Recent Posts

Pages: 1 [2] 3 4 ... 10
11
সারাদেশে চলছে দলিল অনলাইন: ঘরে বসেই যেভাবে জানবেন আপনার দলিল অনলাইন হয়েছে কিনা


অবশেষে সারাদেশে একযোগে দলিল অনলাইনকরণ কার্যক্রম শুরু করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর মাধ্যমে ভূমি মালিকরা এখন ঘরে বসেই নিজের দলিলের তথ্য দেখতে, যাচাই করতে ও সংরক্ষণ করতে পারবেন।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৯০৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তৈরি সব দলিল ধাপে ধাপে অনলাইনে আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলার দলিল অনলাইনকরণ সম্পন্ন হয়েছে এবং সেগুলো এখন দেখা যাচ্ছে সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে — land.gov.bd।

যাদের দলিল অনলাইনে উঠবে না

সরকার জানিয়েছে, ১৯৪৭ সালের দেশভাগ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সংঘাতের সময় অনেক রেজিস্ট্রি অফিস ও সরকারি নথিপত্র পুড়ে গেছে বা হারিয়ে গেছে। এসব সময়ের যেসব দলিল সরকারি সংরক্ষণে নেই, সেগুলোর অনলাইনকরণ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

তবে যেসব ভূমি মালিকের কাছে মূল দলিল বা সার্টিফায়েড কপি আছে, তারা জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে যোগাযোগ করে নিজের দলিল অনলাইন করার আবেদন করতে পারবেন। এতে তাদের দলিলও সরকারি রেকর্ডে যুক্ত হবে।

যেভাবে জানবেন আপনার দলিল অনলাইন হয়েছে কিনা

১️⃣ land.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
২️⃣ জেলা, থানা ও মৌজা নির্বাচন করে সার্চ দিন।
৩️⃣ যদি আপনার দলিল অনলাইন হয়ে থাকে, তাহলে বিস্তারিত তথ্য ও স্ক্যান কপি দেখা যাবে।
৪️⃣ না দেখা গেলে বুঝবেন দলিলটি এখনো অনলাইন হয়নি।

দলিল অনলাইন হলে যেসব সুবিধা পাবেন

✅ জমির দখল সুরক্ষা: অনলাইন রেকর্ড থাকলে জোরপূর্বক দখলের ঝুঁকি থাকবে না।
✅ বিদেশ থেকেও লেনদেন: অনলাইনে থেকেই জমি বিক্রি বা রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
✅ সহজ কপি পাওয়া: হারিয়ে গেলে ওয়েবসাইট থেকে দলিল ডাউনলোড করা যাবে।
✅ খাজনা পরিশোধ অনলাইনে: দেশ-বিদেশ যেকোনো জায়গা থেকে ক্যাশলেস পদ্ধতিতে পরিশোধ করা যাবে।

সরকার শিগগিরই ঘোষণা দেবে কোন কোন জেলায় দলিল অনলাইন সম্পূর্ণ হয়েছে এবং কখন সারাদেশে এই সেবা চালু হবে।

দলিল অনলাইনে তুলুন, নিজের সম্পত্তি নিরাপদ রাখুন — আজই land.gov.bd-এ যাচাই করুন আপনার দলিল!

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/868200
12
ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, এই ৭ শ্রেণীর জমির আর নামজারি লাগবে না


ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এখন থেকে সাত শ্রেণীর জমির ক্ষেত্রে আর আলাদাভাবে নামজারি করতে হবে না। অটোমেশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ভূমি রেজিস্ট্রি ও নামজারি দুটি পৃথক মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছিল। সাবরেজিস্ট্রার অফিস (আইন মন্ত্রণালয়) দলিল নিবন্ধন করলেও, নামজারি করতো ভূমি অফিস (ভূমি মন্ত্রণালয়)। এই দুই দফা প্রক্রিয়ার কারণে সাধারণ মানুষকে হয়রানি, সময়ক্ষেপণ ও অতিরিক্ত খরচের মুখোমুখি হতে হতো।

এবার এই জটিলতা দূর করতে আইন মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি ডিজিটাল ইন্টারকানেক্টেড প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এই অটোমেশন পদ্ধতির ফলে দলিল নিবন্ধনের তথ্য সরাসরি ভূমি অফিসের ডাটাবেজে চলে যাবে, ফলে আলাদা করে নামজারির আবেদন করার প্রয়োজন থাকবে না।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে সাবরেজিস্ট্রার অফিসে দলিল নিবন্ধনের পর সর্বোচ্চ আট দিনের মধ্যেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন হবে। ভূমির মালিককে আর ভূমি অফিসে যাওয়া লাগবে না।

যে সাত শ্রেণীর জমির নামজারি লাগবে না:
১. সাবকবলা দলিল
২. হেবা দলিল
৩. হেবাবিল এওয়াজ দলিল
৪. এওয়াজ বদল দলিল
৫. আপস বন্টননামা দলিল
৬. দান দলিল
৭. ওসিয়তনামা দলিল

ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এই অটোমেশন পদ্ধতি ইতিমধ্যেই ১৩৭ বছরের খতিয়ান (১৮৮৮–২০২৫) পর্যন্ত অনলাইন ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অনেক এলাকায় সিএস, এসএ, আরএস ও বিএস খতিয়ানসহ বিভিন্ন জরিপ রেকর্ড এখন অনলাইনে দেখা যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, “সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট এসিল্যান্ড অফিসে তথ্য চলে যাবে। এসিল্যান্ড অফিস যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিকভাবে নামজারি সম্পন্ন করবে।”

এছাড়া নাদাবি দলিল (যে ক্ষেত্রে ভুলবশত অন্যের নামে রেকর্ড হয়েছে) রেজিস্ট্রি করার পর সেটিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভূমি অফিসে আপডেট হয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগ ভূমি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি, হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনবে এবং দেশের ভূমি প্রশাসনে একটি নতুন ডিজিটাল যুগের সূচনা করবে।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/866749
13
দলিল বড়, রেকর্ড বড় নাকি দখল বড় — কে হবে জমির আসল মালিক?


বাংলাদেশে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের সবচেয়ে জটিল প্রশ্নগুলোর একটি হলো— “দলিল বড়, রেকর্ড বড়, নাকি দখল বড়?” অনেক সময় দেখা যায়, একটি জমিতে একজনের দখল, অন্যজনের নামে দলিল, আবার তৃতীয় জনের নামে রেকর্ড থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে— আইন অনুযায়ী জমির প্রকৃত মালিক কে?

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির মালিকানা নির্ধারণে তিনটি বিষয়— রেকর্ড, দলিল ও দখল —এর প্রতিটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোনটি “বড়” হবে তা নির্ভর করে তাদের আইনি ধারাবাহিকতা ও প্রমাণের শক্তির উপর।

রেকর্ড বড়, যদি সেটি সিএস ধারাবাহিকতার অংশ হয়
বাংলাদেশে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত একাধিক ভূমি রেকর্ড তৈরি হয়েছে— সিএস, এসএ, আরএস, বিএস, সিটিজ এবং সর্বশেষ বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে)।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিএস (Cadastral Survey) রেকর্ড হচ্ছে মূল ভিত্তি। যদি কোনো জমির মালিকানার চেইন সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত ঠিকভাবে বজায় থাকে, তবে সেই রেকর্ডই সর্বোচ্চ প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে।

তবে শুধু রেকর্ড থাকলেই হবে না— সেই রেকর্ডের ধারাবাহিকতা প্রমাণ করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আদালতের মাধ্যমে পরবর্তী রেকর্ড সংশোধন করতে হবে।

দলিল বড়, যদি মালিকানার চেইন বৈধ থাকে
দলিল মানে ক্রয় বা দান ইত্যাদির মাধ্যমে মালিকানা অর্জনের দলিল।
তবে দলিল বৈধ প্রমাণ করতে হলে দেখতে হবে—

যিনি জমি বিক্রি করেছেন, তিনি আসল মালিক ছিলেন কিনা,

এবং তার মালিকানা সিএস রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় বৈধভাবে এসেছে কিনা।

যদি বিক্রেতার নিজস্ব মালিকানা না থাকে বা সিএস রেকর্ডের ধারাবাহিকতা ভেঙে যায়, তাহলে সেই দলিল আদালতে টিকবে না।

অন্যদিকে, যদি জমিদারের কাছ থেকে পত্তনি বা বন্দোবস্তকৃত দলিল হয়, এবং সেই ভিত্তিতে বিক্রয় করা হয়ে থাকে— তবে দলিলটি আইনি শক্তি পাবে।

দখল বড়, যদি তা ১২ বছর বৈধভাবে অব্যাহত থাকে
বাংলাদেশের তামাদি আইন (Limitation Act) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো সম্পত্তি নিরবিচ্ছিন্নভাবে ১২ বছর দখল করে থাকেন, এবং মালিক সেই সময়ে কোনো মামলা না করেন, তাহলে দখলকারী “অধিকারপ্রাপ্ত মালিক” হিসেবে গণ্য হতে পারেন।

তবে এর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে—

দখলটি প্রকাশ্য হতে হবে, গোপন নয়,

দখল অবৈধভাবে হলেও ধারাবাহিক হতে হবে,

সম্পত্তির উপর কোনো মামলা চলমান থাকা যাবে না।

অর্থাৎ, শুধু দখলে থাকলেই হবে না, আইনের নির্ধারিত সব শর্ত পূরণ করতে হবে।

তাহলে কে হবে আসল মালিক?
বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির আসল মালিক তিনি—

যিনি সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে সর্বশেষ রেকর্ড পর্যন্ত ধারাবাহিক মালিকানা বজায় রেখেছেন,
যার কাছে বৈধ দলিল রয়েছে, এবং
যিনি আইনি বা বাস্তবভাবে দখল প্রমাণ করতে পারেন।
তবে একটিকে অন্যটির বিকল্প ভাবলে ভুল হবে।
কারণ— দলিল, রেকর্ড ও দখল তিনটিই মিলেই জমির মালিকানা নির্ধারণ করে।

ভূমি আইনজীবীরা পরামর্শ দেন—

জমি কেনার আগে অবশ্যই সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে বর্তমান রেকর্ড পর্যন্ত চেইন অব টাইটেল পরীক্ষা করতে হবে। শুধু দলিল বা দখল দেখে জমি কেনা বিপজ্জনক হতে পারে।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867629
14
নতুন নিয়মে জমির খাজনা পরিশোধ না করলে হারাতে পারেন আপনার জমি


জমির মালিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। এখন থেকে টানা তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ না করলে জমি বাজেয়াপ্ত বা নিলামে ওঠার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ভূমি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করা এখন অত্যাবশ্যক।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রেগান জানিয়েছেন, যারা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করছেন না, তাদের দ্রুত সুদসহ বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। কারণ, আইন অনুযায়ী সরকার তিন বছরের বকেয়া খাজনা অনাদায়ে জমি নিলামে তুলে টাকা আদায় করতে পারে।

খ্যাতনামা আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈন ঘোষ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, "খাজনা হলো জমির জন্য সরকারকে দেওয়া বার্ষিক অর্থ। এটি সময়মতো পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট জমি 'রেকর্ড অব রাইটস'-এ অনিয়মিত হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। দীর্ঘদিন খাজনা পরিশোধ না করা হলে জমি বাতিলের কারণ হতে পারে এবং তা সরকারের দখলে চলে যেতে পারে।"

তিনি আরও বলেন, ২০০২ সালের ভূমি সংস্কার আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে খাজনা পরিশোধ না করলে ভূমি অফিস প্রথমে নোটিশ দেবে। সেই নোটিশ বারবার উপেক্ষা করা হলে মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত জমি বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা তিন বছর খাজনা না দিলে সেই জমি বাজেয়াপ্ত করে 'খাস খতিয়ানে' নিয়ে আসার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া, 'ভূমি মালিকানা ও ব্যবহার আইন, ২০২৩'-এর খসড়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে কারও জমি দখলের প্রমাণ মিললে কঠোর শাস্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

আইনি জটিলতা এড়াতে এবং জমির মালিকানা নিশ্চিত রাখতে খাজনা পরিশোধের রসিদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। তাই প্রত্যেক জমির মালিকের উচিত বছরে অন্তত একবার খাজনা যাচাই করে তা নিয়মিত পরিশোধ করা।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/866621
15
নতুন ভূমি আইনে এখন থেকে ৭ দিনেই জেলা প্রশাসক ও পুলিশের মাধ্যমে হবে বেদখল জমি উদ্ধার


দেশে দীর্ঘদিন ধরে জমি বেদখল ও দখলবাজির অভিযোগে ভোগান্তিতে থাকা প্রকৃত মালিকদের জন্য সুখবর এসেছে। সম্প্রতি সরকার নতুন ভূমি আইন পাস করেছে, যার আওতায় এখন মাত্র সাত দিনের মধ্যেই ডিসি (জেলা প্রশাসক) ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে বেদখল জমি উদ্ধার করা যাবে।

সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দীর্ঘ আদালত প্রক্রিয়া ছাড়াই জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকেই মালিকরা তাদের জমির দখল ফিরে পেতে পারবেন। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় আইনটি কার্যকর করতে প্রশাসন ও আদালত একযোগে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা

আইনের নতুন ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তির জমি জবরদখল হয় এবং তার কাছে মালিকানার বৈধ দলিল থাকে, তাহলে তিনি ডিসি অফিসে একটি আবেদন করলেই কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি তদন্ত করবেন এবং ৭ দিনের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মালিককে জমির দখল ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

এছাড়া, তদন্ত প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলে তিন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। প্রমাণিত হলে অবৈধ দখলদারদের সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

আদালতের দীর্ঘসূত্রিতা এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা

এখন থেকে নির্দিষ্ট শ্রেণির জমি সংক্রান্ত বিরোধে আদালতের পরিবর্তে সরাসরি ডিসি অফিসে আবেদন করা যাবে।
অন্যদিকে, বাটোয়ারা সংক্রান্ত (সম্পত্তি ভাগ-বণ্টন) বিরোধের ক্ষেত্রে লিগ্যাল এইড সেন্টার-এর মাধ্যমে বিনা খরচে সমাধান পাওয়া যাবে। এতে ভাই-বোন বা ওয়ারিশদের মধ্যে জমি ভাগাভাগি সংক্রান্ত সমস্যাও দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।

অসাধুদের বিরুদ্ধে সতর্কতা

তবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে—ভুয়া মালিক বা জাল কাগজপত্রধারীরা যদি এই আইনের অপব্যবহার করে দখল নিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন আইন কার্যকর হলে ভূমি দখল, দীর্ঘস্থায়ী মামলা, এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে জমি দখলের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।

প্রকৃত মালিকেরা এখন থেকে আইনগত প্রক্রিয়া মেনে দ্রুত তাদের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবেন—এটাই এই আইনের মূল লক্ষ্য।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867674
16
জমি কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই জেনে নেওয়া প্রয়োজন


জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া মানে শুধু দলিল সম্পাদন করা নয়। অনেক সময় তড়িঘড়ি করে জমি কিনতে গিয়ে ক্রেতারা প্রতারণা বা মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতায় জড়িয়ে পড়েন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি ক্রয়ের আগে মালিকানা, দলিল ও খতিয়ান বিষয়গুলো ভালোভাবে যাচাই করা আবশ্যক।

মালিকানা যাচাই কতটা গুরুত্বপূর্ণ
জমি ক্রেতাদের প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে যে বিক্রেতার মালিকানা বৈধ। বিক্রয় দলিল, ভূমি উন্নয়ন কর খতিয়ানসহ সমস্ত দলিলের সঙ্গে খতিয়ান ও আগের দলিলগুলোর মিল আছে কি না তা যাচাই করা জরুরি। বিশেষ করে ‘ভায়া দলিল’—যা মূল দলিল থেকে পরবর্তী দলিল তৈরি হয়—তার সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকা অত্যাবশ্যক।

দ্রষ্টব্য বিষয়সমূহ

হস্তান্তরিত দলিলে দাতা ও গ্রহীতার নাম, ঠিকানা, মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর এবং মোট জমির পরিমাণ সঠিকভাবে আছে কি না দেখতে হবে।

মিউটেশন বা নামজারি খতিয়ানে জমির মোট পরিমাণ ও অবশিষ্ট জমির তথ্য মিল আছে কি না তা যাচাই করা প্রয়োজন।

ক্রয়সূত্র, ওয়ারিশমূলে, দান বা হেবামূলে জমি কেনা হলেও সবসময় দলিল যাচাই নিশ্চিত করতে হবে।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দ্বারা বিক্রয় হলে মূল মালিক ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।

সরকারি মালিকানা বা অর্পিত সম্পত্তি তালিকাভুক্ত কি না তা যাচাই করা আবশ্যক।

পাশ্ববর্তী তথ্যও জরুরি
আশপাশের মানুষ ও পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি সংক্রান্ত তথ্য নেওয়া যেতে পারে। তবে তৃতীয় পক্ষ বা মধ্যস্থতাকারীর কথা শতভাগ বিশ্বাস করা ঠিক হবে না।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা দীর্ঘমেয়াদে সারা জীবনের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই জমি কিনতে গেলে ক্রেতার নিজেকেই যাচাই-বাছাই করে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে মামলা-মোকদ্দমা বা মালিকানা বিরোধের ঝুঁকি কমানো যায়।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867659
17
দলিল আছে কিন্তু দখল নেই, রেকর্ডও নেই: জমি কি আদৌ পাওয়া যাবে?



বাংলাদেশে এমন বহু জমির মালিক ও উত্তরাধিকারী আছেন, যাদের হাতে জমির বৈধ দলিল থাকা সত্ত্বেও রেকর্ডে নাম নেই এবং বাস্তবের দখলও তাদের হাতে নেই। বিশেষত যারা দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন বা জমির হালনাগাদ খোঁজ রাখেননি, তাদের জন্য এই ধরনের জটিলতায় পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। এমন পরিস্থিতিতে জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং দখল পুনরুদ্ধার করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অপরিহার্য।

আইন অনুযায়ী, শুধু দলিল থাকলেই জমি পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় না, বরং সঠিক আইনি পথে চললে মালিকানা ও দখল দুটোই ফিরে পাওয়া সম্ভব।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের জমি ফিরে পেতে দুটি প্রধান ধাপ অতিক্রম করতে হয়: ১. আদালতের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণ করা। ২. দখল পুনরুদ্ধার করা।

যদি দলিল থাকা সত্ত্বেও জমির নামজারি না হয় এবং সরকারি রেকর্ডে অন্য কারও নাম থেকে যায়, তবে আদালতের মাধ্যমে আপনার প্রকৃত মালিকানা প্রমাণ করতে হবে।

জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য আবেদনের সময়সীমার ওপর ভিত্তি করে দুটি ভিন্ন আদালতে মামলা করতে হয়:

ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল (LST): যদি সরকারি পরচা বা খতিয়ান প্রকাশের দুই বছরের মধ্যে রেকর্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়, তবে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল-এ মামলা করতে হবে।

সহকারী জজ আদালত: যদি দুই বছর সময়সীমা পার হয়ে যায় অথবা আপনি রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি আগে না জেনে থাকেন, সেক্ষেত্রে সহকারী জজ আদালতে 'ঘোষণামূলক মামলা' (Declaratory Suit) দায়ের করতে হবে। এই মামলার উদ্দেশ্য হলো আদালতের মাধ্যমে নিজেকে জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

একবার আদালতের রায়ের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণিত হলে এবং নামজারি সম্পন্ন হলে, পরবর্তী ধাপ হলো দখল পুনরুদ্ধার।

এই কাজের জন্য অনুসরণ করতে হবে সদ্য প্রণীত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এর ধারা ৮। এই আইনের আওতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গঠিত ভূমি প্রতিকার আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।

দখল পুনরুদ্ধারের জন্য নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে:

১. আদালতের আদেশ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফরমে ভূমি প্রতিকার আদালতে আবেদন করতে হবে।

২. ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনকারীর মালিকানা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত পরিচালনা করবেন।

৩. যাচাই শেষে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।

আইনজীবীরা বলছেন, যথাযথ কাগজপত্র, আদালতের সঠিক নির্দেশনা এবং সময়মতো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দলিলধারী মালিক তার জমি ও দখল উভয়ই ফিরে পেতে সক্ষম হবেন।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867761
18
দলিল আছে কিন্তু দখল নেই, রেকর্ডও নেই: জমি কি আদৌ পাওয়া যাবে?


বাংলাদেশে এমন বহু জমির মালিক ও উত্তরাধিকারী আছেন, যাদের হাতে জমির বৈধ দলিল থাকা সত্ত্বেও রেকর্ডে নাম নেই এবং বাস্তবের দখলও তাদের হাতে নেই। বিশেষত যারা দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন বা জমির হালনাগাদ খোঁজ রাখেননি, তাদের জন্য এই ধরনের জটিলতায় পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। এমন পরিস্থিতিতে জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং দখল পুনরুদ্ধার করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অপরিহার্য।

আইন অনুযায়ী, শুধু দলিল থাকলেই জমি পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় না, বরং সঠিক আইনি পথে চললে মালিকানা ও দখল দুটোই ফিরে পাওয়া সম্ভব।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের জমি ফিরে পেতে দুটি প্রধান ধাপ অতিক্রম করতে হয়: ১. আদালতের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণ করা। ২. দখল পুনরুদ্ধার করা।

যদি দলিল থাকা সত্ত্বেও জমির নামজারি না হয় এবং সরকারি রেকর্ডে অন্য কারও নাম থেকে যায়, তবে আদালতের মাধ্যমে আপনার প্রকৃত মালিকানা প্রমাণ করতে হবে।

জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য আবেদনের সময়সীমার ওপর ভিত্তি করে দুটি ভিন্ন আদালতে মামলা করতে হয়:

ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল (LST): যদি সরকারি পরচা বা খতিয়ান প্রকাশের দুই বছরের মধ্যে রেকর্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়, তবে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল-এ মামলা করতে হবে।

সহকারী জজ আদালত: যদি দুই বছর সময়সীমা পার হয়ে যায় অথবা আপনি রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি আগে না জেনে থাকেন, সেক্ষেত্রে সহকারী জজ আদালতে 'ঘোষণামূলক মামলা' (Declaratory Suit) দায়ের করতে হবে। এই মামলার উদ্দেশ্য হলো আদালতের মাধ্যমে নিজেকে জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

একবার আদালতের রায়ের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণিত হলে এবং নামজারি সম্পন্ন হলে, পরবর্তী ধাপ হলো দখল পুনরুদ্ধার।

এই কাজের জন্য অনুসরণ করতে হবে সদ্য প্রণীত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এর ধারা ৮। এই আইনের আওতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গঠিত ভূমি প্রতিকার আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।

দখল পুনরুদ্ধারের জন্য নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে:

১. আদালতের আদেশ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফরমে ভূমি প্রতিকার আদালতে আবেদন করতে হবে।

২. ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনকারীর মালিকানা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত পরিচালনা করবেন।

৩. যাচাই শেষে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।

আইনজীবীরা বলছেন, যথাযথ কাগজপত্র, আদালতের সঠিক নির্দেশনা এবং সময়মতো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দলিলধারী মালিক তার জমি ও দখল উভয়ই ফিরে পেতে সক্ষম হবেন।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867761
19
Commerce / Succession gap in Bangladeshi companies
« Last post by Imrul Hasan Tusher on October 18, 2025, 12:00:30 PM »
Succession gap in Bangladeshi companies


Succession planning remains one of the weakest aspects of corporate governance in Bangladesh. While multinationals operating here view salaries as long-term investments in leadership pipelines, most local firms continue to treat them as costs. This difference explains why professionals in multinational corporations thrive in structured, merit-based environments, while many of their counterparts in local businesses remain underutilised and frustrated.

Over the past two decades, family-owned conglomerates in garments, cement and trading have experimented with hiring professional managers. Yet genuine success stories are rare. The main reason is the dominance of owners in daily operations. On paper, professionals may appear empowered, but in practice, most significant decisions still flow back to the owner or the family. This stifles initiative, limits professional growth, and reinforces the belief that only the owner can run the business effectively. The result is predictable: talented managers leave, often for multinationals, where decision-making structures are clearer and career progression more systematic.

The contrast with multinational joint ventures is striking. In sectors such as fast-moving consumer goods, telecommunications and cement, professionals typically run operations, while foreign or institutional shareholders focus on governance and strategic oversight. Because ownership and management are clearly separated, managers are trusted to lead and are held accountable for performance. These firms consistently attract top graduates, develop leadership talent internally and maintain competitiveness in fast-changing markets.

The role of the first generation of Bangladeshi entrepreneurs is central to understanding this dynamic. Many of today's business leaders began from modest positions -- some as traders of raw materials, others on factory floors or in small tailoring shops. Through resilience and effort, they built enterprises that came to dominate their sectors. Their strength lay in hands-on experience and instinctive market knowledge. Yet this history also created a structural challenge: when such entrepreneurs employ professionals, they often expect them to display the same level of intuition and resilience that they themselves developed over decades. For most managers, this is an impossible benchmark to meet, fuelling mistrust and disappointment. For them, it is baptism through fire.

The issue becomes sharper when businesses move to the second and third generations. In many family-run firms, successors have studied abroad at leading universities. While this education offers valuable exposure, some heirs return reluctant to join their family businesses at all, while others attempt to impose foreign management styles directly. These models often clash with local realities, whether in garments, trading or manufacturing, creating friction with long-serving employees and undermining performance.

The broader pattern is clear. Family-dominated conglomerates often struggle with succession because authority remains concentrated in founders or heirs, leaving little scope for professional managers to develop. Listed firms and multinational joint ventures, by contrast, institutionalise leadership development and maintain a clearer separation between governance and management. They are better placed to attract and retain talent, adapt to change and sustain competitiveness across generations.

For Bangladesh's private sector to sustain its momentum, a change in mindset is essential. Professional managers must be given time and freedom to grow, without being judged against the lifetime of experience of founders. Owners should focus on strategy and governance, allowing managers to handle operations. Likewise, second- and third-generation successors should not be parachuted into boardrooms but should earn their positions by working through the ranks. Global education can enrich their vision, but only when blended with local experience.

Bangladesh's first-generation entrepreneurs have already shown what can be achieved through resilience and hard work. The next challenge is to ensure these businesses endure and thrive beyond their founders. By learning from the governance practices of listed companies and joint ventures, family-owned firms can institutionalise succession planning, build leadership pipelines and preserve their legacy for future generations. Without these changes, many risk stagnation. With them, Bangladesh's homegrown firms can continue their entrepreneurial journey with greater stability and confidence.

Source: https://www.thedailystar.net/business/column/news/succession-gap-bangladeshi-companies-4008436
20
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঘুমের আগে নবীজির (সা.) ৭ নির্দেশনা


রাসুল (সা.)-এর জীবনধারায় নিদ্রাও ইবাদত। ঘুম মানুষের শরীর ও মনের জন্য এক অপরিহার্য নিয়ামত। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন,“তিনিই তোমাদের জন্য ঘুমকে করেছেন বিশ্রামের মাধ্যম এবং ঘুম থেকে জাগরণকে করেছেন জীবনযাপনের সূচনা।” (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৪৭)

কিন্তু ইসলামে ঘুম কেবল জৈব প্রয়োজন নয়, বরং এটি হতে পারে ইবাদতের অংশ, যদি তা নবীজির (সা.) নির্দেশনা অনুযায়ী হয়।

১. ঘুমানোর পূর্বের দোয়া ও জিকির

রাসুল (সা.) ঘুমানোর আগে আল্লাহর স্মরণে লিপ্ত থাকতেন। তিনি বলতেন, “যখন তোমরা বিছানায় যাবে, তখন ডান পাশে শুয়ে বলবে: ‘আল্লাহুম্মা বিস্মিকা আহইয়া ওয়া বিস্মিকা আমুত।’” অর্থ: “হে আল্লাহ, তোমার নামেই আমি জীবিত থাকি এবং তোমার নামেই মৃত্যুবরণ করি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭১০)

এছাড়াও ঘুমের আগে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করা সুন্নাহ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)। এতে করে দুষ্টু জিনের মন্দ–প্রবঞ্চনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

২. অজু করে ঘুমানো

রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ঘুমায়, সে যখনই রাতে জেগে আল্লাহর স্মরণ করে ও দোয়া করে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন।” (সহিহ ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৮৬৪)

অতএব, ঘুমের আগে ওজু করে নেওয়া শুধু শরীরকে পরিচ্ছন্ন রাখে না, বরং এটি আল্লাহর বিশেষ রহমতেরও মাধ্যম।

৩. ডান কাতে শোয়া

রাসুল (সা.) নিজে ডান কাতে শুয়ে ঘুমাতেন এবং সাহাবিদেরও তাই করতে বলেছেন, “যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন তোমার ডান পাশে শোও।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৪৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭১০)

এটি শারীরিকভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের দিক থেকেও উপকারী বলে স্বীকৃত, কারণ এতে হৃদপিণ্ডের উপর চাপ কমে ও হজম সহজ হয়।

৪. বিছানার পরিচ্ছন্নতা ও শরীরের নিরাপত্তা

নবীজির (সা.) নির্দেশ, “যখন কেউ শয্যায় যাবে, তখন তার বিছানার চাদর একবার ঝাড়ে নেবে, কারণ সে জানে না, সেখানে কী আছে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩২০)

এ নির্দেশে যেমন নিরাপত্তার শিক্ষা আছে, তেমনি পরিচ্ছন্নতার গুরুত্বও প্রতিফলিত হয়েছে।

৫. নির্দিষ্ট দিক মুখ করে ঘুমানো

রাসুল (সা.)-এর অভ্যাস ছিল কিবলামুখী হয়ে ডান কাতে ঘুমানো। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩৮৪৯)

অন্যদিকে, তিনি উল্টো পিঠে (উপুড় হয়ে) শোয়াকে অপছন্দ করতেন (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৭৬৯)। উপুড় হয়ে ঘুমানো শারীরিক উত্তেজনা বাড়ায়, প্রশান্তিদায়ক ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।

৬. ঘুমানোর আগে আত্মসমালোচনা

নবীজির (সা.) জীবনে ঘুম কেবল বিশ্রামের নয়, আত্মসমালোচনার সময়ও ছিল। তিনি বলতেন, “যে নিজের নফসের হিসাব করে, সে সফল।” (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩৯৮৮)

অতএব, দিনের শেষে ঘুমানোর আগে নিজের আমল যাচাই করাও এক ধরনের ইবাদত। এটা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কর্ম উদ্দীপনা বাড়ায় এবং মস্তিষ্ককে অহেতুক ভাবনা থেকে সুরক্ষিত রাখে।

৭. রাত্রিকালীন নামাজ ও ঘুমের ভারসাম্য

রাসুল (সা.) ঘুমাতেন এবং রাতের একাংশে জেগে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। কোরআনে বলা হয়েছে, “তুমি রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদের মাধ্যমে দাঁড়াও।” (সুরা ইসরা, আয়াত: ৭৯)

এই অভ্যাস নিদ্রাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে এবং আত্মাকে পবিত্র করে।

দুপুরের ঘুম

নবীজির (সা.) একটি সুন্নাহ হলো দুপুরে অল্প বিশ্রাম নেওয়া, যাকে কায়লুলা বলে। তিনি বলেন, “তোমরা দিনের কিছু অংশে ঘুমাও, কারণ শয়তান ঘুমায় না।” (জামে’ আস-সগীর, হাদিস: ৮৫৮৯)

আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও প্রমাণ করেছে যে, দুপুরের সংক্ষিপ্ত ঘুম কর্মক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে।

ঘুম থেকে জাগার দোয়া

জেগে উঠলে রাসুল (সা.) বলতেন, “আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা, ও ইলাইহিন নুশূর।” অর্থ: “সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের মৃত্যুর পর (ঘুম থেকে) জাগিয়ে তুলেছেন; এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১৪)

ঘুম ইসলামি জীবনের এমন এক অধ্যায়, যেখানে ইবাদত রয়েছে প্রতিটি ধাপে। ডান কাতে শোয়া, অজু করে ঘুমানো, দোয়া পাঠ, আত্মসমালোচনা—সবকিছুই একটি আত্মিক ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অংশ। নবীজির (সা.) শিক্ষা হলো—“ঘুমও যেন হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।”

Source: https://www.prothomalo.com/religion/islam/u6w9ubthdy
Pages: 1 [2] 3 4 ... 10