আমার মতে আমাদের জেনারেশন যারা ১৯৮০ সালের মধ্যে জন্ম নিয়েছি তারা অন্যদের থেকে ভাগ্যবান। আমাদের ম্যানুয়াল, অটোম্যাটিক, ডিজিটাল সব কিছুর অভিজ্ঞতা আছে। আমরা পোস্ট অফিসে ডাকটিকেট কিনতে লাইনে দাড়িয়েছি। চিঠি লিখে পাঠিয়েছি। আবার আমাদের নামে চিঠিও আসতো। আমরা যেমন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়েছি সেইরকম এখন ফেসবুকেও আছি। আমরা জানি কিভাবে ল্যান্ড ফোনে নাম্বার ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে কাউকে কল করতে হত।
ভাবতেছিলাম আগেকার ল্যান্ড ফোন নিয়ে। তখনও মোবাইল আমাদের দেশে আসেনি। বাসাবাড়ি ও অফিসে ল্যান্ড ফোনই এক মাত্র ভরসা। যে কেউ নতুন বিজনেস শুরু করলে সবার আগে দরকার পড়তো এই ল্যান্ড ফোন। সেই সময় বিবিসিতে একটি অনুষ্ঠানে প্রচারিত হয়েছিল বাস্তব অবস্থা। ল্যান্ড ফোনের জন্য আবেদন করে টাকা জমা দিয়ে বসে থাকলেও ফোন পাওয়া যেত না। কিন্তু সেই সময় লাখ টাকা ঘুস দিলে এক দিনেই ল্যান্ড ফোনের কানেকশন পাওয়া যেত।
আমি ভাবি কোথায় সেই সোনার হরিণ ল্যান্ড ফোন?
আসলেই নীরবে তার মৃত্যু হয়েছে। মোবাইল আসায় তার প্রভাব প্রতিপত্তি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর কয়দিন পরে তাকে কেবলমাত্র জাদুঘরে পাওয়া যাবে।
আর মোবাইল? ফুটপাথে টুলে বসে এখন বিক্রয় হয় এই মোবাইলের সিম। অফারের পর অফার দিয়েও অবিক্রিত থেকে যায় তা।
যার ভাবগাম্ভীর্যের জ্বালায় টেকা যেত না - সে এখন চরম বিনয়ী হওয়ার পরও কেউ তাকে ফিরেও দেখে না।
ল্যান্ড ফোন একটি শিক্ষা - একটি জলজ্যান্ত শিক্ষা।
যে যত ভাবই নেক না কেন - বিকল্প আসা মাত্র সব ভাব দূর হয়ে যায়।
আমরা কেউ এই পৃথিবী বা সমাজের জন্য অবশ্য দরকারি কিছু নই। সময়ের চাকা ঘুড়লে বিলুপ্ত হতে সময় লাগে না।