পৃথিবীর দুই বড় শত্রু ঠেকানোর যুদ্ধ

Author Topic: পৃথিবীর দুই বড় শত্রু ঠেকানোর যুদ্ধ  (Read 956 times)

Offline mahmud_eee

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 591
  • Assistant Professor, EEE
    • View Profile
পৃথিবীর জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে আছে ‘১৯৫০ ডিএ’ ও ‘২০১৩টিভি ১৩৫’ নামের দুটি গ্রহাণু। ২০৩২ ও ২৮৮০ সালে এই গ্রহাণু  দুটির সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হানলে তা ভয়াবহ এক ধ্বংসযজ্ঞই হবে। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা এই ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকানোর যুদ্ধে ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছেন। তাঁরা আশা করছেন, পৃথিবীতে আঘাত হানার আগেই এইসব গ্রহাণুকে ঠেকিয়ে দিতে পারবেন তাঁরা।

মানবসভ্যতার জন্য হুমকি ‘১৯৫০ ডিএ’

দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবী বাসীর কাছে আতঙ্ক হয়ে রয়েছে ‘১৯৫০ ডিএ’ নামের গ্রহাণুটি। গবেষকেরা বলছেন, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণুটি। পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দাবি করেছেন, ভয়ংকর ও দ্রুতগতির গ্রহাণুটির সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষে মানব সভ্যতা বিলীন হয়ে যেতে পারে। তবে আশার কথা হচ্ছে, গ্রহাণুর গতি পরিবর্তন ও মহাকাশে এটিকে চূর্ণবিচূর্ণ করে এর গতি থামানোর সম্ভাবনাও তৈরি করা গেছে।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, বিশাল আকারের এই গ্রহাণু আঘাত হানলে বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হবে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা দাবি করছেন, মহাকাশে যদি ‘১৯৫০ ডিএ’গ্রহাণুকে আঘাত করে টুকরো করে  দেওয়া হয় তবে তা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এবং এর প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে। এর পরিবর্তে এই গ্রহাণুর পৃষ্ঠে পরিবর্তন এনে যদি গতি পরিবর্তন ও একেবারে মহাকাশে একে ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয় তবেই পৃথিবীকে এই গ্রহাণুর আঘাত থেকে বাঁচানো যাবে।

ঠিক কবে আঘাত হানতে পারে এই গ্রহাণু? এ নিয়ে অবশ্য এখনই হা-হুতাশ করার কিছু নেই। এটি ২৮৮০ সালের ১৬ মার্চ পৃথিবীর কাছে আসতে পারে। অর্থাত্ ৩৫ প্রজন্ম পরে এই গ্রহাণুটি পৃথিবী বাসীর জন্য হুমকি হবে। আর পৃথিবীর সঙ্গে এর সংঘর্ষে জড়ানোর আশঙ্কা ৩০০ ভাগের এক ভাগ। ধেয়ে আসা গ্রহাণুটির ব্যাস এক কিলোমিটার। এটি ঘণ্টায় ৩৮ হাজার (৬১ হাজার ১৫৫ কিলোমিটার) মাইল গতিতে পৃথিবীতে আঘাত করতে পারে।

‘২০১৩টিভি ১৩৫’আতঙ্কের নাম ‘২০১৩টিভি ১৩৫’

৩৫ প্রজন্ম নয়, এ প্রজন্মের মানুষের জন্যই আরেকটি আতঙ্কের নাম ‘২০১৩টিভি ১৩৫’ গ্রহাণু। গত বছরে সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ‘২০১৩টিভি ১৩৫’ গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে বলে আশংকা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার গবেষকেরা এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন। এদিকে, আগামী ১৮ বছরের মধ্যে পৃথিবীর কক্ষপথে গ্রহাণুটি চলে আসতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন,গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর  জন্য বিপজ্জনক গ্রহাণুটি কক্ষপথ অতিক্রম করেছে। তবে এটি আবার ২০৩২ সালের ২৬ আগস্ট পৃথিবীর কক্ষপথের কাছে চলে আসবে। ক্রিমিন অ্যাস্ট্রো-ফিজিক্যাল অবজারভেটরির খুঁজে পাওয়া এ গ্রহাণুটিকে পৃথিবীর জন্য দ্বিতীয় বিপজ্জনক বস্তু হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন, বিশালাকার এ গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে যে ধ্বংসযজ্ঞ তৈরি হবে, তা দুই হাজার ৫০০ পারমাণবিক বোমার সমান। এক হাজার ৪৪০ ফুট প্রশস্ত গ্রহাণুটি আঘাত হানলে পৃথিবীর ১০ লাখ বর্গমাইল এলাকা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে কি এই গ্রহাণু আমাদের আতঙ্কিত করার জন্য যথেষ্ট? গবেষকেরা এখনই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ‘২০১৩টিভি ১৩৫’ নামের গ্রহাণুটির পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা খুবই কম। ৪৯ হাজার বারের মধ্যে মাত্র একবার এটি পৃথিবীতে আঘাত করতে পারে। সম্ভাব্যতার বিবেচনায় পৃথিবীতে গ্রহাণুটির আঘাত হানার আশঙ্কা ০.০০২ শতাংশ।
Md. Mahmudur Rahman
Assistant Professor, EEE
FE, DIU