ফলের গায়ে স্টিকার লাগানো থাকে কেন?

Author Topic: ফলের গায়ে স্টিকার লাগানো থাকে কেন?  (Read 1072 times)

Offline Kishwar-E Hasin

  • Newbie
  • *
  • Posts: 23
  • Test
    • View Profile
    • Institutional Web
বাজারে যেসব আপেল, কমলালেবু, নাশপাতি বিক্রি হয়, অধিকাংশ ফলেরই গায়ে লাগানো থাকে ছোটো গোল স্টিকার। খেয়াল করে দেখবেন, স্টিকারগুলোতে লেখা আছে কিছু নম্বর ও সরু-মোটা কালো দাগ। ওই স্টিকার খুলে আপেল খেতে অনেক সময়ই ঝামেলায় পড়তে হয়। তবে এমন স্টিকার লাগানোর অর্থ কী? প্রকৃতপক্ষে আপেলের ওপরের স্টিকার বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। একে বলা হয় PLU (Price Look-Up) কোড। এই কোডই বলে দেয় কোন ফলের কেমন মান, কোনটা কীভাবে তৈরি হয়েছে, কার কেমন খাদ্যগুণ।
আপেলসহ বিভিন্ন ফলের ওপর থাকা স্টিকারের ওপরের সংখ্যা ও বারকোড ফলের পরিচয়, ধরন ও উৎপাদন পদ্ধতিসহ নানা তথ্য বহন করে। স্টিকারে থাকা সংখ্যাকে বলা হয় প্রাইস লুক আপ কোড বা সংক্ষেপে পিএলইউ কোড।

PLU কোড যদি 3 (#3****) নম্বর সংখ্যা দিয়ে শুরু হয়, তাহলে তার মানে তাতে আছে ‌‘আয়োনাইজ়িং ইরেডিয়েশন’ (Ionizing Irradiation)।
“রেডিয়েশন” (Radiation) কথাটি থাকায় অনেকেই মনে করেন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিন্তু দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা বলছে, ইরেডিয়েট করা খাবার বিপদমুক্ত। কোনও খাবারকে আয়োনাইজ় করা মানে সেটির মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া। সহজে পচন না ধরা। পরমাণুর চারদিকে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রনকে যদি রেডিওঅ্যাকটিভ বা ইলেকট্রিক্যাল পদ্ধতিতে আলাদা করে দেওয়া হয়, তবে সেই পরমাণুটি আয়োনাইজ়়ড্। এর মানে, নেগেটিভ (-ve) ইলেকট্রনকে বের করে আনলে, পরমাণুতে পড়ে থাকে পজ়িটিভ প্রোটন (+ve)। কোনও নেগেটিভিটি না থাকার কারণে পরমাণুটি স্থূলাণু বা আয়নে (ion) পরিণত হয়। খাবারের পরমাণুকে যদি আয়নে পরিণত করা হয়, সেই খাবারের মেয়াদ অনেকদিন বেড়ে যায়। কোনও ফলের গায়ে লাগানো স্টিকারের PLU যদি 3 নম্বর সংখ্যা দিয়ে শুরু হয়, জানবেন সেই ফলটি অনেকদিন পর্যন্ত টাটকা থাকবে। পৃথিবীজুড়ে অন্তত ৬০টি দেশের মানুষ অয়োনাইজ়িং ইরেডিয়েশন যুক্ত খাবার খান। অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানিতে হার্বস্, মশলা ও আচারজাতীয় খাবারে ইরেডিয়েশন করা থাকে। ব্রাজ়িলে সব খাবারেই ইরেডিয়েট করা।’’
PLU কোড যদি 4 ও 8 (#4****, #8****) নম্বর সংখ্যা দিয়ে শুরু হয়, তাহলে তা ‘কনভেনশনালি গ্রোন’ (Conventionally Grown)
‘‘পোকামাকড় থেকে বাঁচাতে অনেকসময় ফল ও শাক-সবজির গায়ে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। বলা হয় কনভেনশনালি গ্রোন। থাকে সিন্থেটিক কেমিক্যালস্, যেমন – সার, কীটনাশক, অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন।’’
আবার অনেক সময় চাষের সময় জেনেটিক্যালি মডিফায়েড অরগ্যানিজ়মসের (GMO & GE) সাহায্যে ফল-সবজির আকার বাড়ানো হয়। শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয় এই ধরনের ফল-সবজি খেলে। উৎপাদনের খরচ কম। তাই বাজারে খুব কম দামে পাওয়া যায়।
PLU কোড যদি 6 (#6****) নম্বর সংখ্যা দিয়ে শুরু হয়, তাহলে তা ‘প্রিকাট প্রোডিউস’ (Precut Produce)
‘‘আজকাল অনেকেই সময়ের অভাবে কিংবা আলসতার কারণে বাজার থেকে কাটা ফল বা সবজি কেনেন। অনলাইন সার্ভিস থেকেও কাটা ফল-সবজি কেনেন। এই ধরনের ফল বা সবজি স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়।’’
প্রথমত, ‘‘ফল-সবজি কেটে বিক্রি করার আগে, সেগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার জন্যে ক্লোরিন সলিউশনে ধোয়া হয়। প্যাকেটবন্দি অবস্থায় ফ্রিজে রাখা হয়। তৈরি হয় কার্বোন ফুটপ্রিন্ট (Carbon Footprint)। অর্থাৎ, খাবারের মধ্যে কার্বোন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা অনেকগুণ বেড়ে যায়। সেই ফল-সবজি খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি অনিবার্য। এছাড়া, কাটা ফল-সবজি দূষণমুক্ত নয়।’’
PLU কোড যদি 9 (#9****) নম্বর সংখ্যা দিয়ে শুরু হয়, তাহলে তা ‘অরগ্যানিক’ (Organic)
‘‘সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর অরগ্যানিক বা জৈব পদ্ধতিতে তৈরি ফল-সবজি। কীটনাশক, সারের মতো ক্ষতিকারক কেমিক্যালস্ থাকে না বললেই চলে। পোকামাকড় সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করে। কারোর বাড়ির বাগানের গাছে তৈরি আম, কাঠাল, কলা, আপেল, বেগুন.. ইত্যাদি ফল-সবজি অরগ্যানিক। স্বাদে অতুলনীয়। স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভালো। বাজারে দামও বেশি।’’

সাধারণত ক্রেতাদের সুবিধার্থে অনেক সময়ই স্টিকারের সংখ্যা ও বারকোড ছাড়াও সংক্ষেপে বা পূর্ণভাবে এর গুণগত মান লেখা হয়। যেমন স্টিকারের সংখ্যার ওপর লেখা থাকতে পারে অর্গানিক, জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড বা সংক্ষেপে জিএম, ন্যাচারাল ইত্যাদি।
বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রেই পিএলইউ কোড ছাড়াও ফলের গায়ে স্টিকার দেখা যায়। সাধারণত এসব স্টিকারে লেখা থাকে ‘গুড’ বা ‘ওকে’। ফল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্যাকেটজাত করার সময় এর গুণগত মান বোঝাতে এমন স্টিকার ব্যবহার করে থাকতে পারে।

Source: online news
Kishwar-E Hasin
Lecturer in Physics,
Department of General Educational Development,
Daffodil International University.

Offline Shakil Ahmad

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 374
  • Test
    • View Profile