রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন 'আজি হতে শত বর্ষ পরে' কবিতাটি। বাংলা ১৩০০ সালে লেখা কবিতাটি।
ভাবতেছিলাম তাইতো - শত বর্ষ আগে কি ছিল? মানুষ কেমন করে দিন কাটাত? কার কার কথা আমি জানি? কার কথা ভাল বা মন্দ - কেমন ভাবে জানি?
সত্য কথা বলতে ১০০ বছর আগে আমি কাউকেই ব্যক্তিগত ভাবে চিনিনা। যতটুকু ইতিহাস বইয়ে আছে তার অল্পটুকুই জানি। আমাদের দিন কেটে যায় ব্যস্ততায়। আগের দিনের কথাই মনে থাকে না। আমাদের স্মৃতিতে শুধু আমাদের চারিপাশের মানুষেরাই থাকে। আর থাকে নিজের জীবনের সারাংশ। কিভাবে নিজের জীবন কাটিয়েছি। কে বন্ধু ছিল কাকে এড়িয়ে চলতাম - এইগুলো।
বর্তমানকাল কতক্ষণকে বলা হয়? আজকের যতটুকু আমাদের মনে থাকে ততটুকুই নয় কি? এর বাইরে পুরোটুকুই অতীত নয় কি? আমরা কতটুকু নিজের সাথে নিয়ে যাবো? আমরা কি শুধু পরিচিত মানুষের মাঝে স্মৃতিটুকুই রেখে যাব না?
শুধু অন্যের ভাল বা মন্দের স্মৃতি কি আমাদের মনে থাকবে না?
নিজের জীবনের সায়াহ্নে স্মৃতি নিয়ে নাড়াচাড়া করবো। সবাই করে।
এই বয়সে এখনই শুরু হয়ে গেছে স্মৃতি রোমন্থন।
নিজের অতীত নিয়ে কারো যদি হা হুতাস বা দুঃখ জাগে - এর থেকে কষ্টকর আর কিছু নাই। অতীত কখনো কাউকে কামড় দিতে পারে না। কোন ভাল মন্দ করতে পারে না। যা করতে পারে তা হল বিবেকের দংশন। যারা অন্যের ক্ষতি করে - অন্যের কষ্টের কারণ ঘটায়। যার কষ্টের কারণ ঘটিয়েছে বা ক্ষতি করেছে তার মনে না থাকলেও - যার যার অন্যায় তার নিজের মনে থাকে। আমাদের মনের কথা কত বিস্তারিত ভাবেই না আমরা নিজেরা জানি - যা আর অন্য কেউ জানে না। মানুষ বর্তমানকে ভয় না পেতে পারে। কেননা বর্তমানে সে কি করবে তা সে ঠিক করতে পারে। কিন্তু অতীত হল রিড অনলি। অতীত কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। যদি ভাল সময় কাটিয়ে থাকে তাহলে স্মৃতি হয় আনন্দের। আর অতীতে যদি সে অন্যের দুর্ভোগের কারণ হয়ে থাকে তাহলে নিজেকে অভিশপ্ত মানুষ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারে না।