পরীক্ষার কথা ভেবে অনেক সময় শিশুদের বুক ধুকধুক করে, জিব শুকিয়ে যায়। কখনো এই দুশ্চিন্তাই তাদের শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে। কেউ বমি করতে থাকে, কারও প্রস্রাব ও মলত্যাগে সমস্যা দেখা দেয়, আর কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পরীক্ষায় ভালো ফলের জন্য শিশুর ওপর খুব জবরদস্তি করা যাবে না। এ কয়েকটা দিন অতিরিক্ত চাপ দিলে ভালো কোনো ফল হবে না, উল্টো ক্ষতি হতে পারে। শিশুকে নিয়ে অন্যদের সামনে কখনো বিরূপ মন্তব্য করবেন না। ‘ও তো কিছুই পারে না’, ‘ওকে দিয়ে কিছু হবে না’ বা ‘কিচ্ছু মনে রাখতে পারে না’—নিজের সম্পর্কে এসব মন্তব্য শুনলে শিশুর আত্মবিশ্বাস ও মনোবল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পরীক্ষার সময় অনেক শিশু খাওয়াদাওয়া করতে চায় না। মস্তিষ্কের জ্বালানি আসে মূলত গ্লুকোজ থেকে। তাই সকালের নাশতায় যথেষ্ট শর্করা থাকা উচিত। সেটা হতে পারে রুটি, কর্ন ফ্লেকস, দুধে ভেজানো পাউরুটি, নরম খিচুড়ি, সঙ্গে ফলের রস (জুস) বা শরবত ইত্যাদি। তবে কেনা বা রেডিমেড গ্লুকোজ খাওয়ানোর দরকার নেই। স্বাভাবিক খাবারে যে শর্করা থাকে তা থেকে সহজেই গ্লুকোজ পাওয়া যায়।
শিশুরা যেন অবশ্যই নাশতা করে স্কুলে যায়। নাশতায় ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার না রাখাই ভালো। এতে স্কুলে গিয়ে বমি ভাব, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা হতে পারে। যেসব শিশুর বমির প্রবণতা আছে, তাদের সকালবেলায় দুধ না দেওয়াই ভালো।
এ সময় আইসক্রিম বা ফ্রিজের ঠান্ডা পানি একদম দেবেন না। এতে ঠান্ডা লেগে, জ্বর হয়ে পরীক্ষাটাই মাটি হয়ে যেতে পারে। বাইরের খাবারও এড়িয়ে চলুন। পেট খারাপ বা খাবারে বিষক্রিয়া (ফুড পয়জনিং) হলে সর্বনাশ।
পরীক্ষার সময় রাত জেগে পড়া অনেকেরই অভ্যাস। রাত জাগলে কিন্তু পড়া মনে থাকে না। মস্তিষ্ককে বিশ্রাম না দিলে কোনো পড়াই মনে থাকবে না।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুর অস্থিরতা ও উদ্বেগের মূল কারণ মা-বাবা। অভিভাবকের অতি দুশ্চিন্তাই শিশুদের আক্রান্ত করে। এ সময় শিশুকে অকারণ চাপে না ফেলে বরং তার যত্ন নিন, একটু বাড়তি নজর দিন এবং শিশুর পরীক্ষার দিনগুলোকে সহজ করে নিতে চেষ্টা করুন।