দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিদ্যমান ভর্তি-প্রক্রিয়া কোচিং-সহায়ক উল্লেখ করে তা পরিবর্তন করার সুপারিশ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে। এ জন্য মাধ্যমিক (এসএসসি) ও উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার ফল বা গুচ্ছভিত্তিতে (ক্লাস্টার সিস্টেম) পরীক্ষার মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ইউজিসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় গবেষণার সুপারিশ তুলে ধরা হয়। ইউজিসির কৌশল ও নীতি শাখা (ইউনিট) দেশের ১২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ‘বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি-প্রক্রিয়া’ শীর্ষক এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মিলিয়ে প্রায় ৯০০ উত্তরদাতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সব পক্ষই বিদ্যমান ভর্তি-প্রক্রিয়ায় ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের শারীরিক, আর্থিক ও মানসিক বিড়ম্বনার চিত্র তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে। একই সঙ্গে ভর্তি-প্রক্রিয়া সম্পাদনে যে পরিমাণ সময় নষ্ট হয়, তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে বলে গবেষণায় উঠে আসে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিদ্যমান ভর্তি-প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের বেশি করে কোচিংমুখী করে তুলছে, যা তাদের ও অভিভাবকদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
কী পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা গ্রহণযোগ্য ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের জন্য বিড়ম্বনামুক্ত হবে, সে বিষয়ে উপাচার্যদের কাছে প্রশ্ন রেখে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয় বা ইউজিসির কোনো সীমাবদ্ধতা থাকলে আমরা তা কাটিয়ে উঠতে সচেষ্ট। এ বিষয়ে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ প্রয়োজন। কিন্তু বিদ্যমান ভর্তি-প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা এখন সময়ের দাবি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশ ভ্রমণ করে আমাদের শিক্ষার্থী এবং তাদের সঙ্গে অভিভাবকেরাও ভর্তি পরীক্ষার নামে যে দুর্ভোগ পোহান, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
সভাপতির বক্তৃতায় ইউজিসির চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ভর্তি পদ্ধতি সহজ করা সম্ভব হলে শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনার হাত থেকে যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি সময় ও অর্থের অপচয় কমবে।’ কর্মশালায় শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বিশেষ অতিথি ছিলেন। ইউজিসির সদস্য এম মুহিবুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।