 42% lower in women, 35% lower in men.
Another study in 14,001 elderly Japanese individuals aged 65-84 years found that those who drank the most green tea were 76% less likely to die during the 6 year study period (58).

By Kris Gunnars, BSc
Link: https://authoritynutrition.com/top-10-evidence-based-health-benefits-of-green-tea/

8
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে বিভিন্ন ক্যাডারের শূন্য পদগুলো পূরণ করা হয় বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে। মেধাতালিকা তৈরির পর প্রার্থীর মেধাক্রম, পছন্দ ও প্রাধিকার কোটা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠায়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে পুলিশি তদন্তের পর উপযুক্তরা নিয়োগ পান। সুতরাং এ সুপারিশ অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। প্রাধিকার কোটার ব্যাপকতা মেধাকে পেছনে ফেলছে বটে। তবে প্রাধিকারধারীদেরও কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে এ তালিকায় আসতে হয়। কারিগরি ও সাধারণ ক্যাডার মিলিয়েই পরীক্ষাটি নেওয়া হচ্ছে।

এর দীর্ঘসূত্রতা সম্পর্কে জনমনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। চাকরি প্রার্থীসহ সবাই চান এ প্রক্রিয়ার সময়কাল যত হ্রাস করা যায়, ততই উত্তম। বেশি সময় চাকরি করতে পারবেন সফল প্রার্থীরা। সরকারও তুলনামূলক তরুণদের সেবা পাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সময়সীমা কোনোভাবেই যথেষ্ট সংক্ষিপ্ত করা যাচ্ছে না। অথচ একই প্রশাসনিক উত্তরাধিকারের দেশ ভারত ও পাকিস্তান বছরের পরীক্ষা বছরেই শেষ করে চাকরিতে যাচ্ছেন সফল প্রার্থীরা। কিছুটা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নানা কারণে এ দীর্ঘসূত্রতা। বিশেষ করে বিসিএসের সব ক্যাডারের জন্য একই পরীক্ষা আর প্রাধিকার কোটার বিভাজন বাছাই প্রক্রিয়াটিকে জটিল করে রেখেছে। পিএসসি সক্রিয় হয়েও এসব বাধা উতরাতে পারছে না। অবশ্য কোটাসংক্রান্ত সিদ্ধান্তটি সরকারের; পিএসসির নয়। এটা নিয়ে আগে অনেক লেখা হয়েছে। আর আজকের নিবন্ধ একে কেন্দ্র করেও নয়। মূলত সাধারণ ও কারিগরি—সব ক্যাডারের একই সিলেবাসে পরীক্ষাই এখানে আলোচনায় আসছে।

সাধারণ ক্যাডার হিসেবে প্রশাসন, পররাষ্ট্র, পুলিশ, কর, শুল্ক, নিরীক্ষা ও হিসাব ইত্যাদিকে বিবেচনা করা যায়। কারিগরি ক্যাডারগুলো মূলত বিশেষায়িত চাকরি। এর মধ্যে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সরকারি কলেজের সব বিষয়ের শিক্ষক, কৃষিবিদ—এসব চাকরি থাকছে। আর প্রকৃতপক্ষে মোট শূন্যপদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি পদই বিশেষায়িত। সাধারণ ক্যাডারের পদসংখ্যা তত বেশি নয়। তাই নিয়োগ দেওয়ার সুবিধার্থে বারবার দাবি করা হয়েছে একাধিক পিএসসি করার। সরকারকেও একপর্যায়ে ইতিবাচক মনে হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি পৃথক পিএসসি হবে, এরূপ ঘোষণাও আমরা দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে শুনেছি। প্রকৃতপক্ষে কিছুই হয়নি। একটি পিএসসি সনাতনী ঘরানার পদগুলো ছাড়াও এত ধরনের বিশেষায়িত পদে নিয়োগ দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। এতে সময় যেমন বেশি লাগছে, তেমনি বিশেষায়িত পদগুলোর চাহিদার সঙ্গে অনেকটা সংগতিবিহীন একটি সিলেবাসের মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সবাই বিসিএস হবেন—ভালো কথা। নিয়োগ স্তরে থাকবে সমান সুযোগ-সুবিধা। এতেও কারও আপত্তি নেই। সব ক্যাডার থেকেই একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে উপসচিব পদে নিয়োগ ও পরবর্তী পদোন্নতির নিশ্চয়তা নিয়েও কোনো প্রশ্ন নেই। আর তাই বলে সব ক্যাডারের নিয়োগ পরীক্ষা প্রায় একই সিলেবাসে নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ভিন্ন ভিন্ন সিলেবাসে বিসিএস হলেও সমমানধারী হতে কোনো বাধা থাকার কথা নয়।

সিলেবাসটা একটু পর্যালোচনা করা দরকার। সবার জন্য ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা রয়েছে। এতে দুই থেকে আড়াই লাখ প্রার্থী অংশ নেন। সাধারণত ৫ শতাংশের কম টেকেন লিখিত পরীক্ষার জন্য। সে পরীক্ষা ৯০০ নম্বরের। আর তা মোটামুটি একই সিলেবাসে। সাধারণ ক্যাডারের জন্য বাংলা, ইংরেজি ও বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০ নম্বর করে আর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, অঙ্ক ও মানসিক দক্ষতা এবং সাধারণ বিজ্ঞান ১০০ নম্বর করে। বিশেষায়িত ক্যাডারে শুধু বাংলায় ১০০ নম্বর কম এবং সাধারণ বিজ্ঞান নেই। তবে তাঁদের পদসংশ্লিষ্ট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হয়। এতে আছে ৭২টি বিষয়। উভয় ক্ষেত্রে একই ধরনের মৌখিক পরীক্ষা ২০০ নম্বরের। তাহলে বিশেষায়িত ক্যাডারের প্রার্থীরা যা নিয়ে কাজ করবেন, তার প্রতি বড় ধরনের অবমূল্যায়ন করার অভিযোগটি যথার্থ বলে লক্ষণীয় হচ্ছে।

ড. আকবর আলি খান তাঁর অবাক বাংলাদেশ—বিচিত্র ছলনাজালে রাজনীতি বইতে লিখেছেন ‘পৃথিবীর আর কোনো দেশে বিশেষজ্ঞ নিয়োগে এ ধরনের পরীক্ষা নেওয়া হয় কি না, এ সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে। চিকিৎসক, কৃষিবিদ ও বিজ্ঞানীর মতো বিশেষজ্ঞদের নির্বাচনে তাঁদের বিশেষ বিষয়ের ওপর জ্ঞানের জন্য রাখা হয়েছে ২০০ নম্বর।’ আর সাধারণ ক্যাডারের মতো অন্যান্য বিষয়ে রাখা হয়েছে ৭০০ নম্বর। অথচ তাঁদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান যাচাই এখানে হচ্ছে না বলেই উল্লেখ করা যায়। সাধারণ পদের জন্য পাঠ্যক্রমকেও ত্রুটিপূর্ণ এবং একবিংশ শতাব্দীর জন্য অনুপযুক্ত বলেছেন ড. খান। তিনি লিখেছেন, ‘অঙ্ক, প্রাত্যহিক বিজ্ঞান এবং অনেক ক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজিতে এসএসসি পর্যায়ের প্রশ্ন করা হয়।’

যেসব যুক্তি একক সমন্বিত বিসিএস পরীক্ষার পক্ষে বলা হয়, তার মধ্যে আছে সব ক্যাডারের লোককেই কোনো না কোনো সময়ে প্রশাসনিক কাজ করতে হয়। তা ছাড়া, ভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নেওয়া হলে একটি বৈষম্যমূলক মনোভাবও সৃষ্টি হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে এসব যুক্তির কোনোটিই ধোপে টেকে না। সব ক্যাডারেরই ঊর্ধ্বতন পদগুলো অনেকাংশে প্রশাসনিক। আর সে প্রশাসন পরিচালনার জন্য সাধারণ ক্যাডারের মতো এসব সিলেবাসে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে আসার প্রয়োজন হয় না। বিশেষায়িত ক্যাডারগুলোর বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা মূলত পেশাদারি দায়িত্ব পালন করবেন। এটা করতে তিনি উপযুক্ত কি না, সেটা যাঁচাই করাই পিএসসির দায়িত্ব। পেশাগত দক্ষতার পরিচয় দিতে পারলে যখন কিছু প্রশাসনিক কাজের দায়িত্ব পাবেন, সেখানেও সাধারণত দক্ষই হবেন। আগে পৃথক পৃথক ব্যবস্থায় পিএসসি কর্তৃকই প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ হতো। তখনকার শিক্ষকদের কেউ কেউ স্বনামধন্য অধ্যক্ষ হয়েছেন। কেউ বা তখনকার শিক্ষা অধিদপ্তরের শীর্ষপদ জনশিক্ষা পরিচালক কিংবা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দক্ষতা ও যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনেক কাজ তাদের শিক্ষকেরাই করেন। উপাচার্য তো তাঁরাই হন। আর পেশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা দিলে সে বিসিএস কর্মকর্তারা অচ্ছুত হবেন, এমন আশঙ্কা সম্পূর্ণ অমূলক। বরং পেশাগত জ্ঞানের পরিচয় দিয়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অধিকতর গৌরববোধ করবেন।

আলোচনা করা যায় কীভাবে এটা পুনর্বিন্যাস করা চলে। এ ক্ষেত্রে বিশেষায়িত ক্যাডারগুলোর জন্য একটি পৃথক পিএসসি সর্বোত্তম বিকল্প। কোনো কারণে সরকার এটা করতে না চাইলে বর্তমান পিএসসির এ বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। সংশোধন করতে হবে কিছু বিধিবিধান। সে ক্ষেত্রে বিশেষায়িত ক্যাডারগুলোকে সাধারণ ক্যাডারের জন্য নির্ধারিত বিষয়গুলোর ওই ৭০০ নম্বরের পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দেওয়া যায়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষাটা খুব ঝামেলাপূর্ণ নয় বলে একসঙ্গে সেটাতে সবাই অংশ নিতে পারেন। এ পরীক্ষার সিলেবাসে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞানসহ বেশ কিছু বিষয় থাকে। একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার এ ধরনের জ্ঞান থাকা সংগত। বিশেষায়িত ক্যাডারের জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে প্রিলিমিনারিতে যাঁরা সফল হবেন, তাঁদের তালিকা পৃথক করে ওই নম্বরটাও মূল্যায়নের জন্য রাখা যায়। তারপর তাঁরা ২০০ নম্বরের বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষা দেবেন।

এ ছাড়া তাঁদের শিক্ষাজীবনে প্রাপ্ত ডিগ্রি ও ডিপ্লোমাগুলোর জন্য রাখা যায় ১০০ নম্বর। আর মৌখিক পরীক্ষাটিও মূলত হবে বিষয়ভিত্তিক। পৃথক পৃথক বোর্ডে। সেখানে বিষয়ের বিশেষজ্ঞ থাকতে হবে। এভাবে মোট ৭০০ নম্বরের পরীক্ষার মাধ্যমে বিশেষায়িত ক্যাডারগুলোর মূল্যায়নপর্ব সম্পন্ন করা চলে। সাধারণ ক্যাডারের সিলেবাসও সময় ও দেশের ক্রমপরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ক্রমাগতভাবে মূল্যায়ন ও প্রয়োজনে পরিবর্তন করা দরকার। ভারতের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার অনুসরণে শূন্যপদের দ্বিগুণসংখ্যক প্রার্থীকেই শুধু মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা যায়। এভাবে পরীক্ষাটা হলে সময় অনেক বেঁচে যাবে বলে ধারণা করা হয়।

তবে এ ধরনের মৌলিক পরিবর্তনের প্রস্তাব তৈরির আগে ওয়ার্কশপ, সেমিনার-জাতীয় কিছু আলোচনার ব্যবস্থা করতে পারে পিএসসি। নিতে পারে বিভিন্ন ক্যাডারের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মতামত। এ ধরনের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত ব্যবস্থার চেয়ে উত্তম কিছু বের হয়ে আসতে পারে। আমলাতন্ত্র পরিবর্তনবিমুখ বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। আর ধারণাটি একেবারেই অমূলক নয়। তবে পরিবর্তন করতে হয় সময়ের বিবর্তনে। ১৯১২ সালে রচিত রবিঠাকুরের অচলায়তন নাটকটিতেও চিরায়ত বিশ্বাসের প্রতি অনমনীয় অবস্থানের বিপরীতে পরিবর্তনের দাবিও ছিল ব্যাপক। আর তা হয়েছেও। কবির কল্পনার অচলায়তন ছিল কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠান।

আলী ইমাম মজুমদার: সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

সূত্রঃ প্রথম আলো

9
Faculty Forum / Train Yourself to Be More Positive in 5 Steps
« on: April 23, 2017, 11:37:23 AM »
By Dani DiPirro

"A pessimist sees the difficulty in every opportunity; an optimist sees the opportunity in every difficulty.” ~Winston Churchill

I am constantly striving to see the positive in every aspect of my life. But it’s not always easy.

My dog is currently suffering from a disease from which she will never recover. My mind is still trying to adjust to my relatively new schedule of running Positively Present full time. My wallet is thinning out as I march forward on my entrepreneurial ventures. And, as I get older, I find myself moving in different directions from some of the people I’ve spent a great deal of time with.

My life—and all of our lives—is filled with challenges that make it very difficult to be positive sometimes.

However, I know that choosing to be positive has helped me the most in terms of becoming the person I want to be. Even when things are difficult, I know that being positive—and striving to make the best of whatever situation I’m in—really does make even the most challenging situations easier to bear.

More often than not, I find myself veering toward a positive attitude. (It’s something I never would have done years ago!) I firmly believe that this is because I’ve trained myself to be positive.

It doesn’t always come naturally for me—sometimes it’s a lot of work—but I’ve taken five steps that make it so much easier for me to see the good in life.

Step One: Believe a Positive Attitude is a Choice

This step was hard to take at first. I thought that people were either positive or negative (and I was in the latter category). I used to blame my negativity on all kinds of outside forces—fate, experiences, parents, relationships—but never really stopped to think that I could choose to be positive.

Teaching myself that positivity is a choice has been one of the greatest things I’ve ever done for myself.

Now when I find myself in a bad situation, I know that it’s up to me to find the good, to be positive regardless of what’s happening around me. I no longer point fingers and place blame. I realize that everything happens how it happens, and it’s up to me to choose how I want to feel about it. I am in control of my attitude, and no one can take that away from me.

Step Two: Rid Your Life of Negativity

If you want to live a positive, joyful life, you cannot be surrounded by negative people who don’t encourage your happiness.

As a negative person, I attracted negative people. When I decided to make the change to live a more positive life, I had to rid my life of the most negative influences in it. No one is perfect—and perfection isn’t the goal when it comes to positivity—but there were people in my life who were consistently negative, who constantly brought me down, and I had to stop spending so much time with them.

This, as you can imagine, wasn’t easy. It can hurt to distance yourself from people—even when you know they aren’t good for you or your current lifestyle.

In addition to removing negative influences from my, I also had to get rid of some of my own negative behaviors, such as drug and alcohol abuse. I had to take a step back and examine which behaviors were good for me and which were not.

I learned to focus on the positive things I was doing—such as working on my blog and cultivating new, positive relationships—and let go of the negative ones. This process was not easy and, to be honest, is still ongoing, but I know this: It’s hard to live a positive life when negative people and behaviors continually pull you down.

Step Three: Look For the Positive in Life

In every person, in every situation, there is something good. Most of the time it’s not obvious. We have to look. And sometimes we have to look hard.

The old me was content to sit back and just glance around. If I saw negative, I went with that feeling. I didn’t want to look harder or think too much about the good. I found it much, much easier to sit back and just accept what I saw (which was usually the bad).

Now, when I’m faced with a difficult or challenging situation, I think to myself, “What is good about this?” No matter how terrible the situation might seem, I always can find something good if I take the time to think about it.

Everything—good and bad—is a learning experience so, at the very least, you can learn from bad experiences. However, there’s usually even more to it than that. If you really take the time to look, you will usually find something good, something genuinely positive, about every person or situation.

Step Four: Reinforce Positivity in Yourself

Once I started thinking more positively, I realized I had to reinforce these thoughts and behaviors in myself so they would stick. As with any sort of training, the more you practice, the better you get—and, yes, you can practice being positive.

The best and easiest way to do this is to be positive when it comes to who you are. Tell yourself you’re awesome. Tell yourself you look good. Tell yourself you did a great job at work or raising your kids or whatever it is you do.

Be honest with yourself, but do your best to look for the good. And, whatever you do, don’t focus on the negative. It’s okay to not like everything about yourself, but don’t focus on what you don’t like. We all have positive attributes, and it’s up to you to remind yourself of them every day.

Step Five: Share Positivity with Others

Not only do you need to be positive with yourself for this training to really take effect, but you need to be positive with others. You have to share your wealth of positivity with the world.

The best way I’ve found to do this is quite simple and basic: Be nice to other people, no matter what. Tell someone s/he looks nice today. Tell someone s/he did a great job on that presentation.

Tell your parents or children (or both!) how much you love them and how great they are. When someone is feeling down, do what you can to cheer him or her up. Send flowers. Write notes. Don’t gossip. Be kind to all living things.

All of these things sound basic enough, but for someone like me, they didn’t come easily.

I never wanted to see the good in myself and, therefore, didn’t want to see it in others either. I used to be critical and condescending. Now I strive to be encouraging and supportive.

I try not only to treat others as I would like to be treated, but I also try to consider how they would like to be treated. People appreciate positivity, and the more you share it with others, the more you are practicing it your own life.

When you start feeling like the idea of being a positive person is daunting, remind yourself that all it takes is one small step in the right direction to move yourself toward a more positive attitude.

Believe in yourself and remember the most important lesson of all: A positive outlook is a choice that you can always make.

10
ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের নানা দিক তুলে ধরে প্রতি বছর প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘উই আর সোশ্যাল’ নামের ওয়েব পোর্টাল। চলতি বছরেও করেছে। এখানে দেখার বিষয় হলো বর্তমানে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেক অর্থাৎ ৫০ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। অন্যদিকে মুঠোফোন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে মোট জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ। সংখ্যাটা যেভাবে বাড়ছে, তাতে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর শতভাগই হয়তো একদিন মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করবে।
পৃথিবীর জনসংখ্যা ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা
৭৪৭ কোটি ৬০ লাখ
মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী
৩৭৭ কোটি ৩০ লাখ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়
২৭৮ কোটি ৯০ লাখ
মোট মুঠোফোন ব্যবহারকারী
৪৯১ কোটি ৭০ লাখ
মুঠোফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়
২৫৪ কোটি ৯০ লাখ
যন্ত্রভেদে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ
কম্পিউটার
৪৫ শতাংশ (গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কম)
মুঠোফোন
৫০ শতাংশ (গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি)
ট্যাবলেট
৫ শতাংশ (গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম)
অন্যান্য যন্ত্র
০.১২ শতাংশ (গত বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি)
স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেমভেদে ইন্টারনেট ব্যবহার
অ্যান্ড্রয়েড: ৭১.৬%
আইওএস: ১৯.৬%
অন্যান্য: ৮.৮%
সূত্র:(প্রথম আলো), উই আর সোশ্যাল, হুটস্যুট, স্ট্যাট কাউন্টার

11
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জ্যোতির্বিদেরা একটি মৃতপ্রায় প্রবীণ নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করেছেন। পৃথিবী থেকে ২০৮ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ওই নক্ষত্রটি। এর নাম এল ২ পাপিস। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই নক্ষত্রটি পর্যবেক্ষণের ফলে কয়েক বিলিয়ন বছরের মধ্যে সূর্য বুড়ো হলে পৃথিবীর অবস্থা কেমন হবে, সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
গবেষকেরা বলছেন, ১০ বিলিয়ন বছর বয়স (এক বিলিয়ন সমান ১০০ কোটি) এল ২ পাপিস নক্ষত্রটির। পাঁচ বিলিয়ন বছর আগে এই নক্ষত্রটি ঠিক আজকের সূর্যের মতো ছিল।
বেলজিয়ামের কেইউ লিউভেন ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমির অধ্যাপক লিন ডেসিন বলেন, এখন থেকে পাঁচ বিলিয়ন বছর পরে আমাদের সূর্য লাল দানব (রেড জায়ান্ট) নক্ষত্রে রূপান্তরিত হবে। এ সময় সূর্যের আকার বর্তমানের চেয়ে শতগুণ বেড়ে যাবে।
অধ্যাপক ডেসিন বলেন, শক্তিশালী নাক্ষত্রিক ঝড়ে সূর্যের তীব্র ভর কমে যাবে। এর বিবর্তন-প্রক্রিয়ার শেষে সাত বিলিয়ন বছর পরে এটি ক্ষুদ্র সাদা বামন তারায় রূপান্তরিত হবে। এ সময় এটি পৃথিবীর মতো ছোট আকার ধারণ করবে। কিন্তু এটি হবে আরও ভারী। এই সাদা বামন তারার এক চা-চামচ উপাদানের ভর দাঁড়াবে প্রায় পাঁচ টন। এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় সৌরজগতের গ্রহগুলোর ওপর নাটকীয় প্রভাব ফেলবে। বৃহস্পতি, শুক্রের মতো গ্রহগুলো বিশাল নক্ষত্রের মধ্যে হারিয়ে যাবে এবং ধ্বংস হবে।
ডেসিন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে সূর্য আরও বড় ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। তাই এটি পৃথিবীকেও ধ্বংস করে ফেলবে।’
ডেসিন বলেন, পৃথিবীর পাথুরে অভ্যন্তর সূর্যের সেই লাল দানব দশায় টিকে থেকে সাদা বামন অবস্থা পর্যন্ত একে প্রদক্ষিণ করবে কি না, তা দেখার বিষয়। এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে জ্যোতির্বিদেরা এল ২ পাপিসকে পর্যবেক্ষণ শুরু করেন। পৃথিবী থেকে মাত্র ২০৮ আলোকবর্ষ দূরের এই নক্ষত্রটি মহাজাগতিক হিসেবে খুব কাছের।
গবেষকেরা পর্যবেক্ষণের সময় এল ২ পাপিসের ৩০ কোটি কিলোমিটারের মধ্যে একটি বস্তু দেখেছেন, যা ওই নক্ষত্রটিকে আবর্তন করছে। সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব এর অর্ধেক। গবেষকেরা তাই ভাবছেন, নক্ষত্রটি পর্যবেক্ষণ করে পাঁচ বিলিয়ন বছর পরে পৃথিবীর অবস্থা কেমন হবে তা জানা যাবে। তথ্যসূত্র: পিটিআই।

12
Faculty Sections / সাত গ্রহ আবিষ্কার
« on: February 23, 2017, 05:55:16 PM »
আমাদের ছায়াপথেই একটি ছোট নক্ষত্রের চারপাশে ঘুরতে থাকা সাতটি পৃথিবীসদৃশ গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গতকাল বুধবার তাঁরা এ কথা প্রকাশ করেছেন। বলা হচ্ছে, এ আবিষ্কার সৌরজগতের বাইরে প্রাণের চিহ্ন অনুসন্ধানের জন্য এ পর্যন্ত সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রের সন্ধান দিয়েছে।
সাতটি গ্রহেরই আকার এবং ভর মোটামুটি আমাদের পৃথিবী গ্রহের মতো আর প্রায় নিশ্চিতভাবেই পাথুরে। এগুলোর তিনটির মধ্যে প্রাণের বিকাশে সহায়তাকারী মহাসাগর থাকার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। নেচার পত্রিকায় এ গবেষণার কথা ছাপা হয়েছে।
প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী আমোরি ত্রিয়ো প্যারিসে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সৌরজগতের বাইরে প্রাণের সন্ধানে আমরা একটা বড় পদক্ষেপ নিয়েছি। এত দিন পর্যন্ত আমরা সঠিক গ্রহ খুঁজে পাইনি। এবার পেয়েছি।’

সূত্রঃ প্রথম আলো

13
পৃথিবীতে মহাদেশ সাতটি—এই তথ্য সবার জানা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, আরেকটি মহাদেশ লুকিয়ে আছে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে। নিউজিল্যান্ড এই মহাদেশের পানির ওপরে থাকা একমাত্র অংশ। বাকি সবটুকু পানির নিচে। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা এই ‘মহাদেশ’টির নাম দিয়েছেন জিল্যান্ডিয়া। আকারে এটি ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সমান।
বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, জিল্যান্ডিয়া দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই এই মহাদেশের নাম দেওয়া হয়েছে নিউজিল্যান্ড ও ইন্ডিয়া দুই দেশ মিলিয়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিউজিল্যান্ড আসলে এই মহাদেশেরই জেগে থাকা অংশ। বলা যেতে পারে, এই মহাদেশের পর্বতচূড়া।
জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা বলেন, জিল্যান্ডিয়ার আয়তন ৫০ লাখ বর্গকিলোমিটার, যা পার্শ্ববর্তী অস্ট্রেলিয়ার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের সমান। কিন্তু এই মহাদেশের প্রায় ৯৪ শতাংশই তলিয়ে আছে সাগরের পানিতে। মাত্র অল্প কিছু অঞ্চল পানির ওপর মাথা তুলে আছে, যেমন নিউজিল্যান্ডের নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড এবং নিউ ক্যালেডোনিয়া। আর মহাদেশের স্বীকৃতি পেতে যা যা দরকার, জিল্যান্ডিয়া তার সব কটিই পূরণ করেছে বলেও দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। এখন তাঁরা চেষ্টা করছেন নব আবিষ্কৃত তলিয়ে যাওয়া ভূখণ্ডের জন্য মহাদেশের স্বীকৃতি আদায়ের।

সূত্রঃ প্রথম আলো , বিবিসি ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭

14
জন্মদিন ভুলে যাওয়া নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে লড়াই এখন কম হয়। সে জন্য ফেসবুক তো আছেই। সতেরো দুগুণে কত, তা বলতেও এখন পকেট থেকে ফোন বের করে ক্যালকুলেটর অ্যাপে হিসাব কষতে হয়। এমন অনেক কিছুই এখন আর কেউ নিজের মস্তিষ্কে সংরক্ষণ করতে রাখতে চায় না। কারণ ওই একটাই। সকল কাজের কাজি স্মার্টফোন তো আছেই। চৌকস এই ফোন দিন দিন আরও চৌকস হয়ে উঠলেও তা যে আমাদের একই সঙ্গে বোকা বানাচ্ছে, তা নিয়েই এখন মাথা চুলকে মরছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা।
স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীলতা অনেকটা গাড়িতে চড়ার মতো। বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতের জন্য হাঁটার চেয়ে গাড়ির ব্যবহার নিঃসন্দেহে সহজ ও দ্রুততর উপায়। তবে তা যে ধীরে ধীরে নিজের দুই পায়ের ওপর থেকে আস্থা কমিয়ে দেয়, তা আমাদের মাথায় থাকে না। ঠিক একইভাবে মস্তিষ্কের ওপর চাপ কমালে এর কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে চালকেরা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমসের (জিপিএস) দিকনির্দেশকের ওপর নির্ভর করে গাড়ি চালান, তাঁদের তুলনায় যাঁরা নিজের মস্তিষ্কের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে গাড়ি চালান তাঁদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অনেক বেশি হয়। বিশ্লেষকেরা আরও বলেন, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তথ্য যেমন ভাই বা বোনের ফোন নম্বর বা স্থানীয় থানার ফোন নম্বর আমরা মনে রাখার চেয়ে আমাদের স্মার্টফোন বা ইন্টারনেটে রেখে দিই কিংবা ইন্টারনেট থেকে সহজে কীভাবে পাওয়া যাবে তা রপ্ত করে ফেলি। বিশ্লেষকদের মতে, স্মার্টফোনের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীলতা অনেকটা নিজের ব্যায়াম অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নেওয়ার মতো।
প্রযুক্তিবিষয়ক লেখক নিকোলাস কার বলেন, ‘গুগলের সাহায্য নিয়ে আমরা যদি প্রতিনিয়ত সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শুরু করি, তাতে হয়তো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে। কিন্তু তাতে আমরা সূক্ষ্ম ও গভীর চিন্তা করতে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারব না।’ আরেকটি গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সর্বদা ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তারা বেশি মানুষের সঙ্গে থাকতে বিরক্ত অনুভব করে। তারা অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের প্রতি বেশি মনোযোগী হওয়ার ফলে অন্য সবকিছুই তাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
দিন দিন স্মার্টফোন আমাদের মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী কার্যক্ষমতা কমিয়েও দিচ্ছে। পার্কে গিয়ে মুক্ত বাতাস আর পরিবেশ উপভোগ করার চেয়ে এখন ঘরের কোণে বসে ইউটিউবে মজার ভিডিও দেখাটাই আমাদের বিনোদন। আর এমন ডিজিটাল বিনোদনগুলোই আমাদের মস্তিষ্কের তথ্য ও অনুভূতি প্রক্রিয়াজাত করার অংশটুকু ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেয়। এতে একসময় আমাদের মস্তিষ্ক গভীর চিন্তাশক্তি ও মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা হারাতে বসে।

 সূত্র: প্রথম আলো , টাইম।

Pages: [1]