জলাবন রাতারগুল

Author Topic: জলাবন রাতারগুল  (Read 1581 times)

Offline mustafiz

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 524
  • Test
    • View Profile
জলাবন রাতারগুল
« on: November 23, 2014, 07:05:27 PM »
বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন রাতারগুল। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত এই জঙ্গল বছরের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি সময় কোমর পানিতে ডুবে থাকে।



চিরসবুজ এ জঙ্গলে আছে নানান রকম বন্যপ্রাণী। পানিতে অর্ধেক গা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই বনের গাছগুলোর ফাঁকে ফাঁকে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা।

সিলেট বন বিভাগের উত্তর সিলেট রেঞ্জে-২ এর অধীন প্রায় তিন হাজার তিনশ একুশ একর জায়গা জুড়ে রাতারগুল জলাবন। এর মধ্যে ৫০৪ একর জায়গায় মূল বন, বাকি জায়গা জলাশয় আর সামান্য কিছু উঁচু জায়গা।

তবে বর্ষাকালে পুরো এলাকাটিই পানিতে ডুবে থাকে। শীতে প্রায় শুকিয়ে যায় রাতারগুল। তখন কেবল পানি থাকে বনের ভেতরে খনন করা বড় জলাশয়গুলোতে। পুরানো দু’টি বড় জলাশয় ছাড়াও ২০১০-১১ সালে রাতারগুলের ভেতরে পাখির আবাসস্থল হিসেবে ৩.৬ বর্গকিলোমিাটারের একটি বড় লেইক খনন করা হয়।

রাতারগুল বনের কোথাও কোথাও গভীরতা অনেক বেশি। এ বনের কোনও কোনও জায়গা ২৫ ফুটেরও বেশি গভীর।

রাতারগুল প্রাকৃতিক বন। এর পরেও বন বিভাগ হিজল, বরুন, করচ, আর মুর্তাসহ কিছু জলসহিষ্ণু জাতের গাছ লাগিয়েছে। এছাড়াও রাতারগুলের গাছ পালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: কদম, জালি বেত, অর্জুনসহ জলসহিষ্ণু আরও প্রায় ২৫ প্রজাতির গাছপালা।

সিলেটের শীতল পাটি তৈরির মূল উপাদান মুর্তার বড় একটা অংশ এ বন থেকেই আসে।



বাংলাদেশ বন বিভাগ ১৯৭৩ সালকে রাতারগুল বনের ৫০৪ একর এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে। এ বনে দেখা যায় নানান প্রজাতির পাখি। এ সবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: মাছরাঙা, বিভিন্ন প্রজাতির বক, ঘুঘু, ফিঙে, বালিহাঁস, পানকৌড়ি ইত্যাদি।

বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে— বানর, উদবিড়াল, কাঠবিড়ালি, মেছোবাঘ ইত্যাদি। নানান প্রজাতির সাপেরও অভায়শ্রম এই বন।

রাতারগুল জলাবনের একেবারে শুরুর দিকটায় মুর্তার বন। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খোলা জায়গার পুরোটাই পানিতে ডুবে থাকে। এর পরেই মূল বন। বনের গহীনে গাছের ঘনত্ব বেশি। কোথাও কোথাও সূর্যের আলো পর্যন্ত পানি ছুঁতে পারে না। কয়েকদিন পাহাড়ি ঢল না থাকলে বনের পানি এত বেশি স্বচ্ছ হয় যে, বনের সবুজ প্রতিবিম্বকে মনে হয় বনের নিচে আরেকটি বন।

এ সময়টা রাতারগুলের ছবি তোলার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

কীভাবে যাবেন

রাতারগুল দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে সিলেট শহর। সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ঢাকা থেকে সরাসরি সিলেট যেতে পারেন। চট্টগ্রাম থেকেও সিলেটে যাওয়া যায়।

ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে। এ পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলি পরিবহন ও এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।

শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে ১ হিাজার ১৮ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস। ভাড়া ১৪৫ থেকে  ১ হাজার ১শ’ ৯১ টাকা।




ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন উড়াল দেয় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে।

সিলেট শহর থেকে কয়েকটি পথে আসা যায় রাতারগুল। সবচেয়ে সহজ পথটি হল— শহর থেকে মালনিছড়ার পথে ওসমানী বিমান বন্দরের পেছনের সড়ক ধরে সোজা সাহেব বাজার হয়ে রামনগর  চৌমুহনী। সেখান থেকে হাতের বাঁয়ে এক কিলোমিটার গেলেই রাতারগুল।

সারাদিন ভ্রমণের জন্য জায়গাটিতে পাওয়া যাবে ছোট ছোট খোলা নৌকা। এক বেলা জঙ্গলে বেড়ানোর জন্য প্রতিটি নৌকার ভাড়া ৩শ’ থেকে ৭শ’ টাকা।

সিলেটের আম্বরখানা, শাহজালাল মাজার থেকে সাহেব বাজার কিংবা চৌমুহনী লোকাল অটো রিকশা যায়। জনপ্রতি ভাড়া ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। রিজার্ভ নিয়ে গেলে আড়াইশ থেকে ৩শ’ টাকা।

কোথায় থাকবেন

সিলেট শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল আছে। শহরের নাইওরপুল এলাকায় হোটেল ফরচুন গার্ডেন (০৮২১-৭১৫৫৯০), জেল সড়কে হোটেল ডালাস (০৮২১-৭২০৯৪৫), ভিআইপি সড়কে হোটেল হিলটাউন (০৮২১-৭১৮২৬৩), লিঙ্ক রোডে হোটেল গার্ডেন ইন (০৮২১-৮১৪৫০৭), আম্বরখানায় হোটেল পলাশ, (০৮২১-৭১৮৩০৯), দরগা এলাকায় হোটেল দরগাগেইট (০৮২১-৭১৭০৬৬), হোটেল উর্মি (০৮২১-৭১৪৫৬৩), জিন্দাবাজারে হোটেল মুন লাইট (০৮২১-৭১৪৮৫০), তালতলায় গুলশান সেন্টার (০৮২১-৭১০০১৮) ইত্যাদি।

এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে ৪ হাজার টাকায় রাত যাপনের ব্যবস্থা আছে।

সাবধানতা

পানিতে ডুবে থাকা অবস্থায় রাতারগুল জঙ্গল বেড়ানোর উপযুক্ত সময়। এ বনের চারদিকে পানি পূর্ণ থাকে বলে ভ্রমণের সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এই বনে বেড়ানোর সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বনের গাছে ডালে অনেক সময় সাপ থাকে। এছাড়া কম বেশি জোঁকেরও উপদ্রব আছে। সাঁতার না জানলে সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখা জরুরি।

এছাড়া ছাতা, বর্ষাতি কিংবা পঞ্চ, রোদ টুপিও সঙ্গে নিতে হবে। এখানে বেড়ানোর নৌকাগুলো অনেক ছোট। এক নৌকায় পাঁচজনের বেশি উঠবেন না।

Offline mahmudul_ns

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 129
  • Never confuse a single defeat with a final defeat.
    • View Profile
Re: জলাবন রাতারগুল
« Reply #1 on: October 04, 2015, 11:52:01 AM »
thanks for sharing this and the next week it might happen that i will be in there.
Md. Mahmudul Islam
Lecturer, Dept. Of Natural Sciences
Daffodil International University
mahmudul.ns@diu.edu.bd

Offline Nazmul Hasan

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 73
  • Truth is the only way others are misguidance
    • View Profile
Re: জলাবন রাতারগুল
« Reply #2 on: October 04, 2015, 11:56:12 AM »
If we can promote our beautiful natural sites to the world, it would be modifier to the national economy.
Assistant Administrative Officer
Office of the Registrar  (HR)
Daffodil International University.