ডায়াবেটিস রোগীদের হাঁটা

Author Topic: ডায়াবেটিস রোগীদের হাঁটা  (Read 1418 times)

Offline AwratHossain

  • Newbie
  • *
  • Posts: 7
  • Test
    • View Profile
ডায়াবেটিসের মূল সমস্যা হলো ইনসুলিনের অভাব অথবা অকার্যকারিতা। নিয়মিত হাঁটলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে।ডায়াবেটিস চিকিৎসায় অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও শরীরচর্চা বা ব্যায়াম। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের ব্যায়ামের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সব বয়সীর জন্য নিয়মিত হাঁটা বা জগিং সবচেয়ে সহজ ও ভালো ব্যায়াম।

কেন হাঁটবেন:

ডায়াবেটিসের মূল সমস্যা হলো ইনসুলিনের অভাব অথবা অকার্যকারিতা। নিয়মিত হাঁটলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে। পেশিকোষে গ্লুকোজ প্রবেশ করার জন্য ইনসুলিনের প্রয়োজন। হাঁটার ফলে পেশিকোষে গ্লুকোজ প্রবেশ সহজ হয়। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নেমে আসে। এ ছাড়া হাঁটার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসের জটিলতা কমে। হাঁটলে ঘুমও ভালো হয়, যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুব জরুরি। হাঁটলে এনডরফিন নিঃসৃত হয় বলে মানসিক চাপ কমে, ফুরফুরে অনুভূতি হয়।

কখন হাঁটবেন:

সকাল-বিকেল-রাত—যেকোনো সময় হাঁটা যায়। তবে হাঁটার জন্য একটি নির্ধারিত সময় থাকা জরুরি। টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের সকালে হাঁটা ভালো। সময় না পেলে তিন বেলা খাবারের এক ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট করে হাঁটুন। বিকেলে হাঁটাও মন্দ নয়।
কতক্ষণ হাঁটবেন

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটা প্রয়োজন। একেবারে ঘামঝরানো হাঁটা। যাঁদের স্থূলতার সমস্যা আছে, তাঁদের হাঁটতে হবে আরও বেশি। প্রথম দিকে ৩ থেকে ৫ মিনিট আস্তে-ধীরে হাঁটুন। এরপর ২০ থেকে ২৫ মিনিট দ্রুত কদমে হাঁটুন। শেষ ১ থেকে ৩ মিনিট হাঁটার গতি কমিয়ে আনুন।

হাঁটার প্রস্তুতি:

খালি পায়ে হাঁটা যাবে না। আরামদায়ক ও নরম সোলের এক জোড়া কেডস কিংবা জুতা এবং পরিষ্কার নরম মোজা পরুন। ডায়াবেটিস পরখ করে নিন হাঁটার আগে। গ্লুকোজের মাত্রা ৫ দশমিক ৩-এর নিচে থাকলে হাঁটতে গেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে চিনির মাত্রা কমে যেতে পারে। আবার ভোরবেলা একেবারে খালি পেটে হাঁটতে গেলেও শর্করা কমে যেতে পারে। তাই হালকা কিছু খেয়ে নিন। আবার চিনির মাত্রা ১৬ দশমিক ৭-এর ওপরে থাকলেও সাবধান।

বড় এক গ্লাস পানি পান করুন হাঁটার আগে। সঙ্গে পানির বোতল রাখুন। প্রতি ২০ মিনিট হাঁটার জন্য এক কাপ পানি পান করুন। এবড়োখেবড়ো কর্দমাক্ত পথে হাঁটবেন না। সম্ভব হলে খোলা মাঠে, পার্কে কিংবা নদীর পাড়ে হাঁটুন।

হাঁটার সময় লক্ষণীয়:

ইনসুলিন নিয়ে হাঁটার সময় হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত কার্যকর শর্করা গ্রহণ করুন। হাঁটায় ক্ষান্ত দিন। দীর্ঘপথ হাঁটতে চাইলে সঙ্গে সহজপাচ্য শর্করাজাতীয় খাবার রাখুন।

ঘরে হাঁটা:

ঘরে ট্রেডমিলেও হাঁটতে পারেন। ছাদে হাঁটার ব্যবস্থা থাকলে সেখানে হাঁটুন। মুঠোফোনে কথা বলার সময় বসে না থেকে হাঁটুন।

লে. কর্নেল নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ, ঢাকা