সাইবার অপরাধ এর ইতিহাস ও এর শাস্তি :
১৯৬৯ সালে কুখ্যাত সাম্রাজ্যবাদী দেশ মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রতিরোধ জন্য নিজস্ব নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তোলেন, যার উদ্দেশ্য ছিল পারমাণবিক আক্রমণ ঠেকানোর জন্য বৈজ্ঞানিক তথ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য আদান প্রদান ও সংরণ করা। এর নাম দেয়া হয় ‘আরপানেট’। আর আরপানেট সত্তরের দশকের শেষদিকে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে সামরিক গন্ডির মধ্যে হাঁটি হাঁটি পা পা করে যাত্রা শুরু করে তখন হয়তো কেউ চিন্ত করেনি এই আরপানেট ধিরে ধিরে একটি মহীরুপে পরিণত হবে। পরবর্তীতে আরপানেট নাম পরবর্তীত হয়ে ইন্টারনেট নাম ধারণ করে। আর এই ইন্টারনেট স্বল্প সময়ের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গন্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তরে পৌছে গেছে। মাত্র বিশ বছরের কম সময়েই সারা বিশ্বে এই ইন্টারনেট যেন একটি ডিজিটাল বিপবের সূচনা করেছে। বিশ্বে ধনী, দরিদ্র, ছোট বড় সকলকে যেন একীভূত করে একটি ডিজিটাল গ্রোবাল ভিলেজের জন্ম দিয়েছে। বর্তমানে উন্নয়ন তথা সমৃদ্ধির মাপকাঠি হিসাবে ইন্টারনেট সুবিধাকে নিয়ে আসা হচ্ছে। ইন্টারনেটকে বলা হয় তথ্য প্রযুক্তির সূতিকাগার। এটা জ্ঞানের অবারিত হাজার দরজা খুলে দিচ্ছে আমাদের সামনে। এর মাধ্যমে মানব সভ্যতা যেমন পরম উপকৃত হচ্ছে, তেমনি এর হাজার চরম অপকারিতাও রয়েছে। যা মানব সভ্যতাকে অবক্ষয়ের যাঁতাকলে নিক্ষেপ করছে। ইন্টারনেট বর্তমানে সন্ত্রাসীদের ভয়ংকর হাতিয়ারে পরিনত হয়েছে। কারণ ইন্টারনেটের জন্মই হয়েছে সন্ত্রাসবাদী চিন্তা ধারা থেকে। তাই ইন্টারনেট এখন সন্ত্রাসের নিরাপদ অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেসব অপরাধ সংঘঠিত হয় তাকেই সাইবার ক্রাইম বা প্রযুক্তি সংক্রান্ত অপরাধ বলা হয়। সাইবার ক্রাইমের সংজ্ঞায় বিখ্যাত ক্যামব্রিজ ডিকশনারীতে বলা হয়েছে-. Crime or illegal activity that is don using the internet.
এনসাইকোপিডিয়া অনুযায়ী ‘সাইবার ক্রাইম’ বলতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে অপরাধ করা হয়, তাকেই বোঝানো হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ বলে গণ্য হবে। কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ করলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। যারা সাইবার ক্রাইম করে তাদেরকে বলা হয় প্রযুক্তি সন্ত্রাসী।