Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - sobhani

Pages: [1]
1
The article seems to be very important to understand the transformation of learning in the 21st century. Indeed, we need to know how to engage our students in research effectively in line with the classical ways of research.

3
https://goo.gl/Q6a7Hk

আমাদের সন্তানরা কি ‘এ প্লাস’ নির্যাতনের শিকার?

জনকন্ঠ

প্রকাশিত: ০২ - জানুয়ারী, ২০১৭ ০৭:০৬ পি. এম.

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘নাবিলা পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৯০ পাওয়ায় বাসায় মিষ্টি নিয়ে এলাম। পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ক’জন সদস্য মিষ্টি দেখে রেগে গেলেন; বললেন “মিষ্টি কেন? ও কি এ+ পেয়েছে? লজ্জায় কারো সাথে তো কথাই বলতে পারছি না… ইত্যাদি… ইত্যাদি”। আমি বল্লাম, "লজ্জা কিসের? তোমরা কি ভুলে গিয়েছ ওর অসুস্থতার কথা। ওর জিপিএ ৪.৯ আমার কাছে গোল্ডেন এ+ এর চেয়েও বেশী…।“ কথাগুলো বলে মেয়েকে নিজ হাতে মিষ্টি খাওয়ালাম এবং তার কপালে চুমু খেলাম। মেয়ের চোখের কোণে পানি দেখে আমিও চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমার মতো অনেক বাবা মা-ই হয়তো মাঝে মাঝে কাঁদেন। সন্তানদের মানুষ করার যুদ্ধে অনেকেই হয়তো আহত বা পরাস্থ।’ জিপিএ ফাইভ বা এ প্লাস বিষয়ে এভাবেই ফেসবুক পোস্টে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন এক অভিভাবক।

রাজধানীর একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফরিদ সোবহানী ফেসবুকে লিখেছেন, এবারের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের সবাইকে অভিনন্দন। আমার মেয়ে নাবিলাও জেএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে। পিএসসি’তে এ+ এবং ক্লাসে সবসময় ফাস্ট থাকায় সবাই আশা করেছিল জেএসসিতে সে গোল্ডেন এ+ পাবে। তবে আমি তা মনে করিনি। কারণ পরীক্ষা চলাকালীন সে মারাত্মক অসুস্থ ছিল। সে পাশ করতে পারবে কিনা তা নিয়েই আমি সন্দিহান ছিলাম। তাছাড়া এ+ পেতেই হবে এমন তো কোন কথা নেই। ভাল রেজাল্ট করলে ভাল, তবে খারাপ করলে তিরস্কার করা উচিৎ নয়। তাদের জীবনের পরবর্তী পরীক্ষাগুলোই বেশী গুরুত্বপূর্ণ।’

অধ্যাপক সোবহানী আরও লিখেছেন, বাবা-মা হিসেবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ভাল কিছু করলে আমরা খুব খুশী হই। তা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তাই বলে সব সময় ভালই করতে হবে এমন আশা করা কি সমীচীন? শতকরা প্রায় দশভাগ সন্তান যারা এবারের জেএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছে তাদের বাবা-মাও তো তাদের সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আমাদের জানা দরকার, আমাদের সন্তানদের ভাল ফলাফল শুধু আমাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করেনা। তা নির্ভর করে তাদের লেখাপড়া ছাড়াও তাদের প্রতি সামগ্রিক যত্নশীলতার উপর, তাদের মন মানসিকতার উপর, তাদের সুস্থতা-অসুস্থতার উপর এবং সর্বোপরি মহামহিম প্রভুর উপর।

শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ‘এ প্লাস নির্যাতনের শিকার’ মন্তব্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক লিখেছেন, আমার দৃষ্টিতে, বর্তমানে সারা দেশে আমাদের কোমলমতি সন্তানদের উপর জিপিএ ৫ তথা এ+ নির্যাতন চলছে। যে করেই হউক এ+ পেতে হবে। যেন জিপিএ ৫’ই সবকিছু। অথচ ভালো জিপিএ না পাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার সংবাদ আমাদের অজানা নয়। আমি মনে করি, আমাদের উচিৎ আমাদের সন্তানরা কতোটুকুন আদব-কায়দা শিখলো, দেশপ্রেমে জাগ্রত হলো, নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলো তথা চরিত্রবান হলো তার উপর বেশী জোর দেয়া। ভালো মানুষ তৈরিই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ, কেবল ভালো জিপিএ নয়। সামগ্রিক গুণে গুণান্বিত হয়ে যারা এ+ পাবে তারাই তো সত্যিকার অর্থে সফল-তাই না?’

অধ্যাপক সোবহানী ৩০ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে ‘আমাদের সন্তানরা কি এ+ নির্যাতনের শিকার?’ শিরোনামে ফেসবুকে এ লেখাটি পোস্ট করেন। ২ জানুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত পোস্টটি ১১০ জন ‘শেয়ার’ করেছেন। পোস্টটিতে ‘লাইক’ পড়েছে দেড় হাজারেরও বেশি, আর মন্তব্য (কমেন্ট)করেছেন ১১৩ জন। মন্তব্যকারীদের প্রায় সবাই অভিভাবক হিসেবে অধ্যাপক সোবহানীর এই প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ ডিসেম্বর পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। পঞ্চম শ্রেণির সমপানী পরীক্ষায় (পিইসি) এবার পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৭৩৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২৭ লাখ ৮৮ হাজার ৪৩২ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৮৪৬ জন।
অষ্টম শ্রেণির জেএসসি ও জেডিসি-তে এবার অংশ নেয় ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯৫৯ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করে ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ জন। পাসের হার ৯৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৮ জন।

Pages: [1]