Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Mrs.Anjuara Khanom

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 ... 32
61
ফজরের সালাতের ১০টি বিশেষ ফজিলত

১. রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও ইশার নামাজ অপেক্ষা অধিক ভারী নামাজ আর নেই। এ দুই নামাজের কী ফজিলত, তা যদি তারা জানত, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো।’ রাসূলুল্লাহ বলেন, ‘আমি ইচ্ছে করেছিলাম যে, মুয়াজ্জিনকে ইকামাত দিতে বলি এবং কাউকে লোকদের ইমামতি করতে বলি, আর আমি নিজে একটি আগুনের মশাল নিয়ে গিয়ে অতঃপর যারা নামাজে আসেনি, তাদের ওপর আগুন ধরিয়ে দেই।’ (সহিহ বুখারি-৬৫৭)

২. রাসূলে আকরাম সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করে, সে ব্যক্তি ওই দিন আল্লাহর জিম্মায় চলে যায়। অর্থাৎ স্বয়ং আল্লøাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির দায়িত্ব নেন।’ (সহিহ মুসলিম, তিরমিজি-২১৮৪)

৩. রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, আল্লøাহর ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তিকে ভালো মানুষ হিসেবে সাক্ষী দেবে।’ (বুখারি-মুসলিম)

৪. রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ সালাত জামাতের সাথে আদায় করে, আল্লøাহ তায়ালা তার আমলে দাঁড়িয়ে সারারাত নফল নামাজ আদায়ের সওয়াব দিয়ে দেন!’ (সহিহ মুসলিম-১০৯৬)

৫. রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ভোরে হেঁটে হেঁটে ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে প্রবেশ করবে, আল্লøাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার জন্য পরিপূর্ণ আলো দান করবেন।’ (আবু দাউদ-৪৯৪)

৬. রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, আল্লøাহ তাকে জান্নাতের সবচেয়ে বড় নিয়ামত দান করবেন। অর্থাৎ সে আল্লøাহর দিদার লাভ করবে এবং জান্নাতি ওই ব্যক্তি আল্লাহকে পূর্ণিমার রাতের আকাশের চাঁদের মতো দেখবে।’ (বুখারি-৫৭৩)

৭. রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘যে নিয়মিত ফজরের নামাজ আদায় করবে, সে কখনোই জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ মুসলিম-৬৩৪)

৮. ফজরের নামাজ আদায়কারী রাসূলে আকরাম সা:-এর বরকতের দোয়া লাভ করবেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)

৯. ফজরের দু’রাকাত সুন্নত নামাজ দুনিয়া ও তার মাঝে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি-৪১৬)

১০. ‘ফজরের নামাজ আদায়ের ফলে ব্যক্তির মন ফুরফুরে, প্রফুল্ল হয়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

যাযাদি/

62
মাহে রমজানে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করা হয় ইসলামী শরিয়তে একে ‘তারাবি নামাজ’ বলা হয়। এ নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। আরবিতে ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘তারবিহাতুন’, যার অর্থ আরাম বা ক্ষণিক বিশ্রাম। তারাবি নামাজ পড়াকালে প্রতি দুই রাকাত বা চার রাকাত পরপর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই হলো ‘তারাবি’। দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘবের জন্য প্রতি দুই রাকাত, বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করে দোয়া ও তাসবিহ পাঠ করতে হয় বলে এ নামাজকে ‘সালাতুত তারাবি’ বা তারাবি নামাজ বলা হয়। এ নামাজ উম্মতে মুহাম্মদির জন্য রমজানের একটি বড় উপহার। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় তারাবি নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তার পূর্ববর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি, নাসাঈ) রসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করে দিয়েছেন আর আমি তোমাদের জন্য রমজানের তারাবি সুন্নত ঘোষণা করলাম।’ (ইবনে মাজাহ) হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একদিন গভীর রাতে মহানবী মসজিদে গেলেন এবং নামাজ পড়লেন। কিছু লোকও তাঁর পেছনে নামাজ পড়লেন। ভোর হওয়ার পর লোকজন পরস্পরের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করায় দ্বিতীয় রাতে লোকসংখ্যা আরও বেড়ে গেল এবং তারা মহানবীর সঙ্গে নামাজ পড়লেন। এদিন ভোর হওয়ার পর লোকদের মধ্যে আরও বেশি আলোচনা হলো এবং তৃতীয় রাতে মসজিদের লোকসমাগম আরও বেশি হলো। মহানবী বাইরে বের হয়ে নামাজ পড়লেন আর তারাও তাঁর সঙ্গে নামাজ পড়লেন। যখন চতুর্থ রাত এলো তখন এত লোকসমাগম হলো যে মসজিদে স্থানসংকুলান হলো না। কিন্তু তিনি এ রাতে তারাবি নামাজের জন্য বের হলেন না, ভোর হলে ফজরের নামাজের জন্য বের হলেন এবং ফজরের নামাজ শেষে লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, তোমাদের বিষয়টি আমার কাছে গোপন ছিল না। কিন্তু আমি আশঙ্কা করছিলাম এ নামাজ না আবার তোমাদের ওপর ফরজ করে দেওয়া হয় আর তোমরা তা পালনে ব্যর্থ হও। মহানবী ওফাত করলেন এবং এ নামাজের বিষয়টি আমাদের ওপর তেমনই রইল।’ (বুখারি) হজরত আবদুর রহমান বিন আবদিল কারি (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রমজানের এক রাতে আমি হজরত ওমর বিন খাত্তাব (রা.)-এর সঙ্গে মসজিদের উদ্দেশে বের হলাম এবং দেখলাম লোকেরা পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে আছে। কেউ একা একা নামাজ পড়ছিল, আবার কেউ এভাবে নামাজ পড়ছিল যে তার পেছনে কিছু লোক নামাজ পড়ছিল। এ অবস্থা দেখে হজরত ওমর বললেন, আমার মনে হয় সবাইকে একজন কারির পেছনে একত্রিত করে দিলে ভালো হয়। এরপর তিনি দৃঢ় প্রত্যয় করলেন এবং হজরত উবাই বিন কাবের পেছনে তাদের সবাইকে মুক্তাদি হিসেবে একত্রিত করে দিলেন।’ (বুখারি)। মহানবী (সা.) নিজেই ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তারাবি নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখ আছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় রমজানে তারাবি নামাজ আদায় করে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি, মুসলিম) এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় তারাবি নামাজ মুসলিম জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বিভিন্ন মসজিদে খতমে তারাবির ব্যবস্থা রয়েছে, আমরা যদি অন্যদিকে অযথা সময় নষ্ট না করে তারাবি নামাজে যোগদান করে পুরো রমজান অতিবাহিত করি তাহলে আল্লাহ আমাদের আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন এবং আমরা তাঁর নৈকট্য লাভ করে জান্নাতের মেহমান হব। এ ছাড়া খতমে তারাবিতে যোগদানের ফলে বিশেষ যে কল্যাণ আমরা লাভ করব তা হলো পুরো কোরআন একবার শোনা হয়ে যাবে।

তারাবি নামাজ কত রাকাত?
উত্তর : তারাবি নামাজ ২০ রাকাত। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার সুযোগ নেই। সহিহ হাদিসে রসুলে কারিম (সা.) নিজ সুন্নতের পাশাপাশি খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নতকে অনুসরণ এবং তা মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নবী করিম (সা.) রমজানে বিতর ছাড়া ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করতেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
‘হজরত ওমর (রা.) লোকজনকে হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.)-এর পেছনে একত্রিত করলে হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) তাদের নিয়ে ২০ রাকাত তারাবি পড়েছিলেন।’ (আবু দাউদ)

হজরত সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রহ.) বলেছেন, ‘তাঁরা (সাহাবা ও তাবেয়িন) হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে রমজানে ২০ রাকাত তারাবি পড়তেন।’ (আস্-সুনানুল কুবরা, বায়হাকি)। তাবেয়ি ইয়াজিদ ইবনে রুমান (রহ.)-এর ভাষ্য, ‘হজরত ওমর (রা.)-এর যুগে মানুষ (সাহাবা ও তাবেয়িন) রমজানে ২৩ রাকাত নামাজ পড়তেন।’ (মুয়াত্তা মালিক, বায়হাকি) তাবেয়ি ইয়াহইয়া ইবনে সাইদ আনসারি (রহ.)-এর বিবরণ, ‘হজরত ওমর (রা.) এক ব্যক্তিকে আদেশ করেন তিনি যেন লোকদের নিয়ে ২০ রাকাত পড়েন।’

লেখক : খতিব, মণিপুর বায়তুল আশরাফ (মাইকওয়ালা) জামে মসজিদ, মিরপুর, ঢাকা।

 

63
মারণ ভাইরাস করোনা বুঝিয়ে দিয়েছে কী ভাবে মুহূর্তে শেষ হয়ে যায় জনজীবন এক ভাইরাসের কবলে। কী ভাবে মৃত্যুমিছিল জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে গোটা বিশ্বজুড়ে। এরইমধ্যে গোটা বিশ্বে গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে একলাফে ৮ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে সংক্রমণ। নতুন করে করোনার এই রক্তচক্ষুর মধ্যেই ভয় দেখাচ্ছে আরেক নতুন ভাইরাস।

ভাইরাসটির নাম হার্টল্যান্ড ভাইরাস। ২০০৯ সালে প্রথমবার আমেরিকার মিসৌরিতে এর দেখা মিলেছিল। নতুন করে এবার জর্জিয়ায় দেখা মিলল এই ভাইরাসের। শুধু জর্জিয়া নয়, বেশ কয়েকটি স্টেট থেকেই আসছে এই নতুন ভাইরাস আতঙ্ক।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, ছারপোকা জাতীয় পোকাদের শরীরে আশ্রয় নেয় হার্টল্যান্ড ভাইরাস। তারপর সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের দেহে। গবেষকরা জানিয়েছেন, এক দশক আগে জর্জিয়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় এই ভাইরাসের ধাক্কায়। এবার গবেষকরা জানাচ্ছেন, নতুন করে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে তারা হদিশ পেয়েছেন। তাই তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তাই এই মুহূর্তে তাঁরা খতিয়ে দেখছেন বিষয়টি।

‘লোনস্টার টিকস’ নামের ছারপোকা জাতীয় পোকা থেকেই ছড়ায় এই ভাইরাস। আপাতত কেবলমাত্র এই তথ্য মিলেছে। এটি মানুষকে কামড়ালে তার শরীর থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। যতদূর জানা যাচ্ছে, বয়স্কদের জন্য় এই ভাইরাস অত্যন্ত বেশি মারাত্বক হতে পারে।

হার্টল্যান্ড ভাইরাসের কী লক্ষণ: হার্টল্যান্ড ভাইরাসের সংক্রমণের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, ক্লান্তি, ক্ষুধা হ্রাস, মাথাব্যথা, ডায়রিয়া এবং পেশি বা জয়েন্টে ব্যথা। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির প্লেটলেট কমে যাওয়া কিংবা যকৃতের ক্ষতি হতেও দেখা গিয়েছে।

সাধারণ ভাবে সংক্রমণের লক্ষণগুলি আক্রান্ত হওয়ার ২ সপ্তাহের মধ্যে দেখা দিতে পারে। এদিকে এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণকে প্রতিহত করার মতো কোনও ওষুধ নেই। তবে জ্বর ও ব্যথা কমানোর সাধারণ ওষুধগুলিকে কার্যকর হতে দেখা গিয়েছে।

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষকে সংক্রমিত করার খুব বেশি ক্ষমতা এদের নেই। কিন্তু একবার আক্রান্ত হলে যদি তা গুরুতর পরিস্থিতিতে পৌঁছয় তাহলে বাড়বে উদ্বেগ। গবেষকরা তাই নতুন করে খতিয়ে দেখতে চাইছেন কতজন মানুষ এর মধ্যেই ওই ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন। কোন ধরনের পরিবেশে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়ায় ইত্যাদি নিয়েও চলছে গবেষণা। সূত্র: নিউজ ১৮।


64
গ্লুকোমা হলো চোখের একটি ব্যাধি। যা আপনার চোখের অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই নার্ভের মাধ্যমেই আমরা চোখে দেখি। গ্লুকোমা সাধারণত ঘটে যখন চোখে তরল তৈরি হয় ও চোখের ভেতরে চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। যদি সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা না হয় তাহলে গ্লুকোমা দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হলো গ্লুকোমা। তবে দুঃখজনক হলো বেশিরভাগ রোগীই এই রোগ নির্ণয়ে বেশ দেরি করে ফেলেন। যেহেতু রোগটির তেমন গুরুতর কোনো লক্ষণ নেই, তাই রোগীও টের পান না সহজে। চোখের ভিজ্যুয়াল ফিল্ড (ভিএফ) বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্লুকোমা রোগ শনাক্ত করা যায় না।

আজ বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস। প্রতি বছর ৬-১২ মার্চ পালন করা গ্লুকোমা সপ্তাহ। বিশ্ব গ্লুকোমা অ্যাসোসিয়েশনের বৈশ্বিক উদ্যোগে পালিত হয় দিবসটি। গ্লুকোমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ও প্রত্যেককে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে উৎসাহ যোগানো হয় এ দিবসে।

গ্লুকোমা কেন হয়?

‘গ্লুকোমার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো বংশগত। অর্থাৎ পরিবারে কারও এই রোগ থাকলে অন্যান্যদেরও হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।’ এমনটিই জানান ভারতের গুরগাঁওয়ের ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র কনসালটেন্ট গ্লুকোমা সার্জন ডা. শিবাল।

এই রোগের অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে আছে ট্রমা বা যে কোনো অস্ত্রোপচার। যারা চশমা পরেন তাদেরও এই অবস্থা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ডায়াবেটিস রোগী ও যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদেরও গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। স্ট্রেরয়েড ব্যবহারের মাধ্যমে গ্লুকোমা প্রতিরোধযোগ্য বলে জানান এই চিকিৎসক।


jagonews24

দীর্ঘক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমেও কি গ্লুকোমা হতে পারে? এ বিষয়ে চিকিৎসক জানান, ‘এর থেকে গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি নেই। তবে বেশি সময় স্ক্রিন টাইম শুষ্কতা, মাথাব্যথা, চোখের স্ট্রেনের কারণ হতে পারে। শিশুদের চশমা বা অদূরদর্শীতা (মায়োপিয়া) হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।’

গ্লুকোমা কত প্রকার?

ডা. শিবাল জানান, গ্লুকোমার দুটি বিস্তৃত প্রকার আছে। একটি হলো ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, যার অগ্রগতি বেশ ধীর। অন্যটি হলো তীব্র অ্যাঙ্গেল-ক্লোজার গ্লুকোমা, যা দ্রুত অগ্রসর হয়। ভারতীয় ও দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে অ্যাঙ্গেল-ক্লোজার গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি, যা অন্ধত্বের কারণ।

তবে এর ভালো দিক হলো এ ধরনের গ্লুকোমার চিকিৎসা আছে। নিরাময়মূলক লেজার চিকিৎসা গ্লুকোমার অগ্রগতি প্রতিরোধ করতে পারে। অন্যদিকে ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার রোগীদের আজীবন চিকিৎসায় থাকতে হয়।

গ্লুকোমা প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে স্টেরয়েড আই ড্রপ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। কারণ এ ধরনের আই ড্রপ চোখের স্বাস্থ্যে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে।

নিয়মিত চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই শনাক্ত করা যায় গ্লুকোমা। তবে অনেকেই তা করেন না। বিশেষ করে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি বলে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবারে গ্লুকোমার ইতিহাস থাকলে সেক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে।

সূত্র: দ্য হেলথ সাইট

65
Eyes / চোখ লাফানো কি কোনো রোগ?
« on: March 10, 2022, 10:46:00 AM »
চোখের পাতা কেঁপে ওঠার অনুভূতির সঙ্গে সবাই কমবেশি পরিচিত। হঠাৎ করেই চোখের পাতা কেঁপে ওঠাকে অনেকেই চোখ লাফানো বলে সম্বোধন করেন। আবার এ বিষয়কে অনেকেই অশুভ বা খারাপ কোনো লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করেন। তবে এ বিষয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক-

চোখের পাতা কেঁপে ওঠার ঘটনাটি হলো চোখের পেশি বা পাতার খিঁচুনি বা নড়াচড়া। যা চাইলেও আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। চিকিৎসকরা একে ব্লেফারোস্পাজম বলেন। এটি আপনার উপরের চোখের পাতায় ঘটে থাকে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখের পাতা কেঁপে ওঠে।


গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২০০০ মানুষ এই সমস্যায় গুরুতরভাবে ভোগেন। পুরুষদের তুলনায় নারীদের চোখে এটি বেশি ঘটে। এটি যদিও কোনো গুরুতর সমস্যা নয়। তবে দৈনন্দিন জীবনে এ সমস্যা বিরক্তির কারণ হতে পারে। আবার কখনো কখনো ব্লেফারোস্পাজম চোখের নানা সমস্যার কারণ হতে পারে।

সাধারণত তিনটি কারণে যেমন- ক্লান্তি, চাপ বা ক্যাফেইন গ্রহণের কারণে চোখের পাতা কেঁপে ওঠার ঘটনা বেশি ঘটে। গবেষকদের মতে, আপনার জিন ও চারপাশের পরিবেশের কারণেই এ সমস্যাটি হয়। চোখের পাতা কেঁপে ওঠা মুখ ও আপনার চোখের পাতার চারপাশের পেশির সঙ্গে জড়িত। কী কী কারণে চোখের পাতা কেঁপে ওঠে?

>> ক্লান্তি
>> মানসিক চাপ
>> ক্যাফেইন
>> অ্যালকোহল গ্রহণ
>> ধূমপান
>> চোখের সংবেদনশীলতা ও
>> কিছু ওষুধ, যেগুলো সাইকোসিস ও মৃগী রোগের চিকিৎসা করে।

মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধির কারণেও চোখের পাতা লাফাতে পারে। এর মধ্যে আছে-


>> পারকিনসন রোগ
>> মস্তিষ্কের ক্ষত
>> একাধিক স্ক্লেরোসিস
>> পক্ষাঘাত
>> ট্যুরেটের সিন্ড্রোম ও
>> ডাইস্টোনিয়া।

কারও কারও ক্ষেত্রে এ সমস্যা সারাদিন, সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে পারে। এমন ক্ষেত্রে তারা চোখের সংবেদনশীলতায় ভোগেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরক্তির কারণ ঘটায় এই সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে ব্লেফারোস্পাজমে ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন-

>> এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে
>> আপনার চোখের পাতা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হলে
>> মুখের পেশিতেও কাঁপুনি অনুভব করলে
>> চোখ লালচে, ফোলাভাব বা ময়লা বের হলে কিংবা
>> উপরের চোখের পাতা ঝরে গেলে।

ব্লেফারোস্পাজমের চিকিৎসা কী?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ সমস্যা হঠাৎ করেই হয় আবার নিজ থেকেই সেরে যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, অ্যালকোহল, তামাক বা ক্যাফেইন কমালে এ সমস্যাও কমতে শুরু করে। যদি শুষ্ক চোখের কারণে এ সমস্যাটি হয় তাহলে চিকিৎসক আই ড্রপ দেন।

ব্লেফারোস্পাজম নামক এ সমস্যার কোনো প্রতিকার নেই। তবে চিকিৎসক আপনার উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারেন। এর সবচেয়ে সাধারণ চিকিৎসা হলো বোটুলিনাম টক্সিন (বোটক্স , ডিসপোর্ট, জেওমিন)।

তবে চোখ লাফানোর সঙ্গে কোনো অশুভ ইঙ্গিত কিংবা খারাপ কিছু ঘটার বিষয়গুলো একেবারেই কুসংস্কার ছাড়া আর কিছু না। তাই এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চললে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

সূত্র: ওয়েব এমডি

জেএমএস/জেআইএম

66
নারী-পুরুষ উভয়ই পিত্তথলি বা গলব্লাডারের পাথরের সমস্যায় ভোগেন। তবে পুরুষদের তুলনায় নারীদের পিত্তাশয়ে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে।

বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম, মেনোপজের পর হরমোন ক্ষরণে ঘাটতি, গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস, কম পানি খাওয়া ইত্যাদি কারণে গলব্লাডারে পাথর হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
পিত্তথলির পাথর কী?

পিত্তথলির পাথর ছোট ছোট বালির দানার মতো হয়ে থাকে। মটরের দানা বা তার চেয়েও বড় শক্ত দানাদার বস্তু, যা বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে। এটি নির্ভর করে কী পদার্থ দিয়ে পাথর তৈরি হয় তার ওপর। কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন বা ক্যালসিয়াম ইত্যাদি পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরি এই পাথরগুলো পিত্তরসের সঙ্গে মেশানো অবস্থায় থাকে। হালকা বাদামি, ময়লাটে সাদা বা কুচকুচে কালো রঙের হতে পারে।

পেটের ডানদিকে যকৃতের পেছনে ও নিচের দিকে পিত্তথলি থাকে। পিত্তরস তৈরি করাই এর কাজ। খাবার হজমে, বিশেষ করে চর্বিজাতীয় খাবার হজম করতে পিত্তরস দরকার হয়। নানা কারণে পিত্তথলিতে বিভিন্ন পদার্থ জমে গিয়ে পাথরের সৃষ্টি করে। পাথর হওয়া ছাড়াও গলব্লাডারে ব্যথার অন্য কারণগুলি কী?

কোলেসিস্টিস: কোলেসিস্টিস দুই ধরনের হয়। যেমন- অ্যাকিউট কোলেসিস্টিস ও অ্যাক্যালকুলাস কোলেসিস্টিস। অ্যাকিউট কোলেসিস্টিসের ঘটে পিত্তথলিতে পাথর আটকে যাওয়ার ফলে। অন্যদিকে অ্যাক্যালকুলাস কোলেসিস্টিস হল পিত্তনালিতে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।

কোলেডোকোলিথিয়াস: পিত্তনালিতে পাথরের উপস্থিতি কোলেডোকোলিথিয়াস নামে পরিচিত। এটি পিত্তের প্রবাহকে রোধ করে ফলে চাপ ও ব্যথা বেড়ে যায়।

বিলিয়ারি স্লাজ: পিত্তথলিতে কোলেস্টেরল মনোহাইড্রেট, ক্যালশিয়াম, বিলিরুবিন ও অন্যান্য লবণের সংমিশ্রণই হল বিলিয়ারি স্লাজ। এই পদার্থগুলো জমা হয়ে পিত্তথলিতে ব্যথা হতে পারে।

এবার জেনে নিন কোন কোন লক্ষণ জানান দেবে যে পিত্তথলিতে কোনও সমস্যা তৈরি হয়েছে-

পিত্তথলিতে যে কোনও সমস্যা দেখা দিলেই পেটের ডানদিকে ব্যথা হতে পারে। এক্ষেত্রে পেটের ডান দিকে থেকে ব্যথা শুরু হয়ে ধীরে ধীরে সেই ব্যথা কোমর ও ডান কাঁধ পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। এরকম ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এক্ষেত্রে পেটের ডানদিকে তীব্র ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব, গা গোলানো ও বমিও হতে পারে।

পিত্তথলিতে প্রদাহের কারণে শরীরের তাপমাত্রাও বাড়তে পেতে পারে। জ্বর জ্বর ভাব থাকতে পারে।

পিত্তথলিতে সমস্যা দেখা দিলে কিংবা পাথর জমার ফলে প্রস্রাবেও সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে গাঢ় রঙের প্রস্রাব হতে পারে।


বিডি-প্রতিদিন

67
‘বুরাক’ এমন একটি প্রাণী যার ওপর রাসূলুল্লাহ (সা.) মি’রাজ রজনীতে আরোহণ করেছিলেন। আরবি ‘বুরাক’ শব্দটি ‘বারক’ শব্দ হতে উদ্ভূত। যার অর্থ বিদ্যুৎ, বিজলি। সে বিদ্যুৎ মেঘের মাঝে পরিদৃষ্ট হয়। যেমন পুলসিরাত অতিক্রমকারীদের ব্যাপারে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, তারা বিদ্যুতের গতির ন্যায় পুলসিরাত অতিক্রম করবেন। আবার কেউ দ্রুতগামী বাহনের ন্যায় পার হবেন। আবার কেউ দ্রুতগামী ঘোড়ার মতো পার হয়ে যাবেন। আল-কোরআনে ‘বারক’ শব্দটি পাঁচবার এসেছে।

(ক) সূরা বাকারাহ-এর ১৯ ও ২০ নং আয়াতে, (খ) সূরা রায়াদ-এর ১২ নং আয়াতে, (গ) সূরা রূম-এর ২৪ নং আয়াতে, (ঘ) সূরা নূর-এর ৪৩ নং আয়াতে। সুবহানাল্লাহ! বোরাকে আরোহনণকারী মোহাম্মাদ মোস্তাফা আহমাদ মুজতাবা (সা.)-এর সত্তাবাচক নাম ‘মোহাম্মদ’-এ পাঁচটি বর্ণই রয়েছে। এ নাম মোবারকের মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখেই হয়ত আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত ‘বারক; শব্দটি আল কোরআনে পাঁচ বার উল্লেখ করেছেন। এরই প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে সূরা ইনশিরাহে স্পষ্টতঃ ঘোষণা করা হয়েছে : ‘আমি আপনার যিকিরকে সমুন্নত মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছি’।

বোরাকের আকার-আকৃতি ও গতি প্রকৃতি সম্পর্কে বিজ্ঞ পন্ডিতগণের মধ্যে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। আসলে ইহা কী? বিশুদ্ধ ও সর্বজন গ্রাহ্য মতানুসারে বলা হয়েছে যে, ‘বুরাক’ হলো একটি প্রাণী যা আকারে খচ্চর হতে ছোট। গাধা হতে বড়। শ্বেত রঙের প্রাণী। ইহা এতই দ্রুতগামী যে, তার কদম সেখানেই পড়ে যেখানে তার দৃষ্টি পতিত হয়। একারণে প্রসদ্ধি লাভ করেছে যে, ‘বুরাক আকাশ হতে যমীন পর্যন্ত যে দূরত্ব তা’ মাত্র এক কদমেই অতিক্রম করতে পারে। সুতরাং মী’রাজের প্রাক্কালে বুরাক সাত কদমে সাত আসমান অতিক্রম করেছিল।
কোনো কোনো আলেম ব্যক্তিত্ব বলেন, বুরাক কোনো প্রাণী নয়। প্রথমে তা ছিল অস্তিত্বহীন। শুধুমাত্র মী’রাজ রজনীতেই তা’ অস্তিত্বে আনয়ন করা হয়েছিল। যাতে করে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মর্যাদাকে বুলন্দ হতে বুলন্দতর করা যায়। ইমাম সুহায়লী (রহ:) বলেন, পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন বুরাকে আরোহণ করছিলেন, তখন বুরাক লজ্জায় নড়াচড়া করছিল। তখন জিব্রাঈল (আ.) বুরাককে ডাক দিয়ে বলেছিলেন : ‘হে বুরাক! তুমি এমনভাবে লজ্জাবোধ করছ কেন? আল্লাহ জাল্লা শানুহুর নিকট মুহাম্মাদ মোস্তাফা আহমাদ মুজতাবা (সা.)-এর চাইতে অধিক কোনো মর্যাদাশীল ব্যক্তি আছেন কী? যিনি তোমার ওপর আরোহণ করবেন? এতে ‘বুরাক’ শান্ত ও আজ্ঞাবহ হয়ে গেল।

তবে, বুরাকের সাদৃশ্য বুঝাতে গিয়ে বলা হয়েছে যে, বুরাক হলো এমন প্রাণী যা খচ্চর হতে ছোট, গাধা হতে বড়। এতে স্পষ্টতঃই বুঝা যায় যে, বুরাক খচ্চরও না, গাধাও না। বরং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী আকারের একটি প্রাণী যা মীরাজের ঘটনার সাথেই সংশ্লিষ্ট। অন্য কোনো নবী ও রাসূলের সাথে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা কল্পনা করা বাতুলতা মাত্র। কারণ, অন্যান্য নবী ও রাসূলগণের জীবনে মীরাজের মতো ঘটনার অবতারণা ঘটেছিল বলে জানা যায় না।

হাদীস শরীফে উক্ত হয়েছে যে, পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) মী’রাজের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন : ‘উরিজাবী’ অর্থাৎ আমাকে ঊর্ধ্বমন্ডলে উপনীত করা হলো। লক্ষ করলে দেখা যায় যে, মীরাজ ঘটনাটির এই বিবরণেও পাঁচটি বর্ণই স্থান পেয়েছে। আর এ জন্যই মীরাজের ঘটনাটির আদ্যোপান্ত পাঁচটি স্তরেই আল কোরআন ও আহাদিসে সহীহায় বিবৃত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আরবি মী’রাজ শব্দেও পাঁচটি বর্ণের সমাহার লক্ষ্য করা যায়। আর এই মীরাজ রজনীতেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছিল। যা অন্য কোনো নবী ও রাসূলের আমলে ফরজ করা হয়নি। এতে অতি সহজেই অনুভব করা যায় যে, মীরাজ সংঘটনের জন্য যে বুরাকের প্রয়োজন ছিল, তাকে প্রকৃতই ‘বুরাক’ বলে মেনে নেয়া সকল বুদ্ধিমানেরই উচিত।


Source:https://www.dailyinqilab.com/article/461547/

68
কানের পর্দা ফাটা একটা জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা।  দীর্ঘ শর্দি কাশি থেকেও অনেকের কানের পর্দা ফুটো হয়ে যেতে পারে।  আবার আঘাত থেকেও পর্দা ফেটে যেতে পারে।  এমন হলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।  সঠিক চিকিৎসা না পেলে বড় বিপদ হতে পারে।

কানের পর্দা ছিদ্র হওয়ার প্রধান কারণ কানের ইনফেকশন।  পানি জমে এই ইনফেকশন হতে পারে।  আবার আঘাতজনিত কারণে পর্দা ফাটা অনেক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এ সমস্যার ঠিকমতো চিকিৎসা হয় তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ছিদ্র এমনিতে সেরে যায়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ইমপালস হসপিটালের নাক কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন অধ্যাপক ডা. জাহীর আল-আমিন।

কেন পর্দা ফাটে

* বাতাসের ধাক্কা- কানের ওপর চড় মারলে যে বাতাসের চাপ হয় তাতে কানের পর্দা ফেটে যায়। কানের পাশে বোম ফাটলেও একই ক্ষতি হতে পারে।

* পানির ধাক্কা- পানির মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়লে।

* শব্দের ধাক্কা- দেখা যায় কানের পাশে প্রচণ্ড শব্দ হলে কানের পর্দায় প্রদাহ হয়, কানের ভেতরে ছোট ছোট হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমনকি কানে শোনার স্নায়ুও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে।

* কানে সরাসরি আঘাত-দুর্ঘটনার সময় বা শক্ত কিছুর সঙ্গে কানে আঘাত লাগলে কানের আশপাশের হাড়, অথবা কান ও মস্তিষ্কের মধ্যে টেম্পোরাল নামক যে হাড় থাকে তা ভেঙে যেতে পারে। এতে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কানের অন্যান্য সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি কানের ভেতর দিয়ে মস্তিষ্কের তরল পদার্থ সিসএফ লিক করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে এ রোগীদের।

* কটন বাড বা ধারাল অন্যকিছু দিয়ে কান খোঁচানোর সময় হঠাৎ করে কেউ ধাক্কা দিলে পর্দা ছিদ্র হয়ে যায়। যদিও এটা অনাকাঙ্ক্ষিত, তবুও সমস্যাটি আমরা প্রায়ই দেখে থাকি।

কী সমস্যা হতে পারে

আঘাত পাওয়ার পর কানটি বন্ধ হয়ে যায় বা রোগী কানে কম শুনে।  কানে শোঁ শোঁ শব্দ হতে পারে, অনেক সময় কান দিয়ে রক্তও বের হতে পারে।  এক্ষেত্রে কানের সঠিক চিকিৎসা না হলে দু-এক দিন পর দেখা যায় কান দিয়ে পুঁজ বা পানি বের হতে পারে।

কাদের এ সমস্যা হতে পারে

কানে সরাসরি আঘাতজনিত কারণে আঘাতের মাত্রা বেশি হলে যে কোনো কারণে পর্দা ফেটে যেতে পারে। বাতাস বা পানি বা শব্দের ধাক্কায় যখন কানের পর্দা ফাটে সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কানের পর্দা আগে থেকেই দুর্বল ছিল যেমন- ছোটবেলায় বারবার কান পাকা রোগ থেকে কানের পর্দা দুর্বল হয়ে যায়, দীর্ঘদিনের টনসিল ও এডেনয়েড প্রদাহে ভোগা, নাকের হাড় বাঁকা, অনেক দিনের নাক ও সাইনাসে প্রদাহ ইত্যাদি। ইউস্টেসিয়ান টিউবের কাজ ঠিকমতো না হওয়ার কারণে কানের পর্দা দুর্বল হয়ে যায়। এ দুর্বল পর্দা অল্প আঘাতেই ফেটে যায়।

কী করবেন

* কান শুকনা রাখতে হবে।

* কানের ভেতরে তুলা, কটনবাড, পানি কোনো কিছুই ঢুকানো যাবে না।

* কান ভেজা অবস্থায় মাথায় পানি ঢালা যাবে না।

* তুলায় তেলে ভিজিয়ে চিপে তেল ফেলে দিয়ে তা কানে দিয়ে গোসল করতে হবে।

* ভালো হয় মাথা ও শরীর আলাদাভাবে ধুয়ে-মুছে নিলে।

কান পরিষ্কার করা যাবে না

ডাক্তারদের উচিত এ রোগীদের সাক্শন না দেওয়া কান পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে দেখা যেতে পারে, এটা ছাড়া কানের ভেতরে কোনো ইন্টারভেশন পরিহার করে চলা উচিত।  কান দিয়ে পুঁজ বের না হলে কানে ড্রপ দেওয়া নিষিদ্ধ।  অনেক সময় আমরা ব্যথার জন্য, ব্যথানাশক ওষুধ দেই বা ইনফেকশন রোধে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকি।

এই রোগীর প্রধান চিকিৎসা হল কানের ভেতর যাতে কিছু না ঢুকে এটা নিশ্চিত করা।  এভাবে কানের পর্দাকে কিছু সময় দিলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদি কানের পর্দায় ফুটা ছোট হয় তা এমনিতেই সেরে যায়। এ অবস্থায় কানের পর্দা কেমন থাকছে, সেজন্য সপ্তাহে নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞের কাছে পরীক্ষা করে দেখা উচিত।

কানে কখনও ইনফেকশন হয়ে গেলে আমার অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করার পরামর্শ দেই, অনেকে আবার কানের পর্দা ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য নাক চাপ দিয়ে মুখ ফুলিয়ে কান দিয়ে বাতাস ছাড়ার চেষ্টা করে, এতে কোনো উপকার তো হয়ই না বরং দেখা গেছে, কানের পর্দা জোড়া লেগে গেলে নতুন পর্দা এ কারণে আবার ফেটে যায়। যদি আমরা নিয়মমাফিক চলি তাহলে ইনফেকশন ঠেকাতে পারি।

ছোটখাটো পর্দার ছিদ্র বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছোট হয়ে যায়। যাদের নাক, সাইনাস, টনসিল ও এডেনয়েডের প্রদাহের কারণে কানের পর্দা দুর্বল হয়ে গেছে, কানের পর্দা ফেটে গেছে, তাদের কানের পর্দার সমস্যার সঙ্গে এসব সমস্যার চিকিৎসা করা জরুরি। এক মাসের মধ্যে যদি এ সমস্যার সমাধান না হয় তবে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।

একে টিমপেনোপ্লাস্টি অপারেশন বলা হয় এবং এটা একটা মাইক্রোসার্জারি যা মাইক্রোসকোপের সাহায্যে অতি সূক্ষ্মভাবে করা হয়ে থাকে। কানের ভেতরে যত ইনফেকশন হবে এবং ইনফেকশনের জন্য কানের পর্দায় যে পরিবর্তন হবে তাতে অপারেশন জটিল হতে পারে এবং কানের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
 

Source:https://www.jugantor.com/doctor-available


69
আহকাম ও আরকান মিলিয়ে নামাজের ফরজ মোট ১৩টি।

নামাজ শুরু হওয়ার আগে যেসব ফরজ, সেগুলোকে নামাজের আহকাম বলা হয়।
নামাজের আহকাম ৭টি যথাঃ

    শরীর পাক
    কাপড় পাক
    নামাযের স্থান পাক
    সতর আবৃত করা
    কেবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো
    নিয়ত করা এবং
    ওয়াক্ত মত নামায পড়া।


নামাজ শুরু করার পর নামাজের ভেতরে যেসব ফরজ, সেগুলোকে নামাজের আরকান বলা হয়।

নামাজের আরকান ৬টি।যথাঃ

    তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায শুরু করা
    কেয়াম বা দাড়ানো
    কেরাত পড়া
    রুকু করা
    সেজদা করা এবং
    নামাযে শেষ বৈঠকে বসা এবং সালাম ফিরানো।

কোন একটি ফরজ ছুটে গেলে নামাজ হবে না । পুনরায় নামায আদায় করতে হবে ।


নামাজের আহকাম ৭টি ব্যাখ্যাঃ

১. শরীর পাক হওয়াঃ  এ জন্য অজুর দরকার হলে অজু বা তায়াম্মুম করতে হবে, গোসলের প্রয়োজন হলে গোসল বা তায়াম্মুম করতে হবে। এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ  يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِذَا قُمْتُمْ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ فَٱغْسِلُوا۟ وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى ٱلْمَرَافِقِ وَٱمْسَحُوا۟ بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى ٱلْكَعْبَيْنِ ۚ  অর্থঃ হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)।  (সূরা মায়েদাঃ ৬)

২. কাপড় পাক হওয়াঃ  পরনের জামা, পায়জামা, লুঙ্গি, টুপি, শাড়ি ইত্যাদি পাক পবিত্র হওয়া।এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ আর তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র কর।(সূরা মুদ্দাসসিরঃ ৪)

৩. নামাজের জায়গা পাক হওয়াঃ  অর্থাৎ নামাজির দু’পা, দু’হাঁটু,দু’হাত ও সিজদার স্থান পাক হওয়া।

৪. সতর বা শরীর ঢাকাঃ  পুরুষের নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের দু’হাতের কব্জি,পদদ্বয় এবং মুখমন্ডল ব্যতীত সমস্ত দেহ ঢেকে রাখা।  এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ خُذُوا۟ زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ  অর্থঃ হে বনী আদম, তোমরা প্রতি সালাতে তোমাদের বেশ-ভূষা গ্রহণ কর।  (সূরা আরাফঃ৩১)

৫. কিবলামুখী হওয়াঃ  কিবলা মানে কাবার দিকে মুখ করে নামাজ পড়া। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ  وَمِنْ حَيْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا۟ وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ  অর্থঃআর তুমি যেখান থেকেই বের হও, তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকে তোমাদের চেহারা ফিরাও।  (সূরা বাকারাঃ ১৫০)

৬. ওয়াক্ত অনুযায়ী নামাজ পড়াঃ  প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজ সময়মতো আদায় করতে হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتْ عَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ كِتَٰبًا مَّوْقُوتًا  অর্থঃ নিশ্চয় সলাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।  (সূরা নিসাঃ১০৩)

৭. নামাজের নিয়্যাত করাঃ  নামাজ আদায়ের জন্য সেই ওয়াক্তের নামাজের নিয়্যাত করা আবশ্যক। এ প্রসঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ إنما الأعمال بالنية অর্থঃনিশ্চই আমলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়্যাতের ওপর নির্ভরশীল।  (বুখারী,হাদিস-১)


নামাজের আরকান ৬টি।ব্যাখ্যাঃ

১. তাকবিরে-তাহরিমা বলাঃ  অর্থাৎ আল্লাহর বড়ত্বসূচক শব্দ দিয়ে নামাজ আরম্ভ করা। তবে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে  নামাজ আরম্ভ করা সুন্নাত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْআর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।  (সূরা মুদ্দাসসিরঃ৩)

২. দাঁড়িয়ে নামাজ পড়াঃ  মানে কিয়াম করা। আল্লাহ বলেনঃ حَٰفِظُوا۟ عَلَى ٱلصَّلَوَٰتِ وَٱلصَّلَوٰةِ ٱلْوُسْطَىٰ وَقُومُوا۟ لِلَّهِ قَٰنِتِينَ
তোমরা সলাতসমূহ ও মধ্যবর্তী সালাতের হিফাযত কর এবং আল্লাহর জন্য দাঁড়াও বিনীত হয়ে।  (সূরা বাকারাঃ ২৩৮)

৩. ক্বেরাত পড়াঃ  চার রাকাতনিশিষ্ট ফরজ নামাজের প্রথম দু’রাকাত এবং ওয়াজিব,সুন্নাত,নফল নামাজের সকল রাকাতে ক্বিরাত পড়া ফরজ। আল্লাহ বলেনঃ فَٱقْرَءُوا۟ مَا تَيَسَّرَ مِنَ ٱلْقُرْءَانِ
অতএব তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়।  (সূরা মুযাম্মিল,আয়াতঃ ২০)

৪. রুকু করাঃ  প্রতিটি নামাজের প্রত্যেক রাকাতে রুকু করা ফরজ।এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,
وَأَقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱرْكَعُوا۟ مَعَ ٱلرَّٰكِعِينَ
অর্থঃআর তোমরা সলাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর।  (সূরা বাকারাঃ৪৩)

৫. সিজদা করাঃ  নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সিজদা করা ফরজ।আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱرْكَعُوا۟ وَٱسْجُدُوا۟ وَٱعْبُدُوا۟ رَبَّكُمْ وَٱفْعَلُوا۟ ٱلْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ۩
অর্থঃ হে মুমিনগণ, তোমরা রুকূ’ কর, সিজদা কর, তোমাদের রবের ইবাদাত কর এবং ভাল কাজ কর, আশা করা যায় তোমরা সফল হতে পারবে।  (সূরা হজ্জঃ৭৭)

৬. শেষ বৈঠক করাঃ  নামাজের শেষ রাকাতে সিজদার পর তাশহুদ পড়তে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময় বসা।  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ثُمَّ اجْلِسْ فَاطْمَئِنَّ جَالِسًا ثُمَّ قُمْ فَإِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ فَقَدْ تَمَّتْ صَلاَتُكَ
অর্থ, “অতঃপর ধীর স্থিরভাবে উঠে বসবে। পরে উঠে দাঁড়াবে। এইরূপ করতে পারলে তবে তোমার সালাত পূর্ণ হবে। সূত্রঃ বুক অব ইসলামিক নলেজ, লেখকঃ ইকবাল কবীর মোহন

 কোন একটি ফরজ ছুটে গেলে নামাজ হবে না । পুনরায় নামায আদায় করতে হবে ।


Source:https://islami-andolon-bangladesh.blogspot.com/2021/08/blog-post.html

70
হজরত মুসা ইবনে জাফর (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসে একদিন রোজা রাখে,সে ব্যাক্তি এক বছর জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পায় এবং যে ব্যক্তি তিনদিন রোজা রাখে তার উপর বেহেশত ওয়াজিব হয়ে যায়। তিনি আরো বলেছেন : রজব বেহেশতের একটি ঝর্ণাধারার নাম
রজব মাসের ফযিলত ও আমল

রজব মাসের ফযিলত

হজরত মুসা ইবনে জাফর (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসে একদিন রোজা রাখে,সে ব্যাক্তি এক বছর জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পায় এবং যে ব্যক্তি তিনদিন রোজা রাখে তার উপর বেহেশত ওয়াজিব হয়ে যায়।

তিনি আরো বলেছেন : রজব বেহেশতের একটি ঝর্ণাধারার নাম; যার (পানি) দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়ে মিষ্টি। যে ব্যক্তি এ মাসে একদিন রোজা রাখে সে অবশ্যই এ ঝর্ণাধারা হতে পানি পান করবে।

ইমাম সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, মহানবী (স.) বলেছেন: ‘রজব মাস আমার উম্মতের এস্তেগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনার মাস। অতএব, এ মাসে অত্যাধিক ক্ষমা প্রার্থনা কর, কেননা মহান আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু। রজব মাসকে (أصل) বলা হয়, কারণ এ মাসে আমার উম্মতের উপর আল্লাহ তায়ালার  অত্যাধিক রহমত বর্ষিত হয়, অতএব, (أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَ أَسْأَلُهُ التَّوْبَةَ) এ যিকরটি অত্যাধিক পাঠ কর।

জনাব সালেম হতে ইবনে বাবেভেই (রহ.) বর্ণনা করেছেন: রজব মাস শেষ হতে কয়েকদিন অবশিষ্ট ছিল, আমি ইমাম সাদিক্ব (আ.) এর সাথে সাক্ষাত করার জন্য যায়। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন: তুমি কি এ মাসে রোজা রেখেছ? আমি বললাম: না হে রাসুলের সন্তান! তিনি বললেন: তোমার এত সওয়াব হাতছাড়া হয়েছে যে, যার পরিমাণ মহান আল্লাহ তায়ালা  ছাড়া আর কেউই জানে না। নিশ্চয়ই এটা মহান আল্লাহ তায়ালার মাস। মহান আল্লাহ একে অন্যান্য মাসের তুলনায় বেশী প্রাধান্য দিয়েছেন, এ মাসের মর্যাদাকে অত্যাধিক বৃদ্ধি করেছেন এবং এ মাসে রোজাদারদের সম্মানিত করাকে নিজের জন্য আবশ্যক করেছেন।

অতঃপর আমি বললাম: হে রাসূল (সা.) এর সন্তান! আমি যদি এ মাসের অবশিষ্ট দিনগুলিতে রোজা রাখি তবে কি ঐ সওয়াবের অধিকারী হতে পারবো? তিনি বললেন: হে সালেম! যে ব্যক্তি এ মাসের শেষ দিনগুলিতে একদিন রোজা রাখে মহান আল্লাহ্ তাকে মৃত্যুপূর্ব যন্ত্রণা, মৃত্যুর পর ভয় এবং কবরের আযাব হতে নিরাপত্তা প্রদান করেন। আর যে ব্যক্তি এ মাসের শেষের দিনগুলির দুদিন রোজা রাখে সে পুলসিরাত সহজেই অতিক্রম করবে। যে ব্যক্তি এ মাসের শেষ দিনগুলির তিনদিন রোজা রাখবে সে কেয়ামত দিবসের বৃহৎ ভয়, সেদিনের তীব্র আতংক হতে নিরাপদ থাকবে... জেনে রাখো, রজব মাসের রোজার জন্য প্রচুর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এমনও বর্ণিত হয়েছে যে, কেউ যদি এ মাসে রোজা রাখতে সক্ষম না হয় তবে নিন্মোক্ত তসবিহ যেন পাঠ করে, এর মাধ্যমে সে রোজার সওয়াব লাভ করে।

سُبحانَ اللهِ الجَلیل سُبحانَ مَن لا یَنبَغیِ التَسبیحُ اِلّا لَهُ سُبحانَ الاَعَزِّ الاَکرَمِ سُبحانَ مَن لَبِسَ العِزَّ وَ هُوَ لَهُ اَهلٌ سُبحانَ الاِلهِ الجَلیل سُبحانَ الاِلهِ الجَلیل سُبحانَ مَن لا یَنبَغیِ التَسبیحُ اِلّا لَهُ سُبحانَ مَن لا یَنبَغیِ التَسبیحُ اِلّا لَهُ سُبحانَ الاَعَزِّ الاَکرَمِ سُبحانَ مَن لَبِسَ العِزَّ وَ هُوَ لَهُ اَهلٌ.
রজব মাসের বিভিন্ন তসবিহ ও তাহলিল

1.       মহানবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসে ১০০ বার পাঠ করবে

أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِى لا إِلَهَ إِلا هُوَ وَحْدَهُ لا شَرِیكَ لَهُ وَ أَتُوبُ إِلَیْهِ

যে ব্যাক্তি উক্ত এস্তেগফারটি পাঠ করবে এবং সাদক্বা প্রদান করবে তার উপর মহান আল্লাহ তায়ালার  রহমত ও মাগফিরাত (বর্ষিত হবে), আর যে ব্যক্তি উক্ত এস্তেগফারটি ৪০০ বার পড়বে তাকে আল্লাহ তায়ালা ১০০ শহীদের সমপরিমাণ সওয়াব প্রদান করবেন।

2.      নবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে : যে ব্যক্তি রজব মাসে এক হাজার বার (لا إله إلا الله) বলবে, মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে ১ লক্ষ সওয়াব প্রদান করবেন এবং তার জন্য বেহেশতে ১ শত শহর নির্মাণ করে দিবেন।

3.      সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.) তার গ্রন্থে মহানবী (স.) হতে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েত এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, রজব মাসে সুরা ইখলাস পাঠের বিষয়ে রাসুল (সা.) ব্যাপক ফজিলতের কথা উল্লেখ করেছেন যে, এ মাসে ১০ হাজার বার বা ১ হাজার বার বা ১০০ বার সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করা (অতি উত্তম)। এছাড়া আরো বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের শুক্রবার দিন ১০০ বার সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করবে, কেয়ামতের দিন একটি নূর তাকে বেহেশতের দিকে পথ প্রদর্শন করবে।

4.      সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.)মহানবী (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন: কোন ব্যক্তি যদি রজব মাসের শুক্রবারে যোহর ও আসরের নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে (দুই রাকাত করে) ৪ রাকাত নামায আদায় করে এবং প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ৭ বার আয়াতুল কুরসী ও ৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে, অতঃপর ১০ বার নিন্মোক্ত এস্তেগফার পাঠ করে:

أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِى لا إِلَهَ إِلا هُوَ وَ أَسْأَلُهُ التَّوْبَةَ

তাহলে যেদিন হতে এ নামায পড়েছে, সে দিন হতে তার মৃত্যুর দিন অবধি মহান আল্লাহ প্রতিদিন ১ হাজার নেকি প্রদান করবেন, যে সকল আয়াত সে তেলাওয়াত করেছে তার প্রতিটি আয়াতের পরিবর্তে বেহেশতে একটি করে লাল রুবি পাথরের শহর, প্রতিটি অক্ষরের জন্য বেহেশতে একটি করে সাদা পাথরের প্রাসাদ নির্মাণ করবেন, হুরুল আইনের সাথে তার বিবাহ দিবেন এবং তার উপর সন্তুষ্ট থাকবেন।

5.      পবিত্র রজব মাসের প্রতিদিন এ দোয়া পাঠ করা উত্তম, ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.)ও নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন :

یَا مَنْ یَمْلِكُ حَوَائِجَ السَّائِلِینَ وَ یَعْلَمُ ضَمِیرَ الصَّامِتِینَ لِكُلِّ مَسْأَلَةٍ مِنْكَ سَمْعٌ حَاضِرٌ وَ جَوَابٌ عَتِیدٌ اللَّهُمَّ وَ مَوَاعِیدُكَ الصَّادِقَةُ وَ أَیَادِیكَ الْفَاضِلَةُ وَ رَحْمَتُكَ الْوَاسِعَةُ فَأَسْأَلُكَ أَنْ تُصَلِّىَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ أَنْ تَقضِىَ حَوَائِجِى لِلدُّنْیَا وَ الْآخِرَةِ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَىْ‏ءٍ قَدِیرٌ.

6.      ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে নিন্মোক্ত দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে :

خَابَ الْوَافِدُونَ عَلَى غَیْرِكَ وَ خَسِرَ الْمُتَعَرِّضُونَ إِلا لَكَ وَ ضَاعَ الْمُلِمُّونَ إِلا بِكَ وَ أَجْدَبَ الْمُنْتَجِعُونَ إِلا مَنِ انْتَجَعَ فَضْلَكَ بَابُكَ مَفْتُوحٌ لِلرَّاغِبِینَ وَ خَیْرُكَ مَبْذُولٌ لِلطَّالِبِینَ وَ فَضْلُكَ مُبَاحٌ لِلسَّائِلِینَ وَ نَیْلُكَ مُتَاحٌ لِلْآمِلِینَ وَ رِزْقُكَ مَبْسُوطٌ لِمَنْ عَصَاكَ وَ حِلْمُكَ مُعْتَرِضٌ لِمَنْ نَاوَاكَ عَادَتُكَ الْإِحْسَانُ إِلَى الْمُسِیئِینَ وَ سَبِیلُكَ الْإِبْقَاءُ عَلَى الْمُعْتَدِینَ اللَّهُمَّ فَاهْدِنِى هُدَى الْمُهْتَدِینَ وَ ارْزُقْنِى اجْتِهَادَ الْمُجْتَهِدِینَ وَلا تَجْعَلْنِى مِنَ الْغَافِلِینَ الْمُبْعَدِینَ وَ اغْفِرْ لِى یَوْمَ الدِّینِ .

7.      ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে এ দোয়াটিও বর্ণিত হয়েছে :

اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ صَبْرَ الشَّاكِرِینَ لَكَ وَ عَمَلَ الْخَائِفِینَ مِنْكَ وَ یَقِینَ الْعَابِدِینَ لَكَ اللَّهُمَّ أَنْتَ الْعَلِىُّ الْعَظِیمُ وَ أَنَا عَبْدُكَ الْبَائِسُ الْفَقِیرُ أَنْتَ الْغَنِىُّ الْحَمِیدُ وَ أَنَا الْعَبْدُ الذَّلِیلُ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِهِ وَ امْنُنْ بِغِنَاكَ عَلَى فَقْرِى وَ بِحِلْمِكَ عَلَى جَهْلِى وَ بِقُوَّتِكَ عَلَى ضَعْفِى یَا قَوِىُّ یَا عَزِیزُ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِهِ الْأَوْصِیَاءِ الْمَرْضِیِّینَ وَ اكْفِنِى مَا أَهَمَّنِى مِنْ أَمْرِ الدُّنْیَا وَ الْآخِرَةِ یَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِینَ.

8.      হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের সকালে ও রাতে ৭০ বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ্ ওয়া আতুবু ইলাইহি’ বলে এবং যিকর শেষ হওয়ার পর হাত উঁচু করে বলে: হে আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার তওবা গ্রহণ করে নাও তাহলে যদি সে রজব মাসে মারা যায় তবে মহান আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট থাকবেন এবং পবিত্র রজব মাসের বরকতে (জাহান্নামের) আগুন তাকে স্পর্শ করবে না।

9.      এ মাসে সর্বমোট এক হাজার বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহা যুল জালালি ওয়াল ইকরামি মিন জামিয়ীয যুনুবি ওয়াল আসনাম’ পাঠ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ পরম করুণাময় মহান আল্লাহ্ গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দেন।

10.  এ মাসে তিনদিন; বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার রোজা রাখা। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি হারাম মাসসমূহের যে কোন একটিতে এ তিন দিন রোজা রাখে, মহান আল্লাহ তাকে ৯০০ বছরের ইবাদতের সমপরিমাণ সওয়াব দান করেন।

11.   মহানবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের রাতসমূহের একটিতে (দুই রাকাত করে) ১০ রাকাত এ পদ্ধতিতে নামায আদায় করে: প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১ বার সুরা কাফিরুন এবং ৩ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে। মহান আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দেন।
রজব মাসের সাধারণ আমল সমূহ

1.       মহানবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে,যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসে ১০০ বার

أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِى لا إِلَهَ إِلا هُوَ وَحْدَهُ لا شَرِیكَ لَهُ وَ أَتُوبُ إِلَیْهِ.

উল্লেখিত এস্তেগফারটি পাঠ করবে এবং সাদক্বা প্রদানের পরে দোয়া করবে (দোয়া শেষে সাদক্বা প্রদান করবে)। তার উপর মহান আল্লাহ তায়ালার  বিশেষ রহমত ও মাগফিরাত বর্ষিত হবে, আর যে ব্যক্তি ৪০০ বার উল্লেখিত এস্তেগফারটি পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ১০০ শহীদের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন।

2.      আল্লাহ তায়ালার  নবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে : যে ব্যক্তি রজব মাসে এক হাজার বার (لا إله إلا الله) [লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্] পাঠ করবে, মহান আল্লাহ্ তাকে ১ লক্ষ নেকি দান করবেন এবং তার জন্য বেহেশতে ১০০টি শহর নির্মাণ করবেন।

3.      সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.) তার গ্রন্থে মহানবী (স.) হতে বর্ণিত একটি হাদীস এভাবে উল্লেখ করেছেন যে,(রজব মাসে) সুরা ইখলাস পাঠের বিষয়ে তিনি (স.) ব্যাপক ফজিলতের কথা উল্লেখ করেছেন।  এ মাসে ১০ হাজার বার অথবা ১ হাজার বার অথবা  ১০০ বার সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করা (অতি উত্তম)। এছাড়া আরো বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের শুক্রবার দিন ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে, কেয়ামতের দিন একটি নুর তাকে বেহেশতের দিকে নিয়ে যাবে।

4.      সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.)মহানবী (স.) হতে বর্ণনা করেছেন : কোন ব্যক্তি যদি রজব মাসে শুক্রবারে যোহর ও আসরের নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে (দুই রাকাত করে) ৪ রাকাত নামায আদায় করে এবং প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ৭ বার আয়াতুল কুরসী ও ৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে,

অতঃপর ১০ বার পাঠ করতে হবে:

أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِى لا إِلَهَ إِلا هُوَ وَ أَسْأَلُهُ التَّوْبَةَ

যেদিন সে এ নামাজটি পড়বে সে দিন থেকে তার মৃত্যুর দিন অবধি মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রতিদিন ১ হাজার সওয়াব দান করবেন, যে সকল আয়াত সে তেলাওয়াত করেছে তার প্রতিটি আয়াতের পরিবর্তে বেহেশতে একটি করে লাল রুবি পাথরের শহর, প্রতিটি অক্ষরের জন্য বেহেশতে একটি করে শ্বেত পাথরের প্রাসাদ নির্মাণ করে দিবেন, হুরুল আইনের সাথে তার বিবাহ দিবেন এবং তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন।

5.      পবিত্র রজব মাসের প্রতিদিন এ দোয়া পাঠ করা উত্তম, দোয়াটি ইমাম জয়নুল আবেদীন  (আ.)ও পাঠ করতেন :

یَا مَنْ یَمْلِكُ حَوَائِجَ السَّائِلِینَ وَ یَعْلَمُ ضَمِیرَ الصَّامِتِینَ لِكُلِّ مَسْأَلَةٍ مِنْكَ سَمْعٌ حَاضِرٌ وَ جَوَابٌ عَتِیدٌ اللَّهُمَّ وَ مَوَاعِیدُكَ الصَّادِقَةُ وَ أَیَادِیكَ الْفَاضِلَةُ وَ رَحْمَتُكَ الْوَاسِعَةُ فَأَسْأَلُكَ أَنْ تُصَلِّىَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ أَنْ تَقضِىَ حَوَائِجِى لِلدُّنْیَا وَ الْآخِرَةِ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَىْ‏ءٍ قَدِیرٌ.

6.      ইমাম সাদিক্ব (আ.) হতে নিম্নোক্ত দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে:

خَابَ الْوَافِدُونَ عَلَى غَیْرِكَ وَ خَسِرَ الْمُتَعَرِّضُونَ إِلا لَكَ وَ ضَاعَ الْمُلِمُّونَ إِلا بِكَ وَ أَجْدَبَ الْمُنْتَجِعُونَ إِلا مَنِ انْتَجَعَ فَضْلَكَ بَابُكَ مَفْتُوحٌ لِلرَّاغِبِینَ وَ خَیْرُكَ مَبْذُولٌ لِلطَّالِبِینَ وَ فَضْلُكَ مُبَاحٌ لِلسَّائِلِینَ وَ نَیْلُكَ مُتَاحٌ لِلْآمِلِینَ وَ رِزْقُكَ مَبْسُوطٌ لِمَنْ عَصَاكَ وَ حِلْمُكَ مُعْتَرِضٌ لِمَنْ نَاوَاكَ عَادَتُكَ الْإِحْسَانُ إِلَى الْمُسِیئِینَ وَ سَبِیلُكَ الْإِبْقَاءُ عَلَى الْمُعْتَدِینَ اللَّهُمَّ فَاهْدِنِى هُدَى الْمُهْتَدِینَ وَ ارْزُقْنِى اجْتِهَادَ الْمُجْتَهِدِینَ وَلا تَجْعَلْنِى مِنَ الْغَافِلِینَ الْمُبْعَدِینَ وَ اغْفِرْ لِى یَوْمَ الدِّینِ .

7.      ইমাম সাদিক্ব (আ.) হতে এ দোয়াটিও বর্ণিত হয়েছে:

اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ صَبْرَ الشَّاكِرِینَ لَكَ وَ عَمَلَ الْخَائِفِینَ مِنْكَ وَ یَقِینَ الْعَابِدِینَ لَكَ اللَّهُمَّ أَنْتَ الْعَلِىُّ الْعَظِیمُ وَ أَنَا عَبْدُكَ الْبَائِسُ الْفَقِیرُ أَنْتَ الْغَنِىُّ الْحَمِیدُ وَ أَنَا الْعَبْدُ الذَّلِیلُ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِهِ وَ امْنُنْ بِغِنَاكَ عَلَى فَقْرِى وَ بِحِلْمِكَ عَلَى جَهْلِى وَ بِقُوَّتِكَ عَلَى ضَعْفِى یَا قَوِىُّ یَا عَزِیزُ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِهِ الْأَوْصِیَاءِ الْمَرْضِیِّینَ وَ اكْفِنِى مَا أَهَمَّنِى مِنْ أَمْرِ الدُّنْیَا وَ الْآخِرَةِ یَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِینَ.

8.      হাদীসে বর্ণিত হয়েছে: যে ব্যক্তি রজব মাসের সকালে ৭০ বার ও রাতে ৭০ বার “আস্তাগফিরুল্লাহ্ ওয়া আতুবু ইলাইহি” পাঠ করে এবং যিক্‌র শেষ হওয়ার পর হাতদ্বয়কে উঁচু করে বলে : হে আল্লাহ তায়ালা! আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার তওবাকে তুমি কবুল করে নাও। সে যদি রজব মাসে মারা যায় তবে মহান আল্লাহ্ তার উপর সন্তুষ্ট থাকবেন এবং পবিত্র রজব মাসের বরকতে (জাহান্নামের) আগুন তাকে স্পর্শ করবে না।

9.      এ সে সর্বমোট এক হাজার বার “আস্তাগফিরুল্লাহা যুল জালালি ওয়াল ইকরামি মিন জামিয়ীয যুনুবি ওয়াল আসনাম” পাঠ করা অতিব গুরুত্বপূর্ণ, যেন পরম করুণাময় মহান আল্লাহ্ গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দেন।

10.  এ মাসে তিনদিন যথা: বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রোজা রাখা। হাদীসে  বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি হারাম মাসসমুহের যে কোন একটিতে এ তিনদিন রোজা রাখে, মহান আল্লাহ্ তাকে ৯০০ বছরের ইবাদতের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন।

11.   মহানবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে,তিনি বলেছেন: যে ব্যক্তি রজব মাসের প্রত্যেক রাতে (দুই রাকাত করে) নামাজ পড়ে। মহান আল্লাহ তায়ালা  তার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দেন, তার দোয়াকে কবুল করেন এবং তাকে ৬০টি উমরা হজের সমপরিমাণ সওয়াব দান করেন। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ৩ বার সুরা কাফিরুন এবং ১ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পড়তে হবে। অতঃপর নামাজান্তে হাতদ্বয়কে উচু করে বলতে হবে:

لا اِلهَ اِلا اللّهُ وَحْدَهُ لا شَرِیکَ لَهُ لَهُ الْمُلْک وَ لَهُ الْحَمْدُ یحْیى وَیمیتُ وَهُوَ حَىُّ لا یمُوتُ بِیدِهِ الْخَیرُ وَهُوَ عَلى کلِّشَىْءٍ قَدیرٌ وَاِلَیهِ الْمَصیرُ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلاّ بِاللّهِ الْعَلِىِّ الْعَظیمِ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ النَّبِىِّ الاُمِّىِّ وَ آلِهِ.

12.   কেউ যদি  রজব মাসের যে কোন রাতে দুই রাকাত নামাজ পড়ে –এ পদ্ধতিতে: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পড়ে। তাহলে আল্লাহ তায়ালা  তাকে ১০০ বছরের রোজার সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন।

13.  কোন ব্যক্তি যদি রজব মাসের প্রত্যেক রাতে (দুই রাকাত করে) ১০ রাকাত নামায আদায় করে এ পদ্ধতিতে: প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১ বার সুরা কাফিরুন এবং ৩ বার সুরা ইখলাস। তাহলে আল্লাহ তায়ালা  তার গুনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দিবেন।

14.   আল্লামা মজলিসি (রহ.) হজরত আলী  (আ.) থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি রজব, শাবান এবং রমজান মাসে প্রত্যেক দিন ও এবং রাতে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, কাফেরুন, ইখলাস, ফালাক ও নাস প্রত্যেকটি ৩ বার করে পাঠ করে এবং অতঃপর বলে:

سُبْحانَ اللّهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ وَلا اِلهَ اِلا اللّهُ وَاللّهُ اَکبَرُ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلاّ بِاللّهِ الْعَلِىِّ الْعَظیم

অতঃপর ৩ বার বলে:

اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ

অতঃপর ৩ বার বলে:

اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُؤ مِنینَ وَالْمُؤ مِناتِ

অতঃপর ৪০০ বার বলে:

اَسْتَغْفِرُ اللّهَ وَاَتُوبُ اِلَیهِ

তার গুনাহসমূহ যদি পাহাড়ের সমান, বৃষ্টির ফোটা ও গাছের পাতার ন্যায় অধিক হয় তাহলেও আল্লাহ তায়ালা  তার সকল গুনাহসমুহকে ক্ষমা করে দিবেন।

আল্লামা মাজলিসি (রহ.) বর্ণনা করেছেন যে, রজব মাসে ১০০০ বার (لا اِلهَ اِلا اللّهُ) পাঠ করা উত্তম।
 রজব মাসের বিশেষ দোয়াসমূহ

রজব মাসের এ বিশেষ দোয়াটি প্রত্যেকদিন পাঠ করা মুস্তাহাব। দোয়াটি নিন্মরূপ:

اَللّهُمَّ یا ذَاالْمِنَنِ السّابِغَةِ وَالاْلاءِ الْو ازِعَةِ والرَّحْمَةِ الْو اسِعَةِ وَالْقُدْرَةِ الْج امِعَةِ وَالنِّعَمِ الْجَسْیمَةِ وَالْمَواهِبِ الْعَظیمَةِ وَالاْیادِى الْجَمیلَةِ والْعَطایا الْجَزیلَةِ یا مَنْ لا ینْعَتُ بِتَمْثیلٍ وَلا یمَثَّلُ بِنَظیرٍ وَلا یغْلَبُ بِظَهیرٍ یا مَنْ خَلَقَ فَرَزَقَ وَاَلْهَمَ فَاَنْطَقَ وَابْتَدَعَ فَشَرَعَ وَعَلا فَارْتَفَعَ وَقَدَّرَ فَاَحْسَنَ وَصَوَّرَ فَاَتْقَنَ وَاحْتَجَّ فَاَبْلَغَ وَاَنْعَمَ فَاَسْبَغَ وَاَعْطى فَاَجْزَلَ وَمَنَحَ فَاَفْضَلَ یا مَنْ سَما فِى الْعِزِّ فَفاتَ نَواظِرَ الاْبْصارِ وَدَنا فِى الُّلطْفِ فَجازَ هَواجِسَ الاْفْکارِ یا مَنْ تَوَحَّدَ باِلْمُلک فَلا نِدَّ لَهُ فى مَلَکوتِ سُلْطانِهِ وَتفَرَّدَ بِالاْلاءِ وَالْکبرِی اءِ فَلا ضِدَّ لَهُ فى جَبَرُوتِ شَاْنِهِ یا مَنْ حارَتْ فى کبْرِیاءِ هَیبَتِهِ دَقایقُ لَطایفِ الاْوْهامِ وَانْحَسَرَتْ دُونَ اِدْراک عَظَمَتِهِ خَطایفُ اَبْصارِ الاْنامِ یا مَنْ عَنَتِ الْوُجُوهُ لِهَیبَتِهِ وَخَضَعَتِ الرِّقابُ لِعَظَمتِهِ وَوجِلَتِ الْقُلُوبُ مِنْ خیفَتِهِ اَسئَلُک بِهذِهِ الْمِدْحَةِ الَّتى لا تَنْبَغى اِلاّ لَک وَبِما وَاَیتَ بِهِ عَلى نَفْسِک لِداعیک مِنَ الْمُؤْمِنینَ وَبِما ضَمِنْتَ الاِجابَةَ فیهِ عَلى نَفْسِک لِلدّاعینَ یا اَسْمَعَ السّامِعینَ وَاَبْصَرَ النّاظِرینَ وَاَسْرَعَ الْحاسِبینَ یا ذَاالْقُوَّةِ الْمتینَ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ خاتَمِ النَّبِیینَ وَعَلى اَهْلِ بَیتِهِ وَاقْسِمْ لى فى شَهْرِنا هذا خَیرَ ما قَسَمْتَ وَاحْتِمْ لى فى قَضائِک خَیرَ ما حَتَمْتَ وَاخْتِمْ لى بِالسَّعادَةِ فیمَنْ خَتَمْتَ وَاَحْینى ما اَحْییتَنى مَوْفُوراً وَاَمِتْنى مَسْرُوراً وَمَغْفُوراً وَتوَلَّ اَنْتَ نَجاتى مِنْ مُسائَلَةِ الْبَرْزَخِ وَادْرَاءْ عَنّى مُنْکراً وَنَکیراً وَاَرِ عَینى مُبَشِّراً وَبَشیراً وَاجْعَلْ لى اِلى رِضْوانِک وَجِنانِک مَصیراً وَعَیشاً قَریراً وَمُلْکاً کبیراً وَصَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ کثیراً.
মোহাম্মাদ ইবনে উসমান (রহ.) হতে বর্ণিত দোয়া

রজব মাসের এ দোয়াটি ইমাম মাহদী (আ.) এর নায়েব মোহাম্মাদ ইবনে উসমান (রহ.)হতে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম মাহদী (আ.)এর পক্ষ থেকে এ দোয়াটি তাঁর কাছে বার্তা স্বরূপ এসেছিল। দোয়াটি নিন্মরূপ:

اَللّهُمَّ اِنّى اَسئَلُک بِمَعانى جَمیعِ ما یدْعُوک بِهِ وُلاةُ اَمْرِک الْمَاْمُونُونَ عَلى سِرِّک الْمُسْتَبْشِرُونَ بِاَمْرِک الْواصِفُونَ لِقُدْرَتِک الْمُعْلِنُونَ لِعَظَمَتِک اَسئَلُک بِما نَطَقَ فیهِمْ مِنْ مَشِیتِک فَجَعَلْتَهُمْ مَعادِنَ لِکلِماتِک وَاَرْکاناً لِتَوْحیدِک وَآیاتِک وَمَقاماتِک الَّتى لاتَعْطیلَ لَها فى کلِّ مَکانٍ یعْرِفُک بِها مَنْ عَرَفَک لا فَرْقَ بَینَک وَبَینَها اِلاّ اَنَّهُمْ عِبادُک وَخَلْقُک فَتْقُها وَرَتْقُها بِیدِک بَدْؤُها مِنْک وَعَوْدُها اِلَیک اَعْضادٌ واَشْهادٌ ومُناةٌ واَذْوادٌ وَحَفَظَةٌ وَرُوّادٌ فَبِهمْ مَلاَتَ سَماَّئَک وَاَرْضَک حَتّى ظَهَرَ اَنْ لا اِلهَ إلاّ اَنْتَ فَبِذ لِک اَسْئَلُک وَبِمَواقِعِ الْعِزِّ مِنْ رَحْمَتِک وَبِمَقاماتِک وَعَلاماتِک اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ واَنْ تَزیدَنى ایماناً وَتَثْبیتاً یاباطِناً فى ظُهُورِهِ وَظاهراً فى بُطُونِهِ وَمَکنُونِهِ یا مُفَرِّقاً بَینَ النُّورِ وَالدَّیجُورِ یا مَوْصُوفاً بِغَیرِ کنْهٍ وَمَعْرُوفاً بِغَیرِ شِبْهٍ حاَّدَّ کلِّ مَحْدُودٍ وَشاهِدَ کلِّ مَشْهُودٍ وَمُوجِدَ کلِّ مَوْجُودٍ وَمُحْصِىَ کلِّ مَعْدُودٍ وَفاقِدَ کلِّ مَفْقُودٍ لَیسَ دُونَک مِنْ مَعْبُودٍ اَهْلَ الْکبْرِیاَّءِ وَالْجُودِ یا مَنْ لا یکیفُ بِکیفٍ وَلا یؤَینُ بِاَینٍ یا مُحْتَجِباً عَنْ کلِّ عَینٍ یا دَیمُومُ یا قَیومُ وَعالِمَ کلِّ مَعْلُومٍ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَعَلى عِبادِک الْمُنْتَجَبینَ وَبَشَرِک الْمُحْتَجِبینَ وَمَلاَّئِکتِک الْمُقَرَّبینَ وَالْبُهْمِ الصّاَّفّینَ الْحاَّفّینَ وَبارِک لَنا فى شَهْرِنا هذَا الْمُرَجَّبِ الْمُکرِّمِ وَما بَعْدَهُ مِنَ الاْشْهُرِ الْحُرُمِ وَاَسْبِغْ عَلَینا فیهِا النِّعَمَ وَاَجْزِلْ لَنافیهِ الْقِسَمَ وَاَبْرِرْ لَنافیهِ الْقَسَمَ بِاسْمِک الاْعْظَمِ الاْعْظَمِ الاْجَلِّ الاْکرَمِ الَّذى وَضَعْتَهُ عَلىَ النَّهارِ فَاَضاَّءَ وَعَلَى اللَّیلِ فَاَظْلَمَ وَاغْفِرْ لَنا ما تَعْلَمُ مِنّا وَما لا نَعْلَمُ وَاعْصِمْنا مِنَ الذُّنُوبِ خَیرَ الْعِصَمِ وَاکفِنا کوافِىَ قَدَرِک وَامْنُنْ عَلَینا بِحُسْنِ نَظَرِک وَلا تَکلْنا اِلى غَیرِک وَلا تَمْنَعْنا مِنْ خَیرِک وَبارِک لَنا فیما کتَبْتَهُ لَنا مِنْ اَعْمارِنا واَصْلِحْ لَنا خَبیئَةَ اَسْرارِنا واَعْطِنا مِنْک الاْمانَ وَاْستَعْمِلْنا بِحُسْنِ الاْ یمانِ وَبَلِّغْنا شَهْرَ الصِّیامِ وَما بَعْدَهُ مِنَ الاْیامِ وَالاْعْوامِ یا ذَا الْجَلالِ والاِکرام.
শাইখ আবুল কাসিম (রহ.)হতে বর্ণিত দোয়া

ইমাম মাহদী (আ.) এর নায়েব শাইখ আবুল কাসিম (রহ.) হতে রজব মাসের দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে। দোয়াটি নিন্মরূপ:

اَللّهُمَّ اِنّى اَسئَلُک بِالْمَوْلُودَینِ فى رَجَبٍ مُحَمَّدِ بْنِ عَلی الثانى وَابْنِهِ عَلِىِّ بْنِ مُحَمَّدٍ الْمُنْتَجَبِ وَاَتَقَرَّبُ بِهِما اِلَیک خَیرَ الْقُرَبِ یا مَنْ اِلَیهِ الْمَعْرُوفُ طُلِبَ وَ فیما لَدَیهِ رُغِبَ اَسئَلُک سُؤالَ مُقْتَرِفٍ مُذْنِبٍ قَدْ اَوْبَقَتْهُ ذُنُوبُهُ وَاَوْثَقَتْهُ عُیوبُهُ فَطالَ عَلَى الْخَطایا دُؤُبُهُ وَمِنَ الرَّزایا خُطُوبُهُ یسْئَلُک التَّوْبَةَ وَحُسْنَ الاْوْبَةِ وَالنُّزُوعَ عَنِ الْحَوْبَةِ وَمِنَ النّارِ فَکاک رَقَبَتِهِ وَالْعَفْوَ عَمّا فى رِبْقَتِهِ فَاَنْتَ مَوْلاىَ اَعْظَمُ اَمَلِهِ وَثِقَتُهُ اَللّهُمَّ واَسئَلُک بِمَسائِلِک الشَّریفَةِ وَ وَسائِلِک الْمُنیفَةِ اَنْ تَتَغَمَّدَنى فى هذَا الشَّهْرِ بِرَحْمَةٍ مِنْک واسِعَةٍ وَنِعْمَةٍ وازِعَةٍ وَنَفْسٍ بِما رَزَقْتَها قانِعَةٍ اِلى نُزُولِ الحافِرَةِ وَمَحَلِّ الاْخِرَةِ وَما هِىَ اِلَیهِ صائِرَةٌ.
 যিয়ারত-এ রাজাবিয়া

উক্ত যিয়ারতটি আবুল কাসিম হুসাইন বিন রূহ (রহ.) ইমাম মাহদী (আ.)  বর্ণনা করেছেন। যিয়ারতটি নিন্মরূপ:

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَشْهَدَنَا مَشْهَدَ أَوْلِيَائِهِ فِي رَجَبٍ وَ أَوْجَبَ عَلَيْنَا مِنْ حَقِّهِمْ مَا قَدْ وَجَبَ وَ صَلَّى اللَّهُ عَلَى مُحَمَّدٍ الْمُنْتَجَبِ وَ عَلَى أَوْصِيَائِهِ الْحُجُبِ اللَّهُمَّ فَكَمَا أَشْهَدْتَنَا مَشْهَدَهُمْ فَأَنْجِزْ لَنَا مَوْعِدَهُمْ وَ أَوْرِدْنَا مَوْرِدَهُمْ غَيْرَ مُحَلَّئِينَ عَنْ وِرْدٍ فِي دَارِ الْمُقَامَةِ وَ الْخُلْدِ وَ السَّلامُ عَلَيْكُمْ إِنِّي قَدْ قَصَدْتُكُمْ وَ اعْتَمَدْتُكُمْ بِمَسْأَلَتِي وَ حَاجَتِي وَ هِيَ فَكَاكُ رَقَبَتِي مِنَ النَّارِ وَ الْمَقَرُّ مَعَكُمْ فِي دَارِ الْقَرَارِ مَعَ شِيعَتِكُمُ الْأَبْرَارِ وَ السَّلامُ عَلَيْكُمْ بِمَا صَبَرْتُمْ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ أَنَا سَائِلُكُمْ وَ آمِلُكُمْ فِيمَا إِلَيْكُمُ التَّفْوِيضُ وَ عَلَيْكُمُ التَّعْوِيضُ فَبِكُمْ يُجْبَرُ الْمَهِيضُ وَ يُشْفَى الْمَرِيضُ، وَ مَا تَزْدَادُ الْأَرْحَامُ وَ مَا تَغِيضُ إِنِّي بِسِرِّكُمْ مُؤْمِنٌ وَ لِقَوْلِكُمْ مُسَلِّمٌ وَ عَلَى اللَّهِ بِكُمْ مُقْسِمٌ فِي رَجْعِي بِحَوَائِجِي وَ قَضَائِهَا وَ إِمْضَائِهَا وَ إِنْجَاحِهَا وَ إِبْرَاحِهَا وَ بِشُئُونِي لَدَيْكُمْ وَ صَلاحِهَا وَ السَّلامُ عَلَيْكُمْ سَلامَ مُوَدِّعٍ وَ لَكُمْ حَوَائِجَهُ مُودِعٍ يَسْأَلُ اللَّهَ إِلَيْكُمُ الْمَرْجِعَ وَ سَعْيَهُ إِلَيْكُمْ غَيْرَ مُنْقَطِعٍ وَ أَنْ يَرْجِعَنِي مِنْ حَضْرَتِكُمْ خَيْرَ مَرْجِعٍ إِلَى جَنَابٍ مُمْرِعٍ وَ خَفْضِ عَيْشٍ مُوَسَّعٍ وَ دَعَةٍ وَ مَهَلٍ إِلَى حِينِ خَيْرِ الْأَجَلِ وَ خَيْرِ مَصِيرٍ وَ مَحَلٍّ فِي النَّعِيمِ الْأَزَلِ وَ الْعَيْشِ الْمُقْتَبَلِ وَ دَوَامِ الْأُكُلِ وَ شُرْبِ الرَّحِيقِ وَ السَّلْسَلِ وَ عَلٍّ وَ نَهَلٍ لا سَأَمَ مِنْهُ وَ لا مَلَلَ وَ رَحْمَةُ اللَّهِ وَ بَرَكَاتُهُ وَ تَحِيَّاتُهُ عَلَيْكُمْ حَتَّى الْعَوْدِ إِلَى حَضْرَتِكُمْ وَ الْفَوْزِ فِي كَرَّتِكُمْ وَ الْحَشْرِ فِي زُمْرَتِكُمْ وَ رَحْمَةُ اللَّهِ وَ بَرَكَاتُهُ عَلَيْكُمْ وَ صَلَوَاتُهُ وَ تَحِيَّاتُهُ وَ هُوَ حَسْبُنَا وَ نِعْمَ الْوَكِيلُ.
রজব মাসের আরো একটি বিশেষ দোয়া

সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.) হাদীসটি মোহাম্মাদ বিন যাকওয়ান ওরফে সাজ্জাদ (রহ.) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি এতই বেশী সেজদা করতেন এবং সেজদারত অবস্থায় ক্রন্দন করতেন যে, অবশেষে তিনি উক্ত কারণে অন্ধ হয়ে যান। তিনি ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.)কে বলেন: আমাকে এমন এক দোয়ার শিক্ষা দেন যেন আল্লাহ তায়ালা আমাকে এর প্রতিদান দান করেন। তখন ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) তাকে বললেন: তুমি এ দোয়াটি রজব মাসে প্রত্যেক নামাজের পূর্বে, সকাল এবং সন্ধ্যায় পাঠ কর। দোয়াটি নিন্মরূপ:

یَا مَنْ اَرْجُوهُ لِکلِّ خَیرٍ وَآمَنُ سَخَطَهُ عِنْدَ کلِّ شَرٍّ یا مَنْ یعْطِى الْکثیرَ بِالْقَلیلِ یا مَنْ یعْطى مَنْ سَئَلَهُ یا مَنْ یعْطى مَنْ لَمْ یسْئَلْهُ وَمَنْ لَمْ یعْرِفْهُ تَحَنُّناً مِنْهُ وَرَحْمَةً اَعْطِنى بِمَسْئَلَتى اِیاک جَمیعَ خَیرِ الدُّنْیا وَجَمیعَ خَیرِ الاْخِرَةِ وَاصْرِفْ عَنّى بِمَسْئَلَتى اِیاک جَمیعَ شَرِّ الدُّنْیا وَشَرِّ الاْخِرَةِ فَاِنَّهُ غَیرُ مَنْقُوصٍ ما اَعْطَیتَ وَزِدْنى مِنْ فَضْلِک یا کریمُ

অতঃপর ইমাম (আ.) তাঁর তর্জনিকে ডানে বামে নাড়িয়ে নিন্মোক্ত দোয়ার অবশিষ্ট অংশটুকু পাঠ করলেন:

یا ذَاالْجَلالِ وَالْاِکرامِ یا ذَاالنَّعْماَّءِ وَالْجُودِ یا ذَاالْمَنِّ وَالطَّوْلِ حَرِّمْ شَیبَتى عَلَى النّارِ.
রজব মাসের বিশেষ ৬০ রাকাত নামাজ

রজব মাসে ৬০ রাকাত নামাজ বর্ণিত হয়েছে। প্রত্যেক রাতে দুই রাকাত নামাজ পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৩ বার সুরা কাফিরুন ও ১ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পাঠ করতে হবে। নামাজান্তে বলতে হবে:

لا اِلهَ اِلا اللّهُ وَحْدَهُ لا شَرى ک لَهُ لَهُ الْمُلْک وَ لَهُ الْحَمْدُ یحْیى وَیمیتُ وَهُوَ حَىُّ لا یمُوتُ بِیدِهِ الْخَیرُ وَهُوَ عَلى کلِّشَىْءٍ قَدیرٌ وَاِلَیهِ الْمَصیرُ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلاّ بِاللّهِ الْعَلِىِّ الْعَظیمِ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ النَّبِىِّ الْاُمِّىِّ وَ آلِهِ.

অতঃপর হাতকে স্বীয় চেহারার উপরে বুলাতে হবে। কেউ যদি উক্ত আমলটি করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার দোয়াকে কবুল করবেন এবং তাকে ৬০টি হজ এবং ৬০টি ওমরা হজের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন।

রাসুল (সা.) হতে হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কোন ব্যাক্তি যদি রজব মাসের কোন এক রাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে ১০০ বছরের রোজার সমপরিমাণ সওয়াব এবং বেহেশতে ১০০টি প্রাসাদ দান করবেন। নামাজটি পাঠের পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পড়তে হবে।

রজব মাসে আরো একটি নামাজ বর্ণিত হয়েছে কেউ যদি উক্ত নামাজটি পাঠ করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার কৃত সকল গুনাহকে ক্ষমা করে দিবেন। নামাজটির প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা কাফিরুন ১ বার এবং সুরা ইখলাস ৩ বার পাঠ করতে হবে।

আল্লামা মাজলিসি (রহ.) যাদুল মাআদ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম আলী  (আ.) রাসুল (সা.) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যে, কোন ব্যাক্তি যদি রজব, শাবান এবং রমজান মাসের দিন অথবা রাতে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস প্রত্যেকটি ৩ বার করে পাঠ করে অতঃপর তিনবার বলতে হবে:

سُبْحانَ اللّهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ وَلا اِلهَ اِلا اللّهُ وَاللّهُ اَکبَرُ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلاّ بِاللّهِ الْعَلِىِّ الْعَظیمِ.

অতঃপর ৩ বার বলতে হবে:

 اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ.

অতঃপর ৩ বার বলতে হবে:

اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُؤ مِنینَ وَالْمُؤ مِناتِ.

অতঃপর ৪০০ বার বলতে হবে:

 اَسْتَغْفِرُ اللّهَ وَاَتُوبُ اِلَیهِ

কেউ যদি উক্ত আমলটি সম্পাদন করে, তাহলে তার গুনাহ যদি বৃষ্টির ফোটা, বৃক্ষের পাতা এবং সমুদ্রের ন্যায় বিশাল ও অগণিত হয় তাহলেও আল্লাহ তায়ালা তার সকল গুনাহকে ক্ষমা করে দিবেন।
লাইলাতুর রাগায়েব-এর আমল

রজব মাসের প্রথম শুক্রবারের রাতকে “লাইলাতুর রাগায়েব” বলা হয়। রাসুল (সা.) হতে উক্ত রাত সম্পর্কে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। উক্ত রাতে মাগরিব এবং এশার নামাজের মধ্যবর্তি সময়ে ১২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৩ বার সুরা ক্বদর এবং ১২ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পড়তে হবে। ১২ রাকাত নামাজ পড়া শেষ হলে ৭০ বার বলতে হবে:

اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ النَّبِىِّ الاُمِّىِّ وَعَلى آلِهِ.

অতঃপর সিজদায় গিয়ে ৭০ বার বলতে হবে:

سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّ الْمَلائِکةِ وَالرُّوحِ

অতঃপর সিজদা থেকে মাথা উঠানোর পর ৭০ বার বলতে হবে:

رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَتَجاوَزْ عَمّا تَعْلَمُ اِنَّک اَنْتَ الْعَلِىُّ الاَعْظَمُ

অতঃপর আবার সিজদায় গিয়ে ৭০ বার বলতে হবে:

سُبُّوحٌ قُدّوُسٌ رَبُّ الْمَلائِکةِ وَالرُّوحِ

অতঃপর দোয়া চাইতে হবে।
১লা রজব রাতের আমল

1.       রজব মাসের চাঁদ দেখার পর নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করা উত্তম:

اللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَیْنَا بِالْأَمْنِ وَ الْإِیمَانِ وَ السَّلامَةِ وَ الْإِسْلامِ رَبِّى وَ رَبُّكَ اللهُ عَزَّ وَ جَلَّ.

বর্ণিত হয়েছে, রজব মাসের চাঁদ দেখার পর আল্লাহর রাসুল (সা.) নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন :

اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِى رَجَبٍ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا شَهْرَ رَمَضَانَ وَ أَعِنَّا عَلَى الصِّیَامِ وَ الْقِیَامِ وَ حِفْظِ اللِّسَانِ وَ غَضِّ الْبَصَرِ وَلا تَجْعَلْ حَظَّنَا مِنْهُ الْجُوعَ وَ الْعَطَشَ.

2.      গোসল করা

মহানবী (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি রজব মাসকে অনুধাবন করে এবং এর প্রথম ও মাঝ এবং শেষের দিনগুলিতে গোসল করে তার সমস্ত গুনাহ এমনভাবে মুছে ফেলা হয়, যেমনভাবে সে মায়ের গর্ভ হতে জন্মলাভ করার পর নিঃস্পাপ ছিল।

3.      ইমাম হুসাইন(আ.) এর যিয়ারত পাঠ করা।

4.      মাগরিব ও এশার নামাজের পর ২০ রাকাত নামায আদায় করা। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পড়তে হবে। উক্ত নামাজের  মাধ্যমে সে নিজে, তার সম্পদ-সম্পত্তি এবং সন্তানাদি রক্ষিত থাকবে এবং সে কবরে আযাব থেকে মুক্তি পাবে।

5.      এশার নামাজের পর ২ রাকাত নামায আদায় করা। নিয়ম হল: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১ বার সুরা ইনশিরাহ (আ-লাম নাশরাহ) এবং সুরা ইখলাস ৩ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইনশিরাহ, ইখলাস, ফালাক্ব এবং নাস পাঠ করতে হবে এবং সালামের মাধ্যমে নামায শেষ করার পর ৩০ বার “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এবং ৩০ বার দরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে। এ আমলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ তার গুনাহসমূহকে এমনভাবে মুছে ফেলেন যেভাবে সে মায়ের গর্ভ হতে জন্মলাভ করার পর নিঃস্পাপ ছিল।

6.      আরো একটি নামাজ বর্ণিত হয়েছে। উক্ত নামাজটি ৩০ রাকাত। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা কাফেরুন ১ বার এবং সুরা ইখলাস ৩ বার পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পড়তে হবে।

7.      এশার নামাজের পরে নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করা মুস্তাহাব। দোয়াটি নিন্মরূপ:

 اَللّهُمَّ اِنّى اَسْئَلُک بِاَنَّک مَلِک وَاَنَّک عَلى کلِّشَىْءٍ مُقْتَدِرٌ وَاَنَّک ما تَشاَّءُ مِنْ اءَمْرٍ یکونُ اَللّهُمَّ اِنّى اَتَوَجَّهُ اِلَیک بِنَبِیک مُحَمَّدٍ نَبِىِّ الرَّحْمَةِ صَلَّى اللّهُ عَلَیهِ وَآلِهِ یا مُحَمَّدُ یا رَسُولَ اللّهِ اِنّى اَتَوَجَّهُ بِک اِلَى اللّهِ رَبِّک وَرَبِّى لِینْجِحَ بِک طَلِبَتى اَللّهُمَّ بِنَبِیک مُحَمَّدٍ وَالاْئِمَّةِ مِنْ اَهْلِ بَیتِهِ صَلَّى اللّهُ عَلَیهِ وَعَلَیهِمْ اَنْجِحْ طَلِبَتى.

অতঃপর দোয়া করতে হবে।

8.      আলী ইবনে হাদীদ (রহ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: ইমাম কাযিম (আ.) তাহাজ্জুদের নামাজের পরে সিজদারত অবস্থায় নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন:

عَصَیتُک لا صُنْعَ لى وَلا لِغَیرى فى اِحْسانٍ اِلاّ بِک یا کائِنُ قَبْلَ کلِّ شَىْءٍ وَیا مُکوِّنَ کلِّشَىْءٍ اِنَّک عَلى کلِّشَىْءٍ قَدیرٌ اَللّهُمَّ اِنّى اَعُوذُ بِک مِنَ الْعَدیلَةِ عِنْدَ الْمَوْتِ وَمِنْ شَرِّ الْمَرْجِعِ فِى الْقُبُورِ وَمِنَ النَّدامَةِ یوْمَ الاْزِفَةِ فَاَسْئَلُک اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاَنْ تَجْعَلَ عَیشى عیشَةً نَقِیةً وَمَیتَتى میتَةً سَوِیةً وَمُنْقَلَبى مُنْقَلَباً کریماً غَیرَ مُخْزٍ وَلا فاضِحٍ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ الاْئِمَّةِ ینابیعِ الْحِکمَةِ وَاُولِى النِّعْمَةِ وَمَعادِنِ الْعِصْمَةِ وَاْعصِمْنى بِهِمْ مِنْ کلِّ سُوَّءٍ وَلا تَاْخُذْنى عَلى غِرَّةٍ وَلا عَلى غَفْلَةٍ وَلا تَجْعَلْ عَواقِبَ اَعْمالى حَسْرَةً وَارْضَ عَنّى فَاِنَّ مَغْفِرَتَک لِلظّالِمینَ وَاَنَا مِنَ الظّالِمینَ اَللّهُمَّ اغْفِرْ لى ما لا یضُرُّک واَعْطِنى ما لا ینْقُصُک فَاِنَّک الْوَسیعُ رَحْمَتُهُ الْبدَیعُ حِکمَتُهُ وَاَعْطِنِى السَّعَةَ وَالدَّعَةَ وَالاْمْنَ وَالصِّحَّةَ وَالْبُخُوعَ وَالْقُنُوعَ وَالشُّکرَ وَالْمُعافاةَ وَالتَّقْوى وَالصَّبْرَ وَالصِّدْقَ عَلَیک وَعَلى اَوْلِیاَّئِک وَالْیسْرَ وَالشُّکرَ وَاعْمُمْ بِذلِک یا رَبِّ اَهْلى وَ وَلَدى وَاِخْوانى فیک وَمَنْ اَحْبَبْتُ وَاَحَبَّنى وَوَلَدْتُ وَوَلَدَنى مِنَ الْمُسْلِمینَ وَالْمُؤْمِنینَ یا رَبَّ الْعالَمینَ.

ইবনে উশাইম বলেন: ৮ রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার পরে এবং বেতর নামাজ পড়ার পূর্বে বসা অবস্থায় নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করতে হবে:

اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذى لا تَنْفَدُ خَزاَّئِنُهُ وَلا یخافُ آمِنُهُ رَبِّ اِنِ ارْتَکبْتُ الْمَعاصِىَ فَذلِک ثِقَةٌ مِنّى بِکرَمِک اِنَّک تَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبادِک وَتَعْفوُ عَنْ سَیئاتِهِمْ وَتَغْفِرُ الزَّلَلَ وَاِنَّک مُجیبٌ لِداعیک وَمِنْهُ قَریبٌ وَاَنَا تائِبٌ اِلَیک مِنَ الْخَطایا وَراغِبٌ اِلَیک فى تَوْفیرِ حَظّى مِنَ الْعَطایا یا خالِقَ الْبَرایا یا مُنْقِذى مِنْ کلِّ شَدیدَةٍ یا مُجیرى مِنْ کلِّ مَحْذُورٍ وَفِّرْ عَلَىَّ السُّرُورَ وَاکفِنى شَرَّ عَواقِبِ الْاُمُورِ فَاَنْتَ اللّهُ عَلى نَعْماَّئِک وَجَزیلِ عَطاَّئِک مَشْکورٌ وَلِکلِّ خَیرٍ مَذْخُورٌ.
১লা রজব দিনের আমল

1.       রোজা রাখা।

রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, হজরত নুহ (আ.) এ দিন নৌকায় আরোহন করেছিলেন এবং তিনি তাঁর সকল সঙ্গীদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যে ব্যক্তি এ দিনে রোজা রাখবে এক বছর তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে পরিত্রাণ দান করা হবে।

2.      গোসল করা।

3.      ইমাম হুসাইন (আ.) এর যিয়ারত পড়া। ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: যে ব্যক্তি রজব মাসের প্রথম দিনে ইমাম হুসাইন (আ.) এর যিয়ারতের জন্য যাবে, মহান আল্লাহ তায়ালা  তার গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দিবেন।

4.      সালমান (রা.) এর বিশেষ মুস্তাহাব নামাজ পাঠ করা।
আইয়ামে বিয (১৩, ১৪, ১৫) তারিখের আমল

১৩ই রজবের আমল

রজব, শাবান এবং রমজান মাসের ১৩ তারিখকে “আইয়ামে বিয”  বলা হয়ে থাকে। উক্ত তারিখের রাতে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইয়াসীন, মুলক এবং ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপভাবে পড়তে হবে।

 ১৪ই  রজবের আমল

১৩ই রজব দিবাগত রাতে ৪ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইয়াসীন, মুলক এবং ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৫ই রজব রাতের আমল

১৪ই রজব দিবাগত রাতে ৬ রাকাত নামাজ পড়তে হবে। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে সুরা ইয়াসীন, মুলক এবং ইখলাস পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে।
আমল-এ-উম্মে দাউদ

১৫ই রজব দিনে কেউ যদি “আমলে উম্মে দাউদ” সম্পাদন করতে চাই তাহলে তাকে ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখে রোজা রাখতে হবে। যোহরের সময়ের পূর্বে গোসল করতে হবে। যোহর ও আসরের নামাজের পরে কারো সাথে কথা না বলে, কিবলামুখী অবস্থায় বসে সুরা ফাতিহা ১০০ বার, সুরা ইখলাস ১০০ বার, আয়াতুল কুরসী ১০ বার, সুরা আনআম, বণী ইসরাইল, কাহফ, লোকমান, ইয়াসীন, সাফফাত, হামীম সেজদা, শুরা, দোখান, ফাতহ, ওয়াকেয়া, মুলক ও ইনশিকাক থেকে নিয়ে কোরআনের শেষ সুরা পর্যন্ত পাঠ করতে হবে। অতঃপর বলতে হবে:

صَدَقَ اللهُ الْعَظیمُ الَّذى لا اِلهَ اِلاّ هُوَ الْحَىُّ الْقَیومُ ذُو الْجَلالِ وَالاِکرامِ الرَّحْمنُ الرَّحیمُ الْحَلیمُ الْکریمُ الَّذى لَیسَ کمِثْلِهِ شَىْءٌ وَهُوَ السَّمیعُ الْعَلیمُ الْبَصیرُ الْخَبیرُ شَهِدَ اللهُ اَنَّهُ لا اِلهَ اِلاّ هُوَ وَالْمَلائِکةُ وَاُولوُا الْعِلْمِ ق ائِماً بِالْقِسْطِ لا اِل- هَ اِلاّ هُوَ الْعَزیزُ الْحَکیمُ وَبَلَّغَتْ رُسُلُهُ الْکرامُ وَاَنَا عَلى ذلِک مِنَ الشّاهِدینَ اَللّهُمَّ لَک الْحَمْدُ وَلَک الْمَجْدُ وَلَک الْعِزُّ وَلَک الْفَخْرُ وَلَک الْقَهْرُ وَلَک النِّعْمَةُ وَلَک الْعَظَمَةُ وَلَک الرَّحْمَةُ وَلَک الْمَهابَةُ وَلَک السُّلْطانُ وَلَک الْبَهاءُ وَلَک الاِمْتِنانُ وَلَک التَّسْبیحُ وَلَک التَّقْدیسُ وَلَک التَّهْلیلُ وَلَک التَّکبیرُ وَلَک ما یرى وَلَک ما لا یرى وَلَک ما فَوْقَ السَّمواتِ الْعُلى وَ لَک ما تَحْتَ الثَّرى وَلَک الاْرَضُونَ السُّفْلى وَلَک الاْ خِرَةُ وَالاُولىَ وَلَک ما تَرْضى بِهِ مِنَ الثَّناءِ وَالْحَمْدِ وَالشُّکرِ وَ النَّعْماءِ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى جَبْرَئیلَ اَمینِک عَلى وَحْیک وَالْقَوِىِّ عَلى اَمْرِک وَالْمُطاعِ فى سَمواتِک وَمَحالِّ کراماتِک الْمُتَحَمِّلِ لِکلِماتِک النّاصِرِ لِاَنْبِیائِک الْمُدَمِّرِ لاِعْدائِک اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى میکائیلَ مَلَک رَحْمَتِک وَالْمَخْلُوقِ لِرَاءْفَتِک وَالْمُسْتَغْفِرِ الْمُعینِ لاِهْلِ طاعَتِک اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى اِسْرافیلَ حامِلِ عَرْشِک وَصاحِبِ الصُّورِ الْمُنْتَظِرِ لاِمْرِک الْوَجِلِ الْمُشْفِقِ مِنْ خیفَتِک اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى حَمَلَةِ الْعَرْشِ الطّاهِرینَ وَعَلىَ السَّفَرَةِ الْکرامِ الْبَرَرَةِ الطَّیبینَ وَعَلى مَلائِکتِک  الْکرامِ الْکاتِبینَ وَ عَلى مَلائِکةِ الْجِنانِ وَخَزَنَةِ النّیر انِ وَمَلَک الْمَوْتِ وَالاْعْوانِ یا ذَاالْجَلالِ وَالاِکرامِ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى اَبینا آدَمَ بَدیعِ فِطْرَتِک الَّذى کرَّمْتَهُ بِسُجُودِ مَلائِکتِک وَاَبَحْتَهُ جَنَّتَک اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى اُمِّنا حَوّاءَ الْمُطَهَّرَةِ مِنَ الرِّجْسِ الْمُصَفّاتِ مِنَ الدَّنَسِ الْمُفَضَّلَةِ مِنَ الاِنْسِ الْمُتَرَدِّدَةِ بَینَ مَحالِّ الْقُدُسِ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى هابیلَ وَشَیثٍ وَاِدْریسَ وَنُوحٍ وَهُودٍ وَصالِحٍ وَ اِبْراهیمَ وَاِسْماعیلَ وَاِسْحقَ وَیعْقُوبَ وَیوسُفَ وَالاْسْباطِ وَلُوطٍ وَشُعَیبٍ وَاَیوبَ وَمُوسى وَهارُونَ وَیوشَعَ وَمیشا وَالْخِضْرِ وَذِى الْقَرْنَینِ وَیونُسَ وَاِلْیاسَ وَالْیسَعَ وَذِى الْکفْلِ وَطالُوتَ وَداوُدَ وَسُلَیمانَ وَزَکرِیا وَشَعْیا وَیحْیى وَتُورَخَ وَمَتّى وَاِرْمِیا وَحَیقُوقَ وَدانِیالَ وَعُزَیرٍ وَعیسى وَشَمْعُونَ وَجِرْجیسَ وَالْحَوارِیینَ وَالاْتْباعِ وَخالِدٍ وَحَنْظَلَةَ وَلُقْمانَ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَارْحَمْ  مُحَمَّداً وَآلَ مُحَمَّدٍ وَبارِک عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ کما صَلَّیتَ وَرَحِمْتَ وَبارَکتَ عَلى اِبْرهیمَ وَآلِ اِبْرهیمَ اِنَّک حَمیدٌ مَجیدٌ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلَى الاْوْصِیاءِ وَالسُّعَداءِ وَالشُّهَداءِ وَاَئِمَّةِ الْهُدى اَللّهُمَّ صَلِّ عَلَى الاْبْدالِ وَالاْوْتادِ وَالسُّیاحِ وَالْعُبّادِ وَالْمُخْلِصینَ وَالزُّهّادِ وَاَهْلِ الجِدِّ وَالاِجْتِهادِ وَاخْصُصْ مُحَمَّداً وَاَهْلَ بَیتِهِ بِاَفْضَلِ صَلَواتِک وَاَجْزَلِ کراماتِک وَبَلِّغْ رُوحَهُ وَ جَسَدَهُ مِنّى تَحِیةً وَسَلاماً وَزِدْهُ فَضْلاً وَشَرَفاً وَکرَماً حَتّى تُبَلِّغَهُ اَعْلى دَرَجاتِ اَهْلِ الشَّرَفِ مِنَ النَّبِیینَ وَالْمُرْسَلینَ وَالاْفاضِلِ الْمُقَرَّبینَ اَللّهُمَّ وَصَلِّ عَلى مَنْ سَمَّیتُ وَمَنْ لَمْ اُسَمِّ مِنْ مَلائِکتِک وَاَنْبِی ائِک وَرُسُلِک وَاَهْلِ طاعَتِک وَاَوْصِلْ صَلَواتى اِلَیهِمْ وَاِلى اَرْواحِهِمْ وَاجْعَلْهُمْ اِخْوانى فیک وَاَعْوانى عَلى دُعائِک اَللّهُمَّ اِنّى اَسْتَشْفِعُ بِک اِلَیک وَبِکرَمِک اِلى کرَمِک وَبِجُودِک اِلى جُودِک وَبِرَحْمَتِک اِلى رَحْمَتِک وَبِاَهْلِ طاعَتِک اِلَیک وَاَسئَلُک الّلهُمَّ بِکلِّ ما سَئَلَک بِهِ اَحَدٌ مِنْهُمْ مِنْ مَسْئَلَةٍ شَریفَةٍ غَیرِ مَرْدُودَةٍ وَبِما دَعَوْک بِهِ مِنْ دَعْوَةٍ مُجابَةٍ غَیرِ مُخَیبَةٍ یااللهُ یارَحْمنُ یا رَحیمُ یا حَلیمُ یا کریمُ یا عَظیمُ یا جَلیلُ یامُنیلُ یا جَمیلُ یا کفیلُ یا وَکیلُ یا مُقیلُ یا مُجیرُ یا خَبیرُ یا مُنیرُ یا مُبیرُ یا مَنیعُ یا مُدیلُ یا مُحیلُ یا کبیرُ یا قَدیرُ یا بَصیرُ یا شَکورُ یا بَرُّ یا طُهْرُ یا طاهِرُ یا قاهِرُ یا ظاهِرُ یا باطِنُ یا ساتِرُ یا مُحیطُ یا مُقْتَدِرُ یا حَفیظُ یا مُتَجَبِّرُ یا قَریبُ یا وَدُودُ یا حَمیدُ یا مَجیدُ یا مُبْدِئُ یا مُعیدُ یا شَهیدُ یا مُحْسِنُ یا مُجْمِلُ یا مُنْعِمُ یا مُفْضِلُ یا قابِضُ یا باسِطُ یا هادى یا مُرْسِلُ یا مُرْشِدُ یا مُسَدِّدُ یا مُعْطى یا مانِعُ یا دافِعُ یا رافِعُ یا باقى یا واقى یا خَلاّقُ یا وَهّابُ یا تَوّابُ یا فَتّاحُ یا نَفّاحُ یا مُرْتاحُ یا مَنْ بِیدِهِ کلُّ مِفْتاحٍ یا نَفّاعُ یا رَؤُفُ یا عَطُوفُ یا کافى یا شافى یا مُعافى یا مُکافى یا وَفِىُّ یا مُهَیمِنُ یا عَزیزُ یا جَبّارُ یا مُتَکبِّرُ یا سَلامُ یا مُؤْمِنُ یا اَحَدُ یا صَمَدُ یا نُورُ یا مُدَبِّرُ یا فَرْدُ یا وِتْرُ یا قُدُّوسُ یا ناصِرُ یا مُونِسُ یا باعِثُ یا وارِثُ یا عالِمُ یا حاکمُ یا بادى یا مُتَعالى یا مُصَوِّرُ یا مُسَلِّمُ یا مُتَحَبِّبُ یا قائِمُ یا دائِمُ یا عَلیمُ یا حَکیمُ یا جَوادُ یا بارِى ءُ یا بارُّ یا سارُّ یا عَدْلُ یا فاصِلُ یا دَیانُ یا حَنّانُ یا مَنّانُ یا سَمیعُ یا بَدیعُ یا خَفیرُ یا مُعینُ  [مُغَیرُ] یاناشِرُ یاغافِرُ یاقَدیمُ یامُسَهِّلُ یا مُیسِّرُ یا مُمیتُ یا مُحْیى یا نافِعُ یا رازِقُ یا مُقْتَدِرُ یا مُسَبِّبُ یا مُغیثُ یا مُغْنى یا مُقْنى یا خالِقُ یا راصِدُ یا واحِدُ یا حاضِرُ یا جابِرُ یا حافِظُ یا شَدیدُ یا غِیاثُ یا عائِدُ یا قابِضُ یا مَنْ عَلا فَاسْتَعْلى فَکانَ بِالْمَنْظَرِ الاْعْلى یا مَنْ قَرُبَ فَدَنا وَبَعُدَ فَنَاى وَعَلِمَ السِّرَّ وَاَخْفى یا مَنْ اِلَیهِ التَّدْبیرُ وَلَهُ الْمَقادیرُ وَیا مَنِ الْعَسیرُ عَلَیهِ [سَهْلٌ] یسیرٌ یا مَنْ هُوَ عَلى ما یشاءُ قَدیرٌ یا مُرْسِلَ الرِّیاحِ یا فالِقَ الاِصْباحِ یا باعِثَ الاْرْواحِ یا  ذَاالْجُودِ وَالسَّماحِ یا رادَّ ما قَدْ فاتَ یا ناشِرَ الاْمْواتِ یا جامِعَ الشَّتاتِ یا رازِقَ مَنْ یشاءُ [بِغَیرِ حِسابٍ وَیا] فاعِلَ ما یشاءُ کیفَ یشاءُ وَیا ذَاالْجَلالِ وَالاِکرامِ یا حَىُّ یا قَیومُ یا حَیاً حینَ لا حَىَّ یا حَىُّ یا مُحْیىَ الْمَوْتى یا حَىُّ لا اِلهَ اِلاّ اَنْتَ بَدیعُ السَّمواتِ وَالاَرْضِ یا اِلهى وَسَیدى صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَارْحَمْ مُحَمَّداً وَ آلَ مُحَمَّدٍ وَ بارِک عَلى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ کما صَلَّیتَ وَبارَکتَ وَرَحِمْتَ عَلى اِبْرهیمَ وَآلِ اِبْرهیمَ اِنَّک حَمیدٌ مَجیدٌ وَارْحَمْ ذُلىّ وَ فاقَتى وَفَقْرى وَانْفِرادى وَوَحْدَتى وَخُضُوعى بَینَ یدَیک وَاعْتِمادى عَلَیک وَتَضَرُّعى اِلَیک اَدْعُوک دُعاءَ الْخاضِعِ الذَّلیلِ الْخاشِعِالْخائِفِ الْمُشْفِقِ الْبائِسِ الْمَهینِ الْحَقیرِ الْجائِعِ الْفَقیرِ الْعائِذِ الْمُسْتَجیرِ الْمُقِرِّ بِذَنْبِهِ الْمُسْتَغْفِرِ مِنْهُ الْمُسْتَکینِ لِرَبِّهِ دُعاءَ مَنْ اَسْلَمَتْهُ ثِقَتُهُ وَرَفَضَتْهُ اَحِبَتُّهُ وَعَظُمَتْ فَجیعَتُهُ دُعاءَ حَرِقٍ حَزینٍ ضَعیفٍ مَهینٍ بائِسٍ مُسْتَکینٍ بِک مُسْتَجیرٍ اَللّهُمَّ وَاَسئَلُک بِاَنَّک مَلیک وَاَنَّک ما تَشاءُ مِنْ اَمْرٍ یکونُ وَاَنَّک عَلى ما تَشاءُ قَدیرٌ وَاَسئَلُک بِحُرْمَةِ هذَا الشَّهْرِ الْحَرامِ وَالْبَیتِ الْحَرامِ وَالْبَلَدِ الْحَرامِ وَالرُّکنِ وَالْمَقامِ وَالْمَشاعِرِالْعِظامِ وَبِحَقِّ نَبِیک مُحَمَّدٍعَلَیهِ وَ الِهِ السَّلامُ یا مَنْ وَهَبَ لاِدَمَ شَیثاً وَ لاِبْراهیمَ اِسْماعیلَ وَ اِسْحاقَ وَ یا مَنْ رَدَّ یوسُفَ عَلى یعْقوُبَ وَیا مَنْ کشَفَ بَعْدَ الْبَلاءِ ضُرَّ اَیوبَ یا رادَّ مُوسى عَلى اُمِّهِ وَ زائِدَ الْخِضْرِ فى عِلْمِهِ وَیا مَنْ وَهَبَ لِداوُدَ سُلَیمانَ وَلِزَکرِیا یحْیى وَلِمَرْیمَ عیسى یا حافِظَ بِنْتِ شُعَیبٍ وَیا کافِلَ وَلَدِ اُمِّ مُوسى اَسئَلُک اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاَنْ تَغْفِرَ لِى ذُنُوبى کلَّها وَتُجیرَنى مِنْ عَذابِک وَتُوجِبَ لى رِضْوانَک وَاَمانَک وَاِحْسانَک وَغُفْرانَک وَجِنانَک وَاَسئَلُک اَنْ تَفُک عَنّى کلَّ حَلْقَةٍ بَینى وَبَینَ مَنْ یؤْذینى وَتَفْتَحَ لى کلَّ بابٍ وَتُلَینَ لى کلَّ صَعْبٍ وَتُسَهِّلَ لى کلَّ عَسَیرٍ وَتُخْرِسَ عَنّى کلَّ ناطِقٍ بِشَرٍّ وَتَکفَّ عَنّى کلَّ باغٍ وَتَکبِتَ عَنّى کلَّ عَدُوٍّ لى وَحاسِدٍ وَتَمْنَعَ مِنّى کلَّ ظالِمٍ وَتَکفِینى کلَّ عائِقٍ یحُولُ بَینى وَبَینَ حاجَتى وَیحاوِلُ اَنْ یفَرِّقَ بَینى وَبَینَ طاعَتِک وَیثَبِّطَنى عَنْ عِبادَتِک یا مَنْ اَلْجَمَ الْجِنَّ الْمُتَمَرِّدینَ وَقَهَرَ عُتاةَ الشَّیاطینِ وَاَذَلَّ رِقابَ الْمُتَجَبِّرینَ وَرَدَّ کیدَ الْمُتَسَلِّطین عَنِ الْمُسْتَضْعَفینَ اَسئَلُک بِقُدْرَتِک عَلى ما تَشاءُ وَتَسْهیلِک لِما تَشاءُ کیفَ تَشاءُ اَنْ تَجْعَلَ قَضاءَ حاجَتى فیما تَشاءُ.

অতঃপর প্রথমে ডান গাল এবং পরে বাম গালকে মাটির সাথে লাগিয়ে বলতে হবে:

اَللّهُمَّ لَک سَجَدْتُ وَبِک امَنْتُ فَارْحَمْ ذُلّى وَفاقَتى وَاجْتِهادى وَتَضَرُّعى وَمَسْکنَتى وَفَقْرى اِلَیک یا رَبِّ.

ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: উক্ত রাতে ১২ রাকাত, নামাজ দুই রাকাত করে পড়তে হবে। নামাজান্তে সুরা ফাতিহা, ফালাক, নাস, ইখলাস, আয়াতুল কুরসী, প্রত্যেকটি ৪ বার করে পাঠ করতে হবে। অতঃপর ৪ বার বলতে হবে:

سُبْحانَ اللّهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ وَلا اِلهَ اِلا اللّهُ وَاللّهُ اَکبَرُ.

অতঃপর বলতে হবে:

اَللّهُ اَللّهُ رَبّى لا اُشْرِک بِهِ شَیئا وَ ما شاَّءَ اللّهُ لا قُوَّةَ اِلاّ بِاللّهِ الْعَلِىِّ الْعَظیمِ.
১৫ই রজব দিনের আমল

১৫ই রজব উত্তম একটি দিন। উক্ত দিনেও বিশেষ কিছু আমল বর্ণিত হয়েছে যেমন:

1.       গোসল করা।

2.      হজরত সালমান ফার্সি (রা.) এর বিশেষ নামাজ পড়া।

3.      ৪ রাকাত নামাজ পড়া এবং নামাজান্তে দোয়ার জন্য হাত তুলে পাঠ করতে হবে:

اَللّهُمَّ یا مُذِلَّ کلِّ جَبّارٍ وَیا مُعِزَّ الْمُؤْمِنینَ اَنْتَ کهْفى حینَ تُعْیینِى الْمَذاهِبُ وَاَنْتَ بارِئُ خَلْقى رَحْمَةً بى وَقَدْ کنْتَ عَنْ خَلْقى غَنِیاً وَلَوْ لا رَحْمَتُک لَکنْتُ مِنَ الْهالِکینَ وَاَنْتَ مُؤَیدى بِالنَّصْرِ عَلى اَعْداَّئى وَلَوْ لا نَصْرُک اِیاىَ لَکنْتُ مِنَ الْمَفْضُوحینَ یا مُرْسِلَ الرَّحْمَةِ مِنْ مَعادِنِها وَمُنْشِئَ الْبَرَکةِ مِنْ مَواضِعِها یا مَنْ خَصَّ نَفْسَهُ بِالشُّمُوخِ وَالرِّفْعَةِ فَاَوْلِیاَّؤُهُ بِعِزِّهِ یتَعَزَّزُونَ وَیا مَنْ وَضَعَتْ لَهُ الْمُلُوک نیرَ الْمَذَلَّةِ عَلى اَعْناقِهِمْ فَهُمْ مِنْ سَطَواتِهِ خاَّئِفُونَ اَسئَلُک بِکینُونِیتِک الَّتِى اشْتَقَقْتَها مِنْ کبْرِیاَّئِک وَاَسئَلُک بِکبْرِیاَّئِک الَّتِى اشْتَقَقْتَها مِنْ عِزَّتِک وَاَسئَلُک بِعِزَّتِک الَّتِى اسْتَوَیتَ بِها عَلى عَرْشِک فَخَلَقْتَ بِها جَمیعَ خَلْقِک فَهُمْ لَک مُذْعِنُونَ اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَاَهْلِ بَیتِهِ

উক্ত দোয়াটি যদি কোন দুঃখী মানুষ পাঠ করে। তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার সকল দুঃখ দূর্দশাকে দূর করে দিবেন।

4.      ইমাম হুসাইন (আ.)এর যিয়ারত পাঠ করা।

শাইখ মুফিদ (রহ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: কেউ যদি উক্ত তারিখে ইমাম হুসাইন (আ.) এর যিয়ারত করতে চাই, তাহলে ইমাম হুসাইন (আ.) এর মাজারের প্রবেশের পরে এবং কবরঘরে প্রবেশের পূর্বে ৩ বার বলতে হবে: (اَللّهُ اَکبَرُ) অতঃপর কবরের কাছে দাড়িয়ে বলতে হবে:

اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا آلَ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا صِفْوَةَ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا خِیرَةَ اللهِ مِنْ خَلْقِهِ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا سادَةَ السّاداتِ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا لُیوثَ الْغاباتِ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا سُفُنَ النَّجاةِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا اَبا عَبْدِ اللهِ الْحُسَینَ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ عِلْمِ الاَنْبِیاءِ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَکاتُهُ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ آدَمَ صِفْوَةِ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ نُوحٍ نَبِىِّ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ اِبْراهیمَ خَلیلِ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ اِسْماعیلَ ذَبیحِ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ مُوسى کلیمِ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ عیسى رُوحِ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وارِثَ مُحَمَّدٍ حَبیبِ اللهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا بْنَ مُحَمَّدٍ الْمُصْطَفى اَلسَّلامُ عَلَیک یا بْنَ عَلِی الْمُرْتَضى اَلسَّلامُ عَلَیک یا بْنَ فاطِمَةَ الزَّهْرآءِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا بْنَ خَدیجَةَ الْکبْرى اَلسَّلامُ عَلَیک یا شَهیدُ بْنَ الشَّهیدِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا قَتیلُ بْنَ الْقَتیلِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا وَلِىَّ اللهِ وَابْنَ وَلِیهِ اَلسَّلامُ عَلَیک یا حُجَّةَ اللهِ وَابْنَ حُجَّتِهِ عَلى خَلْقِهِ اَشْهَدُ اَنَّک قَدْ اَقَمْتَ الصَّلوةَ وَآتَیتَ الزَّکوةَ وَاَمَرْتَ بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَیتَ عَنْ الْمُنْکرِ وَرُزِئْتَ بِوالِدَیک وَجاهَدْتَ عَدُوَّک وَاَشْهَدُ اَنَّک تَسْمَعُ الْکلامَ وَتَرُدُّ الْجَوابَ وَاَنَّک حَبیبُ اللهِ وَخَلیلُهُ وَنَجیبُهُ وَصَفِیهُ وَابْنُ صَفِیهِ یا مَوْلاىَ وَابْنَ مَوْلاىَ زُرْتُک مُشْتاقاً فَکنْ لى شَفیعاً اِلىَ اللهِ یا سَیدى وَاَسْتَشْفِعُ اِلَى اللهِ بِجَدِّک سَیدِ النَّبِیینَ وَبِابیک سَیدِ الْوَصِیینَ وَبِاُمِّک فاطِمَةَ سَیدَةِ نِساءِ الْعالَمینَ اَلا لَعَنَ اللهُ قاتِلیک وَلَعَنَ اللهُ ظالِمیک وَلَعَنَ اللهُ سالِبیک وَمُبْغِضیک مِنَ الاَوَّلینَ وَالاْ خِرینَ وَصَلَّى اللهُ عَلى سَیدِنا مُحَمِّدٍ وَآلِهِ الطَّیبینَ الطّاهِرینَ

অতঃপর কবরকে চুম্বনের পরে আলী  ইবনে হুসাইন (আ.) এর কবরের অংশের নিকটে দাঁড়িয়ে বলতে হবে:

اَلسَّلامُ عَلَیکَ یَا مَوْلاىَ وَابْنَ مَوْلاىَ لَعَنَ اللَّهُ قَاتِلیکَ وَلَعَنَ اللَّهُ ظالِمیکَ اِنّى اَتَقَرَّبُ اِلَى اللَّهِ بِزِیارَتِکمْ وَبِمَحَبَّتِکمْ وَاَبَرَءُ اِلَى اللَّهِ مِنْ اَعْدآئِکمْ وَالسَّلامُ عَلَیک یا مَوْلاىَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَکاتُهُ  اَلسَّلامُ عَلَى الاَرْواحِ الْمُنیخَةِ بِقَبْرِ اَبى عَبْدِ اللَّهِ الْحُسَینِ عَلَیهِ السَّلامُ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا طَاهِرینَ مِنَ الدَّنَسِ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یا مَهْدِیونَ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ یَا اَبْرارَ اللَّهِ اَلسَّلامُ عَلَیکمْ وَعَلَى الْمَلاَّئِکةِ الْحآفّینَ بِقُبُورِکمْ اَجْمَعینَ جَمَعَنَا اللَّهُ وَاِیاکمْ فى مُسْتَقَرِّ رَحْمَتِهِ وَتَحْتِ عَرْشِهِ اِنَّهُ اَرْحَمُ الرَّاحِمینَ وَاَلسَّلامُ عَلَیکمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَکاتُهُ.
২৭ শে রজব রাতের আমল

২৭শে রজব তারিখের রাতটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত; কেননা উক্ত তারিখে রাসুল (সা.) রেসালাত প্রাপ্ত হন। আর এ কারণেই উক্ত রাতে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে যেমন:

1.       গোসল করা।

2.      ১২ রাকাত নামাজ পড়া। প্রত্যেক দুই রাকাত নামাজের শেষে বসা অবস্থায় সুরা ফাতিহা, ফালাক্ব, নাস, ইখলাস, কাফেরুন, ক্বদর ও আয়াতুল কুরসী প্রত্যেকটি ৭ বার করে পাঠ করতে হবে। অতঃপর নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করতে হবে:

اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذى لَمْ یتَّخِذْ وَلَداً وَلَمْ یکنْ لَهُ شَریک فى الْمُلْک وَلَمْ یکنْ لَهُ وَلِىُّ مِن الذُّلِّ وَکبِّرْهُ تَکبیراً اَللّهُمَّ اِنّى اَسئَلُک بِمَعاقِدِ عِزِّک عَلَى اَرْکانِ عَرْشِک وَمُنْتَهَى الرَّحْمَةِ مِنْ کتابِک وَبِاسْمِک الاْعْظَمِ الاْعْظَمِ الاْعْظَمِ وَذِکرِک الاْعْلىَ الاْعْلىَ الاْعْلى وَبِکلِماتِک التّامّاتِ اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَاَنْ تَفْعَلَ بى ما اَنْتَ اَهْلُهُ.

অতঃপর দোয়া করতে হবে।

3.      হজরত আলী (আ.) এর যিয়ারত পাঠ করা।

4.      শাইখ কাফআমি (রহ.) তার “বালাদুল আমীন” নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন উক্ত রাতে নিন্মোক্ত দোয়াটি পড়া উত্তম:

اَللّهُمَّ اِنّى اَسئَلُک بِالتَّجَلِىِ الاْعْظَمِ فى هذِهِ اللَّیلَةِ مِنَ الشَّهْرِ الْمُعَظَّمِ وَالْمُرْسَلِ الْمُکرَّمِ اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَاَنْ تَغْفِرَ لَنا ما اَنْتَ بِهِ مِنّا اَعْلَمُ یا مَنْ یعْلَمُ وَلا نَعْلَمُ اَللّهُمَّ بارِک لَنا فى لَیلَتِنا هذِهِ الَّتى بِشَرَفِ الرِّسالَةِ فَضَّلْتَها وَبِکرامَتِک اَجْلَلْتَها وَبِالْمَحَلِّ الشَّریفِ اَحْلَلْتَها اَللّهُمَّ فَاِنّا نَسْئَلُک بِالْمَبْعَثِ الشَّریفِ وَالسَّیدِ اللَّطیفِ وَالْعُنْصُرِ الْعَفیفِ اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَ اَنْ تَجْعَلَ اَعْمالَنا فى هذِهِ اللَّیلَةِ وَفى سایرِ اللَّیالى مَقْبُولَةً وَذُنُوبَنا مَغْفُورَةً وَحَسَناتِنا مَشْکورَةً وَسَیئاتِنا مَسْتُورَةً وَقُلوُبَنا بِحُسْنِ الْقَوْلِ مَسْرُورَةً وَاَرْزاقَنا مِنْ لَدُنْک بِالْیسْرِ مَدْرُورَةً اَللّهُمَّ اِنَّک تَرى وَلا تُرى وَاَنْتَ بِالْمَنْظَرِ الاْعْلى وَاِنَّ اِلَیک الرُّجْعى وَالْمُنْتَهى وَاِنَّ لَک الْمَماتَ وَالْمَحْیا وَاِنَّ لَک الاْخِرَةَ وَالاُولى اَللّهُمَّ اِنّا نَعُوذُ بِک اَنْ نَذِلَّ وَنَخْزى وَاَنْ نَاءتِىَ ما عَنْهُ تَنْهى اَللّهُمَّ اِنّا نَسْئَلُک الْجَنَّةَ بِرَحْمَتِک وَنَسْتَعیذُ بِک مِنَ النّارِ فَاَعِذْنا مِنْها بِقُدْرَتِک وَنَسْئَلُک مِنَ الْحُورِ الْعینِ فَارْزُقْنا بِعِزَّتِک وَاجْعَلْ اَوْسَعَ اَرْزاقِنا عِنْدَ کبَرِ سِنِّنا وَاَحْسَنَ اَعْمالِنا عِنْدَ اقْتِرابِ اجالِنا وَاَطِلْ فى طاعَتِک وَما یقَرِّبُ اِلَیک وَیحْظى عِنْدَک وَیزْلِفُ لَدَیک اَعْمارَنا وَاَحْسِنْ فى جَمیعِ اَحْوالِنا وَاُمُورِنا مَعْرِفَتَنا وَلا تَکلْنا اِلى اَحَدٍ مِنْ خَلْقِک فَیمُنَّ عَلَینا وَتَفَضَّلْ عَلَینا بجَمیعِ حَوایجِنا لِلدُّنْیا وَالاْخِرَةِ وَابْدَاْ بِابائِنا وَاَبْنائِنا وَجَمیعِ اِخْوانِنَا الْمُؤْمِنینَ فى جَمیعِ ما سَئَلْناک لاِنْفُسِنا یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ اَللّهُمَّ اِنّا نَسْئَلُک بِاسْمِک الْعَظیمِ وَمُلْکک الْقَدیمِ اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاَنْ تَغْفِرَ لَنَا الذَّنْبَ الْعَظیمَ اِنَّهُ لا یغْفِرُ الْعَظیمَ اِلا الْعَظیمُ اَللّهُمَّ وَهذا رَجَبٌ الْمُکرَّمُ الَّذى اَکرَمْتَنابِهِ اَوَّلُ اَشْهُرِ الْحُرُمِ اَکرَمْتَنا بِهِ مِنْ بَینِ الاُمَمِ فَلَک الْحَمْدُ یا ذَاالْجُودِ وَالْکرَمِ فَاَسْئَلُک بِهِ وَبِاسْمِک الاْعْظَمِ الاْعْظَمِ الاْعْظَمِ الاْجَلِّ الاْکرَمِ الَّذى خَلَقْتَهُ فَاسْتَقَرَّ فى ظِلِّک فَلا یخْرُجُ مِنْک اِلى غَیرِک اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَاَهْلِ بَیتِهِ الطّاهِرینَ وَاَنْ تَجْعَلَنا مِنَ الْعامِلینَ فیهِ بِطاعَتِک وَالاْمِلینَ فیهِ لِشَفاعَتِک اَللّهُمَّ اهْدِنا اِلى سَواءِ السَّبیلِ وَاجْعَلْ مَقیلَنا عِنْدَک خَیرَ مَقیلٍ فى ظِلٍّ ظَلیلٍ وَمُلْک جَزیلٍ فَاِنَّک حَسْبُنا وَنِعْمَ الْوَکیلُ اَللّهُمَّ اقْلِبْنا مُفْلِحینَ مُنْجِحینَ غَیرَ مَغْضُوبٍ عَلَینا وَلا ضالّینَ بِرَحْمَتِک یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ اَللّهُمَّ اِنّى اَسئَلُک بِعَزائِمِ مَغْفِرَتِک وَبِواجِبِ رَحْمَتِک السَّلامَةَ مِنْ کلِّ اِثْمٍ وَالْغَنیمَةَ مِنْ کلِّ بِرٍّ وَالْفَوْزَ بِالْجَنَّةِ وَالنَّجاةَ مِنَ النّارِ اَللّهُمَّ دَعاک الدّاعُونَ وَدَعَوْتُک وَسَئَلَک السّائِلُونَ وَسَئَلْتُک وَطَلَبَ اِلَیک الطّالِبُونَ وَطَلَبْتُ اِلَیک اَللّهُمَّ اَنْتَ الثِّقَةُ وَالرَّجاءُ وَاِلَیک مُنْتَهَى الرَّغْبَةِ فِى الدُّعاءِ اَللّهُمَّ فَصَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَاجْعَلِ الْیقینَ فى قَلْبى وَالنُّورَ فى بَصَرى وَالنَّصیحَةَ فى صَدْرى وَذِکرَک بِاللَّیلِ وَالنَّهارِ عَلى لِسانى وَرِزْقاً واسِعاً غَیرَ مَمْنُونٍ وَلا مَحْظُورٍ فَارْزُقْنى وَبارِک لى فیما رَزَقْتَنى وَاجْعَلْ غِناىَ فى نَفْسى وَرَغْبَتى فیما عِنْدَک بِرَحْمَتِک یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ

অতঃপর সেজদায় গিয়ে ১০০ বার বলতে হবে:

اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذى هَدانا لِمَعْرِفَتِهِ وَخَصَّنا بِوِلایتِهِ وَوَفَّقَنا لِطاعَتِهِ شُکراً شُکراً

অতঃপর সেজদা থেকে উঠে বলতে হবে:

اَللّهُمَّ اِنّى قَصَدْتُک بِحاجَتى وَاعْتَمَدْتُ عَلَیک بِمَسْئَلَتى وَتَوَجَّهْتُ اِلَیک بِاَئِمَّتى وَسادَتى اَللّهُمَّ انْفَعْنا بِحُبِّهِمْ وَاَوْرِدْنا مَوْرِدَهُمْ وَارْزُقْنا مُرافَقَتَهُمْ وَاَدْخِلْنَا الْجَنَّةَ فى زُمْرَتِهِمْ بِرَحْمَتِک یا اَرْحَمَ الرّاحِمینَ.
২৭শে রজব দিনের আমল

২৭শে রজব যখন রাসুল (সা.) রেসালত প্রাপ্ত হন তখন হজরত জিব্রাইল (আ.) রাসুল (সা.)এর সমীপে আসেন এবং তাঁকে কিছু আমলের শিক্ষা দেন।  আমলসমূহ নিন্মরূপ:

1.       গোসল করা।

2.      রোজা রাখা। উক্ত দিনে রোজা রাখলে ৭০ বছরের রোজার সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়।

3.      অধিক দুরুদ শরীফ পাঠ করা।

4.      রাসুল (সা.) ও ইমাম আলী  (আ.) এর যিয়ারত পাঠ করা।

5.      ১২ রাকাত নামাজ পড়া। নামাজান্তে সুরা ফাতিহা, ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস প্রত্যেকটি ৪ বার করে পাঠ করতে হবে। অতঃপর বলতে হবে:

لا اِلهَ اِلا اللّهُ واللّهُ اَکبَرُ وَسُبْحانَ اللّهِ وَالْحَمْدُلِلّهِ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلاّبِاللّهِ الْعَلِىِّ الْعَظیمِ.

৪ বার বলতে হবে:

اللّهُ اللّهُ رَبِّى لا اُشْرِک بِهِ شَیئا.

৪ বার বলতে হবে:

لا اُشْرِک بِرَبِّى اَحَدا.

6.      আবুল কাশেম হুসাইন বিন রূহ (রহ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: উক্ত দিনে ১২ রাকাত নামাজ পড়া উত্তম। প্রত্যেক দুই রাকাত নামাজের শেষে বলতে হবে:

اَلْحَمْدُ لِلهِ  الَّذى لَمْ یتَّخِذْ وَلَداً وَلَمْ یکنْ لَهُ شَریک فى الْمُلْک وَلَمْ یکنْ لَهُ وَلِىُّ مِنَ الذُّلِّ وَکبِّرْهُ تَکبیراً یا عُدَّتى فى مُدَّتى یا صاحِبى فى شِدَّتى یا وَلیى فى نِعْمَتى یا غِیاثى فى رَغْبَتى یا نَجاحى فى حاجَتى یا حافِظى فى غَیبَتى یا کافِىَّ فى وَحْدَتى یا اُنْسى فى وَحْشَتى اَنْتَ السّاتِرُ عَوْرَتى فَلَک الْحَمْدُ واَنْتَ الْمُقیلُ عَثْرَتى فَلَک الْحَمْدُ وَاَنْتَ الْمُنْعِشُ صَرْعَتى فَلَک الْحَمْدُ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَاسْتُرْ عَوْرَتى وَآمِنْ رَوْعَتى وَاَقِلْنى عَثْرَتى وَاصْفَحْ عَنْ جُرْمى وَتَجاوَزْ عَنْ سَیئاتى فى اَصْحابِ الْجَنَّةِ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذى کانُوا یوَعَدُونَ.

১২ রাকাত নামাজ শেষ হয়ে গেলে সুরা ফাতিহা, ইখলাস, ফালাক্ব, নাস, কাফিরুন, ক্বদর ও  আয়াতুল কুরসী প্রত্যেকটি ৭ বার করে পাঠ করতে হবে। অতঃপর ৭ বার বলতে হবে:

لا اِلهَ اِلا اللّهُ واللّهُ اَکبَرُ وَسُبْحانَ اللّهِ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ اِلاّ بِاللّهِ.

অতঃপর ৭ বার বলতে হবে:

اللّهُ اللّهُ رَبَّى لا اُشْرِک بِهِ شَیئا.

অতঃপর দোয়া করতে হবে।

7.      উক্ত দিনে নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করা মুস্তাহাব:

یا مَنْ اَمَرَ بِالْعَفْوِ وَالتَّجاوُزِ وَضَمَّنَ نَفْسَهُ الْعَفْوَ وَالتَّجاوُزَ یا مَنْ عَفى وَتَجاوَزَ اُعْفُ عَنّى وَتَجاوَزْ یا کریمُ اَللّهُمَّ وَقَدْ اَکدَى الطَّلَبُ وَاَعْیتِ الْحیلَةُ وَالْمَذْهَبُ وَدَرَسَتِ الاْمالُ وَانْقَطَعَ الرَّجاءُ اِلاّ مِنْک وَحْدَک لا شَریک لَک اَللّهُمَّ اِنّى اَجِدُ سُبُلَ الْمَطالِبِ اِلَیک مُشْرَعَةً وَمناهِلَ الرَّجاءِ لَدَیک مُتْرَعَةً واَبْوابَ الدُّعاءِ لِمَنْ دَعاک مُفتَّحَةً وَالاِسْتِعانَةَ لِمَنِ اسْتَعانَ بِک مُباحَةً وَاَعْلَمُ اَنَّک لِداعیک بِمَوْضِعِ اِجابَةٍ وَللصّارِخِ اِلَیک بِمَرْصَدِ اِغاثَةٍ وَاَنَّ فِى اللَّهْفِ اِلى جُودِک وَالضِّمانِ بِعِدَتِک عِوَضاً مِنْ مَنْعِ الْباخِلینَ وَمَنْدُوحَةً عَمّا فى اَیدِى الْمُسْتَاْثِرینَ وَاَنَّک لا تَحْتَجِبُ عَنْ خَلْقِک اِلاّ اَنْ تَحْجُبَهُمُ الاْعْمالُ دُونَک وَقَدْ عَلِمْتُ اَنَّ اَفْضَلَ زادِ الرّاحِلِ اِلَیک عَزْمُ اِرادَةٍ یخْتارُک بِها وَقَدْ ناجاک بِعَزْمِ الاِرادَةِ قَلْبى وَاَسْئَلُک بِکلِّ دَعْوَةٍ دَعاک بِها راجٍ بَلَّغْتَهُ اَمَلَهُ اَوْصارِخٌ اِلَیک اَغَثْتَ صَرْخَتَهُ اَوْ مَلْهُوفٌ مَکرُوبٌ فَرَّجْتَ کرْبَهُ اَوْ مُذْنِبٌ خاطِئٌ غَفَرْتَ لَهُ اَوْ مُعافىً اَتْمَمْتَ نِعْمَتَک عَلَیهِ اَوْ فَقیرٌ اَهْدَیتَ غِناک اِلَیهِ وَلِتِلْک الَّدعْوَةِ عَلَیک حَقُّ وَعِنْدَک مَنْزِلَةٌ اِلاّ صَلَّیتَ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَقَضَیتَ حَوائِجى حَوائِجَ الدُّنْیا وَالاْخِرَةِ وَهذا رَجَبٌ الْمُرَجَّبُ الْمُکرَّمُ الَّذى اَکرَمْتَنا بِهِ اَوَّلُ اَشْهُرِ الْحُرُمِ اَکرَمْتَنا بِهِ مِنْ بَینِ الاُمَمِ یا ذَاالْجُودِ وَالْکرَمِ فَنَسْئَلُک بِهِ وَبِاسْمِک الاْعْظَمِ الاْعْظَمِ الاْعْظَمِ الاْجَلِّ الاْکرَمِ الَّذى خَلَقْتَهُ فَاسْتَقَرَّ فى ظِلِّک فَلا یخْرُجُ مِنْک اِلى غَیرِک اَنْ تُصَلِّىَ عَلى مُحَمَّدٍ وَاَهْلِ بَیتِهِ الطّاهِرینَ وَتَجْعَلَنا مِنَ الْعامِلینَ فیهِ بِطاعَتِک وَالاْمِلینَ فیهِ بِشَفاعَتِک اَللّهُمَّ وَاهْدِنا اِلى سَواءِ السِّبیلِ وَاجْعَلْ مَقیلَنا عِنْدَک خَیرَ مَقیلٍ فى ظِلٍّ ظَلیلٍ فَاِنَّک حَسْبُنا وَنِعْمَ الوَکیلُ وَالسَّلامُ عَلى عِبادِهِ المُصْطَفَینَ وَصَلَواتُهُ عَلَیهِمْ اَجْمَعینَ اَللّهُمَّ وَبارِک لَنا فى یوْمِنا هَذَا الَّذى فَضَّلْتَهُ وَبِکرامَتِک جَلَّلْتَهُ وَبِالْمَنْزِلِ  [الْعَظیمِ] الاْعْلى اَنْزَلْتَهُ صَلِّ عَلى مَنْ فیهِ اِلى عِبادِک اَرْسَلْتَهُ وَبِالْمَحَلِّ الْکریمِ اَحْلَلْتَهُ اَللّهُمَّ صَلِّ عَلَیهِ صَلوةً دائِمَةً تَکونُ لَک شُکراً وَلَنا ذُخراً وَاجْعَلْ لَنا مِنْ اَمْرِنا یسراً وَاخْتِمْ لَنا بِالسَّعادَةِ اِلى مُنْتَهى آجالِنا وَقَدْ قَبِلْتَ الْیسیرَ مِنْ اَعْمالِنا وَبَلَّغْتَنا بِرَحْمَتِک اَفْضَلَ آمالِنا اِنَّک عَلى کلِّشَىءٍ قَدیرٌ وَصَلَّى اللهُ عَلى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَسَلَّمَ.
রজব মাসের শেষ তারিখের আমলসমূহ

1.       গোসল করা।

2.      রোজা রাখা।

3.      সালমান ফার্সি (রা.) এর বিশেষ মুস্তাহাব নামাজ পড়া।

হজরত সালমান (রা.)সম্পর্কিত বিশেষ নফল নামাজটি ১০ রাকাত। যা দুই দুই রাকাত করে পড়তে হয়। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৩ বার সুরা ইখলাস, ৩ বার সুরা কাফেরুন। দ্বিতীয় রাকাতটিও অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অতঃপর হাতদ্বয়কে উচু করে বলতে হবে:

لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَ يُمِيتُ وَ هُوَ حَيٌّ لا يَمُوتُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْ‏ءٍ قَدِيرٌ.

অতঃপর বলতে হবে:

اللَّهُمَّ لا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَ لا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَ لا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ.

অতঃপর তার দুই হাতকে নিজের মুখের উপরে বুলাবে।

রজব মাসের ১৫ তারিখে উক্ত নামাজটি অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়া উত্তম। নামাজান্তে বলতে হবে:

إِلَها وَاحِدا أَحَدا فَرْدا صَمَدا لَمْ يَتَّخِذْ صَاحِبَةً وَ لا وَلَدا.

রজব মাসের শেষ তারিখেও উক্ত নামাজটি পড়া উত্তম। নামাজান্তে বলতে হবে:

لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَ يُمِيتُ وَ هُوَ حَيٌّ لا يَمُوتُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْ‏ءٍ قَدِيرٌوَ صَلَّى اللَّهُ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِهِ الطَّاهِرِينَ وَ لا حَوْلَ وَ لا قُوَّةَ إِلا بِاللَّهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ


Source:https://tvshia.com/bn/content/16190

 

 

71
বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য ক্যানসারের চেয়ে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ধূমপান ও দূষণসহ নানা কারণে ফুসফুসে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে। তবে অনেকেই এ বিষয় নিয়ে তেমন মাথা ঘামান না।

তবে জানেন কি, একটানা কাশি কিংবা শ্বাসকষ্টের বিষয়টি সাধারণ ভেবে অবহেলা করবেন না। কারণ সাধারণ এসব সমস্যা হতে পারে ফুসফুস ক্যানসারের আগাম সতর্কতা।

ফুসফুসের ক্যানসার বেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে এর পূর্ব লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানা জরুরি। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কীভাবে বুঝবেন ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ?

যে কোনো রোগ শরীরে বাসা বাঁধলেই তার প্রভাবে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যার কোনোটি সাধারণ আবার কোনোটি বেশ কষ্টকর। বিশেষ করে সাধারণ সমস্যাগুলো আমরা এড়িয়ে যায়। আর এ কারণেই ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ঘটে।

রোগের সঙ্কেত যত তাড়াতাড়ি চেনা যাবে, তত দ্রুত চিকিৎসকের সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। ক্যানসারের মতো রোগের ক্ষেত্রেও সঙ্কেত চেনা কিছুটা কঠিন।

কারণ শরীরের কোন অংশে ক্যানসার বাড়তে শুরু করেছে, তার উপর নির্ভর করে কোন উপসর্গ সবার আগে দেখা দেবে। ঠিক তেমনই ফুসফুসে ক্যানসার বাসা বাঁধলে তার লক্ষণও দেয় দেয় শরীরে।

চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এই ক্যানসারের তেমনই আগাম ৫টি লক্ষণ বা সঙ্কেত। যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

>> সর্দি লাগলে কাশি হওয়া স্বাভাবিক। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাশি হওয়ার লক্ষণ মোটেও ভালো নয়। ফুসফুসে সমস্যার কারণেই কিন্তু এমন কাশি দেখা দেয়। একটানা কাশির সমস্যায় ভুগেলে আর দেরি করবেন না।

>> অ্যাজমার সমস্যায় যারা ভোগেন তারা মাঝেমধ্যেই শ্বাসকষ্টে ভোগেন। তবে কোনো কারণ ছাড়াই যদি আপনি হঠাৎই শ্বাসকষ্টে ভোগেন কিংবা আগের চেয়ে এখন নিঃশ্বাস নিতে কষ্টবোধ করলে, দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। কারণ শ্বাসকষ্ট হতে পারে ফুসফুসে ক্যানসারের আগাম লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম।

>> সর্দি-কাশি কিংবা গলাব্যথার দরুন গলা ভেঙে যেতে পারে। আবার তা কিছুদিনের মধ্যে ঠিকও হয়ে যায়। তবে আপনার গলার স্বর যদি আগের চেয়ে পরিবর্তন ঘটে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কারণ ফুসফুসে ক্যানসার বাড়তে থাকলে তার প্রভাব গিয়ে পড়ে নানা স্তরে। যার কারণে গলার স্বর বদলে যায়। সব সময়ই গলা ভাঙা থাকে।

>> ভারি জিনিসপত্র তুললে কিংবা দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করলে গায়ে ব্যথা হতে পারে। তবে জানেন কি, দীর্ঘদিন ধরে শরীর ব্যথার সমস্যা কিন্তু ফুসফুসে ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রে বিশেষ করে বুক, পিঠ ও কাঁধের আশপাশে বেশি ব্যথা হতে থাকে। তাই এ ধরনের ব্যথা অবহেলা করবেন না।

>> ক্যানসারের অন্যতম উপসর্গ হলো ক্লান্তি। তবে অতিরিক্ত ক্লান্তি যে কোনো কঠিন রোগের ইঙ্গিত দেয়। ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রেও এ সমস্যা বাড়ে।

যেহেতু শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা কমে যাওয়েই শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আর সে কারণে ক্লান্তিও বাড়ে।

সূত্র: ক্যানসার.অর্গ/মায়োক্লিনিক

72
দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় মহামারি করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ববাসীর জন্য। কোভিডের নতুন এই ধরন মোকাবিলায় আগের টিকা নেওয়া থাকলেও কাজ হচ্ছে না তেমন।
যার ফলে নিজেদেরই সতর্ক থাকতে হবে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে। 

বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু উপসর্গের কথা বলেছেন ওমিক্রনের ক্ষেত্রে। যার ১৪টি লক্ষণ জেনে নিয়ে সতর্ক থাকুন। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে আইসোলেশনে থাকুন ও করোনা পরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা নিন।

লক্ষণগুলো হচ্ছে:

•    নাক দিয়ে পানি পড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে
•    মাথাব্যথা থাকছে কিছু ক্ষেত্রে
•    ক্লান্তি ছাড়ছে না রোগীকে
•    হাঁচি হচ্ছে
•    গলা ব্যথাও হচ্ছে
•    খুব কাশি
•    গলা ভেঙে যাচ্ছে
•    কাঁপুনি হচ্ছে
•    জ্বর আসছে অনেকের
•    মাথা ঝিমঝিম করার প্রবণতা
•    মস্তিষ্কে ধোঁয়াশার প্রবণতাও আছে অনেক রোগীর
•    পেশীতে ব্যথা
•    গন্ধের অনুভূতিও হারাচ্ছেন কেউ কেউ
•    বুকে ব্যথাও দেখা যাচ্ছে। 


 বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ‘ওমিক্রন’ করোনা

73

ইসলামের প্রতিটি নির্দেশনা তার অনুসারীদের জন্যে কল্যাণবান্ধব। ফলে, যে কুরআন মানুষের জীবনবিধান, তা পাঠ করলেও সওয়াব হয়। দুনিয়ার আর কোনো বিতাব অথবা বই নেই, যা শুধু পড়লেও পাঠকের সওয়াব হয়।

হাদিসে এসেছ, হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন: মানুষের মধ্যে আল্লাহর কিছু পরিবারভুক্ত লোক আছে।

সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, তারা কারা? তিনি বললেন, যারা কুরআনওয়ালা: এরা আল্লাহর পরিবারভুক্ত ও তার বিশেষ লোক। (তারগিব ওয়া তারহিব: ০২/৩০৩)

জিকির, কুরআন তেলাওয়াত ও এর আয়াতগুলো নিয়ে চিন্তা করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। আল্লাহর ভালোবাসার মাধ্যমকে অবলম্বন করে যারা তার নৈকট্য লাভ করে, তারা তার পরিবারভুক্ত ও বিশেষ লোক। আল্লাহও তাদেরকে ভালোবাসেন এবং তারাও তাকে ভালোবাসে।

তিরমিজিতে হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) এর বর্ণনায় এসেছে- যে আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ পড়বে, সে একটি নেকি পাবে। আর প্রতিটি নেকি দশগুণের সমান। আমি বলি না: ‘আলিফ লাম মিম’ একটি হরফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মিম একটি হরফ। (তিরমিজি, হা. ২৯১০)

কুরআন তেলাওয়াতের যেমন সওয়াব রয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে কুরআনের অর্থ ও মর্মাথ অনুধাবন করাও কুরআন-হাদিসেরই নির্দেশনা। এমন নয় যে, একজন সারাজীবন শুধু কুরআন তেলাওয়াতই করে যাবে বা শুধু কুরআন মুখস্ত করেই বসে থাকবে। বরং কুরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যা বোঝার জন্যেও চেষ্টা করতে হবে।

যেমন ইরশাদ হয়েছে- “আমি আপনার প্রতি এ বরকতপূর্ণ কিতাব নামিয়েছি; তারা যেন এর আয়াতগুলো অনুধাবন করে এবং জ্ঞানীরা উপদেশ গ্রহণ করে।” (সুরা সোয়াদ: ২৯)

আরেক আয়াতে এসেছে, “তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা করে না? নাকি তাদের অন্তকরণ বন্ধ?” (সুরা মোহাম্মাদ: ০৪)

আরেক আয়াতে এসেছে, “উপদেশ গ্রহণ করার জন্যে আমি কোরআনকে সহজ করেছি; অতএব, কেউ কি আছে চিন্তা করবে?” (সুরা কামার: ১৭) তবে, এর অর্থ এই নয় যে, কুরআন না বুঝে পড়লে কোনো সওয়াব হবে না। কেননা, কুরআন তেলাওয়াত একটি স্বতন্ত্র ইবাদত।

আমরা জানি, নফল নামাজে কুরআন তেলাওয়াত করার অনেক ফজিলতের কথা কুরআন-হাদিসে এসেছে। আচ্ছা, এই ফজিলত কারা লাভ করবে? যারা কুরআনের আরবি ভাষা জানে, শুধু তারাই? নাকি যারা অনারবি, তারাও?

নিশ্চয়ই এই ফজিলত আরবি-অনারবি, সবার জন্যেই অবারিত। এখন যদি কুরআন তেলাওয়াতের সওয়াবকে এর অর্থ বুঝে পড়ার সাথে শর্তযুক্ত করা হয়, তাহলে দুনিয়ার অসংখ্য মানুষ যারা আরবি জানে না, তাদের  তেলাওয়াতের কী হবে?

আল্লাহর অনুগ্রহ কি এতটাই সংকীর্ণ যে, তারা সওয়াব পাবে না? তা ছাড়া যেসব আয়াত বা হাদিসে কুরআন পড়ার ফজিলতের কথা এসেছে, সেসব জায়গায় কুরআন বুঝে পড়ার কোনো শর্ত আরোপ করা হয়নি।

বরং, সাধারণভাবে বলা হয়েছে, কুরআন তেলাওয়াত করলে প্রতি হরফে দশ নেকি। এখানে বুঝে না বুঝে পড়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। 

কুরআন তেলাওয়াতের সওয়াব আর কুরআন বুঝে পড়ার গুরুত্ব; দু’টি আলাদা বিষয়। একটিকে আরেকটির সাথে সাংঘর্ষিক মনে করা ঠিক নয়।

শুধু তেলাওয়াত করলে যেমন সওয়াবের কথা বর্ণিত আছে, তেমনি কুরআন বুঝে পড়াও শরিয়তের নির্দেশ। হ্যাঁ, আপনি যদি কুরআন বুঝে পড়েন, তাহলে এর প্রতি আমল করার গুরুত্ব আপনার কাছে বেড়ে যাবে।

এবং এটা খুব দরকারি একটা কাজ। আর এটাই হচ্ছে মূল কথা। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বোঝার তাওফিক দান করুন। আমিন।

74
আমরা যারা ইসলামকে সামান্য হলেও মেনে চলার চেষ্টা করি তাদের অনেকের ইচ্ছা থাকে নতুন নতুন দু’আ, কুরআনের আয়াত ও সূরা মুখস্থ করার। হয়তো আমরা অনেকেই সে চেষ্টা করেছি।
কেউ কেউ সফল হয়েছি এবং হচ্ছি। কেউবা আবার ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়েও দিয়েছি। মুখস্ত করতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনের একটি অন্যতম কারণ হলো এটা মনে করা যে, আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে গিয়েছে। তাহলে এই স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় কী? আসুন এ ব্যাপারে জেনে নেই কিছু কৌশল।

স্মৃতি বলতে মূলত তথ্য ধারণ করে পুনরায় তা ফিরে পাওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। বিজ্ঞানীরা আমাদের স্মৃতিকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করেছেন। ১. স্বল্পস্থায়ী বা স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি ২. দীর্ঘস্থায়ী বা দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি। খুব অল্প সময়ের জন্য আমাদের মস্তিষ্ক যে সব স্মৃতি স্থায়ী থাকে সেগুলো হচ্ছে স্বল্পস্থায়ী স্মৃতি। আর দীর্ঘ সময়ের জন্য আমাদের মস্তিষ্ক যেসব স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে সেগুলো হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি। এই লেখায় আমরা মূলত দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করবো।

১. ইখলাস বা আন্তরিকতা: যে কোনো কাজে সফলতা অর্জনের ভিত্তি হচ্ছে ইখলাস বা আন্তরিকতা। আর ইখলাসের মূল উপাদান হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়ত। নিয়তের বিশুদ্ধতার গুরুত্ব সম্পর্কে উস্তাদ খুররাম মুরাদ বলেন, “উদ্দেশ্য বা নিয়ত হল আমাদের আত্মার মত অথবা বীজের ভিতরে থাকা প্রাণশক্তির মত। বেশীরভাগ বীজই দেখতে মোটামুটি একইরকম, কিন্তু লাগানোর পর বীজগুলো যখন চারাগাছ হয়ে বেড়ে উঠে আর ফল দেওয়া শুরু করে তখন আসল পার্থক্যটা পরিস্কার হয়ে যায় আমাদের কাছে। একইভাবে নিয়ত যত বিশুদ্ধ হবে আমাদের কাজের ফলও তত ভালো হবে। ”

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “তাদের এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম। ” [সূরা আল-বায়্যিনাহঃ ৫]

তাই আমাদের নিয়ত হতে হবে এমন যে, আল্লাহ আমাদের স্মৃতিশক্তি যেনো একমাত্র ইসলামের কল্যাণের জন্যই বাড়িয়ে দেন।

২. দু’আ ও যিকর করা: আমরা সকলেই জানি আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো কাজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের উচিত সর্বদা আল্লাহর কাছে দু’আ করা যাতে তিনি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেন এবং কল্যাণকর জ্ঞান দান করেন। এক্ষেত্রে আমরা নিন্মোক্ত দু’আটি পাঠ করতে পারি, “হে আমার পালনকর্তা, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। ” [সূরা ত্বা-হাঃ ১১৪]

তাছাড়া যিকর বা আল্লাহর স্মরণও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “…যখন ভুলে যান, তখন আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন…” [সূরা আল-কাহ্‌ফঃ ২৪] তাই আমাদের উচিত যিকর, তাসবীহ (সুবহান আল্লাহ), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাকবীর (আল্লাহু আকবার) – এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আল্লাহকে স্মরণ করা।

৩. পাপ থেকে দূরে থাকা: প্রতিনিয়ত পাপ করে যাওয়ার একটি প্রভাব হচ্ছে দুর্বল স্মৃতিশক্তি। পাপের অন্ধকার ও জ্ঞানের আলো কখনো একসাথে থাকতে পারে না। ইমাম আশ-শাফি’ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, “আমি (আমার শাইখ) ওয়াকীকে আমার খারাপ স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম এবং তিনি শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাপকাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি। তিনি বলেন, আল্লাহর জ্ঞান হলো একটি আলো এবং আল্লাহর আলো কোন পাপচারীকে দান করা হয় না। ”

আল-খাতীব আল-জামী'(২/৩৮৭) গ্রন্থে বর্ণনা করেন যে ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া বলেন: “এক ব্যক্তি মালিক ইবনে আনাসকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘হে আবদ-আল্লাহ, আমার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে দিতে পারে এমন কোন কিছু কি আছে? তিনি বলেন, যদি কোন কিছু স্মৃতিকে শক্তিশালী করতে পারে তা হলো পাপ করা ছেড়ে দেয়া। ”

যখন কোনো মানুষ পাপ করে এটা তাকে উদ্বেগ ও দুঃখের দিকে ধাবিত করে। সে তার কৃতকর্মের ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে তার অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যায় এবং জ্ঞান অর্জনের মতো কল্যাণকর ‘আমল থেকে সে দূরে সরে পড়ে। তাই আমাদের উচিত পাপ থেকে দূরে থাকার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
 
৪. বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করা: একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে আমরা দেখবো যে, আমাদের সকলের মুখস্থ করার পদ্ধতি এক নয়। কারো শুয়ে পড়লে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়, কারো আবার হেঁটে হেঁটে পড়লে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়। কেউ নীরবে পড়তে ভালোবাসে, কেউবা আবার আওয়াজ করে পড়ে। কারো ক্ষেত্রে ভোরে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়, কেউবা আবার গভীর রাতে ভালো মুখস্থ করতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ উপযুক্ত সময় ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ঠিক করে তার যথাযথ ব্যবহার করা। আর কুর’আন মুখস্থ করার সময় একটি নির্দিষ্ট মুসহাফ (কুরআনের আরবি কপি) ব্যবহার করা। কারণ বিভিন্ন ধরনের মুসহাফে পৃষ্ঠা ও আয়াতের বিন্যাস বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট মুসহাফ নিয়মিত ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে তার একটি ছাপ পড়ে যায় এবং মুখস্থকৃত অংশটি অন্তরে গভীরভাবে গেঁথে যায়।

৫. মুখস্থকৃত বিষয়ের উপর আমল করা: আমরা সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে, কোনো একটি বিষয় যতো বেশিবার পড়া হয় তা আমাদের মস্তিষ্কে ততো দৃঢ়ভাবে জমা হয়। কিন্তু আমাদের এই ব্যস্ত জীবনে অতো বেশি পড়ার সময় হয়তো অনেকেরই নেই। তবে চাইলেই কিন্তু আমরা এক ঢিলে দু’পাখি মারতে পারি। আমরা আমাদের মুখস্থকৃত সূরা কিংবা সূরার অংশ বিশেষ সুন্নাহ ও নফল সালাতে তিলাওয়াত করতে পারি এবং দু’আসমূহ পাঠ করতে পারি সালাতের পর কিংবা অন্য যেকোনো সময়। এতে একদিকে ‘আমল করা হবে আর অন্যদিকে হবে মুখস্থকৃত বিষয়টির ঝালাইয়ের কাজ।

৬. অন্যকে শেখানো: কোনো কিছু শেখার একটি উত্তম উপায় হলো তা অন্যকে শেখানো। আর এজন্য আমাদেরকে একই বিষয় বারবার ও বিভিন্ন উৎস থেকে পড়তে হয়। এতে করে ঐ বিষয়টি আমাদের স্মৃতিতে স্থায়ীভাবে গেঁথে যায়।

৭. মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খাদ্য গ্রহণ: পরিমিত ও সুষম খাদ্য গ্রহণ আমাদের মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য একান্ত আবশ্যক। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ আমাদের ঘুম বাড়িয়ে দেয়, যা আমাদের অলস করে তোলে। ফলে আমরা জ্ঞানার্জন থেকে বিমুখ হয়ে পড়ি। তাছাড়া কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো আমাদের মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। সম্প্রতি ফ্রান্সের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যয়তুনের তেল চাক্ষুস স্মৃতি (visual memory) ও বাচনিক সাবলীলতা (verbal fluency) বৃদ্ধি করে। আর যেসব খাদ্যে অধিক পরিমাণে Omega-3 ফ্যাট রয়েছে সেসব খাদ্য স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের কার্যকলাপের জন্য খুবই উপকারী। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক ‘আলিম কিছু নির্দিষ্ট খাদ্য গ্রহণের কথা বলেছেন। ইমাম আয-যুহরি বলেন, “তোমাদের মধু পান করা উচিত কারণ এটি স্মৃতির জন্য উপকারী। ”

মধুতে রয়েছে মুক্ত চিনিকোষ যা আমাদের মস্তিষ্কের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া মধু পান করার সাত মিনিটের মধ্যেই রক্তে মিশে গিয়ে কাজ শুরু করে দেয়। ইমাম আয-যুহরি আরো বলেন, “যে ব্যক্তি হাদীস মুখস্থ করতে চায় তার উচিত কিসমিস খাওয়া। ”

৮. পরিমিত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া: আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের মস্তিষ্ক অনেকটা ব্যস্ত অফিসের মতো কাজ করে। এটি তখন সারাদিনের সংগৃহীত তথ্যসমূহ প্রক্রিয়াজাত করে। তাছাড়া ঘুম মস্তিষ্ক কোষের পুণর্গঠন ও ক্লান্তি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে দুপুরে সামান্য ভাতঘুম আমাদের মন-মেজাজ ও অনুভূতিকে চাঙা রাখে। এটি একটি সুন্নাহও বটে। আর অতিরিক্ত ঘুমের কুফল সম্পর্কে তো আগেই বলা হয়েছে। তাই আমাদের উচিত রাত জেগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাওয়াহ বিতরণ না করে নিজের মস্তিষ্ককে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া।

৯. জীবনের অপ্রয়োজনীয় ব্যাপারসমূহ ত্যাগ করা: বর্তমানে আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ও জ্ঞান অর্জনে অনীহার একটি অন্যতম কারণ হলো আমরা নিজেদেরকে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় কাজে জড়িয়ে রাখি। ফলে কোনো কাজই আমরা গভীর মনোযোগের সাথে করতে পারি না। মাঝে মাঝে আমাদের কারো কারো অবস্থা তো এমন হয় যে, সালাতের কিছু অংশ আদায় করার পর মনে করতে পারি না ঠিক কতোটুকু সালাত আমরা আদায় করেছি। আর এমনটি হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে নিজেদেরকে আড্ডাবাজি, গান-বাজনা শোনা, মুভি দেখা, ফেইসবুকিং ইত্যাদি নানা অপ্রয়োজনীয় কাজে জড়িয়ে রাখা। তাই আমাদের উচিত এগুলো থেকে যতোটা সম্ভব দূরে থাকা।

১০. হাল না ছাড়া: যে কোনো কাজে সফলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো হাল না ছাড়া। যে কোনো কিছু মুখস্থ করার ক্ষেত্রে শুরুটা কিছুটা কষ্টসাধ্য হয়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমাদের মস্তিষ্ক সবকিছুর সাথে মানিয়ে নেয়। তাই আমাদের উচিত শুরুতেই ব্যর্থ হয়ে হাল না ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

সূত্র: আলোরপথে (ইন্টারনেট থেকে)

75
বর্তমানে বিশ্বজুড়েই স্তন ক্যানসারের মতোই জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। এই ক্যানসারের সঠিক চিকিৎসা করা না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আর যারা প্রথম থেকেই চিকিৎসা করান, তাদের বেঁচে থাকার সম্ভবনা ৯৫ শতাংশ।

দেশে প্রতিবছর ৮ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ রোগে মৃত্যু হয় ৫ হাজারেরও বেশি নারীর। এ প্রাণহানি কমাতে প্রয়োজন এ রোগের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধের উপায় ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে রাখা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনোকলজিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারহানা খাতুন এ বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য ও পরামর্শ জানিয়েছেন।

জরায়ুমুখ ক্যানসার বলতে কী বোঝায়, কত ধরনের?

নারীদের প্রজননতন্ত্র জরায়ুর দুটি অংশ। একটি হলো বডি, আরেকটি হচ্ছে জরায়ুমুখ, যেটাকে সার্ভিক্স বলা হয়। এই সার্ভিক্সে যখন হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) দিয়ে কিছু পরিবর্তন হয়ে অনেকগুলো ধাপের মাধ্যমে জরায়ুমুখে ঘা হয় সেটাই হচ্ছে জরায়ুর ক্যানসার। জরায়ুর বডির ক্যানসার আর জরায়ুর ক্যানসার দুটোর কারণও একদম ভিন্ন।

জরায়ুমুখের ক্যানসারের সাধারণত যে রিসপেক্টরগুলো আছে, সেগুলো হলো- খুব অল্প বয়সে যাদের বিয়ে হয়, খুব কম বয়সেই বেশ কয়েকটি সন্তান জন্মদান করা, কম বয়সেই প্রথম সন্তান জন্ম দেওয়া ইত্যাদি কারণে জরায়ুমুখের ক্যানসার হয়ে থাকে।

জরায়ু ক্যানসারের লক্ষণ বা উপসর্গ

জরায়ুমুখ ক্যানসারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ৭০ ভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগ অ্যাডভান্সড স্টেজে ধরা পড়ে। প্রথমদিকে এই রোগের কোনো লক্ষণ থাকে না। এরপর যখন লক্ষণ প্রকাশ পায় তখন সেটা অ্যাডভান্সড হয়ে যায়। এ কারণেই জরায়ু ক্যানসারকে ‘সাইলেন্ট কিলার’ বলা হয়ে থাকে।

jagonews24

>> নিন্মাঙ্গের চারপাশে চাপ লাগা কিংবা ঘন ঘন মূত্রত্যাগ করা।

>> গ্যাস, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য। হালকা খাবারের পর পেট ভর্তি লাগা, পেটে অস্বস্তি লাগা, ইত্যাদি পেটের কোন সমস্যা খুব বেশি হলে তা জরায়ু ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

>> পেটে অতিরিক্ত ব্যথা কিংবা পেট ফুলে থাকা, সঙ্গে বমি বমি ভাব কিংবা বার বার বমি হওয়া। এর ফলে খিদে কমে যায়।

>> অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া বা হঠাৎ করে ওজন অনেক কমে যাওয়া।

>> প্রথম দিকে রোগীর সাদাস্রাব হয়। অনেক সময় গন্ধযুক্ত বা রক্তমিশ্রিত সাদাস্রাব হয়।

>> যৌন সম্পর্কে রক্ত যাওয়া জরায়ু ক্যানসারের এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। এজন্য সহবাসে কারও রক্ত গেলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

>> মাসিক অনিয়মিত হওয়া। দুই মাসিকের মাঝে অনিয়মিত রক্তস্রাব অথবা মাসিক এতবেশি অনিয়মিত হচ্ছে যে মাসিকের তারিখ শনাক্ত করা যাচ্ছে না।

>> মেপোজ হওয়ার পরও যদি কোনো নারী রক্তক্ষরণ দেখা যায়, তাহলে সেটিও জরায়ু ক্যানসারের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। সেক্ষেত্রে দ্রুত তাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

>> এ ছাড়া তলপেটে ব্যথা, ব্যাকপেইন বা পা ফুলে যাওয়া ও পায়ে পানি আসা জরায়ু ক্যানসারের অ্যাডভান্সড স্টেজের লক্ষণ।

জরায়ু ক্যানসার হওয়ার কারণ কী?

>> কম বয়সে অর্থাৎ ১৩-১৪ বছর বয়সে কোনো মেয়ের বিয়ে হলে তার যোনিপথের কোষ কলাগুলো পরিণত হওয়ার আগেই সে যৌন সংস্পর্শে আসছে। এটি জরায়ু ক্যানসারের জন্য বড় এক ঝুঁকির কারণ।

>> যারা কম বয়সে বাচ্চা নেয়, যারা অনিরাপদ সঙ্গম চর্চা করে, শারীরিক সম্পর্কের জন্য যাদের একাধিক সঙ্গী থাকে, শারীরিক সম্পর্কের সময় যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে না ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন নারীদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস ক্যানসারে রূপান্তরিত করে।

এসব কারণেই জরায়ু ক্যানসারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উচ্চ ঝুঁকিতে। কারণ, এই ক্যানসারের যতগুলো রিস্ক ফ্যাক্টর আছে তা সবই বাংলাদেশে আছে।

জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধে করণীয়

প্রাথমিকভাবে প্রতিরোধ করতে ১৩-১৫ বছরের কিশোরীদের টিকা দিতে হবে। এই ভ্যাকসিনের ১০০ ভাগ সুফল পাওয়া যায়। তবে তাদেরকে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনতে হবে। এর পাশাপাশি জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

দ্বিতীয় প্রতিরোধ হলো- স্ক্রিনিং সেন্টারে গিয়ে সুস্থ মায়েদের স্ক্রিনিং করতে হবে। স্ক্রিনিংয়ে ৩টি পদ্ধতি আছে। এগুলো হলো- পেপস স্মেয়ার টেস্ট, ভায়া টেস্ট ও এইচপিভি ডিএনএ টেস্ট। এই টেস্টগুলোর মাধ্যমে জরায়ু মুখের ক্যানসারের পূর্ব লক্ষণ শনাক্ত করা যায় এবং চিকিৎসা দেওয়া যায়।

সূত্র: ডক্টরটিভি

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 ... 32