নিজের পছন্দের সিনেমার সিডি কেনার জন্য অথবা রেফারেন্স বইয়ের জন্য কষ্ট করে দোকানে যাওয়া, চিঠি পাঠানোর জন্য পোস্ট-অফিসে দৌড়ঝাঁপ করা-এসবই এখন সেকেলে।
কারণ একটা মাত্র ক্লিকেই সামনে হাজির হয়ে যাবে পুরো বইয়ের ভাণ্ডার। এক ক্লিকেই চিঠি উড়ে যাবে হাজার মাইল। আজকের এই যুগে ব্যস্ততার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জীবনকে সহজ থেকে সহজতর করে দেয়ার প্রচেষ্টাগুলোও। আর তাই আজ এই বিশাল বিশ্ব যেন এই ক্ষুদ্র হাতের মুঠোয়।
কিন্তু ওই যে! আবারো সেই চিরায়ত বাণী।প্রত্যেকটি মুদ্রারই দুটো পিঠ থাকে।হাতের মুঠোয় ক্ষমতা থাকলে তার বিভিন্ন চমকের সাথে সাথে ভয় থাকে তার অপব্যবহারেরও। আর ঠিক এই ভয়টাই বাস্তব হয়ে দাঁড়িয়েছে এই একবিংশ শতাব্দির অদ্ভুত বিস্ময় ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে। আর এই ভয়ের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ‘শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার’-এর বিষয়টি।
বর্তমানে বাচ্চাদের লালন-পালনের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের চিন্তার ঝুলিতে যুক্ত হয়েছে নতুন বিষয়-ইন্টারনেট। হ্যাঁ! ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়তা হোক কী পারদর্শিতা-বড়দের চেয়ে কোন দিক দিয়েই পিছিয়ে নেই বাচ্চারা।
মা-বাবার সাথে পাল্লা দিয়ে এখন শিশুরাও সময়ে-অসময়ে ব্যবহার করছে ইন্টারনেট। সেটা স্কুলের প্রজেক্টের উদ্দেশ্যে হোক কিংবা নিজের পছন্দের কোনো গেম আর সিনেমা ডাউনলোডের জন্য। 'ইন্টারনেট' আজ শিশুর জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ব্রডব্যান্ড-ওয়াইফাইয়ের এই যুগে ইন্টারনেটে ব্রাউজ করা ঠিক পুতুল-গাড়ি দিয়ে খেলার মতই ছেলেখেলা। ছেলেখেলা হলেও অতটা সামান্য নয় ব্যাপারটি। বাবা-মা সন্তানের হাতে খেলনা তুলে দিয়ে যেভাবে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন, ইন্টারনেট-সংযোগ সুবিধা দিয়ে ঠিক ততোটাই চিন্তায় থাকেন।
কেননা ইন্টারনেট এমন এক জাদুরছড়ি যার প্রভাবে পুরো একটি ভবিষ্যৎ জাতি গড়াও যেমন সম্ভব তেমনি ধ্বংস করে দিতেও সময় লাগবে না। আর আজকের যুগে এই ধ্বংস ব্যাপারটাই কেন যেন প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে।
ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুল তথ্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অনেক শিশু-কিশোর-তরুন নিজেদের ঠেলে দিচ্ছে নানা অন্যায়-অপকর্মের দিকে। যার ফলে তারা ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে নৈতিকতা-মূল্যবোধ থেকে।তাই তাদের নিজেদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য,পরিবারের ভালোর জন্য এবং সর্বোপরি দেশের উন্নতির জন্য তাদেরকে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে ইন্টারনেটের ভালো দিকটির সাথে আর এরই সাথে তার মাঝে প্রবেশ করিয়ে দিতে হবে ভালো-খারাপের মাঝের পার্থক্য।
তবে তাদের খারাপের হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার একেবারেই বন্ধ করে দেয়াটাও হবে বোকামি। কেননা এর ফলে যেমন তারা জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে পড়বে তেমনি হঠাৎ করে ইন্টারনেটের ব্যবহার বন্ধ করার ফলে তারা হয়ে উঠতে পারে বেপরোয়া,লাগামহীন।
[Source-Internet]