আমাদের দেশ গার্মেন্টস শিল্পে প্রথম সারির দেশ। আমাদের গার্মেন্টস আমেরিকা, কানাডা সহ ইউরোপিয়ান দেশ গুলোতে রপ্তানী হচ্ছে। ১০০% শিক্ষিত এই সব দেশ কোয়ালিটির ব্যাপারে সচেতন। তারা নিশ্চয়ই কোন ভাবেই অর্থ দিয়ে ঠকতে চাইবে না। এছাড়াও তারা কর্ম পরিবেশ, নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে অনেক শর্ত আরোপ করে। তার পরেও আমরা এই শিল্পে অনবদ্য। সেই হিসেবে আমরা কত অসাধ্য সাধন করতেছি তা কি আমরা জানি?
ভাবতে অবাক লাগে যে আমাদের গার্মেন্টস পড়ে পৃথিবীর প্রথম সারির সব দেশ। সেইখানে আমরা নিজেদের পোশাক বাদ দিয়ে ভীন দেশী নিম্নমানের জামাকাপড় ক্রয় করি। ঈদ, বিয়ে সহ যে কোন উৎসবে এই সব বিদেশী পরিধেয় আমাদের চাইই। মেয়েদের ও মহিলাদের জামা কাপড়ের বাজারের পুরোটাই বিদেশীদের হাতে। এর জন্য স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলকে অনেকটাই দায়ী করা যেতে পারে।
ছোটবেলায় দেখতাম মহিলাদের প্রায় সবাই শাড়ি পড়তেন। সেই সময়ও বিদেশী শাড়ি অনেক বেশী ক্রয় বিক্রয় হত আমাদের দেশে। যদিও বেশীর ভাগ শাড়িই চোরাচালানির মাধ্যমে আমাদের দেশে আসতো। মহিলারাই বলতেন শাড়ি গুলোর ডিজাইন ও রঙে আকর্ষণ থাকলেও সে গুলোর কাপড় ছিল নিম্নমানের। বেশী দিন টিকতো না। অপরপক্ষে দেশী শাড়ি গুলোর কাপড়ের কোয়ালিটি অনেক ভাল থাকতো ও টিকতও বেশী দিন।
আমরা কতটুকু সচেতন আমাদের নিজেদের স্বার্থের ব্যাপারে? আমার মতে - আমরা স্বার্থ বোঝা দূরে থাক - নিরবুদ্ধিতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছি প্রতি পদক্ষেপে।
আমাদের এক্সপোর্ট মার্কেট বা রপ্তানী বাজারে গার্মেন্টস রপ্তানি করে যা আয় করি - আমাদের ডোমেস্টিক মার্কেট বা আভ্যন্তরীণ বাজার তার থেকে কম কিছু নয়।
আমাদের ফেসবুকে ভাইরাল হয় দেশী কোন দোকান কত কম দামে জিনিষ ক্রয় করে কত বেশী দামে বিক্রয় করে সেই খবর। কিন্তু আমার পর্যবেক্ষণ মতে বিদেশী পণ্যের খুটিনাটির খবর করলে এর থেকে বেশী চমকে দেয়া তথ্য বের হয়ে আসবে।
এছাড়াও এর বাইরে আছে পণ্য গুলোর ট্যাক্স ও ভ্যাট। এই ক্ষেত্রেও বিদেশী পণ্য গুলো কতটুকু ন্যায়ের পথে থাকে - তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
আমরা যে সব থেকে ভাল কোয়ালিটির পোশাক তৈরি করি তা আমাদের রপতানীর পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। আমরা কেন বিদেশী পোশাক ব্যাবহার করব? - এইটা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি?