Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - A-Rahman Dhaly

Pages: 1 2 3 [4] 5 6
46

একটি জানার ভুল : বিধর্মী ভিক্ষুককে কি ভিক্ষা দেওয়া নিষেধ?


কোনো কোনো মানুষ মনে করেন, বিধর্মী ভিক্ষুককে ভিক্ষা দেওয়া যাবে না বা বিধর্মী ব্যক্তিকে দান করা যাবে না। তাদের এ ধারণা ভুল। বিধর্মী ভিক্ষুককে যেমন ভিক্ষা দেওয়া যাবে, তেমনি বিধর্মী দরিদ্র ব্যক্তিকে দানও করা যাবে। কারণ, নফল ছদকা এবং সাধারণ দান অমুসলিমকেও দেওয়া যায়।

-মাসিক আলকাউসার
রবিউল আউয়াল-রবিউস সানী ১৪৩৭ . জানুয়ারি ২০১৬

পুরোনো সংখ্যা . বর্ষ: ১২ . সংখ্যা: ০১

47
কিছু কিছু মানুষের ধারণা, বিবাহের ইজাব পেশ করার পর পাত্র যদি ‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণ না করে তাহলে বিবাহ সহীহ হবে না। এ ধারণা ঠিক নয়। আসল বিষয় হল সম্মতি জ্ঞাপন করা। এখন কবুল শব্দ ছাড়া যদি ‘আলহামদুলিল্লাহ আমি গ্রহণ করলাম’ বা এজাতীয় শব্দ উচ্চারণ করে তাহলেও সেটা সম্মতি বোঝাবে এবং বিবাহ সহীহ হবে। সুতরাং ‘কবুল’ শব্দই উচ্চারণ করতে হবে- এ ধারণা ভুল।

- মাসিক আলকাউসার
-
জুমাদাল উলা ১৪৩৭ . ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পুরোনো সংখ্যা . বর্ষ: ১২ . সংখ্যা: ০২

48

একটি ভুল ধারণা : মেয়েদের জন্যও কি পায়ে মেহেদী লাগানো নিষেধ?


কিছু মানুষ মনে করে, মেয়েদের জন্যও পায়ে মেহেদী লাগানো নিষেধ। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। মেয়েদের জন্য পায়ে মেহেদী লাগানো জায়েয। এতে দোষের কিছু নেই।
-মাসিক আলকাউসার

জুমাদাল আখিরাহ ১৪৩৭ . মার্চ ২০১৬

পুরোনো সংখ্যা . বর্ষ: ১২ . সংখ্যা: ০৩

49
কোনো কোনো মানুষ মনে করেন, কাপড়ে নাপাকি লাগলে বা নাপাকির ছিটা লাগলে কাপড়ের এক কোণা ধুলেই পবিত্র হয়ে যাবে। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। বরং কাপড়ের যে অংশে নাপাকি লেগেছে সে অংশই ধুতে হবে। নইলে কাপড় পবিত্র হবে না।
-মাসিক আলকাউসার

সফর ১৪৩৬ . ডিসেম্বর ২০১৪

পুরোনো সংখ্যা . বর্ষ: ১০ . সংখ্যা: ১১

50
কিছু মানুষ মনে করেন, রুকু বা সিজদার তাসবীহ তিনবারের বেশি পড়া যায় না। ফলে তারা যখন ইমামের পিছনে নামায পড়েন তখন সুযোগ থাকা সত্তে¡ও তিনবার তাসবীহ পড়েই চুপ করে থাকেন।

অনেক ইমাম সাহেবই রুকু সিজদার তাসবীহ বেশ ধীরে পড়েন। কোনো কোনো ইমাম সাহেবের ক্ষেত্রে মুসল্লিগণ তিনবারই তাসবীহ পড়ার সুযোগ পান। আবার কোনো কোনো ইমামের ক্ষেত্রে পঁচ থেকে সাতবার পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। সুতরাং এক্ষেত্রে তিনবার পড়ে চুপ না থেকে ইমাম সাহেব রুকু বা সিজদা থেকে উঠা পর্যন্ত পড়তে থাকা।
-মাসিক আলকাউসার-
যিলহজ্ব ১৪৩৬ . অক্টোবর ২০১৫

পুরোনো সংখ্যা . বর্ষ: ১১ . সংখ্যা: ০৯

51
কিছু মানুষের ধারণা, যে ঘরে সন্তান ভূমিষ্ট হয় সে ঘর চল্লিশ দিন পর্যন্ত নাপাক থাকে। চল্লিশ দিন পর্যন্ত সে ঘরে নামায আদায় করা যাবে না। এটি একেবারেই একটি ভুল ধারণ। এর কোনো ভিত্তি নেই।

সন্তান ভ‚মিষ্ট হওয়ার সাথে পাক-নাপাকের কী সম্পর্ক? ঘরের কোথাও যদি নাপাকী লাগে তাহলে সে স্থান নাপাক। নাপাকী পরিষ্কার করে নিলেই তা সাথে সাথেই পাক হয়ে গেল। এর সাথে চল্লিশ দিনেরও কোনো সম্পর্ক নেই।

নেফাসের সর্বোচ্চ সময়সীমা চল্লিশ দিন। এখান থেকে হয়ত কেউ একথা আবিষ্কার করেছে। নিফাসের রক্ত নাপাক, এ থেকে এ কথা কীভাবে বুঝে আসে যে, নেফাসওয়ালী মহিলা যে ঘরে অবস্থান করেন অথবা যে ঘরে সন্তান ভ‚মিষ্ট হয় সে ঘরই নাপাক! নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক!! আল্লাহ আমাদের এ ধরনের কথা থেকে হেফাযত করুন।
--মাসিক আলকাউসার

রবিউল আউয়াল-রবিউস সানী ১৪৩৭ . জানুয়ারি ২০১৬

চলতি সংখ্যা . বর্ষ: ১২ . সংখ্যা: ০১

52
কিছু মানুষের ধারণা, নাপাক কাপড় পাক করার সময় যদি বিসমিল্লাহ বলা না হয়, তাহলে কাপড় যতই ধোওয়া হোক পাক হবে না। এটি একটি ভুল ধারণা, এর কোনো ভিত্তি নেই।

নাপাক কাপড় পাক করার জন্য ভালো করে তিনবার ধুতে হবে এবং প্রত্যেকবার কাপড়ের পানি নিংড়িয়ে নিতে হবে। নাপাকী যদি দৃশ্যমান হয় তাহলে কাপড় থেকে সে নাপাকী কোনোভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং তিনবার ভালোভাবে নিংড়িয়ে ধুতে হবে। এভাবে ধোওয়ার দ্বারাই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। এর সাথে বিসমিল্লাহ বলা না বলার কোনো সম্পর্ক নেই।

তবে কাপড় পাক করা একটি নেক আমল। এর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হলে তা তো ভালই। কিন্তু বিসমিল্লাহ বলা ছাড়া কাপড় পাক হবে না এটা ভুল মাসআলাহ।
-মাসিক আলকাউসার রবিউল আউয়াল-রবিউস সানী ১৪৩৭ . জানুয়ারি ২০১৬

53
Islam / দাওয়াত ও তাবলীগ
« on: January 13, 2016, 04:53:32 PM »
দাওয়াত ও ইজতিমা : ঈমানী মেহনত এক বিকল্পহীন মেহনত
ঈমানের প্রয়োজন সবার ও সবসময়ের। এছাড়া নাজাতের কোনো পথ নেই এবং পার্থিব শান্তি নিরাপত্তা ও কল্যাণের কোনো উপায় নেই। যুগে যুগে মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম অংশ নবী-রাসূলগণ আল্লাহর আদেশে মানব জাতিকে ঈমানের দিকে ডেকেছেন এবং তাঁদের ওয়ারিছ উত্তরসূরীগণও তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। সবশেষে আখেরী নবী হয়রত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে ঈমানের দিকে ডেকেছেন এবং ঈমানের সকল বিষয় স্পষ্ট ও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে, শিখিয়ে, প্রতিষ্ঠিত করে দুনিয়ার জীবন থেকে বিদায় নিয়েছেন। সুতরাং মানবের ইসলাহ ও সংশোধনের এই পথই নির্ভুল পথ।

ঈমান এক বৃক্ষ, যার শিকড় মাটির অতি গভীরে আর শাখা-প্রশাখা আকাশের উচ্চতায়। ঈমান-বৃক্ষের শিকড় হচ্ছে তাওহীদ ও রিসালাতের বিশ্বাস ও সাক্ষ্য, যা ছাড়া নাজাতের কোনো উপায় নেই এবং যা ছাড়া কোনো সৎকর্মের কোনো মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। দ্বীনের ‘জরুরিয়াত’ ও সর্বজনবিদিত বিষয়সমূহ মেনে নেওয়া এই পর্যায়েরই বিষয়।

ঈমানের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গন তাকওয়া ও খোদাভীতি। আল্লাহর ভয় ও আখিরাতে জবাবদিহিতার অনুভ‚তি হচ্ছে ঐ বিষয় যা মানুষকে অন্যায় ও পাপাচার থেকে দূরে রাখে এবং হক আদায়ে ও কর্তব্য পালনে বাধ্য করে। তাকওয়া ও খোদাভীতি সম্পন্ন হৃদয়ে জাগে আল্লাহর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি সম্পর্কে জানার আগ্রহ এবং করণীয় ও বর্জনীয়ের অনুসন্ধিৎসা। এমন হৃদয় ও মস্তিষ্কের জন্যই কুরআন হয় হেদায়েত ও পথপ্রদর্শক। আর এদেরই জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম হন উসওয়া ও আদর্শ।

ঈমানের এক অঙ্গন, আল্লাহ তাআলার মারিফাত এবং তাঁর সিফাত ও গুণাবলীর ইলম ও ইয়াকীন। এই ইলম ও মারিফাত তথা জ্ঞান ও প্রজ্ঞা তাকওয়া ও খোদাভীতির সাথে গভীরভাবে জড়িত। একারণে আল্লাহ সম্পর্কে যার ইলম যত গভীর ও পূর্ণাঙ্গ তাকওয়া ও খোদাভীতির ক্ষেত্রেও তিনি ততই সচেতন ও অগ্রসর।

ঈমানের আরেক দিক, কর্ম ও আচরণ। ঈমান শুধু জ্ঞানগত ও বিশ্বাসগত বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের কর্ম ও আচরণের গোটা অঙ্গনেই পরিব্যাপ্ত। বিশ্বাস যদি হয় ঈমানের মূল তাহলে কর্ম ও আচরণ তারই শাখা-প্রশাখা। সুতরাং পূর্ণাঙ্গ মুমিন তিনি যার জীবন ও কর্মের সকল অঙ্গনে রয়েছে ঈমান ও বিশ্বাসের প্রতিফলন।

ঈমানের এই নানা মাত্রা থেকে অনুমান করা যেতে পারে, ঈমান প্রসঙ্গটি কত বিস্তৃত আর ঈমানী মেহনতের ক্ষেত্র কত বিশাল। এ থেকে আরো বোঝা যায়, ঈমানের সাথে আকীদার, আহকামের, ইলমের, তালীমের, তাযকিয়ার, তারবিয়াতের, আমর বিল মারূফ ও নাহি আনিল মুনকারের কত গভীর সম্পর্ক।

সুতরাং ঈমানী চেতনা ও ঈমানী জীবন যাপনের আগ্রহের পাশাপাশি আকীদা-বিশ্বাসের দুরস্তি, জরুরিয়াতে দ্বীনের হেফাযত, তাওহীদ ও তাওয়াক্কুল, ইয়াকীন ও ইনাবত ইলাল্লাহর এবং কলব ও হৃদয়ের ঈমানী গুণাবলী সংক্রান্ত সকল মেহনত ঈমানী মেহনতের শামিল। তদ্রূপ ঈমানের জীবন-বিস্তৃত শাখা-প্রশাখার প্রচার ও প্রতিষ্ঠা, এসংক্রান্ত জ্ঞানার্জন ও জ্ঞান-বিতরণ এবং বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগ ও অনুশীলন- এই সবই ঈমানী মেহনতের একেক দিক। আর এই সকল মেহনতের প্রথম পাত্র ও কর্মক্ষেত্র হচ্ছে ব্যক্তির আপন সত্তা, আপন পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-পড়শি, সংশ্লিষ্টজন এবং পর্যায়ক্রমে সকল মুসলিম ও সকল শ্রেণির সকল মানুষ। তাহলে একথা বলাই বাহুল্য যে, ঈমানী মেহনত বিশেষ একটি অঙ্গনের কাজের বিশেষ একটি পদ্ধতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আর শুধু এর দ্বারা ঈমানী মেহনতের যে ব্যাপক কর্মক্ষেত্র তার দাবিও পূরণ হতে পারে না।

ঈমানের সাথে সংশ্লিষ্ট সবগুলো অঙ্গনের কাজ এবং শরীয়ত সম্মত সবগুলো পদ্ধতির কাজ ঈমানী মেহনতের শামিল। একারণে সকল অঙ্গনের কর্মীদের কর্তব্য, নিজ নিজ অঙ্গনের কাজে নিবেদিতপ্রাণ হওয়া, অন্যদিকে ঈমানী মেহনতের বিস্তৃত অঙ্গনসমূহের ব্যাপারেও সচেতন থাকা। তাহলে একে অপরের কর্মের স্বীকৃতি ও সহযোগিতা সহজ হয়। আমাদের পূর্বসূরী প্রজ্ঞাবান দায়ীগণের নীতি এটিই ছিল যে, ‘সহযোগী হও, প্রতিপক্ষ হয়ো না।’ আর এ তো কুরআনী নির্দেশ- (তরজমা) ‘তোমরা নেককাজ ও খোদাভীতির পথে একে অন্যের সহযোগিতা কর, গুনাহ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে পরষ্পর সহযোগিতা করো না।’

সুতরাং আসুন, ঈমান শিখি, ঈমান শেখাই এবং ঈমানী মেহনতে একে অন্যের সহযোগী হই। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন ও কবুল করুন। আমীন। 
মাসিক আলকাউসার--জানু-২০১৬।রবিউল আউয়াল-রবিউস সানী ১৪৩৭ . জানুয়ারি ২০১৬

54
Hadith / কুসংস্কার
« on: December 02, 2015, 03:35:43 PM »
কুসংস্কার : রাতে নিম্নের কাজগুলো করা যাবে না

১. রাতে বাঁশ কাটা যাবে না।

২. রাতে গাছের পাতা ছেঁড়া যাবে না।

৩.রাতে নখ, চুল, গোঁফ ইত্যাদি  কাটা যাবে না।

৪. রাতে কোনো প্রকার ফল-ফসল  তোলা যাবে না ইত্যাদি।

সংকলনে-মাসিক আলকাউসার

অনেক এলাকার মানুষের মাঝেই  এগুলো এবং রাতকেন্দ্রিক  এরকম আরো কিছু বিষয়ের প্রচলন রয়েছে। কিন্তু এসব মনগড়া কথা, শরীয়তে এর  কোনো ভিত্তি নেই। কুরআন-হাদীসের  কোথাও এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা  নেই। সুতরাং এ ধরনের বিশ্বাস পোষণ করা যাবে না।

এগুলো মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়। কারো যদি দাফন ইত্যাদি  কাজের জন্য রাতেই বাঁশ কাটার প্রয়োজন হয়, তিনি কি তাহলে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন? এরকম অমূলক ধারণার কারণে দেখা যাবে তিনি বেশ  পেরেশানীর শিকার হবেন। তেমনি কারো যদি রাতে গাছ থেকে কোনো ফল বা কোনো সবজি তোলার প্রয়োজন হয়,  তাহলে কি তিনি সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন?

 

মোটকথা এ ধরনের অমূলক ধারণার পিছে পড়া যাবে না।

55

এটি হাদীস নয় : শয়তান ঈদের দিন রোজা রাখে

কিছু মানুষের মুখে এটিকে হাদীস হিসেবে বলতে শোনা যায়। কিন্তু এটা কোনো  হাদীসও নয়, কোনো হাদীসের ভাষ্যও নয়। ঈদের দিন রোযা রাখা নিষিদ্ধ সুতরাং ঈদের দিন রোজা রাখা একটি শয়তানী কাজ। সম্ভবত এখান থেকেই কেউ কেউ বলেছে, ঈদের দিন শয়তান রোজা রাখে। আর পরবর্তীতে কেউ সেটাকে হাদীস হিসেবে বর্ণনা করেছে।
সংকলনে-মাসিক আলকাউসার

56

এটি হাদীস নয় : জ্ঞান-সাধকের দোয়াতের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে মূল্যবান

‘‘জ্ঞান-সাধকের দোয়াতের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে মূল্যবান’’ এ কথাটি হাদীস হিসেবে জনশ্রুতি থাকলেও হাদীস বিশারদগণের নির্ভরযোগ্য মতানুসারে এটি হাদীস নয়; বরং পরবর্তী কারো বাণী। ইমাম সাখাবী রাহ. ‘আল মাকাসিদুল হাসানাতে’ ( পৃ. ৪৪২, বর্ণনা: ১০০৫ ) এটিকে হাসান বসরী রাহ.-এর বাণী বলে উল্লেখ করেছেন।

শাওকানী রাহ.,যারকাশী রাহ.,তাহের পাটনী রাহ.-সহ আরো অনেক হাদীস বিশারদ এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।

(দেখুন: আল ফাওয়াইদুল মাজমূআ, খ. ১ পৃ. ২৮৭, বর্ণনা: ৫৩; আললাআলিল মানছূরাহ,  পৃ. ১০১, বর্ণনা: ১০; আল আসারুল মারফূআ ২০৭; কাশফুল খাফা, খ.২ পৃ.২০০; তাযকিরাতুল মাওযূআত খ. ২ পৃ. ৩৬৯; মিযানুল ইতিদাল খ.৩ পৃ. ৪৯৮।)
সংকলনে-মাসিক আলকাউসার

সুতরাং এটিকে হাদীস হিসেবে বলা উচিত নয়।

57

এটি হাদীসের পাঠ নয় : স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত
প্রিন্ট সংস্করণ
শেয়ার

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর হক বা স্বামীর আনুগত্য  বিষয়ে অনেকে উপরের কথাকে হাদীস হিসেবে পেশ করে থাকে। যার আরবী হল, الجنة تحت أقدام الأزواج । কিন্তু এ শব্দ-বাক্যে কোনো হাদীস পাওয়া যায় না। সুতরাং এটিকে হাদীস হিসেবে বলা যাবে না। তবে কিছু বর্ণনায় এর মর্মার্থ পাওয়া যায়।

মুআত্তা মালেক, মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে  হাকেমসহ হাদীসের আরো কিছু কিতাবে বর্ণিত হয়েছেÑ

একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। Ñমুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬

স্বামী-স্ত্রীর একের উপর অন্যের হক রয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে মৌলিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ.

আর স্বামীদের যেমন তাদের (স্ত্রীদের) উপর ন্যায়সঙ্গত হক রয়েছে, তেমনি তাদেরও হক রয়েছে স্বামীদের উপর। Ñসূরা বাকারা (২) : ২২৯

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্তারিতভাবে স্বামী-স্ত্রীর  হক তুলে ধরেছেন এবং স্বামীদেরকে স্ত্রীর হক আদায়ের ব্যাপারে সতর্ক  করেছেন। বিদায় হজ্বের ভাষণে নবীজী বলেছেন,

اتَّقُوا اللَّهَ فِي النِّسَاءِ.

তোমরা নারীদের  বিষয়ে আল্লাহকে ভয় কর। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১২১৮

সাথে সাথে নারীদেরকে স্বামীর আনুগত্য করার প্রতি উদ্বুদ্ধ  করেছেন এবং এর ফযীলতও বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত  নামায ঠিকমত আদায় করবে, রমযানের রোযা রাখবে,  আপন লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে,  স্বামীর আনুগত্য করবেÑ তখন সে  জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। Ñসহীহ ইবনে হিব্বান,  হাদীস ৪১৬৩
 

সুতরাং গুনাহের কাজ নয় এমন বিষয়ে  স্বামীর আনুগত্য জরুরি। কিন্তু  ‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত’ এটি হাদীস নয়।
সংকলনে-মাসিক আলকাউসার

58
উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحمن

ফযীলত বলতে রাসূল সাঃ যা করেছেন, তা রাসূল সাঃ এর মোহাব্বতে করাই ফযীলতপূর্ণ। রাসূল সাঃ এর কাছে খুশবো খুবই পছন্দনীয় বিষয় ছিল। তাই হালাল খুশবো জাতীয় বস্তু ব্যবহার করা সুন্নত।

লক্ষণীয় আমরা ইচ্ছে করেই আতর শব্দ ব্যবহার করছি না। কারণ রাসূল সাঃ এর কাছে প্রিয় ছিল খুশবো। চাই তা যে প্রকারেরই হোক। শর্ত শুধু হালাল বস্তু দ্বারা বানানো হতে হবে। তাই আতর হোক বা বডি স্প্রে হোক, বোতলজাত পারফিউম হোক বা ফুলের ঘ্রাণ হোক সবই খুশবোতে শামিল। তাই আমভাবে খুশবো ব্যবহার করা সুন্নত। হালাল বস্তু দ্বারা বানানো হলেই হল।

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” حُبِّبَ إِلَيَّ (2) النِّسَاءُ، وَالطِّيبُ

হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ নারী ও খুশবো খুবই প্রিয়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২২৯২, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৬৮৭৯, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩৯৪০, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৫৭৭২, মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-২৬৭৬, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৩৪৮২}

বর্তমানে বডি স্প্রে বা পারফিউমে এ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় মর্মে শুনা যায়। এক্ষেত্রে মাসআলা হল,

والمحرم منها أربعة ) أنواع الأول ( الخمر وهي النيء من ماء العنب إذا غلى واشتد وقذف بالزبد وحرم قليلها وكثيرها ) بالإجماع ( و ) الثاني ( الطلاء وهو العصير يطبخ حتى يذهب أقل من ثلثيه  وقيل ما طبخ من ماء العنب حتى ذهب ثلثاه وبقي ثلثه ) وصار مسكرا ( وهو الصواب ونجاسته كالخمر ) به يفتي ( و ) الثالث ( السكروهو النيء ماء الرطب )

( و ) الرابع ( نقيع الزبيب وهو النيء من ماء الزبيب ) بشرط أن يقذف بالزبد بعد الغليان ( والكل ) أي الثلاثة المذكورة ( حرام إذا غلي واشتد ) وإلا لم يحرم اتفاقا وإن قذف حرم اتفاقا وظاهر كلامه فبقية المتون أنه اختار ها هنا قولهما(تنوير الأبصار مع الدر المختار-  كتاب الأشربة -2/259

যে সমস্ত এলকোহল খেজুর বা আঙ্গুর দ্বারা বানানো হয়নি, তেমন বস্তু নেশা না আসা পর্যন্তের জন্য ব্যবহার জায়েজ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এবং ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ এর মতানুসারে। {ফাতহুল কাদীর-৮/১৬০, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-৫/৪১২, আল বাহরুর রায়েক-৮/২১৭-২১৮, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/২১৯}

বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে, বর্তমানে এলকোহল খেজুর বা আঙ্গুর থেকে বানানো হয় না। তাই এটি ব্যবহার করা জায়েজ হবে। তবে যদি জানা যায় যে, এসব আঙ্গুর বা খেজুর থেকে বানানো হয়, তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েজ নয়।

আর হারাম কোন বস্তু যেমন শুকর ইত্যাদির যদি এমনভাবে রিফাইন করা হয় যে, এসবের কোন মৌলিকত্ব বাকি না থাকে, তাহলেও উক্ত বস্তু ব্যবহার করা জায়েজ আছে। আর যদি সেসব হারাম বস্তুর মৌলিকত্ব বাকি থাকে, তাহলে উক্ত বস্তু যাতে মিশ্রিত করা হবে, তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না। {নিহায়াতুল মুহতাজ লির রামালি-৮/১২}

أما (الخمر) إذا خلله بعلاج بالملح أو بغيره يحل عندنا (الفتاوى الهندية،كتاب الأشربة وفيه بابان   الباب الأول في تفسير الأشربة والأعيان التي تتخذ منها الأشربة وأسماؤها وماهياتها وأحكامه-5/410

অনুবাদ-মদকে যখন লবন বা অন্য কিছু দ্বারা সির্কা বানিয়ে ফেলা হয়, তখন তা হালাল হয়ে যায়। {ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৪১০, মাজমাউল আনহুর-৪/২৫১, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/২১৮}

এ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে বুঝে নিন বিদেশী পণ্য ও বডি স্প্রে, পারফিউম, শেম্পু ইত্যাদি ব্যবহার করার বিধান। যদি ওসব বস্তুুতে খেজুর বা আঙ্গুরের তৈরী এ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা ব্যবহার জায়েজ নয়। নতুবা তা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে জায়েজ নয়। সম্ভাবনা না হলে জায়েজ।

আর যদি অন্য কোন হারাম বস্তু মিশ্রিত হয়, আর মিশ্রিত করার আগে তাকে এমনভাবে প্রসেসিং করে যে, হারাম বস্তুটির মৌলিকত্ব বাকি থাকে না, তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে, আর যদি মৌলিকত্ব বাকি থাকে তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না।

যদি হারাম বস্তু মিশ্রিত করা হল কি না? জানা নেই। তাহলেও উক্ত পারফিউম, বডি স্প্রে ব্যবহারে কোন সমস্যা নেই।

في التتارخانية: من شك في إنائه أو في ثوبه أو بدن أصابته نجاسة أو لا فهو طاهر ما لم يستيقن، وكذا الآبار والحياض والجباب الموضوعة في الطرقات ويستقي منها الصغار والكبار والمسلمون والكفار؛ وكذا ما يتخذه أهل الشرك أو الجهلة من المسلمين كالسمن والخبز والأطعمة والثياب اهـ ملخصا.(رد المحتار، كتاب الطهارة، قبيل مطلب فى ابحاث الغسل-1/283، الفتاوى التاتارخانية، كتاب الطهارة، نوع آخر فى مسائل الشك-1/146، الأشباه والنظائر، القاعدة الثلاثة، اليقين لا يزول بالشك

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

59
প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম,

সম্মানিত শাইখ আমার ৩টি প্রশ্ন ছিল। ইফতার মাহফিলে দাওয়াত ও অমুসলিমদের অনুষ্ঠানে যোগদান প্রসঙ্গে।

১।    আমি একজন সরকারী চাকুরীজীবি। আমাদের অফিসে ইফতার মাহফিল হলে অমুসলিম চাকুরীজীবিরাও তাতে অংশগ্রহণ করেন। এখন আমার কি এতে অংশগ্রহণ করা উচিত ? না করলে অসামাজিক বা অফিসের কর্তাদের রোষে পড়তে হতে পারে। আমার কি করনীয় ?

২।    আমাকে কোন ইফতার মাহ্ফিলে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। সেখানে অমুসলিম ব্যক্তিকেও দাওয়াত দেয়া হয়েছে আমি জানার পর আমি কি তাতে অংশগ্রহণ করবো ?

৩।    ইফতার মাহফিলের আয়োজন করলে তাতে অনেকেই অর্থ সহযোগীতা করতে এগিয়ে আসে। যদি আমি নিশ্চত না থাকি তার উৎস হালাল উপার্জনের কি না তখন কি তা নেয়া উচিত হবে। কেউ দান করলে কি তার উৎস জিজ্ঞাসা করা যাবে ?

দয়া করে শরীঈ উত্তর প্রদানে বাধিত করবেন।

আল্লাহ আপনাদের আরো ইসলামের খেদমত করার তাওফিক দান করুন। আমিন

মোঃ আতিকুর রহমান

সরকারী চাকুরীজীবি

কিশোরগঞ্জ থেকে

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

১ ও ২ নং এর উত্তর

অমুসলিমদের সাথে আন্তরিক মোহাব্বত রাখা জায়েজ নয়। বিশেষ করে এমন অমুসলিমের সাথে যার দ্বারা নিজের দ্বীনের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে এর মানে এই নয় যে, তাদের সাথে স্বাভাবিক সামাজিক আচরণ ভাল করবে না। বা তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে বেড়াবে। বরং বিধর্মী ব্যক্তি যদি প্রতিবেশি হয়, তাহলে প্রতিবেশির হক তার জন্যও প্রযোজ্য হবে।

সুতরাং বিধর্মী ব্যক্তি উপস্থিত থাকলেই কোন অনুষ্ঠানে যোগদান অবৈধ হয়ে যাবে না। তবে যদি উক্ত অনুষ্ঠান এমন হয়, সেখানে গেলে নিজের ঈমান আমলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সেটি মুসলিমদের অনুষ্ঠান হলেও যাওয়া জায়েজ নয়।

এ হিসেবে আপনি নির্দিষ্ট করে নিতে পারবেন, উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদানের ব্যাপারে কী হুকুম হবে?

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ [٥:٥١

হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। {সূরা মায়েদা-৫১}

তবে তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করা, বিপদে সহযোগিতা করা, প্রতিবেশী হলে খোঁজ খবর নেয়া ইত্যাদি শুধু জায়েজই নয়। উত্তম।

إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَىٰ إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٦٠:٩]

আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম। {সূরা মুমতাহিনা-৮}

এক ইহুদী কিশোর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমত করত। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখতে গেলেন এবং তাকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। তখন সে মুসলমান হয়ে গেল। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৩৫৬, ৫৬৫৭)

৩ নং এর জবাব

কোন মুসলিমের উপার্জনের ক্ষেত্রে অযথা সন্দেহ করা উচিত নয়। বরং সেটিকে হালাল উপার্জন মনে করাই উচিত। জিজ্ঞাসার করারও প্রয়োজন নেই। মুসলমানদের প্রতি সুধারণা রাখাই ইসলামের শিক্ষা। তবে যদি সুনিশ্চিতভাবে জানা থাকে, লোকটি হারাম উপার্জন করছে। তাহলে এক্ষেত্রে তার সহযোগিতা বা হাদিয়া নেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা আছে।

হারাম উপার্জনকারী এবং হারাম ও হালালের মাঝে সংমিশ্রিত উপর্জনকারীর হাদিয়া গ্রহণের ক্ষেত্রে কয়েকটি সূরত হতে পারে। যথা-



হারাম উপার্জনকারীর পূর্ণ রোজগারই হারাম। আর লোকটি তার হারাম টাকা দিয়েই হাদিয়া দিচ্ছে।



লোকটির উপার্জন হালাল ও হারামের মাঝে সংমিশ্রিত। এ দুটি উপার্জিত অর্থ এমনভাবে সংমিশ্রিত যে, একটি অন্যটি থেকে পৃথক নয়।

তবে এর মাঝে হারাম উপার্জন বেশি। আর লোকটি মিশ্রিত সে সম্পদ দিয়ে হাদিয়া দিচ্ছে।



দাওয়াতকারীর হালাল উপার্জনও আছে, আবার হারাম উপার্জনও আছে। এ দুটি উপার্জিত অর্থ এমনভাবে সংমিশ্রিত যে, একটি অন্যটি থেকে পৃথক নয়। তবে তার হারাম উপার্জন কম। হালাল উপার্জন বেশি। আর লোকটি এ মিশ্রিত সম্পদ দিয়ে হাদিয়া দিচ্ছে।



হারাম উপার্জনকারী হারাম উপার্জন দিয়ে হাদিয়া দিচ্ছে না। বরং কারো থেকে হালাল টাকা ধার করে হাদিয়া দিচ্ছে।

প্রথমোক্ত দুই সূরতে উক্ত ব্যক্তির টাকা নেয়া জায়েজ নয়। আর তৃতীয় সুরতে উক্ত ব্যক্তির টাকা নেয়া জায়েজ হলেও না নেয়া উত্তম।

আর চতুর্থ সুরতে উক্ত ব্যক্তির টাকা নেয়া জায়েজ আছে।

فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، كتاب الكراهية-5/342، رد المحتار-6/247

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

60
প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।

আমি এখন ভূটান আছি। এখানে কোন রমযানের কেলেন্ডার পাওয়া যায়না। আমি মোবাইল থেকে একটা রমাদানের apps নামাইছিলাম। এবং সে অনুযায়ী তিন দিন রোযা রাখছি। আজ তিন দিন হইল। কিন্তু apps টিতে সাহরীর সময় ভুল ছিল প্রায় ২০ মিনিটের।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমার এই তিনদিনের রোযা হবে কিনা। আর না হলে কি করণীয়?

প্রশ্নকর্তা- আনোয়ার পারভেজ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

দুআ করি আল্লাহ তাআলা আপনার রোযাকে কবুল করুন। আসলে রোযার বিধান হল, সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও সহবাস থেকে নিয়তের সাথে বিরত থাকা।

সুতরাং যদি আপনি ভুলক্রমেই হোক এই সময়ের মাঝে পানাহার করে থাকেন, তাহলে আপনার রোযা হয়নি। সে হিসেবে আপনার উক্ত দিনগুলোর রোযা রমজান পরবর্তীতে রেখে নিতে হবে।

أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَائِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُونَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ (187

রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আতœপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।   {সূরা বাকারা-১৮৭}

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ (183) أَيَّامًا مَعْدُودَاتٍ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ وَأَنْ تَصُومُوا خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ (184

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।

গণনার কয়েকটি দিনের জন্য অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে, অসুখ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট দায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করবে। যে ব্যক্তি খুশীর সাথে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণ কর হয়। আর যদি রোজা রাখ, তবে তোমাদের জন্যে বিশেষ কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে পার। {সূরা বাকারা-১৮৩, ১৮৪}

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

Pages: 1 2 3 [4] 5 6