হতে হবে আশাবাদী: বিল গেটস

Author Topic: হতে হবে আশাবাদী: বিল গেটস  (Read 1544 times)

Offline abdussatter

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 373
  • Test
    • View Profile
হতে হবে আশাবাদী: বিল গেটস
« on: September 24, 2014, 03:51:24 PM »
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের অন্যতম। তাঁর জন্ম ১৯৫৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দেন এবং মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মাইক্রোসফটের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে জনকল্যাণমূলক নানা কাজে যুক্ত আছেন।

বিল গেটসঅভিনন্দন, ২০১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ মেলিন্ডা ও আমি আজ এখানে উপস্থিত হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত৷ তোমাদের এই ক্যাম্পাস অনেক দিক থেকেই অসাধারণ৷ তবে আমাদের যদি একটি শব্দে বলতে হয় স্ট্যানফোর্ডের কোন বিষয়কে আমরা সবচেয়ে ভালোবাসি, তা হবে আশাবাদী মনোভাব৷
১৯৭৫ সালে এই আশা নিয়েই আমি বোস্টনের এক কলেজ ছেড়ে এসে কাজে নেমে পড়েছিলাম৷ আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, কম্পিউটার ও সফটওয়্যার পৃথিবীজুড়ে মানুষের জীবনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করতে পারবে, পৃথিবীকে আরও অনেক উন্নত করে তুলবে৷ কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে৷ আমরা যা শিখেছি, আজ সেসব তোমাদের বলতে চাই৷ আর জানাতে চাই, কীভাবে আমরা সবাই আরও অনেক মানুষের জন্য অনেক কিছু করতে পারি৷
যখন পল অ্যালেন আর আমি মাইক্রোসফট শুরু করেছিলাম, তখন আমদের লক্ষ্য ছিল কম্পিউটার ও সফটওয়্যারের ক্ষমতাকে সাধারণ মানুষের কাজে লাগানো৷ ১৯৯৭ সালে আমি ব্যবসার কাজে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় যাই৷ একদিন আমি কৌতূহলবশত শহরের একটু দূরে সোয়েটো নামে একটা জায়গায় যাই; এমন জায়গা আমি জীবনে কখনো দেখিনি৷ মাইক্রোসফট সেখানে একটি কমিউনিটি সেন্টারে কম্পিউটার ও সফটয়্যার বিতরণ করেছিল, যেভাবে আমেরিকায় আমরা কাজ করতাম৷ কিন্তু আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমি বুঝে গেলাম, এটা আমেরিকা নয়৷ এর আগে আমি দারিদ্র্যকে দেখেছিলাম পরিসংখ্যানে, নিজের চোখে নয়৷ সেখানে গিয়ে আমি দেখলাম, কীভাবে মানুষ বিদ্যুৎ, পানি, টয়লেট ছাড়াই বস্তিতে থাকছে৷ বেশির ভাগের পায়েই কোনো জুতা ছিল না, জুতা পায়ে হাঁটার মতো রাস্তাও ছিল না৷ যে কমিউনিটি সেন্টারে আমরা কম্পিউটার দান করেছিলাম, সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা ছিল না৷ তাই তারা ২০০ ফুট লম্বা তার দিয়ে ডিজেলচালিত একটি জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে কম্পিউটার চালিয়ে রেখেছিল৷ অবস্থা দেখে আমি ভালোভাবেই বুঝলাম, যে মুহূর্তে আমি আর আমার সঙ্গের লোকজন চলে যাব, তৎক্ষণাৎ এই জেনারেটরও অন্য কোথাও চলে যাবে৷ আর কমিউনিটি সেন্টারের লোকেরাও তাদের জীবনের অন্য হাজার সমস্যা সমাধানে ব্যস্ত হয়ে পড়বে; সেসব সমস্যা কখনো কম্পিউটার দিয়ে সমাধান করা যায় না৷
গণমাধ্যমের সামনে এসে আমি আগে থেকে তৈরি করে রাখা বক্তৃতা পড়ছিলাম৷ বলছিলাম, ‘সোয়েটো প্রযুক্তির বিভাজনকে ঘুচিয়ে দেওয়ার যাত্রায় একটি মাইলফলকের নাম৷’ কিন্তু মুখে যা-ই বলি, আমি বুঝতে পারছিলাম, এসব কথার কোনো অর্থ নেই৷
সোয়েটোতে যাওয়ার আগে আমি ভাবতাম, আমি পৃথিবীর সমস্যা বুঝি, কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলো নিয়েই আমার কোনো ধারণা ছিল না৷ আমার এত অসহায় লেগেছিল যে আমি নিজের বিশ্বাসকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলাম, আদৌ কি উদ্ভাবনের মাধ্যমে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব? আমি প্রতিজ্ঞা করলাম, দ্বিতীয়বার আফ্রিকায় পা দেওয়ার আগে আমাকে বুঝতে হবে দারিদ্র্য আসলে কী৷
অনেক পরে দক্ষিণ আফ্রিকায় আমি একটি যক্ষা হাসপাতাল দেখতে গিয়েছিলাম৷ সেটি একটি বিশেষ ধরনের যক্ষা রোগীদের জন্য, যাদের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫০ ভাগেরও কম৷ গোটা হাসপাতাল রোগীদের ভিড়ে উপচে পড়ছে৷ রোগীদের মধ্যে আমি এক নারীর সঙ্গে কথা বললাম, তার বয়স মাত্র ত্রিশের কোঠায়৷ সে আগে এক যক্ষা হাসপাতালে কাজ করত, একদিন তার নিজেরও যক্ষা ধরা পড়ে, সঙ্গে এইডস৷ সে জানত, তার দিন ফুরিয়ে এসেছে৷ আর তার মৃত্যুর পর যখন সেই বিছানা খালি হয়ে যাবে, সেখানে জায়গা করে নিতেও রোগীদের এক বিশাল লাইন অপেক্ষা করে আছে৷ তারা অপেক্ষা করছে সেই দিনের৷
আমি গাড়িতে উঠে সেখানকার এক ডাক্তারকে বললাম, ‘হ্যাঁ, আমি জানি এ ধরনের যক্ষা সারিয়ে তোলা মুশকিল৷ কিন্তু কোনো না কোনো উপায় নিশ্চয়ই আছে৷ এসব মানুষের জন্য আমাদের কিছু করতেই হবে৷’
আমি আজ আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি এ বছর আমরা যক্ষার এক নতুন ধরনের ওষুধের পরীক্ষা করতে যাচ্ছি৷ আগে যেখানে ১৮ মাস ধরে প্রায় দুই হাজার ডলার খরচের পরও শতকরা ৫০ জনের বেশি রোগীকে সুস্থ করা যেত না, এখন সেখানে ছয় মাসের চিকিৎসায় ১০০ ডলারের কম খরচেই শতকরা ৮০ থেকে ৯০ জন রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হবে৷ এখানেই আশাবাদের শক্তি নিহিত৷ কে বলেছে আমরা দারিদ্র্য কিংবা রোগব্যাধিকে মির্মূল করতে পারব না? আমরা অবশ্যই পারব৷ সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে অনুপ্রেরণা জোগায়৷ কিন্তু সমস্যাকে নিজের চোখে না দেখলে শুধু আশা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না৷
আমি হতাশাবাদীদের দলে নই৷ কিন্তু আমাদের স্বীকার করতে হবে যে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে যদি আমরা বৈষম্য দূরীকরণের কাজে না লাগাই, তাহলে ভবিষ্যতে আমরা এমন সব উদ্ভাবন নিয়ে বসে থাকব, যা পৃথিবীকে আরও বিভক্ত করে ফেলবে৷ উদ্ভাবন দিয়ে কী হবে, যদি তা স্কুলে শিক্ষার মান না বাড়ায়? যদি ম্যালেরিয়া নির্মূল করা না যায়, দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব না হয়, দরিদ্র কৃষকের অন্নের নিশ্চয়তা না থাকে?
তোমরা স্নাতকেরা অসংখ্য উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দেবে, পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ তোমাদের বয়সে আমি পৃথিবীকে যতটা চিনতাম, আমি বিশ্বাস করি, আজ তোমরা তার চেয়ে অনেক বেশি জানো৷ আমি যা করেছি, তোমরা তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু করতে পারবে, যদি তোমরা এতে তোমাদের মনপ্রাণ ঢেলে দাও৷ আমি সেই প্রত্যাশায় রইলাম৷

সূত্র: স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট।
১৫ জুন, ২০১৪ যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দেওয়া বিল গেটসের বক্তব্যের নির্বাচিত অংশের অনুবাদ: অঞ্জলি সরকার
(Md. Dara Abdus Satter)
Assistant Professor, EEE
Mobile: 01716795779,
Phone: 02-9138234 (EXT-285)
Room # 610

Offline diljeb

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 164
    • View Profile
Re: হতে হবে আশাবাদী: বিল গেটস
« Reply #1 on: December 02, 2014, 02:13:46 PM »
good to know...