অর্থ বিষয়ে আপনার শিশুদেরকে যে সাতটি কথা বলবেন না

Author Topic: অর্থ বিষয়ে আপনার শিশুদেরকে যে সাতটি কথা বলবেন না  (Read 469 times)

Offline protima.ns

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 429
  • Test
    • View Profile
অর্থ বিষয়ে আপনার শিশুদেরকে যে সাতটি কথা বলবেন না
বাচ্চাদের বেশিরভাগই বোধগম্য কারণেই অর্থ বিষয়ে অবুঝ থাকে। কিন্তু অর্থ বিষয়ে আমাদের মনোভঙ্গি, আচরণ এবং সাধারণ জ্ঞান যেহেতু আমাদের বাবা-মার কাছ থেকেই এসেছে সেহেতু অর্থ বিষয়ে বাচ্চাদেরকে শিক্ষাদানের দায়িত্বটি যে কোনো বাবা-মার ওপরই বর্তায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তিগত অর্থায়ন সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ বেথ কোবলিনার এর বই “মেক ইওর কিড অ্যা মানি জিনিয়াস (ইভেন ইফ ইউ আর নট): অ্যা প্যারেন্টস গাইড ফর কিডস থ্রি টু টুয়েন্টি থ্রি” প্রকাশিত হবে ৬৭ ফেব্রুয়ারি। এতে কোবলিনার বলেন, বাবা-মায়েরা বাচ্চাদেরকে কী বলা ঠিক নয় তা থেকে শুরু করতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস অর্থ বিষয়ে বাচ্চারা, বিশেষ করে খুব ছোট বাচ্চারা কিছু বিষয় গ্রহণে সক্ষম নয় এবং সত্যি বলতে কি বিষয়গুলো তাদের জানাই উচিত নয়।’
কোবলিনার সাতটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন যেগুলো বাচ্চাদের সঙ্গে না বলাই ভালো:

১. আপনার আয় কত

কোবলিনার বলেছেন বাচ্চাদের সঙ্গে কখনোই আপনার আয় কত তা নির্দিষ্ট করে বলবেন না। তবে আপনাকে যদি বাচ্চারা জিজ্ঞেস করে তাহলে আপনি তাদেরকে আপনাদের মতো একটি পরিবারের বার্ষিক আয় কত সে ব্যাপারে ধারণা দিতে পারেন।

২. বাবা-মা’র কোন জন বেশি আয় করেন

যে পরিবারে বাবা এবং মা দুজনেই অর্থ উপার্জন করেন সে পরিবারে কে বেশি আয় করেন সে ব্যাপারে বাচ্চাদের না বলাই ভালো। এতে খুব কম বয়সেই বাচ্চারা বাবা-মায়ের যে কোনো একজনকে পরিবারের জন্য বেশি গুরত্বপূর্ণ ভাবতে অভ্যস্ত হয়ে পড়তে পারে।

যে পরিবারে বাবা-মার যে কোনো একজন বাচ্চাদের যত্ন নেওয়ার জন্য বাড়িতেই অবস্থান করেন সে পরিবারের বাচ্চাদের শেখাতে হবে যে বাড়িতে থাকাটাও একটা পূর্ণকালীন চাকরির মতোই। যদিও এতে নগদ কোনো অর্থ আয় হয় না।

তবে সবচেয়ে ভালো হলো বাচ্চাদের সামনে পরিবারকে একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপস্থাপন করা এবং বলা যে আমরা একটি টিম এবং একসঙ্গে কাজ করি। ফলে এতে কিছুই যায় আসে না কে কত আয় করল।

৩. অবসর কাটানোর জন্য আপনি কত টাকা সঞ্চয় করেছেন

অবসর অ্যাকাউন্ট এমনকি অনেক প্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চার কাছেও বেশ জটিল লাগে। কেননা বাচ্চারা ঠিক বুঝতে পারে না কেন আপনি এতোগুলো টাকা ব্যয় না করে জমিয়ে রাখছেন।

কোবলিনার এ বিষয়ে নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তিনি বলেন, আমার বয়স যখন ১০ তখন আমার প্রতিবেশি সুসান আমাকে বলেন যে, তার বাবা-মা তাদের অবসর অ্যাকাউন্টে মিলিয়ন ডলার সঞ্চয় করে রেখেছেন। এ কথা শুনে আমি প্রথমেই ভাবি যে তিনি হয়তো মিথ্যা কথা বলছেন।”

৪. আপনি কার কাছে টাকা পান

অনেক সময় অর্থ নিয়ে বিবাদের কারণে পারিবারিক সম্পর্কগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। তবে সবচেয়ে ভালো যদি এ বিষয়ে বাচ্চাদেরকে না জড়ানো হয়। ধরুন আপনি আপনার আদরের ভাইয়ের কাছে ১ হাজার টাকা পান। এখন আপনি যদি আপনার সন্তানের সামনে বিষয়টি বলেন, তাহলে তার মধ্যে তার চাচার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ তৈরি হবে এমনকি আপনার ভাই আপনার টাকা ফেরত দেওয়ার পরও সে ওই মনোভাব পুষে রাখবে। তবে পরিবারের সদস্যদেরকে টাকা ধার দেওয়ার বিপদ সম্পর্কে বাচ্চাদেরকে শিক্ষা দিতে ভুলবেন না। অবশ্য এক্ষেত্রে ঘরের কারো উদাহরণ ব্যবহার না করাই ভালো।

৫. বাচ্চাদের কাজের মেয়েকে কত টাকা বেতন দেন

আপনি যদি আপনার বাচ্চাদের লালন-পালনের জন্য কাজের লোক নিয়োগ দিয়ে থাকেন তাহলে তার সঙ্গে বেতন-ভাতাদি সম্পর্কে করা চুক্তিগুলো গোপন রাখাই ভালো। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। ফলে এ কাজে নিয়োজিতদেরকে আপনি বেতনভুক্ত লোক হিসেবে উপস্থাপন করলে বাচ্চারা তাদেরকে হেয় করবে এবং তাদের কথা মেনে চলতে চাইবে না। ফলে আখেরে বাচ্চা লালনের কাজ বিঘ্নিত হবে।

৬. কোনো উপহার কিনতে আপনি কত টাকা ব্যয় করেছেন

বাচ্চাদের জন্য উপহার সামগ্রী প্রায়ই একমাত্রিক। তারা এর দাম নিয়ে ভাবে না। বরং উপহার দেওয়া-নেওয়ার উত্তেজনাটাই শুধু উপভোগ করতে চায়। সুতরাং উপহার সামগ্রীর দাম বলে আপনি শুধু তাদের অনুমানকেই বিঘ্নিত করবেন।

৭. কলেজের ব্যয়ভার বহনে আপনি কতটা উদ্বিগ্ন থাকেনৎ

বাচ্চাকে কলেজে পাঠানোটা যে কোনো বাবা-মার জন্যই একটি গর্বের বিষয়। কিন্তু এর ব্যয়ভার মেটানোর উপায় খুঁজে বের করাটা প্রায়ই সীমাহীন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বাচ্চারা হাইস্কুলে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা না বলাই ভালো। এমনকি বাচ্চাদের সামনে বেশি নেতিবাচক কথও বলবেন না। এতে তাদের মনে এই ভুল ধারণা সৃষ্টি হতে পারে যে কলেজে পড়াটা খুব ব্যয়বহুল। আর বাবা-মার কাঁধে এর বোঝা না চাপানোই ভালো।