তাফসির ইবনে কাঁসিরে হাফেজ ইবনু কাসির এ সুরা ফাতেহার তাফসিরে উল্লেখ করেছেন সুরা ফাতেহা ব্যতীত সালাত হয় না, ইমাম মুক্তাদি উভয়কেই সুরা ফাতেহা পড়তে হয়।
হাদিসের দলিল :
১ম হাদিস
উবাদাহ বিন ছামিত (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসুল সঃ এরশাদ করেন- ‘ ঐ ব্যক্তির ছালাত সিদ্ধ নয়, যে ব্যক্তি সুরায়ে ফাতিহা পাঠ করে না’। বুখারী ২য় খণ্ড হা/৭২০ ইঃফাঃপ্রঃ; মুসলিম(২য়) হা/৭৭১-৭৩ বাঃ ইঃ সেন্টার প্রঃ; মুত্তাফাক আলাইহ মিশকাথা/৮২২ ‘ছলাতে কিরায়াত’ অনুচ্ছেদ; সিহা সিত্তাহ সহ প্রায় সকল হাদীস গ্রন্থে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
২য় হাদিস:
যে ব্যক্তি ইমামের পিছনে সুরা ফাতেহা পড়বে না তার নামায হবে না (কেতাবুল কেরাত বায়হাকী ৪৭ পৃঃ; আরবী বুখারী ১ম খন্ড ১০৪ পৃঃ; মুসলিম ১৬৯ পৃঃ; আবু দাউদ ১০১ পৃঃ; নাসাঈ ১৪৬ পৃঃ; ইবনু মাযাহ ৬১ পৃঃ; মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ৯৫ পৃঃ);
৩য় হাদিস :
আনাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমরা কি ইমামের ক্বিরাআত অবস্থায় পিছনে কিছু পাঠ করে থাক? এটা করবে না। বরং কেবলমাত্র সূরায়ে ফাতিহা চুপে চুপে পাঠ করবে’।
বুখারী, জুয্উল ক্বিরাআত; ত্বাবারাণী আওসাত্ব, বায়হাক্বী, ছহীহ ইবনু হিববান হা/১৮৪৪; হাদীছ ছহীহ- আরনাঊত্ব; তুহফাতুল আহওয়াযী, ‘ইমামের পিছনে ক্বিরাআত’ অনুচ্ছেদ-২২৯, হা/৩১০-এর ভাষ্য (فالطريقان محفوظان) , ২/২২৮ পৃঃ; নায়লুল আওত্বার ২/৬৭ পৃঃ, ‘মুক্তাদীর ক্বিরাআত ও চুপ থাকা’ অনুচ্ছেদ।
৪র্থ হাদিস :
হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) এরশাদ করেছেন- ‘যে ব্যক্তি ছলাত আদায় করল,যার মধ্যে সুরায়ে ফাতিহা পাঠ করল না, তার ঐ ছলাত বিকলাঙ্গ বিকলাঙ্গ বিকলাঙ্গ, অপূর্ণাঙ্গ। হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ)-কে বলা হ’ল, আমরা যখন ইমামের পিছনে থাকি, তখন কিভাবে পড়ব ? তিনি বললেন, ‘তুমি ওটা ছলাতে চুপে চুপে পড়’।
মুসলিম হা/৭৭৬, আবুদাউদ হা/৮২১, মিশকাত হা/৮২৩ ‘সালাতে কিরায়াত’ অনুচ্ছেদ-১২|
'যে ব্যক্তি' - মানে কি? এই যে ব্জক্তি-র মধ্যে তো ইমামও সামিল মুক্তাদিও সামিল! আল্লাহু আকবর সুস্পষ্ট বিষয়।
হে পাঠক! সহিহ হাদিস উপস্থাপন করা হলো| সহিহ হাদিসেই রয়েছে যে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সুরা ফাতেহা পড়তে হবে| হাদিসেই রয়েছে ইমামের পিছনেও চুপে চুপে মনে মনে সুরা ফাতেহা পড়তেই হবে|
‘তোমরা কি ইমামের ক্বিরাআত অবস্থায় পিছনে কিছু পাঠ করে থাক? এটা করবে না। বরং কেবলমাত্র সূরায়ে ফাতিহা চুপে চুপে পাঠ করবে’।
বুখারী, জুয্উল ক্বিরাআত; ত্বাবারাণী আওসাত্ব, বায়হাক্বী, ছহীহ ইবনু হিববান হা/১৮৪৪; হাদীছ ছহীহ- আরনাঊত্ব; তুহফাতুল আহওয়াযী, ‘ইমামের পিছনে ক্বিরাআত’ অনুচ্ছেদ-২২৯, হা/৩১০-এর ভাষ্য (فالطريقان محفوظان) , ২/২২৮ পৃঃ; নায়লুল আওত্বার ২/৬৭ পৃঃ, ‘মুক্তাদীর ক্বিরাআত ও চুপ থাকা’ অনুচ্ছেদ।
এই হাদিস যে মুক্তাদি সুরা ফাতেহা চুপে চুপে পড়বে !
সুরা ফাতেহা ব্যতীত সালাত হয় না এবং সুরা ফাতেহা না পেলে শুধু রুকু পেলে রাকাত গন্য হয় না, শেষে এই রাকাত সুরা ফাতেহা দিয়ে পড়ে নিতে হবে। সুরা ফাতেহা পড়তেই হবে। সালাতে সুরা ফাতেহা পড়া এবং কেরাত পড়া এক বিষয় নয়। সুরা ফাতেহা কেরাত নয়, সুরা ফাতেহা কুরআনের ''ভুমিকা''!
সালাতে কেরাত হিসেবে অর্থাত মিলিয়ে অন্য সুরা হিসেবে কখনই ''সুরা ফাতেহা'' পড়া হয় না। সুরা ফাতেহা সতন্ত্র। অতএব ইমামের কেরাত মুক্তাদির জন্য যথেষ্ঠ এ কথা সুরা ফাতেহার জন্য প্রযোজ্য নয়।
ইচ্ছে করে, আলসেমি, অবহেলা করে, অবজ্ঞা করে সুরা ফাতেহা ছেড়ে দিলে রুকু পেলেও তা রাকাত বলে গন্য হবে না। কিন্তু ন্যায্য ওজরে (কারণে) সালাতে উপস্থিত হতে হতে যদি ইমাম রুকুতে চলে যান এবং ব্যক্তি রুকু ধরতে পারে ''শুধুমাত্র এ ক্ষেত্রে'' সুরা ফাতেহা পড়া রহিত হয়ে যাবে - শায়খ উসায়্মিন, ফতোয়া আরকানুল ইসলাম।