হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন জয়ের পর প্রথম আলো থেকে একাধিকবার দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু টেলিফোনে বা মুঠোফোনে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না গলফার সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে। ঢাকায় বাবা আফজালুর রহমান ও মা ফিরোজা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেন স্কাইপে। বিশ্বকাপ গলফে অংশ নিতে দিল্লি থেকেই কাল সরাসরি চলে গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। যাওয়ার আগে দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসে এই প্রতিবেদকের ই-মেইলে পাঠানো প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন দেশসেরা গলফার
হিরো ইন্ডিয়ান ওপেন জয়টাকে কীভাবে দেখছেন?
সিদ্দিকুর রহমান: আমাকে আরও অনেক দূর যেতে হবে। এই জয়টা সে পথের সহায়ক হবে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমার অনেক ভক্ত-সমর্থক ফেসবুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমি অভিভূত। আমি মনে করি, আমার এই জয়টা শুধু বাংলাদেশেই নয়, এশিয়াতেও প্রভাব ফেলবে।
হঠাৎ করে আপনার এই বদলে যাওয়ার রহস্যটা কী?
সিদ্দিকুর: রহস্য-টহস্য কিছুই না। এর আগের কয়েকটি টুর্নামেন্টে শেষ পর্যন্ত আমি চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। সেরা পাঁচে শেষ করেছি। এবার ধারাবাহিকতা ছিল।
আপনি তো এখন বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে কেমন লাগে আপনার?
সিদ্দিকুর: আসলে বড় খেলোয়াড়দের কাছে সব সময় কিছু না কিছু শিক্ষণীয় বিষয় থাকেই। আমি এখন যা করছি, তার সবই তাদের কাছ থেকে শেখা। আমি যে বাংলাদেশের গলফার, সেটা শুনে সবাই খুব অবাক হয়। বাংলাদেশের খেলোয়াড় বলে সবাই বেশি সমাদর করে। আর যারা বাংলাদেশকে চেনে না তারা আগ্রহী হয় বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে।
এই টুর্নামেন্টটির আগে বেশ কয়েকবার দেখা গেছে, শেষ রাউন্ডে এসে খেই হারিয়ে ফেলছিলেন। এটা কি বেশি চাপে থাকার কারণে?
সিদ্দিকুর: কথাটা ঠিকই বলেছেন। আবার সব সময় চাপেও যে থাকি, তা কিন্তু না। কখনো খারাপ আবহাওয়া আবার কখনো ইনজুরি আমাকে ভালো খেলতে দেয়নি।
আপনি নিজেই বলেছেন, এর আগে ঝুঁকিহীন খেলে প্রাইজমানি নিশ্চিত করার একটা প্রবণতা ছিল। কিন্তু এখন আপনার মধ্যে চ্যাম্পিয়নের মানসিকতা কীভাবে এল?
সিদ্দিকুর: সব সময় ভালো খেলতে হবে, মনের মধ্যে সব সময়ই এই ক্ষুধা ছিল। এখন ভালো খেলার মানসিকতা চলে এসেছে। দেখেছেন নিশ্চয়ই, আগের চেয়ে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক খেলি এখন। খেলার স্টাইলটাও বদলেছি। তা ছাড়া আমার কোচের পরামর্শে প্র্যাকটিসটাও একটু কমিয়ে দিয়েছি।
পেছনে ফিরে তাকালে কী মনে হয়? মাদারীপুরের দরিদ্র পরিবারের সেই সিদ্দিক আর আজকের এই সিদ্দিক...
সিদ্দিকুর: ভালো লাগে। অনেক ভালো লাগে। তবে সবচেয়ে বড় কথা, যখন দেখি নিজের নামের পাশে বাংলাদেশের পতাকা, সেটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।
খেলার জন্য সব সময় আপনাকে ছুটে বেড়াতে হয় দেশ-দেশান্তর। এই ব্যস্ততার সঙ্গে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন?
সিদ্দিকুর: এটা জীবনেরই একটা অংশ হয়ে গেছে। তবে আনন্দের পাশাপাশি কখনো বিরক্তিকরও লাগে বিষয়টা। কখনো খুবই ক্লান্ত লাগে।
অস্ট্রেলিয়ায় ২১-২৪ নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় গলফ বিশ্বকাপে কী প্রত্যাশা করছেন?
সিদ্দিকুর: বিশ্বকাপ নিয়ে আমার অনেক আশা। বাংলাদেশি গলফার হিসেবে প্রথমবারের মতো এখানে খেলার সুযোগ পেয়েছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ। দেখি কী হয়। আমি সবার দোয়াপ্রার্থী।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বদিউজ্জামান