রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভিআইপি ঘোষিত দেশি-বিদেশি অতিথিদের অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন বহন ও ব্যবহার করা যাবে না। সরকারের সচিব বা সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত ভিআইপি অতিথিরাও এর আওতাভুক্ত। এসব অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হলে অনুষ্ঠানের আগেই ব্যবহারকারীর নাম, মোবাইল নম্বর এবং ব্যবহারের কারণ সম্পর্কে সরকারের বিশেষ ফোর্সকে অবগত করতে হবে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনের ১৮ দলীয় জোটের জনসভা থেকে জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। এ নিয়ে সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাও হয়। জামায়াত নেতার ওই হুমকির পর সরকারের শীর্ষমহল নড়েচড়ে উঠে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ ভিআইপিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সরকারের বিশেষ একটি ফোর্সকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন না নিয়ে আসতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের কাছে চিঠি দেয়াও হয়েছে ওই বাহিনীর পক্ষ থেকে। দেশে মোবাইল সদৃশ পিস্তল দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে ওই চিঠিতে বলা হয়, এ ধরনের পিস্তলের কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে কয়েকদিন ধরে প্রকাশিত হচ্ছে। এটা ভিআইপিদের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ ধরনের মোবাইল সদৃশ পিস্তলের কারণে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিসহ সরকারের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন তারা। এসব পিস্তল নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। তাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যথাসম্ভব মোবাইল ফোন আনা থেকে বিরত রাখতে হবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করা একান্তই প্রয়োজন মনে করলে আগে থেকে ফোন ব্যবহারকারীর নাম, মোবাইল নম্বর এবং ব্যবহারের কারণ সম্পর্কে বিশেষ ফোর্সকে জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে অতিথি করে ছাপানো আমন্ত্রণপত্রে বর্তমানে মোবাইল ফোন, ব্যাগসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে প্রবেশ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়। এটা আবার কোন কোন ক্ষেত্রে শিথিলও করা হয়েছে। আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা প্রয়োজনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির বিশেষ ফোর্সের সদস্যরা কোন ধরনের বাধা দিতেন না। তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের হুমকি এবং মোবাইল সদৃশ পিস্তলের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। এখন থেকে কোন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে যাতে বিষয়টি কঠোরভাবে লেখা থাকে এজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বিশেষ বাহিনীর ওই চিঠিতে।