ছোটবেলায় আমাদের ভাই বোনদের মধ্যে আমিই খুব বেশী চঞ্চল ছিলাম। আমার বাকী ভাই বোনেরা সবাই ক্লাসে পাঁচের মধ্যে থাকতো। সেখানে আমি থাকতাম ১৪ - ১৬ এই রকম পজিশনে।
আমার বাবা একবার আমাকে পড়াশুনায় আরো সিরিয়াস করার জন্য মজা করেই বলেছিলেন খুব ভাল করে পড়তে। না হলে দেশের বাড়িতে কিছু গরু কিনে দিবেন। আমাকে সেই গুলো পুষতে হবে।
পশু পাখি আমার ছোটবেলা থেকেই ভাল লাগে। আমার কাছে তাই প্রস্তাবটি খুব লোভনীয়ই মনে হয়েছিল। অস্পস্ট ভাবে মনে পড়ে আমি আমার বাবাকে গরু কি খায়, কিভাবে যত্ন নেয় এইরকম প্রশ্ন করে চলেছিলাম। এর পর আমার বাবাকে আর এই প্রসঙ্গ তুলতে দেখি নাই। বরঞ্চ আমিই কয়েকদিন তাকে গরু পোষার কথা মনে করিয়ে দিতাম যেন তিনি ভুলে না যান।
পশু পাখি আমার ভাল লাগে। একমাত্র কুকুর ছাড়া। ছোটবেলায় তাও আদর করতাম। আমার বাবা মাও আমার এই ভাল লাগাকে স্নেহের চোখেই দেখতেন। আমার ভাই বোনেরাও পোষা বিড়াল কুকুর গুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। ঢাকা তখন ছিল অনেক ভিন্ন। কবুতর মুরগি বিড়াল কুকুর সবই ছিল আমাদের বাসায়।
ফ্যাক্টরিতে চাকুরী করার সময় চেষ্টা করতাম রবিবারে অফ ডে রাখতে। কেননা রবিবারে টঙ্গীতে পোষা কবুতর পাখির বাজার বসত। সপ্তাহের এক দিনের ছুটির সারাদিন কাটতো আমার পোষা কবুতরের পিছনে। আমাদের ছাদে রুমের সমান বড় একটি খাঁচা তৈরি করেছিলাম কবুতরের জন্য। পুরোটাই ছিল আমার বুদ্ধি ও ডিজাইনে করা।
এখনো প্রতিদিন অনেক ভোরে ঘুম থেকে উঠি। ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার আগে আমার পোষা পাখিদের খাবার পানি সবজি সব কিছুর ব্যাবস্থা করে। আবার রাতে হয়ত ছাদে যাই। ছাদে হাটাহাটি করি আর সিড়ি ঘরের দরজা দিয়ে দেখি আমার পাখিদের।
খেয়াল করে দেখেছি এই রকম কাজে সময় ব্যয় করলে মানুষের দুশ্চিন্তা টেনশন এই গুলো দূর হয়ে যায়। ভেবে দেখলাম সময় গুলো বেশ ভাল কাটে এবং এইটাই সব থেকে বড় পাওয়া। এর বাইরে হিসেব করলে পুরোটাই লস প্রোজেক্ট আর সময় নষ্ট ছাড়া কিছু নয়।
(আমার ফেসবুক পোস্ট ০১ - ১০ - ২০১৭)