Recent Posts

Pages: 1 [2] 3 4 ... 10
11
পিতা যদি সব সম্পত্তি এক সন্তানকে লিখে দেন, তাহলে বাকি সন্তানদের করণীয় কী?


বাংলাদেশে একটি সাধারণ পারিবারিক ও সম্পত্তিগত জটিলতা হচ্ছে—পিতা জীবদ্দশায় সব সম্পত্তি একজন সন্তানকে লিখে দিয়ে অন্য সন্তানদের বঞ্চিত করা। অনেকেই জানেন না, এই অবস্থায় বঞ্চিত সন্তানেরা আইনগতভাবে কী করতে পারেন। এই বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট শর্তে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নিজেদের প্রাপ্য অংশ ফিরিয়ে পেতে পারেন।

যদি পিতা ওসিয়তনামা করেন:
মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে একজন ব্যক্তি মৃত্যুর আগে তার সম্পদের সর্বোচ্চ তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) ওসিয়ত করতে পারেন, সেটিও অন্য ওয়ারিশদের সম্মতিতে। যদি পিতা মৃত্যুর আগে পুরো সম্পত্তি একজন সন্তানকে ওসিয়ত করে থাকেন, তাহলে তা অবৈধ। বাকি সন্তানরা আদালতের মাধ্যমে ওসিয়তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিজেদের প্রাপ্য অংশ আদায় করতে পারবেন।

যদি সম্পত্তি সাদা কাগজে বা নন-রেজিস্টার্ড দলিলে লিখে দেন:
সাদা কাগজ, স্ট্যাম্প, কার্টিজ পেপার বা শুধু নোটারি পাবলিক থেকে সত্যায়িত দলিল দিয়ে সম্পত্তি হস্তান্তর করলে, তা আইনগতভাবে বৈধ নয়। এ ধরনের দলিলের ভিত্তিতে কেউ জমির মালিকানা দাবি করতে পারে না। বঞ্চিত ওয়ারিশরা সহজেই এই ধরনের হস্তান্তর বাতিল করতে পারেন।

যদি জরিপে (খতিয়ানে) এক সন্তানের নামে নাম তোলা হয়:
অনেক সময় দেখা যায়, পিতা জীবদ্দশায় জরিপ চলাকালে একমাত্র পছন্দের সন্তানের নামে রেকর্ড বা খতিয়ানে নাম তুলিয়ে দেন। এতে তিনি মালিক হয়ে যান না। এটি একটি অবৈধ কৌশল, এবং অন্য ওয়ারিশরা চাইলে আদালতের মাধ্যমে ‘বাটোয়ারা মামলা’ করে তাদের অংশ ফিরিয়ে পেতে পারেন।

করণীয় কী?
১. ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করুন – সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে।
২. সকল ওয়ারিশের নাম থাকতে হবে, কাউকে বাদ দিলে তা জাল হিসেবে গণ্য হবে।
৩. একজন দক্ষ সিভিল লইয়ারের মাধ্যমে বাটোয়ারা মামলা করুন।
৪. কোর্ট থেকে রায় পাওয়ার পর রেকর্ড সংশোধন ও নামজারি করে মালিকানা অর্জন করুন।

তবে ব্যতিক্রম:
যদি পিতা রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে জীবদ্দশায় সম্পত্তি কাউকে হেবা (দান), সাবকবলা (বিক্রয়) বা দান দলিল করে দিয়ে যান—তাহলে তিনি মালিক হিসেবে বৈধভাবে তা করতে পারেন, এবং তখন অন্য ওয়ারিশদের কিছু করার থাকে না।


পিতা তার জীবদ্দশায় যাকে খুশি তাকে সম্পত্তি দিতে পারেন, তবে সেটা আইনসঙ্গত উপায়ে হতে হবে। যদি কোনো ভুল বা বেআইনি পন্থায় অন্য সন্তানদের বঞ্চিত করা হয়, তাহলে তারা অবশ্যই আইনের সহায়তা নিয়ে নিজেদের প্রাপ্য ফিরে পেতে পারেন।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867940
12
অনলাইনে সহজেই জমির নামজারি পদ্ধতি

মন্তাজ মিয়ার কাছ থেকে ৭ শতাংশ জমি কিনেছেন কামরুল ইসলাম। আর তাই অনলাইনে নামজারি আবেদন করতে ঢাকার ডেমরা থানার গৌড়নগর ৪ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কয়েক দিন আগে এসেছিলেন তিনি।

কামরুল ইসলাম বলেন, “জমির নামজারি আবেদন অনলাইনে করার পদ্ধতি বেশ সহজ। আগে কাজটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ ছিল।”

অনলাইনে সহজেই জমির নামজারি কীভাবে করবেন তা বিস্তারিত জানান ভুমি মন্ত্রণালয়ের স্বয়ংক্রিয় ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (অ্যালামস) মিউটেইশন কনসালটেন্ট মো. পারভেজ হোসেন।

তিনি বলেন, “জমি-সম্পর্কিত সাধারণ কিছু তথ্য জানা থাকলে বিষয়টি তত জটিল মনে হবে না।”

জমিতে মৌজা হিসাবে খতিয়ান নম্বর দেওয়া হয়। মৌজা হচ্ছে একটি জেলার অধীন ছোট আকারের এলাকা।

খতিয়ানের মধ্যে মালিকানার তথ্য (মালিকের নাম, জমির পরিমাণ ইত্যাদি) লেখা থাকে।

গত ১শ’ বছরে সরকার বিভিন্ন সময়ে জরিপের (সিএস, এসএ, আরএস, সিটি বা মহানগর, দিয়ারা ইত্যাদি) মাধ্যমে জমির মালিকানার রেকর্ড তৈরি করেছে।

একটি রেকর্ড থেকে হাতবদলের মাধ্যমে মালিকানার সর্বশেষ অবস্থা জানতে প্রতিটি পর্যায়ের খতিয়ান মিলিয়ে দেখতে হয়।

খতিয়ান পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করলে আবেদনকারীর ঘরে বসে প্রিন্ট করে নিতে পারেন্।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়- ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে সারা দেশে একযোগে শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়।

দেশের সব উপজেলা ভূমি ও সার্কেল অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ই-নামজারি চালু রয়েছে।

অনলাইনে আবেদনের সময় ১ হাজার ১৭০ টাকা অনলাইন পেমেন্ট করলেই ২৮ দিনের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন করা যায়।

নামজারিতে নির্ভুল নাম লেখার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য-ভাণ্ডারের সঙ্গে আন্তসংযোগ করা হয়েছে।

চালু করা হয়েছে কল সেন্টার (১৬১২২)।

নামজারি আসলে কী

নামজারি বা মিউটেইশন হচ্ছে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মালিকানা পরিবর্তন করা।

কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনও বৈধ পন্থায় ভূমি/জমির মালিকানা অর্জন করলে সরকারি রেকর্ড সংশোধন করে তার নামে রেকর্ড আপটুডেট (হালনাগাদ) করাকেই ‘মিউটেইশন’ বলা হয়।

কোনো ব্যক্তির মিউটেইশন সম্পন্ন হলে তাকে একটি খতিয়ান দেওয়া হয় যেখানে তার অর্জিত জমির সংক্ষিপ্ত হিসাব বিবরণী উল্লেখ থাকে।

উক্ত হিসাব বিবরণী অর্থাৎ খতিয়ানে মালিক বা মালিকগণের নাম, মৌজা নাম ও নম্বর (জেএল নম্বর), জমির দাগ নম্বর, দাগে জমির পরিমাণ, মালিকের জমির প্রাপ্য অংশ ও জমির পরিমাণ ইত্যাদি তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে।


নামজারি করলে নাগরিকের যেসব সুবিধা হয়

১. ভূমি সংক্রান্ত যে কোনো সেবা পাওয়ার জন্য সেবাগ্রহীতা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

২. অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর ও অন্যান্য ফি লেনদেন করা যাবে এবং এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে প্রমাণকের নিশ্চয়তা জানতে পারবেন।

৩. জনগণ ভূমি নিবন্ধন, নামজারি, জমাভাগ ও জমা একত্রিকরণ (রেকর্ড সংশোধন), মৌজা ম্যাপ ইত্যাদি নকশা অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস পদ্ধতিতে প্রাপ্ত হবেন।

৪. নামজারি-জমাভাগ ও জমা একত্রিকরণ (মিউটেইশন) প্রক্রিয়া সহজ ও সরল হবে; (ওয়ারিশ মোতাবেক হিস্যা নিশ্চিত হবে।

৫. ভূমির মালিকানা/স্বত্ত্বের ইতিবৃত্ত অনলাইনে পাওয়া যাবে।

৬. ভূমির দাগের ইতিবৃত্ত জানা যাবে।

৭. অধিগ্রহণকৃত জমির তথ্য, ক্ষতিপূরণ অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে প্রাপ্তির নিশ্চয়তা থাকবে এবং তা সহজ ও সরল হবে।

৮. ‘রেন্ট সার্টিফিকেট’ মামলার অনলাইন উপাত্ত ভাণ্ডার হবে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে।

৯. খাসজমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া সফটওয়্যার এর মাধ্যমে হবে।

১০. ‘সায়রাত মহাল ইজারা ব্যবস্থাপনা’ অনলাইনে হবে ফলে স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত হবে।

১১. ভূমির মালিকানা স্বত্ব নিরাপদ হবে।

১২. দুর্ভোগ ও হয়রানি কমবে।

নামজারি যেভাবে করবেন

উত্তরাধিকার, ক্রয়সূত্রে বা অন্য কোনো উপায়ে জমির কোনো মালিক নতুন হলে তার নাম খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারি বলে।

উত্তরাধিকারসূত্রে মালিকানার ক্ষেত্রে আপস বণ্টননামা করে নিজ নামে জমির খতিয়ান করে রাখা প্রয়োজন।

ই-নামজারি করতে হলে https://mutation.land.gov.bd/ ওয়েবসাইটে যেতে হবে।

এরপর ই-নামজারি আইকনে ক্লিক করে, মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করতে হবে।

নিবন্ধন হলে আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে জমির বা ফ্ল্যাটের প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে।

আবেদন ফি বাবদ ৭০ টাকা (কোর্ট ফি ২০ টাকা, নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা) অনলাইনে (একপে, উপায়, রকেট, বিকাশ, নগদ, ব্যাংকের কার্ড) পরিশোধ করতে হবে।

নামজারির হালনাগাদ তথ্য মোবাইল ফোন বার্তার মাধ্যমে জানা যাবে। অনলাইনে শুনানি করতে চাইলে ওয়েবসাইটে অনুরাধ জানাতে পারবেন।

আবেদন অনুমোদিত হলে নাগরিক ডিসিআর ফি ১ হাজার ১শ’ টাকা জমা দিলেই নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে বার্তা আসবে।

এরপর নিজেই থেকে অনলাইন ডিসিআর এবং নামজারি খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন।

অনিয়ম হলে

ই-নামজারি বিষয়ে যে কোনো অনিয়ম হলে কল সেন্টারে (১৬১২২) ফোন করে এবং land.gov.bd ঠিকানার ওয়েবসাইটে অভিযোগ করা যাবে।

Source: https://bangla.bdnews24.com/lifestyle/Jenerakun/632315991d16
13
জমির পুরাতন দলিল হারিয়ে গেছে? জেনে নিন বের করার সহজ উপায়!


জমি সংক্রান্ত যেকোনো বিরোধ মেটাতে পুরোনো দলিলের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কিন্তু নানা কারণে ২০-৩০ বছর বা তারও বেশি পুরোনো গুরুত্বপূর্ণ দলিল অনেক সময় হারিয়ে যায়, নষ্ট হয়ে যায় বা নথিপত্রে খুঁজে পাওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে দলিল পুনরুদ্ধার করা যায়, সেই বিষয়ে আইনি পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আমির হামজা লিমন।

সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় অ্যাডভোকেট হামজা জানান, দলিল হারিয়ে গেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে আবেদন করে রেকর্ড থেকে তা সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

আইনজীবী মো. আমির হামজা লিমন বলেন, দলিল খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রথমে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে আবেদন করতে হবে।

দলিল নম্বর জানা থাকলে: আবেদন করার সময় দলিল নম্বর জানা থাকলে তল্লাশি অনেক সহজ হয়।

দলিল নম্বর জানা না থাকলে: নম্বর জানা না থাকলেও কিছু আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তল্লাশি চালানো সম্ভব। এর জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র, জমির খতিয়ান, ট্যাক্স রসিদ বা সংশ্লিষ্ট এলাকার নামজারির তথ্যাদি উপস্থাপন করতে হয়। পুরোনো রেজিস্ট্রেশন নম্বর মনে না থাকলে দলিলধারীর নাম, জমির ঠিকানা এবং আনুমানিক রেজিস্ট্রেশনের সাল দিয়েও খোঁজ চালানো যায়।

অ্যাডভোকেট হামজা বলেন, "দলিল হারানো মানেই সব শেষ নয়। সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে পুরোনো দলিল পুনরুদ্ধার করা যায়।"

দলিল অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮-এর বিধান অনুসরণ করা হয়:

পরিদর্শন ও নকল: আইনের ৫৭(১) ধারা অনুযায়ী, নির্ধারিত ফি পরিশোধ সাপেক্ষে যেকোনো ব্যক্তি স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত রেজিস্টার বহি (১ নম্বর ও ২ নম্বর) এবং সংশ্লিষ্ট সূচিবহি পরিদর্শন করতে পারেন।

সার্টিফায়েড কপি: ৫৭(৬) এবং ৬২ ধারায় বলা হয়েছে, এই পরিদর্শনের ভিত্তিতেই দলিলের সার্টিফায়েড কপি বা নকল সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে। উইল দলিলের ক্ষেত্রে ৩ ও ৪ নম্বর বহির তথ্য খোঁজা যায়।

দলিল খুঁজে পাওয়ার জন্য সূচিপত্র ও রেজিস্টার বহি তল্লাশির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করতে হয়।

একটি নির্দিষ্ট বছরের জন্য তল্লাশি ফি: ২০ টাকা।

অতিরিক্ত বছরের জন্য প্রতি বছর: ১৫ টাকা।

রেজিস্টার বহির প্রতিটি পৃষ্ঠা পরিদর্শনের ফি: ১০ টাকা।

তবে একটি নির্দিষ্ট নাম বা সম্পত্তি সংক্রান্ত ভুক্তির ক্ষেত্রে ফি’র সর্বোচ্চ সীমা ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আইনজীবী হামজা জানান, যদি আপনার কাছে মূল দলিলের শেষ পাতার উল্টো পৃষ্ঠার দলিল নম্বর, সাল এবং কোন রেজিস্টার বইয়ের কোন পাতায় সংরক্ষিত আছে—এই বিস্তারিত তথ্য থাকে, তবে সরাসরি রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিলের নকল পাওয়া যায় এবং এই ক্ষেত্রে তল্লাশির প্রয়োজন পড়ে না।

অন্যদিকে, যদি কোনো তথ্য না থাকে, তবে তল্লাশি আবশ্যক। এই ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি অফিসে থাকা ‘সূচিবহি’ (ক্রেতা-বিক্রেতার নাম বা মৌজার নাম অনুযায়ী জমির বিবরণ) নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে নিজে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে তল্লাশি করে কাঙ্ক্ষিত দলিলটি চিহ্নিত করা সম্ভব।

এছাড়াও, দলিলের নকল চাওয়ার আবেদনের সঙ্গে নিবন্ধিত মূল দলিল বা তার সত্যায়িত অনুলিপি দাখিল করলে কোনো তল্লাশি ফি দিতে হয় না।

অ্যাডভোকেট আমির হামজা লিমনের মতে, সঠিক নিয়ম মেনে রেজিস্ট্রি অফিসে তল্লাশি করলেই আইন অনুসারে যেকোনো বৈধ ব্যক্তি প্রয়োজনীয় ফি দিয়ে পুরোনো দলিলের নকল তুলতে পারবেন।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867837
14
দলিল-খতিয়ান নয়, এখন মাত্র ২ টি প্রমাণ থাকলেই জমি আপনার



বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এখন থেকে জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য আগের মতো দলিল ও খতিয়ানসহ বহু কাগজপত্র নয় — মাত্র দুটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকলেই মালিকানা নিশ্চিত হবে। নতুন ভূমি আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী, ওয়ারিশ সূত্রে খতিয়ানমূলক মালিকানা বা ক্রয়সূত্রে নিবন্ধিত দলিল—এই দুইয়ের যেকোনো একটির ভিত্তিতেই বৈধ মালিকানা দাবি করা যাবে।

সরকারের নতুন ভূমি আইন ইতোমধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশিত এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় কার্যকর হয়েছে। আইনটির মূল লক্ষ্য হলো ভূমি জালিয়াতি, দখলবাজি ও দলিল জাল করার মতো অপরাধ বন্ধ করে জমির মালিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে নামজারি, রেকর্ড সংশোধন, খতিয়ান যাচাই—সব প্রক্রিয়া এখন অনলাইনে করা যাবে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার করে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে দলিল সম্পাদন করে, বা ভুয়া পরিচয়ে জমি হস্তান্তর করে—তাহলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড, এমনকি উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন প্রতিটি ভূমি মালিকের উচিত—নিজের দলিল ও খতিয়ানের তথ্য সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করা, প্রয়োজনে সংশোধন করা। না হলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতায় জমির মালিকানাই হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

Source:https://www.dailyjanakantha.com/law/news/868280
15
সারাদেশে চলছে দলিল অনলাইন: ঘরে বসেই যেভাবে জানবেন আপনার দলিল অনলাইন হয়েছে কিনা


অবশেষে সারাদেশে একযোগে দলিল অনলাইনকরণ কার্যক্রম শুরু করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর মাধ্যমে ভূমি মালিকরা এখন ঘরে বসেই নিজের দলিলের তথ্য দেখতে, যাচাই করতে ও সংরক্ষণ করতে পারবেন।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৯০৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তৈরি সব দলিল ধাপে ধাপে অনলাইনে আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলার দলিল অনলাইনকরণ সম্পন্ন হয়েছে এবং সেগুলো এখন দেখা যাচ্ছে সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে — land.gov.bd।

যাদের দলিল অনলাইনে উঠবে না

সরকার জানিয়েছে, ১৯৪৭ সালের দেশভাগ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সংঘাতের সময় অনেক রেজিস্ট্রি অফিস ও সরকারি নথিপত্র পুড়ে গেছে বা হারিয়ে গেছে। এসব সময়ের যেসব দলিল সরকারি সংরক্ষণে নেই, সেগুলোর অনলাইনকরণ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

তবে যেসব ভূমি মালিকের কাছে মূল দলিল বা সার্টিফায়েড কপি আছে, তারা জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে যোগাযোগ করে নিজের দলিল অনলাইন করার আবেদন করতে পারবেন। এতে তাদের দলিলও সরকারি রেকর্ডে যুক্ত হবে।

যেভাবে জানবেন আপনার দলিল অনলাইন হয়েছে কিনা

১️⃣ land.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
২️⃣ জেলা, থানা ও মৌজা নির্বাচন করে সার্চ দিন।
৩️⃣ যদি আপনার দলিল অনলাইন হয়ে থাকে, তাহলে বিস্তারিত তথ্য ও স্ক্যান কপি দেখা যাবে।
৪️⃣ না দেখা গেলে বুঝবেন দলিলটি এখনো অনলাইন হয়নি।

দলিল অনলাইন হলে যেসব সুবিধা পাবেন

✅ জমির দখল সুরক্ষা: অনলাইন রেকর্ড থাকলে জোরপূর্বক দখলের ঝুঁকি থাকবে না।
✅ বিদেশ থেকেও লেনদেন: অনলাইনে থেকেই জমি বিক্রি বা রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
✅ সহজ কপি পাওয়া: হারিয়ে গেলে ওয়েবসাইট থেকে দলিল ডাউনলোড করা যাবে।
✅ খাজনা পরিশোধ অনলাইনে: দেশ-বিদেশ যেকোনো জায়গা থেকে ক্যাশলেস পদ্ধতিতে পরিশোধ করা যাবে।

সরকার শিগগিরই ঘোষণা দেবে কোন কোন জেলায় দলিল অনলাইন সম্পূর্ণ হয়েছে এবং কখন সারাদেশে এই সেবা চালু হবে।

দলিল অনলাইনে তুলুন, নিজের সম্পত্তি নিরাপদ রাখুন — আজই land.gov.bd-এ যাচাই করুন আপনার দলিল!

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/868200
16
ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, এই ৭ শ্রেণীর জমির আর নামজারি লাগবে না


ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এখন থেকে সাত শ্রেণীর জমির ক্ষেত্রে আর আলাদাভাবে নামজারি করতে হবে না। অটোমেশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ভূমি রেজিস্ট্রি ও নামজারি দুটি পৃথক মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছিল। সাবরেজিস্ট্রার অফিস (আইন মন্ত্রণালয়) দলিল নিবন্ধন করলেও, নামজারি করতো ভূমি অফিস (ভূমি মন্ত্রণালয়)। এই দুই দফা প্রক্রিয়ার কারণে সাধারণ মানুষকে হয়রানি, সময়ক্ষেপণ ও অতিরিক্ত খরচের মুখোমুখি হতে হতো।

এবার এই জটিলতা দূর করতে আইন মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি ডিজিটাল ইন্টারকানেক্টেড প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এই অটোমেশন পদ্ধতির ফলে দলিল নিবন্ধনের তথ্য সরাসরি ভূমি অফিসের ডাটাবেজে চলে যাবে, ফলে আলাদা করে নামজারির আবেদন করার প্রয়োজন থাকবে না।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে সাবরেজিস্ট্রার অফিসে দলিল নিবন্ধনের পর সর্বোচ্চ আট দিনের মধ্যেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন হবে। ভূমির মালিককে আর ভূমি অফিসে যাওয়া লাগবে না।

যে সাত শ্রেণীর জমির নামজারি লাগবে না:
১. সাবকবলা দলিল
২. হেবা দলিল
৩. হেবাবিল এওয়াজ দলিল
৪. এওয়াজ বদল দলিল
৫. আপস বন্টননামা দলিল
৬. দান দলিল
৭. ওসিয়তনামা দলিল

ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এই অটোমেশন পদ্ধতি ইতিমধ্যেই ১৩৭ বছরের খতিয়ান (১৮৮৮–২০২৫) পর্যন্ত অনলাইন ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অনেক এলাকায় সিএস, এসএ, আরএস ও বিএস খতিয়ানসহ বিভিন্ন জরিপ রেকর্ড এখন অনলাইনে দেখা যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, “সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট এসিল্যান্ড অফিসে তথ্য চলে যাবে। এসিল্যান্ড অফিস যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিকভাবে নামজারি সম্পন্ন করবে।”

এছাড়া নাদাবি দলিল (যে ক্ষেত্রে ভুলবশত অন্যের নামে রেকর্ড হয়েছে) রেজিস্ট্রি করার পর সেটিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভূমি অফিসে আপডেট হয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগ ভূমি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি, হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনবে এবং দেশের ভূমি প্রশাসনে একটি নতুন ডিজিটাল যুগের সূচনা করবে।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/866749
17
দলিল বড়, রেকর্ড বড় নাকি দখল বড় — কে হবে জমির আসল মালিক?


বাংলাদেশে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের সবচেয়ে জটিল প্রশ্নগুলোর একটি হলো— “দলিল বড়, রেকর্ড বড়, নাকি দখল বড়?” অনেক সময় দেখা যায়, একটি জমিতে একজনের দখল, অন্যজনের নামে দলিল, আবার তৃতীয় জনের নামে রেকর্ড থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে— আইন অনুযায়ী জমির প্রকৃত মালিক কে?

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির মালিকানা নির্ধারণে তিনটি বিষয়— রেকর্ড, দলিল ও দখল —এর প্রতিটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোনটি “বড়” হবে তা নির্ভর করে তাদের আইনি ধারাবাহিকতা ও প্রমাণের শক্তির উপর।

রেকর্ড বড়, যদি সেটি সিএস ধারাবাহিকতার অংশ হয়
বাংলাদেশে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত একাধিক ভূমি রেকর্ড তৈরি হয়েছে— সিএস, এসএ, আরএস, বিএস, সিটিজ এবং সর্বশেষ বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে)।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিএস (Cadastral Survey) রেকর্ড হচ্ছে মূল ভিত্তি। যদি কোনো জমির মালিকানার চেইন সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত ঠিকভাবে বজায় থাকে, তবে সেই রেকর্ডই সর্বোচ্চ প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে।

তবে শুধু রেকর্ড থাকলেই হবে না— সেই রেকর্ডের ধারাবাহিকতা প্রমাণ করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আদালতের মাধ্যমে পরবর্তী রেকর্ড সংশোধন করতে হবে।

দলিল বড়, যদি মালিকানার চেইন বৈধ থাকে
দলিল মানে ক্রয় বা দান ইত্যাদির মাধ্যমে মালিকানা অর্জনের দলিল।
তবে দলিল বৈধ প্রমাণ করতে হলে দেখতে হবে—

যিনি জমি বিক্রি করেছেন, তিনি আসল মালিক ছিলেন কিনা,

এবং তার মালিকানা সিএস রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় বৈধভাবে এসেছে কিনা।

যদি বিক্রেতার নিজস্ব মালিকানা না থাকে বা সিএস রেকর্ডের ধারাবাহিকতা ভেঙে যায়, তাহলে সেই দলিল আদালতে টিকবে না।

অন্যদিকে, যদি জমিদারের কাছ থেকে পত্তনি বা বন্দোবস্তকৃত দলিল হয়, এবং সেই ভিত্তিতে বিক্রয় করা হয়ে থাকে— তবে দলিলটি আইনি শক্তি পাবে।

দখল বড়, যদি তা ১২ বছর বৈধভাবে অব্যাহত থাকে
বাংলাদেশের তামাদি আইন (Limitation Act) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো সম্পত্তি নিরবিচ্ছিন্নভাবে ১২ বছর দখল করে থাকেন, এবং মালিক সেই সময়ে কোনো মামলা না করেন, তাহলে দখলকারী “অধিকারপ্রাপ্ত মালিক” হিসেবে গণ্য হতে পারেন।

তবে এর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে—

দখলটি প্রকাশ্য হতে হবে, গোপন নয়,

দখল অবৈধভাবে হলেও ধারাবাহিক হতে হবে,

সম্পত্তির উপর কোনো মামলা চলমান থাকা যাবে না।

অর্থাৎ, শুধু দখলে থাকলেই হবে না, আইনের নির্ধারিত সব শর্ত পূরণ করতে হবে।

তাহলে কে হবে আসল মালিক?
বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির আসল মালিক তিনি—

যিনি সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে সর্বশেষ রেকর্ড পর্যন্ত ধারাবাহিক মালিকানা বজায় রেখেছেন,
যার কাছে বৈধ দলিল রয়েছে, এবং
যিনি আইনি বা বাস্তবভাবে দখল প্রমাণ করতে পারেন।
তবে একটিকে অন্যটির বিকল্প ভাবলে ভুল হবে।
কারণ— দলিল, রেকর্ড ও দখল তিনটিই মিলেই জমির মালিকানা নির্ধারণ করে।

ভূমি আইনজীবীরা পরামর্শ দেন—

জমি কেনার আগে অবশ্যই সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে বর্তমান রেকর্ড পর্যন্ত চেইন অব টাইটেল পরীক্ষা করতে হবে। শুধু দলিল বা দখল দেখে জমি কেনা বিপজ্জনক হতে পারে।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867629
18
নতুন নিয়মে জমির খাজনা পরিশোধ না করলে হারাতে পারেন আপনার জমি


জমির মালিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। এখন থেকে টানা তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ না করলে জমি বাজেয়াপ্ত বা নিলামে ওঠার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ভূমি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করা এখন অত্যাবশ্যক।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রেগান জানিয়েছেন, যারা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করছেন না, তাদের দ্রুত সুদসহ বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। কারণ, আইন অনুযায়ী সরকার তিন বছরের বকেয়া খাজনা অনাদায়ে জমি নিলামে তুলে টাকা আদায় করতে পারে।

খ্যাতনামা আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈন ঘোষ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, "খাজনা হলো জমির জন্য সরকারকে দেওয়া বার্ষিক অর্থ। এটি সময়মতো পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট জমি 'রেকর্ড অব রাইটস'-এ অনিয়মিত হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। দীর্ঘদিন খাজনা পরিশোধ না করা হলে জমি বাতিলের কারণ হতে পারে এবং তা সরকারের দখলে চলে যেতে পারে।"

তিনি আরও বলেন, ২০০২ সালের ভূমি সংস্কার আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে খাজনা পরিশোধ না করলে ভূমি অফিস প্রথমে নোটিশ দেবে। সেই নোটিশ বারবার উপেক্ষা করা হলে মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত জমি বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা তিন বছর খাজনা না দিলে সেই জমি বাজেয়াপ্ত করে 'খাস খতিয়ানে' নিয়ে আসার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া, 'ভূমি মালিকানা ও ব্যবহার আইন, ২০২৩'-এর খসড়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে কারও জমি দখলের প্রমাণ মিললে কঠোর শাস্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

আইনি জটিলতা এড়াতে এবং জমির মালিকানা নিশ্চিত রাখতে খাজনা পরিশোধের রসিদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। তাই প্রত্যেক জমির মালিকের উচিত বছরে অন্তত একবার খাজনা যাচাই করে তা নিয়মিত পরিশোধ করা।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/866621
19
নতুন ভূমি আইনে এখন থেকে ৭ দিনেই জেলা প্রশাসক ও পুলিশের মাধ্যমে হবে বেদখল জমি উদ্ধার


দেশে দীর্ঘদিন ধরে জমি বেদখল ও দখলবাজির অভিযোগে ভোগান্তিতে থাকা প্রকৃত মালিকদের জন্য সুখবর এসেছে। সম্প্রতি সরকার নতুন ভূমি আইন পাস করেছে, যার আওতায় এখন মাত্র সাত দিনের মধ্যেই ডিসি (জেলা প্রশাসক) ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে বেদখল জমি উদ্ধার করা যাবে।

সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দীর্ঘ আদালত প্রক্রিয়া ছাড়াই জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকেই মালিকরা তাদের জমির দখল ফিরে পেতে পারবেন। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় আইনটি কার্যকর করতে প্রশাসন ও আদালত একযোগে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা

আইনের নতুন ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তির জমি জবরদখল হয় এবং তার কাছে মালিকানার বৈধ দলিল থাকে, তাহলে তিনি ডিসি অফিসে একটি আবেদন করলেই কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি তদন্ত করবেন এবং ৭ দিনের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মালিককে জমির দখল ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

এছাড়া, তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলে তিন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। প্রমাণিত হলে অবৈধ দখলদারদের সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

আদালতের দীর্ঘসূত্রিতা এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা

এখন থেকে নির্দিষ্ট শ্রেণির জমি সংক্রান্ত বিরোধে আদালতের পরিবর্তে সরাসরি ডিসি অফিসে আবেদন করা যাবে।
অন্যদিকে, বাটোয়ারা সংক্রান্ত (সম্পত্তি ভাগ-বণ্টন) বিরোধের ক্ষেত্রে লিগ্যাল এইড সেন্টার-এর মাধ্যমে বিনা খরচে সমাধান পাওয়া যাবে। এতে ভাই-বোন বা ওয়ারিশদের মধ্যে জমি ভাগাভাগি সংক্রান্ত সমস্যাও দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।

অসাধুদের বিরুদ্ধে সতর্কতা

তবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে—ভুয়া মালিক বা জাল কাগজপত্রধারীরা যদি এই আইনের অপব্যবহার করে দখল নিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন আইন কার্যকর হলে ভূমি দখল, দীর্ঘস্থায়ী মামলা, এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে জমি দখলের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।

প্রকৃত মালিকেরা এখন থেকে আইনগত প্রক্রিয়া মেনে দ্রুত তাদের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবেন—এটাই এই আইনের মূল লক্ষ্য।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867674
20
জমি কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই জেনে নেওয়া প্রয়োজন


জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া মানে শুধু দলিল সম্পাদন করা নয়। অনেক সময় তড়িঘড়ি করে জমি কিনতে গিয়ে ক্রেতারা প্রতারণা বা মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতায় জড়িয়ে পড়েন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি ক্রয়ের আগে মালিকানা, দলিল ও খতিয়ান বিষয়গুলো ভালোভাবে যাচাই করা আবশ্যক।

মালিকানা যাচাই কতটা গুরুত্বপূর্ণ
জমি ক্রেতাদের প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে যে বিক্রেতার মালিকানা বৈধ। বিক্রয় দলিল, ভূমি উন্নয়ন কর খতিয়ানসহ সমস্ত দলিলের সঙ্গে খতিয়ান ও আগের দলিলগুলোর মিল আছে কি না তা যাচাই করা জরুরি। বিশেষ করে ‘ভায়া দলিল’—যা মূল দলিল থেকে পরবর্তী দলিল তৈরি হয়—তার সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকা অত্যাবশ্যক।

দ্রষ্টব্য বিষয়সমূহ

হস্তান্তরিত দলিলে দাতা ও গ্রহীতার নাম, ঠিকানা, মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর এবং মোট জমির পরিমাণ সঠিকভাবে আছে কি না দেখতে হবে।

মিউটেশন বা নামজারি খতিয়ানে জমির মোট পরিমাণ ও অবশিষ্ট জমির তথ্য মিল আছে কি না তা যাচাই করা প্রয়োজন।

ক্রয়সূত্র, ওয়ারিশমূলে, দান বা হেবামূলে জমি কেনা হলেও সবসময় দলিল যাচাই নিশ্চিত করতে হবে।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দ্বারা বিক্রয় হলে মূল মালিক ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।

সরকারি মালিকানা বা অর্পিত সম্পত্তি তালিকাভুক্ত কি না তা যাচাই করা আবশ্যক।

পাশ্ববর্তী তথ্যও জরুরি
আশপাশের মানুষ ও পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি সংক্রান্ত তথ্য নেওয়া যেতে পারে। তবে তৃতীয় পক্ষ বা মধ্যস্থতাকারীর কথা শতভাগ বিশ্বাস করা ঠিক হবে না।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা দীর্ঘমেয়াদে সারা জীবনের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই জমি কিনতে গেলে ক্রেতার নিজেকেই যাচাই-বাছাই করে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে মামলা-মোকদ্দমা বা মালিকানা বিরোধের ঝুঁকি কমানো যায়।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867659
Pages: 1 [2] 3 4 ... 10