শেষ মুহূর্তে পাওয়া যায় পৃষ্ঠপোষক, কিন্তু ভিসা-জটিলতায় বিশ্ব যুব দাবায় খেলা নিয়েই সংশয়েই পড়ে যায় ফাহাদ রহমান। ঢাকা বিমানবন্দর পেরোলেও দুবাই বিমানবন্দরে আটকে পড়ে ফাহাদ ও তার বাবা নজরুল ইসলাম। ১২ ঘণ্টা পর আয়োজকেরা উদ্ধার করেন তাদের। টুর্নামেন্ট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ভিসা মেলে। এত প্রতিকূলতা পেরিয়েও যুব দাবায় রুপা জিতেছে ফরিদপুরের ১০ বছরের বালক।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বহু প্রবাসী বাংলাদেশির বাস। আল আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মিলনায়তনে বিশ্ব যুব দাবার আয়োজন, সেখানকার ডিপার্টমেন্ট স্টোরে চাকরি করেন বাংলাদেশের ইসমাইল। জিতলেই তিনি ফাহাদকে দিতেন কিটক্যাট, জুস, চকলেট। শেষে দেশকেই বড় এক গৌরব উপহার দিয়েছে ফাহাদ, বিশ্ব যুব দাবার অনূর্ধ্ব-১০ গ্রুপের ব্লিৎজ বিভাগের রুপা। ফাহাদকে প্রতিদিনই উৎসাহ দিতেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। টুর্নামেন্টের শেষ দিনে ফাহাদের মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বেঁধে দেন আল আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষক উল্লাস। লাল-সবুজ পতাকা, একগাদা চকলেট আর রুপার পদকটা নিয়ে পরশু রাতে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ ফিদে মাস্টার।
স্ট্যান্ডার্ড দাবায় ফাহাদ ১১ ম্যাচে সাড়ে ৮ পয়েন্ট পেয়ে পঞ্চম হয়েছে। ফাহাদের দাবি, ‘আমি তৃতীয়ই হয়েছি। প্রথম ম্যাচে ওয়াকওভার পেয়েছিলাম। কিন্তু তিনজনের সমান পয়েন্ট থাকলেও ওয়াকওভার পাওয়ায় আরবিট্রেটাররা আমাকে পঞ্চম বানিয়েছেন।’
দ্রুতগতির ব্লিৎজে সাত ম্যাচের ছয়টি জিতে রানারআপ হয়েছে ফাহাদ। কিন্তু হতে পারত চ্যাম্পিয়ন, ‘ভেবেছিলাম চ্যাম্পিয়ন হব। কিন্তু তাড়াহুড়া করে দ্বিতীয় রাউন্ডে ড্র করে বসি। আর একটা রাউন্ড খেলার সুযোগ পেলেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারতাম।’
ব্লিৎজে ফাহাদ হারিয়েছে ভারতের ফিদে মাস্টার রাম অরবিন্দকে। যাকে ভারতের খুদে কার্লসেন বলা হয়। তবে জার্মানির মার্কো দবরিকভকেই সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ মনে হয়েছে ফাহাদের কাছে।
ফিদে মাস্টার ফাহাদের এখনকার চাওয়া দ্রুতই আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়া। মূল স্বপ্নটা অবশ্য এর চেয়েও বড়, বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া, ‘আগামী এপ্রিলে বিশ্ব জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে চাই। সেখানে চ্যাম্পিয়ন হলে সরাসরি গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব দেওয়া হয়। আমি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার হতে চাই।’