নীলকান মাছরাঙার ইংরেজি নাম Blue-eared Kingfisher। নীলকান মাছরাঙা নীল কান-ঢাকনি পরা মাছ শিকারি পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ১৬ সেন্টিমিটার, ওজন ২৭ গ্রাম। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ ঘন নীল ও দেহতল গাঢ় কমলা। গালের চারপাশ, ঘাড়, ডানা-ঢাকনি বেগুনি নীল। পিঠের নিচ থেকে লেজ বরাবর নীল ডানা নেমে গেছে। গলা ও ঘাড়ের পাশে সাদা পট্টি, কান-ঢাকনি উজ্জ্বল নীল। পা, পায়ের পাতা ও নখর কমলা রঙের। ঠোঁট দুই রঙের, ওপরের অংশ কালচে বা শিং-বাদামি, ঠোঁটের নিচের অংশ কমলা, মুখ বাদামি-কমলা। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারা অভিন্ন।
নীলকান মাছরাঙা পাহাড়ি নদী, প্রশস্ত পাতার চিরসবুজ বন ও উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন, জোয়ার-ভাটার সিক্ত খাঁড়ি ও প্যারাবনে বাস করে। সাধারণত একাকী বা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। পানির ওপর ঝুলন্ত ডালে অনেকক্ষণ বসে থাকে এবং সুযোগ হলে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মাছ ধরে। খাদ্যতালিকায় আছে মাছ, জলজ পোকামাকড়। সাধারণত পাতার আড়ালে বসে থাকে। তীব্র কণ্ঠে চি চি সুরে ডাকে। ডাকের ধরন শুনে কেবল একে পাতি মাছরাঙা থেকে আলাদা করা যায়। মার্চ-জুলাই মাসে বনের ধারে প্রবহমান খালের কাছে, নদীর কিনারে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিম উজ্জ্বল সাদা, সংখ্যায় ৫ থেকে ৮টি। নীলকান মাছরাঙা আমাদের সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি বনের ছড়ায় ও কাপ্তাই লেকের আশপাশে ঘুরে বেড়ায়। তা ছাড়া বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, বাগেরহাট জেলার ঘন গাছপালাপূর্ণ এলাকায় দেখা যায়।