মেদ যেন না হয় বা হয়ে গেলে যা করবেন

Author Topic: মেদ যেন না হয় বা হয়ে গেলে যা করবেন  (Read 1016 times)

Offline chhanda

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 298
    • View Profile

মেদ যেন না হয় বা হয়ে গেলে যা করবেন


মেয়েদের শরীরে মেদ অনেক সহজেই জমে। বিশেষ করে ৩০-৩২ বছর বয়সে মেয়েদের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই মেদ জমে। এই মেদ প্রথমত প্রকট হয় পেটে। বর্তমান সময়ে পেটের মেদ আমাদের মাথাব্যথার একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি যে শুধু সৌন্দর্যহানী করে তা নয়, শরীরে যে বিভিন্ন অসুখ বাসা বাঁধছে তাও নির্দেশ করে। মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩৫.৫ ইঞ্চির বেশি পেটের সাইজ থাকলে হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস হতে পারে। বিশাল পেট কিন্তু আপনার সমস্ত সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়, আপনি সবার হাসির পাত্র হন। যারা সারাদিন বসে কাজ করেন, তেমন কোনো কাজকর্ম বা নড়াচড়া করেন না, তাদের জন্য এটা প্রকট আকার ধারণ করে। পেটের মেদ আর শরীরের অন্য অংশের মেদকে এক জিনিস ভাবলে ভুল করবেন। পেটের মেদ যেহেতু লিভার, কিডনি ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সাথে লেগে থাকে, সেহেতু এটি আপনার জন্য অনেক বড় বিপদ এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। মেদ কমানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে এই লেখা।

মেদ যেন না হয় বা হয়ে গেলে যা করবেন

* প্রচুর আমিষ (প্রোটিন) সমৃদ্ধ খাবার যেমন—মাছ, ডাল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খান। প্রোটিন শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় ও চর্বি পোড়ায়। চর্বি জাতীয় খাবার থেকে সবসময় দূরে থাকুন।

* পেটের মেদ কমাতে ৮০ ভাগ ভূমিকা রয়েছে সঠিক খাদ্যের। সঠিক খাদ্য বলতে বোঝানো হয় যেগুলো ক্যালরি কমাতে সাহায্য করে, যেমন—প্রোটিন বা আমিষ, শাক-সবজি, শস্যদানা ইত্যাদি। খাদ্য তালিকা থেকে যথাসম্ভব চিনি দূরে রাখুন। চিনির বদলে সুক্রোলোজ (যা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সুগার ফ্রি নামে পাওয়া যায়) ব্যবহার করুন। প্রতিবার চায়ের কাপে চিনির বদলে মধু ব্যবহার করুন। এতে চিনির বিকল্পও হবে, পাশাপাশি পেটের মেদও কমবে।

* আপনার যদি রাত জেগে কাজ করার অভ্যাস থাকে তাহলে আরেকবার ভাবুন। কারণ অসময়ের ঘুম আপনার শরীরের জৈবিক ছন্দ নষ্ট করে দেয়। এর ফলে আপনার শরীরে খাদ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। পেটে চর্বি জমার প্রবণতা প্রায় ৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও শরীরে হরমোনের ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যায়। যা আপনার মুটিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই মেডিক্যাল সায়েন্সের ভাষায় রাতের ৭ ঘণ্টা ঘুমই শরীর ঠিক রাখতে শ্রেষ্ঠ।

* বেশিরভাগ মানুষই মনে করে জিম করা বা কষ্টকর ব্যায়ামই দিতে পারে পেটের মেদ থেকে মুক্তি। কিন্তু এ ধারণা ভুল। কারণ ছোট ছোট কিছু ব্যায়াম আপনি যদি নিয়মিত করতে পারেন তাবে এগুলোই আপনার জন্য যথেষ্ট। যেমন—ফ্লোর ক্রাঞ্চেস্, বার-পিস, সিঙ্গেল লেগ স্কোয়াট, পুশ-আপস্, চেয়ার ডিপস্ ৩০ সেকেন্ড করে দিনে ৪-৫ বার করে দেখুন। এর পাশাপাশি প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণ হাঁটুন।

* ভিটামিন সি সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। টক জাতীয় ফলমূলে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। এই উপাদানটি আমাদের শরীরে সেই হরমোনটির ব্যালেন্স ঠিক রাখে যেটি শরীরে মেদ নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন সি কারনিটিন নামক প্রয়োজনীয় একটি উপাদান তৈরি করে, যা শরীরে চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে।

* পানি শরীরের ভেতরটা সতেজ করে। তাই প্রচুর পানি পান করুন। জুস, কোল্ড ড্রিংকস, আঙুরের রস খেলে হবে না। বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে। পানি শরীরের টক্সিন বা বিষকে বের করে দিয়ে মাংসপেশি গঠনেও সাহায্য করে।

* বাড়তি চর্বি পোড়ানোর জন্য প্রতিদিন কিছু ওজন তুলুন। প্রচলিত ব্যায়ামের চেয়ে এটি অনেক কার্যকর। তবে বেশি ওজন তুলতে গিয়ে যেন ঘাড় ও কোমরের সমস্যা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

* অনেকে মেদ কমাতে গিয়ে খাওয়া একেবারেই কমিয়ে দেন। এতে প্রয়োজনীয় শক্তির অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই ঢালাওভাবে সব খাবার না কমিয়ে প্রথমে তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার কমান, এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য খাবার কমাবেন। তবে অবশ্যই তা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত।

* কোন পরিশ্রম ছাড়া আমরা যেই কাজটি করতে পারি তা হলো সঠিক নিয়মে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া। বেশির ভাগ মানুষই হয় দ্রুত না হয় অনেকক্ষণ পর পর শ্বাস গ্রহণ করে। যদি এটি একটা ছন্দে করা যায়, অর্থাত্ আস্তে আস্তে শ্বাস গ্রহণ ও নিঃশ্বাস ত্যাগ করা যায় তাহলে পেটের খুব ভালো একটা ব্যায়াম হবে।

* খুব দীর্ঘ পথ হাঁটা কিংবা একসাথে অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই বিভিন্ন সময়ে ভাগ করে অল্প অল্প ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি করুন। কাজের ফাঁকেও এটা করতে পারেন।

* ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন। মদ ও সিগারেট শরীরে মেদ জমায়। অ্যালকোহল শরীরে চর্বি পোড়াতে বাধা দেয়।