আপনার রান্না ঘরেই রয়েছে ব্যথা মুক্তির যে ৪টি ঔষধ!
ইদানিং আমাদের একটি অভ্যাস গড়ে উঠেছে। আর তা হল অল্প অসুখ-বিসুখ হলেই আমরা সবার প্রথমে ঔষধ খুঁজি। এটা অত্যন্ত খারাপ একটি অভ্যাস। আমরা অনেক ছোটখাটো ও যন্ত্রণাদায়ক রোগের চিকিৎসা ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে করতে পারি। আর এই প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করতে আমাদের লাগে রান্নাঘরের কিছু খাদ্য।
ডাক্তার ও গবেষকদের মতে খাদ্য ওষুধের মত নয়, বরং খাদ্যই ওষুধ। অনেক খাদ্যই আছে যেগুলো ওষুধের মত কাজ করে, কিন্তু আমরা না জেনে আগে ওষুধের পেছনে ছুটি। প্রাকৃতিক ভাবে যে খাদ্য যে ওষুধের কাজ করে তা ওষুধের থেকে বেশি কার্যকরী। তবে আসুন জেনে নেই কিছু কিছু রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা যা খাবারের ঔষধি গুনের মাধ্যমে দূর করা যায়।
মাইগ্রেইনের ব্যাথানাশক হিসেবে কাজ করে কফি
মাইগ্রাইনের ব্যথা উঠেছে? চট করে দেখে নিন বাসায় কফি আছে কিনা। কফি পানে অতি দ্রুত ব্যাথা কমে যাবে। ন্যাশনাল হেডেক ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অনুযায়ী ক্যাফিন ব্যথানাশক ঔষধ হিসেবে কাজ করে মাইগ্রেইনের ক্ষেত্রে। মাত্র ১ কাপ কফি মাইগ্রেইনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আর আপনি যদি দ্রুত কার্যকরী ফল পেতে চান তবে ব্যথানাশক ঔষধ যা আপনি সাধারণত খেয়ে থাকেন, তা খেয়ে ১ কাপ কফি পান করুন। অতি দ্রুত আপনার মাইগ্রাইনের ব্যথা দূর হবে।
পিঠ ব্যাথা দূর করতে আঙুর
যারা অফিসে কিংবা বাড়িতে বসা কাজ বেশি করে থাকেন প্রায় প্রত্যেকেই পিঠব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। পিঠব্যথায় আক্রান্তদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে ওহিও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা। গবেষণায় দেখা যায় পিঠ ব্যথা নিরাময় করতে আঙুরের কার্যকারিতা যে কোন ব্যাথানাশক ঔষধের চাইতে অনেক বেশি। গবেষকরা বলেন, দৈনিক এক কাপ পরিমাণ আঙুরের রস বা আঙুর খেলে ধমনীর আড়ষ্টতা দূর হয়। ধমনী শিথিল হয় ও রক্ত সঞ্চালন ঠিক ভাবে হয়। এতে করে পিঠের ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যু ঠিক হয়ে আসে ও পিঠ ব্যথা দূর হয়ে যায়। সুতরাং যাদের পিঠ ব্যাথা আছে তারা মৌসুমে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আঙুর রেখে পিঠ ব্যথা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
পেটব্যাথা রোধে মাছ
অনেকেই বদহজম, অন্ত্রের প্রদাহ জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। একটু কিছু খেলেই বদহজম হয়ে মেজাজ খিটখিটে থাকে অনেকেরই। মেজাজ খিটখিটে করবেন না। ভেবে দেখুন তো এই সপ্তাহে আপনার মাছ খাওয়া হয়েছে কিনা, অথবা খাওয়া হলে কি পরিমাণে হয়েছে। কারন গবেষকদের মতে সপ্তাহে ১৮ আউন্সের মত মাছ খাওয়া হলে পেটব্যাথা সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান হতে পারে। মাছে বিদ্যমান ফ্যাটি এসিড ইপিএ এবং ডিএইচএ এর রয়েছে পেটের অন্ত্রের প্রদাহ জনিত সকল রোগ দূর করার ক্ষমতা। যা যেকোন প্রেসক্রিপশনে উল্লেখিত ঔষধের চেয়ে বেশি কার্যকরী। ইনফ্লেমেশন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি, জৈব রসায়নবিদ ব্যারি সিয়ার্স এর মতে মাছের ফ্যাটি এসিড ইপিএ এবং ডিএইচএ সমগ্র গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ফাংশন উন্নত করতে পারে ও প্রদাহ জনিত সকল রোগের হাত থেকে রেহাই দিতে পারে। সব থেকে ভালো ফলাফলের জন্য তৈলাক্ত মাছ খাওয়া উচিত।
দীর্ঘস্থায়ী ব্যাথা দূর করতে হলুদ
অনেকেই বাত বা মাংসপেশি ও হাড়ের জোড়ায় দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় আক্রান্ত হন। ৩ থেকে ৬ মাস ব্যাপী এই দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার নিরাময় খুঁজে থাকেন অনেকেই। কিন্তু বলা হয় এই ব্যথা পুরোপুরি ঠিক করা সম্ভব নয়। ঔষধের গুনে শুধুমাত্র কমিয়ে রাখা যায়। এই ধারনা সম্প্রতি ভুল প্রমান করেছেন গবেষকরা। তারা হলুদের মধ্যে এমন কিছু উপাদান খুঁজে পেয়েছেন যা ব্যাথা উৎপাদক সিস্লক্সিজেনেস২ হরমোনটি দূর করতে সক্ষম। হলুদের এই সক্রিয় উপাদানটির নাম কারকিউমিন। পুষ্টি গবেষকরা দীর্ঘস্থায়ী ব্যাথা দূর করার জন্য প্রতিদিন হলুদ খাবার পরামর্শ দেন। আপনি ইচ্ছে করলে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। আর তা না হলে যে কোন ভাজি ও তরকারিতে রান্নার সময় হলুদ দিয়ে খাবেন।