রোজায় প্রথম দিকে দেখা যায় নানা শারীরিক সমস্যা। মাথাব্যথা, অবসন্ন ভাব। ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে উঠি আমরা। কিন্তু এই সময়ে দেখা যায় আমাদের ত্বকেও নানা সমস্যা। তার মধ্যে পানিশূন্যতা অন্যতম। রোজায় ত্বকের পানিশূন্যতা রোধ এবং ত্বকের যত্ন-আত্তি নিয়ে কথা বলেছেন বিন্দিয়া বিউটি পারলারের রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।
তিনি বললেন, রোজা রাখার কারণে পানি পানের পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। পানির অভাবে ত্বকের আর্দ্রতা কমে গিয়ে ত্বক প্রাণহীন ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া বেশি ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার কারণে ত্বকে ব্রণের উপদ্রব বেড়ে যায়। এই সময়ে ত্বকের একটু যত্ন নিলে ত্বক থাকবে সতেজ ও সজীব।
এ ব্যাপারে শারমিন কচির পরামর্শ হলো, ‘আমরা অনেকেই ইফতার কিংবা সেহ্রির পর একসঙ্গে অনেক পানি পান করি। যা মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ইফতারের পর পানি পান করা উচিত প্রতি ঘণ্টায় এক গ্লাস করে। কিংবা আধা ঘণ্টা পরপর। নিজের তৃষ্ণা অনুযায়ী। একসঙ্গে অনেকখানি পানি পান করা যাবে না। আর সেহ্রির সময়টাতেও করতে হবে এমন। সম্ভব হলে সময় শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে সেহ্রি খাওয়া শেষ করে অল্প অল্প করে পানি পান করতে হবে।
পানিশূন্যতা রোধে নিয়ম করে পানি পান ছাড়াও নজর দিতে হবে খাবারদাবারের দিকে। ভাজাপোড়া যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ত্বক ভালো রাখতে ইফতারিতে ভাজাপোড়া-জাতীয় খাবার কম খেয়ে ঘরে তৈরি ফলের রস ও শরবত খেতে হবে। ফল, দই, চিড়া ও শরবতে দিতে হবে প্রাধান্য।’
যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁরা অবশ্যই এই সময়ে টোনার জাতীয় প্রসাধনী এড়িয়ে চলবেন। টোনার-জাতীয় প্রসাধনী ত্বককে আরও শুষ্ক করে তুলতে পারে। এ সময়ে অনেকের ঠোঁট ফেটে যায়। তাঁরা রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে ভালো করে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে ঘুমাবেন। ত্বকের শুষ্কতা থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত ত্বকে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকের শুষ্কতা দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বক সজীব হবে।
আর ত্বকের যত্ন-আত্তির ক্ষেত্রে কিছু প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। ১ টেবিল চামচ কাঁচা হলুদের গুঁড়া ও ১ টেবিল চামচ চন্দন কাঠের গুঁড়ার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বকের ব্রণ দূর কারার পাশাপাশি ব্রণের দাগও দূর করবে। এটি ব্যবহার করতে হবে সপ্তাহে তিন দিন।
১ টেবিল চামচ পাকা পেঁপে চটকে তার সঙ্গে এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজনমতো চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখসহ পুরো গলায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। পানিশূন্য ত্বকে নিয়মিত কাঠবাদামবাটা, ঠান্ডা দুধ এবং গোলাপ জল দিয়ে তৈরি ফেস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এটি শুষ্ক ও পানিশূন্য ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
এ ছাড়া টমেটো, কলা, শসা একসঙ্গে মিলিয়ে প্যাক তৈরি করে নিতে পারেন। ইফতারের ঘণ্টা খানেক পর ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
সুত্রঃরূপ নকশা