আমার ছেলের লেখার পেন্সিল গুলো দেখতেছিলাম। সবই ইন্ডিয়া বা ভারতে তৈরি হয়েছে। আমাদের ছোটবেলায় আমাদের পেন্সিল গুলোর সবই চায়না বা চীনের তৈরি ছিল।
আবার আমাদের ছোটবেলায় জাপানী ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এরপর ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী আসলো জাপানী পার্টস কিন্তু চীন বা মালয়েশিয়াতে এসেম্বলী। এখন আর জাপানী ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী পাওয়া যায় না। বর্তমানে চীন ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী তৈরি করে বাজার সয়লাব করে দিয়েছে। চীনই এখন ইলেক্ট্রনিক শিল্পে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
চীন এখন আর পেন্সিল তৈরিতে আগ্রহী নয়। চীন থেকে পেন্সিল শিল্প এখন ভারত সহ অন্যান্য দেশে স্থানান্তরিত হয়েছে। আবার জাপানের ইলেক্ট্রনিক শিল্প এখন চীনে স্থানান্তরিত হয়েছে।
ইতিহাসে আছে ব্রিটিশরা আমাদের দেশের তাঁতিদের ধরে ধরে বুড়ো আঙ্গুল কেটে দিয়েছিল। যাতে তারা আর দেশীয় কাপড় বুনতে না পারে। তাদের দেশের কারখানায় তৈরি কাপড়ের বাজার সুনিশ্চিত করার জন্যই তারা তাঁতিদের বুড়ো আঙ্গুল কেটে দিয়েছিল। অথচ বর্তমানে আমাদের দেশ থেকেই তাদের দেশে পোশাক রপ্তানি হয়।
সব গুলো উদাহরনেই দেখা যায় শিল্প এক দেশ থেকে আরেক দেশে স্থানান্তর হয়। সব দেশই প্রথমে কম দামি শিল্প দিয়ে শুরু করলেও পরে সে বেশী মূল্যবান শিল্পে আগ্রহী হয়। তাদের আগের কম দামি শিল্প তখন অন্য কোন দরিদ্র দেশে স্থানান্তরিত হয়।
আমাদের দেশের আয়ের ৮০% এর বেশী আসে গার্মেন্টস শিল্প থেকে। আমরা এই গার্মেন্টস শিল্পের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। এই শিল্পের যে কোন বিপর্যয় আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কার কারণ হতে পারে।
আমার মতে কেবলমাত্র একটি শিল্পের উপর দেশের অর্থনীতির নির্ভরশীলতা না থাকাই ভাল। এছাড়াও সব দেশই একটি শিল্পে সফল হলে তারা তখন সেই পুঁজি দিয়ে আরও সময়োপযোগী ও মূল্যবান শিল্পে নিজেকে নিয়োজিত করে। তাই আমাদেরও নিজেদের অর্থনীতির সুরক্ষার জন্য গার্মেন্টসের পাশাপাশি সময়োপযোগী অন্য কোন শিল্পে মনোনিবেশ করতে হবে।