আইইএলটিএস কি?
আইইএলটিএস সংক্ষিপ্ত রূপ। এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি ইংরেজী ভাষাশিক্ষা পরীক্ষা পদ্ধতি। যা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তির একটি পূর্বশর্ত। এই টেস্টিং পদ্ধতির মাধ্যমে যাদের মাতৃভাষা ইংলিশ নয়, তারা ইংরেজী ভাষার উপর কতটুকু দক্ষতা রাখেন তার পরীক্ষা নেয়া হয়। ইউকে (যুক্তরাজ্য) এবং অস্ট্রেলিয়া যৌথ উদ্যোগে এই পদ্ধতি চালু করে।
কেন দরকার?
স্টুডেন্ট ভিসায় যারা বিদেশে (যেসব দেশে ইংরেজী ভাষা প্রচলিত) পড়ালেখা করতে চান তাদের অবশ্যই আইইএলটিএস লাগবে। বিশেষ করে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, কানাডা, নিউজিল্যান্ডসহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশ ও ইউরোপের অনেক দেশে পড়াশুনা করতে চাইলে আইইএলটিএস স্কোর লাগবে। যারা বিদেশে চাকরি করতে চান বা রেসিডেন্ট স্ট্যাটাস পেতে চান তাদের ক্ষেত্রেও আইইএলটিএস শর্ত রয়েছে। তাদের ভিসা প্রাপ্তিতে এটি সহায়তা করে। দেশের অভ্যন্তরে যে কোন চাকরির ক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষা দক্ষতা বিচারে এই কোর্সের মূল্যায়ন করা হয়।
আইইএলটিএস পরীক্ষা গ্রহণের অথরিটি
আইইএলটিএস পরীক্ষা হয় সরাসরি বিদেশ থেকে। পরীক্ষা নেয়ার দু’টি অথরিটি আছে- ১. ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ইএসওএল, বাংলাদেশে এর পরীক্ষা কেন্দ্র হচ্ছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। ২. দ্বিতীয় অথরিটি হচ্ছে আইডিপি (অস্ট্রেলিয়া). বাংলাদেশে দুইটি জায়গায় এর পরীক্ষা নেয়া হয়। এক- আইডিপি সেন্টার, সিডব্লিউএন (এ), কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, গুলশান, ২, ঢাকা। দুই- বিইটিএস (ভিকটোরিয়া লিমিটেড), বাড়ী-৫৫, রোড-৪, ধানমণ্ডি, ঢাকা।
পরীক্ষার ফি ও রেজিস্ট্রেশন
আইইএলটিএস পরীক্ষার ফি ১০,০০০/- (দশ হাজার টাকা মাত্র). এ টাকা রেজিস্ট্রেশনের সময় পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনের সময় পাসপোর্ট এর প্রথম পাঁচ পৃষ্ঠার ফটোকপি ও ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো জমা দিতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের সময় পাসপোর্টে এর মূল কপি অবশ্যই সাথে রাখতে হবে।
পরীক্ষা পদ্ধতি
আইইএলটিএস পরীক্ষা ৪টি সেকশনে বিভক্ত- লিসেনিং, রিডিং, রাইটিং ও স্পিকিং। সবগুলো পরীক্ষা একই দিনে হতে পারে, নাও হতে পারে। তবে লিসেনিং, রিডিং, রাইটিং একই দিনে পরপর হবে। স্পিকিং পরীক্ষা মূল পরীক্ষার দিন অথবা আগের বা পরের দিন হতে পারে। প্রতিটি মডিউলে ব্র্যান্ড স্কোর হলো ৯. অর্থাৎ প্রতিটি মডিউলের পরীক্ষায় আপনি যত পাবেন, তাই কাউন্ট হবে।
ফলাফল ও মেয়াদ
সাধারণত পরীক্ষার ১২ দিন থেকে ১ মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হয়। আইইএলটিএস-এর ফলাফলকে ব্যান্ড স্কোর বলে। এই আইইএলটিএস স্কোর-এর মেয়াদ ২ বছর বৈধ থাকে। ২ বছরের মধ্যে কেউ বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করতে না পারলে তাকে আবার পরীক্ষা দিতে হয়। পরীক্ষা যতবার ইচ্ছা দেয়া যায়। তবে প্রত্যেবার পরীক্ষার ফি দিতে হবে।
আইইএলটিএস কত ধরনের?
আইইএলটিএস দুই ধরনের হয়: ১. একাডেমিক ও ২. জেনারেল ট্রেইনিং। যারা বিদেশে পড়াশুনার উদ্দেশ্যে যাবে তাদের জন্য একাডেমিক আইইএলটিএস লাগবে। চাকরি বা মাইগ্রেশনের জন্য জেনারেল ট্রেইনিং আইইএলটিএস লাগে। তবে কোন ক্ষেত্রে একাডেমিক আইইএলটিএস-এর মাধ্যমে এক বছরের মধ্যে মাইগ্রেশন করা যায়।
ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি মাপকাঠি হলো IELTS (The International English Language Testing System)। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে পড়াশোনা বা কর্মসংস্থানের জন্য যেতে চাইলে আইইএলটিএস স্কোর প্রয়োজন হয়। ইউরোপের দেশগুলোতেও আইইএলটিএস স্কোর গ্রহণ করা হয়। ইদানীং যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় TOEFL (Test of English as a Forieng Language)-এর পাশাপাশি আইইএলটিএস স্কোর গ্রহণ করছে। যে কেউ এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। এ জন্য কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নেই।
পরীক্ষাপদ্ধতি
দুটি মডিউলে আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়া যায়। একাডেমিক এবং জেনারেল ট্রেনিং। স্নাতক, স্নাতকোত্তর অথবা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য একাডেমিক মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। কোনো কারিগরি বিষয় বা প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হলে সাধারণত জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। এ ছাড়া সেকেন্ডারি স্কুলে ভর্তি এবং ইমিগ্রেশনের জন্য জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হবে। আইইএলটিএস পরীক্ষায় বসার আগে জেনে নিন কোন মডিউলে আপনাকে পরীক্ষা দিতে হবে। দুটো পদ্ধতিতে পার্থক্য খুব সামান্য।
আইইএলটিএস পরীক্ষায় দুই ধরনের মডিউলেই চারটি অংশ থাকে। Listening, Reading, Writing ও Speaking।
লিসেনিং (Listening)
কথোপকথন শুনে বোঝার ক্ষমতা যাচাই করা হয় এ অংশে। চারটি বিভাগে মোট ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। কোনো বিষয়ে বক্তৃতা, কথোপকথন ইত্যাদি বাজিয়ে শোনানো হয় পরীক্ষার্থীদের। শোনা অংশ থেকেই প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। মোটামুটি ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। শেষ ১০ মিনিটে উত্তরপত্রে উত্তর লিখতে হয়। একটি বিষয় কেবল একবারই বাজিয়ে শোনানো হয়। কোনো অংশ শুনে না বুঝতে পারলে সেটা নিয়ে আর মাথা না ঘামানোই ভালো। কারণ, এতে পরবর্তী প্রশ্নগুলোর উত্তর বুঝতে না পারার ঝুঁকি থাকে। সঠিক উত্তর বেছে নেওয়া, সংক্ষিপ্ত উত্তর, বাক্য পূরণ ইত্যাদি নানা ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে।
রিডিং (Reading)
তিনটি বিভাগে ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। সময় এক ঘণ্টা। নানা জার্নাল, বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন থেকে কিছু অংশ তুলে দেওয়া হবে। সেটা পড়েই প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এখানেও বাক্য পূরণ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, সঠিক উত্তর খুঁজে বের করা ইত্যাদি প্রশ্ন থাকবে। পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোয় দাগ দিয়ে রাখুন। উত্তর খুঁজে পেতে সুবিধা হবে।
রাইটিং (Writing)
এক ঘণ্টায় দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। দ্বিতীয় প্রশ্নটিতে প্রথম প্রশ্নের চেয়ে দ্বিগুণ নম্বর থাকে। এজন্য শুরুতেই দ্বিতীয় প্রশ্নটির উত্তর ভালোভাবে লিখতে পারেন। প্রথম প্রশ্নটিতে মোটামুটি ২০ মিনিট সময় দিতে পারেন। অন্তত ১৫০ শব্দের উত্তর লিখতে হবে। দ্বিতীয় প্রশ্নটির উত্তর দিতে ৪০ মিনিট নিতে পারেন। অন্তত ২৫০ শব্দ লিখতে হবে। শব্দসংখ্যা একটু বেশি হলে ক্ষতি নেই। কিন্তু কম হলে নম্বর কমে যাবে।
প্রথম প্রশ্নটিতে সাধারণত কোনো চার্ট, ডায়াগ্রাম থাকে। এ থেকে নিজের কথায় বিশ্লেষণধর্মী উত্তর লিখতে হয়। দ্বিতীয় প্রশ্নটিতে সাধারণত কোনো বিষয়ের পক্ষে, বিপক্ষে মত বা যুক্তি উপস্থাপন করতে হয়।
স্পিকিং (Speaking)
তিনটি অংশে মোটামুটি ১১ থেকে ১৪ মিনিটের পরীক্ষা হয়। প্রথম অংশে পরীক্ষার্থীকে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়, যেমন—পরিবার, পড়াশোনা, কাজ, বন্ধু ইত্যাদি। চার থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে উত্তর দিতে হয়। দ্বিতীয় অংশে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে এবং দুই মিনিট কথা বলতে হয়। এর আগে চিন্তা করার জন্য এক মিনিট সময় দেওয়া হয়। তৃতীয় অংশে চার থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য পরীক্ষকের সঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে কথোপকথন চালাতে হয়।
স্কোর
এক থেকে নয়-এর স্কেলে আইইএলটিএসের স্কোর দেওয়া হয়। চারটি অংশে আলাদাভাবে ব্যান্ড স্কোর দেওয়া হয়। এগুলোর গড় করে সম্পূর্ণ একটি স্কোরও দেওয়া হয়। এ পরীক্ষায় কৃতকার্য বা অকৃতকার্য হওয়ার কোনো বিষয় নেই। আপনার প্রয়োজনীয় স্কোর করতে পারলেই পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্য সফল হবে। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে সাধারণত সাড়ে ছয় থেকে সাড়ে সাত পেতে হয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যান্ড স্কোরও আলাদাভাবে ভালো করতে হয়। সম্পূর্ণ স্কোর যত ভালোই হোক না কেন, একটি বিভাগে স্কোর কমে গেলে ভর্তির সুযোগ না-ও পেতে পারেন। পরীক্ষা দেওয়ার আগেই জেনে নিন ন্যূনতম কত স্কোর প্রয়োজন।
প্রস্তুতি
আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ে উত্কণ্ঠার কিছু নেই। নিয়মিত প্রস্তুতি নিয়ে যথেষ্ট ভালো স্কোর করা সম্ভব। শুরুতেই আপনার লক্ষ্য ঠিক করে নিন। তবে ইংরেজিতে আপনার এত দিনকার যা দক্ষতা, সে অনুযায়ীই লক্ষ্য ঠিক করবেন। রাতারাতি ভালো স্কোর করা সম্ভব নয়। আবার ইংরেজিতে আপনি যথেষ্ট দক্ষ হলেও কোনো প্রস্তুতি ছাড়া পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ স্কোর করা সম্ভব নয়। রোজকার কাজের মধ্যেই অন্তত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখুন এ জন্য। কত দিন ধরে প্রস্তুতি নেবেন, এটা আপনার দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। অন্তত তিন মাস সময় হাতে রাখা ভালো। প্রশ্নপত্র সমাধান করাটা প্রস্তুতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঘড়ি ধরে প্রশ্নপত্র সমাধান করুন। সম্ভব হলে পরীক্ষার পরিবেশে একসঙ্গে সব অংশের পরীক্ষা দিন। কেমব্রিজ থেকে প্রকাশিত আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নীলক্ষেতে কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো সমাধান করুন। বাজারে অসংখ্য বই পাবেন। তবে সবই নির্ভরযোগ্য এ কথা বলা যায় না। এ পরীক্ষার জন্য কোচিং করবেন কি না এটা সম্পূর্ণ আপনার সিদ্ধান্ত। তবে যা-ই করুন বাড়িতে নিজে পড়াশোনা করতে হবে। আইইএলটিএস নিবন্ধনের সময় প্রস্তুতির জন্য দুটি ছোট বই দেওয়া হয়। এগুলো ভালোমতো পড়ুন ও সমাধান করুন। ব্যাকরণের অনেক খুঁটিনাটি জানতে পারবেন। আবার এমন অনেক বিষয়, যা স্কুল-কলেজে পড়েছেন কিন্তু এখন মনে নেই, তা ঝালিয়ে নিতে পারবেন। এ পরীক্ষা নিয়ে অনেকের কাছ থেকে অনেক রকম কথা শুনতে পাবেন। এতে দ্বিধা বা উত্কণ্ঠায় ভুগবেন না। আইইএলটিএস সম্পর্কে যেকোনো তথ্য পেতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হলো ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি, বাংলাদেশ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিতে প্রস্তুতির জন্য প্রচুর ভালো বই পাবেন। তবে এগুলো ব্যবহারের জন্য লাইব্রেরির সদস্য হতে হবে। নীলক্ষেত থেকে যেনতেন বই কিনে অর্থ ও সময় নষ্ট না করাই ভালো। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, আইডিপি অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের সরাসরি তত্ত্বাবধানেই আইইএলটিএস হয়। তাদের কাছ থেকেই যখন সরাসরি তথ্য পাচ্ছেন, তখন অন্য কোথাও যাওয়াটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
শুরুতেই একটি মডেল টেস্ট দিন। এতে নিজের দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
কত নম্বর পেলে স্কোর কেমন হবে, এটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে পারেন।
ভুল বানানের জন্য নম্বর কমে যায়। বানানে সতর্ক হোন।
যে কয় শব্দে উত্তর দিতে বলা হয়, সে কয় শব্দই লিখতে হবে। দুটি শব্দের মধ্যে উত্তর লিখতে বললে আপনি এক বা দুই শব্দ ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু দুইয়ের বেশি শব্দ হলে নম্বর পাবেন না।
ভুল উত্তরের জন্য কোনো নম্বর কাটা যায় না। কাজেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করুন।
স্পিকিংয়ে (speaking) ভালো করতে হলে বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস করুন। অনেকে খুব ভালো ইংরেজি জানেন। কিন্তু বলতে অসুবিধা বোধ করেন। এ পরীক্ষার জন্যই নিয়মিত প্রস্তুতি নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্নপত্র সমাধান করে আপনি নিজেই অনেকখানি মূল্যায়ন করতে পারবেন। তবে আরও নির্ভরযোগ্যতার জন্য মক টেস্ট (Mock Tast) দিতে পারেন। ব্রিটিশ কাউন্সিল, উইংসসহ (Wings) বিভিন্ন কোচিং সেন্টার যেমন সাইফুরস, মেন্টরস, গেটওয়েতে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে মকটেস্ট দেওয়া যায়।
পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জেনে নিন।
কোথায়, কীভাবে পরীক্ষা দেবেন
বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপির আয়োজনে আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়া যায়। প্রতি মাসেই নির্দিষ্ট তারিখে দুই বা তিনবার পরীক্ষা দেওয়া যায়। ওয়েবসাইটে অথবা ফোন করে পরীক্ষার তারিখ জেনে নিতে পারেন। সিটসংখ্যা সীমিত থাকে। যে তারিখে পরীক্ষা দেবেন তার অন্তত দেড় মাস আগে নিবন্ধনের জন্য যোগাযোগ করুন। দুই সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। পরীক্ষার ফি মোটামুটি ১০ হাজার টাকা। পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পাসপোর্ট এবং দুই কপি পাসপোর্ট আকারের রঙিন ছবি লাগবে। ছবি ছয় মাসের বেশি পুরনো হলে তা গ্রহণ করা হবেনা। চশমা পরা অবস্থায় তোলা ছবিও গ্রহণযোগ্য নয়। আইইএলটিএস স্কোরের মেয়াদ দুই বছর। এরপর প্রয়োজনে আবার পরীক্ষা দিতে হবে। স্কোর আশানুরূপ না হলে মোটামুটি তিন মাস পর আবার পরীক্ষা দেওয়া যায়।
আইডিপির তত্বাবধানে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে পরীক্ষা দেয়া যাবে। যোগাযোগ: আইডিপি ঢাকা- ৯৮৮৩৫৪৫ বর্ধিত-২৭। চট্টগ্রাম- ০৩১৬২৬২৯০। ওয়েবসাইট-
www.bangladesh.idp.comব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটে পরীক্ষা দেয়া যায়।
ফোন: ঢাকা- ৮৬১৮৯০৫, চট্টগ্রাম- ০৩১৬৫৭৮৮৪-৬, সিলেট-৮২১৮১৪৯২৫।
ওয়েবসাইট:
www.britishcouncil. org/ bangladesh
IELTS ওয়েবসাইট: www. ielts.org
উত্তরপত্র স্যাম্পল
ইিন্টসঃ
স্পীকিং এর জন্য একটা ছোট্ট টিপস-স্মিতমুখে নম্রস্বরে, eye contact রেখে জবাব দেবেন, সেই সাথে confident থাকবেন। আরেকটা ব্যাপার, স্পীকিং এর যে কিউ কার্ড অংশ থাকে, সেটা সম্পর্কে বলার সময় খেয়াল রাখবেন যেন আপনি থেমে না যান, বরং পরীক্ষক আপনাকে থামিয়ে দেন-এমনটা হলে সাধারণত ৯০% সম্ভাবনা যে অন্তত স্পীকিং এ ৬.৫ পাচ্ছেন।
রাইটিং এর টিপস হচ্ছে যে Task-2 তে অন্তত ৪টি প্যারা লিখবেন-
১. সূচনা,
২. পক্ষে/১ম পক্ষ সমর্থন,
৩. বিপক্ষে/২য় পক্ষ সমর্থন,
৪. নিজের মতামত (পক্ষ/বিপক্ষ না ১ম বিষয়/২য় বিষয় সমর্থন করেন), কোন অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর যদি Task-2 এর প্রশ্নে চাওয়া হয় (যেমন-আপনি কি মনে করেন যে শিশুদের অতিরিক্ত টিভি দেখা বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ) এবং সমাপ্তি।
যদি academic module এ পরীক্ষা দেন, তাহলে Task-1 এ কমপক্ষে ৩টি প্যারা লিখবেন-
১. সূচনা, অর্থাৎ প্রদত্ত গ্রাফ কী নির্দেশ করে,
২. যে গ্রাফ থাকবে তার x অক্ষের সাপেক্ষে y অক্ষের পরিবর্তন বা y অক্ষের সাপেক্ষে x অক্ষের পরিবর্তন বর্ণনা,
৩। ২য় প্যারার তথ্যের ভিত্তিতে প্রাপ্ত সিধান্ত ও সমাপ্তিমূলক বাক্য।
যদি general module এ পরীক্ষা দেন, তাহলে ও task-1 এ ৩টি প্যারা লিখবেন-
১. সূচনা (যেভাবে স্কুল/কলেজে english letter এর সূচনা লিখতেন, কিছুটা তার মতই, বই এর উদাহরণে পাবেন)
২. প্রশ্নে উল্লেখিত পয়েন্টের বর্ণনা
৩. সিদ্ধান্ত/ক্ষমা প্রার্থনা/অনুরোধ/আদেশ (যেভাবে প্রশ্নে চাওয়া হবে) উল্লেখ করণ
বই পড়তে চাইলে এই সাইট থেকে download করতে পারবেন।
IELTS prepartionউদাহরণ- মনে করুন, আপনাকে দেওয়া হল ৫ বছরে কোন দেশের খাদ্যাভ্যাসের গ্রাফ বা ছক। এক্ষেত্রে ধরা যাক x অক্ষে বছর (x অক্ষ হচ্ছে যেটা নিচে আড়াআড়ি থাকে, আর y অক্ষ হচ্ছে যেটা খাড়াভাবে থাকে) আর y অক্ষে ঐসব খাদ্যের প্রত্যেকটির পরিমাণ (প্রতি বছরে) দেওয়া আছে (নিচের ছবি দেখুন)
এক্ষে্ত্রে যা করবেন সেটা হল যে প্রথমে ছকটা কি বুঝাচ্ছে সেটা ১ম প্যারায় (৮ নং মন্তব্য দ্রষ্টব্য)বলবেন, যেমন এক্ষেত্রে এটা হবে খ্যাদ্যাভাস পরিবর্তনের হার। এরপর x অক্ষে দেওয়া বছর অনুযায়ী কোন বছরে কি খাদ্য খাওয়া হয় সে ব্যাপারে আলোচনা করবেন (লেখার ২য় প্যারাতে),অথবা y অক্ষে দেওয়া খাদ্যের পরিমাণ কোন বছরে কেমন হয়, সেটা বর্ণনা করবেন। এরপরে সবশেষে ৩য় প্যারাতে বলবেন যে এই ছক থেকে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন সম্পর্কে আপনি কি ধারণা পেলেন। একটা মডিউল খারাপ হলে ভেঙ্গে পড়বেননা, বা ঐটা খারাপ হয়েছে আর বাকিগুলো ভালো করে কি হবে এমন চিন্তা ভুলেও আনবেননা। দেখবেন অন্য মডিউলের মার্ক দিয়ে ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারবেন।
লিসনিং ও রিডিং এ সিংগুলার ও প্লুরালে ভুল করলে পুরো নাম্বার কাটে। রিডিং হচ্ছে কঠিনতম ভাগ। রিডিং এর পাশাপাশি প্রশ্ন পড়ার অভ্যাস করবেন। আর লিসেনিং এর জন্য প্রচুর ইংরেজী কার্টুন ছবি দেখতে পারেন ও বিবিসি/সিএনএন শুনতে পারেন।