Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - mushfiq.swe

Pages: 1 2 3 [4] 5 6 7
46
Publications / Re: Cyber crime in Developing Countries
« on: November 25, 2017, 01:50:43 PM »
Important information. Thanks for sharing.

47
Research Project / Re: How to Write an A+ Research Paper
« on: November 25, 2017, 01:47:36 PM »
Important information & Good suggestions. Thanks for sharing.

48
টেকটিউন সুপার সাকসেসোর গেস্ট: মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা,  প্রতিষ্ঠাতা, BLACK iz Limited
টেকটিউন সুপার সাকসেসোর হোস্ট: রুবিনা ইয়াসমিন
সময়: মঙ্গলবার, ৫ জুলাই ২০১৭। সকাল ১১ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ১৫ মিনিট
স্থান: Black iz Limited এর অফিস, ঢাকা।


মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা, একজন এসইও এক্সপার্ট, ওয়েবসাইট ডিজাইনার এবং ডেভেলপার। ২০০৯ সাল থেকে তিনি এই সেক্টরে কাজ করছেন। নিজে কাজ করার পাশাপাশি, তিনি এসইও এর প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকেন। বর্তমানে তিনি BLACK iz Group এর সাথে CEO হিসেবে  কাজ করছে। তিনি  BLACK iz IT এর প্রধান আইটি বিশেষজ্ঞ এবং SEO Consultant। SEO Consultant হিসেবে তিনি  অন্য অনেক কোম্পানির সাথে কাজ করেছিলেন। ২০০৯ সালে তার লিখা বই "কিছু পাতা" ন্যাশনাল বুক ফেয়ারের  প্রকাশিত হয়।
২০০৯ সালের পরে তিনি Senior news reporter হিসেবে "ঢাকার খবর"এ  এবং chief editor হিসেবে "এমএলএম নিউইয়জ ২4-"এ কাজ করেছেন।
২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মোহাম্মদ মেহেদি মেনাফার তার পরিচালিত "সূর্যের মুক্তি" চলচ্চিত্রটি নির্মান  করেছিলেন। তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এবং লোগো ডিজাইনিংয়ের ক্ষেত্রেও  চমৎকার দক্ষতা রাখেন।
আজ টেকটিউনস সুপার সাকসেসোর এ আমাদের সাথে আছেন মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা। শুনব তার প্রতিষ্ঠানের কথা, তার পরিকল্পপনার কথা।


BLACK iz Limited এর শুরুর কথাটা আমাদের বলুন?

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা: BLACK iz Institute নিয়ে আমরা সর্বপ্রথম ২০১১ সালে প্রাথমিক ভাবে আমাদের যাত্রা শুরু করি।
আমরা BLACK iz IT এর নিয়েই আমাদের কাজ শুরু করি। আমাদের মেইন ইচ্ছা ছিল, আমাজন টাইপের প্রোডাক্ট বেস buisness করা। পরবর্তীতে আমাদের যেই BLACK iz IT firm আছে, সেই আইটি ফার্মটার জন্ম হয়। আমরা বিভিন্ন লোকালি এবং ইন্টারন্যাশনালই client নিয়ে আমাদের কাজ শুরু করি এবং এরপর এইসব কাজ করতে করতে আমাদের প্রয়োজনীয়তায় আরও কিছু concerned যোগ হয়। যেমন, Soft coder। এটা BLACK iz এর একটি Sister Concern।
পরর্বতীতে ২০১৪ সালে আমরা BLACK iz কে BLACK iz Limited firm করে ফেলি।  BLACK iz Limited এর আন্ডারে ১৬ টা sister concern কাজ করছে। এরপর মধ্যে কয়েকটা সুনাম-ধন্য কোম্পানির নাম আছে। যেমন, iNEXTerior এটাও BLACK iz Limited এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। BLACK iz IT তো শুরু থেকেই ছিল।এছাড়া Black IZ IT Institute ও BLACK iz Limited এর একটি concern।


BLACK iz Limited এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন।

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা: BLACK iz Limited এ BLACK iz IT তে বর্তমানে ৩০ জন ডেভেলপার, মার্কেটার আছে। এদের মধ্যে ৬ বা ৭ জন যারা আছে তারা লোকালি মার্কেটিং এর কাজ করেন এবং ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে কাজ করবার জন্য এবং টেন্ডডার drop করবার জন্য আরও ১০ জন কাজ করে। BLACK iz Limited তে বর্তমানে সরাসরি কাজ করে মোট  ১২০ জন এবং indirectly কাজ করে অর্থাৎ merchant, vendor এদের সহ আছে আরও প্রায় দেড় হাজার এর মত মানুষ।


BLACK iz Limited মত বাংলাদেশে আরও অনেক বড় বড় আইটি Industry হচ্ছে, তো আমাদের কে বাংলাদেশের আইটি Industry নিয়ে কিছু বলুন।

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা :বাংলাদেশের আইটি Industry বলতে এখন ২ ধরনের আইটি Industry হয়ে থাকে। কারণ, আইটি Industry গুলো হয় local industry হিসেবে কাজ করে, নয় international industry হিসেবে কাজ করে। BLACK iz Limited যেমন বর্তমানে local ও international industry হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। যেমন,দৈনিক ইনকিলাব এর কাজটি আমাদের করা, easy fly express তারা বাংলাদেশের তৃতীয় বিমান সার্ভিস, তাদের সাথেও আমাদের কাজ চলতেছে।এছাড়াও qatar embassy তাদের কাজ ও আমরা করে থাকি।
এখন যদি আমি বাংলাদেশের international আইটি Industry নিয়ে কথা বলতে চাই তাহলে এটাই বলতে পারি। যেহেতু বাংলাদেশের Labour cost কম সেহেতু এরা ভাল অবস্থানে আছে এবং প্রচুর পরিমাণের কাজের চাহিদাও আছে। ফলে তাদের অবস্থা ভালো আছে। যেহেতু এরা প্রচুর কাজ পায় বাহির থেকে সেহেতু তারা তাদের employee দের ভাল একটা support দিতে পারে। আর যেই আইটি firm গুলো localy ব্যবসা করছে। তারা এখনও এতটা ভালো করতে পারে নাই। এখনকার বাস্তব চিত্রটা এমন যে, সব প্রতিষ্ঠানের যে ওয়েবসাইট আছে তা কিন্তু না। কিছু প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট আছে, কিছু প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট নাই।
Last time আমরা একটা survey করেছিলাম, আমাদের দেশের হজ্জ এজেন্সি গুলো নিয়ে। তখন আমার একটা পরিসংখ্যান থেকে দেখতে পারলাম যে, আমাদের দেশের হজ্জ এজেন্সি আছে প্রায় ৮ হাজারের মত। হজ্জ এজেন্সি এর যেই ওয়েবসাইট আছে haab-bd.com, তাদের অন্তর্ভুক্ত যেই হজ্জ এজেন্সি গুলো আছে। তাদের মধ্যে ৯৫% এরই এখন পর্যন্ত কোন ওয়েবসাইট বা সফটওয়্যার নাই।
বাকী ৫% এর হয়তো হয়তো ওয়েবসাইট আছে আর এর মধ্যকার ১% এর হয়তো সফটওয়্যার আছে। তো এ পরিসংখ্যান থেকে আমরা এটাই বুঝতে পারলাম, যারা আমাদের দেশে local আইটি industry হিসেবে কাজ করছে, তারা কেউ তেমন ভালো কোন সাড়া পাচ্ছে না।
তো আমাদের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমারা এটাই আশা করি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমদের দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রতিটা এজেন্সি গুলোর, প্রতিটা টুর সেন্টার গুলোর, সকল অফিস আদালতের এবং এমনকি মাদ্রাসা গুলোর একটি করে ওয়েবসাইট থাকবে।


আপনাদের প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা: BLACK iz Limited এর যদি BLACK iz IT এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা আমি বলি . তাহলে শুধু এটাই বলতে পারি।আমরা বর্তমানে international মার্কেট place এ নিজেদের যে অবস্থানটা রেখেছি, সেই অবস্থানটা শক্ত ভাবে ধরে রাখতে চাই এবং local মার্কেট place এ ও একটি বড় place নিতে চাই।
আমাদের কিছু ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে, বর্তমানে আমরা ৩টা সফটওয়্যার তৈরি করেছি।সেই  সফটওয়্যার গুলোর জন্য একটা মার্কেট place তৈরি করতে হবে এবং আমাদের টার্গেট  ১০০০০ clients তৈরি করা, যারা আমাদের এই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করবে এবং monthly basis এ আমাদের একটা service charge দিবে।এটাই আমাদের বর্তমান টার্গেট এবং এটাই আমরা achieve করতে চাই আগামী ৩ বছরের মাঝে।


আমাদের তরুণ প্রজন্মের যারা আপনার মত কাজ করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন।

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা: আমাদের তরুণরা যদি আইটি ইন্ডাস্টিতে বর্তমানে নতুন ভাবে কাজ করতে চায়, তার জন্য অবশ্যই তাকে প্রথমে আইটির সবগুলো মার্কেটিং সেক্টর সম্পর্কে ভাল ভাবে ধারণা নিতে হবে এবং অবশ্যই তাকে ঠিক করতে হবে  যে, সে কোন সেক্টর এ টিকে থাকতে পারবে এবং ভালো করতে পারবে।কারণ আমাদের আইটি Industry তে রয়েছে ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং সহ আরও অনেক কিছু।
এজন্য অবশ্যই তাকে তার নিজের জন্য একটু ভিডিও এডিটিং, একটু SEO,একটু গ্রাফিক্স ডিজাইন, একটু programming জানতে হবে এবং সে যেই দিক গুলোতে কাজ করে enjoy করতে পারে সেই দিক গুলোও।
যেমন, সে যদি programming ভাল পারে তাহলে programming এর ৩টা language (python, Java, C) সে ভালো মত শিখে নিতে পারে। ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট করতে চাইলে তাকে অবশ্যই (HTML, CSS, PHP, Java Script) শিখে নিতে হবে। সব কিছুর পর তার উচিত একটা firm এ minimum ১ বছর কাজ করা। কাজ করলে সে তাদের কাজের ধরন বুঝতে পারবে। তারপর সে ধীরে ধীরে তার কাজ গুলো করতে পারবে। এভাবে আগালে এবং সে যদি নিজে নিজে চেষ্টা করে সে অবশ্যই একদিন successor হতে পারবে।


টেকটিউনসের সাথে advertising এবং branding করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন?

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা: BLACK iz IT নিয়ে আমরা শুরু করি ২০১৩ দিকে। ২০১৪ সালে প্রথম আমরা টেকটিউনসের সাথে একটা স্পন্সর টিউনের মাধ্যমে কাজ শুরু করি। আমাদের তখনকার স্পন্সর টিউনের টপিক ছিল আমাদের Institute নিয়ে। তখন এডভারটাইসিং করবার জন্য তেমন কোন প্লাটফরম ছিল না। এডভারটাইসিং করবার জন্য যেই প্লাটফরম ছিল সেগুলো হল ekhone.com, bikroy.com। এগুলো তে আমরা এডভারটাইসিং জন্য যেই টাকা খরচ করতাম তার ৫ ভাগের ১ ভাগ টেকটিউনসে খরচ করাতে আমরা অনেক বড় ধরনের সাড়া পেয়েছিলাম।
এরপর থেকে আমরা টানা প্রায় ৫ বা ৬ বছরের মত সবসময় টেকটিউনসে এডভারটাইসিং করেছি। বর্তমানে আমরা আমাদের IT Institute নিয়ে হয়তো ঐভাবে আর কাজ করতে পারছি না অন্যান্য কাজের চাপ বেশি থাকবার কারণে। BLACK iz IT Institute এখন তাদের premium course গুলো  কম করাচ্ছে। কিন্তু paid course গুলো running নাই‌। আমাদের premium course গুলো আমরা সাধারণত প্রতি ৩ মাস পর পর করাবার চেষ্টা করে থাকি। কিন্তু paid course গুলো running হলে আমরা সাধারণত টেকটিউনসের স্পন্সর টিউন কাজ করে থাকবো। টেকটিউনসের এডভারটাইসিং টা খুবই effective।
কারণ টেকটিউনসে যেই ইউজার রা আছে সবাই classified করা। একটা news portal এ যখন আমরা কোন আইটি রিলেটেড কোন news শেয়ার করবো, সেখান থেকে যেই পরিমাণ response আমারা পেয়ে থাকব। টেকটিউনসের এ সেই news শেয়ার করলে আমরা ১০০% response পেয়ে থাকব এবং টার্গেট কাস্টমার reach করতে পারব সহজেই।


টেকটিউনস সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ আছে?

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা: টেকটিউনসের সম্পর্কে সবার আগে এটাই বলতে চাই, আপনাদের টিউন এর কোয়ালিটি আরও বাড়াতে হবে। টিউন moderate এর বিষয়ে আরও জোর দিতে হবে।কারণ মানুষ যখন এখানে টিউন পড়তে আসে,তখন তারা যাতে কোন কিছুতে বিরক্ত না হয়। টেকটিউনসে ইউজারের জন্য আরও flexible করতে হবে। টেকটিউনসে মানুষ সবসময় মানসম্মত টিউন পড়তে চায়।


টেকটিউনস বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে এক বিপ্লব সৃষ্টি করেছে, এই ক্ষেত্রে আপনার মতামত কি?

মোহাম্মাদ মেহেদি মেনাফা: এটা তো অবশ্যই! যেমন আমি আমার কথা দিয়ে শুরু করি। আমার career এর শুরুতে আমরা তেমন কোন আইটি টেইনিং ছিল না পরবর্তী হয়তো আমি বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করেছি। কিন্তু আমার হাতেখড়ি হয়েছে এই টেকটিউনস থেকে। কারণ আমি ইংরেজি হয়তো তখন এত ভাল পারতাম না, তাই আমার এক মাত্র উপায় ছিল টেকটিউনস। টেকটিউনস যে বাংলাদেশের আইটি জগততে এক বিরাট অবদান রেখেছে, এটা আমাদের BLACK iz Limited এর পুরনো যে সকল সদস্য আছে, তারা সকলে স্বীকার করে থাকে।
আমরা BLACK iz Limited এর পক্ষ থেকে টেকটিউনসকে অনেক বেশি ধন্যবাদ জানাই।

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/508187

49
টেকটিউন সুপার সাকসেসোর গেস্ট: হাসান যোবায়ের, প্রতিষ্ঠাতা, প্রযুক্তিটিম
টেকটিউন সুপার সাকসেসোর হোস্ট: রুবিনা ইয়াসমিন
টেকটিউন সুপার সাকসেসোর ভিডিও ইডিটর: সৈকত রায়ান
ব্যাপ্তিকাল: প্রায় ১২.৪৮ মিনিট
--

হাসান যোবায়ের টেকটিউনসের প্রথম সারির একজন টিউনার। টেকটিউনসের অতি পরিচিত একজন মানুষ। টেকটিউসের শুরু থেকেই উনি টেকটিউনসের জনপ্রিয় একজন টেকটিউনার। উনি টেকটিউনস একজন টপটিউনার ও। এখন পর্যন্ত উনি টেকটিউনসের ১৩ তম টপ টিউনার। টেকটিউনস উনার রয়েছে ২০০ এর কিছু কম টিউন। টেকটিউনসে উনার ফ্যান ফলোয়ারের কোন কমতি নেই। টেকটিউনসের অন্যতম ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্য উনি একজন। টেকটিউনসের অন্যতম জনপ্রিয় টিউনাদের মধ্যে তিনি একজন।

টেকটিউনসের বাইরেও উনি একই সাথে একজন অ্যানিমেটর ও ব্লগার। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ করছেন, পেয়েছেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার। ২০১৬ সালে তার তৈরি থ্রিডি কম্পিউটার অ্যানিমেশন শর্ট ফিল্ম 'হ্যাপি ওয়ার্ল্ড' পেয়েছে 'উই আর্ট ওয়াটার ফেস্টিভ্যাল ৩'-এর 'পাবলিক প্রাইজ' অ্যাওয়ার্ড।

এছাড়া ২০১৪ সালে বাংলাদেশের ন্যাশনাল ফিল্ম প্রতিযোগিতায় 'ফিরে এসো ফারিয়া' নামক শর্ট ফিল্মটির জন্য তিনি পেয়েছেন 'বেস্ট ফিল্ম পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড'। নবীনদের জন্য তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক বাংলা টিউটোরিয়াল সাইট 'প্রযুক্তি টিম ডটকম' তৈরি করেছেন এই অ্যানিমেশন সিনেমা নির্মাতা।
উনার নিজেস্ব প্রতিষ্ঠান 'প্রযুক্তি টিম' সাইট থেকে রিলিজ করা বেশ কিছু টিউটোরিয়াল ডিভিডি রয়েছে। ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, ভিডিও এডিটিং ডিভিডিগুলো হয়েছে রকমারি বেস্ট সেলার।

আজকে 'টেকটিউনস Super Successor' এ আমাদের সাথে কথা বলার জন্য, আমাদের সকলের পরিচিত এবং টেকটিউনসের অনেক সিনিয়র এই টিউনার আমাদের সাথে আছেন।
উনি টেকটিউনসের নিয়মিত একজন Loyal Advertiser ও এবং নিয়মিত টেকটিউনসের সাথে উনার প্রযুক্তি টিমের ব্যান্ডিং করে আসছেন।

টেকটিউনস এর এডভারটাইজিং এবং ব্র্যান্ডিং নিয়ে হাসান যোবায়ের যা বলেন:
"টেকটিউনস এর সবচেয়ে বড় Advantage হল এখানে প্রচুর পরিমিণে ভিজিটর আছে। এটা অন্যান্য পত্রিকায় অথবা অন্য কোথাও বিজ্ঞাপন দিয়ে পাওয়া সম্ভব না। এটা হচ্ছে টেকটিউনসের সবচেয়ে বড় Advantage। এখানে Huge পরিমানের Crowd আছে। এখানে সবাই প্রযুক্তিপ্রেমী। আমরা যারা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসি। তাদের জন্য এটা একটা বড় Platform যেখানে আমরা Advertising এর কাজটি করতে পারি।
আমি নিজেও প্রযুক্তিটিম নিয়ে এখানে এডভারটাইসমেন্ট করি। এখানে সবাই হচ্ছে প্রযুক্তি প্রেমিক। এখানে এডভারটাইসমেন্ট করাতে খুব সহজে এ বিশাল ইউজারদের reach করা যায়।
আমি টেকটিউনস এর এই প্লার্টফরম নিয়ে খুবই আশাবাদী। আশা করি টেকটিউনস তাদের এডভারটাইজিং এবং ব্র্যান্ডিং এর জন্য আরও  নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবে।"

হাসান যোবায়ের টেকটিউনস এর Super Successor
হাসান যুবায়ের টেকটিউনসের জন্মলগ্ন থেকে টেকটিউনসে টিউনার হিসেবে নিজের জ্ঞান অন্যকে বিলিয়ে আসছেন। এখনও সুযোগ পেলে  টিউন করেন আর টেকটিউনস এর কথা বলতে ভুলেন না। তিনি তৈরি করেছেন নিজের অসংখ্য টেকটিউনস ফলোয়ার। নিজেকে করছেন প্রতিষ্ঠিত।

টেকটিউনস কমিউনিটির রোল মডেল তিনি। টেকটিউনস কমিউনিটির তিনি একজন Super Successor.

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/501157

50
টেকটিউন সুপার সাকসেসোর গেস্ট: বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস,  প্রতিষ্ঠাতা, Amarshop24.com
টেকটিউন সুপার সাকসেসোর হোস্ট: রুবিনা ইয়াসমিন
সময়: মঙ্গলবার, ৫ জুলাই ২০১৭। দুপুর ২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ১২.৪৮ মিনি
স্থান: Aamrshop24 অফিস, ঢাকা।

বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস  তার পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি নতুন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ফার্মে  কাজ শুরু করেন।সেখানে তিনি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টে কাজ করতেন। এরপর তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন টেলিকম দিয়ে, তিনি দেশে এবং দেশের বহিরে  পিএসটিএন, সিডিএমএ এমএনও এবং আন্তর্জাতিক গেটওয়ে নিয়েও কাজ করেছেন। তার অভিজ্ঞতা আছে  বড় দল পরিচালনা করায় তার স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক দলের সদস্যদের সঙ্গে  ।

তিনি সফ্টওয়্যার ডিজাইন ও ইমপিলিমেন্টটেশন, মার্কেট ও ডাটা  analysis  এবং strategic business পরিকল্পনায় অনেক দক্ষতা রাখেন। তিনি  তার নিজের উদ্যোগে ২০১৫ সালে  তার ই-কমার্স সংস্থা "amarshop24.com" শুরু করেন। তার প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় পোশাকের মান এবং সেবা দিকে। অন্যদিকে, তিনি কয়েকটি অনলাইন ভিত্তিক সেবার মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার ফার্ম শুরু করেছেন এবং খুব শীঘ্রই তিনি তার নিজস্ব  ব্র্যান্ডের পোশাকের কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন।

আজকে 'টেকটিউনস Super Successor' এ আমাদের সাথে কথা বলার জন্য, আমাদের সকলের পরিচিত বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস  আমাদের সাথে আছেন।


Aamrshop24 এর শুরুর কথাটা আমাদের বলেন?

বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস - Amarshop24 আমরা শুরু করি ২০১৫সালের নভেম্বর এ।আমি তখন দেশের বাহিরে জব করতাম।প্রতি ৩মাস পর পর আমি দেশে আসতাম।একদিন আমার এক বন্ধুর সাথে কথা হল। সে বলল, সে একটা ই-কমার্স সাইট শুরু করতে চায়।তার সব কিছু তৈরি করা আছে। কিন্তু সে একা শুরু করতে পারছে না। সে আমাকে নিয়ে তার কাজ শুরু করতে চাইল।আমি আমার বন্ধুকে বললাম, আমাকে তার সম্পূর্ণ পরিকল্পনা জানাবার জন্য।
যেহেতু আমি IT background এর এবং আমার thesis topic ছিল e- commerce।জানুয়ারি থেকে আমরা plan করা শুরু করি।এরপর background এর অনেক কাজ চলে কয়েক মাস ধরে। যেহেতু আমি দেশের বাহিরে থাকতাম এবং সব সময় আসা যাবার মাঝে ছিলাম। তাই আমরা skype বা মেইল এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতাম। পরে আমরা দুজন মিলে আমাদের যাত্রা শুরু করলাম।
আমরা সব পরিকল্পনা শেষ করে, আমাদের ওয়েবসাইটের কাজ শেষ করে, SSL এর সাথে কথা বলে, বিকাশ একাউন্ট করে সকল ধরনের registration কাজ শেষ করে আমারা আমাদের সাইট launch করি।আমরা আমাদের কোম্পানি ২০১৫ এর নভেম্বর এর ২০ তারিখ launch করেছি।
আমরা আমাদের কোম্পানি launch করবার পর আমারা বড় ধরনের একটা সমস্যার মুখোমুখি হই। কারণ যেইদিন আমরা আমাদের প্রোডাক্ট launch করেছি, ঐদিন থেকেই বাংলাদেশে ফেইসবুক বন্ধ করে দেয়া হয়।
ফেইসবুক প্রায় ২ সপ্তাহের মত বন্ধ ছিল।বাংলাদেশের মানুষ এখন ই-কর্মাস মানে চিন্তা করে এফ-কর্মাস।এরপর আমরা যখন আমাদের কাজ সম্পূর্ণ ভাবে শুরু করলাম।অনেক ভাল response পেতে শুরু করলাম। তো আমরা অনেক encouraged হতে শুরু করি। আমরা আমাদের প্রোডাক্ট কালেকশন নিজেরা দিয়ে শুরু করি।
আমরা আমাদের নিজেদের প্রোডাক্ট নিয়েই কাজ করতে শুরু করি।


Amarshop24 এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলেন।

বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস: আমরা ধীরে ধীরে আমাদের কার্যকম বাড়াতে থাকি। এডভারটাইসমেন্ট এর পরিমাণ বাড়াতে থাকি। কিন্তু এডভারটাইসমেন্ট এর পরিমাণ বাড়াবার পরও আমাদের সেলের পরিমাণ বাড়ে না। আমাদের Ad per sale এর পরিমাণ কমে আসছে।আসলে বাংলাদেশের পেক্ষাপটটাই এমন হয়ে গিয়েছিল।
আমরা survive করবার চেষ্টা করছিলাম। এখন আমি মূলত আমাদের কোম্পানির ব্যান্ডিং এর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি।কারণ ব্যান্ডিং এর মাধ্যমে আগে ইউজারদের কাছে পরিচিতি বাড়াতে হবে।আমার মেইন প্রোডাক্ট হচ্ছে male and Female cloth। আমরা মেইনলি পোশাক নিজেরাই order দিয়ে তৈরি করি। Amarshop24 আমাদের মেইন selling Point।
আমরা বড় বড় ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির প্রোডাক্ট sell করি এবং আমাদের নিজস্ব ব্যান্ডির প্রোডাক্ট গুলো sell করে থাকি।আমাদের এখনকার মেইন টার্গেট হচ্ছে, আমাদের নিজস্ব ব্যান্ডটাকে establish করা।


Amarshop24 নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস: Amarshop24 নিয়ে আমার পরিকল্পনা অনেক। আমি এটাকে অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাই।আমি চাই মানুষের মনে এমন একটা ধারনার সৃষ্টি করতে,যাতে যখন মানুষ কোন cloth কিনবার কথা চিন্তা করলেই সবার আগে যাতে Amarshop24 এ ভিজিট করে।এমন একটা ধারনা মানুষের মনে set করে দিতে চাই।
আমাদের দেশের মানুষ এখনও online shopping এ অভ্যস্ত না। এটার জন্য সময়ের প্রয়োজন।তো যখন মানুষ এগুলোতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।তখন অবশ্যই কোন প্রোডাক্ট কিনবার আগে অবশ্যই Amarshop24 থেকে প্রোডাক্ট সম্পর্কে ধারনা নিয়ে তারপর প্রোডাক্ট কিনবে Amarshop24 থেকে।


আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য কিছু বলুন, যারা আপনার মত এই buisness এ আসতে চায়।

বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস: তরুণরা এখন আর পিছিয়ে নেই। তারাও শুরু করছে।কিন্তু তাদের একটা অনেক বড় ভুল ধারনা থাকে যে,
ই-কর্মাস নিয়ে কাজ করা এতটা expensive না।তারা চিন্তা করে এটা খুবই সহজ একটা কাজ। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী।আমি analysis করে দেখেছি, একটা শো-রুম এর যেই ভাড়া তার সাথে যদি compare করা হয় একটা ই-কর্মাস এর এডভারটাইসিং এবং ব্যান্ডিং এর বিষয়ে তাহলে দাখা যায় একটা ই-কর্মাস এর খরচ অনেক বেশি হয়।
এজন্য তরুণরা যখন ই-কর্মাস নিয়ে কাজ শুরু করবার চিন্তা করে অবশ্যই যাতে আগে product quality এবং customer satisfaction নিয়ে কাজ করতে হবে।product quality এবং customer satisfaction নিয়ে যা কিছু করা লাগে তা করে long term planning করে কাজ করে।
আর একটা কথা হচ্ছে। এখন eCommerce business দুই ভাবে হয়ে থাকে। কিছু ই-কর্মাস, যারা অন্য merchan এর product নিয়ে এসে sale করে। আরেকটা হচ্ছে যারা নিজেদের product নিজেদের ওয়েবসাইটে সেল করে।অনেকে Commission base এ কাজ করে। তো অবশ্যই আগে নিজের লক্ষ্য টাকে ঠিক করতে হবে,যে সে কিভাবে কাজ করতে চায়।
তরুণরা এই platform এ আসছে। এটাই সবচেয়ে বড় পয়েন্ট।কিন্তু ই-কর্মাস এর সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে,তা হল quality maintain করতে হবে।


টেকটিউনস এ এডভারটাইসমেন্ট এবং ব্যান্ডিং করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন।

 বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস: Amarshop24 নিয়ে আমরা যখন টেকটিউনস এ এডভারটাইসমেন্ট এবং ব্যান্ডিং করেছি, আমার সাইটে প্রচুর ট্রাফিক বেড়েছে।আমি যখন আমার traffic static দেখেছি।আমার ৮০% traffic আমি টেকটিউনস থেকে পেয়েছি॥ কিন্তু আমি ফেইসবুক থেকেও তেমন traffic পাই নাই।


টেকটিউনস এ এডভারটাইসমেন্ট এবং ব্যান্ডিং নিয়ে আপনার কোন পরামর্শ আছে।

 বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস: টেকটিউনস এ এডভারটাইসমেন্ট এবং ব্যান্ডিং এর platform এ বড় বড় company গুলো তাদের এডভারটাইসমেন্ট এবং ব্যান্ডিং করছে নিয়মিত।
আমার মনে হয়,টেকটিউনস এর উচিত startup company গুলোর জন্য ভিন্ন এডভারটাইসমেন্ট এবং ব্যান্ডিং package করা এবং বিভিন্ন সুযোগ দেয়া।যাতে startup company গুলো সহজেই এই platform এর সাথে কাজ করতে পারে।


টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে এক বিপ্লব সৃষ্টি করেছে, এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি।

 বিপ্লব চন্দ্র বিশ্বাস: টেকটিউনস খুবই এত অল্প সময়ে মানুষের কাছে থেকে অনেক বিশাল জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ইউজাররা বিভিন্ন জিনিস শেখার জন্য নিয়মিত টেকটিউনস ভিজিট করে থাকে।
আমি নিজেও বিভিন্ন জিনিস শেখার জন্য বা জানার জন্য টেকটিউনসে ভিজিট করে থাকি।আমি হয়তো অত ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইনিং পারিনা।কিন্তু গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর বিভিন্ন জিনিস শিখে এবং টিপস পেয়ে আমি অনেক উপকৃত হয়েছি টেকটিউনস থেকে।Technology knowledge শেয়ার জন্য এটি একটি বিরাট বড় platform। " I like this platfrom"

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/507969

51
টেকটিউনস Super Successor গেস্ট:  রাজিব আহসান, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, Cyber Developer BD
সময়: ২৯ আগষ্ট ২০১৭।দুপুর ১২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ২০ মিনিট
স্থান: Cyber Developer BD এর অফিস, ঢাকা।

টেকটিউনস Super Successor হিসেবে আজকে  হাজির আছে বাংলাদেশের আইটি জগতের একজন পরিচিত মুখ এবং টেকটিউনসের অনেক সিনিয়র একজন টিউনার। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে আছেন টেকটিউনসের সাথে। যার আইটি এই জগতের চলার পথ ছিল আমাদের টেকটিউনস।

ফ্রিলান্সিং ছিল তার নেশা এবং পেশা। ফ্রিলান্সিং নিয়ে সে সব সময় টেকটিউনস এর ইউজারদের জন্য লিখে অনেক টিউটোরিয়াল। ফ্রিলান্সিং এরপর তিনি তার ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে হোস্টিং বিজনেসকে। আজকে আমরা Cyber Developer BD এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রাজিব আহসান ভাইয়ের কাছ থেকে শুনব বাংলাদেশের ফ্রিলান্সিং এবং হোস্টিং ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কিছু কথা।


Cyber Developer BD এর শুরুর কথাটা আমাদের বলুন?

Cyber Developer BD এর কাজটা আমি শুরু করেছি ফ্রিলান্সিং থেকে। আমি ২০১০ সাল থেকে ফ্রিলান্সিং এর সাথে জড়িত আছি। আমি আগে ব্লগিং এর সাথে যুক্ত ছিলাম। আমি টেকটিউনসে প্রচুর লিখালিখি করেছি।২০১১,২০১২ সালের দিকে আমি প্রচুর লিখালিখি করেছি।
ওখান থেকেই আসলে অনেকের সাথে পরিচয় হয়,অনেক উৎসাহ পেয়ে দুইজন মিলে পার্টনারশিপে আসলে শুরু করা হয়েছে Cyber Developer BD। ২০১২সাল থেকে আসলে Cyber Developer BD শুরু করা। একদিন মাথায় আসল যে হোস্টিং ব্যবসায় আসা দরকার। তখন তারেক হোসেন বিন ভাইয়ের সাথে যুক্ত হয়ে এই Cyber Developer BD টা শুরু করা।
নরমালই একেবারেই ছোট ভাবে আমি এটা শুরু করেছি রিসালার হোস্টিং নিয়ে।আর সাধারণত যেই সমস্যা গুলো হয়। যেমন, বাজেট কম, বিজনেস করতে গেলে আগে অনেক প্ল্যানিং এর দরকার হয়, আমাদের ওইধরনের কোন প্ল্যানিং ছিল না।তো আমাদের শুরু এমনি ছিল যে, কোন প্রকার প্ল্যানিং ছাড়া হুট কেই একটা বিজনেস শুরু করা।


আপনার প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থার কথা আমাদের বলুন?

বর্তমানে আসলে ফ্রিলান্সিং করে তো এদিকে সময় দিতে পারব না।তাই এখন ফ্রিলান্সিং ছেড়ে দিয়ে হোস্টিংকে মেইন বিজনেস হিসেবে আমি নিয়েছি।আমাদের সার্ভিস আগে থেকে এখন অনেক ভালো, কাস্টমার আগের থেকে অনেক বেড়েছে।এখন এটাই আমার মেইন বিজনেস। আমরা চেষ্টা করছি কাস্টমারদের ভালো সার্ভিস দেবার জন্য।


অন্যদের থেকে কেন আপনাদের সার্ভিস better?

হোস্টিং বিজনেসে আমরা আছি ৫ বছর ধরে।আমরা এখন অনেক Experienced। তাই অন্যান্য কোম্পানি গুলোর থেকে আমরা ভালো বুঝতে পারি কাস্টমারদের কি ধরনের সমস্যা হয়, কি কি সাপোর্ট দরকার হয়। এ সব কিছু কিন্তু আমরা মোটামুটি ভালো জানি। এক্ষেত্রে আমরা কাস্টমারকে অবশ্যই অনেক ভালো একটা সাপোর্ট দিতে পারব। দ্বিতীয়ত, আমরা কাস্টমারকে সকল ধরনের সাপোর্ট দিতে পারব।
সেক্ষেত্রে কাস্টমাররা যদি তাদের সার্ভার যদি পুরপুরি delete করে ফেলে বা সার্ভারে যদি কোন সমস্যা তাহলে তারা সাইট re- install করতে পারবে।আমরা সাপোর্ট নিশ্চিত করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে। যেমন, নতুন কোম্পানির কথাই যদি বলি, তাদের তো সাপোর্ট এর এমন কোনই ব্যবস্থা নাই। তাদেরকে কল দিলেও দেখবেন তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে এমন কোন অবস্থা হয় না। আমরা লাইভ সাইট সাপোর্ট রেখেছি, টিকেট সাপোর্ট রেখেছি, over the phone এ আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে।
এখন হতো অনেকেই সাজেস্ট করে দেশের বাহিরে কেনার জন্য। কিন্তু তাদের কাছে থেকে কিনলে হয়তো আপনি তাদের কাছ থেকে এত ইজিলি সাপোর্ট গুলো পাবেন না বা ফোনে হয়তো এত সহজে পাবেন না।যতটা পাবেন আমাদের কোম্পানি গুলোকে।আমরা এবং আরও যেই সকল কোম্পানি আছে বাংলাদেশে।


বাংলাদেশের হোস্টিং ইন্ডাস্ট্রি এবং ফ্রিলান্সিং ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন?

বাংলাদেশের ফ্রিলান্সিং ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অনেক compitative একটা অবস্থা চলে এসেছে।বিশেষ করে সরকারী বিভিন্ন ট্রেনিং এবং সরকারী কিছু উদ্যোগ এটার পর আসলে অনলাইনে যারা কাজ করতে চাচ্ছে এবং যাদের হালকা পাতলা যদি কোন আইডিয়াও থেকে থাকে, তারাও ফ্রিলান্সিং করছে। আসলে পজিটিভ কিছু বলার নাই এটা নিয়ে কারণ এটার অবস্থা কিছুটা খারাপের দিকেই বর্তমানে।কারণ যারা unexperienced তারাই এখন ফ্রিলান্সিং এ যুক্ত হয়েছে।যার কারণে এখন মার্কেটে কাজ পাওয়া অনেক কঠিন। আসলে এখন বলতে গেলে worker বেশি, buyer কম। বিকল্প একটা সুযোগ আসলে, হোস্টিং এর ব্যবসা বলবনা, হোস্টিং এর ওয়েবসাইট বানিয়ে মানে নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে নিজে ইনকাম করা।
যেমন আমি দুই একটা উদাহরণ দিতে পারি, কেউ হয়তো একটা সাইট বানালও ব্লগিং করবার জন্য বা বিভিন্ন টিউন দিয়ে বা রিভিউ দিয়ে। সে কিছু কোন এডসেন্স দিয়ে সহজেই ইনকাম করতে পারবে। এখন আমি যেটা বলব সেটা হচ্ছে, ওডেক্স বা আপ-ওয়ার্ক যেটা বা freelancer.com, একটু পরিশ্রম বেশি হলেও এখান থেকে ইনকাম করা অনেক সহজ। শুধু ব্লগ না, বিভিন্ন ডাউনলোড ওয়েবসাইট, রিভিউ সাইট বিভিন্ন সাইটের সুযোগ আছে।যেটা আপনাকে নিজে নিজে ইনকাম করতে সাহায্য করবে। এফিলেট আছে। এফিলেটের একটা ওয়েবসাইট এর একটা ল্যান্ডিং একটা পেইজ করেন বা ব্লগ করেন। এগুলোকে পপুলার করতে পারে। এখান থেকেই ইনকাম করা সম্ভব।
আমার কাছে যেটা মনে হয়, ফ্রিলান্সিং এর তুলনায় এই সেক্টরে কাজ করা ইজি এবং এখানে যদি কেউ একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে কাজ করে। তাহলে সে এখান থেকেও একটা ভালো কিছু করতে পারবে।
কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এ এখন অনেক কিছুই পারবে না কারণ এখানে এখন অনেক inexperienced লোক ভরে গিয়েছে। যেখানে হয়তো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অবস্থা আরও খারাপ।


আপনার প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

বর্তমানে আমরা দেশের বাহিরেও আমাদের সার্ভিস দিচ্ছে। USA, Canada সহ ২০টার উপরে দেশে থেকে আমাদের কাস্টমার আছে।আমার ইচ্ছা যাতে, সারা বিশ্বের মানুষ Cyber Developer BD কে চিনবে। যেহেতু বাংলাদেশ নিয়ে সারা বিশ্বে একটা খারাপ ধারনা আছে।আমি চেষ্টা করছি, যাতে করে খারাপ ধারনা গুলো দূর করা যায় এবং বাংলাদেশের বাহিরেও আমরা যেন ভালো পরিচিতি লাভ করতে পারি ভালো সার্ভিস দিয়ে।
অনেকে আমাকে সাজেস্ট করেছে আমাদের domain name এর মাঝে যেন BDকথাটা না থাকে।তাহলে নাকি আমরা আরও ভালো করতে পারব। কিন্তু আমি চাচ্ছি আমি এই নাম নিয়েই এগিয়ে যাব সারা বিশ্বের মধ্যে।Cyber Developer BD এখন অনেকেই ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের মধ্যে এখন Cyber Developer BD অনেক পরিচিত একটা নাম।


আমাদের তরুণদের জন্য কিছু বলুন। যারা আপনার মত এই ব্যবসায় আসতে চায়?

কম টাকা দিয়েও হোস্টিং বিজনেস করা সম্ভব।কিন্তু প্রথমেই মনে রাখতে হবে, এটা একটা বিজনেস।অবশ্যই বিজনেস শুরুর আগেই অনেক প্ল্যান ও প্রোগ্রাম করা দরকার। আমি কিভাবে আগাবো। আমাদের টার্গেট কাস্টমার কারা।আমরা মার্কেটিংটা কিভাবে করব। আমাদের প্রোডাক্টগুলো কি কি। আমরা কি কি প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং এ আগাব।এ সবকিছু কিন্তু আগে ঠিক করতে হবে।
আমাদের অফিস স্পেস থাকবে কি না। আমাদের স্টাফ কয়জন থাকবে। এসব কিছু প্লান করবার পর আমাদের আগাতে হবে এবং অবশ্যই প্রথমে আমাদের বাজেটটা ঠিক করে নিতে হবে।যে আমি এত টাকা পর্যন্ত monthly বা yearly আয় করতে পারব এবং অবশ্যই আমাদের একটা রিজার্ভ বাজেট রাখতে হবে।যদি আমি এই কয়েক মাস ইনকামও করতে না পারি।আমি যাতে ব্যাকআপ হিসেবে টাকাটা খরচ করতে পারব। আমার মনে হয় কেউ যদি এভাবে চিন্তা করে মার্কেটিং এর শুরু থেকে এই হোস্টিং বিজনেসে লাগে তাহলে মনে হয়, সে মোটামুটি ডেভেলপ করতে পারবে। আর একবার young যারা আসতেছে, তারা যদি এত কম বয়সে না এসে একটা নিদিষ্ট বছর পার করবার পর বিজনেস শুরু করা দরকার। কারণ প্রথমত এখানে একটা maturity এর ব্যাপার আছে।
আমি খেয়াল করে দেখেছি, অনেকে এসএসসি পাশ করে বা ১০ বা ৯ শ্রেণীতে পড়তেছে। এরাও এ বিজনেসে আসছে। কিন্তু আমি এদের বিজনেসে আসতে না করছি না। আসুক কিন্তু একটা বয়স এর পর।তখন এদের মাঝে কিন্তু maturity থাকবে একটা বিজনেস করবার জন্য।


টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে এক বিশাল অবদান রেখেছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

আমি তো আগেই বলেছি আমি টেকটিউনসের একজন নিয়মিত পাঠক এবং ব্লগ লিখতাম। বেশ একটিভ একজন ব্লগার ছিলাম আমি ২০১১, ২০১২ এর দিকে।পরবর্তীতে হোস্টিং ব্যবসার কারণে ধীরে ধীরে ঐখান থেকে কিছুটা সরে আসতে হয়েছে।আসলে সময় দিতে পারি নাই।আমি আসলে এটা স্বীকার করি। টেকটিউনস থেকে শিক্ষা অনেক কিছু আছে। টেকটিউনসকে দীর্ঘ দিনের একটা archive বলা চলে। প্রযুক্তির বিভিন্ন তথ্য, ফ্রিলান্সিং বলুন, সামান্য মোবাইলের কোন সমস্যার কথা বলুন, এই সব কিছুর সমাধান টেকটিউনসে খুঁজলেই পাইয়া যাবে।
আমার ছোট যত ভাইরা আছে, আমি সবাইকে সাজেস্ট করি টেকটিউনসে পড়বার জন্য।
কেই যদি ফ্রিলান্সিং এ আসতে চায়, টেকটিউনসে তার সকল টিউটোরিয়াল পাওয়া যাবে। কেউ যদি তথ্য প্রযুক্তি নিজে কিছু জানতে চায়। সেটাও খুঁজতে গেলে তা টেকটিউনসে পাওয়া যাবে। আমি নিজেও অনেককে টেকটিউনস সাজেস্ট করে থাকি টেকটিউনস পড়বার জন্য।


টেকটিউনসে এডভারটাইসিং এবং ব্যান্ডিং করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন।

মার্কেটিং এ আসলে যেইভাবে উপকৃত হওয়া যায়, সেই ভাবেই উপকৃত হয়েছি। এটা একটা প্রযুক্তি রিলেটেড ব্লগ। এখানে প্রচুর ভিজিট আছে।এখানে প্রযুক্তি রিলেটেড যারা এবং যারা ওয়েবসাইট বানাবে। এমন ভিজিটর হবার সম্ভাবনাই বেশি। এখান থেকে আমি প্রচুর ভিজিটর আমি পেয়েছি।


টেকটিউনস সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ আছে?

টেকটিউনসের টিউনের মান গুলো আরও ভালো করা দরকার। টিউন গুলো ভাল মত মনিটরিং করা দরকার।আপনাদের এড গুলো নিয়েও আমি বলতে চাই।আপনাদের এডগুলোর মাঝে যেন কোন ভুয়া কোম্পানির এড না চলে। সেই দিকে আপনাদের একটু বিশেষ খেয়াল রাখা দরকার।
কারণ, এই সকল ভুয়া কোম্পানির এড দেখে মানুষজন প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে।এখন আমি যদি এড দেই, কাস্টমার আমার কোম্পানিকেও ভুয়া ভাবতে পারে। এটা আপনাদের একটু বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/513427

52
টেকটিউন Super Successor গেস্ট:  আরাফাত রহমান, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, Host Aroma
সময়: সোমবার, ২১ আগষ্ট ২০১৭।দুপুর ১২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ২০ মিনিট
স্থান: Host Aroma এর অফিস, ঢাকা।

টেকটিউনস Super Successor হিসেবে আজকে  হাজির আছে বাংলাদেশের আইটি জগতের একজন পরিচিত মুখ এবং টেকটিউনসের অনেক সিনিয়র একজন টিউনার। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে আছেন টেকটিউনসের সাথে। যার আইটি এই জগতের চলার পথ ছিল আমাদের টেকটিউনস।
তিনি আজ নিজেকে একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরেছেন।আমাদের তরুণদের জন্য উনি অনেক বড় একটি উদাহরন। তিনি হচ্ছেন আমাদের সকলের পরিচিত  Host Aroma এর পরিচালক আরাফাত রহমান। আজ তার মুখ থেকেই শুনব, ্তার সাফল্যের কিছু কথা।


আপনাদের কোম্পানির শুরুর কথাটা আমাদের বলুন?

আসসালামুআল্লাইকুম, আমি আরাফাত রহমান। Host Aroma এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। আমাদের শুরুটা সম্পূর্ণ গ্রাম থেকে। ময়মনসিংহ জেলার, ভালুকা উপজেলার, বেরুনিয়া ইউনিয়ন এর কেচেন গ্রাম। আমরা আমাদের hosting buisness এর শুরুতে কোন টাকা invest করি নাই। আমরা ২০১৩ সাল থেকে এটা শুরু করি।
আমরা ২০১৩ সালের আগস্টে ক্লায়েন্ট এর কাছে থেকে domain and hosting এর একটা কাজ পাই।এটা একটা কর্পোরেট ক্লায়েন্ট ছিল। কাজটা করে আমরা যেই পরিমাণ টাকা পাই, সেই টাকা দিয়ে আমারা একটা web hosting reseller package নেই। আমি দুইটা domain কিনি একটা আমাদের জন্য আরেকটা client এর জন্য।
তো আমরা যেই startup company টা শুরু করেছিলাম তার নাম ছিল greenitbd.com।সেখান থেকেই আসলে মূলত hosting industry তে প্রবেশ করা। যেহেতু এটা ১ বছরের জন্য নেয়া ছিল তাই ১ বছরের মধ্যে আর কোন dealing নিয়ে চিন্তা করতে হয় নাই।
আমরা তখন টেকটিউনস সহ আরও কিছু ব্লগ পড়তাম। সবচেয়ে বেশি টেকটিউনসই পড়া হতো। ঐখান থেকে বেশ কিছু friend পাই। যখন টেকটিউনসে টিউন লিখতাম নিচে আমার ফেসবুক আইডিও দিয়ে দিতাম। তো আমি সেখান থেকে বেশ কিছু ক্লায়েন্ট পাই। ২০১৩ সালে, তেমন না ৩ থেকে ৪ জন ক্লায়েন্ট হবে।
আমরা ডিসেম্বর এর শুরুর দিকে কিছু প্রতারণার শিকার হই। যেই company এ থেকে web hosting reseller package নিয়েছিলাম, সেই company এর কাছ থেকেই প্রতারণার শিকার হই। তারা আমাদের access দিচ্ছিল না, এক-দুইজন বড় ক্লায়েন্টের সাইটগুলো suspense করে দিয়েছিল। এ ধরনের আরও কিছু সমস্যা হচ্ছিল। যার জন্যর আমরা hosting টা change করে ফেলে mymensinghsource.com এ নামে শুরু করি। একটা কথা বলে রাখি, তখন আমি একা ছিলাম না। আমার সাথে আমার এক friend ও ছিল। আমি এবং জিহাদুর রহমান নয়ন।
আমরা দুইজনই শুরু করেছিলাম। আমরা ২০১৪ সালের জানুয়ারির ২ তারিখ থেকে এটা শুরু করি mymensinghsource.com এ নামে এবং greenitbd.com এর যেই কয়টা panel ছিল, ঐগুলো সব আমরা এখানে transfer করে নিয়ে আসি। ২০১৪ সালে যেটা শুরু করেছিলাম, সেটা master reseller package দিয়ে শুরু করি। ২০১৪ সালে আমরা আরও বেশ কিছু ক্লায়েন্ট পাই। ঐটা আমাদের monthly package ছিল। তাই monthly টাকা দিতে হতো। ঐটাতে আমাদের তেমন problem হতো না। ২০১৪ সালে আমাদের প্রায় ১৫-২০ জনের মত ক্লায়েন্ট হয়।
২০১৫ সালে এটাকে আর একটু ভালো ভাবে শুরু করি। আরও actively কাজ করা শুরু করি, ব্লগিং এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেই, ফেসবুকিংটা একটু বেশি করি, ফেসবুক পেইজ এবং গ্রুপ গুলোতে একটু সবকিছু শেয়ার করা শুরু করি এবং বিভিন্ন প্রমোশন এবং অফার দিতে থাকি। আস্তে আস্তে ক্লায়েন্ট এর পরিমাণ ও বাড়তে থাকে। ২০১৫ এর শেষের দিকে প্রায় ১০০ এর মত ক্লায়েন্ট ছিল।
তখন আমরা dedicated server নেই এবং আর একটু বড় পরিসরে আগাতে থাকি। তখন বেশ কিছু ব্যান্ডিং করি promotion এর জন্যে। ২০১৬ সালে প্রথম টেকটিউনসে বিজ্ঞাপন দেই। ঐটাই আমাদের প্রথম বিজ্ঞাপন ছিল এবং আলহামদুলিল্লাহ, ঐখান থেকে বেশ ভালো পরিমানের কিছু ক্লায়েন্ট পাই। বেশ কয়েকমাস ধরেই বিজ্ঞাপন দেই। এখানে বেশ কিছু ক্লায়েন্ট আছে, যারা প্রতারণার স্বীকার হয়ে তাদের সাইটগুলো আমাদের এখানে transfer করেছে। ২০১৬সালে আমরা plan করি যে আমরা hosting industry তে আর একটু ভাল করব। সেই জন্য আমাদের আর একটা প্রতিষ্ঠান ছিল রিয়াদ হাসানের। ঐটার নাম ছিল host alpine।
তো আমরা ২টা প্রতিষ্ঠান এক সাথে করবার চিন্তা ভাবনা করি। ২০১৬ সালের March মাস থেকে আমরা এটার কাজ শুরু করি Host Aroma নামে। একদিক থেকে mymensinghsource.com যেই ক্লায়েন্টগুলো ছিল ঢাকা, চিটাগাং অথবা অন্যান্য অঞ্চলে অথবা দেশের বাহিরেও। mymensinghsource.com এর নামটা অনেকটা localy নাম হয়ে যায়।
অনেকেই জিজ্ঞাসা করত, আমরা তো ঢাকায় থাকি তো mymensing থেকে কেন hosting কিনব। অনেকে এটাকে mymensinghsource বলত না, বলত mymensing থেকে বলছেন। তো তখন আমরা plan করি যে আমরা hosting company টাকে একটা global brand হিসেবে দাড়া করানোর জন্য।
তখনই আমরা mymensinghsource এবং host Alpine কে একসাথে করে ফেলি। আমরা ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে আমাদের Host Aroma নিয়ে যাত্রা শুরু করি। আমাদের যতগুলো panel ছিল, website ছিল, সবগুলোকে আমরা একটা panel এবং server এ transfer করি। প্রায় ৪০০ এর কাছাকাছি panel ছিল এবং domain গুলোকেও ঐ panel থেকে transfer করা, সব মিলিয়ে একটু সময় লেগেছিল।


আপনার কোম্পানির বর্তমান অবস্থার কথা আমাদের বলুন?

আলহামদুলিল্লাহ, এখন সবকিছু অনেক ভালো যাচ্ছে। আমাদের অফার গুলো থেকে এবং প্রমোশন থেকে যেই ক্লায়েন্টগুলো এসেছিল। বেশির ভাগই দেখা যাচ্ছে renew করে না। এজন্য এখন আমরা corporate level এর corporate business এর দিকে move করতেছি। এখন corporate business থেকেই আমাদের বেশি revenue হয়।
ঐখানে কোন অফার দিতে হচ্ছে না। ক্লায়েন্টগুলো স্থায়ী হচ্ছে। আমরা আমাদের অন্যান্য কাজ গুলোও করতে পারতেছি। webdesign, development, software এসব গুলোতে। বর্তমানে আমাদের ৫০০ এর উপরে ক্লায়েন্ট আছে।


বাংলাদেশের hosting industry নিয়ে আমাদের কিছু বলুন?

বাংলাদেশের hosting industry এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো। কিন্তু অনেক ভালো তা বলা যাবে না। কারণ হচ্ছে আমাদের নিজস্ব এখন পর্যন্ত কোন ডাটা সেন্টার নাই।আমাদের দেশের বাহিরের ডাটা সেন্টার গুলো ব্যবহার করতে হয়। বাংলাদেশে এখনও কোন domain register company নাই। কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা globally মোটামুটি ভালো করছে। আশা করি সামনে কিছু brand বাংলাদেশ থেকে globally দাঁড়াবে।


আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের বলুন?

আমরা স্বপ্ন তো অবশ্যই দেখি। স্বপনের পথেই হাঁটিতেছি। আমাদের এখানে full time ১০ জনের মত কাজ করছে। part time এ ও অনেকে কাজ করেছে। ২০১৭ -২০১৮ এর মাঝে আমরা আরও অনেক লোকের জন্য কর্মসংস্থানের চেষ্টা করব। আমাদের plan হচ্ছে কমপক্ষে ১০০জনের কর্মসংস্থান করার। mymensing কে দেশের এক নম্বর আইসিটি নগর হিসেবে গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের টিমের সবাই অনেক তরুণ। তরুণরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এটা আমার বিশ্বাস।
Mymensing কে দেশের এক নম্বর আইসিটি নগর হিসেবে গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি কারণ, আপনি যদি লক্ষ্য করেন দেখতে পাবেন, USA, UK, Australia সহ কোন রাজধানী নগরীর কোনটাই আইসিটি নগর হিসেবে গড়ে উঠে নাই। আমাদের দেশে আইটি নগরী বলতে সবাই রাজধানী শহরটাকেই বুঝে।
এজন্য আমরা রাজধানী থেকে বের হয়ে আমাদের মেইন headoffice mymensing এ করেছি। আমাদের টার্গেটই হচ্ছে, স্থায়ীভাবে mymensing এ থাকা এবং এখান থেকেই কাজ করা। এখানে প্রচুর উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও mymensing অনেক এগিয়ে। এখানকার তরুণদের নিয়েই আমাদের এগিয়ে চলা। সেই ক্ষেত্রে আমরা অনেক আশাবাদী, mymensing একদিন দেশের প্রধানতম আইসিটি নগর হিসেবে গড়ে উঠবে।


আপনার কোম্পানি অন্যান্য hosting কোম্পানি থেকে কেন বেশি trust able?

আমাদের এখানে ৭০% এর উপরে ক্লায়েন্ট বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতারিত হয়ে আমাদের এখানে এসেছে। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি ক্লায়েন্টের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততার যেই জায়গাটা রয়েছে আমরা সেটা অর্জন করতে পেরেছি।আমরা ক্লায়েন্টকে live support দিয়ে থাকি।সকাল ১০ থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত মোবাইল ফোনে support দিয়ে থাকি। এছাড়া মেইলের মাধ্যমে সাপোর্ট দিয়ে থাকি।
মাঝে মাঝে personal ভাবেও support দিয়ে থাকি। আমরা অফার কম দিই। সাপোর্ট ভালো দেই। আমাদের server অনেক high configuration server, Rittal এ করা, SSD or SSHD Drive,Daily or weekly Backup এর সুবিধা আছে। Industry এর মাঝে তাল মিলিয়ে আমরা সবসময় product এর কোয়ালিটি রাখবার চেষ্টা করি।


আমাদের তরুণ প্রজন্ম যদি এই ব্যবসায় আসতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য কি পরামর্শ দিবেন?

আমাদের তরুণ প্রজন্ম যদি এই ব্যবসায় আসতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য আমার পরামর্শ হচ্ছে, খুবই কম পুঁজি investment করা।আইটি Buisness টা এখন এরকম যে কম টাকা investment করে বেশি টাকা আয় করবার চেষ্টা করতে হবে।
যেমন ধরুন, আপনি শুরুতে একটা reseller 10gb package দিয়ে শুরু করলেন।এখানে আপনি ২০ বা ৩০ টা ক্লায়েন্ট add করতে পারেন। আপনার pacakge টা full হয়ে গেলে আপনি সেটা update করতে পারেন ২০জিবি, ৪০জিবি বা ১০০ জিবি।এভাবে করে আপনি আগাতে পারবেন। এরপর ১০০ বা ২০০ মত ক্লায়েন্ট হয়ে গেলে আপনি VPS hosting এ যেতে পারেন।যখন আনার ৩০০বা ৪০০ ক্লায়েন্ট হয়ে গেলে আপনি dedicated server এ যেতে পারেন।
প্রথম দিক থেকে dedicated server বা VPS hosting ব্যবহার করবার কোন দরকার নেই। এরপর যখন আপনার মার্কেটিং এর ব্যাপারটা আসে তখন ফেসবুক পেইজ, গ্রুপ এবং যারা hosting কেনার সম্ভাবনা আছে। তাদের সাথে relation buildup করতে হবে। এরপর টেকটিউনস আমাদের জন্য অনেক ভালো একটা platfrom Paid Marketing  মার্কেটিং করার জন্য। এর মত ব্লগ সাইট গুলোতে আপনার কোম্পানির প্রচারণা করতে পারেন। প্রতিষ্ঠানের revenue বাড়লে Paid Marketing করা উচিত।
কিন্তু যদি আপনি ৫ বা ১০ লাখ টাকা নিয়ে buisness করতে চান। তাহলে আপনার জন্য startup এর পরামর্শ চলবে না।startup এর জন্য যেটা বলব সেটা হচ্ছে, entrepreneurship এবং business এক না এখানে।এখানে struggles করতে হবে। নিজে অনেক কাজ করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। অনেক বাধা আসবে,যেগুলোকে অতিক্রম করতে হবে। সব মিলিয়ে লেগে থাকতে হবে। পিছিয়ে পড়া যাবে না।প্রথম দিকে নিজে শ্রম দিবেন, শ্রমিকের দরকার নাই।এরপর ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে।


বাংলাদেশের IT Industry এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনি কিভাবে কাজ করতে চান?

বাংলাদেশের IT Industry এগিয়ে নিয়ে যেতে সেই শুরু থেকেই আমরা কাজ করছি। যেহেতু আমাদের শুরুটা একদম গ্রাম থেকে হয়েছিল।আজ আমরা এই পর্যায় এসেছি। বর্তমানে ২০জন লোকের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি আমাদের এখানে।আমাদের ৭০০জনের মত ওয়েব এবং ২৭০০ মত hosting এর ক্লায়েন্ট রয়েছে।
Mymensingh এর আইটি প্রফেশনালদের সবচেয়ে বড় অনলাইন কমিউনিটি Mymensingh IT Park এর ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা আমি।Mymensingh IT Industry কে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আমি সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিটা মফস্বল এলাকাকে যতক্ষণ পর্যন্ত ডিজিটাল না করতে পারব।ততক্ষণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব না। আমাদের ক্লায়েন্ট শুধু ঢাকা বা ময়মনসিংহে না এর বাহিরেও রয়েছে।
আমরা বর্তমানে শুধু মাত্র hosting এর কাজই করছি না। আমরা software development এর কাজও করছি।Host Aroma বর্তমানে software নির্মাতা প্রতিষ্ঠান "Softever" এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।


টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে এক বিপ্লব তৈরি করেছে ? এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?

টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে এক বিপ্লব তৈরি করেছে।এ ব্যাপারে আমার মতামত তো অবশ্যই আছে। বাংলাদেশের IT Industry তে senior যারা আছে।তারা প্রত্যেকেই একসময় টেকটিউনসে লিখালিখি করত। টেকটিউনস এর বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের এই বিপ্লব এর কথা শুধু আমি না, এই IT Industryএর ৯০% এর উপর it professional ব্যক্তিরা এটা স্বীকার করবে।
আমার মত শুধু একজন Host Aroma এর প্রতিষ্ঠাতা না, এরকম আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতারা আমাদের টেকটিউনসে পেয়েছে আমরাও তাদের টেকটিউনসে পেয়েছি। it professional ব্যক্তিদের জন্য টেকটিউনস কি। এটা শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিরাই ভাল জানে। আমার এই ভিডিওটা যারা দেখবেন।তারা প্রতিটা মানুষ ভালো জানবে টেকটিউনস একজন it professional ব্যক্তিদের জন্য টেকটিউনস কি।
আমরা সকলেই এখন অনেক ব্যস্ত হয়ে পরেছি আমাদের নিজেদের কাজ নিয়ে। কিন্তু টেকটিউনসের প্রতি সেই ভালো লাগাটা সবসময় থাকবে আমার মাঝে।


টেকটিউনসের Branding ও Advertising করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন?

টেকটিউনসের Branding ও Advertising করে আমি কতটুকু উপকৃত হয়েছি, সেটা আমি already বলে দিয়েছি। আমরা টেকটিউনস থেকে প্রচুর ক্লায়েন্ট পেয়েছি। আমরা অনেক সময় ধরে এর সাথে কাজ করে যাচ্ছি। একবার আমরা Plan করেছিলাম যে আমরা আমাদের logo টা ১ কোটির বেশি মানুষকে দেখাব। আমাদের plan টা success হয়েছিল। অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি।


টেকটিউনসের জন্য আপনার কোন পরামর্শ?

টেকটিউনসের জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে, এখানে প্রচুর spamming হয় এখন। Techtunes Trinity ২০১৫তে আসবোর কথা ছিল, ২০১৭ এতে তা আমরা দেখেছি। এখনকার থিমটা ভালো।টেকটিউনস সব সময় নতুন নতুন কিছু করবার চেষ্টা করে থাকে। যেমন এই টেকটিউনস super successor। আমি হয়তো এখনও successor হতে পারি নাই কিন্তু চেষ্টা করে যাচ্ছি কিছু করবার জন্য।  আমি একজন সপ্নবাজ তরুণ, আমি সবসময় স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখাই। সেই স্বপ্নের পথ ধরেই হেঁটে চলেছি।
টেকটিউনসকে এটাই বলতে চাই, আপনারা সবসময় এ ধরনের নতুন নতুন কিছুই নিয়ে আসেন।ভাল ভাল কিছু টিউনারকে খুঁজে বের করেন। আমাদের দেশের প্রচুর মেধাবী তরুণ আছে। ওদেরকে এখানে involve করেন। Seinor যারা আছে তাদেরকে involve করেন। এভাবে চেষ্টা করে যান।
এসময় টেকটিউনস আমাদের জন্য অনেক বিশাল কিছু ছিল। এখানে একটা Post করা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার ছিল। আমরা চাই টেকটিউনস তার সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনুক।টেকটিউনসের সব senior রা আবার এখানে ফিরে আসুক। তারা আসুক তাদের সাফল্যের গল্পগুলো আমাদের শোনাতে।
সবশেষে, টেকটিউনসের জন্য অনেক শুভ কামনা রইল। টেকটিউনসের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকব সবসময়। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/512359

53
টেকটিউন Super Successor গেস্ট: সালেহ আহমেদ, পরিচালক এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা, "Exon Host"
টেকটিউন Super Successor হোস্ট: রুবিনা ইয়াসমিন
সময়: বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭।দুপুর ১২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ১৫ মিনিট
স্থান: Exon Host, ঢাকা।

বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৭০ দেশে ডোমেইন হোস্টিং সেবা প্রদান করছে এক্সনহোস্ট। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপ গড়েছে বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠানটি।

ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে কর্পোরেট ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন, ওয়েব হোস্টিং, ভার্চুয়াল সার্ভার, ডেডিকেটেড সার্ভার ও ক্লাস্টার সার্ভার সলিউশন দিচ্ছে এক্সনহোস্ট। দেশি এবং বিদেশি কর্মীদের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমার সাপোর্ট নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।

আজকে টেকটিউন Super Successor ইন্টারভিউতে আমরা জানবো আমাদের দেশের hosting industry নিয়ে কিছু কথা। টেকটিউন Super Successor গেস্ট হিসেবে আজকে হাজির হয়েছে এক্সনহোস্ট'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সালেহ আহমেদ।
তিনি বহু সময় ধরেই টেকটিউনসের সাথে আছেন। টেকটিউনসে কখন তিনি ছিলেন একজন টিউনার বা কখনও ছিলেন একজন এডভাটাইজার। ছাত্রজীবন থেকেই যার পথ চলা শুরু এই hosting industry তে।

ExonHost এর শুরুর কথাটা আমাদের বলেন-
আমি যখন ইউনিভারসিটিতে পড়াশোনা করি, তখন ইন্টারনেট এর প্রতি একটা ঝোঁক ছিল। তখন আমার কম্পিউটার ছিল কিন্তু, ইন্টারনেট ছিল না। ইউনিভারসিটির ল্যাবে বসতাম বসে বসে ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করতাম। তখন আমার একটা ওয়েবসাইট বানাবার ইচ্ছা হল। যখন আমি অনলাইনে ঘাটাঘাটি করলাম, দেখলাম বাংলাদেশে reliable এমন কোন প্রতিষ্ঠান নাই, যাকে কাস্টমাররা বিশ্বাস করবে।
অনলাইনে সার্চ দিলেই দেখা যাচ্ছে, এই কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঐ কোম্পানি ডোমেইন আটকে দিয়েছে, ঐ কোম্পানির হোস্টিং আটকে দিচ্ছে। এই ধরনের বিভিন্ন রকমের সমস্যা আছে।এরপর আমি বাংলাদেশের একটি কোম্পানি থেকে ডোমেইন নেই। ডোমেইন নেবার পর ব্লগিং শুরু করি। টেকটিউনস এ ব্লগ লিখতাম, প্রজন্ম ফোরামেও লিখতাম। ব্লগিং এবং লিখালিখি করতে গিয়ে একটা কমিউনিটি গড়ে উঠে। কমিউনিটির লোকজনকে ফ্রি হোস্টিং দিয়ে সহযোগিতা করতাম।
কিছু দিন পর মনে হলো যেহেতু ওয়েবসাইট তৈরি করার পর হোস্টিংয়ের প্রয়োজন হয়, পেইড হোস্টিং সার্ভিস চালু করা যায়। সেই চিন্তা থেকেই হোস্টিং ব্যবসার আগ্রহ। অতঃপর যেই ভাবা সেই কাজ। তো এভাবেই ইউনিভারসিটি লাইফে বলতে পারেন একটা মেস থেকেই এই exonhost এর যাত্রা শুরু হয়েছে। শুরুর দিকে obosor.com নামে সার্ভিস দেয়া শুরু করি।
২০১০ সালের দিকে প্রথমে যেই অবসর ডট কম ছিল সেটাকে আমরা re-brand করে socheaphost নামে re-brand করি। এরপর ২০১২ সালের দিকে ঢাকার মহাখালী DOHS এর ভিতরে আমরা একটা অফিস নেই। অফিসটা ২০১২ এর জুন থেকে চালু হয়। এরপর ২০১৩ সালের দিকে আমরা কোম্পানিটা আবার re-brand করি hostpair নামে। Recently এ বছরের শুরুতে ট্রেড মার্ক সম্পর্কিত সমস্যার কারণে আমরা hostpair এর নাম পরিবর্তন করে exonhost করি। এভাবেই আমাদের যাত্রা।
আমি যাত্রাটা একাই শুরু করি। ২০১২ সালের দিকে আমি নতুন partner নেই, যেহেতু একা কোম্পানি চালানো খুব কঠিন। একা কখনও বেশিদূর যাওয়া যায় না। আমাদের একটা ভিশন আছে, একটা গোল আছে। Exonhost কে একটা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে রূপান্তরিত করা এবং একটা recognize brand হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এজন্য আমি ২০১২ সালের দিকে partner নেই। এখন আমরা ২ জন partner এবং কিছু স্টাফ আছি।

আপনার কোম্পানির বর্তমান অবস্থার কথা কিছু বলুন-
বর্তমানে আমরা ডোমেইন হোস্টিং, ওয়েব হোস্টিং, রিসেলার হোস্টিং, virtual server, dedicated server ইত্যাদি solution দিচ্ছে। আমাদের মূল স্লোগান হচ্ছে, ExonHost built for speed। যাতে করে ইউজাররা তাদের ওয়েবসাইট আমাদের এখানে হোস্ট করে ভাল speed পায় এবং ভিজিটররা যেন ওয়েবসাইট smoothly ভিজিট করতে পারে। আমরা মুলত managed সার্ভিসটা দিচ্ছি।
কাস্টমার একটা সার্ভার নেবার পর আমাদের এখান থেকে কাস্টমারের কোন technical knowledge এর প্রয়োজন হবে না। কাস্টমারের যা দরকার আমরাই সব করে দিব। কাস্টমার শুধু তার সাইট এবং ব্যবসা নিয়ে করবে, আমরা কাস্টমারের সার্ভারের সবধরণের টেকনিক্যাল দিক দেখাশুনা করব। ExonHost লো ট্রাফিক সাইট থেকে শুরু করে হাই ট্রাফিক সাইটের জন্য হোস্টিং সলিউশন দিচ্ছে।
আমার প্রথম দিকে নিজের কোন পুঁজি ছিল না। আমি প্রথম থেকেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর সাথে জড়িত ছিলাম। আমি সৌদি আরবের একটা 3 star hotel আলবদর ইন্টারন্যাশনাল থেকে একটা কাজ পাই। তারা আমাকে বলল যে, আপনি ডোমেইন ও হোস্টিং সব কিছু দিবেন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টও করে দিবেন। তখন আমি তাদের কাজ শেষ করে দেবার পর, পেমেন্ট পেলে আমি একটি ছোট reseller hosting কিনেছিলাম।
প্রথম দিকে যেহেতু experience ছিল না, আমি বাহিরের একটা কোম্পানির কাছ থেকে reseller টা নেই। ঐটা নেবার পর প্রায় ১ মাসের মাথায় ঐ কোম্পানিটা চলে যায় মার্কেট ছেড়ে। তো তখন আমি একটা ধাক্কা খাই। কারণ আমার ইনিশিয়াল ইনভেস্টমেন্টটা নষ্ট হয়ে যায়।এরপর আমি আবার আরেকটা কোম্পানির কাছে থেকে reseller hosting নেই। সেই কোম্পানিও কিছু দিন ভালো সার্ভিস দেয়।
কিন্তু ৫-৬মাস পর আবার মার্কেট থেকে চলে যায়। তখন আমার কিছু experience গেদার হয়। তখন আমি জানি কিভাবে ভাল হোস্টিং কোম্পানি চিনতে হয়।কিভাবে প্রভাইডার সিলেক্ট করতে হয়। এসব কিছু নিয়ে knowledge গেদার করি এবং একটা ভালো কোম্পানির কাছ থেকে reseller hosting নেই। এরপর ২০১১ সালের দিকে আমরা নিজস্ব সার্ভারে চলে আসি। বর্তমানে আমরা পৃথিবীর নামকরা ডাটাসেন্টার ব্যবহার করে সার্ভিস দিচ্ছি।

আপনাদের হোস্টিং কোম্পানি, অন্য হোস্টিং কোম্পানি থেকে কেন বেশি বিশ্বাসযোগ্য ?
ExonHost প্রথম থেকেই কাস্টমর সার্ভিসের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। আমরা দেশি এবং বিদেশি টিম মিলে ২৪ঘন্টা কাস্টমার সাপোর্ট দিচ্ছি। অন্যান্য কোম্পানি যেমন,৮ ঘণ্টা, ১৬ ঘণ্টা বা অফিস টাইমে সাপোর্ট দিচ্ছে কিন্তু ExonHost ২৪ঘন্টা সাপোর্ট দিচ্ছে। সাপোর্ট এর ক্ষেত্রে ExonHost one hour response time guaranty দিচ্ছি। যদি one hour এর মধ্যে কাস্টমার response না পায়, তাহলে আমরা compensation হিসেবে কাস্টমারকে credit একাউন্টে দিচ্ছি। মুলত আমরা customer oriented কোম্পানি।
অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে আমাদের কোম্পানির speed, support সবদিকেই better। আমাদের এখানে যদি কেউ ওয়েবসাইট হোস্ট করে, তার ওয়েবসাইটটা এক সেকেন্ড বা ২ সেকেন্ডের নিচে এ সময়ের মধ্যেই সাইটটা লোড হয়ে যাবে। আমরা speed এবং customer service এ দুইটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। অন্যান্য কোম্পানি গুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায় one man army।
একজনই সবকিছু। sales, marketing, technical সব কিছুই একজনই করে থাকে। ধরুন, একটা কোম্পানির Owner টা কোন কারণে sick থাকে, সে ক্ষেত্রে কাস্টমার কিন্তু সাপোর্ট পাচ্ছে না। আমাদের এখানে আমরা যদি managment level এর কেউ অনুপস্থিত থাকে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের সাপোর্ট টিম সবসময় সাপোর্ট দিচ্ছে। আমাদের strength হচ্ছে কাস্টমার সার্ভিস।

বাংলাদেশের hosting industry নিয়ে কিছু বলুন-
এখন আমরা হোস্টিংকে একটা industry বলতে পারি না। কারণ, industry হবার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন হবার প্রয়োজন এবং বলা যায় যে দেশে বড় কোন হোস্টিং কোম্পানি নাই। তারপর ও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছে এটাকে একটা industry তে তৈরি করবার। এজন্য ২০১৪সালে bangladesh domain hosting provider association নামে একটা association তৈরি করি। দেশে প্রায় ১০ লাখের উপরে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন হয়েছে।
এই ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন গুলো কিন্তু এখন বিদেশি provider রা দিচ্ছে। এখন সবাই বিদেশি provider থেকে ডোমেইন রিসেল করতেছে। আমরা ডোমেইন এবং হোস্টিংকে একটা industry হিসেবে গড়বার জন্য ২ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি।যাতে করে বাংলাদেশী কাস্টমাররা বাংলাদেশী provider দিয়ে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে। আমরা একটা আস্থা তৈরি করবার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন-
'আমরা চাই ভবিষ্যতে মানুষ যখন ডোমেইন হোস্টিং এর কথা চিন্তা করলে যাতে ExonHost এর কথা চিন্তা করে। আমরা এমন একটা level এ ExonHost কে নিয়ে যেতে চাই। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের ভবিষ্যতের আরেকটা প্ল্যান হচ্ছে, icann এদের কাছে থেকে accreditation টা নেয়া। যাতে করে, আমরাই সরাসরি ডোমেইন হোস্টিং সেল করতে পারি। হোস্টিং কোম্পানি হিসেবে।নিজের কোম্পানিকে একটা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি হিসেবে রূপান্তরিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য কিছু বলুন, যদি তারা এই hosting buisness করতে চায়।
নতুনদের জন্য বলব, তারা যদি ডোমেইন ও হোস্টিং এর ব্যবসায় আসতে চায় তাহলে অবশ্যই টেকনিক্যাল নলেজ অজর্ন করতে হবে। এখন মার্কেটটা অনেক competitive, এখানে সহজেই এমন না যে hosting ব্যবসায় ঢুকবে এবং income করবে। যেহেতু competitive মার্কেট, তাই মার্কেটিং, টেকনিক্যাল বিষয়ের উপর knowledge থাকা লাগবে।
মার্কেট সম্পর্কে আইডিয়া থাকতে হবে, টার্গৈট গ্রুপ ঠিক করে নামতে হবে। শুরুর দিকে যে কেউ reseller hosting দিয়ে শুরু করতে পারে।যদি ভাল fund এর ব্যবস্থা থাকে, যেই ক্ষেত্রে যাতে fund নিয়েই এই ব্যবসায় নামে। ধরেন প্রথম দিকে আপনি কম investment দিয়ে শুরু করলেন আপনি হয়তো বেশি দূর যেতে পারবেন না। তাই একটা ভাল fund এর প্রয়োজন আছে। ছোট করেই শুরু করে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে।

টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে একটি বিপ্লব তৈরি করেছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?
টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে একটি বিপ্লব তৈরি করেছে, এ কথাটা অনেকখানি সত্য।প্রথম যখন আমরা লিখালিখি শুরু করি, তখন বাংলা প্ল্যাটফরম বলতে ছিল প্রজন্ম ফোরাম এবং টেকটিউনস। অনেকেই টেকটিউনস থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয় সহ আরও নানা বিষয় জেনে অনেক উপকৃত হয়েছে বলে আমি মনে করি।দেশের জন্য অবশ্যই এটা উপকারী।

টেকটিউনসে এডভারটাইসিং এবং ব্যান্ডিং করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন?
টেকটিউনস যখন প্রথম দিকে এডভারটাইসমেন্ট নিয়ে আসে তখন আমি এড দিয়ে ছিলাম। তখন আমার কোম্পানির নাম ছিল সজীব হোস্ট। তখন আমার কোম্পানি মানুষ চিনত না। কিন্তু টেকটিউনসে এড দেবার পর আমি অনেক সাড়া পেয়েছি। আমার সেল অনেক বেড়ে যায়। আমাদের অনেক পরিচিতি বাড়ে।এই টেকটিউনসের এড এর মাধ্যমেই আমার কোম্পানিকে মানুষ চিনেছে।

টেকটিউনস সম্পর্কে কোন পরামর্শ আছে?
টেকটিউনসের বর্তমানের interface টা আরো user friendly করা উচিত। ডিজাইনটা আরও improve করা প্রয়োজন। আরও user friendly এবং modern করা দরকার।

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/515096

54
টেকটিউন Super Successor গেস্ট: নাজমুস সায়েদাত নয়ন, প্রতিষ্ঠাতা, "Host Seba"
টেকটিউন Super Successor হোস্ট: রুবিনা ইয়াসমিন
সময়: বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭।দুপুর ১২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ১৫ মিনিট
স্থান: Host Seba, ঢাকা।

আজকে টেকটিউন Super Successor ইন্টারভিউতে আমরা জানবো আমাদের দেশের Startup hosting company নিয়ে কিছু কথা। টেকটিউন Super Successor গেস্ট হিসেবে আজকে হাজির হয়েছে Host Seba এর প্রতিষ্ঠাতা  নাজমুস সায়েদাত নয়ন।
তিনি বহু সময় ধরেই টেকটিউনসের সাথে আছেন। ছোটবেলা থেকেই যার পথ চলা শুরু প্রযুক্তিকে ভালবেসে।

Host Seba এর শুরুর কথাটা আমাদের বলেন-

আসসালামু আলাইকুম, আমি নাজমুস সায়াদাত নয়ন, hostseba.com এর প্রতিষ্ঠাতা।
আমরা আমাদের Hostseba.com এর শুরুটা করেছি সম্পূর্ণ গ্রাম থেকে। চুয়াডাঙ্গা জেলার ৭নং ওয়ার্ড দিগড়ী থেকে। খুব ছোট থেকেই আমার ইন্টারনেটের প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল।পড়াশোনার পাশাপাশি  যতটুকু সময় পেয়েছি, আমি সবসময় মোবাইল, ইন্টারনেট নিয়ে পড়ে থাকতাম। তখন আমার একটা ওয়েবসাইট বানাবার ইচ্ছা হল। আমি যখন অনলাইনে ঘাটাঘাটি করতাম, তখন আমার অনেকের সাথেই পরিচয় হয়েছিল যারা এসকল বিষয় গুলো আগে থেকেই অনেক ভালো করে জানত।  আমি তাদের মাধ্যমেই ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কে জানতে পারি।
তখন আমি তাদের সাথে কথা বলে চিন্তা করি, আমি একটা ডোমেইন ও হোস্টিং নিব। তখন আমি অনলাইনে অনেক সার্চ করতে থাকি। আমি খুঁজতে থাকি কোথা থেকে ডোমেইন ও হোস্টিং নেয়া যায়। অবশ্য আমি বেশ কিছু ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানির সাথে আগে থেকেই পরিচিত ছিলাম। তবে তাদের যেই প্যাকেজ গুলো ছিল আমি সেই প্যাকেজগুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম এবং আমি একটা reseller hosting দেখেছিলাম তাদের কাছে থেকে এবং আমি তাদের কাছে reseller hosting সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। তখন আমি জানতে পারলাম, আমি যদি reseller hosting নেই, hosting এর সাথে সাথে আমি যেই ওয়েবসাইট এর কাজ করতেছিলাম, তার পাশাপাশি reseller hosting নিলেও আমি অন্যজনকে reseller hosting এর আমার সার্ভিসটা resell করতে পারব। তখন আমি ভেবে নেই আমি একবারেই আমার ওয়েবসাইটের জন্য reseller hosting নিয়ে নিব। তখন তাদের কাছে থেকে আমি একটি ডোমেইন এবং reseller hosting নেই।শুরুতে আমার কোন ধরনের invest ছিল না।আমার startup company এর নাম ছিল "VistaHost.In "
সেখান থেকেই আমার hosting industry তে আসা। ২০১২ সালের দিকে পরিচিত কয়েকজন ওয়েবসাইট ডিজাইনার ছিল আমার। তারা আগে থেকেই আমাকে ডোমেইন হোস্টিং নেবার ব্যাপারে impress করেছিল। আমি তাদের কাছে থেকেই ডোমেইন হোস্টিং কিনে ছিলাম। ২০১২ সালের দিকেই আমি আমার প্রথম কাস্টমার পাই। আমার পরিচিত একজনের ওয়েবসাইট আমি হোস্ট করি। এরপর থেকেই ফেসবুক সহ সব ধরনের social site গুলোতে আমি আমার কোম্পানি নিয়ে মার্কেটিং শুরু করি। ধীরে ধীরে আমার কাস্টমার বাড়তে থাকে।


আপনার কোম্পানির বর্তমান অবস্থার কথা কিছু বলুন-

বর্তমানে আমার domain hosting, web hosting, reseller hosting, virtual server, dedicated server, cloud hosting solution দিচ্ছি। কাস্টমার একটা আমাদের এখান থেকে সার্ভার নেবার পর  তার কোন প্রকার টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকবার প্রয়োজন হবে না।কারণ কাস্টমারের যা যা প্রয়োজন আমরা সবই তাকে করে দিব।
আমরা কাস্টমারের সব ধরনের টেকনিক্যাল  দিক দেখা শোনা করব। Hostseba সবধরনের সাইটের জন্য hosting solution। আমাদের অনেক কাস্টমার আছে, যারা ডোমেইন হোস্টিং নেবার পর তারা hosting এর যেই content থাকে। তার content এ অনেক প্রকার malware থাকে বা ভাইরাস ধরনের কিছু থাকে। তো আমরা চেষ্টা করি তাদের কে scan করে দেবার জন্য। এটা আমরা সম্পূর্ণ ফ্রিতে করে দেই। অনেক সময় দেখা যায় যে, এ সকল ভাইরাস গুলো তাদের ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণের জমা হয়। আমরা তাদের কে notified করি এগুলো clean করবার জন্য। যখন তারা এসব clean না করে, তখন তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়।
যেমন, তাদের অজান্তেই তাদের ওয়েবসাইট থেকে প্রচুর পরিমাণের মেইল যায়। যে মেইলগুলো তারা পাঠায় না। তার ওয়েবসাইটে যেই malware আছে,  সেই malware এর মাধ্যমেই মেইলগুলো send হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে malware গুলো থাকবার কারণে অনেক সময় তার ওয়েবসাইটটা ও hack হয়ে যায়। তখন আমরা তাদেরকে একটা solution দেই। আমরা তাদেরকে এটা clean করতে বলি। এটা কিভাবে clean করতে হয়, এটা অনেকেই আছে জানে না। তখন এই সার্ভিসটা আমরা তাদেরকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে দেই। তাদের ওয়েবসাইটে যত প্রকার malware আছে, যত ভাইরাস আছে সম্পূর্ণ আমাদের যেই টেকনিক্যালটিম আছে তারা তাদের ওয়েবসাইট থেকে সম্পূর্ণ malware টাকে scan করে, malware গুলো remove করে দেয়। Malware গুলো remove করবার পর আশা করি আর সমস্যা হয় না।


আপনাদের হোস্টিং কোম্পানি, অন্য হোস্টিং কোম্পানি থেকে কেন বেশি বিশ্বাসযোগ্য ?

আমাদের কাস্টমাররা বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতারিত হয়ে আমাদের কাছে এসেছে। এক্ষেত্রে আমি মনে করি,  ক্লায়েন্ট এর মাঝে বিশ্বস্ততার যেই জায়গাটা রয়েছে, আমরা সেই জায়গাটা অর্জন করতে পেরেছি। আমরা ক্লায়েন্টকে live support দিয়ে থাকি, সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এবং ২৪ ঘণ্টা আমাদের ইমেইল এবং সাপোর্ট টিম এর মধ্যে সাপোর্ট দিয়ে থাকি। আবার মাঝে মাঝে personaly সাপোর্ট দিয়ে থাকি। আমরা high configaration server থেকে service provied করি। এক্ষেত্রে আমাদের সার্ভারে থাকা ওয়েবসাইট গুলো দূত লোড হয়। আমাদের ssd এবং sshd driver এর daily, weekly backup এর সুবিধা আছে। Industry এর সাথে তাল মিলিয়ে আমরা সবসময় product এর কোয়ালিটি রাখবার চেষ্টা করি।


বাংলাদেশের hosting industry নিয়ে কিছু বলুন-

আমাদের hosting industry এর অবস্থা যে খুব বেশি ভালো তা বলব না। কারণ আমাদের দেশে এখন ও পর্যন্ত বড় কোন hosting company নাই। আমাদের এখনও পর্যন্ত নিজস্ব কোন ডাটা সেন্টার নাই। দেশের বাহিরের ডাটা সেন্টার গুলো এখনও আমাদের ব্যবহার করতে হয়। বাংলাদেশে এখনও কোন register domain hosting company নাই। প্রতিষ্ঠান যেই গুলো আছে তারা মোটামুটি globally ভালো করেছে। আশা করি সামনে কিছু ব্যান্ড globally আরও ভালো করবে।


আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন-

আমরা চাই, মানুষ hosting industry তে hostseba কে এক নামে চিনবে। আমাদের ঢাকায় এখনও কোন অফিস নাই। ঢাকা সহ আরও বেশ কিছু জায়গায় আমাদের অফিস দেবার পরিকল্পনা আছে। আমাদের আরও বড় বড় কিছু পরিকল্পনা আছে, যেমন "ICANN "থেকে স্বীকৃতি নেয়া। যাতে করে আমরা সরাসরি ডোমেইন হোস্টিং সেল করতে পারি। আমাদের কোম্পানিকে একটি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতেই রূপান্তরিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।


বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য কিছু বলুন, যদি তারা এই hosting buisness করতে চায়।

তরুণদের জন্য আমি বলব, যদি ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে কাজ করতে চান, তাহলে অবশ্যই আগে technical knowledge গুলো আগে clear করতে হবে। Invest করতে হবে চিন্তাভাবনা করে। খুবই কম পুঁজি দিয়ে শুরু করতে হবে। কম invest করে বেশি আয় করবার কথা চিন্তা করতে হবে।যেমন, আপনি যদি শুরুতেই  VPS hosting দিয়ে শুরু করেন, তাহলে আপনাকে VPS hosting এর জন্য প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫০০০টাকা ব্যয় করতে হবে।
মনে করেন, আপনার ৪জন কাস্টমার আছে। প্রতিমাসে আপনি ৪ জনের কাছে থেকে ৫০০টাকা করে মোট ২০০০টাকা পাচ্ছেন। যেখানে আপনার VPS hosting ব্যবহার করে ব্যয় হচ্ছে ৫০০০টাকা। কিন্তু আপনি কাস্টমারের কাছে থেকে পাচ্ছেন মাত্র ২০০০ টাকা। তার মানে আপনার প্রতি মাসে ৩০০০টাকার মত লস হচ্ছে। এজন্য আপনাকে প্রথমেই অবশ্যই reseller hosting দিয়ে শুরু করতে হবে।
এখানে আপনি যদি ২০জিবি reseller hosting দিয়েও শুরু করেন। ২০জিবি জন্য আপনাকে প্রতি মাসে ব্যয় করতে হবে ১০০০টাকা। আপনি যেখানে কাস্টমার থেকে পাচ্ছেন ২০০০ টাকা প্রতি মাসে। তার মানে প্রতি মাসে আপনার লাভ থাকছে ১০০০ টাকা। যখন আপনার কাস্টমার অনেক বেড়ে যাবে, তখন আপনি ধীরে ধীরে reseller hosting থেকে VPS hosting এ যেতে পারেন। যখন প্রচুর পরিমাণের ক্লায়েন্ট হবে তখন আপনি dedicated server এ যাবেন। এরপর যখন মার্কেটিং এর ব্যাপারগুলো আসবে তখন আপনি ফেসবুকে পেইজ, গ্রুপ গুলোতে এবং যারা হোস্টিং কিনবার সম্ভাবনা আছে তাদের সাথে রিলেশন তৈরি করতে হবে। ভালো কিছু প্ল্যাটফরম এ কিছু paid marketing করতে হবে। এর জন্য টেকটিউনস অনেক ভালো একটা place। টেকটিউনসের মত ব্লগ সাইটগুলোকে আপনি আপনার কোম্পানির প্রচারণার জন্য বেছে নিতে পারেন।


টেকটিউনসে এডভারটাইসিং এবং ব্যান্ডিং করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন?

প্রথম দিকে আমরা ফেসবুকে এড দিতাম। আমরা আরও পারফেক্ট একটা প্ল্যাটফরম এর কথা চিন্তা করছিলাম। তখন আমরা টেকটিউনসের সাথে কাজ করবার কথা চিন্তা করি। আমরা এখানে কাজ করেছি দীর্ঘ সময় ধরে। আমরা অনেক ভালো সাড়াও পেয়েছি।যারা আগে  hostseba কে চিনত না। তারা এখন আমাদের চিনে। আমাদের পরিচিতি অনেক বেড়েছে।


টেকটিউনস সম্পর্কে কোন পরামর্শ আছে?

টেকটিউনস সবসময় নতুন নতুন জিনিস নিয়ে হাজির হয়। যেমন ধরুন, টেকটিউনসের এই টেকটিউনস Super Successor প্রোগামটি। আমি হয়তো এখনও টেকটিউনস Super Successor হতে পারি নাই। কিন্তু চেষ্টা করে যাচ্ছি নতুন কিছু করবার জন্য। সবশেষে টেকটিউনসের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইল। টেকটিউনসের সাথে আছি, ছিলাম এবং সবসময় থাকব।
আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/516126

55
টেকটিউন Super Successor গেস্ট: মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (সেন্টু), পরিচালক, "Bangladesh Digital Scales Technology"
টেকটিউন Super Successor হোস্ট: রুবিনা ইয়াসমিন
সময়: মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট ২০১৭।দুপুর ১২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ১৫ মিনিট
স্থান: বাংলাদেশ ডিজিটাল স্কেলস টেকনোলজি  অফিস, ঢাকা।

Bangladesh Digital Scales Technology এর শুরুর কথাটা আমাদের বলেন?

Bangladesh Digital Scales Technology এর যাত্রা ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এটা মূলত বাংলাদেশের BSTI এর অনুমোদিত একটি প্রতিষ্ঠান। এটি একটি উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।
এই তিনটা লাইসেন্সই Bangladesh Digital Scales Technology প্রতিষ্ঠানের আছে, যা BSTI থেকে অনুমোদিত।আমরা Bangladesh Digital Scales Technology নিয়ে কাজ করছি বিগত ১০ বছর ধরেই কিন্তু আমরা লাইসেন্সটা পেয়েছি ২০১৪ সালে।
আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটা আমারব্যক্তিগত উদ্যোগেই শুরুকরা। এই প্রতিষ্ঠানটার আগে একটাIT firm নিয়েও কাজ শুরু করেছিলাম। আমাদের IT firm এর নামহচ্ছে Softway IT
প্রথমে আমরা শুরু করেছিলাম Softtech Computer নিয়ে। পরে শুরু করি Softtech IT এর কাজ। এরপর আমরা এই Bangladesh Digital Scales Technology এর কাজ শুরু করি। আমার অফিসে ১২জন কর্মচারী রয়েছে। এরা সবাই রাজশাহীর মানুষ।


Bangladesh Digital Scales Technology এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলেন।

আমাদের এখানে সাধারণত আমরা Bridge Scale, digital Indicator, digital loadcell, electronic scale সহ আরও অনেক ধরনের স্কেল sale করে থাকি। আমরা প্রতিটা product নিজেরাই তৈরি করে থাকি এবং বড় বড় corporate কোম্পানি গুলোকে সাপ্লাই দিয়ে থাকি।
বাংলাদেশের Industrial Company গুলো যেমন, রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, চাল supply কারী প্রতিষ্ঠান সহ বড় বড়  Industrial Company গুলোর সাথে আমার প্রধান কাজগুলো করে থাকি। আমাদের product গুলোর উপাদান গুলো আমরা বাহির থেকে নিয়ে আসি।
তারপর নিজেরা সেগুলোকে সেট করে supply দিয়ে থাকি। বর্তমানে আমাদের running ৫টা প্রজেক্ট চলছে।
আমরা আমাদের Software company নিয়ে ২০০৬সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এখানে domain hosting এর কাজও করছি। আমাদের চার হাজারের উপরে client আছে। আমরা বিভিন্ন company এর weddesign এর কাজ ও করে থাকি।
আমরা আমাদের scale managment software নিয়েও কাজ করে যাচ্ছি। আমার নিজেরাই এই software develop করছি। আমরা এই software তৈরি করে customize করে user দের requirment অনুসারে তৈরি করে sale করে থাকি। আমাদের এই software ব্যবহার করে user রা অনেক খুশী।
কারণ, আমাদের ইউজারদের বাহিরের software ব্যবহার করতে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আমাদের software টা ইউজারদের জন্য user friendly করে তৈরি করা। আমরা সব সময় নতুন নতুন জিনিস নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। আমরা এই সব কিছুর পাশাপাশি webcam ও sale করে থাকি।


আপনাদের প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

বর্তমানে আমি আমাদের Bangladesh Digital Scales Technology এর জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছি http://www.bdscale.com।আমরা day by day আমাদের ওয়েবসাইটের কাজ করে চলেছি, যাতে করে মানুষজন আমাদের কাছে খুব সহজেই পৌছাতে পারে।
আমরা আমাদের product গুলোর ছবি সহ reguler আমাদের website এ update দিব। যাতে করে আমাদের ইউজাররা  খুব সহজেই ঘরে বসে আমাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে পারে এবং আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
আমি  BDscale কে বাংলাদেশের এক নম্বর Industrial scale Company হিসেবে তৈরি করতে চাই। আমাদের সকল ক্লায়েন্ট হচ্ছে বাংলাদেশেই। আমি চাই সবাই জানুক এবং চিনুক যে BDscale একটা brand।
আমরা যখন ২০১৪ সালে আমাদের bdscale এর কাজ শুরু করি তখন আমরা কাজটা এটা ছোট workshop এর মাধ্যমে শুরু করেছিলাম। যখন আমাদের BSTI থেকে লাইসেন্স দেয়, তার আগে BSTI থেকে investigation এর জন্য পরিচালক আসে। সেই ব্যক্তি এসে আমাদের workshop দেখে জিজ্ঞাসা করেছিল যে আমরা আমাদের bdscale নিয়ে ঠিক মত কাজ করতে পারব কি না। তখন তার করা শুনে আমি মন থেকে জোড়াল ভাবে বলেছিলাম আমি পারবো।
এখন ২০১৭ সাল, বর্তমানে আমি একটা complete bdscale factory তৈরি করছি। বাংলাদেশের scale কোম্পানি গুলোর মাঝে আমরা বর্তমানে scale industry এর ২নম্বর সারিতে আছি। আমি ঈদের পর আমাদের এই factory এর সকল কার্যক্রম বড় পরিসরে শুরু করব।


বাংলাদেশের scale industry নিয়ে আমাদের কিছু বলুন।

বাংলাদেশে বর্তমানে অনেকে scale industry হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তারা সকলে শুধু মাত্র টাকা আয়ের উদ্দেশ্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা এটা চিন্তা করে কাজ করছে না যে, আমাদের scale industry টাকে আমাদের একটা আধুনিক পর্যায়ে যে নিয়ে যেতে হবে এবং টেকনোলজির সাথে তাল মিলিয়ে যে ভালো কিছু করতে হবে।
এই ধারনার মানুষের সংখ্যা খুব কম।আমাদের চেয়ে অনেক সিনিয়র কিছু কোম্পানি আছে, আমি এই প্ল্যাটফর্ম এ কাজ করতে গিয়ে দেখেছি।তারা শুধু কাজ করে চলেছে, কিন্তু তারা নিজেদেরকে আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না।তারা নিজেদেরকে develop করতে পারছে না।


আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

আমরা অন্যদের থেকে নিজেদের develop এর কাজ করে যাচ্ছি।আমরা যখন স্কেলটা delivery দিয়ে থাকি আমরা full scale delivery দিয়ে থাকি। যেমন, Scale তৈরি করতে ২ টা জিনিস লাগে, Hardware এবং Software। Hardware বলতে বুঝানো হয়েছে, scale এর সম্পূর্ণ body টাকে এবং software বলতে, completing automation system।
আমরা আমদের এই computer system টাকে খুবই secure। আমরা ১০০% security এর গ্যারান্টি দিয়ে থাকি। আমাদের software সমূহের মাধ্যমে যা পাবে তা হচ্ছে, আমাদের SMS সিস্টেম।কোন গাড়ির সাথে software থাকলে, আমাদের গাড়ির ক্রেতা বিক্রেতা সকলেই SMS পেয়ে যাবে, এমনকি সেখানে চাইলে গাড়ির ছবি add করা যাবে। এমনকি ই-মেইলের মাধ্যমে সে সকল daily, wekly, Monthly রিপোর্ট collect করতে পারবে।সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা প্রতিটি গাড়ির ছবি ধারনের ব্যবস্থা।
আমি আগামী ৫ বছরে আমাদের BDscale কে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।


আমাদের তরুণদের জন্য কিছু বলুন, যারা এই ধরনের scale industry তে কাজ করতে চায়।

এখন যদি কেউ buisness করতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাদে ঐ buisness এ যাবার আগে তাকে ঐ buisness সম্পর্কে জানতে হবে, শিখতে হবে। প্রতিষ্ঠিত একটা কোম্পানির সাথে কাজ করে experince নিতে হবে। যখন সেই প্রতিষ্ঠান সমূহের সাথে কাজ করে সে বুঝবে যে, সে এখন তৈরি নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য। তখনই একমাত্র তার জন্য উচিত হবে নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করবার। এখনকার তরুণদের জন্য এই field এ কাজ কঠিন হবে না। কারণ তারা যদি টেকনোলজি নিয়ে কাজ করে, তাহলে এই প্ল্যাটফরমে তারা সহজেই এগিয়ে যেতে পারবে। তারা আমাদের থেকেই ও অনেক বেশি এগিয়ে যেতে পারবে এবং অনেক বেশি ভালো করতে পারবে।


টেকটিউনস এ এডভারটাইসমেন্ট এবং ব্যান্ডিং করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন।

টেকটিউনস বাংলাদেশের অনেক নামকরা একটা প্রতিষ্ঠান। আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য এটা খুবই ভালো একটা ওয়েবসাইট। তারা এখান থেকে অনেক নতুন নতুন জিনিস শিখতে পারে, জানতে পারে।টেকটিউনস হচ্ছে একটা জ্ঞানের ভাণ্ডার। এই জ্ঞানের ভাণ্ডারে আমাদের তরুণ প্রজন্ম যত বেশি ডুবে দিবে, তারা তত বেশিই জ্ঞান অর্জন করতে পারবে এটা আমার বিশ্বাস। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির খাতে টেকটিউনসের যেই অবদান রয়েছে তা অতুলনীয়।

আমরা টেকটিউনসের সাথে যখন কাজ করেছি তখন আমরা এই প্ল্যাটফরমের advertising এবং branding সম্পর্কে জানতে পারি। টেকটিউনসে কাজ করাতে ইউজাররা জানতে পেরেছে যে BDscale নামের একটা brand আছে।আমরা প্রচুর সাড়া পেয়েছি, মেইল পেয়েছি। ধন্যবাদ টেকটিউনসকে।

https://www.techtunes.com.bd/techtunes/tune-id/511481

56
টিউন্টারভিউ গেস্ট: অরিল্ড ক্লকারহগ, প্রতিষ্ঠাতা, সামহোয়্যার ইন লিমিটেড
টিউন্টারভিউ হোস্ট: আরিফ নিজামী
সময়: মঙ্গলবার, ৫ জুলাই ২০১১ । দুপুর ২ টা ।
ব্যাপ্তি: প্রায় ৪০ মিনিট
স্থান: “সামহোয়্যার ইন” অফিস, গুলশান – ১ , ঢাকা ।

বাংলাদেশে বাংলা ব্লগিং চালু করার মূল কারিগর সামহোয়্যার ইন লিমিটেড । এর প্রতিষ্ঠাতা নরওয়ের নাগরিক অরিল্ড ক্লকারহগ । যিনি বেশ কিছু বছর ধরে বাংলাদেশে আছেন, বাংলায় পুরোপুরি কথা বলতে পারেন । তার সহধর্মিনী সামহোয়্যার ইনের হেড অফ এলায়েন্স সৈয়দা গুলশানা ফেরদৌস জানা । ২০০৫ সালে সামহোয়্যার ইন লিমিটেডই নিয়ে আসে প্রথম বাংলা ব্লগিং প্লাটফরম “সামহোয়্যার ইন ব্লগ” ।

টেকটিউনস: “সামহোয়্যার ইন” শুরুটা কিভাবে হলো ?
অরিল্ড: আমি আছি এখানে ১৭ বছর । আমি আর জানা বিয়ে করি সাড়ে নয় বছর আগে । আমরা যখন এই কোম্পানি সেটআপ করেছি তখন চেষ্টা করেছি সোসিয়্যাল মিডিয়া নিয়ে কাজ করতে । আমরা দুইজনই GP তে কাজ করেছি, আমি আরেকটা MIS সফটওয়্যারটিম এর সাথেও কাজ করেছি ৩ বছর । টিম এপ্রোচ খুবই ইন্টারেস্টিং লেগেছে যদিও ওটা আমার সাবজেক্ট না । মনে হয়েছে এটা খুব ভালো লাইন হতে পারে এখানে বাংলাদেশে । কারণ ২০০৪ এ এখানে ছোট ছোট কোম্পানি কাজ করছিল । বেশিরভাগ আউটসোর্সিং করতে আর কিছু লোকাল মার্কেটে কাজ করেছে । CD বার্ণ করে সেল করেছে, পাইরেসী করেছে ইত্যাদি । ওই সময় অনলাইন কমিউনিটি অনেক বেড়ে গিয়েছিল ইউটিউব, হাই ফাইভ ইত্যাদি । আমরা দেখেছি যে বাংলাদেশের জন্য এটা অনেক ভালো হতে পারে ।
এখানে unbelievable মোবাইল রেভুলুশ্যন হয়ে গেছে । কেউ ভাবে নাই এরকম হবে কিন্তু হয়ে গেছে, এটা ভবিষ্যতে আরো বড় হবে । এটা new way of communication । এটা একটা চমৎকার সুযোগ । আমরা মনে করি মোবাইল হচ্ছে একজন থেকে আরেকজন আর সোসিয়্যাল মিডিয়া হচ্ছে অনেকজন থেকে অনেকজন । প্রথমে ইন্টারেষ্ট ছিল একটা ব্লগ কমিউনিটি একটা পাবলিশিং প্লাটফরম হবে যেখানে যে কেউ নিজের লেখা পাবলিশ করতে পারবে, নিজে আলোচনা করতে পারবে । তখন জানা বলল এখানে কিছু করতে হলে বাংলায় করতে হবে, বাংলা ভাষা থাকতেই হবে । কিন্তু তখনও ওয়েবে এটা সম্ভব ছিল না । আমরা দেখেছি যে, কিছু ডেস্কটপ সালুশন চলে এসেছে । সামহোয়্যার ইন শুরু করেছে আউটসোর্সিং দিয়ে কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য সোসিয়্যাল মিডিয়াই ছিল । ২০০৫ সালের ডিসেম্বারে আমরা ভেবেছি একটা ব্লগ কমিউনিটি তৈরীর চেষ্টা করব ১৬ ই ডিসেম্বারের মধ্যে । তখন হাসিন হায়দার আমাদের সাথে ছিল ও দায়িত্ব নিয়েছে কিভাবে ফনেটিক বা কোনভাবে বাংলা লেখা যায় । ও বলেছে পারব যেভাবেই হোক পারব । আমাদের ইমরান হাসান প্রথম খুব সিম্পল একটা প্লাটফরম তৈরী করে ।
ওই সময় ৫০-১০০ জন বাংলাদেশী ব্লগার ছিল । ওরাও ইংরেজীতে লিখছে । ৩-৪জন হতে পারে বাংলা লিখছে, ওরা ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগার এডাপ্ট করতে পেরেছে । কিন্তু সাধারণ মানুষের কোন উপায় নেই । এরপর আমরা সামহোয়্যার ইন ব্লগ চালু করি । যারা ব্লগে ছিল তাদের ইনফর্ম করি, ২ মাসের মধ্যে আমরা ১০০০ সদস্য পাই ।

শুরুতে বলতে হবে যে ১৭ তারিখ অগাষ্ট ২০০৫ সালে যখন জেএমবি বিভিন্ন স্থানে বোমা ফাটায় তখন আমরা সবাই কনফিউজড, কেউ কোন খবর দিতে পারছিল না । তখন আমরা চিন্তা করেছি যদি একটা সিটিজেন মিডিয়া থাকত বা একটা ব্লগ কমিউনিটি থাকত তবে সবার জন্যই ভালো হত ।

টেকটিউনস: আপনার বাংলাদেশে আসাটা কিভাবে হলো ?
অরিল্ড: আমি বাংলাদেশে আসি ১৯৮৬ সালে । কিছু NGO এর মাধ্যমে, তাছাড়া এখানে কিছু ফ্রেন্ড ছিল, বাংলাদেশের প্রতি ইন্টারেস্ট ছিল । ৮৬ তে এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা ঘুড়েছি বেশ ভালো লেগেছে । আমি সেটেল হই ১৯৯৪ সালে ।

টেকটিউনস: “সামহোয়্যার ইন” ব্রান্ড নামটা কিভাবে মাথায় আসে ?
অরিল্ড: সবাই, সবকিছুই Belong করে Some where । ম্যাপে আমি পিন রাখতে পারি যে এটা আমার বাসা, এটা আমার অফিস । যেকোন অফিস হোক সার্ভিস হোক সবই একটা লোকেশন । আমরা দেখেছি যে অনেক সার্ভিস পুরো ওয়ার্ল্ড কভার করে কিন্তু লোকাল কমিউনিটি তেমন কিছু পাচ্ছে না । আমরা যেখানে প্রত্যহ জীবন নির্বাহ করি সেখানে তেমন অনলাইন সার্ভিস নাই । এই জন্য আমরা চেয়েছি “সামহোয়্যার ইন” একটা সার্ভিস হবে যেটা পাওয়ারড বাই লোকাল কমিউনিটি । যেমন সামহোয়্যার ইন বাংলাদেশ , সামহোয়্যার ইন আফ্রিকা বা সামহোয়্যার ইন নরওয়ে ।

টেকটিউনস: “সামহোয়্যার ইন” এর বর্তমান সাফল্য নিয়ে কি আপনারা সন্তুষ্ট ?
অরিল্ড: হ্যা এবং না । কোম্পানিটা হয়েছে ৬ বছর, ব্লগটা হয়েছে সাড়ে ৫ বছর । আমাদের সামহোয়্যার ইন ব্লগ এটা চমৎকার সফল । ব্লগারদের এনগেজমেন্টটা যে হয়েছে, এরপর আরো অনেক কমিউনিটি হয়েছে । ট্রেন্ডসেট করেছি । আমরা একটা নতুন অপর্চুনিটি এনেছি । একটু সেটিসফাই যে পপুলার হয়ে গেছি । আর ওয়েবে বাংলা ভাষার Pioneer হয়েছি । কিন্তু কোম্পানি হিসেবে ফাইনেন্সিয়ালি আমরা স্ট্রাগাল করেছি ।

কোম্পানি হিসেবে অনেক কিছু কঠিন ছিল । আমাদের এখানে খুব ভালো একটা সেটাপ, এখন ভালো অবস্থানে আছি । এটাও একটা রেসপন্সিবিলিটি । এখন ২০১১ এখানে এখনো অনলাইনে আয় করা যাবে না । অনলাইন কমিউনিটি থেকে বাংলাদেশে আয় করাটা মোটামুটি অসম্ভব । এখানে ইকমার্সের ঘাটতি, পেমেন্ট সাল্যুশনের ঘাটতি । আরো অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে থাকতে পারত যদি এটা ফাইনেন্সিয়ালি ভায়েবল হতো । আমরা আউটসোর্সিং করে সাসটেইন করি । ২০০৮ পূর্যন্ত আমরা এটা ভালো পেরেছি । কিন্তু ২০০৮ সনে যখন গ্লোবাল রিসেশন হয়েছে তখন আমরা অনেক কাষ্টমার হারিয়েছি ।

টেকটিউনস: Red Herring Asia Tech Startup পুরস্কার কতোটা প্রভাব ফেলেছে সামহোয়্যার ইনে ?
অরিল্ড: গ্লোবালী আমরা রিকগনিশন পেয়েছি । এখানে আমরাই প্রথম এটা পেয়েছি । এই আওয়ার্ডটা খুবই সম্মানজনক । এখানে এটা এতোটা পরিচিত না । কিন্তু অনলাইন কমিউনিটিতে এটা অনেক সম্মানজনক । ব্যবসার ক্ষেত্রে এটা তেমন কোন প্রভাব ফেলেনি । আমাদের পার্টনারদের জন্য এটা একটা সাইন অফ কোয়ালিটি । কিন্তু সরাসরি কোন প্রভাব নেই । তবে আমরা খুবই খুশী এই সম্মান পেয়ে ।

টেকটিউনস: এই ৬ বছরে কখনও কি মনে হয়েছে বাংলাদেশে সেটেল হওয়াটা একটা ভূল স্বীদ্ধান্ত ছিল ?
অরিল্ড: আমি এখানে বাস করছি । আমার ফেমিলি এখানে আছে । জব না করে আমি ঠিক করেছি আমি ক্রিয়েট করব । আমি একজন ক্রিয়েটিভ মানুষ । আমি কিছু কনট্রিবিউট করতে চাই । সামহোয়্যার স্টার্ট করার পর আমাদের ভালো কিছু লোক জয়েন করেছে এটা একটা সেটিসফেকশন । আমি কখনই চিন্তা করিনি এটা একটা ভূল ডিসিশন । তবে অবশ্যই এটা একটা স্ট্রাগ্রাল ছিল এবং থাকবে । তবে এখান থেকে যাওয়ার কোন প্লান নেই ।

টেকটিউনস: বাংলাদেশের ব্লগার ও অন্যান্য দেশের ব্লগারদের মধ্যে পার্থক্য কোথায় ?
অরিল্ড: বিশাল পার্থক্য আছে । বাংলাদেশ পৃথিবীর এক নম্বর ব্লগ কমিউনিটির দেশ । অন্য দেশে আর এমন নেই যেখানে ব্লগ কমিউনিটি এতটা স্ট্রনগ । এখানে বেশীর ভাগ ব্লগার ওয়েব কমিউনিটিতে belong করে । অন্যান্য দেশের বেশীরভাগ ব্লগার পারসোনাল ব্লগ মেইনটেইন করে । এখানে আমরা ইউনিটি ফিল করি, যে আমরা সবাই ব্লগার, বাংলায় শেয়ার করি ।
আমরা দেশের জন্য কন্ট্রিবিউট করতে চাই । আমরা বিভিন্ন সাবজেক্ট নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি । এটা দেশের জন্য ইমপ্রুভমেন্ট । অন্য দেশের ব্লগারদের এভারেজ বয়স অনেক কম । এখানে ব্লগারদের এভারেজ বয়স বেশী । আমাদের এজ গ্রুপ হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৪ । অন্যান্য দেশে সেটা হচ্ছে ১৫ থেকে ২২ ।

টেকটিউনস: আমাদের ব্লগাররা কি আন্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠেছে ?
অরিল্ড: অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ব্লগাররা খুবই স্কিলড । আমাদের খুবই স্ট্রনগ ও ক্লিয়ার এনালাইটিক ইনফরমড । একদিকে এখানের ব্লগাররা খুবই মেচিউরড । যারা ব্লগ করে তারা ইন্টার নেটের আরলি এডাপ্টর । এখানে ২-৩% পপুলেশন একটিভ ইন্টারনেট ইউজার । যারা এখানে ইন্টারনেট ইউজ করে তারা ভালো অফিসে কাজ করে well educated যদি এগুলো ধরি তবে আমাদের ব্লগাররা খুবই ম্যাচিউরড । তবুও আমি একটু মিস করি হার্ড ডেপথ এনালাইসিস । অন্যান্য দেশে যেমন আছে । ভালো হতো যদি ব্লগার গ্রুপ থাকত যারা পলিটিকাল, ইকোনমিকাল এনালাইসিস লেখা হতো, ডিবেট হতো।

টেকটিউনস: সামহোয়্যার ব্লগের মডারেশন নিয়ে অনেক জনপ্রিয় ব্লগারই অসন্তুষ্ট । ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের মধ্যে বিভেদ করা হচ্ছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন । এ ব্যাপারে কি মন্তব্য কি ?
অরিল্ড: আমাদের মডারেশন অনেকে ক্রিটিসাইজ করে । এটা বিরাট একটা ব্লগিং প্লাটফরম । প্রতিদিন ৭০০-৮০০ পোষ্ট আসে, ৮-১০ হাজার কমেন্ট আসে । আমাদের মডারেশন এখনও in house । আমাদের কমিউনিটি মডারেশন নাই । আমরা ফাইনেনসিয়ালী অনেক স্ট্রাগাল করি । আমাদের মডারেশন ক্যাপাসিটি অনেক কম, অনেক পোষ্ট আমাদের চোখে পড়ে না বা ফলো করতে পারি না । অনেকে বাইরে থেকে দেখে ভাবে এই পোষ্ট থাকছে কিভাবে, এই পোষ্ট সরাচ্ছে না কেন । বা ওই পোষ্ট সরিয়েছে আর এই পোষ্ট সরাচ্ছে না । এটা হচ্ছে আমাদের লিমিটেড ক্যাপাসিটি বা উইকনেস । আমাদের যদি আরো রিসোর্স থাকত ব্লগ থেকে আরো আয় হতো তবে মডারেশন আরো স্ট্রনগ হতো ।

টেকটিউনস: ব্লগের কনটেন্টের ব্যাপারে কি কখনো সরকারের কোন হস্তক্ষেপ ছিল ?
অরিল্ড: না । কখনও না ।

টেকটিউনস: সামহোয়্যার ইন ব্লগ বা আওয়াজ কি এখন ফাইনেনসিয়ালি সফল ?
অরিল্ড: সামহোয়্যার ইন ব্লগ চালাতে স্যালারী, অফিস রেন্ট, ইন্টারনেট সব মিলিয়ে আমাদের মাসে ৩-৪ লক্ষ টাকা খরচ হয় । আর শুরু থেকে এই পূর্যন্ত মোট এক কোটি টাকার উপর হবে । কিন্তু লনজ রানে এটা সেল্ফ সাসটেইন হবে । এটা খুবই পপুলার একটা প্লাটফরম । যদি আমরা ভালো মার্কেটিং করত পারি তাহলে আরো ভাল হবে । তাছাড়া আওয়াজ এখনো ছোট । এটা মোবাইল দিয়ে আরো ফাস্ট স্প্রেড হতে পারে, তখন রেভিনিয়ু আসবে । এখনো আওয়াজ থেকে কোন রেভিনিয়ু পাই না ।

টেকটিউনস: সামহোয়্যার ইন” এর সোশিয়াল প্লাটফরম “আওয়াজ” এর বতর্মান ব্যবহারকারী সংখ্যা সম্বন্ধে যদি একটু ধারণা দিতেন ?
অরিল্ড: আওয়াজে প্রায় ৩০ হাজার রেজিস্টার্ড ইউজার আছে । দৈনিক একটিভ ইউজার ১ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে । দৈনিক আমরা ১৫০০-১৬০০ সাউট (shout) পাই, ৬-৭ হাজার কমেন্ট পাই ।

টেকটিউনস: আওয়াজের এপিআই বা এতে অটো পাবলিশ করার কোন প্লাগইন তৈরীর চিন্তা ভাবনা আছে কি ?
অরিল্ড: আমরা এগুলো নিয়ে অনেক চিন্তা করছি । এটা নিয়ে আমাদের অনেক প্লান আছে । আমাদের রিসোর্স লিমিটেড । ফাইনেন্সিয়ালি যদি আমরা স্ট্রনগ হতাম তবে বড় একটা টিম এর পিছনে লাগিয়ে দিতাম সামহোয়্যার ইন ব্লগে এবং আওয়াজে । এখনো একটা ছোট টিম এটা নিয়ে কাজ করে । ডেভপলপমেন্ট আরো হবে, API ও হবে । আওয়াজ একটা আড্ডা সিস্টেম প্লাটফরম । আরেকটু ডেভলপমেন্টের পর এটা এক্সপোর্ট করা যাবে । বিভিন্ন সাইটে লাগানোর জন্য ছোট Shout বক্স থাকতে পারে বা অন্য কোন কিছু ।


টেকটিউনস: “সামহোয়্যার ইন” এর সাবেক ডেভলপার হাসিন ভাই, ইমরান ভাইরা এখন নিজেরাই উদ্দোগতা এই সম্পর্কে আপনার মতামত কি ?
অরিল্ড: খুবই ভালো । আমরা খুবই লাকি । আমি খুবই প্রিভিলেজ ফিল করি যে “সামহোয়্যার ইন” একটা কোম্পানি যেটা বাংলাদেশের খুবই ভালো টেলেন্ট একট্রাকট করতে পেরেছি । তবে সবাইকে ধরে রাখতে পারি নাই । এক দিকে আমরা এক্সপেক্টও করি না যে সবাই আমাদের সাথে পাচঁ ছয় বছর থাকবে । তারপরও যাদের খুবই ভালো Entrepreneur স্পিরিট যেমন হাসিন, ইমরান, তারা আমাদের সাথে ছিল । এটা খুব ভালো একটা পার্টনারশীপ ছিল । এখনও খুব ভালো একটা টিম আমাদের সাথে আছে । আমরা খুবই খুশি যে “সামহোয়্যার ইন”তে তাদের Entrepreneur ডেভলপমেন্ট হয়েছে, পারসোনাল ডেভলপমেন্ট হয়েছে । এখানে প্রথম দিন থেকেই কিভাবে আমরা entrepreneur হই, কিভাবে বিজনেস অপর্টুনিটি দেখতে হয় । কেউ যদি এটা নিজের কাজে লাগায়, আমরা যদি কারো ইনসপেরেশন হতে পারি তবে আমি খুব খুশি । আমি তাদের success দেখতে চাই ।

টেকটিউনস: “সামহোয়্যার ইন” দিয়েই বাংলা ব্লগিংয়ের যাত্রা শুরু, এর সাবেক ব্লগাররাই নতুন অনেক প্লাটফরম দাড় করিয়েছেন এখন সামহোয়্যারের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন, এটাকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?
অরিল্ড: এটা একটা কমপ্লিমেন্ট । যে আমরা তাদেরকে এনেবল করেছি ব্লগিং শুরু করতে । এখানে তাদের ব্লগিং নিয়ে ধারণা হয়েছে । তারা ভেবেছে আমরা ভিন্ন করতে চাই । যদি এখানে শুধু “সামহোয়্যার ইন” থাকত তাহলে অনেক বোরিং লাগত । এখন ব্লগাররা সিলেক্ট করতে পারবে কোথায় ব্লগ করবে । আগে আমরা একা ছিলাম, এখন ২৫-৩০টা ব্লগ বা ফোরাম প্লাটফরম । ব্লগাররা টেকটিউনস, “সামহোয়্যার ইন” বা প্রথম আলো ব্লগ যেখানে ভালো লাগবে সেখানে থাকবে ।

টেকটিউনস: আপনি সামহোয়্যার ইন ব্লগ রেগুলারলী ফলো করেন ? ব্লগারদের মধ্যে কোন পারসোনাল ফেভরেট ?
অরিল্ড: আমি চেক করি প্রতিদিন । কিন্তু আমি একটা কোম্পানি রান করি, এখানে অনেক ডেভপলপমেন্ট চলছে, আওয়াজের অনেক ডেভলপমেন্ট হচ্ছে । তাই তেমন পড়ার সময় পাই না, আমি শুধু একটু আপডেট নিতে চাই । ফেভরেটকে বলতে চাই না তবে এখানকার ব্লগারদের প্রতি আমি খুবই ইমপ্রেসড যে ব্লগ কমিউনিটির মধ্যে কত টেলেন্টেড, কত স্কিল, কত স্ট্রেনথ আমি খুবই ইমপ্রেসড ।

টেকটিউনস: “সামহোয়্যার ইন” এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি ? ভবিষ্যতে আরো কি কি প্রডাক্ট আসতে পারে ?
অরিল্ড: ফিউচার প্ল্যান নিয়ে তেমন কিছু বলতে চাই না । তবে “সামহোয়্যার ইন” এর প্রথম থেকে কিছু আইডিয়া ছিল, ওগুলো এখনো আছে । হয়ত আমাদের রিসোর্স বা টাইম নাই । আমাদের দুটি মূল প্রডাক্ট “সামহোয়্যার ইন” ব্লগ ও আওয়াজ এই দুটো আরো ভালো করতে চাই ।

টেকটিউনস: সামহোয়্যার ইন এর আউটসোসিং নিয়ে কিছু বলেন ।
অরিল্ড: “সামহোয়্যার ইন”-এ দুটি টিম । একটা ডেটা মাইনিং টিম ও একটা প্রোগ্রামিং টিম । ডেটা মাইনিং টিমটা খুব ভালো করছিল । কিন্তু রিসেশনের সময় অনেক ক্লায়েন্ট ছুটে গেছে । এখনও দুটো টিম আছে । আমরা এটা আরো গ্রো করতে চাই ।

টেকটিউনস: দেশের আইটি সেক্টরের বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন করুন ।
অরিল্ড: বাংলাদেশে মনে হচ্ছে এগুলো একটা ফ্যাশন ওয়ার্ড । যেকোন সরকারের কাছে IT একটা ফ্যাশন ওয়ার্ড। যে আমরা আইটি সাপোর্ট করব, প্রোগ্রামিং ডেভলপমেন্ট এক্সপোর্ট সাপোর্ট করব, ডিজিটাল বাংলাদেশ করব ইত্যাদি । তবে ভালো যে একটু ধারণা আছে । আমি মনে করি সরকার ও ইনভেস্টরদের কাছ আইটি সেক্টরটা নেগলেগটেড । আইটি সেক্টর ডেভলপ করার জন্য যা দরকার তা এখনো দেখতে পাচ্ছি না । বিজনেস লিডারসরাও এখন ট্রেডিশনাল ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে আছে, খুব কম ইনভেস্টমেন্ট বাইরে থেকে আসছে । আমরা এখন IT সেক্টরে যা দেখছি তারা ছোট উদ্দোগতা । আরো অনেক চমৎকার সব সুযোগ আছে এখানে ।

টেকটিউনস: বাংলাদেশে আইটি ব্যবসার মূল অসুবিধাগুলো কি কি ?
অরিল্ড: পাওয়ার (বিদ্যুৎ) , ইন্টারনেট , দেশের ব্রান্ডিং ইত্যাদি । যারা বাইরের ইনভেস্টর বা আউটসোর্সিং নিয়ে কাজ করে তারা চিন্তা করে আমরা কোন দেশে যাব ভারতে, চায়নায় না ভিয়েতনামে । এই লিস্টে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক নিচে । এই ক্ষেত্রে আরো কাজ করতে হবে, পজিটিভ দিকগুলো আরো তুলে ধরতে হবে । তাছাড়া যারা চাকরি চায় তাদের টেলেন্ট আছে কিন্তু সেল্ফ গ্রোথটা শক্তিশালী না । রেলিভেন্ট এডুকেশন বা প্রাকটিস খুব কম । ভবিষ্যতে টেলেন্টের অভাব হতে পারে । এখন ঢাকায় কোম্পানি যদি ন্যাশনালী রেসপেক্টেড হতে চায়, প্রতিষ্ঠিত হতে চায় তবে অনেক খরচ করতে হবে। ভালো ইন্টারনেট লাইন লাগবে, ভালো অফিস লাগবে ।

টেকটিউনস: আপনার ক্যারিয়ার গোল কি ? শেষ জীবনে নিজেকে কোন অবস্থানে দেখতে চান ?
অরিল্ড: আশা করি “সামহোয়্যার ইন”-এ যাতে সারা জীবনই কাজ করতে পারি । আমরা যাতে সোসিয়্যাল মিডিয়া লোকাল কমিউনিটি হিসেবে সারা বাংলাদেশে গ্রো করতে পারি । তারপর হতে পারে অন্য কোন দেশে । তাহলে আমরা খুবই খুশি হতাম যে এটা আমাদের কনট্রিবিউশন ।

টেকটিউনস: পুরো পুরো কি বাংলাদেশেই থেকে যাবেন, না কখনো স্থায়ীভাবে নরওয়ে চলে যাবার পরিকল্পনা আছে ?
অরিল্ড: বাংলাদেশ আমার বাড়ি । এখানে আমার ফ্যামিলি আছে । অব্যশই নরওয়েও আমার দেশ । ওখানে বাবা মা আছে । আমরা এভাবে সেটআপ করেছি যে এখানে থাকি, কিন্তু নরওয়ের সাথেও যোগাযোগ আছে । বছরে ২-৩ বার যাই নরওয়েতে ।

টেকটিউনস: টেকটিউনস কি আপনি ভিজিট করেন?
অরিল্ড: টেকটিউনস আমি ভিজিট করি কিন্তু ওখানেও তেমন পড়তে পারি না । বাংলা পড়তে আমার এখনো কষ্ট হয়, সময় লাগে । মাঝে মাঝে ওখানের লিংক পাই, পোষ্ট পাই, ইন্টারেস্টিং লাগে । আমি চেষ্টা করি, কমেন্ট বা আলোচনাগুলোও পড়ি । ওখানে আমার একাউন্ট নেই তবে আমি খুবই ইমপ্রেসড । সামহোয়্যার নিয়ে অনেক কন্ট্রোভার্সি আছে তবু ওটা সবচেয়ে বড় প্লাটফরম কিন্তু টেকটিউনস নিয়ে কোন কন্ট্রোভার্সি নেই ।

টেকটিউনস: টেকটিউনস নিয়ে আপনার কোন পরামর্শ ।
অরিল্ড: ব্লগাররা টেকটিউনস ভিজিট করে, টেকনোলজি সম্বন্ধে জানতে চায় । অনেক হেল্প পায়, টেকটিউনস থেকে উত্তর পায় । তবে আমি মনে করি আপনারা এত বড় যে দেশের টেকনলজী নিয়ে আরো সাবজেক্ট কভার করতে পারবেন । আরো বেশী কোম্পানি যারা টেক সেক্টরে আছে বা ইউনিভার্সটিগুলো আছে তাদের সাথে ক্লোজ হন তাহলে সবার ইন্টারেস্ট আরো বাড়বে ।

টেকটিউনস: জনাব অরিল্ড ক্লকারহগ, টেকটিউনসকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
অরিল্ড: টেকটিউনসকেও অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

[ঈষৎ সংক্ষেপিত ও সম্পাদিত]
https://www.techtunes.com.bd/featured/tune-id/78991

57
টিউন্টারভিউ গেস্ট: হাসিন হায়দার, হেড অফ আইডিয়াস এবং প্রতিষ্ঠাতা, Leevio
টিউন্টারভিউ হোস্ট: আরিফ নিজামী
সময়: মঙ্গলবার, ২৪ অগাষ্ট ২০১১ । দুপুর ২ টা ।
স্থান: Leevio অফিস, উত্তরা , ঢাকা ।

হাসিন হায়দার, দেশের ওয়েব এপ্লিকেশন ডেভলপমেন্টে এক উজ্জল নক্ষত্র । তার অনুপ্রেরণায় পিএইচপি (PHP) কোডিংয়ের জগতে ডুব দিয়েছেন অগণিত মানুষ । দেশের প্রথম ZCE, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রোগ্রামিং বইয়ের লেখক, বাংলা দেশের সবচেয়ে বড় PHP গ্রুপ, PHPXpert এর পরিচালক, দেশের প্রথম বাংলা ইউনিকোড পার্সারের ডেভোলোপারদের অন্যতম, জনপ্রিয় ফেসবুক এপ্লিকেশন Miproapps/thruSocial এর প্রবর্তক এবং আন্তর্জাতিক মানের Startup Leevio এর এই প্রতিষ্ঠাতার কথা আজ জানবো টেকটিউনস টিউন্টারভিউ এর মাধ্যমে।

টেকটিউনস: কম্পিউটার ও কোডিং জগতে আপনার শুরুটা কিভাবে হলো ?
হাসিন হায়দার: আমি যখন রাজশাহী বিআইটিতে (বতর্মানে রুয়েট) ভর্তির কোচিং করতাম তখন সেখানে একটা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার ছিল । ক্লাসের পর প্রতিদিনই আমি সেখানে অনেক সময় ব্যয় করতাম । প্রথম প্রথম শুধু গেমিং, তারপর আঁকাআঁকি ইত্যাদি । এরপর আমার মাথায় একটা প্রশ্ন আসলো যে এই এপ্লিকেশনগুলো কিভাবে কাজ করে । আমি আমার বাবাকে বেসিক কম্পিউটার শেখার একটা বই এনে দিতে বললাম । তিনি যেহেতু কম্পিউটারের ব্যাপারে অভিজ্ঞ ছিলেন না তাই তিনি এক দোকান থেকে মাইক্রোসফট এক্সেলের একটা বই নিয়ে এলেন । এক্সেলে ফর্মুলা লেখা, ম্যাক্রো প্রোগ্রামিং আমার আবেগকে প্রজ্বলিত করল এবং আমি Foxpro এর উপর একটি বই কিনলাম, এভাবেই আমার প্রোগ্রামিং জীবনের শুরু ।

টেকটিউনস: আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড সিভিল ইন্জিনিয়ারিং । সেখান থেকে প্রোফেশনাল কোডিং জগতে চলে আসার গল্পটা শুনব ।
হাসিন হায়দার: যেহেতু আমি FoxPro ও Qbasic এ প্রোগ্রামিংয়ে আগ্রহী ছিলাম এবং শিখছিলাম, তাই আমাদের নিউমারিক্যাল এনালাইসিস ক্লাসের সমস্যাগুলো সলভ করতে অনেক ভালো লাগত । বিআইটিতে একটি বিশাল কম্পিউটার রুম ছিল, 256 এবং 356 মেশিনে পূর্ণ একটি DOS এর জগৎ । তখন আমার এক বন্ধু বাংলা ডিকশনারী, বাংলা টেক্সট টু স্পিচ এর মত বাংলা এপ্লিকেশন তৈরীতে ভীষণ আগ্রহী ছিল । আমরা একসাথে অনেক সময় কাটিয়েছি । তখন আমি বাংলা একটা এপ্লিকেশন তৈরীর পরিকল্পনা করলাম যা দিয়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে সহজে বাংলা লেখা যাবে । তখন আমি এবং চারজন জুনিয়র, ইমন, সুমন, আবিদ ও সুমি মিলে বাংলা ইন্টারফেস অর্ক (Orko) তৈরী করলাম । এটা ক্যাম্পাসে ভীষণ জনপ্রিয় হল এবং ব্যবসায়িকভাবেও সফল ছিল । এটিই আমাদের বাণিজ্যিক এপ্লিকেশন তৈরীতে ক্যারিয়ার গঠনে উদ্বুদ্ধ করল ।

টেকটিউনস: পেজফ্লেক্স আর সামহোয়্যার ইনে তো একটা ব্যস্ত সময় পার করেছেন, ওটা নিয়ে কিছু বলুন ।
হাসিন হায়দার: সামহোয়্যার ইনে আমি টিম স্পিরিটের ব্যাপারে অনেক কিছু শিখেছি । সামহোয়্যার ইনের CEO অরিল্ড ক্লকারহগ সেই সময় আমার মেন্টর ছিলেন । তিনি আমাকে শিখিয়েছেন সাফল্য এমন কিছু যা সবার সাথে মিলে উৎযাপন করতে হয় এবং রঙ্গীন মূহুর্ত (colorful moments) বলতে আসলে কি বোঝায় । সামহোয়্যার ইনে আমি বেশ কিছু চমৎকার ডেভেলপার সাথে পরিচয় হয়েছে । আমার সময় সামহোয়্যার ইনে দেশের সেরা কিছু ডেভলপাররা কাজ করতেন । আমরা একসাথে অনেক কিছু শিখেছি । পেজফ্লেক্স এর ব্যাপারটাও অনেকা একই রকম । শিপলু বাহ, ওমর আল জাবির মিশো এবং অন্যান্য সহকর্মীরা সত্যি খুব উৎসাহ প্রদায়ক ছিলেন । এবং আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আমি পেজফ্লেক্সে থাকাকালীন শিখেছি, তা হলো এপ্লিকেশনের ভার্সন কন্ট্রোল টুলের ব্যবহার এবং স্কেলযোগ্য বৃহৎ আকারের এপ্লিকেশন তৈরী ।

টেকটিউনস: আপনার লেখা বেশ কিছু বইও বাজার মাতিয়েছে একসময় ।
হাসিন হায়দার: জ্বী, আমি এই পর্যন্ত চারটি বই লিখেছি ।

টেকটিউনস: আপনি তো বাংলাদেশের প্রথম ZCE (Zend Certified Engineer ), আপনার ZCE হওয়ার গল্পটা শুনতে চাই।
হাসিন হায়দার: আমি যখন ZCE হওয়ার পরিক্লপনা করছিলাম তখন এই বিষয়ে রিসোর্স খুজে পাওয়া অনেক কষ্টের ছিল । এবং মানুষজন এমনভাবে তাকাতো যেন আমি ভীনগ্রহের কোন এলিয়েন ! অনেক খোজাখোজির পর নেট থেকে এই বিষয়ের কিছু বই পেলাম এবং সিদ্ধান্ত নিলাম পরীক্ষাটা দেয়ার । তিন চার মাসের বেতনের টাকা জমিয়ে পরীক্ষার ফি জোগাড় করলাম । তখন আমি একটা চাকরি করছিলাম এবং ওটাই আমার একমাত্র আয়ের উৎস ছিল । উপার্জনটা কষ্টের ছিল এবং ফেল করার ভার বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না । তাই আমি অনেক desperate ছিলাম । আর কোন কিছুতে প্রথম হওয়ার আনন্দের ব্যাপারটাও মাথায় ছিল । দেশে তখন কেউ ZCE ছিল না এবং এটা আমার কাজে ব্যবহৃত টুল PHP এর সাথেও সামন্জস্যপূর্ণ ছিল । তাই আমি ZCE পরীক্ষায় অংশ নিলাম ।

টেকটিউনস: TRIPART, SOMEWHEREIN, সহ আপনার কাজ করা বেশী ভাগ প্রতিষ্ঠানই সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং নিয়ে এটা কি কাকতালীয় ?
হাসিন হায়দার: না, আমি দীর্ঘদিন ধরেই সোসিয়্যাল এপ্লিকেশন ডেভলপমেন্টের কাজ করছিলাম এবং এই বিষয়ে কাজ করছে এমন কোম্পানি ও ডেভলপারদের সাথে কাজ করতে আমি স্বাছ্যন্দ বোধ করি । কারণ এটাতে আমার ও অন্যদের জন্য কমিউকেশনে সহজ এবং আমরা একই অবস্থানে থাকতে পারি।

টেকটিউনস: চাকরী ছেড়ে entrepreneurship এ চলে আসা কেন ?
হাসিন হায়দার: সত্যি বলতে কি আমার কিছু বেশ কিছু অদ্ভুত আইডিয়া ছিল যেগুলোতে হয়ত আমার চাকরীদানকারী কোম্পানি ফান্ডিং করতে আগ্রহী হতো না। তাই আমাকে নিজেকেই ওগুলো বাস্তবায়নে উদ্দোগী হতে হতো । এটাই আমার Entrepreneurship Spirit ছিল এবং এর কারণেই আমরা Leevio শুরু করি।

টেকটিউনস: আপনি পাচঁ সন্তানের পরিবারের একমাত্র ছেলে, আপনাকে নিয়ে নিশ্চয়ই সবার বিরাট প্রত্যাশা । এগুলো ক্যারিয়ারকে কিভাবে প্রভাবিত করেছে ?
হাসিন হায়দার: আমি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে যেখানে আমার বাবা খুবই কষ্টে উপার্জন করতেন । তাই আমি অর্থে মর্ম জানতাম এবং অর্থ উপার্জনে কত কষ্ট করতে হয় তাও জানতাম । মাত্র একজন পুত্র সন্তানের আশায় আমাদের পরিবারে পর পর চারজন কন্যা সন্তান হয়ে ছিল, তাই আমার উপর দায়িত্বটাও বেশী ছিল । এই জিনিষগুলো আমাকে আমার সাফল্যের ব্যাপারে ফোকাসড হতে সাহায্য করে । আমাকে এটা করতেই হতো, তাছাড়া অন্যকোন পথ ছিল না (হাসি) । এবং আপনি যখন কোন কিছু নিয়ে থাকেন তখন আপনার জন্য চ্যালেন্জ নেয়া সহজ হয়ে যায় ।

টেকটিউনস: আমরা যদি গ্লোবালী দেখি তবে আমাদের সামনে তিনজন সেরা Entreprenuer আছে, বিল গেটস, স্টিভ জবস আর হালের মার্ক জাকারবার্গ । আপনার পছন্দের কে ? আপনার Entrepreneurship দর্শনটা কি ?
হাসিন হায়দার: বিল গেটস এবং স্টিভ জবস । আমার জীবনের বড় একটা সময় আমি ভিজুয়্যাল বেসিকে কাজ করেছি , যা মাইক্রোসফটের একটা চমৎকার প্রোগ্রাম। তারপর আমি পথ পরিবর্তন করে LAMP এবং তারপর Mac এ এপ্লিকেশন ডেভলপিং শুরু করি। স্টিভ জবস ও তার চমৎকার গেজেটগুলো আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছে।

টেকটিউনস: Leevio নামটার ইতিহাস কি?
হাসিন হায়দার: বিভিন্ন নেম জেনারেটরে আমরা ভালো কিছু নাম খুজছিলাম, এই নাম ওভাবেই পাওয়া । আমরা আরো তিনটা নাম বাছাই করে ভোটাভোটি করলাম । Leevio বন্ধুদের কাছ থেকে সরব্বোচ্চ নম্বর পেলো এবং আমরা সেইটাই গ্রহণ করলাম । Leevio এর কোন অর্থ নেই, এটা আরেকটা ভালো দিক । তাছাড়া এটা Life এর মতো শোনায়।

টেকটিউনস: Leevio এর Miproapps হঠাৎ i2We এর ThruSocial হয়ে গেল কিভাবে ?
হাসিন হায়দার: আমরা Miproapps এর ৮০% শেয়ার i2we এর কাছে বিক্রি করে দেই । তারা বুঝতে পারলো এর উপর ভিত্তি করেই সোসিয়্যাল ডেভলপমেন্টের নতুন সূচনা হতে পারে । তাই তারা এর নাম পরিবর্তন করে thrusocial দেয় এবং এই এপটিই পুরো কোম্পানির মূল আর্কষন হয়ে দাড়ায়।

টেকটিউনস: Leevio এর ব্যবসায়িক সাফল্য কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ? এর মূল সোর্স কোনটি ?
হাসিন হায়দার: প্রথম দিকে যখন আমরা MiproApps তৈরী করছিলাম তখন আমরা ক্লায়েন্টদের কাজ ও করতাম । যে অর্থ আমরা উপর্জন করছিলাম তা ইন হাউজ ডেভলপমেন্টের কাজে লাগত । এখনও আমরা উপার্জিত আয়ের বড় একটা অংশ রিসার্চ ও ডেভলপমেন্ট ও ইন হাউজ ডেভলপমেন্টে খরচ করে থাকি।

টেকটিউনস: অনেকের মতে এখন আমরা internationally স্টার্টআপের বাবলের (startup bubble) মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, আপনার মতামত কি ?
হাসিন হায়দার: খারাপ না, Entrepreneurship স্পিরিট খুবই ভালো । তবে একটা কথা, আপনাকে আগে একজন ভালো টিম প্লেয়ার হতে হবে নিজের টিম পরিচালনা করতে । তাই আপনি যদি দুই তিন বছর কোন ভালো টিমের সাথে কোন কোম্পানিতে চাকরী করতে পারেন তবে তা নিজের স্টার্টআপ চালু করতে বেশ সহায়ক হবে।

টেকটিউনস: আপনকে inspire করে বা আপনার ক্যারিয়ারে অবদান আছে এমন কিছু ব্যক্তির নাম আমাদের যদি জানাতেন ।
হাসিন হায়দার: আমি এই বিষয় নিয়ে একটি পোষ্ট লিখেছি । সেটা দেখতে পারেন । ( http://hasin.wordpress.com/2009/01/19/hats-off-to-you-who-are-behind-the-scene/ )

টেকটিউনস: যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদের এই ক্ষেত্রে আসার আগে কি কি প্রস্তুতি নেয়ার পরার্মশ দিবেন ?
হাসিন হায়দার: এটার উত্তর আগেই দিয়েছি, প্রথমে ভালো টিম প্লেয়ার হতে হবে।

টেকটিউনস: ক্যারিয়র শেষে নিজেকে কোথায় দেখতে চান ? কোন ব্যক্তিগত লক্ষ্য ?
হাসিন হায়দার: আমি শুধু নিজের মন যা চায় তাই করে বেড়ানো মত সময় চাই । যেমন ১০দিনের মাছ শিকার করা, একটি বই লেখা বা পাহাড়ের চূড়ার বসবাস করা। তেমন বড় কিছু না :-)।

টেকটিউনস: আপনার পরিবারের সদস্য নিয়ে কিছু বলুন।
হাসিন হায়দার: আমি আমার বাবা মাকে নিয়ে গর্বিত। আমার মা আমার পাচঁ বছর বয়স থেকে প্যারালাইজড। তবুও তিনি আমার বাবার সাথে মিলে সকল ঝক্কি ঝামেলা সহ্য করে গেছেন। আমাদের পড়ালেখা খরচ ও খাবার জোগাড় করার উদ্দ্যেশে টিউশিনির মত বাড়তি কাজও করেছেন। আমার ইচ্ছে করে আমি যদি তাদের মত হতে পারতাম। আমি আমার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ভীষণ ভালোবাসি। তারা আমার অনুপ্রেরণার উৎস। আমার বোনরা, যদিও আমাদের মাঝে দারুন ঝগড়া হতো, তবুও আমরা একে অপরকে খুব ভালোবাসি।

টেকটিউনস: আপনার দুই সন্তানদেরও কী প্রোগ্রামার বানানোর ইচ্ছা না অন্য কোন পরিকল্পনা আছে?
হাসিন হায়দার: না আমি একজন লিবারেল মানুষ । আফিফ এবং ইভানকে তাদের নিজের জীবন গড়তে দিব । আমি তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য ও নিদের্শনা দিব কিন্তু কখনও ক্যারিয়ারের ব্যাপারে চাপ দিব না।

টেকটিউনস: Titanium প্লাটফরমে আইফোন app বানানো নিয়ে আপনারা বেশ কিছু কাজ করেছেন। এটা সম্বন্ধে কিছু বলুন।
হাসিন হায়দার: ১৭ তারিখে JSCON2011 তে আসুন এবং নিজেই দেখে নিন :)

টেকটিউনস: Leevio এর সুদূর প্রসারি কোন চিন্তা বা ভবিষ্যতে কি কি প্রোডাক্ট আসতে পারে ?
হাসিন হায়দার: সিক্রেট 🙂 ।

টেকটিউনস: Leevio থেকে বাংলা লেখার টুল স্লেট বেরিয়েছে । দেশের জন্য আরো কোন কিছু করার পরিকল্পনা কী Leevio এর আছে?
হাসিন হায়দার: আমি বাংলা এপ্লিকেশন তৈরীতে আগ্রহী । দেখা যাক নতুন আর কি আইডিয়া আমার মাথায় আসে, আমরা সেগুলো নিয়ে অবশ্যই কাজ করব যদি না এটা আমার স্কিলের বাইরের কিছু হয়।

টেকটিউনস: PhpXpert গ্রুপ কিভাবে শুরু । এর প্রোগ্রামগুলোর পিছনে Intention কি ?
হাসিন হায়দার: সবাইকে সচেতন করা এবং এই অসাধারণ ভাষাটাকে সবার কাছে পৌছে দেয়া । আরেকটা বড় কারণ যার কারণে আমরা ওয়ার্কশপ, সেমিনার আয়োজন করি হচ্ছে একটা কমিউনিটি গড়ে তোলা এবং দিক নির্দেশনা প্রদান করা ।

টেকটিউনস: টেকটিউনস কেমন লাগে? টেকটিউনস সম্বন্ধে আপনার মতামত ও পরামর্শ জানতে চাচ্ছি।
হাসিন হায়দার: আমি টেকটিউনস অনেক পছন্দ করি । টেকটিউনসের নির্মাতা, পরিচালক, CEO & CTO - মেহেদী হাসান আরিফ একজন চমৎকার মানুষ এবং আমরা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে চিনি। আপনার মত এবং অন্যান্যরা টেকটিউনসকে পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন্ত রাখছেন। শুধু একটা জিনিষ আমার অপছন্দ যে এখানে অনেক কপিরাইটেড ম্যাটেরিয়াল শেয়ার করা হয় । আমি ব্যাক্তিগতভাবে পাইরেসী পছন্দ করি না এবং একে এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করি । আমাদের "পাইরেসীকে না বলুন" - এ ধরণের সচেতনতা তৈরী করা উচিত । আপনার সময়ে জন্য ধন্যবাদ , JS Conference এ দেখা হবে।

https://www.techtunes.com.bd/featured/tune-id/86967

58
Person / সাক্ষাতকারঃ অমি আজাদ
« on: November 24, 2017, 12:33:38 AM »
টিউন্টারভিউ গেস্ট: অমি আজাদ, ডেভেলপার ইভানজেলিস্ট, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ
টিউন্টারভিউ হোস্ট: আরিফ নিজামী
সময়: ১৮ সেপ্টেম্বার, ২০১১ । রবিবার । দুপুর ২টা ।
স্থান: মাইক্রোসফট বাংলাদেশ অফিস । গুলশান, ঢাকা ।
ব্যাপ্তি: প্রায় ৫৭ মিনিট ।

অমি আজাদ । বাংলা ভাষাকে ই-জগতে প্রতিষ্ঠিত করার পিছনের গুটিকয়েক কারিগরের একজন । তার নামের সাথে আছে দেশের প্রথম Microsoft Most Valuable Professional (MVP) পুরস্কার অর্জনের গৌরব । বর্তমানে মাইক্রোসফটের ডেভলপার ইভানজেলিস্ট পদে থাকা অমি আজাদের শুরু থেকে সব গল্প জানব আজ ।

টেকটিউনস: শুভ অপরাহ্ন । প্রথমেই আপনার নিজের সম্বন্ধে কিছু শুনব ।
অমি আজাদ: আমার জন্ম দিনাজপুরে। অনেকে মনে করে গ্রামে জন্ম আমার, আসলে ওটা একটা ভালো শহর। বাংলাদেশের আর দশটা শহর যেমন থাকে তেমনই শহর। আমাদের অপার্চুনিটি বলতে ঢাকার মতন তেমন কিছু ছিল না; এটা উপলব্ধি হলো যখন ঢাকায় আসলাম, মনে হলো এক বিশাল সমুদ্রে এসে পড়লাম। ছেলেমেয়েদের মধ্যে যে স্মার্টনেস যে নলেজ, তা আমাদের মধ্যে ছিল না। তারপরেও যেটা স্বীকার করবো যে ফ্যামিলি থেকে আমরা হিউজ সাপোর্ট পেতাম। উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম; পরিবারের পক্ষ থেকে কখনই কোন কমপ্লেইন ছিল না, যে এটা করছ কেন ওটা করছ কেন। শুধু একবার একটাই কমপ্লেইন হয়েছিল, আমি বলেছিলাম যে চারুকলায় পড়ালেখা করব; আব্বা আমাকে মেরে ফেলার জন্য বন্দুক বের করেছিলেন 🙂
পরিবার থেকে ভীষণ সাপোর্ট পেয়েছি আমি; একটু বলি, ১৯৯৪ সালে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ডায়াল করতাম ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য, সেসময় মিনিটে বিল উঠত ৪০ টাকা। এই STD কল করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম প্রতিদিন আধা ঘন্টা ২০ মিনিটের মত; মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা ফোনের বিল আসতো এবং আব্বা এই ফোনের বিলটাও বেয়ার করতেন কিন্তু কিছু না বলে। এমন না যে আব্বার ঘুষের টাকা ছিল, তিনি এই সাপোর্টটা দিতেন যে ছেলে কিছু করতে চায়। আমার মনে হয় না এখনকার বাবারা এরকম সাপোর্টট দিবে! শুধু বাবা না, আমি প্রচন্ড সাপোর্ট পেয়েছি বাবা, মা, ভাই, বৌ সবার কাছ থেকে। ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ডটা এরকমই।
আমরা দুই ভাই, দিনাজপুরে ISP করার মধ্যে দিয়ে আইটি ফিল্ডে এন্ট্রি। অনেকেই হয়ত নাম জানে- দিনাজপুর অনলাইন। দিনাজপুর অনলাইনে কাজ করার পাশাপাশি বাংলা নিয়ে কাজ করার একটা প্যাশন ছিলো। তখন একুশে নামের একটা প্রজেক্টেও কাজ করতাম আর এরই মধ্য দিয়ে তখন পরিচয় হয় ডঃ রবিন আপটন, হাসিন হায়দারের মতন মানুষের সাথে। হাসিন আমাকে উৎসাহ দেয় যে বাংলা নিয়ে কাজটা আমি প্রফেশন হিসেবে নিচ্ছিনা কেন এবং সিসটেক ডিজিটালের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। আমি দিনাজপুর অনলাইন ছেড়ে ঢাকায় চলে আসি। ইন্টেলের নববাংলা নামের একটা প্রজেক্ট ছিল সিসটেক ডিজিটালের সাথে, সেখানে কাজ শুরু করলাম, বাংলা নিয়ে কিছু রিসার্চের কাজ করছিলাম তখন আর এর মধ্য দিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু।
তারপর অলোম্যাচ নামের ফ্রান্সের একটা কোম্পানির অফশোর অফিস চালাতাম। চার-পাঁচ জন ডেভলপার নিয়ে, খুব ভালো একটা টিম ছিল। আমার কপাল ভালো যে সবসময় সব টিমই ফ্র্রেন্ডলি ছিল আমার সাথে। আমাদের Systech এ ম্যানেজার ছিলেন রাশেদুল হাসান, ফ্যান্টাস্টিক গাই। অলোম্যাচ থেকে চলে গেলাম দাউদ আইটিতে। ওখানে আমরা ডেনমার্কের এডমিরাল আইটির প্রজেক্টে কাজ করতাম। তারপর চলে গেলাম সিদ্দিকি টেলিমার্কেটিংএ সেখানে ইনফ্রাটেল-এর কাজ করতাম।
এর মাঝখানে কনসাল্টেন্ট হিসেবে World Bank, USAID, CIDA, UNDP এর সাথে কাজ করা হয়েছে। ন্যাশনাল আইডির যে প্রোজেক্ট ছিল, ওটাতেও সম্পৃক্ত থাকার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। গভর্নমেন্টকে কাছ থেকে জানার ভালো সুযোগ হয়েছে। মুনীর হাসান ভাইয়ের কথা ডেফিনেটলী বলব। মুনীর হাসান ভাই গভর্নমেন্টের সাথে কাজ করার একটা ভালো লিংক করে দিয়েছিলেন। এভাবেই ক্যারিয়ার চলতে চলতে আজ মাইক্রোসফটের ডেভলপার ইভানজেলিস্ট।

টেকটিউনস: সামাজিক বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও আইটি সেক্টরের ক্যারিয়ারে কিভাবে এলেন ?
অমি আজাদ: জানিনা, আমার মনেহয় প্যাশনেট হলে সবকিছুই করা সম্ভব। আমার মামার একটা কম্পিউটার ছিল ’৯২-তে। উনি কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং করেন সিংগাপুর থেকে। উনি সিংগাপুরেই সেটেল ছিলেন, কিন্তু একটা পিসি কিনে রেখে গিয়েছিলেন দিনাজপুরে। ওটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতাম। তখন গেম খেলতাম, এটা ওটা করতাম, বাংলায় একটা বই পেয়েছিলাম কিউবেসিক প্রোগ্রামিং এর, সেটা দেখে টুকটাক DOS এ ক্যালকুলেটর বানানো জাতীয় কাজ করতাম। তারপর FOXPRO, FORTAN (খুবই ক্রিটিকাল প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ) নিয়ে নাড়াচাড়া করতাম। সেগুলো নিয়ে পড়ালেখা শুরু করে দেখলাম এটা এমন একটা মেশিন একে আমি যা বলব সেটাই করবে। আগ্রহটা কিন্তু ওখান থেকেই শুরু। আমি কিন্তু খুব critical দিকে যেতাম না। আমি এটাকে যতটুকু ফান হিসেবে নেয়া যায় ততটুকুই করতাম, এক্সপ্লোর করতাম।
এপ্লিকেশনেরতো কোন লিমিট নাই। ওয়েবের যে ব্যাপারটা, ওয়েবের মধ্যেই অনেক কিছু করা যায়। এখন হ্যান্ডহোল্ড ডিভাইসও চলে এসেছে । এগুলো লিমিট ছাড়া একটা জগত, ঢুকতে ঢুকতে ঢুকেই গেলাম। আর আমি ছাত্র হিসেবে খুব ভালো ছিলাম তাও না। আমি বাধ্য হয়েই শেষে সমাজ বিজ্ঞানে ভর্তি হয়েছিলাম। সারাক্ষণই কম্পিউটার নিয়ে থাকতাম, পড়ালেখা করব কখন? 🙂 এই জিনিসটা একটা খারাপ দিক ছিল। আমি পাঠকদের বলব দুটোই একসাথে কন্টিনিউ করতে হবে। পড়ালেখাটা খুবই কাজের। ওটাও সিরিয়াসলী নিতে হবে।

টেকটিউনস: বাংলা কম্পিউটিং নিয়ে কাজ করে গেছেন বেশ বড় একটা সময় । এর পিছনে অনুপ্রেরণা কি ছিল ?
অমি আজাদ: বিষয়টা হচ্ছে যে ২০০০ সালের দিকে, সবাই হতে লেখালেখি করত, আমি চিন্তা করেছিলাম যে হাতে লেখালেখি করব না। তখনও চিঠির প্রচলন, ইমেইল তেমন একটা নেই। প্রশিকা, বিজয়, লেখনী সহ আরো দুই একটা টুল ছিলো বাংলা লেখার জন্য। এখন যেমন সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে লেখতে পারে, তখন এই ফিলটা ছিল না। ফন্ট চেঞ্জ করতে হয়, সার্চ করা যায় না, বিভিন্ন ব্যারিয়ার। তাছাড়া অনেক টাকা দিয়ে সফটওয়্যার কিনতে হত। Windows এর ভার্সন বদলালে বা অফিসের ভার্সন চেঞ্জ হলে সফটওয়্যার কোম্পানিকে টাকা দিয়ে আবার ঠিক করাতে হত। ২০০০ বা ২০০১ সালের দিকে ঘাটাঘাটি করছিলাম ফ্রি সাল্যুশন কি কি আছে। অলট্রিুইস্ট ইন্টারন্যাশনাল নামের একটা প্রতিষ্ঠানের প্রোজেক্ট ছিল একুশে; ডঃ রবিন আপটন সেটা চালাতেন। একুশে একটা ম্যাক্রো এপ্লিকেশন যেটা অফিস এর সাথে কাজ করবে এবং এভেইলেবেল যে ফন্ট আছে তা দিয়েই কাজ করবে। যেমন প্রশিকার যে ফন্ট আছে ওটা দিয়ে বিজয়ে লেখা যায় না, কিন্তু একুশে সবগুলোতেই লেখা যায়। এভাবে শুরু তারপর আমি কিছু এক্সটেন্ডেড করেছিলাম এপ্লিকেশনটায়, যেমন প্রশিকায় লেখা ডকুমেন্ট বিজয়ে কনভার্ট করা, বিজয়ে লেখা ডকুমেন্ট প্রশিকায় কনভার্ট করা, বিজয়েরই আবার চার-পাচঁটা ভার্সন আছে - এক ভার্সন থেকে অন্যটায় কনভার্সন, এই কাজগুলোতে আমার ইনপুট আছে। এই কাজ করতে করতে ২০০১ এর শেষের দিকে মনে হলো দেখি উইন্ডোজের বা ইউনিকোডের অবস্থাটা কেমন।
ওই সময় পরিচয় হলো পল নেলসনের সাথে, তিনি ওই সময় মাইক্রোসফটের টাইপোগ্রাফিক ডিপার্টমেন্টের হেড ছিলেন। ওরা ওই সময় বাংলা নিয়ে একটা ঝামেলায় ছিলেন এবং কনট্রিবিউটর খুঁজছিলেন। তখন বাংলা, হিন্দি সহ Indic যে ভাষাগুলো আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করছিলেন প্রফেসর যোশী । উনি ও উনার মেয়ে অপূর্বা এক সাথে কাজ করতেন। উনারা কোন কারণে প্রজেক্ট ছেড়ে ব্যাক করেন ইন্ডিয়াতে , এই আনফিনিসড প্রোজেক্ট টা R&D করতে আমি কাজ শুরু করলাম মাইক্রোসফটের সাথে। শুরুতে Non Discloser Agreement সাইন করতে হলো এবং আমার কিছু সোর্সকোডে কন্ট্রিবিউট করার সুযোগ হয়েছিলো উইন্ডোজে usp10.dll নামের একটা ফাইলের।
এই প্রথম আমার সুযোগ হয় মাইক্রোসফটের কোন সোর্স কোড দেখার। সবচেয়ে ভালো লাগে যে প্রতিটা লাইনে ডেসক্রিপশন আছে, কোন লাইন কি কাজ করছে। সাধারণত যেটা আমাদের এনভার্নমেন্টে প্রোগ্রামারদের কমেন্ট লিখতে দেখা যায়না, ফলে যে কাজ করেছে, সে ছেড়ে গেলে অন্যরা চাপে পড়ে যায় এবং কূল কিনারা পায়না। আমি যে সোর্সে অনেক মডিফিকেশন করেছি তা না, অল্প কিছু করেছি। য-ফলা নিয়ে একটা ঝামেলা ছিল ওটা ঠিক করলাম। পরেতো ‘ৎ’ চলে আসলো। ৎ তে আমার একটা ইনপুট ছিল, চন্দ্রঁবিন্দুর পজিশন নিয়ে ঝামেলা ছিল, সেটা ঠিক করেছিলাম। অফিস ২০০০ ইউজ করে তারা এই সমস্যাগুলো এখনো দেখা যাবে যেগুলি পরে ঠিক করে ফেলা হয়েছে। Virinda ফন্টটাতে সরাসরি আমার অনেক ইনপুট আছে, হিন্টিং - টেস্টিং এর বহু কাজ ছিল । এভাবে মাইক্রোফটের সাথে ইনভলবমন্ট ২০০১ এর মাঝামাঝি থেকে।
তারপর উইন্ডোজ এক্সপি সাভির্স প্যাক টু আসলো, বাংলা সাপোর্ট অনেক ভালো হলো । এর মধ্যে উইনিকোডের সাথে অনেক ফাইট চলতে লাগল, ওই সময় খুব ভালো সাপোর্ট দিয়েছিল Microsoft থেকে পিটার কনস্টেবল এবং ভারতের হায়দ্রাবার ইউনিভার্সিটির ডঃ গৌতম সেনগুপ্ত। আমরা ভীষন ফাইট করে ‘ৎ’ পেলাম। অনেকে অনেক কিছু বলে, তবে সত্য কথা বলতে বাংলাদেশ থেকে কেউ তেমন কিছুই করেনি, একটা মেইলও করেনি কেউ। আমি ওই মেইল লিস্টে ছিলাম, কখনও দেখিনাই বাংলাদেশ থেকে একটা মেইল গেল। আমরা য-ফলার জন্যও কাজ করেছিলাম, পরে আর সময় দিতে পারিনি এবং এখনো কোন সমাধান হয়নি। এভাবে বাংলা কম্পিউটিং এর সাথে আমার সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরে যেতে থাকে। আর কাজগুলি যে আমি টাকার জন্য করেছি তা না। একটা ডেডিকেশন কাজ করতো, যে আজকে এগুলি ঠিক হয়ে গেলে সমস্থ বাংলা ভাষাভাষীরা এটা ব্যবহার করতে পারবে। একই সাথে লিনাক্সের জন্যও কন্ট্রিবিউট করেছিলাম তখন।
এখনো মাইক্রোসফটের সাথে বাংলা নিয়ে কাজ করা হয়। যেমন ওরা চিন্তা করছে উইন্ডোজ এইটে একটা ট্রানসিলারেট (যেটাকে পাবলিক ফোনেটিক বলে) লেআউট থাকবে । এটা নিয়ে কিছু ইনপুট দিয়েছি, আমি জানিনা শেষ পর্যন্ত প্রোডাক্ট টিম সেটা রাখবে কি-না।
কাজ করতে করতে একদিন ওরা বলল তুমিতো অনেকদিন ধরে কাজ করছ তোমাকে একটা রিকগনিশন দেয়া দরকার। তখন ২০০৪ বা ৫-এর দিকে ওরা আমাকে MVP করে।

টেকটিউনস: আপনি কি বাংলাদেশে প্রথম MVP নাকি জাবির আল মিশো ভাই ?
অমি আজাদ: একই বছর আমি সম্ভবত ২য় কোয়ার্টারে আর মিশো ৩য় কোয়ার্টারে ।

টেকটিউনস: MVP পুরস্কার পাওয়াটা কেমন অনুভূতির ছিল ?
অমি আজাদ: Awesome! বাংলাদেশে প্রথম, আর তখন আমি ঢাকাতেও থাকি না। অদ্ভুত এক অনুভূতি! মাইক্রোসফটের একটা সার্টিফিকেট।

টেকটিউনস: আপনি যে শ্রম দিয়েছেন তার যথাযথ স্বীকৃতি কি পেয়েছেন ?
অমি আজাদ: স্বীকৃতির জন্য কিছু করিনি। হ্যাঁ at the end of the day আমাকে জীবিকা আয় করতে হবে। স্বীকৃতির জন্য বা পয়সার জন্য কাজ আমি করিনি। এখন বাংলার জন্য যারা কাজ করছে যেমন মেহেদী, হাসিন, সিয়াম, রিফাত এরা কেউ পয়সার জন্য কাজ করছে না। আবার যখন কমার্শিয়ার সাপোর্ট লাগে তখন এদের ডাক পড়ে, এটাই ভালোলাগা বা সফলতা। যেমন সিয়ামের একটা উদাহরণ দেই, রবির যখন কমার্শিয়াল ফন্টের দরকার হলো, বা নিবার্চন কমিশনের ফন্টের দরকার হলো তখন ওকে ডেকেছে, সে পয়সাও পেয়েছে। এখন বাংলা নিয়ে কিছু হলে সচিবালয় থেকে বা মিনিষ্ট্রি থেকে আমাদেরকেই ডাকে, এটাই সফলতা। তবে গভর্নমেন্ট থেকে যদি আরো ভালো সাপোর্ট পেতাম তাহলে ভালো হত। ওনাদের এটেনশন আমাদের এক্সপেক্টেড লেভেলের না।

টেকটিউনস: এক সময় আপনার উপর মাইক্রোসফটের ফন্ট নিজের বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ করা হলো – আপনার বক্তব্য কি ?
অমি আজাদ: (হাসি) মাইক্রোসফটের ফন্ট আমি চালালে কি আমি আজকে মাইক্রোসফটে কাজ করি! কনট্রোভার্সি থাকবেই। অনেকেই আপসেট হয়ে যায় যে বাংলার জন্য কাজ করতে গেলাম কিন্তু এটা কি হলো। এটা আমি আসলে পারসোনালী নেই না। প্রফেশনালী কাজ করতে গেলে কমিউনিটি ডেভলপ করতে গেলে অনেক বেরিয়ার আসে, সেটা ইগনোর করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

টেকটিউনস: দেশের কিছু ব্যবহারকারী বাদ দিলে প্রায় সব পিসিই পাইরেটেড উইন্ডোজ ব্যবহার করে, এই ব্যাপারে মাইক্রোসফট বাংলাদেশের অবস্থান কি ?
অমি আজাদ: সবকিছুই পাইরেটেড তা নয়। সচেতনতার অভাব আছে। সাড়ে তিন হাজার টাকায় কিন্তু উইন্ডোজ পাওয়া যায় সাথে একটা এন্টিভাইরাস ফ্রি। বাজারে একটা এন্টি ভাইরাস ৯০০ টাকা। তাহলে দাম হয়ে গেল ২৫০০ টাকা। ২৫০০ টাকায় একটা ওএস হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত: আমাদের এখানে একটা মিস লিডিং কথা আছে, আমরা ২০১৩ পযর্ন্ত পাইরেটেড সফটওয়্যর ইউজ করলে কেউ কিছু বলবে না। আমি যতদূর জানি এটা যে দেশে কপিরাইট আইন নেই সেদেশে প্রযোজ্য, থার্ড ওয়ার্ল্ড, ফোর্থওয়ার্ল্ড বলে কোন লাভ নাই। গরীব দেশ ভাঙ্গায় আর কত? মানুষ ওপেন সোর্স ইউজ করুক, আমার কোন সমস্যা নেই, তবে পাইরেসী যেন না হয়।
শুধু মাইক্রোসফট না। সরকার কর্পোরেটসদের সাথে কাজ করে দাম অনেক কমিয়ে আনতে পারে। সব দেশের জন্য সব কোম্পানীর আলাদা দাম নির্ধারণ করা আছে, বাংলাদেশের নাই। বিল গেটসকে চিঠি দিয়ে কি লাভ, কথা বলতে হবে হাতের কাছে যাদের পাওয়া যায় তাদের সাথে। যেগুলো আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করি এমন কোম্পানির কাছে প্রস্তাব দিলে যখন বাল্ক সেল হবে তখন দাম কমেই যাবে। এটা মাইক্রোসফট হোক বা ওরাকল আর এডোবি হোক।

টেকটিউনস: মাইক্রোসফটের MSDNAA ও Student Partner প্রোগ্রামতো ভালই এগোচ্ছে, এর মূল লক্ষ্যটা কি ?
অমি আজাদ: MSDNAA এর কিছু গোল আছে। আমাদের প্লাটফরমে যা যা আছে তা দিয়ে আমরা স্টুডেন্টদের সাপোর্ট দেই। শেয়ারপয়েন্ট কি জিনিস অনেকেই জানে না। সকালে অফিসে একটা ফোন এসেছিল শেয়ারপয়েন্ট সার্ভার মেইনটেইন করতে হবে, সাড়ে তিন লাখ টাকার বেতন দেবে, দুইজন ছেলে দরকার। আমি জানি সারা বাংলাদেশ খুঁজলেও দু’জন পাওয়া যাবেনা। জিপিতে আধা ডজন ছেলে এসেছে ইন্ডিয়া থেকে শেয়ারপয়েন্ট কাজ করতে, আমাদের দেশে লোক নাই। আমরা এই সুযোগগুলি দেই যাতে স্টুডেন্টরা একটু এক্সপ্লোর করে ক্যারিয়ারে কি নিয়ে এগোলে বেশী লাভ, সেটা বুঝতে পারে।
এক ইউনিভারর্সিটির দুজন টিচারকে একদিন জিজ্ঞাস করেছিলাম, ডায়নামিক্স কি, উনারা উত্তর দিতে পারেননি। দোষ উনাদের না, এক বড় প্রতিষ্ঠানের এক টিচারের সাথে কাজ করেছিলাম, যে কিভাবে MSDNAA নিয়ে কাজ করা যায়। কিছুদিন পর উনি মেইল দিলেন যে উনি আমেরিকায় চলে গিয়েছেন স্কলারশীপ নিয়ে এবং অমুকের সাথে কথা বলতে বললেন। অমুকের সাথে কয়েকদিন কথা বললাম, কিছুদিন পর উনিও বলেন যে আমিতো স্কলারশীপ নিয়ে চলে যাচ্ছি দেখি আপনাকে কারো সাথে ট্যাগ করে দেয়া যায় কিনা। আমি জানিনা ওরা আর দেশে ফিরে আসবে কিনা, সবাইতো আর জাফর ইকবাল না। আর এখনকার স্টুডেন্ট টিচার সবারই এক সমস্যা। কেউ কিছু এক্সপ্লোর করেনা, টিচারের ধান্দা স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে যাবে, আর স্টুডেন্টদের ধান্দা কোনোমতে পাশ করলেই হবে। এর বাহিরে যে ইন্ডাস্ট্রি আছে, ক্যারিয়ার আছে কিচ্ছু বুঝতে যায়না!
MSDNAA করার ফলে যেই জিনিসগুলো পাও, এটলিস্ট নামটা জানো। সাড়ে তিন লাখ টাকা স্যালারি ইজ এ লট অফ মানি। কিন্তু আমাদের এখানে এমন ছেলেপেলে নাই। ৯০% ইন্ডাস্ট্রিতে আমাদের প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করে। এই মার্কেটটা ধরলেতো আর ক্যরিয়ার নিয়ে টেনশন করতে হয়না।
বাংলাদেশ নামে ছোট দেশ কিন্তু এখানে ৮২টা ভার্সিটি আছে, সব জায়গায় পৌছানো মাইক্রোসফটের পক্ষে সম্ভব না, এজন্য MSP নেয়া হয়। MSP দের একটা ভিজিবিলিটি আসে, অফিস ৩৬৫ এর মতন অনেক ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড জিনিসপত্র ব্যবহারের সুযোগ পায়, সার্টিফিকেশন করার সুযোগ পায়।

টেকটিউনস: GNU এর জনক Richard Stallman এর এক লেখায় পড়েছিলাম মাইক্রোসফট যে ফ্রি সফটওয়্যার দেয় এটা ঠিক তেমন যে সিগারেট কোম্পানি কলেজ ছাত্রদের ফ্রি সিগারেট দেয় । আপনার মত জানতে চাচ্ছি।
অমি আজাদ: ব্যাক্তিগতভাবে বললে ভদ্রলোক অনেক ইমোশনাল কথাবার্তা বলেন। ওনার অনেক ফলোয়ার আছে আমি জানি। একবার শুনলাম উনি ল্যানকার্ড ইউজ করা বন্ধ করে দিয়েছেন ওটাতে একটা কপিরাইট করা ফামর্ওয়্যার ছিল বলে। উনি কি সাধু দরবেশ টাইপের লোক নাকি! উনাকে মানুষ খাবার দিয়ে যায়, যা খেয়ে উনি চলেন? উনার ইনকাম সোর্স কি আমি জানি না। At the end of the day you have to make money. তুমি যাই কর না কেন, তোমাকে টাকা রোজগার করতে হবে এই পৃথিবীতে বাঁচতে হলে, তুমি যদি সুন্দরবনে যেয়ে থাকো তাহলে অন্য কথা। বা আমি সাধু-দরবেশ আমার সামনে সবাই ভোগ প্রসাদ রেখে যাবে সেটা খেয়ে, মানব কল্যাণ করব। একটু আগে আমি যে কথাটা বললাম ফ্রি সফটওয়্যার যদি আমি না দেই, তুমি শেয়ারপয়েন্ট কি জানলে না, সাড়ে তিন লাখ টাকার জবটাও পেলে না, লাভ কি আমার হলো না লসটা তোমার হলো? আমি জানি উনি অনেক সম্মানী ব্যক্তি এবং আমি উনার এগেইনস্টে কিছু বলছি না। উনার ওই সময় যা ঠিক মনে হয়েছে তিনি বলেছেন। কিন্তু এখন আমি সাত লাখ টাকা মাসে খরচ করতে রাজি হয়ে দু’টা ছেলে খুঁজছি, আমি পাচ্ছি না। এখন উনি এটার জবাব কি দিবেন?

টেকটিউনস: বাংলাদেশে Imagine Cup এর কাযর্ক্রম সম্পর্কে জানান ।
অমি আজাদ: Imagine Cup বাংলাদেশে হিউজ সাকসেস। দেশের ছেলেপেলের মধ্যে যে আগ্রহ যে স্পৃহা আমরা দেখলাম তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। ব্যাক্তিগতভাবে বলছি, এটা আমি কখনই ভাবিনি যে ১০টা ভার্সিটি নক করব আর ৯০০০ স্টুডেন্ট রেজিস্ট্রেশন করবে। আমরা আশা করছি যে, ২০১২’র ইমাজিন কাপ আরও ভালো হবে। কারণ এখন সবাই জেনে গেছে ইমেজিন কাপ কি। স্টুডেন্টপার্টনাররাও কাজ করছে, ফলে ছেলেপেলেরা মোটামুটি জানে।
এবার আমরা বড় কিছু করব। গতবার যেটা হয়েছে, পার্টিসিপেন্টরা সফটওয়্যার বানিয়েছে জাজরা দেখে রেজাল্ট দিয়েছে। এবার একটু চেঞ্জ হবে। এবার আমরা প্রথম ১০টার মত প্রজেক্ট বেছে নিয়ে একটা ভেন্যুতে শোকেস করব তিন চার দিনের জন্য। NSU বা ঢাকা ভার্সিটিতে হতে পারে, যেখানে স্টুডেন্টদের গেদারিং আছে। ইমেজিন কাপ নিউইয়র্ক ফাইনাল থেকে আমার যেটা লার্নিং, যখন ইন্টারভিউ করা হয় তখন টিমের ছেলেপেলে ঘাবড়ে যায়। Practice makes a man perfect, যখন বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে যাবে তখন ওদের এই প্রেকটিসটা হয়ে যাবে । ওরা চ্যাম্পিয়ন না হোক কিন্তু এই প্রেকটিসটা আজ হোক কাল হোক ইন্টারভিউ বোর্ডে গেলেও কাজে লাগবে। নভেম্বারে একটা প্রেস কনফারেন্স করব প্লাস প্রিভিয়াসলী যারা লোকালী ইন্টারন্যাশনালী পার্টিসিপেট করেছে তাদের নিয়ে মিট দা প্রেস করব । তারপর যথারীতি বুটক্যাম্প চলবে।

টেকটিউনস: ২০১২ এর ইমেজিন কাপের জন্য আগ্রহীরা কিভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে ?
অমি আজাদ: ইমেজিন কাপের একটা গ্লোবাল সাইট আছে ওটাতে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে । ফলে ওরা টাইম টু টাইম আপডেট পাবে। এবারো MDG এর চ্যালেজ্ঞগুলো থাকছে, ওগুলো নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। এই কাজগুলো এখন থেকেই করতে হবে যদি কম্পিট করার ইচ্ছা থাকে।

টেকটিউনস: ২০১১ সালে টিম ড়্যাপচারের পপুলার ক্যাটাগরী জয়টা কিভাবে মূল্যায়ন করবেন ?
অমি আজাদ: টিম ড়্যাপচার একটা দুর্দান্ত টিম। ওদের উদ্দ্যম, ওদের ক্রিয়েটিভিটি এবং ওদের মেন্টর নিয়াজ মোর্শেদের যা গাইডিং, সব অসাধারণ। আমি জানিনা অন্যান্য টিম এটা পেয়েছিল কিনা । অন্যান্য টিমের টিচাররা ওদের মেন্টর ছিল, কিন্তু ওরা হয়ত ওই গাইডেন্স পায়নি। যেরকম একটা টিম উইন্ডোজ ফর্মস দিয়ে খুব ক্রিটিকাল সব কাজ করেছিলো কিন্তু ওই টিম এটাই জানতো না যে WPF নামে একটা জিনিস আছে বা সিলভার লাইট বলে এটা জিনিস আছে । যেটা ওদের ছয় মাসের কাজ কমিয়ে দিত। টিম ড়্যাপচারের জুঁটিটা সুন্দর হয়েছিলো।

টেকটিউনস: আপনি দেশের আইসিটি ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি কী জরুরি করা বলে মনে করেন।
অমি আজাদ: আমার মনে হয় বাংলাদেশে সব কিছুই আছে। শুধু যেটা নেই সেটা হলো আওয়ার্নেস । যেমন গার্মেন্ট সেক্টর, এরা এটা জানেনা যে কিভাবে আইটিকে কাজে লাগিয়ে পরিধি আরো বড় করা যায়। আর সফটওয়্যার ডেভলপামেন্ট যে কোম্পানি আছে, তাদের এই আওয়ার্নেস নাই যে এরা গার্মেন্টস সেক্টরকে কিভাবে ইমপ্রুভ করতে পারে সেই বিষয়ে এডুকেটেড করা। ইন্ডিয়াতে কিন্তু খুব বড় মার্কেট, আগে কিন্তু ছিল না। একদম রুট লেভেলে কথা বলি, আগে কিন্তু মানুষ গাছর নিচে ঘুমাতো, ঘর ছিল না। যে ঘর আবিস্কার করেছে সে কিন্তু যে গাছের নিচে ঘুমায় তার কছে আইডিয়াটা সেল করেছে। বিষয়টা এরকম। মার্কেটটা তৈরী থাকেনা, প্রয়োজনটাকে দেখাতে হয় আঙ্গুল দিয়ে যে এটা তোমার প্রয়োজন। আমাদের আইটি সেক্টরে বেটার মার্কেটিং লোক দরকার, যে প্রয়োজনাকে ফিল করাতে পারবে।


টেকটিউনস: রাজধানীর মানুষ এখন ওয়াই ম্যাক্স ব্যবহার করছে কিন্তু পুরো দেশের মানুষ এর সুফল ভোগ করবে?/দেশের ওয়াই ম্যাক্স নিয়ে কিছু বলুন।
অমি আজাদ: এগুলোর খুবই বাজে অবস্থা । এই যে আমাদের ওয়াইমেক্স বা গোটা টেলিকম ইন্ডাস্ট্রি, এদের আসলে কে কন্ট্রোল করে? কিছুদিন আগে ব্যবহারকারীরা দেখি খুবই আপসেট কারণ ওরা Fair use policy এপ্লাই করেছে। এপ্লাই করার ফলে ৩৫ জিবির বেশী ডাউনলোড হলে স্পিড কমিয়ে দেয়। সে স্পিড আবার সহজে বাড়ে না, বিলিং সাইকেল চলে গেলেও না। ফোন করে চিল্লিচিল্লি করে বাড়াতে হয়। এই FUPতো একটা পলিসি এটা কে এপ্রুভ করল? BTRC এপ্রুভ করেছে? ওরা কি একবার কি জিজ্ঞাস করেছিল কেন এই পলিসি? ব্লগে দেখি এদের বিরুদ্ধে লেখা ভরা। BTRC কি একবার বলেছে যে এত kbps এর নিচে স্পিড দেয়া যাবে না। ওরা বলে upto one mbps, তাহলে down to কত? একটা ইউজার মিনিমাম কত পাবে?

টেকটিউনস: প্বার্শবর্তী দেশ ভারতে 3G সেবা খুব ভাল মত চলছে আমাদের দেশে 3G চালু হলে তার সুফল মানুষ কতটুকু পাবে?
অমি আজাদ: আমি মন থেকে চাই 3G আসুক, কারণ বাংলাদেশে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ডিস্টেন্স অনেক বেশী। একটাই সুবিধা 3G বা ওয়াইমেক্স এর সেটা হলো দুরদুরান্তে high speed ইন্টারনেট দিতে পারব তার পাশাপাশি অন্য অনেক সার্ভিস ও চলে যাবে।


টেকটিউনস: আপনার নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে পরিকল্পনা কি কি আছে ? Entrepreneurship এ যাবার কোন পরিকল্পনা আছে ?
অমি আজাদ: আমার ক্যারিয়ারতো কমিউনিটি নিয়ে। আপাতত ইন্ট্রারপেনারশীপে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই। মাইক্রোসফটের হয়ে আমি অনেকগুলো কাজ শুরু করেছি এবং অনেকগুলো চিন্তাধারা কে কাজে লাগাচ্ছি। যেমন আমি আসার আগে ইমেজিন কাপ বাংলাদেশে ছিলই না, তারপর MSDNAA, স্টুডেন্ট পার্টনারশীপ। এগুলো নিয়ে আমার লংটার্ম ভিশন আছে । আরেকটা নতুন প্রোগ্রাম আনছি ফ্যাকাল্টি কানেকশনস। এগুলো নিয়ে আমার ভিশন যেগুলো আছে ওগুলো ছেড়ে আমি কালই ইন্ট্রারপেনারশীপে যেতে পারবো না। তবে কেউ যদি করতে চায় তাহলে আমি সব ধরণের সাপোর্ট দিতে রাজি আছি। মাইক্রোসফটের বিভিন্ন প্রোগ্রাম আছে বা বুদ্ধি দিয়ে জ্ঞান দিয়ে হোক হেল্প করতে রাজি আছি। কিন্তু এই মুহূর্তে আগামী এক দুই বছর এরকম কিছু চিন্তা করছি না। তবে লংটার্মে হয়ত মুভ করতে হবে, we all have to move on ।

টেকটিউনস: আপনার পরিবার সমন্ধে কিছু বলুন।
অমি আজাদ: আমার পরিবার খুব ছোট । আমি, আমার বউ আর আমার বাচ্চা। ছেলের বয়স ছয় বছরও কেজিতে পড়ে মাইলস্টোন স্কুলে। আমার বউ হাউজ ওয়াইফ, আগে টিচার ছিল মাইলস্টোন স্কুলেই। ও বাসায় থাকতে বা ঘর গোছাতেই বেশী পছন্দ করে। আমার মায়ের সাথে খুব ক্লোজ রিলেশন ছিল, আম্মা আমাদের খুব ভালোভাবে গড়ে তুলেছেন, যার কারণে এই পূর্যন্ত আসতে পারা এবং এগিয়ে যাওয়া। আমি চাই না আমার ছেলের সাথে মা’র কোন গ্যাপ থাকুক। তাই আমিও এনকারেজ করি না বাইরে জব করুক। তবে everyone has their freedom.

টেকটিউনস: টেকটিউনস কেমন লাগে ?
অমি আজাদ: টেকটিউনসের ইনফো খুবই সুন্দর । সাইটা যদি আমি এক কথায় বলি খুবই প্রোফেশনাল । CNet এর কোন বাংলা ভার্সন যদি চিন্তা করতাম তাহলে এর থেকে ভালো কিছু হতে পারত না। কিন্তু একটা জিনিস খারাপ, পাইরেসী। টেকটিউনসে সফটওয়্যার বা মুভি পাইরেসীগুলো ঠিক না। এটা যদি বন্ধ করে দেয় তাহলে কিছু ভিজিটর কমে যাবে, কিন্তু awareness টা শুরু করতে হবে। পাইরেসী নিয়ে আমাদের অনেক সমস্যা। টেকটিউনস আশা করি একটা রেভুলুশন শুরু করতে পারে। কারো ব্লগ পোষ্ট মুছে দেয়ার দরকার নাই, কিন্তু সচেতনতাটা আরম্ভ করতে হবে।

টেকটিউনস: প্রযুক্তির ক্ষেত্রে টেকটিউনসের আর কী কী করা উচিত বল আপনি মনে করেন।
অমি আজাদ: টেকটিউনস থেকে আশা করি, যে বেশ কিছু অপার্চুনিটিস আমাদের সামনে আছে। যেমন Javascript conference হয়ে গেল, phpXpert সেমিনার আছে, dotNET ওপেন ডে হলো, সামনে ইমেজিন কাপ আছে । টেকটিউনস আমাদের সাথে কাজ করতে পারে, শুধু মাইক্রোসফট না, সবার সাথে। যাতে অনলাইন সেক্টরে জিনিসগুলো ফোকাস পায়। যেমন ইভেন্টগুলো প্রোফেশনাল ডকুমেন্ট থাকে না, কেউ একজন দায়সারা কিছু লিখলো, কিন্তু প্রোফেশনাল ডকুমেন্ট দরকার আছে । ইভেন্টগুলোতে ৯০% ই একই অডিএন্স আসে, প্রোফেশনাল ডকুমেন্টেশন থাকলে নতুনরা জানতে পারত।

টেকটিউনস: টেকটিউনসের পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অমি আজাদ: টেকটিউনসকেও অনেক ধন্যবাদ।

https://www.techtunes.com.bd/featured/tune-id/94298

59
টিউন্টারভিউ গেস্ট: মাহমুদুল হাসান সোহাগ, উদ্দ্যোগতা, পাইল্যাবস, অন্যরকম গ্রুপ
টিউন্টারভিউ হোস্ট: আরিফ নিজামী
সময়: ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ । রবিবার । সন্ধ্যা ৬টা ।
স্থান: কাওরান বাজার, অন্যরকম গ্রুপ অফিস । ঢাকা ।
ব্যাপ্তি: প্রায় ৫৮ মিনিট ।

চাকচিক্যের এই যুগে একটু অন্যরকম একজন তরুণ মাহমুদুল হাসান সোহাগ। দেশের চিরচেনা ব্যবসা জগতকে বদলে দিতেই যিনি গড়ে তুলেছেন বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায়ী নয়, সত্যিকারের উদ্দ্যোগতা হতেই আগ্রহ তার। আজ শুনবো  EVM - Electronic Voting Machine নিমার্তা প্রতিষ্ঠান পাইল্যাবস সহ আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুল হাসান সোহাগের।

টেকটিউনস: প্রথমেই নিজের ও আপনার পরিবার সম্বন্ধে কিছু বলুন।
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আমি মাহমুদুল হাসান সোহাগ। নিজের কথা বললে, আমি স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি এমন একটা মানুষ। আমার শিক্ষাজীবন শুরু জামালপুর জেলার সরিষাবাড়িতে। সেখানে প্রথমে নাসিরউদ্দিন কিন্ডারগার্ডেন তারপর রিয়াজউদ্দিন তালুকদার উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ি এসএসসি পূর্যন্ত। এর আগে হাইস্কুলে, ক্লাস ফাইভ , ক্লাস এইটের বৃত্তি মোটামুটি সব জায়গাতেই ফাস্ট হয়েছিলাম। এসএসসিতে ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম হই। এরপর ভর্তি হই ঢাকা কলেজে। সেখানে এইচএসসিতে চতুর্থ হই। তারপর বুয়েটের ইলেকট্রিকাল ডিপার্টমেন্ট। ওখানেও রেজাল্ট ভাল ছিল, টিচার হবার কাছাকাছি ছিল। পাস করার আগে থেকেই বুয়েটের আইআইসিটিতে (IICT) রিসার্চ এসিস্টটেন্ট হিসেবে ছিলাম। পাস করার পর রিসার্চ ইন্জিনিয়ার হিসেবে কিছুদিন জব করেছিলাম। সেটাই ছিল আমার প্রথম এবং শেষ চাকরী। আমার লক্ষ্যই ছিল উদ্দ্যোগতা হবার।
আমার বাবা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। মা চাকরী করতেন পোষ্ট অফিসে। এখন উনারা সরিষাবাড়িতেই আছেন। আমরা তিন ভাইবোন। আমি সবার ছোট। বড় দুই বোনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট আপু বগুড়ায় থাকেন। যেহেতু বিয়ে করিনি তাই এখন আমি বড় আপুর সাথেই থাকি 🙂 ।

টেকটিউনস: বুয়েট বা প্রকৌশল বিদ্যা বেছে নেবার কারণ কি ছিল ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আমার আম্মার ইচ্ছা ছিল আমি ডাক্তার হই। কিন্তু জীববিজ্ঞানের সাথে কখনও কমফোর্টেবল ছিলাম না। আমি কোন জিনিষ সহজে বুঝতে পারি, কিন্তু মুখস্ত করা আমার জন্য অনেক কষ্টের একটা ব্যাপার। যে কারণ প্রথমে এসএসসিতে জীববিজ্ঞান নিলেও পরে বাদ দিয়ে দেই। বাসায় অনেক বোঝাতে হয়েছে যে জীববিজ্ঞান আমার বিষয় না।
যেহেতু গাণিতিক বিষয়ের উপর একটু বেশী আর্কষণ ছিল তাই ইন্জিনিয়রিংয়ে আসা। তাছাড়া দেশের সেরা ছাত্ররা যেহেতু বুয়েটকে টার্গেট করে, ওটাও অনুপ্রেরণা থাকতে পারে।


টেকটিউনস: ট্রেডিশনাল জব মার্কেট ছেড়ে ইন্ট্রেপ্রেনিয়রশীপে আশার কারণ কি ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: ছোটবেলা থেকেই যেটা ট্রেডিশনাল ওটা করতে চাইতাম না। সবসময়ই মনে হতো আমি অন্যরকম কিছু করতে চাই। আমি যে গ্রুপ অফ কম্পানিজ চালাই "অন্যরকম গ্রুপ"। এই নামটা মনে হয় সে জায়গা থেকেই এসেছে। ওই আলাদা কিছু করার ইচ্ছাটা ছিল। বাংলাদেশেতো সবাই পাশ করেই চাকুরীতে ঢুকে যায়। সেখানে আমার আলাদা কিছু করার ইচ্ছা ছিল।
দ্বিতীয়ত, নিজে কিছু করলে আমি যেটা চিন্তা করি সেটা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা থাকে। নিজের মধ্যে যেটা সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন তা পুরোটা এক্সপ্লোরের সুযোগ থাকে। চাকরীতে গেলে সীমাবদ্ধতা চলে আসে। যেমন এখন আমার কোন ছুটি নেই। প্রতিদিন প্রায় সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হই। রাত ১২টায় বাসায় ফিরি। কোন ছুটি বা বিশ্রাম ছাড়াই এটা আমি করছি। চাকরী করলে যেটা মনে হয় না সম্ভব ছিল।


টেকটিউনস: আপনার এই উদ্দ্যোগগুলোর পিছনে অনুপ্রেরণা কি ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আমি অনেকবার নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখেছি আমার অনুপ্রেরণা টাকা কি না। অনেক কিছু বিচার বিশ্লেষন করে নিজের কাছে এই সেটিসফেকশনটা পেয়েছি যে আমার অনুপ্রেরণা টাকা না। আমার হাতে এই মূহুর্তে সহজে টাকা বানানোর অনেক উপায় আছে। আমার অনুপ্রেরণা টাকা হতো তাহলে আমি হয়ত সেসব কাজই করতাম। কিন্তু না, আমার কাছে উদ্দ্যোগক্তা আর ব্যবসায়ী হওয়া এক বিষয় নয়। ব্যবসায়ী বলতে বণিকশ্রেণি বোঝায় যারা একটা পণ্য কিনবে আর অন্যজনের কাছে বিক্রি করে মাঝে কিছু লাভ করবে। আমি সেটা করতে চাই না। আমি চেয়েছি মানুষের কর্মসংস্থান হবে, দেশে যা পরিবর্তন দরকার তার জন্য চেষ্টা করে যাব।
বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় নানান সমস্যা। কেউ চাইলে সেগুলো এড়িয়ে যেতেই পারে। যেমন কোন মেয়েকে কেউ উক্তত্য করল, তার প্রতিবাদ করায় তার বাবাকেই হয়ত জীবন দিতে হলো। একজনের জমি অন্যজন দখল করে বসল, ইত্যাদি। এইসব জিনিষ আমাকে অনুপ্রানিত করে কিছু করার জন্য।


টেকটিউনস: আপনার ইন্ট্রেপ্রেনিয়রশীপের শুরু কিভাবে হয় ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আপনার ইন্ট্রেপ্রেনিয়রশীপের শুরু বুয়েটে ভর্তি হবার পরই। শুরুতেই একটা এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন চালাতাম। ওখানেও ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশে যেখানে নোটস, সাজেশন ভিত্তিক পড়ালেখা হয়, পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়াই বড় করে দেখা হয় সেখানে ভিন্ন কিছু করতে চেয়েছি। আমি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার বড় সমালোচক। আমার মনে হয়, যেভাবে শিক্ষাব্যবস্থা চলছে তার থেকে কোন শিক্ষাব্যবস্থা না থাকলেই বোধ হয় ভালো হত। যদি সবাইকে ছাড় দাওয়া হতো যে যার যা ইচ্ছা পড়ো তাহলে মানুষ আরো যোগ্য হয়ে উঠত। এই শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের যোগ্যতাকে নষ্ট করছে। সে জন্য একটা ভেন্চার করেছিলাম যে সবাই যা পড়বে বুঝে পড়বে। এখনও চলছে।
আমাদের টেকনোলজি রিলেটেড ভেন্চারগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম সফটওয়্যার নিয়ে কাজ শুরু করি ফাস্ট ইয়ার সেকেন্ড টার্ম থেকেই। সাথে আমার বন্ধু মাসুম হাবিব ছিল, ও এখন পিএইচডি করছে। আমরা আউটসোর্সিং করতাম । দেশের মধ্যে একাউন্টিং সফটওয়্যারের কাজ করি। চর্তুথ বর্ষে এসে নতুন একটা জিনিষ শিখলাম, তা হলো মাইক্রোকন্ট্রলার। ওটা তখন বুয়েটে পড়ানো হত না। আমরা নিজের ইচ্ছাতেই তা শিখি। তখন পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে একটা কাজও পেয়ে গেলাম। তখন পাইল্যাবস নাম দিয়ে শুরু করি। ওখান থেকেই শুরু। তারপর একজনের কাজ করার পর তার সূত্রে আরেকজনের কাজ। তার থেকে আরেকজনের । এভাবেই কাজ করা হয় তখন।
ইন্ট্রেপ্রেনিয়রশীপের আরেকটা বড় পার্ট হচ্ছে সোসিয়্যাল ইন্ট্রেপ্রেনিয়রশীপ। আমি বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির একাডেমিক কাউন্সিলর। গণিত অলিম্পিয়াডের প্রায় শুরু থেকেই এর সঙ্গে আছি। জাফর ইকবাল স্যার, কায়কোবাদ স্যার, মুনির হাসান ভাই আমরা অলমোস্ট শুরু থেকেই ছিলাম। এখনও আছি । আমাদের গণিত অলিম্পিয়াডে কিন্তু সবাই ভলেন্টিয়ার। জাফর ইকবাল স্যার থেকে শুরু করে যে ছেলেটা রুমে রুমে গিয়ে নাস্তা দিয়ে আসত সেও ভলেন্টিয়ার। এটা ইন্ট্রেপ্রেনিয়রশীপের একটা বড় জায়গা যে ওখানে আমরা সংগঠিত করার চেষ্টা করেছি পুরো অনুষ্ঠানটাকে। এখন বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষ গণিত অলিম্পিয়াডকে জানে, চিনে।
এছাড়া KIDS বা Knowledge and Information Diversification Society নামে একটা প্রজেক্ট চালাতাম। ওটার বর্তমান নাম অন্যরকম পাঠশালা। থার্ড ইয়ারের দিকে স্যারকে বলে একটা রুম নিয়ে আমরা যে যেটা পারি ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথ সেটা ভিডিও রেকর্ড করতাম। সেটা রেকর্ড করে সিডিতে রাইট করে ছড়িয়ে দিতাম। ওটা ওপেন সোর্স ছিল। আমরা বিক্রি করতাম না, কিন্তু একটা শর্ত ছিল যে একটা নেবে সে আরো দুটা অন্যকে দিবে। তখন দেশের নেট স্পিড ভাল ছিল না তাই ইউটিউবে আপলোড করা হয় নি। পরে দেখলাম সালমান একাডেমীও প্রায় একই ধরণের কাজ করছে। আমরা এটা তারও অনেক আগে করেছিলাম।

টেকটিউনস: আমাদের দেশে সফটওয়্যার স্টার্টআপ দেখা গেলেও হার্ডওয়্যার স্টার্টআপ প্রায় দেখাই যায় না; এর কারণ কি ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: সফটওয়্যার স্টার্টআপ করা সহজ । অফিস দরকার নাই শুধু কম্পিউটার আর নিজ মেধা থাকলেই কাজ শুরু করা যায়। কিন্তু হার্ডওয়্যার স্টার্টআপের জন্য ল্যাবতো দিতেই হবে। অনেক যন্ত্রপাতি কিনতেই হবে । প্রতিটি প্রডাক্ট বানাতে কম্পনেন্ট কিনতে হবে। সফটওয়্যারর ক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে একটা প্রডাক্ট বানিয়ে ফেললে ১ কোটি কপি বিক্রি করতেও বাড়তি কিছু লাগবে না। শুধু কপি করলেই চলবে। কিন্তু হার্ডওয়্যার প্রডাক্টের জন্য পরবর্তি প্রতিটি প্রডাক্টের জন্য আবার র'ম্যাটেরিয়ালস কিনতে লাগবে।
বাইরের দেশে হলেও আমাদের দেশে এর জন্য হয় না যে বাইরে অনেক ভেন্চার ক্যাপিটাল আছে। আমাদের দেশে কিছু থাকলেও তাতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অনেক। যাদের দরকার সাধারণত তারা পায় না। ব্যাংকগুলোও ইন্টেলেকটুয়াল প্রপারটিকে ভ্যালু দেয় না, তারা বলে ফিজিক্যাল কি আছে।
এছাড়া হার্ডওয়্যার বিক্রি করাও কঠিন। সফটওয়্যার যেমন ইন্টারনেটে বাইরে পাঠানো যায়, হার্ডওয়্যারের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মার্কেটে কোন ইলেক্ট্রিকাল প্রডাক্ট তৈরী করে বিক্রি করার যে মার্কেটিং খরচ তা যোগান দেয়া অনেক কষ্টকর।
এছাড়া আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যা যে এটা আমাদের ধৈর্যহীন করে দেয়। আমরা কোন কিছু একটা করেই দ্রুত টাকা আয় করতে চাই। কোন কিছুর পিছে লেগে থাকা আমাদের দ্বারা হয় না।

টেকটিউনস: বর্তমানে অন্যরকম গ্রুপে আপনাদের প্রডাক্টগুলো কি কি ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: অন্যরকম গ্রুপের প্রথম ভেন্চার হচ্ছে পাইল্যাবস বাংলাদেশ লিমিটেড। এটা এমবেডেড সিস্টেম নিয়ে কাজ করে। এখানে দুটা গ্রুপ কাজ করে, একটা মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়ে আরেকটা এফপিজিএ নিয়ে । এফপিজিএ মাইক্রোকন্ট্রোলার থেকেও আপডেটেড একটা টুল। আর প্রডাক্টের মধ্যে আছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন, যেটা আমরা স্টুডেন্ট অবস্থায় তৈরী করি। পাইল্যাবস ফর্ম করার পর বুয়েটের সাথে একটা চুক্তি হয়। সেই অনুযায়ী আমরা যৌথভাবে এটা করছি। এর বাইরে সোলার চার্জ কন্ট্রলার, সোলার ইনভার্টার, ভেহিকাল ট্রেকিং সিস্টেম, ইনডাস্ট্রি অটোমেশনের কাজ অনেক হয়েছে। এছাড়াও আরো অনেক প্রডাক্ট আছে।
অন্যরকম সফটওয়্যার থেকে বাংলাদেশ সংসদের কাজ, প্রথম আলো, অফিসার্স ক্লাবের কাজ করা হয়েছে। দেশের বাইরেও সফটওয়্যার রপ্তানির কাজ করি। শেয়ার মার্কেটে আমাদের কিছু ইউনিক প্রডাক্ট আছে। এছাড়া ইনভেন্ট্রি, এইচার, অনলাইনবেসড স্কুল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের কাজ করেছি। শ্রীমঙ্গল, নারায়ণগন্জ সিটি কর্পোরেশনে আমাদের সফটওয়্যার ইউজ হচ্ছে।
তারপর আমাদের আরেকটা কম্পানি হচ্ছে অন্যরকম ওয়েব সার্ভিসেস। এর প্রথম প্রডাক্ট ছিল ক্রিকপল, বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সময় প্রথম আলোর আয়োজন ছিল। কিউবি ও টেলিটক স্পন্সর করেছিল। সাইটটা মাত্র ৪০দিন চলেছিল। এরই মাঝে প্রায় ৮০ হাজার ইউনিক ভিজিটর ছিল এবং ৩০ হাজার ইউজার ছিল। শুধু বাংলাদেশে ৪০দিন চলা সাইটের জন্য মনে হয় সেটা একটা রেকর্ড। বর্তমানে রকমারি ডট কম মার্কেটে এসেছে। এটা অনলাইনে বই কেনার জন্য। মাত্র ত্রিশ টাকা ডেলিভারি চার্জে দেশের যেকোন স্থানে যেকোন পরিমান বই পৌছে দেয়া হয়। মানুষ বই হাতে নিয়ে তারপর পে করে। বর্তমানে দেশের প্রায় সব প্রকাশকের সাথে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে।
এরপর শীঘ্রই আসবে ক্যারিয়ার ক্লাব ডট কম ডট বিডি। এই সাইটটার আকার লিংকইডইনের প্রায় সমান বা কিছুক্ষেত্রে তার বেশী হবে । এটা খুব বড় একটা কাজ হবে। আমাদের অন্যরকম প্রকাশনী নামে প্রকাশনী সংস্থা একটা আছে। ধানমন্ডির ওয়েস্টার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলকে কিছু দিন আগে আমরা টেকওভার করেছি। ওখানে আমরা অন্যধরণের কিছু করব বাচ্চাদের ক্রিয়েটিভ করে তোলার জন্য।
এর বাইরে ইনট্রেক্ট নামে একটা কোম্পানি আছে যেটা অন্যরকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু আমি নিজে জড়িত। আমরা স্পেশাল ইফেক্ট ও এনিমেশনের কাজগুলো করে থাকি। গ্রামীনফোন, এয়ারটেল, ওলোও এর কাজ করেছি। একটা ট্রাভেল শো করছি, Badventure (ব্যাডভেন্চার)। ইমিতিয়াজ রবি ও রস+আলোর বি.স. সিমু নাসের হোস্ট করেছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজ হয়েছে।
এছাড়াও আরো কিছু কোম্পানি ও সোসিয়্যাল ভেন্চার আছে।


টেকটিউনস: ইভিএম তৈরীর সাথে কিভাবে জড়ালেন ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আমি, মাসুম আর মিকাইল, তিন বন্ধু ইলেক্ট্রিকালে ছিলাম। আমাদেরতো একাডেমিক অনেক প্রজেক্ট বা থিসিস থাকে। কিন্তু আমাদের ইচ্ছা ছিল বাড়তি কিছু করব। বুয়েটের লুৎফুর কবির স্যারের সাথে দেখা করলাম। এক সময় আইডিয়া আসল ভোটিং মেশিন বানাবো। তখন ভারতে ইভিএম শুরু হয়েছিল। আমাদের লক্ষ্য ছিল যদি বাংলাদেশে কখনও ইভিএমে নির্বাচন হয় তবে আমাদেরটা দিয়েই হবে। বুয়েটের আইআইসিটি আমাদের ল্যাব ফ্যাসিলিটি দেয়, ব্যাকআপটা দেয়।
২০০৭-এ এসে সংবাদ সম্মেলন করে এটা সামনে আনা হয়। তারপর অফিসার্স ক্লাব অফ ঢাকা এতে আগ্রহ দেখায়। তাদের ২০০৭ এর নিবার্চন আমাদের ইভিএম দিয়েই হয়। ২০০৯ সালে পাইল্যাবসের সাথে বুয়েটের চুক্তি হয়। একসাথে এটা নিয়ে কাজ করার জন্য। তারপর নির্বাচন কমিশন এটাতে আগ্রহ দেখায়। আমরা তখন তাদের পরামর্শ মত এটা প্রেজেন্ট করলাম। প্রথম পাইলট প্রজেক্ট হয় চট্টগ্রামের জামালখান ওয়ার্ডে। ওটা আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক ভালো হয়েছিল। এরপর নারায়নগন্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হলো, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হলো।
তবে এখন পর্যন্ত আমারা ১০০% সন্তুষ্ট কারণ আমাদের যে লক্ষ্য ছিল হলে আমাদের মেশিনে হবে বিদেশী মেশিনে নয়। সেই জায়গায় আমরা পৌছাতে পেরেছি।


টেকটিউনস: ইভিএমের বিস্তারিত আমাদের পাঠকদের একটু জানান।
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: ই-ভোটিং আর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন কিন্তু আলাদা। উন্নত দেশগুলোতে যেটা চালু করার চেষ্টা করা হয়েছিল সেটা ই-ভোটিং, যা নিয়ে যথেষ্ঠ সমালোচনা আছে। এটার কনসেপ্ট হচ্ছে মানুষজন ফোন, SMS বা ইন্টারনেট দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ভোট দিবে সেটা এক জায়গায় এসে জমা হবে। এটার বড় সমালোচনা যেটা, যখনই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কিছু হয় তখনই হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা থাকে সেটা যত ভালো নিরাপত্তা বিশিষ্টই হোক।
আমাদের আইডিয়াটা ছিল আমরা ওটাতে যাব না। আমাদেরটা হবে স্ট্যান্ড-এলোন (standalone) ডিভাইস। মেশিনটা হবে এককভাবেই। ওটা পৃথিবীর কিছুর সাথেই যুক্ত থাকবে না, যুক্ত করার কোন সুযোগও থাকবে না। সেইভাবেই আমরা তৈরী করি। পরে জানলাম ইন্ডিয়ানরাও একই আইডিয়া এগুচ্ছে। তারা প্রায় ১৯৮৫ থেকে অল্প কিছু স্থানে ইভিএম ব্যবহার শুরু করে এবং ধীরে ধীরে পুরো ভারতে তা ছড়িয়ে দেয়।
আমদেরটা খুব সিম্পল, কোন জটিলা নেই এবং বিশ্বাসযোগ্যতার দিক থেকে অনেক ভালো । পরে পত্রিকায় দেখেছি অনেকেই অভিযোগ করেছে ডাটা যখন সার্ভারে আসবে তখন হ্যাক হবে। আসলে আমাদের কোন সার্ভারই নেই, হ্যাক হবারতো প্রশ্নই নেই । কেউ যে ডাটা চেন্জ করবে তার জন্যতো ডিভাইসটা এক্সেস করতে হবে । কিন্তু আমাদের এই মেশিনে এক্সেস করার কোন উপায়ই নাই । কম্পিউটার বা কিছুর সাথে যুক্ত করার অপশনই নাই । ভোট ওটাতেই দেয়া হয় এবং তখনই বাটন চেপে চেপে রেজাল্ট শো করবে । সেই রেজাল্ট হাতে লেখে ম্যানুয়ালী কাউন্ট করা হয় । কাজেই এটা নিয়ে বিতর্ক করার কছু নেই ।

টেকটিউনস: ইভিএমে আর কি কি উন্নয়নের সুযোগ আছে বা ভবিষ্যতে আর কি কি প্রযুক্তি আসতে পারে ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আমাদের শুরুর ইভিএমটা ছিল ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ। এখন আবার অনেকেই বলছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট থাকলে ভাল হয়। কিন্তু আমরা জানি ফিঙ্গারপ্রিন্টে প্রবলেম আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভোটের গোপনীয়তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কোনভাবে যদি ট্রেক করা যায় কে কাকে ভোট দিল তাহলে সেই ব্যবস্থা গ্রহনযোগ্য হবে না। যদি মেশিন দিয়ে আমাকে সনাক্ত করা হয় আমি জাল ভোটার কিনা তাহলে কিন্তু প্রোগ্রামারের পক্ষে বের করে ফেলা সম্ভব যে কে কাকে ভোট দিল। যদি এটা কোনভাবেও ওভারকাম করা যায় তাহলেও আরো সমস্যা আছে। যেসব অফিসে আমরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন দিয়েছি সেখানে দেখা যায় কিছুক্ষণ পর একই লোকের ফিঙ্গারপ্রিন্ট আর ম্যাচ হয় না। অনেক সময় হাতের চামড়া উঠে বা ইনজুরড হয়। আমাদের দেশে শ্রমজীবি মানুষের সংখ্যা বেশী। ফলে দেখা যাবে ভোটের দিন অনেকেই ভোট দিতে পারবে না। তাই ফিঙ্গারপ্রিন্ট যোগ করা ঠিক হবে না।
তবে একটা প্রিন্টারযোগ করলে এটা প্রশ্নের উর্ব্ধে চলে যাবে। যেভোট দিবে সে প্রিন্টও দেখে নিতে পারবে কাকে ভোট দিল, যাওয়ার সময় সেটা একটা বাক্সে ফেলে যাবে। আবার ম্যানুয়ালী দরকার হলে দুটো থেকে ক্রসচেকও করা যাবে। এটাতে কিছু সমস্যা আছে। পুরো ইভিএমের জন্য যেটুকু পাওয়ার লাগবে, প্রিন্টারের জন্য তার চেয়েও বেশী পাওয়ার লাগবে। বাংলাদেশে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, তাই বিদ্যুৎ দিয়ে করা সম্ভব না। আবার ব্যাটারী দিয়ে করলেও অনেক বড় ব্যাটারী লাগবে যার ম্যানেজমেন্ট কষ্টকর। তাছাড়া ব্যাটারী খরচ, প্রিন্টারের খরচ মিলে মোট খরচ অনেক বেড়ে যাবে। পৃথিবীতে এমন কোন প্রিন্টার নাই যেটা জ্যাম হয় না। কেউ ভোট দিতে যেয়ে ভোট প্রিন্ট নেবার সময় যদি আটকে যায় তাহলে আবার সেই ব্যাক্তির ভোটের গোপনীয়তা নষ্ট হবে। এটা নিয়ে কাজ চলছে, এই সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার। নির্বাচন কমিশন যদি অনুমতি দেয় তাহলে এটা যোগ হতেও পারে ভবিষ্যতে।


টেকটিউনস: আপনার এই পর্যন্ত আসার পিছনে কোন জিনিষের অবদান বেশী বলে মনে করেন ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মোটিভেশন আর পজিটিভ মেন্টালিটি। মোটিভেশনের পিছনে থাকে তীব্র ফিলিংস। এর বাইরে অনেক জায়গায় অনেক মানুষের হেল্প পেয়েছি। সেগুলো না হলে হয়ত এতদূর আসা হতো না। এছাড়া পরিশ্রম একটা বড় বিষয়। মেধা যতই থাকুক পরিশ্রম না করলে সফলতা পাওয়া যাবে না। ফাইনেন্সিয়াল দিকটা এমন ছিল যে একটা কাজের টাকা দিয়ে আরেকটা কাজ করেছি। তাই হয়ে গেছে। সবসময় সবকিছু পজিটিভলি নিয়েছি। দুটা জিনিষ বলতে আমি খুব লজ্জা পাই। এক. আমি হেরে গেছি এটা বলতে। আমি হেরে গেছি এটা কখনও স্বীকার করি। হয়ত সফল হয়নি কিন্তু শেখাতো অনেক কিছু গেছে। দ্বিতীয়ত আমি ক্লান্ত এটা বলতে আমি খুব লজ্জা পাই। যেমন গত মাসেই (জানুয়ারী) এমন তিনদিন গেছে যে আমরা সারারাত জেগে কাজ করেছি। এই মাসেও (ফেব্রুয়ারী) এমন আরো রাত জেগে কাজ করতে হবে।


টেকটিউনস: ভবিষ্যতে আর কি কি করার ইচ্ছা আছে ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: শিক্ষা নিয়ে কাজ করার আমাদের বিশাল পরিকল্পনা আছে। আমরা চাই আমাদের ছেলেদের গবেষণা ও দেশে কাজ করার জন্য প্লাটফরম করে দিতে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। বিদেশে যারা আছে তারা যাতে দেশে ফিরে আসতে মোটিভেটেড হয় সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকা ভার্সিটির যে অ্যরকম বায়োইনফরমেটিকস ল্যাবটা আছে তা আমাদের অন্যরকম গ্রুপ থেকে ডোনেট করা।


টেকটিউনস: আপনিতো গানের সাথেও জড়িত আছেন।
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: গান গাইতাম কিছুটা ছোটবেলায়। জাতীয় পর্যায়েও অনেক সার্টিফিকেট আছে আমার। ক্লাস সেভেনে গলায় একটু সমস্যা সমস্যা হবার পর আর সেভাবে গাওয়াও হয়নি। এছাড়াও বেশ এক্সট্রা কারিকুলাম করেছি। তেলাওয়াত, বির্তক, বক্তৃতা ইত্যাদি করেছি।

টেকটিউনস: আপনাদের একটা কোচিং সেন্টারও আছে উদ্ভাস নামে...
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: উদ্ভাস আমার অনেক ফিলিংসের একটা জায়গা। আমি ওটাকে কোচিং সেন্টার বলব না। এটার পিছনে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সেকরিফাইস ও ডেডিকেশন গেছে। এটা জেদ ছিল শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নয়ন আনতে। কোচিং বলতে আমরা বুঝি সামনে একটা ইমিডিয়েট লক্ষ্য থাকবে তা পূরণে সে যে কোন পন্থা অবলম্বন করবে। আর টিচিং হচ্ছে এবিলিটি গ্রো করা।
শুরু থেকেই আমরা চেয়েছি অন্যকিছু করতে আমরা নোট দেইনি, সাজেশন দেইনি। তাই শুরুতে আমাদের ছাত্রসংখ্যা কম ছিল। আমাদের কাছে কনসেপ্টই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। কনসেপ্ট যার ভালো আলটিমেটলি সে পরীক্ষাতেও ভালো করবে, যোগ্য মানুষ হবে । পাঁচ ছয় বছর এর জন্য আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এক সময় আমাদের চার পাঁচজন ছাত্র ছিল। পরে যখন আমরা বুঝাতে পেরেছি যে আমরা বুঝিয়ে পরাতে চাই, মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে চাই তখন সবাই আসতে আসতে এসেছে । এখন প্রায় আমাদের দশ হাজার ছাত্র-ছাত্রী।

টেকটিউনস: আমরা প্রায় শেষে দিকে এসে পড়েছি । টেকটিউনস কি ভিজিট করেন ?
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আমি টেকটিউনসের অনেক বড় ফ্যান। শুরুতে আমি টেকটিউনস নিয়মিত ভিজিট করতাম। আমিও বোধ হয় টেকটিউনসে দুই এক বার লিখেছিলাম (টেকটিউনস টিউনার পাতার লিংক) । তখন অনেকেই অনেক ভালো লিখত। এখন ব্যস্ততার জন্য মাঝে মাঝে ভিজিট করি। মাঝে প্রচুর ইউজারের জন্য সাইট স্লো হয়ে যায় সম্ভবত তখন একটা গ্যাপ পড়ে যায়।


টেকটিউনস: আপনার উদ্দ্যোগগুলোর জন্য আমাদের শুভ কামনা। টেকটিউনসকে সময় দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মাহমুদুল হাসান সোহাগ: আপনাকে এবং টেকটিউনস পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

https://www.techtunes.com.bd/featured/tune-id/117714

60
Person / সাক্ষাতকারঃ শামীম আহসান
« on: November 24, 2017, 12:21:55 AM »
টিউন্টারভিউ গেস্ট: শামীম আহসান, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, এখনই ডট কম এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, বেসিস
টিউন্টারভিউ হোস্ট: আরিফ নিজামী
সময়: ১৯ জুলাই, ২০১২ । বৃহস্পতিবার । দুপুর সাড়ে তিনটা ।
স্থান: এখনই ডট কম অফিস, গুলশান - ১ । ঢাকা ।
ব্যাপ্তি: প্রায় ৪৮ মিনিট ।

দেশে ডেইলি ডিল সবার মধ্যে জনপ্রিয় করার মাঝে যে সাইটটির অবদান কেউই অস্বীকার করতে পারবে না সেটি হলো এখনই ডট কম www.akhoni.com। অবশ্য আজকের টিউন্টারভিউ গেস্ট শামীম আহসান-এর পরিচিতি শুধু এখনই ডট কমের http://www.akhoni.com প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবেই নয়, তার বড় এক পরিচয় প্রযুক্তি সংগঠক হিসেবে । বেসিসের (BASIS) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনরত এই উদ্দ্যোক্তার কথা শুনব আজ ।


টেকটিউনস: প্রথমেই আপনার নিজের সম্পর্কে আমাদের পাঠকদের কিছু বলুন ।
শামীম আহসান: আমার স্কুল ছিল গভর্ণমেন্ট ল্যাবরেটরী হাই স্কুল এবং কলেজ ছিল নটরডেম । গ্র্যাজুয়েশন করি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট্রাল ওকলোহোমা (University of Central Oklahoma) থেকে । আমার বাবা ব্যবসায়ী ছিলেন, এখন রিটায়ার্ড করেছেন । আমরা দুই ভাই এক বোন । আমার ভাইও ব্যবসা করছেন । আমার বোন CEMEX এর এশিয়ার ডিরেক্টর । আমার স্ত্রী সৈয়দা কামরুন আহমেদ, সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটিতে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম পড়ান ।
আমি একজন উদ্দোক্তা । সেই সাথে বেসিসের বর্তমান কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছি । ২০০৮-০৯ সালে বেসিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলাম । বর্তমানে এফবিসিসিআইয়ের ডিজিটাইজেশন কমিটির কো-চেয়ারম্যান । এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সেও আছি ।

টেকটিউনস: আপনার প্রযুক্তি উদ্দ্যোক্তা হবার গল্পটা শুনতে চাই ।
শামীম আহসানঃ ১৯৯৭-৯৮ এর দিকে আমার বাবা আমাকে এনকারেজ করে যে দেশের গার্মেন্টস সেক্টরের মতো করে প্রযুক্তিখাতও ভবিষ্যতে এগিয়ে থাকবে । তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম যে প্রযুক্তি উদ্দ্যোক্তা হবো এবং এই বিষয়ে আগে উন্নত বিশ্বের কোন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষা নেবো ।
তখন আমি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট্রাল ওকলোহোমা থেকে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে গ্র্যাজুয়েশন করি । তারপর ওখানে AT&T এবং সুপ্রীম কোর্ট অফ সেন্ট্রাল ওকলোহোমা এর আইটি ডিপার্মেন্টে কাজ করি । সেসব কোম্পানি কিভাবে কাজ করে তার অভিজ্ঞতা অর্জন করি । কয়েকবছর পর দেশে চলে আসি ।
আমার প্রথম কোম্পানি ছিল ই-জেনারেশন eGeneration। তারপর বেন্চমার্ক ই-জেনারেশন Benchmark-eGeneration নামে কোম্পানি করেছি । এটা মূলত আউটসোর্সিং ও লোকাল কনটেন্ট নিয়ে কাজ করে ।

টেকটিউনস: এখনি ডট কমের http://www.akhoni.com শুরু হয় কিভাবে ?
শামীম আহসান: অক্টোবার ২০১০ থেকে আমরা এখনি ডট কমের http://www.akhoni.com প্রাথমিক কাজ শুরু করি । এখনি ডট কমে http://www.akhoni.com আমার আরেকজন পার্টনার আছে । উনি ইমরান খান । উনি বিশ্ববিখ্যাত ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি জে.পি মরগানের সবচেয়ে কম বয়সী ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন । তিনি কোম্পানির হেড অফ ইন্টারনেট ইনভেস্টমেন্ট-ও ছিলেন। সে হিসেবে তিনি গুগলকে স্টক মার্কেটে নিয়ে এসেছিল । এরপর তিনি ক্রেডিট সুইস ব্যাংকে যোগ দেন এবং সম্প্রতি গ্রুপঅনের http://www.groupon.com/ আইপিও ছাড়ার বিষয়ে কাজ করেছেন।
অক্টোবার ২০১০-তে আমার সাথে উনার দেখা হয় । উনিও দেশের জন্য কিছু করতে চাচ্ছিলেন । আমিও দেশের বেশ কিছুবছর ধরে আইটিখাতের সাথে জড়িত ছিলাম । তখন আমরা সিদ্বান্ত নিলাম যে একসাথে কিছু একটা করব । যেহেতু দেশের মানুষের বিনোদনের সুবিধা কম এবং ট্রাফিক এই দেশে বড় একটা সমস্যা তাই আমরা এমন এটা পোর্টাল বানাব যেখানে মানুষ শপিং করতে পারবে, ডিসকাউন্টে ভিন্ন রেস্টুরেন্টের সুবিধা পাবে ইত্যাদি । আমরা দুই ঘন্টার একটা ডিনারে গেলাম । এই স্বীদ্বান্তগুলো তখনই নিলাম । তারপর আমি দেশে চলে আসলাম । তিনমাসের রিসার্চ করলাম, বিজনেস প্লান তৈরী করলাম । আমাদের পরিকল্পনা ছিল যে দুইবছরও যদি রেভিনিউ না আসে তাহলেও যাতে কোম্পানি টিকে থাকে থাকে এমন একটা বিজনেস প্ল্যান করলাম । কিন্তু সৌভাগ্যবশত যেদিন আমরা সাইট লঞ্চ করি সেদিন থেকেই গ্রাহক আমাদের প্রোডাক্ট কেনা শুরু করে এবং রেভিনিউ আসতে থাকে ।
২০১১ সালের জানুয়ারী ১ তারিখে আমরা কোম্পানির কার্যক্রম শুরু করলাম । মে ১৯ তারিখে আমরা আমাদের ব্র্যান্ডটা এবং ওয়েবসাইটটা চালু করলাম । জুনের ১ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিয়ার রহমান রূপসী বাংলা হোটেলে আমাদের ওয়েবসাইটটা অফিসিয়ালী লঞ্চ করলেন ।

টেকটিউনস: এখনি ডট কমের http://www.akhoni.com নামকরণের কারণ কি ছিল ?
শামীম আহসান: এখনি ডট কমের http://www.akhoni.com নামকরণর পিছনে দুটি কারণ ছিল । এক. যার যখন যে সার্ভিস দরকার তা তারা এখনই পেতে পারে । কোন অপেক্ষা করতে হবে না । যার যখন ইচ্ছা সে তখনই কোন সেবা বা পণ্য কিনতে পারে । দুই. দেশের মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশ চায় কিন্তু তার জন্য ২০২১ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় না । সেই সেবাগুলো তারা এখনই পেতে চায় । আমাদেরও লক্ষ্য তাদের সেবাগুলো প্রদান করা।

টেকটিউনস: এখনি ডট কমের http://www.akhoni.com বর্তমান পরিস্থিতি কেমন ?
শামীম আহসান: আমাদের কোম্পানির মোটামুটি এক বছর হলো । এর মধ্যেই আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেজে ১ লাখ ১০ হাজারের উপর ফ্যান আছে । এছাড়াও আমাদের ওয়েবসাইটে রেজিস্টার্ড ইউজারর সংখ্যাও বেশ বড় । এলেক্সা র‌্যাংকিয়ে আমরা দেশের ডিল সাইটগুলোর মাঝে এক নম্বরে আছি । আমাদের এখানে ইলেকট্রনিকস প্রোডাক্ট আছে, ফ্যাশন রিলেটেড প্রডাক্ট আছে । এছাড়া বিভিন্ন হোটেলের বেস্ট ডিসকাউন্টগুলো এখনিতে http://www.akhoni.com পাওয়া যায় ।
প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহকরা আমাদের ওয়েবসাইটে আসছে, কেনাকাটা করছে । ক্রেডিট দিয়ে পারচেজ হচ্ছে, বিকাশের মাধ্যমে হচ্ছে । সারা বাংলাদেশে ৬৪ জেলায় আমাদের ডেলিভারি সিস্টেম আছে । বিদেশ থেকেও গ্রাহকরা পণ্য কিনে তাদের পরিচিত উপহার দিচ্ছে । সামনেই আমরা ত্রিশটা দেশে পণ্য ডেলিভারী শুরু করব । এছাড়া ঈদ উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন চলছে এবং বইও পাওয়া যাচ্ছে । সামনে আরো বেশী সংখ্যক বই পাওয়া যাবে ।
http://akhoni.com/dhaka/humayun-ahmed-books-402

টেকটিউনস: এখনি ডট কমে http://www.akhoni.com প্রোডাক্টগুলোর মান কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় ?
শামীম আহসান: আমরা নিজেরা কোন পণ্য উৎপাদন করি না । কোন না কোন মার্চেন্টের পণ্য বা সেবা গ্রাহকদের কাছে পৌছে দেই । আমাদের একটা কোয়ালিটি এশিউরেনস টিম আছে । যারা প্রোডাক্টের মান নিয়ে কাজ করে । আমরা খুব সর্তকভাবে মার্চেন্ট বাছাই করি তারপরও যদি কেউ পণ্য নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকে তাহলে মূল্য ফেরতের সুযোগ আছে । কাস্টমারকে খুশি করার জন্য আমরা সবসময় সচেষ্ট থাকি।

টেকটিউনস: যারা উদ্দোক্তা হতে চান তাদের জন্য আপনি কি কি পরামর্শ দিবেন ?
শামীম আহসান: আমি বলব যে কোন বিষয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে তাকে সেই বিষয়ে অনেক জ্ঞান অর্জন করা উচিত । সে বিষয়ে যারা ব্যবসায় সেরা অবস্থানে আছে তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করা উচিত । যারা কোন ক্ষেত্রে সফল থাকে তারা কিন্তু অন্যদের সাহায্য করতে দ্বিধা করে না । নিজ ক্ষেত্রের এমন মানুষগুলোকে খুজে বের করে তাদের সাথে নিজ উদ্দ্যোগে যোগাযোগ করতে হবে, সাহায্য চাইতে হবে । তাছাড়া নিজ ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের নিজ কোম্পানির উপদেষ্টা করা যেতে পারে । ইউনিভার্সিটির শিক্ষকরা কিন্তু টাকা বা অন্য কিছুর লোভে কাজ করবেন না । তারা আসবেন আপনাকেই সাহায্য করতে । যেমন আমার শিক্ষক ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের ডিন প্রফেসর সোহোটরা আমার কোম্পানিগুলোর ব্যাপারে আমাকে বিভিন্ন সময় পরামর্শ দেন । সেইসাথে বেসিসের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টরা বা আইটিাতর উদ্দোক্তরা তারও কিন্তু অনেক সাহায্য করে ।
তারপর, খুব ভালো একটা টিম গঠন করতে হবে । পৃথিবীর বড় বড় সফল যত কোম্পানি বলেন গুগল, ফেসবুক বা মাইক্রোসফট ওগুলো কিন্তু কেউ একা তৈরী নাই । সবগুলোর পিছনেই কমপক্ষে দুজন বা তারও বেশীজনের টিম ছিল । আমার বন্ধু যাদের সথে আমার কাজ করতে সুবিধা হয় এমন টিমমেট থেকে যারা বিভিন্নক্ষেত্রে ভালো তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে ।
তারপর অনেক রিসার্চ করতে হবে এবং খুব ভালো একটা বিজনেস প্ল্যান তৈরী করতে হবে । বিজনেস প্ল্যান তৈরীতেই ৫-৬ মাস সময় দিলে কিন্তু বাকি কাজ অনেক সহজ হয়ে যায় । সেই সাথে ফাইনেন্সিয়াল প্ল্যান করা দরকার । আমরা অনেক সময় ফাইনেন্সিয়াল প্ল্যানই তৈরী করি না বা করলেও লাভকে অনেক বেশী আর খরচকে অনেক কম ধরি । এই জায়গাগুলোয় অনেক কাজ করতে হবে ।

টেকটিউনস: আপনি একজন উদ্দ্যোক্তা, আপনার মতে দেশের সরকার কতটুকু প্রযুক্তি বা ব্যবসাবান্ধব ?
শামীম আহসান: সরকারের টপলেভেলের ইচ্ছা আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী বা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর তারা কিন্তু আইটি নিয়ে ভাবেন । আমাদের সমস্যা হচ্ছে উপরের লেভেলে অনেক সময়ই অনেক ভালো কিছু পরিকল্পনা থাকে কিন্তু তা পরে নিচের দিকে এসে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে যায় । আমাদেরও শুধু সরকারের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত না । সরকারের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। বেসিসের মতো সংগঠন বা অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা উচিত।

টেকটিউনস: এখনি ডট কমের http://www.akhoni.com এই পর্যন্ত চলার পথে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বা হচ্ছেন ?
শামীম আহসান: আমরা যেহেতু দেশের প্রথম ডিল সাইট তাই আমরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি । আমাদের পরে যারা আসছে বা আসবে তাদের কিন্তু সরকম অনেক সমস্যারই আর মুখোমুখি হতে হবে না । আমাদের বড় সমস্যা ছিল ক্রেডিটকার্ডে লেনদেন । আমরা দেশে প্রথম "পেমেন্ট অন ডেলিভারি" চালু করি । এখনও ক্রেডিটকার্ডের ট্রান্সজেকশন ফি অনেক উচ্চ । তারপর প্রথমদিকে ভ্যাট অনেক বেশী ছিল । আমরা সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তা কমিয়ে আনি । কিন্তু ই-কর্মাসের প্রসারের স্বার্থে এটা শূন্য শতাংশ করে দেয়া উচিত । আমাদের ক্রেডিট কার্ডগুলোয় ইন্টারনেট ব্যাংকিং ডিফল্টভাবে বন্ধ থাকে সেটা আবার ফোন করে অন করতে হয় । এটা একটা সমস্যা । গ্রাহক মনে করে এটা বুঝি সাইটের সমস্যা । অনেকেরই আবার বিশ্বাসযোগ্য নিয়ে কনফিউশনে ভোগে । আমরা কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের কোন ডেটা স্টোর রাখি না । ট্রানজেকশন হয় সব ব্যাংকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে । ইন্টারনেট একটা বড় বাধা । এখনো ইন্টারনেট অনেক কম মানুষ ব্যবহার করে । ইন্টারনেটের মূল্য কমানো উচিত ।

টেকটিউনস: আপনি সদ্য বেসিস (BASIS) নিবার্চনে জোষ্ঠ্য সহ-সভাপতি নিবার্চিত হয়েছেন, সে জন্য অসংখ্য শুভেচ্ছা । বেসিসের মাধ্যমে আপনাদের কি কি করার পরিকল্পনা আছে?
শামীম আহসান: ধন্যবাদ । আপনারা জানেন পেপাল নিয়ে বেসিস কাজ করছে । ইতিমধ্যে বেসিসের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফাহিম মাশরুর যুক্তরাষ্ট্রে পেপাল অফিসে গিয়ে আলোচনা করেছেন । পেপালের কমর্কতারাও বাংলাদেশ সফর করে গেছেন । পলিসি গত সব সমস্যা সমাধান করা হয়েছে ।
আমরা চাই আমাদের ফ্রিল্যান্সাররা এই সুবিধাটা পাক । তারা আরো ভালোভাবে আরো সুযোগ সুবিধা নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করুক । যারা আইটি উদ্দোক্তা আছেন তাদের জন্য আমরা যাতে ইনকিউবেটর তৈরী করতে পারি, সাপোর্ট হাব করতে পারি, যে কোনভাবে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে পারি সেই পরিকল্পনা আছে । বেসিস (BASIS) ইনস্টিটিউটকে অনেক দূর নিয়ে যাবার ইচ্ছে আছে । যাতে আমরা "ইন্ডাস্ট্রি রেডি" জনশক্তি তৈরী করতে পারি । তাছাড়া আইটি উদ্দোক্তাদের ফাইনেন্সিংয়ে সাহায্য করতে চাই । এছাড়া সরকারকে বিভিন্ন পলিসি তৈরীতে সহযোগিতাও করতে চাই ।

টেকটিউনস: আপনি অনেক সংগঠনের সাথে জড়িত, দুটি কোম্পানি চালাচ্ছেন । এত কিছু কিভাবে ম্যানেজ করেন ? নতুনদের কি পরামর্শ দিবেন ?
শামীম আহসান: এই যেমন মাহাথির মোহাম্মাদ, নেলসন মেন্ডেলা, বারাক ওবামা বা পৃথিবীতে যারাই অনেক সফল হয়েছেন সবারই কিন্তু দিনে ২৪ ঘন্টা, সপ্তাহে ৭দিনই । তাহলে তারা কিভাবে এত সফল ? কারণ তারা প্রাইওরিটি জানে, তাদের নির্দিষ্ট বিষয়ে ফোকাস ছিল । আমাদেরও বিভিন্ন বিষয় থেকে একটা প্রাইওরিটি বিষয়ে ফোকাস করতে হবে । একটা বিষয়কে ফোকাস করে পরিকল্পনা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী এগিয়ে যেতে হবে ।

টেকটিউনস: আজ থেকে ১০ বছর পর আপনি নিজের ক্যারিয়ার ও দেশের আইটিখাতকে কোথায় দেখতে চান ?
শামীম আহসান: ১০ বছর পর আমি বাংলাদেশকে বিশ্বের সেরা দশটি আইটিসমৃদ্ধ দেশের মাঝে দেখতে চাই। যাতে বাংলাদেশ একটি আইটি সুপার পাওয়ার হয় । দেশে সব সেবা যাতে প্রযুক্তির মাধ্যমে পাওয়া যায় । আর নিজে যেমন এই প্রযুক্তি বিপ্লবে একজন আইটি কর্মী হিসেবে কাজ করে যেতে পারি। যেন দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারি।

টেকটিউনস: টেকটিউনস সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি ?
শামীম আহসান: আমি মনে করি টেকটিউনস http://www.techtunes.com.bd একটা অসাধারণ ও ইন্টারেসটিং সোসিয়াল প্লাটফরম । টেকটিউনস যেভাবে সবার কাছে পৌছে গিয়েছে তা চমৎকার । টেকটিউনসের যারা পাঠক তাদের আমি রেসপেক্ট করি কারণ তারা আইটিকে ভালোবাসে, এইখাতে অবদান রাখতে চায় । যারা টেকটিউনসে নিয়মিত পড়ছে লিখছে তারাই কিন্তু আমাদের ভবিষ্যত । তাদের সাথে আমরা একসাথে কাজ করতে চাই যাতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি । টেকটিউনসের সাথে যারা জড়িত আছেন সবাইকে শুভেচ্ছা ।

টেকটিউনস: আমাদের সময় দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।
শামীম আহসান: টেকটিউনসকেও ধন্যবাদ।

https://www.techtunes.com.bd/featured/tune-id/141800

Pages: 1 2 3 [4] 5 6 7