Exceptional Hajj of the preceding scholars

Author Topic: Exceptional Hajj of the preceding scholars  (Read 1318 times)

Offline rumman

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1020
  • DIU is the best
    • View Profile
Exceptional Hajj of the preceding scholars
« on: August 04, 2017, 12:04:41 PM »

বুখারি ও মুসলিমে সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণনা এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি হজে গেল এবং কোনো অশ্লীল ও অন্যায় কাজ করল না, সে নবজাতকের মতো হয়ে ফিরল। ’ অর্থাৎ তার গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আবু হুরায়রা (রা.) আরো বর্ণনা করেন, নবীজি বলেছেন, ‘এক ওমরাহ থেকে আরেক ওমরাহর মধ্যবর্তী সময়ের (সগিরা) গোনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হয়। আর জান্নাতই হচ্ছে মকবুল হজের একমাত্র প্রতিদান। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩, সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৩৭)

এ জন্য সলফে সালেহিন তথা পুণ্যবান পূর্বসূরি মনীষীরা হজ ও ওমরাহ আদায়ে খুবই আগ্রহী ও যত্নবান ছিলেন। হজ পালনে তাঁদের যে স্পৃহা, অভিপ্রায় ও প্রাণবন্ততা ছিল, তা এককথায় অতুলনীয়। আমাদের হয়তো এখন সেগুলো কল্পনা করাও কঠিন। অনেক আলেম এ বিষয়ে স্বতন্ত্র বই রচনা করেছেন। তন্মধ্যে শায়খ হোসাইন আল আফানির ‘সালাহুল উম্মাহ ফি উলুওয়িল হিম্মাহ’ নামক বইটি উল্লেখযোগ্য। সে বইয়ে লেখক এজাতীয় অনেক দুর্লভ ও সুখপাঠ্য তথ্য সন্নিবেশিত করেছেন।

সাহাবিদের হজ

সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর অন্যতম শিষ্য নাফে (রহ.) বলেন, ইবনে ওমরের সঙ্গে আমি ৩০ বারেরও বেশি হজ ও ওমরাহর সফর করেছি।
(সিয়ারু আলামিন নুবালা :  ৫/৯৭) হজরত হাসান ইবনে আলী (রা.) ১৫ বার হজ আদায় করেছেন। (প্রাগুক্ত)

হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) ‘জাতু ইরক’ নামক স্থান থেকে ইহরাম পরিধান করেন এবং হালাল হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর জিকির ছাড়া কোনো কথা বলেননি।

তাবেয়িদের হজ

তাবেয়ি আসওয়াদ ইবনে ইয়াজিদ নাখায়ি (রহ.) হজ ও ওমরাহসহ ৮০ বার বায়তুল্লাহ জিয়ারত করেছেন। আমর ইবনে মায়মুন (রহ.) ৬০ বার হজ ও ওমরাহ আদায়ের সৌভাগ্য লাভ করেছেন। সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব (রহ.) নিজে বলেন, আমি ৪০ বার হজ আদায় করেছি। সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.) প্রতিবছর দুইবার এহরাম বাঁধতেন—একবার হজ ও আরেকবার ওমরাহ আদায়ের জন্য। মুসলিম ইবনে ইয়াসার (রহ.) প্রতিবার হজে যেতেন এবং নিজ খরচে আরো কয়েকজনকে হজ আদায় করতে সঙ্গে নিতেন।

জ্ঞানার্জনের লক্ষ্যে হজের সফর

আগের যুগে হজের সফর ছিল জ্ঞানার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম ও বিরাট সুযোগ। কেননা মুসলিম বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ওলামায়ে কেরাম মক্কায় এসে সমবেত হতেন। সেখানে পাঠদানের ধারা অব্যাহত থাকত। এ জন্য আমরা উম্মাহর ক্ষণজন্মা মনীষীদের জীবনের ইতিবৃত্ত অনুসন্ধান করলে দেখতে পাই যে তাঁরা একাধিকবার হজের সফরে গেছেন। এমন বেশিসংখ্যক হজ তাঁরা করেছেন যে আজকাল তা অসম্ভব না হলেও দুষ্কর ও দুর্লভ তো অবশ্যই। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) তাঁর জীবনে ৫৫ বার হজ করেছিলেন। (আল খায়রাতুল হিসান, পৃ. ৭৫) ইমাম ইবনে মাজাহ (রহ.) বর্ণনা করেন, আমার শায়খ আলী ইবনুল মুনজির (রহ.)-কে বলতে শুনেছি যে আমি ৫৮ বার হজ করেছি। বেশির ভাগই হেঁটে সফর করেছি। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৩২০৮)। হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) মুহাদ্দিস সাঈদ বিন সুলায়মান ওয়াসিতি (রহ.) সম্পর্কে বলেন, তিনি ৬০ বার হজ আদায় করেছেন। (তাহজিবুত তাহজিব : ২/৩১১) ইমাম বুখারি (রহ.)-এর অন্যতম উস্তাদ মুহাদ্দিস মাক্কি ইবনে ইবরাহিম (রহ.) বলেন, আমি ৬০ বার হজ পালন করেছি। (তাজকিরাতুল হুফফাজ, ১/২৬৮) ইমাম সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (রহ.) বলেন, আমি ৮০ বার হজ পালন করেছি। (সিয়ারু আলামিন নুবালা : ৮/৪৬৫)

বাদশাহ হারুন রশিদের হজ

প্রসিদ্ধ আছে, খলিফা হারুন রশিদ এক বছর জিহাদে থাকতেন এবং আরেক বছর হজে যেতেন। জনৈক আরব কবি তো বলেছেন, ‘যে আপনার সাক্ষাৎ চাইবে, সে হারামাইন না হয় ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্তে আপনাকে পাবে। ’ বাদশাহ হারুন রশিদের নিয়ম ছিল, তিনি যে বছর হজে যেতেন, সে বছর আরো ১০০ জন ফকিহ ও তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে নিতেন। আর যে বছর তিনি নিজে যেতে পারতেন না, সে বছর নিজে পূর্ণ খরচাদি দিয়ে ৩০০ জনকে হজে পাঠাতেন। (ওফায়াতুল আয়ান ও তারিখুল ইসলাম লিজ জাহাবি)

খতিব বাগদাদির হজ

আবুল ফারজ ইসফারাইনি বলেন, খতিব বাগদাদি (রহ.)-এর সঙ্গে আমরা হজে ছিলাম। তিনি প্রত্যহ ধীরস্থিরভাবে কোরআন তেলাওয়াত করে এক খতম করতেন। এরপর হাদিস শিখতে আগ্রহীরা তাঁর পাশে জড়ো হতেন এবং বলতেন, আপনি আমাদের হাদিস শোনান। তিনি সবাইকে হাদিসও শোনাতেন। (তাজকিরাতুল হুফফাজ)

ইবনুল কায়্যিমের হজ

আল্লামা ইবনে রাজাব হাম্বলি (রহ.) বলেন, হাফিজ ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বহুবার হজ করেছেন। তিনি মক্কায় পড়ে থাকতেন। মক্কাবাসী তাঁর অত্যধিক ইবাদত ও প্রচুর তাওয়াফের কথা মুগ্ধতার সঙ্গে বর্ণনা করত। ‘মিফতাহু দারিস সাআদাহ’ নামক মূল্যবান গ্রন্থটি তিনি মক্কায় বসেই লিখেন। তাঁর বক্তব্য হলো, এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এক বিরাট উপঢৌকন যে আমি যখন দুনিয়ার সব কিছু পেছনে ফেলে তাঁর দরবারে এসে হাজির হলাম এবং নিজের সব কিছু তাঁর কাছে সোপর্দ করে দিলাম, তখনই তিনি আমার হৃদয়ে এমন একটি গ্রন্থ রচনার সুযোগ-সৌভাগ্য দান করেন। (জায়লু তাবাকাতিল হানাবিলা : ২/৪৪৮)

 

হজের সফরে গ্রন্থ রচনা

যুগশ্রেষ্ঠ হাদিস বিশারদ আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি (রহ.) বলেন, হাফিজ ইবনে হাজার (রহ.) হাদিসের মূলনীতিবিষয়ক তাঁর ‘নুখবাতুল ফিকার’ গ্রন্থটি এবং আল্লামা ইবনুল হুমাম (রহ.) নামাজের মাসায়েলবিষয়ক তাঁর ‘জাদুল ফকির’ গ্রন্থটি হজের সফরে রচনা করেন। (ফায়জুল বারি : ৩/১০১)

ডুব দিয়ে হাজরে আসওয়াদ চুমু!

ইমাম ইবনে জামাআহ (রহ.) বলেন, আমার দাদা বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেছেন সাঁতার দিয়ে। মক্কা তখন বন্যায় প্লাবিত ছিল। প্রত্যেক চক্করে যখন তিনি হাজরে আসওয়াদের কাছে আসতেন, তখন ডুব দিতেন হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়ার জন্য! (হেদায়াতুস সালিক : ১/১০১) মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ইবাদতের সম্ভাব্য এমন কোনো পথ নেই, যা সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনুজ জুবাইর (রা.) অতিক্রম করেননি। একবার বায়তুল্লায় বন্যা হয়েছিল, তখন সাঁতার দিয়ে তিনি তাওয়াফ করেছিলেন! (সিয়ারু আলামিন নুবালা : ৩/৩৭০)

মক্কায় কোরআন খতম

তাবেয়ি ইবরাহিম নাখায়ি (রহ.) বলেন, সলফে সালেহিনের আগ্রহ থাকত যে মক্কায় গেলে সেখানে কোরআন খতম না করে যেন বের না হন। (আখবারু মক্কা : ২/১৩২)

Source: লেখক : আলোচক, ইকরা টিভি, লন্ডন
Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar