জীবনটা আর আগের অবস্থায় নেই। স্বাভাবিক গতিতে চললে পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা, তাইতো গতি বেড়েছে অনেক। আর এই গতির সঙ্গে তাল মেলাতেই অনধিকার চর্চার মতো যোগ হয়েছে মানসিক চাপ, যার অন্য নাম স্ট্রেস। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্নায়ুর চাপ, অনিদ্রা, অবসাদ, রাগ—সবই মানসিক চাপের নানা রূপ। এই চাপই আমন্ত্রণ জানাচ্ছে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো কঠিন সব রোগকে। তাই আর অবহেলা নয়, বরং এটির মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম, কিছু ব্যায়াম করে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
স্ট্রেস ভালো করার কোনো মডেল ওয়ার্ক আউট নেই। বরং কাজের ধরন, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, বয়স ইত্যাদির ওপর স্ট্রেস কমানোর ওয়ার্ক আউট বা ব্যায়াম নির্ভর করে। যেমন—যাঁরা সারা দিন কম্পিউটারে কাজ করেন তাঁদের জন্য স্ট্রেচিং, সাঁতার শক্তি বাড়ানোর জন্য ভালো কাজ দেয়। আবার শল্যচিকিৎসক, শিক্ষকদের জন্য ব্রিদিং, যোগাসনের স্ট্রেচ আর কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামে ভালো ফল মিলবে। গৃহবধূ, সাধারণ চাকরিজীবী, যাঁরা একঘেয়েমি থেকে অবসাদের শিকার, তাঁদের জন্য খোলা পরিবেশে কার্ডিওভাসকুলার ওয়ার্ক আউট উপযোগী। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বদ্ধ রুমে ব্যায়ামের চেয়ে প্রকৃতির মাঝে ব্যায়াম করলে মেজাজ ভালো থাকে। এ জন্য এসব ব্যায়ামের নাম দিয়েছেন তাঁরা গ্রিন এক্সারসাইজ। চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আরো কিছু ব্যায়াম সম্পর্কে জানানো হচ্ছে।
স্কিপিং : এক জায়গায় দাঁড়িয়ে স্কিপিং বড্ড একঘেয়ে। বরং করতে করতে কখনো সামনে, কখনো পেছনে, কখনো ডানে বা বাঁয়ে যেতে থাকুন। আবার সোজা না লাফিয়ে ভিন্নভাবেও লাফানো যেতে পারে। লাফানোর মধ্যে নিজেই কিছু বৈচিত্র্য আনতে চেষ্টা করুন। এভাবে ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট করতে হবে। এক মিনিট বিশ্রাম করে আবার শুরু করুন। এভাবে পাঁচ থেকে ছয়বার করুন।
বক্স অ্যান্ড কিক : এই অনুশীলনটি করতে এক জোড়া বক্সিং গ্লাভস হলে ভালো হয়। খালি হাতে হলেও কোনো সমস্যা নেই। তবে একজন সঙ্গী দরকার হবে। সঙ্গী দুই হাতের তালু খুলে দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় দুই হাতে আড়াআড়ি চারটি ঘুষি মারুন। ঘুষির পরপরই দুই পায়ে সঙ্গীর তালু লক্ষ্য করে একটি করে লাথি মারতে পারেন। এ সময় প্রতিপক্ষ হাত নিচে নামিয়ে রাখতে পারেন। এরপর সঙ্গী আপনাকে লক্ষ্য করে নকল ঘুষি ছুড়বেন, আপনি কতটা সজাগ সে পরীক্ষাটাও হয়ে যাবে। মাথা নিচু করে ঘুষি এড়াতে হবে। এভাবে অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে। এই অনুশীলন আপনাকে চাপমুক্ত রাখতে সহায়তা করবে। সঙ্গী না পেলে একাও অনুশীলন করা যাবে। তখন একা একা শূন্যে ঘুষি বা লাথি ছুড়ুন।
Source:
http://www.kalerkantho.com/online/prescription/2017/06/29/513536