আপনার খাদ্যাভ্যাস বা জ্যাম শেষে বাসায় ফিরে মাথা ব্যাথা -কিডনি কি বলে?
সকালে শুকনো বিস্কিট খেয়ে চা খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। চা খাওয়ার পর পানি? নো ওয়ে। দুপুরের ডাইনিং টেবিলে খেতে বসে লক্ষ্য করেছেন কি যতই দিন যাচ্ছে পানি পানের গ্লাস ও চিকন হয়ে যাচ্ছে? অথচ আপনার ডায়েট কন্ট্রোলের জন্য গ্লাসের স্বাস্থ্য ফ্যাটি হওয়া অত্যন্ত জরুরী আচ্ছা ভেবে দেখুন তো আপনি দুপুরে ঐ চিকন গ্লাসের কত গ্লাস পানি খেয়েছেন? সর্বোচ্চ দুই গ্লাস। ঐ দুই গ্লাস পানি মিলে ৩০০ মিলি পানি হবে কিনা সন্দেহ। আর থাকল রাতের খাবার ধরলাম তিন গ্লাস মানে সর্বোচ্চ ৪০০ মিলি। মানে আপনি দিনে ৭০০ মিলি পানি খাচ্ছেন। আপনি জানেন কি আপনি দিনে কতটুকু প্রসাব করেন? স্বাভাবিক ভাবে প্রসাবের রাস্তা দিয়ে ১.৫ লিটার। আর যদি ঢাকা শহরে থাকেন তবে চামড়া দিয়ে ঘামের মাধ্যমে ২০০ মিলি তো বটেই। ১.৫ লিটার প্রসাব স্বাভাবিক মানে বুঝেন কি? আপনার শরীরের ভিতর দৈনন্দিন কাজকর্মে যে ময়লা পদার্থ ইউরিয়া বা ক্রিয়েটিনিন জমে সেগুলো কমপ্লিট লি আপনার শরীর থেকে বের হতে এই পরিমান প্রসাব লাগে। কিন্তু আপনি যে ৭০০ মিলি খেলেন আবার চা বা কফি খেয়ে (চা, কফি ডাইইউরেটিকস যারা তাড়াতাড়ি প্রসাব তৈরি করে) সেটার কিছু অংশ বের করে দিলেন তাহলে কিডনি কিভাবে আপনার শরীরের সবটুকু ময়লা বা ইউরিয়া এবং ক্রিয়েটিনিন বের করে দিবে? সত্যি বলতে কিডনি সত্যি কিন্তু আপনাকে ভালোবাসে তাই নিজস্ব কিছু মেকানিজম দিয়ে এগুলোকে বের করার চেষ্টা করে। প্রথম দিকে সফলও হয় কিন্তু শেষে হয় বিকল! আপনি দেড় থেকে দুই লিটার পানি খেতেও কার্পন্য করেন অথচ বেচারা কিডনি দৈনিক ১৮০ লিটার রক্ত ছাঁকনি করে ময়লাগুলো বের করে! আপনার শরীরে রক্ত কত লিটার? মাত্র ৭ থেকে ৮ লিটার। তাহলে কিডনি এত্ত রক্ত পায় কোথায়? ভেবেছেন কখনো? আমার ভাবলেই খারাপ লাগে। বেচারা আপনার এক রক্তই বার বার ছেঁকে দেখে আর কোন ময়লা আছে কি না! ও ওর কাজে কত সিনসিয়ার আর আপনি এর বিনিময়ে কি দিচ্ছেন? পানিটুকুও দিচ্ছেন না এর ফলে ও হারিয়ে ফেলে কর্মক্ষমতা। ক্রনিক রেনাল বা কিডনি ফেইলিউর এর নাম শুনেছেন এর মানেই হলো কিডনি আপনার শরীর থেকে আর ইউরিয়া ক্রিয়েটিনিন বের করতে পারছে না। এ রোগ একবার হলে কিডনিকে আর ভালো করা যায় না আরেকজনের কিডনি কিনে লাগানো বা ট্রান্সপ্লান্ট না করা পর্যন্ত।
বাইরে বাসে জ্যামে অনেক্ষন আটকে ঘামে জুবজুবা হয়ে বাড়ি এসে দেখছেন মাথা ব্যাথা! আপনি জানলেনও না যে চামড়া দিয়ে ঘাম আকারে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে পানিস্বল্পতা হয়ে মাথা ব্যাথা করছে। আপনি ক করলেন? মাথা ব্যাথার ঔষধ খেলেন। পানিস্বল্পতা ও ব্যাথার ঔষধ মিলে কিডনির ১২ টা বাজালো। অথচ এক প্যাকেট ওরস্যালাইন ই যথেষ্ট ছিল আপনার এই মাথা ব্যাথা থামাতে। প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিউর। তাই যেখানে আপনার জ্যামে পড়ার বা যে কাজে আপনার শরীর ঘেমে যাবে আগেই স্যালাইন খেয়ে নিন