হযরত আবু উমাইয়্যাহ শা’বানী রহমাতুল্লহ আ’লাইহি বলেন, আমি হযরত আবু সা’লাবাহ খুশানী রদিয়াল্লহু আ’নহু (ابىْ ثعْلبة الْخشنيّ رضى الله عنْه) কে জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি আল্লহ তায়া’লার এই এরশাদ لَيْكُمْ أَنفُسَكُمْ ‘তোমরা তোমাদের নিজেদের ফিকির কর’ এই ব্যাপারে কি বলেন। তিনি বলিলেন, আল্লহর কসম, তুমি এমন ব্যক্তির কাছে এই বিষয় জিজ্ঞাসা করিয়াছ, যে এই ব্যাপারে খুব ভালভাবে অবগত আছে। আমি স্বয়ং রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে এই আয়াতের অর্থ জিজ্ঞাসা করিয়া ছিলাম। তিনি এরশাদ কইয়াছিলেন যে, (ইহার অর্থ এই নহে যে শুধু নিজের ফিকির কর) বরং একে অন্যকে সৎ কাজের আদেশ করিতে থাক এবং অসৎ কাজ হইতে বাধা দিতে থাক। অতঃপর যখন দেখিবে যে, লোকেরা ব্যাপক ভাবে কৃপণতা করিতেছে, খাহেশাতকে পূরণ করা হইতেছে দুনিয়াকে দ্বীনের উপর অগ্রাধিকার দেওয়া হইতেছে এবং প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের রায়কে পছন্দ করিতেছে (অন্যের রায়কে মানিতেছে না) তখন সাধারণ লোকদের ছাড়িয়া দিয়া নিজের সংশোধনে লাগিয়া যাইও। কেননা শেষ যামানায় এমন দিন আসিবে যখন দ্বীনের হুকুমসমূহের উপর অটল থাকিয়া আ’মাল করা জ্বলন্ত কয়লা হাতে লওয়ার ন্যায় কঠিন হইবে। সেই সময়ে আ’মালকারী তাহার একটি আ’মালের উপর এত পরিমাণ সওয়াব পাইবে, যত পরিমাণ পঞ্চাশজন উক্ত আ’মাল করিলে পায়। হযরত আবু সা’লাবাহ রদিয়াল্লহু আ’নহু বলেন, আমি আরজ করিলাম, ইয়া রসুলুল্লহ! তাহাদের মধ্য হইতে পঞ্চাশ জনের সওয়াব পাইবে (না আমাদের মধ্যে হইতে পঞ্চাশ জনের)? (কেননা সাহাবীদের আ’মালের সওয়াব অনেক বেশী) এরশাদ করিলেন, তোমাদের মধ্যে হইতে পঞ্চাশ জনের সওয়াব সেই একজন পাইবে। (আবু দাউদ)
ফায়দাঃ ইহার অর্থ এই নহে যে, শেষ যামানায় আ’মালকারী ব্যক্তি তাহার এই বিশেষ ফযীলতের কারণে সাহাবাহ কেরাম রদিয়াল্লহু আ’নহুম দের অপেক্ষা মর্যাদায় বাড়িয়া যাইবে। কেননা সাহাবাহ রদিয়াল্লহু আ’নহুম সর্বাবস্থায় সমস্ত উম্মত হইতে উত্তম।
এই হাদীস শরীফ দ্বারা জানা গেল যে, আ’মর বিল ম’রুফ নাহী আনিল মুনকার করিতে থাকা জরুরী। অবশ্য যদি হক কথা গ্রহণ করার যোগ্যতা একেবারেই খতম হইয়া যায় তবে সেই সময়ে পৃথক থাকার হুকুম রহিয়াছে। আল্লহ তায়া’লা মেহেরবাণীতে এখনও সেই সময় উপস্থিত হয় নাই, কেননা এখনও উম্মতের মধ্যে হক কথা কবুল করার যোগ্যতা বিদ্যমান রহিয়াছে।