শিশুদের প্রায়ই জ্বর-জারি হয়। কিন্তু কোনো কোনো শিশুর বেশি জ্বর হলে খিঁচুনি দেখা দেয়। সাধারণত ছয় মাস থেকে ছয় বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে এমনটা হতে দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ঘটে জ্বরের প্রথম দিনে। প্রচণ্ড জ্বর আর তার সঙ্গে হঠাৎ খিঁচুনির বিষয়টি মা-বাবাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলে। তবে সাধারণভাবে এই খিঁচুনি কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনাআপনি থেমে যায় এবং অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে না।
খুব জ্বর হলে খেয়াল করা উচিত শিশুর খিঁচুনি শুরু হলো কি না। কীভাবে তা বুঝবেন? খিঁচুনি হলে শিশুর হাত-পা-মুখ বেঁকে যায়, গোঙাতে থাকে, একদৃষ্টে কোনো দিকে তাকিয়ে থাকে, অনেক সময় শিশু চেতনা হারায়।
এমনটা হলে কী করবেন?
যদি মনে হয় শিশুর এ খিঁচুনি জ্বরের কারণে, তবে শান্ত থাকতে চেষ্টা করুন।
শিশু পড়ে গিয়ে বা কোনো কিছুতে ধাক্কা লেগে যেন আঘাত না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
শিশুকে কাত করে শুইয়ে দিন, যেন শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ না হয়ে যায়।
শিশুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কি না, খেয়াল করুন। বিশেষত ঠোঁট ও জিব নীল হয়ে আছে কি না।
যতক্ষণ পর্যন্ত না খিঁচুনি বন্ধ হচ্ছে ততক্ষণ একইভাবে কাত করে শুইয়ে রাখুন।
খিঁচুনি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিশুকে পরীক্ষা করান।
খিঁচুনি ১০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হলে, শিশু নীল হয়ে গেলে, খিঁচুনির সঙ্গে বমি হতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া উচিত।
জ্বর হলে শিশুকে প্যারাসিটামল দিয়ে ও স্পঞ্জ করে তাপমাত্রা কমাবেন। যেসব শিশুর জ্বর হলেই খিঁচুনি হয়, তাদের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হঠাৎ অনেক জ্বর, খিঁচুনি ও ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া অনেক সময় মেনিনজাইটিসের লক্ষণও হতে পারে। তাই সতর্ক থাকাই ভালো।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
http://www.prothom-alo.com/life-style/article/901456/শিশুর-জ্বরের-সঙ্গে-খিঁচুনি