বাংলাদেশের সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপুর্ণ দিক গুলোর মধ্যে ‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড, এক বিশেষ আতংক। প্রতি বছর ‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ডে এদেশের অগনিত মানুষ-প্রাণীকুলের প্রাণহানী, ব্যক্তিক কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। প্রতিনিয়তই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান শহর গুলোতে ‘ভূমিকম্প ও অগ্নি-কান্ডের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে যা সত্যিকারেই ভাবনার বিষয়। জরিপে উল্লেখ, বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়দেশ গুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশী ভুমিকম্প প্রবণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে চলেছে।
প্রাকৃতিক বা মানুষ্য সৃষ্ট, প্রাণ-ঘাতিক এই সমস্যা থেকে সহজ-বাচাঁর উপায় এবং বিপদকালীন সময় সমস্যা মোকাবেলাকরণের করনীয় সম্পর্কে ‘ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের’ উদ্দ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘অগ্নি নির্বাপক ও ভূমিকম্পে করণীয়’ সম্পর্কীত এক বিশেষ সেমিনার। ২৫ এপ্রিল, বুধবারের এই বিশেষ সেমিনারে, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানীত ট্রেজারার জনাব হামিদুল হক খান ‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ডের কারণ ও বিপদকালীন সময়ে মানুষের করনীয় সম্পর্কে একটি নাতি দীর্ঘ আলোচনা রেখে সেমিনারের শুভ-সূচনা করেন।
সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসাবে ‘ভুমিকম্প ও অগ্নিকান্ডের’ কারণ, বাংলাদেশে ভুমিকম্পের ফল্ট চিহিৃতকরণ, অত্যাধিক ঝুকিঁপুণ এলাকা সম্পর্কে সম্মক-ধারনাসহ বিপদকালীন সময়ে করণীয় সম্পর্কে বিস্তার আলোচনা তুলে ধরেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মোহাম্মদপুর জোনের পরিদর্শক জনাব সাব্বির আহম্মদ।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের অ-সচেতনতা এবং অজ্ঞতার কারণেই প্রতি বছর বাংলাদেশে ‘অগ্নিকান্ড ও ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ব্যাক্তি কিংবা রাষ্ট্রের মূল্যবান সম্পদ। অথচ আমরা এ বিষয়ে একটু সচেতন হলেই এই অনাকাঙ্থিত জীবনহানী থেকে রক্ষা পেতে পারি।
তিনি, এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উদাহারণ টেনে বলেন, সর্বাধিক সচেতনতা ও বিপকালীন সময়ে করনীয় সম্পর্কে ‘বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’ তাদের সাধ্যমত মানুষদের ‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ডের কারণ ও করনীয় সম্পর্কে বিভিন্ন সেমিনা ও বাস্তবভিত্তিক ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বল্প জায়গায় অধিকবসতি ও বিশেষ করে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশিত বিল্ডংকোড না মেনে যত্রতত্র বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে। এই সকল ভবন নির্মানে নেই কোন মান-সম্মত কর্ম-পরিকল্পনা ও জরুরী র্নিগমনপথ। ফলে অনাকাংঙ্খিত বিপদে মানুষ এই সকল ভবন গুলোতে আটকা পড়ে অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি সাভারে ঘটে যাওয়া ‘রানা প্লাজার’ ব্যাপক প্রাণহাণী ও ধ্বংসাত্বক ইতিহাস টেনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিয়ম মেনে ভবন নির্মানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তৎপর বিপদকালীন সময় করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখাসহ তিনি এক বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন।
উক্ত প্রশিক্ষণে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীগণ অংশ গ্রহন করেন। তিনি বলেন, দেশের যে কোন বিপদে জনসচেতনাই বিপদ থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায়। ভূমিকম্প কিংবা অগ্নিকান্ড চিরতরে সমাধান না করা গেলেও জন সচেতনতার মাধ্যমে আমরা এই বিপদ থেকে বহুলাংশেই রক্ষা পেতে পারি। এই ব্যাপারে তিনি উপস্থিত সকলকে আরো বেশী সচেতন ও সংবেদনশীল হওয়ার আহব্বান জানান।