Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - azad.ns

Pages: 1 2 [3] 4
31
 ‘অটিজম’ শব্দটির সাথে সবাই পরিচিত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় তা সামান্যই । মস্তিস্কের স্নায়ুবিক সমস্যা যা মস্তিস্কের সাধারণ কর্মক্ষমতাকে ব্যাহত করে,তার নামই অটিজম । যার আরেক নাম অটিজম স্পেকট্রাম সিনড্রোম (ASD)। ২০০৭ সাল থেকে জাতিসংঘে সিধান্ত গ্রহনের পর ২০০৮ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী অটিজম সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে আসছে । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় অটিজম কি? এপোলো হাসপাতাল বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ স্পেশালিস্ট ডা.তোশিবা রহমান এর সাথে কথা বলেছিলাম এবারের নবম অটিজম সচেতনতা দিবসে । উনি আমাদের বললেন,সাধারণ অর্থে শিশুদের মধ্যে যদি বিশেষ কিছু আচরন দেখা যায় তাকেই অটিজম বলে ।

শিশুর নাম ধরে ডাকলেও সাড়া না দেয়া,চোখে চোখ রাখে না বা রাখতে না পারা কিংবা দুই বছরেরও পরে কথা বলা শুরু করা অটিজমের লক্ষণ বলে ধরে নেয়া হয় ।

৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে অটিজমের সঠিক কারন অনুসন্ধান করা যায় না । কিন্তু কখন বুঝবেন আপনার শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত কিংবা এর ঝুঁকিতে রয়েছে? চাইল্ড ফিজিওলজিস্ট তারানা আনিস বললেন,মাত্রা অনুযায়ী শিশুর চিকিৎসা ক্ষেত্র নির্ধারিত হয় । শিশুটি কি স্পেশাল স্কুলে যাবে নাকি সাধারণ স্কুলে যাবে তা নির্ধারণ করা হয় তার মাত্রা পরিমাপের পর ।

যুক্তরাষ্ট্রের অটিজম সোসাইটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ মানুষ অটিজম আক্রান্ত আর বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখের মত অটিজম আক্রান্ত মানুষ রয়েছেন এবং প্রতি বছর তার সাথে যোগ হচ্ছে প্রায় পনেরশ শিশু। বাংলাদেশে অটিজম নিয়ে কাজের করছে হাতে গোনা কয়েকটি সংস্থা । তাদের মধ্যে রয়েছে অটিজম রিসোর্স সেন্টার,‘সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অটিজম ইন চিলড্রেন' এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু বিকাশ কেন্দ্র। ডা.আনিসা জাহান,সহযোগী অধ্যাপক,আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালে কর্মরত। তিনি বললেন,কিছুটা প্রতিরোধ করা যায় অটিজম অভিভাবকের সচেতনতায়।

শিশুকে বেশী বেশী সময় দেয়া,তার সাথে খেলা করা এবং নতুন নতুন জিনিসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া,এতে করে শিশুর বুদ্ধি এবং মানসিক বিকাশ স্বাভাবিক হয় ।

বাবা-মা কি করবেন,যখন তারা বুঝবেন শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত? লক্ষন দেখা মাত্র অবশ্যই একজঅন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।

কেন অটিজম আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বাংলাদেশে? তার মূল কারন সামাজিক ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়া এবং একক পরিবারের সংখ্যা বেড়ে শিশু একা হয়ে যাচ্ছে । সারাদিন টিভি কিংবা যেকোন একটা কিছু নিয়ে একা ব্যস্ত থাকা অনেকটা প্রভাব ফেলে শিশুর উপর ।

যেখানে প্রতি ১০জন অটিস্টিক শিশুর মধ্যে ২জনের বিশেষ পারদর্শীতা দেখা যায়,সেখানে আমাদের সবার স্বাভাবিক আচরণ শিশুটিকে আমাদেরই একজন ভাবতে সাহায্য করবে। তাদের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদেরই দায়িত্ব

32
ওয়াশিংটন, ২৬ মার্চ (পিটিআই): হৃদরোগের চিকিৎসায় ডাক্তারেরা উন্নতি ঘটালেও, হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে চিকিৎসক সম্প্রদায়কে আরও ভালো কিছু করতে হবে। কারণ, যে সমস্ত রোগী হার্টের জটিল অসুখে ভুগছেন তাঁদের বেশিরভাগই কমবয়সি এবং চেহারায় স্থূল। আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের প্রায় চার হাজার রোগীদের উপর পরীক্ষা চালিয়ে এমনই দাবি করেছে একদল গবেষক। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। একইসঙ্গে গবেষক দলটি জানিয়েছে, ধূমপায়ী, সুগার ও উচ্চরক্তচাপযুক্ত রোগীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কুড়ি বছরে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকে ৩,৯০০-এর বেশি চিকিৎসাধীন রোগীর উপর গবেষণা চালিয়েছে গবেষক দলটি। চিকিৎসাধীন সকলেই ‘এসটি এলিভেশন মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন’ বা ‘এসটি সেগমেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (স্টেমি)’-এর রোগী। প্রসঙ্গত, সবথেকে জটিল ও কঠিন হার্টের অসুখ হল এই স্টেমি। গত ২০ বছরে এই বিপুল সংখ্যক হৃদরোগীদের আশঙ্কা (রিস্ক ফ্যাক্টর) নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে গবেষক দলটি।
গবেষক দলের প্রধান তথা ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের সমীর কাপাডিয়া জানিয়েছেন, মানুষ যখন আমাদের কাছে রুটিন পরীক্ষার জন্য আসে, তখন ওজন কমানো, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া এবং শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকার মাধ্যমে রিস্ক ফ্যাক্টর কমানোর উপর গুরুত্ব আরোপের প্রস্তাব নিয়ে সমস্যার দেখা দেয়। একাধিক বিষয় মানুষের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাদের মধ্যে কিছু আবার ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যেমন, বয়স, পারিবারিক ইতিহাস ইত্যাদি। যদিও, জীবনযাত্রার বদল, শরীরচর্চা, ধূমপান ত্যাগ এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমিয়ে ফেলা যায়। তবে, কাপাডিয়া জানিয়েছেন, হৃদরোগ চিকিৎসায় প্রভূত উন্নতি হলেও হার্টের অসুখ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসক মহলের আরও অনেক কিছু করার রয়েছে।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ২০ বছরের ‘স্টেমি’ রোগীদের পাঁচ বছর করে চারটি বিভাগে ভাগ করেছে গবেষকদলটি। প্রতিটি বিভাগের রোগীদের রিস্ক ফ্যাক্টর, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে গবেষকরা জানিয়েছেন, স্টেমি আক্রান্ত রোগীদের বয়স কমছে। প্রথম পাঁচ বছরের স্টেমি আক্রান্ত রোগীর গড় বয়স ৬৪ থেকে শেষ পাঁচ বছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬০-এ। একইভাবে স্থূলতার পরিসংখ্যান ৩১ থেকে হয়েছে ৪০ শতাংশ। সুগারের রোগীদের সংখ্যা ২৪ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশ। অন্যদিকে, উচ্চ রক্তচাপ রোগীর সংখ্যা ৫৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৭ শতাংশ। ফুসফুসের রোগীর সংখ্যা ৫ থেকে বেড়েছে ১২ শতাংশ। গবেষকরা সমস্ত পরিবর্তনকেই উদ্বেগজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন।
রিপোর্ট মতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, ধূমপানের চালচিত্র। ধূমপায়ীদের সংখ্যা ২৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬ শতাংশ। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত রোগীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার একাধিক সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সমস্ত রোগীর সংখ্যা ৬৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৫ শতাংশ। প্রসঙ্গত, হার্টের স্টেমি হল এমন একটি রোগ, যেখানে হৃৎপিণ্ডের মূল ধমনী পুরোপুরি অবরুদ্ধ (ব্লক) হয়ে যায়। ফলে, বন্ধ হয়ে যায় রক্ত চলাচল

33
জন্মের শুরু থেকে ছ’মাস পর্যন্ত বাচ্চা কেবলমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিদানও তাই। স্তন্যপানই শিশুর সর্বোত্তম খাদ্য বা পানীয়, ছ’মাস পর্যন্ত। মায়ের দুধই যাবতীয় ভিটামিনস (কেবল ভিটামিন ডি আলাদা দিতে হবে), মিনারেলস ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাবে। মায়ের দুধের বিকল্প ছ’মাস বয়স পর্যন্ত, সারা পৃথিবীতেই আর কিছু নেই। কিন্তু ছ’মাসের পরে শুধু বুকের দুধে বাচ্চার সামগ্রিক পুষ্টি মোটেই সম্ভব নয়।

ছয় মাসের পরে মায়ের বুকে দুধ যথেষ্ট নয়, কেন?
উঃ কারণ, হু-র বিভিন্ন পরীক্ষা ও রাসায়নিক বিশ্লেষণে ৫৫০ মিলি বুকের দুধে ক্যালরি (ঘাটতি ৬০%), আয়রন (ঘাটতি ৯৫%), প্রোটিন (ঘাটতি ৪৫%), জিঙ্ক ও ভিটামিন এ-র (ঘাটতি ৯০%) লক্ষণীয় ঘাটতি প্রমাণিত। বিশেষ করে ছয় থেকে আট মাস বয়সে আয়রন আর জিঙ্কের ঘাটতিই সবচেয়ে প্রকট। এই বয়সের একটি শিশুর আয়রন প্রয়োজন একজন প্রাপ্তবয়স্কের তুলনায় নয় গুণ বেশি আর জিঙ্ক চার গুণ বেশি। ২৭০০ ক্যালরির হিসাবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রয়োজন ০.৫ মিলিগ্রাম আয়রন ও ০.২৬ মিলিগ্রাম জিঙ্ক। সেখানে নয় গুণ ও চার গুণ বেশি আয়রন ও জিঙ্কের সমাহাহরে খাবার তৈরি করে শিশুর প্রয়োজন মেটানো মুখের কথা নয়। বিভিন্ন গবেষণা জানাচ্ছে আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা শিশুদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের থেকেও অনেক বেশি ব্যাপক।

মায়ের দুধে ৬ মাস পরের আয়রন, জিঙ্ক, প্রোটিন ও ক্যালরির (মানে শক্তি বা এনার্জি) এই বিশাল ফারাক/ ঘাটতি ঘোচাতে তাহলে কী খাওয়ানো হবে?

ছয় মাস একদিন থেকেই মায়ের দুধের সঙ্গে কঠিন/স্বল্প কঠিন/নরম বা কমপ্লিমেন্টারি ফুড খাওয়ানো শুরু করতে হবে। যাতে নিক্তি মেপে নির্দিষ্ট পরিমাণে সরকারি নিদান অনুযায়ী আয়রন, জিঙ্ক, প্রোটিন ও ক্যালোরিও থাকবে। ফলে মায়ের দুধের বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানের বিশাল ঘাটতি শিশুর বৃদ্ধিতে থাবা বসাতে পারবে না।

কমপ্লিমেন্টারি ফুড অপরিহার্য কেন?

কমপ্লিমেন্টারি ফুড অর্থাৎ মায়ের দুধ ব্যতিরেকে অন্যান্য কঠিন খাদ্য শিশুর সঠিক বৃদ্ধির দিশা দেখায়। মাইলস্টোন ডেভেলপমেন্ট ঠিক থাকলে শিশু স্বাভাবিকভাবেই কঠিন খাবার গ্রহণ করবে, যেমন কোনও কিছুর সাহায্যে অথবা একা একা শিশু বসতে পারবে, মাথা শক্ত ও সোজা রাখতে পারবে, খাবার মুখের কাছে আনলে মুখ হাঁ করবে, জিভটাকে নিচু ও অনুভূমিক রাখবে যাতে সহজে চামচ মুখে প্রবিষ্ট হয়, ঠোঁট দিয়ে চামচটাকে চেপে ধরবে, যাতে খুব সামান্য খাবারই মুখ থেকে গড়িয়ে পড়ে আর খাবারটাকে গিলবে, ঠেলে উগরে দেবে না যাতে চিবুক দিয়ে গড়িয়ে নামে। বাচ্চা সুস্থ স্বাভাবিক হলে তবেই তার পক্ষে কঠিন/ নরম খাবার গেলা সম্ভব। মাথা সোজা না থাকলে শিশুকে খাওয়ানো সম্ভব নয়, তেমনই খাবার দেখে শিশু যদি মুখ না খুলতে পারে, তাহলে তাকে জোর করে খাওয়ানো অসম্ভব।

বয়স অনুযায়ী শিশুর ঠিক কতটা আয়রন ও জিঙ্ক প্রয়োজন?

০-৬ মাসে শিশুর (ছেলে বা মেয়ে) জিঙ্কের আরডিএ (রেকমেন্ডেড ডায়াটারি অ্যালাউন্সেস) ২ মিলিগ্রাম, ৭-১২ মাসে ৩ মিলিগ্রাম, ১-৩ বছরে ৩ মিলিগ্রাম ও ৪-৮ বছরে ৫ মিলিগ্রাম। আয়রন প্রয়োজন ৭-১২ মাসে ১১ মিগ্রা, ১-৩ বছরে ৭ মিগ্রা আর ৪-৮ বছরে ১০ মিগ্রা।

বাড়িতে তৈরি খাবারে জিঙ্ক, আয়রন বা অন্যান্য খাবারের সঠিক জোগান বজায় রাখা কি সম্ভব?

বাড়িতে তৈরি খাবারে শিশুর বয়স অনুযায়ী নিক্তি মেপে উপরিউক্ত হিসেব অনুযায়ী আয়রন, জিঙ্ক, আয়োডিন, ভিটামিনস বা অন্যান্য মিনারেলস যুক্ত খাবার তৈরি একটু অসুবিধাজনক কিন্তু অসম্ভব নয়। দানাশস্য এবং ডালে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, রাইবোফ্ল্যাভিন, নিয়াসিন, থায়ামিন, ফোলেট, ভিটামিন এ-সি-ই, ভিটামিন বি সিক্স, টুয়েলভ ও সেলেনিয়ামের ‘বায়ো অ্যাভেলেবিলিটি’ বা জৈব লভ্যতা থাকে যৎসামান্য, ফলে বাড়ির তৈরি খাবারে সর্বদাই পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা।
ঝামেলার সূত্রপাত কৃষি-বিপ্লবের হাত ধরে। প্রাক কৃষি যুগে আদিম মানুষ শিকার করে মাছ-মাংস ঝলসে খেতে অভ্যস্ত ছিল। মায়ের দুধের সঙ্গে প্রাণিজ প্রোটিন বা মেটে (লিভার) আয়রন ও জিঙ্কের অভাবকে পুষিয়ে দিত। বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া ও ভিয়েতনামের ওপর করা একটি সমীক্ষা দেখাচ্ছে, বাড়ি বা স্থানীয় খাবার পুষ্টির বিচারে তখনই স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে যখন সেই খাবারে জোড়া হচ্ছে (ফর্টিফায়েড) আয়রন সমৃদ্ধ প্রাণীর মেটে বা লিভার।

অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা কি কেবল আয়রনের অভাবজনিত কারণেই?

বাচ্চাদের মধ্যে গোলকৃমির প্রকোপও আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন বলছে, ৬-৫৯ মাস বয়সি ১০টি শিশুর মধ্যে সাতটি শিশুই অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতায় আক্রান্ত। ৬-৫৯ মাস বয়সি শিশুর অর্ধেক কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় মাত্রায় (১৫ ppm) আয়োডিন পায় খাবার নুন থেকে। অর্থাৎ ৬-৫৯ মাস বয়সি শিশুর অর্ধেকের পাতে আয়োডিনযুক্ত নুনটুকুও জোটে না। ২৫ শতাংশ মাত্র ১২-৩৫ মাস বয়সি শিশু ভিটামিন-এ’র পরিপূরক কোনও খাবার খায় বা পায়। ভারত সরকারের নিদান, নয় মাস বয়স থেকে তিন বছর পর্যন্ত প্রতিটা শিশুকে ছয় মাস অন্তর নির্দিষ্ট মাত্রার ভিটামিন-এ খাওয়াতে হবে ভিটামিন-এ ডেফিসিয়েন্সিকে রুখতে।

শিশুর খাওয়াদাওয়া সংক্রান্ত আসল ব্যাধিটা তাহলে কোথায়?

আমাদের বর্তমান সময়ের কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে প্রাণিজ প্রোটিন ৬-৮ মাসের বাচ্চার কাছে অচ্ছুৎ। আট মাসের একটি শিশুকে সঠিক পুষ্টিমূল্য বজায় রাখতে দিনে ছয় থেকে আটবার শক্ত/নরম ফর্টিফায়েড খাবার খাওয়ানো প্রয়োজন। একটি প্রামাণ্য গবেষণা জানাচ্ছে, ভারতে মাত্র ৪২% ভাগ্যবান শিশুকে দৈনিক ৬-৮ বার খাওয়ানো হয়। ২ বছর বয়স পর্যন্ত পুষ্টিপ্রাচুর্যে ভরপুর খাবার শিশুর একান্ত প্রয়োজন; শিশুর বৃদ্ধি বিকাশ যেমন এই সময়টাতে সর্বাধিক ত্বরান্বিত হয় তেমনি শিশুর ভবিষ্যত খাদ্যগ্রহণের সুচারু অভ্যেসটিও তৈরি হয় এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’বছর সময়কালে। শুধু পুষ্টি নয়, মায়ের দুধের বিকল্প হিসাবে ধীরে ধীরে শক্ত বা নরম কমপ্লিমেন্টারি ফিডিং শিশুকে খাদ্যের স্বাদ ও গন্ধের ব্যাপারেও সচেতন করে তোলে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে যার ভূমিকা অপরিসীম।

কখন কীভাবে শিশু খাবারের স্বাদ/গন্ধ বুঝতে শেখে?

গর্ভাবস্থায় বা স্তন্যপানের সময় খাদ্যের গন্ধের সঙ্গে শিশুর সম্যক পরিচয় ঘটে। কমপ্লিমেন্টারি ফুডের সঙ্গে মা যদি শিশুকে পুষ্টিকর ফল ও সবজি খাওয়ানোর অভ্যাস করতে পারেন, পরবর্তীকালে দেখা গেছে সেই শিশু কোনও খাবার থেকেই মুখ সরিয়ে নিচ্ছে না।

লুকনো খিদে বা ‘হিডেন হাঙ্গার’টা কী?

শিশু খাচ্ছে কিন্তু তার কানাকড়ি পুষ্টিও হচ্ছে না অর্থাৎ খিদেটা আক্ষরিক অর্থে লুকনোই থাকছে। পুষ্টি—খিদের সমার্থক ও সম্পূরক। বিজ্ঞানসম্মত পন্থায় খাবার না খাওয়াতে পারলে শিশুর লুকনো খিদেকে (Hidden Hunger) বাগ মানানো কখনওই সম্ভব নয়। ফলে শিশু অল্পেতেই হয়ে পড়বে ক্লান্ত; দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যাঘাত ঘটবে পড়াশোনায়, উৎপাদনশীলতায়। তার ফলে সামগ্রিক ক্ষতি দেশ ও দশের।

লুকনো খিদের ক্ষতির বহর কতটা?

এই লুকনো খিদে বা প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি ডেকে আনতে পারে মস্তিষ্কের অপরিমেয় ক্ষতি, অন্ধ্যত্ব। বহুগুণ বাড়াতে পারে শৈশবে ডায়েরিয়া, হাম ও ম্যালেরিয়ার আশঙ্কা। একথা বলছে ছ’বছর আগেকার ইউনিসেফের প্রতিবেদন (The Micronutrient Initiative and UNICEF. Vitamin & Mineral Deficiency a Global Progress Report, 2010)। বয়সভিত্তিক উচ্চতা ও ওজনের স্কোর পরিষ্কার দেখিয়ে দেয়, দু’বছর পর্যন্ত পুষ্টির ঘাটতিকে, প্রকারান্তরে লুকনো খিদের স্বরূপকে।

শিশুর খাবার কত ধরনের হওয়া উচিত?

খাবারে বৈচিত্র্য আনতে সাতটি আলাদা আলাদা শ্রেণির খাবারের সুপারিশ করা হয়েছে। সাতটি দূর অস্ত, ৬-২৩ মাস বয়সি শিশুর মাত্র নয় শতাংশ চার ধরনের আলাদা আলাদা খাবার খেতে পায়। ফলে ২০ শতাংশ পাঁচ বছরের নিচের বাচ্চার সুষম বৃদ্ধিই হচ্ছে নাো। আর ৪৮% বাচ্চা হয়ে পড়ছে খর্বকায় (Stunted)।

মায়ের দুধের পরিবর্তে ধীরে ধীরে শিশুকে শক্ত, আধাশক্ত বা নরম খাবারে অভ্যস্ত করা আবশ্যিক, আপনার কথায় তা পরিষ্কার। কিন্তু শিশু বিশেষজ্ঞরা অনেকেই এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাতে ধ্যান দেন না, কী কারণে?

ভারতের পুব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণের ১৫১ জন শিশু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করা এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা জানাচ্ছে— সাধারণ অসুস্থতা আর টিকাকরণ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন অধিকাংশ শিশু বিশেষজ্ঞ। তাঁরা মোটেই উৎসাহী নন শিশুদের খাবার সম্পর্কে। ফলত অদ্ভুত আঁধার এক এ ভারতে এসেছে আজ।

আপনিই বলুন কী খাবার, কতটা কখন শিশুকে খাওয়ানো হবে?
১. ৬-৮ মাস বয়সি শিশুর ব্রেকফাস্টে গম, ডালিয়া, সুজি, বাজরা সেদ্ধ করে তার সঙ্গে তেল, ঘি, মাখন যোগ করা। কলাচটকে মাখা দেওয়া যেতে পারে। দুপুরে বা রাতের খাবারে এর সঙ্গে মিশবে সিদ্ধ সবজি বা চটকানো/ সিদ্ধ ফল, গরম দুধে মেশানো খই। সন্ধের স্বল্পাহারে থাকবে সিদ্ধ কুমড়ো, পেঁপে/আলু ও সিদ্ধ চটকানো আপেল/ নাসপাতি। পরিমাপ— ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ প্রতিবারে।
২. ৯-১১ মাসে ব্রেকফাস্টে বিভিন্ন পুষ্টিগুণযুক্ত দানাশস্য বা সিরিয়াল, গলা ভাত, গাজর সিদ্ধ ও সিদ্ধ ডিমের কুসুম। দুপুর ও রাতের খাবার—নানারকম সবজি, কড়াইশুটি সিদ্ধ, দুধে নরম করা চাপাটি, দই ভাত, চিকেন ভেজিটেবল স্টু। সন্ধ্যার খাবার— চটকানো থকথকে মরশুমি ফল, ফল দিয়ে তৈরি মিল্কশেক, গাজর বা আলু সেদ্ধ। পরিমাণ—আধকাপ প্রতিবারে।
৩. ১২-২৩ মাসে ব্রেকফাস্টে— নিরামিষ খিচুড়ি, ইডলি, উপমা। পুষ্টিগুণান্বিত বিভিন্ন দানাশস্য। চটকানো ফল ও ডিমের কুসুম। দ্বিপ্রাহরিক ও রাতের মূল খাবার— ভাত, ডালের জল, নানারকম সেদ্ধ সবজি, মাছ ও মুরগি সেদ্ধ ও মসৃণভাবে চটকানো। সন্ধ্যার হালকা খাবার— পাকা আম, পেঁপে, নাসপাতি ও কলার টুকরো। পরিমাপ—৩/৪-১ কাপ প্রতিবারে।

আর কী করণীয়?

১. খাবারকে সুস্বাদু করতে হবে, আমাদের মা-দিদিমারা জানেন বাচ্চার খাবারকে কীভাবে স্বাদু করতে হয়। খাবারকে যতটা সম্ভব থকথকে করতে হবে, যাতে কম গড়ায় বা চিবুক বেয়ে নামে। সর্বোত্তম পরিচ্ছন্নতা সবসময় বজায় রাখতে হবে। একবার দু’বার শিশু খাবার না খেলেই তা বাতিল করা যাবে না। পরপর আটবার যদি শিশু একই খাবার না খায়, তবেই বাতিল করবেন। শিশুকে খাইয়ে বমি করানো অত্যন্ত বদভ্যাস। যে কথাগুলো বলা হল তার সবই গত এক যুগের হু, ইউনিসেফ ও আইএপি’র বহু প্রামাণ্য গবেষণার সারাংশ।
২. সব খাবারই ভালো আবার সব খাবারই মাত্রাতিরিক্ত বা অতিরিক্ত মশলাদার হলে খারাপ। তাই সব রকম খাবারই মিলিয়ে মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে হবে, সেটাই হবে শিশুর সুষম খাদ্য। যা সহায়ক হবে শিশুর সর্বোত্তম বৃদ্ধি বিকাশে।
সাক্ষাৎকার: মৃন্ময় চন্দ

34
শহুরে আধুনিকাদের মধ্যেই কি ধূমপানের প্রবণতা বেশি?
হ্যাঁ, শহরে ধূমপানের প্রবণতা বেশি তো বটেই। তবে শুধু শহুরে আধুনিকাদের মধ্যেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও মেয়েদের মধ্যে ধূমপানের হার কম নয়। শহরের দিকে তাকালে দেখতে পাচ্ছি হাইস্কুল স্টুডেন্ট, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন ধূমপানের চল আছে, তেমন কর্পোরেট সেক্টরের মহিলাদের মধ্যেও ধূমপানের প্রবণতা আছে।
কিন্তু কেন মেয়েরা ধূমপান করেন বলে মনে হয়?
কেন করেন এর পিছনে কারণ অনেক কিছুই হতে পারে। শহরের মেয়েরা আধুনিকতা দেখাতে বা মানসিকভাবে এগিয়ে আছি কিংবা পুরুষের সমতুল্যতা দেখাতে গিয়ে ধূমপান বেশি করেন। আবার শুধুই ভালো লাগে বলেও অনেকে ধূমপান করেন। মেন্টাল, সাইকোলজিক্যাল আবার সোশ্যাল কারণও জড়িয়ে থাকতে পারে এই কেন’র সঙ্গে। তবে আমার মনে হয় কেন করেন, সেটা বড় কথা নয়— মেয়েরা যে ধূমপান করেন সেটাই সত্যি। আর এটাই ভাবনার বিষয়।
গ্রামীণ ক্ষেত্রেও তাহলে ধূমপানের চল রয়েছে?
অবশ্যই। ধূমপান মানে শুধুই নামী ব্র্যান্ডের দামি সিগারেট নয়। তাই সিগারেট না হলেও বিড়ি পান বা তামাকজাত দ্রব্য সেবনও হতে পারে। এহেন নেশার মাত্রা গ্রামাঞ্চলে যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
বর্তমানে কি ধূমপানের হার ক্রমবর্ধমান?
হ্যাঁ। ধূমপান অবশ্যই বেড়েছে। একটা ছোট্ট হিসাব দিই। পশ্চিমবঙ্গে প্রতি বছর ৭০-৮০ হাজার নতুন ক্যানসার রোগী দেখা যায়। নতুন এবং পুরানো মিলিয়ে এই সংখ্যাটা ছাড়িয়ে যায় ৩-৪ লক্ষ। আমাদের দেশে প্রতি বছর ১১ লক্ষ নতুন ক্যানসার রোগী পাওয়া যায় এবং নতুন পুরানো মিলিয়ে এই সংখ্যাটা ৩০-৪০ লক্ষ। এই পরিসংখ্যানটা যতটা সম্ভব দেওয়া গেলেও প্রান্তিক মানুষের মধ্যেও যে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা কত তা সঠিকভাবে অনেক সময়েই জানা যায় না। কারণ পরিসংখ্যান নেওয়ার মতো সুযোগ সুবিধাও সেখানে মেলে না। ফলে বোঝাই যাচ্ছে আসল সংখ্যাটা অনেক বেশি হবে।
ধূমপান নিয়ে শুনেছি অনেকের কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। ধূমপান করলে নাকি বুদ্ধি খোলে...?
একেবারেই সত্যি এটা। আশ্চর্যজনক যে মেয়েদের মধ্যে ধূমপানের বড় কারণ, অনেকে ভাবেন ধূমপান শরীরের জন্য ভালো। এটা ভেবেও অনেক মহিলাকে ধূমপান করতে শুনেছি যে, ধূমপান করলে নাকি শরীর ভালো থাকে, চিন্তাভাবনা ভালো হয় ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। ধূমপান থেকে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হয় না।
ধূমপানের ফলে মেয়েদের শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা কতটা?
অনেকটাই। প্রথমত ধূমপান যে বেড়েছে, তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমরা পাচ্ছি। এখন অনেক মহিলাই আমাদের কাছে আসেন ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য। আগে স্মোকিং রিলেটেড ক্যানসারের হার কম থাকলেও এখন সেটা ক্রমশ বেড়েছে। আর এর হার এতটাই যে এখন মহিলাদের ওরাল ক্যানসার, ভয়েস বক্স, লাং ক্যানসারে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। আর এত আলোচনা, সচেতনতার পরেও সেটা কমেনি এখনও খুব পর্যন্ত, এটাই দুশ্চিন্তার বিষয়।
আর কী কী ক্ষতি হতে পারে নিয়মিত ধূমপান থেকে?
অর্ধেকের বেশি ক্যানসারের প্রত্যক্ষ সংযোগ রয়েছে ধূমপানের সঙ্গে। ওরাল, লাং ক্যানসার, ভয়েস বক্স ক্যানসার ছাড়াও গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টিনাল ক্যানসার, ব্রেস্ট ক্যানসার এবং সার্ভাইক্যাল ক্যানসারও ধূমপানের সঙ্গে জড়িয়ে। তাই আমরা চিকিৎসকরা বারবার বলব, ধূমপান ত্যাগ করুন।
গর্ভাবস্থায় ধূমপানের প্রত্যক্ষ প্রভাব কতটা?
ক্যানসারের বাইরে এক্ষেত্রেও ধূমপান যথেষ্ট ক্ষতি করে বইকি। এই সময় মা এবং সন্তান উভয়ের জীবন এক সূত্রে জড়িয়ে, ফলে ধূমপান না করাই শ্রেয়। এই সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা দরকার।
প্যাসিভ স্মোকিং কি সমান ক্ষতিকর?
প্যাসিভ স্মোকিং, স্মোকিংয়ের থেকেও মারাত্মক। অনেক ঘরোয়া গৃহবধূ আমার কাছে এসেছেন যাঁদের লাং ক্যানসার হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে তাঁরা জীবনে সিগারেট খাননি। তাহলে তাঁদের কেন এই ক্যানসার হল? প্রথমত, জেনেটিক কারণে হতেই পারে। তার সঙ্গে দূষণ তো আছেই। সব মিলিয়ে তাঁর রোগের উৎস কোথায়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আলোচনা করে দেখলাম তিনি প্যাসিভ স্মোকিংয়ের শিকার।
তাহলে বাঁচার উপায়?
কেউ ধূমপান করলে সেখান থেকে সরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। এখন তো দেখেছি শহুরে জীবনে ছোট্ট আবাসে স্থানাভাব একটা অন্যতম সমস্যা। যেখানে স্মোকার স্বামী ধূমপান করছেন, তখন স্ত্রী যাবেন কোথায়? এইভাবে প্যাসিভ স্মোকিংয়ের শিকার মেয়েদের হতেই হয়। কিছু বলে উঠতে পারছেন না হয়তো। এটা একটা বিরাট ক্ষতি। আমাদের কাছেও খুব কষ্টকর হয়ে যায় মেনে নেওয়া। যখন দেখি একজন সুগৃহিণী জীবনে কখনও ধূমপান করেননি, ভাবতেও পারেন না নেশাজাত কোনও দ্রব্য সেবনের কথা, তাঁকে ক্যানসার আক্রান্ত হতে দেখতে তখন খুব খারাপ লাগে।
মেয়েদের ধূমপান করা কি তাহলে একেবারেই বন্ধ করা উচিত?
এই বিষয়টা খুব সেনসিটিভ। মেয়ে বলে আলাদা আইন বা নিয়ম আমরা আনতে চাই না। ইনডিপেনডেন্টলি একজন মহিলা পুরুষের সমকক্ষ, সমতুল্য হিসেবে সব কাজ করতেই পারেন। সেদিক থেকে তাঁকে শুধু মহিলা বলে. কোনও কাজে বাধা দেওয়ার যুক্তি নেই। কিন্তু বাধাটা অন্য জায়গায়। সেটা আবার শুধু একজন মহিলাকে নয়, একজন পুরুষকেও ধূমপান করতে নিষেধ করা দরকার। তামাক সেবন, স্মোকিং বন্ধ হওয়াই উচিত, এর থেকেই ক্যানসারের আশঙ্কা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
আইন করে ধূমপান বন্ধ করা সম্ভব?
আইন করেই শেষ নয়, আইন মানা হলে সম্ভব। কারণ আইন তো রয়েছেই। কেন্দ্রীয় সরকারের কোটপা (সিগারেট অ্যান্ড আদার টোব্যাকো প্রডাক্ট অ্যাক্ট ২০১৫) অ্যাক্ট অনুযায়ী পাবলিক স্পেসে ধূমপান নিষিদ্ধ, স্কুলের ১০০ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করা যাবে না। জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টে এই নির্দেশিকাও আনছে স্কুল শিক্ষার্থীদের তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে ৭ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডও হতে পারে। এটা আমরা সমর্থন জানাচ্ছি। তবে মনে রাখতে হবে আইন মেনে চলতে হবে।
সচেতনতা ছাড়া তো তা সম্ভব নয়?
অবশ্যই। সচেতনতাই পারে একজন সাধারণ নাগরিককে আদর্শ নাগরিক করে তুলতে। আইন তো রয়েছেই পাবলিক স্পেসে স্মোক করা যাবে না। অথচ আমরা দেখি একজন রাস্তায় ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে তাকে পুলিশ জরিমানা দিতে বাধ্য করেন। এটা স্মোকিংয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় না।
আইন অনুসারে স্কুল কলেজেও ধূমপান করা যায় না, অথচ অনেকেই করে। আবার এই একই শিক্ষার্থীকে দেখা যায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধূমপান করা যাবে না বলে করছে না।
সে সেখানে আইনটা মেনে চলছে কারণ সে বাধ্য।
একই ব্যক্তি একই আইনের দু’ক্ষেত্রে দু’ধরনের প্রয়োগ করছে, অথচ ধূমপানের বিরুদ্ধে না হয় নজরদারি, না হয় ফাইন। তাই আমার মতে আইনের যথাযথ প্রয়োগটা জরুরি।
অনেকে নাকি চেষ্টা করেও এ নেশার হাত থেকে মুক্তি পান না?
এই কথাটা আংশিক সত্যি। আংশিক বললাম কারণ চেষ্টা না করলে ছাড়া সম্ভব নয়। টোব্যাকো এমন একটা নেশা যা আসক্তি তৈরি করে।
একবার এই নেশা শুরু করলে ছাড়াটা সত্যি অত সহজ নয়। ছাড়তে গেলে মানসিক জোর লাগে। এমন অনেককে আমি চিনি যাঁরা বহুবার সিগারেট ছেড়েছেন, পুনরায় ধূমপান শুরু করেছেন।
বিভিন্ন দেশে শুধু মেয়েদের জন্য ধূমপান ব্যানড হয়েছে। তেমন কিছু এদেশে তো হয়নি?
না হয়নি। কেউ ভাবতেই পারেন আইনত টোব্যাকো আমাদের দেশে ব্যানড হয়নি, তাহলে কেন ধূমপান করব না! যদিও গুটখা ব্যানড হয়েছে। সেটা সেবন করা মানে আইন ভাঙা, ফলে অনেকে গুটখা সেবন করেন না বা কম করেন। আবার আইনকে তোয়াক্কা না করা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু এমন কিছু এখনও পর্যন্ত ধূমপানের ক্ষেত্রে হয়নি।
আগেই বলেছি ক্ষতিটা শুধু মেয়েদের নয়, ছেলে-মেয়ে সবার। তাই সবাইকেই সচেতন হতে হবে, ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। মেয়েদের খেয়াল রাখতে হবে জেনেশুনে নিজেদের ক্ষতি করলে কেউ বাধা হয়তো দিতে পারে না, কিন্তু জেনেবুঝে অন্যের ক্ষতি করার অধিকার কারওর নেই।
ধূমপান থেকে তো পরিবেশেরও সমান ক্ষতি হচ্ছে?
এমনিতে তো দূষণ বাড়ছে, কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনো অক্সাইড বাড়ছে। তার সঙ্গে এই ধূমপান। রাস্তাঘাটে, পাবলিক স্পেসে, এমনকী কর্পোরেট অফিসেও ধূমপান ক্রমশ বাড়ছে। বছর ১০-১২ আগেও গৃহিণীদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারের রোগী অতটা পেতাম না, যেটা এখন খুব বেড়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কিন্তু বেশ জটিল। রাজ্য সরকারকেও অনুরোধ করছি, আইনের সঠিক প্রয়োগের দিকটা যেন উপেক্ষিত না হয়।
চিকিৎসার দ্বারা ধূমপান ছাড়ানো কি সম্ভব?
এখন নিকোটিন প্যাচ ব্যবহার করে ধূমপান ছাড়ার পদ্ধতি রয়েছে। তবে আমি চিকিৎসক হিসেবে মনে করি, ওইভাবে জোর করে ধূমপান ছাড়ানো সম্ভব নয়। যিনি ধূমপায়ী তাঁকে বুঝতে হবে, এটা শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। তাঁর একার ক্ষতিই শুধু নয়, তাঁর পরিবার-পরিজন, তাঁর কাছাকাছি যাঁরা থাকেন তাঁদেরও ক্ষতি। মানসিক জোর থেকেই আর ধূমপান করব না ভেবে ছেড়ে দিতে হবে।
মনে রাখবেন, তামাকের অন্য নাম ক্যানসার। নানা ভাবে এটা খাওয়া যায়। তামাক চিবিয়ে, প্যাকেটজাত নানা নেশার দ্রব্য কিনে একসঙ্গে অনেকে খান। তামাক থেকে কিন্তু কারও উন্নতি হয়নি একমাত্র সেই উৎপাদক সংস্থা ছাড়া। তাই ধূমপান ছাড়ুন, সুস্থ থাকুন।
সাক্ষাৎকার: শেরী

35

শরীর ও স্বাস্থ্য
হোমিওপ্যাথির রহস্য উন্মোচনে...

প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথির রহস্য
উত্তর: স্যামুয়েল হ্যানিম্যান প্রবর্তিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দু’শতাব্দীরও বেশিদিন ধরে চলে আসছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ওষুধকে অনেক সময় Potentisation-এর নামে এতখানিই ‘লঘু’ করা হয় যে তাতে মূল ওষুধের কোনও অণু -পরমাণুরও থাকা সম্ভব নয়। অর্থাৎ কিনা রাসায়নিক বিচারে এরা জল ছাড়া আর কিছু নয়। অথচ এরা দিব্যি ওষুধের মতো কাজ করে। শুধু তাই নয়, বহু ক্ষেত্রে অত্যাশ্চর্য ফল দেয়। অন্য ওষুধকেও ছাড়িয়ে যায়। এই হল রহস্য। যার সুষ্ঠু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আজও অধরা।
প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথি নিয়ে সন্দেহ
উত্তর: অনেকেই সন্দেহ করেন যে, হোমিওপ্যাথিতে রোগ সারে মনের কারণে, আর হোমিওপ্যাথি কৃতিত্ব নিতে চায়। হোমিওপ্যাথি একটা বুজরুকি। এটাকে আইন করে বন্ধ করা দরকার। কিন্ত দু’শো বছর ধরে কোটি কোটি মানুষের রোগারোগ্যের অস্ত্রকে এভাবে ফুৎকারে নস্যাৎ করা যায় না, বিশেষ করে হোমিওপ্যাথি যখন শিশু, পশু এবং উদ্ভিদেরও উপকারে আসে, যেসব ক্ষেত্রে ‘এটা খেলেই আমি সেরে যাব’ এরকম মননের কোনও ব্যাপার থাকে না। এছাড়া আরও অন্যান্য যুক্তির সাহায্যে মানসিক তত্ত্বকে খারিজ করা যায়। কিন্তু, আসল প্রয়োজন হল দুটি মৌলিক প্রশ্নের বৈজ্ঞানিক উত্তর।
প্রশ্ন: দুটি মৌলিক প্রশ্ন
প্রশ্ন দুটি হল: ১. অতিমাত্রায় লঘুকৃত একটা ওষুধ কীভাবে অন্যটার থেকে আলাদা হয়। ২. এদের ভেষজগুণের চাবিকাঠিটা কোথায়, অর্থাৎ কীভাবে রোগ সারায়।
দুশো বছর ধরে কোটি কোটি রোগীর ক্ষেত্রে নিদানিক সাফল্য সত্ত্বেও এই দুটো মৌলিক প্রশ্নের সদুত্তরের অভাবে হোমিওপ্যাথি আজও বৈজ্ঞানিক তো বটেই এমনকী ইপ্সিত সামাজিক স্বীকৃতিও পায়নি। বর্তমান কালের নিদানিক সাফল্যের পরিসংখ্যান এই মৌলিক প্রশ্নগুলোকে পাশ কাটিয়ে যায়। ফলে, স্বীকৃতিও এদের পাশ কাটিয়ে যায়। তাই এটা পরিষ্কার যে, প্রশ্নগুলোর সদুত্তর ছাড়া এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়।
প্রথম প্রশ্নের উত্তর
উত্তর: এটা লক্ষ্য করার বিষয় যে, অতি লঘুকৃত ওষুধগুলো রাসায়নিক বিচারে জল ছাড়া আর কিছু না হলেও এরা কিন্তু জীবদেহে কাজ করে মূল ভেষজ ও তার পোটেন্সি অনুসারে। যেমন, নেট্রাম মিউর-৩০সি ও নেট্রাম সালফ-৩০সি পৃথক পৃথক ফল দেয়। সাইলিসিয়া-৩সি এবং সাইলিসিয়া-২০০সি পৃথকভাবে কাজ করে। তাই এটা বলা যায় যে, ‘কিছু একটা’ ব্যাপার এদের পৃথক করে। এখন কথা হল কী সেই ‘কিছু একটা’। কোনও উদ্ভট তত্ত্বের আমদানী না করেও যদি দেখা যায় যে জলের এমন কোনও ক্ষমতা আছে যার দ্বারা সে মূল ভেষজ ও তার পোটেন্সি জ্ঞাপক বার্তাকে কোনও আণবিক কাঠামোগত বৈশিষ্ট্যের দ্বারা ধরে রাখতে পারে, তাহলে জলের বিভিন্ন আণবিক অবস্থাকে সেই ‘কিছু একটা’ বলে চিহ্নিত করা যায়। জলের তিনটি অসামান্য গুণ এই কাজটি করতে সক্ষম। গুণ তিনটি হল—(১) স্বাভাবিক তাপমাত্রায় জলের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফখণ্ড বা কেলাস ভাসতে দেখা যায়। (২) যাদের কাঠামো অসংখ্য প্রকারের হতে পারে এবং (৩) আকারপ্রকার বিভিন্ন রকমের বস্তুকণা দ্বারা প্রভাবিত হয়।
এখানে একটা কথা বলা দরকার যে, জলের এই সব গুণের পরিচয় পাওয়া গেছে ১৯৬৪-২০১৫ সাল পর্যন্ত নানা পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে।
এর থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, হোমিওপ্যাথির অতি লঘুকৃত বস্তুগুলো রাসায়নিক বিচারে জল ছাড়া আর কিছু না হলেও আণবিক কাঠামোর দিক থেকে এরা একে অন্যের থেকে পৃথক। এখন দেখতে হবে এদের কোনও ভেষজ গুণ আছে কি না।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর
উত্তর: জলের আণবিক কাঠামো ভেষজ ও তার পোটেন্সিভিত্তিক, আর জৈব অণুর গঠন বিভিন্ন কারণে একটু-আধটু পালটাতে পারে, কিন্তু সেটা বেশি হয়ে গেলে সেটা তার রুগ্ণ অবস্থা সূচিত করে। এছাড়াও জলের আর একটি অসামান্য ধর্মের কথা আমাদের বোধের মধ্যে রাখতে হবে। সেটা হল—সব জৈব অণুই জলের অণুদের ফাঁকে ফাঁকে খাপ খেয়ে যায়, তা জল তরল বা কঠিন যে অবস্থারই হোক না কেন। এটা না হলে ফ্রিজে খাবারদাবার সংরক্ষণ করা যেত না। পক্ষান্তরে, যখন কোনও অণু জলের অণুদের ফাঁকে ফাঁকে খাপ খায় না তখন জল জমে বরফ হওয়ার সময় ওই অণুগুলোকে গুঁড়িয়ে দেয় এবং জলের বাইরে বার করে দেয়। এ জন্যই উত্তর মহাসাগরের বরফ লবণমুক্ত। অতএব, জলীয় অণু উপযুক্ত আকৃতির হলে তারা চাপ দিয়ে একটু-আধটু পালটে জৈব অণুর আকৃতিকে তাদের সুস্থস্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারে, যদি আকৃতির গরমিল তেমন বড় মাপের না হয়। বাস্তবেও দেখা যায় যে, ছোট ছোট বরফের কেলাসের সাহায্যে ক্ষতিগ্রস্ত জৈব অণুদের সারিয়ে তোলা যায়।
কাঠামোর মিল এবং ছাঁচ-নীতি জীবের বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে একথা জীববিজ্ঞানে আজ সুবিদিত। স্বাস্থ্য রক্ষা তথা রোগ আরোগ্যে জলের আণবিক কাঠামোর মাধ্যমে এই নীতির ভূমিকা থাকা খুবই স্বাভাবিক। এও দেখা যায় যে, রুগ্ণ জীবকোষের অন্তর্গত জলের ছাঁচ/ কাঠামোগুলো জৈব অণুদের রুগণ ছাপ গ্রহণ করে ভাঙাচোরা অবস্থা পায়। বিপরীতভাবে, আকৃতির গরমিল তেমন বড় মাপের না হলে জলের উপযুক্ত ছাঁচ বা কাঠামো যে রুগণ ঩জৈব অণুদের চাপ দিয়ে তাদের সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে এর মধ্যেও কোনও অস্বাভাবিকতা নেই।
সিদ্ধান্ত
উত্তর: এ থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, অতি লঘুকৃত ওষুধের ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষভাবে গঠিত জলের আণবিক ছাঁচ/ কাঠামোই ওষুধের আসল রূপ। আর নিম্ন শক্তির ওষুধে তো জল ছাড়াও মূল রাসায়নিক বস্তুর ছাঁচ বা কাঠামো থাকছেই। ফলে, কাঠামোগত মডেলের সংজ্ঞা দাঁড়ায়: রোগ নিরাময়ের ক্ষমতাযুক্ত বস্তুই ওষুধের মান্যতার অধিকারী এবং জলের বা অন্য কোনও রাসায়নিক বস্তুর আণবিক ছাঁচ বা কাঠামোই তার ভেষজগুণের উৎস।
প্রশ্ন: আরও কিছু
উত্তর: উপরের বৈজ্ঞানিক তথ্য ছাড়াও কয়েকটি সাধারণ ব্যাপারও কাঠামোগত মডেলকে সমর্থন করে। যেমন, রাসায়নিক ফর্মুলাই যদি ওষুধ নির্ণয় করত, তাহলে কার্বোএনিমেলিস এবং গ্রাফাইটিস দুটো আলাদা ওষুধ হত না, কারণ রাসায়নিক বিচারে দুটোই কার্বন। এদের পার্থক্যের উৎস হল, এদের আণবিক বিন্যাসের পার্থক্য। এক্স-রে নামক ওষুধটি গোড়া থাকেই রাসায়নিক পরিচয়বিহীন। জলের ওপর আরোপিত আণবিক বিন্যাস ছাড়া অন্য কিছুই এর ভেষজ গুণের উৎস হতে পারে না। প্রখর তাপে বা সূর্যালোকে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ হয়ে যায়। এর গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা এই হতে পারে যে, তাপের প্রভাবে পরিচয় বহনকারী ছাঁচ বা কাঠামোগুলো গলে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটায়। সংরক্ষণকারী বস্তু (যেমন, সুরাসার) ছাড়া কেবলমাত্র জলে গুলে দেওয়া শক্তিকৃত ওষুধের গুণ তিন-চার দিনের বেশি থাকে না। কারণ, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, জলের অন্তর্গত কেলাসগুলো দীর্ঘদিন থাকে না, আপনাআপনি ভেঙে যায় এবং আবার নতুনভাবে গড়ে ওঠে।
সাধারণক্ষেত্রেও কাঠামোগত ধারণা যে বৈধতা পেতে পারে তার যেন একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এটা সুবিদিত যে ব্যাকটেরিয়াকে মারার ব্যাপারে অ্যান্টিবায়োটিক যে নীতিতে কাজ করে, তা কাঠামোকে অবলম্বন করেই। ব্যাকটেরিয়ার বিশেষ অংশে গিয়ে অ্যান্টিবায়োটিকের অণু কাঠামোগতভাবে তালার সঙ্গে চাবির মতো আটকে যায় এবং তার জৈব ক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে। জলের আণবিক কাঠামোরও এই ধরনের ভূমিকা থাকা স্বাভাবিক। সাধারণত রাসায়নিক দৃষ্টিতেই ওষুধের ব্যাখ্যা করা হয়। হোমিওপ্যাথি আমাদের বাধ্য করে কাঠামোগত দৃষ্টিকোণ থেকে ওষুধকে বোঝার জন্য। হয়তো একদিন কাঠামোগত দৃষ্টিকোণ থেকেই সমস্ত ওষুধকে বোঝার দিন আসবে।

36


ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এটা কেন করলেন? আচমকা বাংলাদেশ থেকে আকাশ পথে পণ্য পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা। ঢাকা থেকে লন্ডন যাত্রী ছাড়া আর সব কিছু যাবে জাহাজে, বিমানে নয়। তা কী করে হয়! এত সময় কোথায়। রোজকারের সব্জির সমুদ্রযাত্রা সম্ভব নয়। পচে নষ্ট হবে। বাংলাদেশ থেকে ফি-বছর এক হাজার কোটি টাকার সব্জি যাচ্ছে বিদেশে। তার অর্ধেক যায় যুক্তরাজ্যে। রফতানি হয় বলে কৃষকরা ভাল দামও পান। সেটা বন্ধ হলে তাঁদের তো মাথায় হাত। লোকসান সামলানোর বিকল্প পথ কোথায়? অতিরিক্ত সব্জি রাস্তায় ফেলে হা-হুতাশ করা ছাড়া? ক্যামেরন শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির অভিজ্ঞ নেতা। রাজনীতিতে শ্রমিক-কৃষকের ভূমিকা তাঁর জানা। তাঁর সিদ্ধান্তে শ্রমিকরাও মরবে। পোশাক শিল্প প্রমাদ গুনবে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ভীষণ ভাবে দাঁড়িয়ে রফতানি বাণিজ্যের ওপর।

বাংলাদেশকে ব্যানানা রিপাবলিক বলা যেতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু পণ্য রফতানির উপর অর্থনীতি নির্ভরশীল। সেখানে আঘাত এলে সইবে কী করে? নিষেধাজ্ঞার কারণও একেবারেই স্পষ্ট নয়। বলা হচ্ছে, নিরাপত্তার অভাব। পণ্যে আবার নিরাপত্তা কী? যে দেশ পণ্য নেবে, তারা তো দেখে বুঝে হিসেব করে নেবে। মাঝখানে খোয়া গেলে দায় তাদের নয়। তারা চেপে ধরবে রফতানিকারক দেশকে। বিমানের চেয়ে জাহাজে কি নিরাপত্তা বেশি? ঢেউ ভেঙে দীর্ঘ সফরে পণ্য এদিক সেদিক হওয়ার সুযোগ তো আরও অনেক বেশি। সব ঠিকঠাক থাকাটাই আশ্চর্যের।

সব পণ্যেই বিমা করা থাকে। মাঝখানে হারালে দায় বিমা কোম্পানির। বাংলাদেশের বিমা কোম্পানি সেদিক থেকে যথেষ্ট দায়বদ্ধ। নিরাপত্তা নিয়ে যদি প্রশ্নই ওঠে, বিমান বন্দরে নজরদারি বাড়ালেই হয়। তারও ব্যবস্থা হয়েছে। ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে প্রতি দিন সেখানকার অফিসে যাচ্ছেন অসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। সঙ্গে থাকছেন সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় আমেরিকাও উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে তারা প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে। বাংলাদেশের পণ্য যে সব দেশে যায় তারা সবাই যদি সন্দিহান হয়ে ওঠে তাহলে ক্ষতি আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন

ওরা ভয়ে চুপ

 

এর আগে অস্ট্রেলিয়াও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তাতে রফতানি বাণিজ্যে তেমন প্রভাব পড়েনি। তাদের বাজার খুব ছোট। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় বিপদ অনেক। বাংলাদেশের পোশাক রফতানির ১২ শতাংশ আয় যুক্তরাজ্য থেকে। গত অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ৩০০ কোটি ডলারের পোশাক। চলতি বছরে এর মধ্যেই আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। রফতানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ। নিষেধাজ্ঞার কারণে লন্ডনের রুট বদলে অন্য দেশে পণ্য পাঠাতে হবে সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইল্যান্ড, দুবাই দিয়ে। তাতে খরচ অনেক বাড়বে। লাভের গুড় পিঁপড়ে খাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মনে করছেন, নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। তাঁর আশার ভিত্তি কী তিনি বলেননি। মন্ত্রীর কথায় উদ্বেগ কমেনি। রফতানি এক দিন বন্ধ থাকা মানে ব্যাপক ক্ষতি। রফতানি বাণিজ্যে শুধু বিদেশি মুদ্রা আয়ই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে অসংখ্য মানুষের অন্নসংস্থান। ব্রিটেন কী সে কথা ভাববে না!


37
প্রতি ১০ হাজার নবজাতকের মধ্যে দুই থেকে পাঁচজন এই রোগ নিয়ে জন্মাতে পারে
পথেঘাটে প্রায়ই শরীরের তুলনায় অনেক বড় মাথাবিশিষ্ট শিশু দেখা যায়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে সুচিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের শিশুকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি ও ব্যবসা করতে দেখা যায় আমাদের দেশে; রয়েছে নানা কুসংস্কারও। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যার নাম হাইড্রোকেফালাস। ‘হাইড্রো’ অর্থ পানি আর ‘কেফালাস’ হলো মাথা। মস্তিষ্কে পানি জমে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। আর প্রতি ১০ হাজার নবজাতকের মধ্যে দুই থেকে পাঁচজন এই রোগ নিয়ে জন্মাতে পারে।
কেন হয় মাথা মোটা?
আমাদের মস্তিষ্কের কেন্দ্রে রয়েছে কতগুলো গহ্বর বা ভেন্ট্রিকল, যেখান থেকে প্রতিদিন ৪৫০ সিসি পরিমাণ সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড বা মস্তিষ্কের বিশেষ তরল তৈরি হয়। এর মধ্যে ৩০০ সিসি পানি নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হয়ে রক্তে মিশে যায় আর বাকি পানিটুকু মস্তিষ্কের ভেতর-বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। যদি কোনো কারণে এই পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে যায় বা অতিরিক্ত পানি তৈরি হতে থাকে, তখন তা জমে মাথা বড় হয়ে যায়। এই পানির চাপে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বা পাতলা হয়ে যেতে থাকে।
যেসব কারণে পানি চলাচলের পথ সরু বা বন্ধ হতে পারে, সেগুলো হলো জন্মগত ত্রুটি, মাতৃগর্ভে থাকাকালে সংক্রমণ, মস্তিষ্কের সংক্রমণ বা মেনিনজাইটিস, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী কোনো টিউমার, সিস্ট ইত্যাদি।
কখন সতর্ক হবেন?
শিশুদের মাথার বিজ্ঞানসম্মত মাপকে বলা হয় ওএফসি বা অক্সিপিটোফ্রন্টাল সারকামফেরেন্স। জন্মের পর এই ওএফসি থাকে ৩৭ সেন্টিমিটার, তিন বছরে ৫২ সেন্টিমিটার। এই মাপ অস্বাভাবিক বেশি হলে হাইড্রোকেফালাস হয়েছে বলে ভাবতে হবে। এ ছাড়া মাথার আলট্রাসনোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যান অথবা এমআরআই পরীক্ষাও লাগতে পারে। এ ধরনের শিশুদের একই সঙ্গে হদ্যন্ত্রের ত্রুটি ও পিঠের নিচে মেনিনগোসিল থাকে।
চিকিৎসা কী?
পানিপ্রবাহের বিকল্প ব্যবস্থা করা বা পানি বের করাই হলো মূল চিকিৎসা। এর জন্য দুই ধরনের পদ্ধতি আছে—ভিপি সান্ট অপারেশন ও এন্ডোসকোপিক থার্ড ভেন্ট্রিকুলোস্টমি। চিকিৎসা না করা হলে পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতা হতে পারে, যেমন: খিঁচুনি, বুদ্ধিবৃত্তি হ্রাস, স্নায়ু দুর্বলতা ইত্যাদি। ১৮ মাস বয়সের আগেই অথবা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস বা মস্তিষ্ক ক্ষয় হয়ে যাওয়ার আগেই অস্ত্রোপচার করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।
প্রতিরোধ
প্রসবকালে সুস্থতা, নিয়মিত চেকআপ ও নিরাপদ প্রসব এ ধরনের ত্রুটির সংখ্যা অনেকটাই কমাতে পারে। নবজাতকের সঠিক যত্ন, শিশুদের মেনিনজাইটিসের দ্রুত চিকিৎসা দরকার। সবচেয়ে বড় কথা, এ ধরনের অস্বাভাবিক আকৃতির মাথাসম্পন্ন শিশুকে নিয়ে কুসংস্কারে আক্রান্ত না হয়ে অতি দ্রুত বিশেষায়িত চিকিৎসার শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।

38
দু’বেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করার তাগিদে কোনও রকম স্বাস্থ্য সচেতনতা ছাড়াই ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলিতে নিজেদের ডিম্বাণু বেচছেন তেলেঙ্গনার কলেজ ছাত্রীরা। হামেশাই তাঁরা এই সব ক্লিনিকগুলোর দালালদের খপ্পরে পড়ছেন। তাঁরা জানছেনও না দিনের পর দিন কোনও রকম যথাযথ পদ্ধতি এবং প্রোটেকশন ছাড়াই এ ভাবে ডিম্বাণু বেচে দেওয়ার ফলে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে তাঁদের স্বাস্থ্যে!

এই ছাত্রীরা মূলত তেলেঙ্গনার নালগোন্ডা জেলার দেবরকোন্ডা, আদিবাসী অধ্যুসিত অঞ্চল মেহবুব নগর, ওয়ারানঙ্গান এবং করিমনগরের বাসিন্দা। এমনিতেই দারিদ্র এই অঞ্চলের মানুষগুলোর নিত্যদিনের সঙ্গী। তার উপর টানা খরায় আরও বেড়েছে দুর্দশা। ফলে সেখানকার অল্পবয়সী মেয়েদের সহজেই লোভ দেখিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে এই পেশায় নিয়ে আসছে বিভিন্ন ফার্টিলিটি ক্লিনিকের দালালরা।

তবে ডিম্বাণু দাত্রীদের নির্বাচনের ব্যাপারে বেশ ‘নাক উঁচু’ ওই ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলি। গায়ের রং, শারীরিক গঠন, সুস্থতা এবং ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে চলছে ঝাড়াই বাছাই। কম সময়ের মধ্যে বেশি সংখ্যক ডিম্বাণু পাওয়ার লোভে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই ডিম্বাণু দাত্রী দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন হরমোনাল ইঞ্জেকশন। খাওয়ানো হচ্ছে ওষুধ।

কিন্তু, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা এই পেশা বেছে নিচ্ছেন তাঁদের উপার্জন কত? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক কলেজ পড়ুয়া জানিয়েছেন, মাস গেলে তাঁর পকেটে ঢোকে মাত্র ১০ হাজার টাকা।

ম্যাক্সকিউর হাসপাতালের চিকিত্সক অজ্ঞানি মনুজা জানিয়েছেন, অবৈজ্ঞানিক ভাবে লাগাতার এই রকম হরমোন থেরাপির ফলে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে এই ছাত্রীদের শরীরে। ভবিষ্যতে তাঁদের মা হওয়ার সময় প্রাণঘাতী সমস্যাও হতে পারে। কিন্তু, কী ভাবে মিটবে এই সমস্যা? তার কোনও জবাবই এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

39

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ১০ প্রাকৃতিক দুর্যোগ
৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১৫:২০:৪৮
e e e print
Tsunami

একবিংশ শতকে প্রযুক্তিতে, জীবনযাত্রার মানে আমরা এগিয়ে গিয়েছি কয়েকশ ধাপ। কিন্তু প্রকৃতির সামনে এখনও আমরা হেরো। তার খেয়ালের কাছে নিতান্তই অসহায় আমরা। গ্যালারিতে রইল এমনই সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হদিস, যা বারবার প্রমাণ করে তাঁর মর্জির কাছে  আজও কত তুচ্ছ আমরা।
আরও দেখুন: বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ১০ সেতু

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ১০ সেতু

ক্যারিক-এ-রেদে রোপ ব্রিজ, উত্তর আয়ারল্যান্ড

ছবি দেখলেই ভয় শিউরে উঠতে হয়। অথচ এই ব্রিজ পারাপার করেই বছরের পর বছর জীবন যাপন করছেন এই সব এলাকার মানুষ জন। দেখে নিন বিশ্বের এমনই ১০ বিপজ্জনক ব্রিজের ছবি।



41

ব্রেইন সিগনালে চলবে গাড়ি!
 
মস্তিষ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন গাড়ির প্রোটোটাইপ নির্মাণ করছেন চীনের তিয়ানজিয়ানের একদল গবেষক। মস্তিষ্কের শক্তি কাজে লাগিয়ে গাড়িটি চালানো যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
 
চীনের নানকাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ গবেষকরা তাদের চিন্তাকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য দুই বছর ধরে কাজ করেছেন। ব্রেইনের সিগনাল পড়তে পারে এমন একটি যন্ত্র মাথায় পড়ে তরঙ্গের মাধ্যমে গাড়িটি থামানো, সামনে আগানো, পেছনে যাওয়ার মতো কমান্ড দেয়া যাবে।
 
নানকাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ঝ্যাং ঝাও জানিয়েছেন, ১৬টি ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাম (ইইজি) সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে গাড়িটির চালকের হেডসেটে। গাড়িটির কম্পিউটার ইইজি সেন্সরের মাধ্যমে পাওয়া ব্রেইন সিগনাল বিশ্লেষণ করে তা অটোমোটিভ কমান্ডে অনুবাদ করে।
 
পঙ্গুত্বের শিকার ব্যক্তিদের গাড়ি চালানোর সুযোগ করে দেয়ার চিন্তা থেকেই এই ‘ব্রেইন পাওয়ার্ড কার’ প্রকল্পের শুরু বলে জানিয়েছেন নানকাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডুয়ান ফেং।
 
এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে চীনের বিজ্ঞানীদের এই অভিনব প্রযুক্তি। ব্রেইন সিগনাল দিয়ে গাড়ি সোজা লাইনে চালাতে সফলতার কথা জানিয়েছেন তারা।
 
তবে এখনই এই প্রযুক্তি নির্ভর গাড়ির বাণিজ্যিক উত্পাদনের কোনো পরিকল্পনা করছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা। খবর: রয়টার্স।

42
আজকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে নাজিল হওয়া আল কোরআনয়ের বিশ্লেষন করে মানুষ মঙ্গল গ্রহ পর্যন্ত পৌঁছেছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ১৪০০ বছর আগে মাছি প্রসঙ্গে যে কথাটি বলেছিলেন তা আমাদের আধুনিক বিজ্ঞানও মেনে নিয়েছে। বুখারী ও ইবনে মাজাহ হাদীসে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন
:
ﺇﺫﺍ ﻭَﻗَﻊَ ﺍﻟﺬُّﺑﺎﺏُ ﻓِﻲ ﺇﻧَﺎﺀِ ﺃَﺣَﺪِﻛُﻢْ ﻓَﻠْﻴَﻐْﻤِﺴْﻪُ ﻓَﺈﻥَّ
ﻓِﻰ ﺃﺣَﺪِ ﺟِﻨَﺎﺣﻴْﻪِ ﺩَﺍﺀً ﻭَﻓﻰ ﺍﻟْﺄﺧَﺮِ ﺷِﻔﺎﺀ ( ﺭﻭ
ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ)

অর্থ : যদি তোমাদের কারো পাত্রে মাছি পতিত হয় সে যেন উক্ত মাছিটিকে ডুবিয়ে দেয়। কেননা তার একটি ডানায় রোগ জীবানু রয়েছে, আর অপরটিতে রয়েছে রোগনাশক ঔষধ”(বুখারী)।

আমাদের মাঝে এমন কি কেউ আছে যে উক্ত রোগের জীবানুগুলো দেখেছে? আমাদের কেউ কি উক্ত রোগ নাশক ঔষধ অবলোকন করেছে? অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : নিশ্চয়ই তা রয়েছে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। সেখানে রোগ রয়েছে মানুষ তা জানতো না। তারা দেখতে পায়, মাছি তার দুই ডানা দিয়ে উড়ে যায়। কিন্তু এ বিষয়ে তারা কিছুই জানতো না যে, তার
ভিতরে কল্যাণ রয়েছে, না অকল্যাণ রয়েছে।

জ্ঞান বিজ্ঞানের যখন অগ্রগতি হলো, যখন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস জীবানু সম্পর্কে জ্ঞানের অগ্রগতির মাধ্যমে বর্ণিত হচ্ছে যে, মাছি মানুষের শত্রু“, সে রোগ জীবানু বহন করে এবং স্থানান্তরিত করে। মাছির ডানায় রোগ জীবানু রয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই যদি হয় তাহলে কিভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোগ জীবানু বহনকারী মাছিকে ডুবিয়ে নেয়ার আদেশ করলেন?

এ বিষয়ে কিং আব্দুল আজীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উস্তাদ ডক্টর ওয়াজিহ বায়েশরী এই হাদীসের আলোকে মাছিকে নিয়ে কয়েকটি পরীক্ষা চালান। জীবানুমুক্ত কিছু পাত্রের মাধ্যমে মাছির বাজার থেকে কয়েকটি মাছি ধরে নিয়ে জীবানুমুক্ত টেষ্ট টিউবের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখেন। তারপর নলটি একটি পানির গ্লাসে উপুড় করেন। মাছিগুলো পানিতে পতিত হওয়ার পর উক্ত পানি থেকে কয়েক ফোটা পানি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন যে, সেই পানিতে অসংখ জীবানু রয়েছে।

তারপর জীবানুমুক্ত একটি সূঁচ দিয়ে মাছিকে ঐ পানিতেই ডুবিয়ে দেন। তারপর কয়েক ফোটা পানি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন যে, সেই পানিতে আগের মত আর জীবানু নেই, বরং কম। তারপর আবার ডুবিয়ে দেন। তারপর কয়েক ফোটা পানি নিয়ে আবার পরীক্ষা করেন। এমনি ভাবে কয়েকবার পরীক্ষা করে দেখেন যে, যত বার মাছিকে ডুবিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন ততই জীবানু কমেছে অর্থাৎ ডক্টর ওয়াজীহ এটা প্রমাণ করে দিখিয়েছেন যে, মাছির একটি ডানায় রোগ জীবানু রয়েছে এবং অপরটিতে রোগনাশক ঔষধ রয়েছে। সৌদী আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত অষ্টম চিকিৎসা সম্মেলনে কানাডা থেকে দু’টি গবেষণা-রিপোর্ট পাঠিয়েছিল যাতে বর্ণিত ছিল, মাছিতে এমন কোন বস্তু রয়েছে যা জীবানুকে ধ্বংস করে দেয়। শাইখ মোস্তকা এবং শাইখ খালীল মোল্লা এই বিষয়ে জার্মান ও ব্রিটেন থেকে রিসার্চগুলো ধারাবাহিক সংগ্রহের মাধ্যমে একটি বই বের করেছেন যার মূল বিষয় ছিল :
ﻓﺈﻥ ﻓﻰ ﺃﺣﺪ ﺟﻨﺎﺣﻴﻪ ﺩﺍﺀً ﻭَﻓﻰ ﺍﻟْﺂﺧﺮ ﺷﻔﺎﺀ
(ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ )

অর্থঃ নিশ্চয়ই মাছির একটি ডানায় রয়েছে রোগ, আর অপরটিতে রয়েছে রোগ নাশক ঔষধ। (বুখারী)

মাছি যখন কোন খাদ্যে বসে তখনযে ডানায় জীবানু থাকে সে ডানাটি খাদ্যে ডুবিয়ে দেয়। অথচ তার অপর ডানায় থাকে প্রতিরোধক ভাইরাস। যদি মাছিকে ডুবিয়ে দেয়া হয়
তাহলে প্রতিরোধক ভাইরাস খাদ্যের সঙ্গে মিশে মারাত্মক জীবানুগুলিকে ধ্বংস করে দেয় এবং খাদ্য স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য অনুকুল থাকে। নতুবা এই খাদ্যই জীবানুযুক্ত হয়ে মানব ধ্বংসের কারণ হতে পারে। সেই চৌদ্দশত বছর পূর্বে এই ক্ষুদ্র জীবানু দেখার শক্তি মানুষের ছিল না। অথচ রাসূল (স:) সেগুলোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং সে সম্পর্কে কথা বলেছেন এবং ঐ বিপদজনক দিক বর্ণনা করেছেন যা আমাদের স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকারক। সেই জাহেলী যুগে এই আশ্চায্যিত তথ্য কে তাঁকে জানিয়ে দিলেন? এটা কি নবীজির নবুয়াতের প্রমাণ রাখেনা??

43



ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্ম। মানুষের জন্মলগ্ন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তের দিকনির্দেশনা এতে আছে। প্রতিটি কাজেরই রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু আদব ও সুন্নাত। একটু খেয়াল করলে আমাদের দৈনন্দিন করা ছোট ছোট কাজ নেক আমলে পরিণত হতে পারে। সন্তান ভূমিষ্ঠের সময়ও কিছু নির্দিষ্ট সুন্নাত ও আদব রয়েছে, নিম্নে তা তুলে ধরা হলো—

♦   ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্রই প্রথমে নবজাতককে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ডান কানে আজান ও বাঁ কানে ইকামত দেওয়া। রাসুল (সা.) হজরত হাসান (রা.)-এর কানে আজান দিয়েছিলেন। (তিরমিজি ১/২৭৮) রাসুল (সা.) নবুয়তপ্রাপ্তির পর নিজের আকিকা আদায় করেছেন।

♦   আজান শেষ হলেই নবজাতককে কোলে তুলে নেওয়া। (সহিহ বুখারি, ২/৮২২)

♦   তাহনিক করানো, অর্থাৎ নবজাতকের মুখে খেজুর চিবিয়ে নরম করে দেওয়া। খেজুর না থাকলে মিষ্টি দ্রব্যের মধ্যে মধু দেওয়া উত্তম। (সহিহ বুখারি, ২/৮২১)

♦   নবজাতকের জন্য দোয়া করা এবং বরকত কামনা করা। (সহিহ বুখারি, হা. ২৮২১)

♦   জন্মের সপ্তম দিন নবজাতকের উত্তম ও সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা। (তিরমিজি ২/১১০)

♦   জন্মের সপ্তম দিনে মাথার চুল, হাত-পায়ের নখ ইত্যাদি পরিষ্কার করা। (তিরমিজি)

♦   মাথা মুণ্ডানোর পর জাফরান দিয়ে তার মাথা ধৌত করা। (আবু দাউদ, ২/৩৯৩)

♦   সন্তানের পুরো মাথার চুলের সমপরিমাণ ওজনের রৌপ্য সদকা করা। (জাদুল মাআদ, ২/৪)

♦   জন্মের সপ্তম দিন আকিকা করা। (তিরমিজি, ২/৩৯২)

♦   সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে অথবা একুশতম দিনে আকিকা করা। (বাজলুল মাজহুদ, ৪/৮৬)

♦   ছেলের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল আকিকা করা উত্তম। (আবু দাউদ, ২/৩৯২)

আকিকার প্রয়োজনীয়তা : হজরত সালমান জব্বি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সন্তানের জন্মলগ্নে আকিকা করা সুন্নাত। তাদের পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করা, অর্থাৎ জন্তু জবাই করা এবং তাদের থেকে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করা, অর্থাৎ মাথার চুল কামানো সুন্নাত।’ (বুখারি, ২/৮২২)

হজরত সামুরা বিন জুন্দুর (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক সন্তান রাহানস্বরূপ (বন্ধক) ওই আকিকার পরিবর্তে, যে আকিকা ওই ছেলের পক্ষ থেকে সপ্তম দিনে জবাই করা হয় এবং তার নাম রাখা হয়, তার মাথা মুণ্ডন করা হয়।’ (আবু দাউদ : ২/৩৯২) এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম আহমদ (রহ.) বলেন, ‘যে পর্যন্ত ভূমিষ্ঠ ছেলের আকিকা করা না হবে কিয়ামতের দিবসে সে তার মাতাপিতার জন্য সুপারিশ করবে না।’

উল্লিখিত হাদিসগুলো থেকে প্রতীয়মান হয়, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শুকরিয়াস্বরূপ এবং বালা-মুসিবত ও বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে হিফাজতের লক্ষ্যে জন্মের সপ্তম দিনে ছেলের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করা, নবজাতকের মাথার চুল মুণ্ডানো, মুণ্ডানো চুলের সমপরিমাণ রুপা সদকা করা ও তার মাথায় জাফরান দেওয়া এবং ভালো একটি নাম রাখা মুস্তাহাব। সবচেয়ে উত্তম নাম হলো, যে নাম আল্লাহর দাসত্বের অর্থ বহন করে, যেমন : আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান ইত্যাদি অথবা যে নামে আল্লাহর প্রশংসার অর্থে আসে। যেমন : হামেদ, মাহমুদ, আহমদ ইত্যাদি নাম রাখা।

ইমাম মালেক, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-এর মতে আকিকা করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। ইমাম আহমদ (রহ.)-এর অন্য এক বর্ণনা মতে এটি ওয়াজিব; কিন্তু ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে আকিকা করা মুস্তাহাব।

44


এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, ভুল মিটিংয়ের কারণে আমেরিকায় প্রতিবছর ৩৭ বিলিয়ন ডলার জলে যায়। কাজেই অফিসের মিটিং কার্যকর ও যুক্তিপূর্ণ হওয়াটা বাঞ্ছনীয়। এদের মধ্যে অ্যাপল তেমন প্রতিষ্ঠান নয়। এ ক্ষেত্রে গোটা কৃতিত্ব দেওয়া যায় স্টিভ জবসকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৩টি উয়ায়ে প্রতিটা মিটিংকে অর্থপূর্ণ করে তুলতেন স্টিভ। বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে তার সেই তিন পদ্ধতির কথা।

১. যতটা ছোট আকারের করা যায় : 'ইনসেনলি সিম্পল' বইয়ে জবসের বহু দিনের সঙ্গী কেন সিগাল লিখেছেন এ কথা। স্টিভ মিটিংকে যতটা সম্ভব ছোট পরিসরে করার চেষ্টা চালাতেন। এমনকি এ বিষয়ে বেশ নিষ্ঠুর ছিলেন তিনি। একবার অ্যাপলের বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করে এমন একটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিটিংয়ে বসলেন স্টিভ। সেখান লরি নামের অপরিচিত এক নারী আসলেন। জবস সরু চোখে তার দিকে তাকিয়ে পরিচয় জানতেই চাইলেন। লরি বললেন, আমাকে এখানে আমার প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো হয়েছে। তারা মনে করছে, সংশ্লিষ্ট কাজে আমাকে প্রয়োজন হবে। কিন্তু জবস তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্পষ্ট জানালেন, আগে যেহেতু প্রয়োজন হয়নি, এখনো হবে না।

২. উপস্থিতদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব থাকতে হবে : যে বিষয়ে মিটিং হবে এবং সেখানে যারা উপস্থিত হবেন, ওই বিষয়ের সঙ্গে প্রত্যেকেরই সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে। নয়তো ওই মিটিংয়ে তিনি প্রয়োজনীয়। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে নীতিমালা গ্রহণ করেন জবস। তার নাম দেন ডিআরআই যার অর্থ ডিরেক্টলি রেসপন্সেবল ইনডিভিজ্যুয়াল। মিটিংয়ের এজেন্ডার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এমন মানুষরাই সভায় আসতে পারেন। অন্য কেউ নয়। অ্যাপলে যেকোনো মিটিংয়ে 'ডিআরআই' একটা প্রচলিত শব্দ হয়ে দাঁড়ায়। স্টিভ জিজ্ঞাসা করতেন, এ মিটিংয়ে ডিআরআই কে কে? এ পদ্ধতিতেই আইপড টিম থেকে গ্লোরিয়া লিনকে ফ্লিপবোর্ডে নেওয়া হয়। কারণ তিনি ফ্লিপবোর্ডের ডিআরআই। বড় মাপের প্রতিষ্ঠানের হাজারো কাজকে সুষ্ঠুভাবে ভাগ করে দিতে এটি জবসের এক অনন্য পদ্ধতি।

৩. প্রেজেন্টেশন নিয়ে ব্যস্ততা থাকবে না : 'স্টিভ জবস' বায়োগ্রাফিতে ওয়াল্টার আইজ্যাকসন লিখেছেন, অফিসিয়াল প্রেজেন্টেশনকে রীতিমতো ঘৃণা করতেন জবস। প্রতি বুধবার দুপুরে মার্কেটিং এবং বিজ্ঞাপন বিভাগের সঙ্গে এজেন্ডা বিহীন মিটিং করতেন জবস। সেখানে স্লাইড শো নিষিদ্ধ ছিল। সেখানে কেউ প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পরিকল্পনার কথা তুলে ধরতেন না। সবাই যার যার কল্পনাপ্রসূত পরিকল্পনার কথা আবেগের সঙ্গে তুলে ধরতেন। জবস একবার আইজ্যাককে বলেছিলেন, চিন্তার বদলে স্লাইডের মাধ্যমে মানুষ যেভাবে প্রেজেন্টেশন করেন তা ঘৃণা করি আমি। এর মাধ্যমে মানুষ তার কাজ ও চিন্তার সঙ্গে একাত্মতা আনতে পারে না। তাই চিন্তা এবং তা প্রকাশের মাধ্যমেই সর্বোৎকৃষ্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করা যায়। 

 

45
আপনি কি জানেন, যে মজাদার খাবার খেলেন এর সাথে আরো একটি জিনিস আপনার গলা বেয়ে পাকস্থলিতে গিয়ে পড়ল? আপনি হয়তো কল্পনাই করতে পারছেন না এর সাথে আপনি প্রতিদিন গ্রহণ করছেন ফরমালিন নামের এক মারাত্মক বিষ। জানলেও হয়তো তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ভাবছেন এগুলো হয়তো খুব বেশি ক্ষতিকর নয়।

কিন্তু বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলছে, ফরমালিন আপনার শরীরে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে আপনার শরীরে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মরণব্যাধি সৃষ্টি করে আপনাকে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর পথে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ ও বাংলাদেশ ভোক্তা সমিতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৪০০ টন ফরমালিন মেশানো হচ্ছে মাছ, দুধ, শাকসবজি, ফলমূলসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে।যার পুরোটাই বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করছে আপনার শরীরেই।

ক্যান্সার মানুষের অন্যতম প্রধান মরণব্যাধি। যা কখনোই পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য নয়। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টিতে ফরমালিন দায়ী।

১৯৮৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধীন ‘ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার’ গবেষণা করে দেখিয়েছে যে ফরমালিন অত্যন্ত বিষাক্ত পদার্থ যা মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী।

Pages: 1 2 [3] 4