বিশ্বের বনভূমি ধ্বংসের পরিমাণ ঠিক কত তা জানার জন্য এক নতুন ধরণের মানচিত্র তৈরি করেছেন আমেরিকার বিজ্ঞানীরা।
মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা নাসার ল্যন্ডস্যাট উপগ্রহ কর্মসূচির উপাত্ত ব্যবহার করে এই বৈশ্বিক মানচিত্র তৈরি করেছেন। এতে দেখা যাচ্ছে, আমাজনের বনভুমি উজাড় হওয়া কমানো গেছে, কিন্তু সার্বিকভাবে পৃথিবীতে বনভূমি ধ্বংসের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর ঠিক কতখানি জায়গা আসলে বনভূমিতে ঢাকা, তাও বোঝা যাবে সম্পূর্ণ ইন্টারএ্যাকটিভ এই মানচিত্র থেকে। জানা যাবে, এই সহস্রাব্দে কতখানি বনভূমি ধ্বংস হয়েছে, বা নতুন কতখানি সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু যুক্তরাজ্য আর বোর্ণিওর বিজ্ঞানীরা এমন কিছু বিষয় এই মানচিত্র থেকে জানতে পেরেছেন - যা খানিকটা উদ্বেগজনকও বটে। যে পাম গাছ থেকে তেল উৎপাদন করা হয় - দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতে সেই পামগাছের ক্রমবর্ধমান ক্ষেতগুলোকেও এই মানচিত্রে বনভূমি বলে দেখানো হচ্ছে।
কিন্তু পরিবেশের ওপর এই সব পামক্ষেতের প্রতিক্রিয়া হতে পারে রীতিমত নেতিবাচক। বোর্নিওর ওই নিরক্ষীয় বনাঞ্চল যদি পামগাছের বাগানের চাপে হারিয়ে যায়, তার প্রতিক্রিয়াই বা পরিবেশ এবং জীববৈচিত্রের ওপর কি হবে?
গবেষক ড. টিম ককরোল বলছেন, "পামের ক্ষেতকে এই মানচিত্রে বনভূমির সম্প্রসারণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু পামগাছের ক্ষেত আর প্রাকৃতিক বনভূমির মধ্যে বিশাল তফাৎ। প্রাণবৈচিত্রের দিক থেকেও এটা প্রায় বনভূমির সাথে একটা কংক্রিটের কার-পার্কের তুলনা করার মতো।"
তবে এই গবেষণাপত্রের মূল রচয়িতা মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ম্যাথিউস হ্যানসেন বলছেন, এটা একটা সমৃদ্ধ মানচিত্র। শুধু বনভূমি নয়, জলাভূমি, নগরায়ন, বা পৃথিবীর কতখানি জমি ফসল আবাদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে - এগুলো সম্পর্কেও আমরা এই মানচিত্র থেকে জানতে পারছি।
তবে এই সমস্ত অসঙ্গতিগুলো দূর করার পদক্ষেপও তারা নিচ্ছেন – যাতে ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম বনাঞ্চলের মধ্যে তফাৎগুলো এতে পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত করা যায়।