কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বনাম হার্ট অ্যাটাক- দুটোই কী এক?

Author Topic: কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বনাম হার্ট অ্যাটাক- দুটোই কী এক?  (Read 619 times)

Offline protima.ns

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 429
  • Test
    • View Profile
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বনাম হার্ট অ্যাটাক- দুটোই কী এক?
আমরা অহরহই হার্ট অ্যাটাক এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট- এই কথাগুলো শুনি। হয়তো পরিবারের বা বন্ধুমহলের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন এসব কথা কানে আসে। আমরা ভাবি দুটো আসলে একই কথা। কিন্তু আসলে কী তাই?
এ ব্যাপারে কথা হয় ফরেনসিক মেডিসিনের লেকচারার ডাঃ শাহনাজ সেতুর সাথে। তিনি যশোরের আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজে কর্মরত। তিনি জানান, হার্ট অ্যাটাক থেকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে কখনো কখনো। কিন্তু দুটো আসলে একদমই আলাদা।
হৃৎপিণ্ড বা হার্ট হলো অনৈচ্ছিক পেশী দিয়ে গঠিত একটি অঙ্গ। হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ করে করোনারি আর্টারি নামে দুইটি ধমনী।
- হার্ট অ্যাটাক হয় কোনো কারণে হৃৎপিণ্ডের রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে অর্থাৎ করোনারি আর্টারি ব্লক হয়ে গেলে।
- কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলো হৃৎপিণ্ডের বন্দী দশা। কাউকে ‘অ্যারেস্ট’ করলে সে যেমন নিজে কিছু করতে পারে না, তেমনি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সময়ে হৃৎপিণ্ড বিট করতে পারে না। কিন্তু হার্ট অ্যাটাকে হৃৎপিণ্ড বিট করতে পারে।
এছাড়া এদের লক্ষণেও আছে পার্থক্য-
হার্ট অ্যাটাক
১) বুকে ব্যাথা হয়। ব্যথার ধরণটা এমন যেন কেউ বুক চেপে ধরে আছে শক্ত করে। বিশ্রামেও কমে না এই ব্যথা। তবে সব রোগীর এই ব্যথা নাও থাকতে পারে। ব্যথার স্থায়িত্ব হয়ে পারে কয়েক মিনিট।
২) এই ব্যথা বাহু, চোয়াল, গলা, পিঠ ও পেটে ছড়াতে পারে।
৩) নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা নিঃশ্বাসে শব্দ হওয়া।
৪) দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম করা।
৫) শরীর ঘেমে যাওয়া।
৬) বুক ধড়ফড় করা বা প্যালপিটেশন।
হার্ট অ্যাটাক
হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা বাহুতেও ছড়াতে পারে। ছবি: রিপন
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট
১) হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলা।
২) নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া।
৩) নাড়ীর স্পন্দন (পালস) না পাওয়া।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট
হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলাটা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণ। ছবি: নূর
এই দুইটি হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছেন প্রচুর মানুষ। বিশেষ করে দেখা যায়, তাদেরই ঝুঁকি বেশি যাদের-
- ধূমপানের অভ্যাস আছে
- অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয় বেশি (স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত খাবার)।
- উচ্চ রক্তচাপের রোগী
- ডায়াবেটিসের রোগী
- ওবেসিটি আছে (অতিরিক্ত ওজন)
- শারীরিক শ্রম একেবারেই হয় না
- পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস আছে
- খুব বেশি বায়ু দূষণ এবং ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হয়
ধূমপান
ধূমপান বাড়ায় হৃদরোগের ঝুঁকি। ছবি: নূর
এই ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলা গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়। এর জন্য আপনি নিম্নোক্ত কাজগুলো করতে পারেন-
- ধূমপান ও মদ্যপান বাদ দেওয়া
- নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা ও নিয়ন্ত্রণে রাখা
- রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা (ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে)
- প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করা। অন্ততপক্ষে সকাল-বিকাল হেঁটে ঘাম ঝরানো
- খাবারের তালিকায় প্রচুর পানি, ফল ও শাকসবজি রাখা
সর্বোপরি, টেনশন এড়িয়ে স্ট্রেসমুক্ত জীবন যাপন করার চেষ্টা করুন। সময় পেলে শহুরে যান্ত্রিকতা থেকে দূরে কোলাহল এবং দূষণমুক্ত কোনো এলাকা থেকে ঘুরে আসুন। কারণ শরীর ভালো রাখতে হলে মনটাকেও ভালো রাখতে হবে।

Offline munira.ete

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 558
  • Test
    • View Profile